আফ্রিকার ঔপনিবেশিকরণের আফ্রিকীয় কারণসমূহ বিশ্লেষণ কর ।

আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপনের পিছনে আফ্রিকার পরিবেশ কতটুকু দায়ী ছিল লিখ । অথবা, আফ্রিকায় উপনিবেশবাদের জন্য আফ্রিকীয় প্রেক্ষাপট লিখ । অথবা, আফ্রিকায় কোন পটভূমিতে ইউরোপীয়রা উপনিবেশ স্থাপন করে? লিখ । 
উত্তর ভূমিকা : সভ্যতার জন্মলগ্ন থেকেই পৃথিবী মূলত যুদ্ধবিগ্রহের ইতিহাসের দ্বারা গঠিত। কেননা তখন থেকেই এক জাতি আরেক জাতির উপর আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। সেই প্রাচীনকাল থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত । আধুনিক যুগের সূচনায় পৃথিবীর কর্তৃত্বের হাল দখল করে রেখেছে ইউরোপীয় দেশ এবং তখন থেকেই উপনিবেশবাদ কথাটির উদ্ভব। ইউরোপীয় শক্তিবর্গ পৃথিবীর সর্বত্র উপনিবেশ স্থাপনের চেষ্টায় লিপ্ত ছিল। তারা এশিয়া, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ প্রায় দেশই তাদের দখলে নিয়ে যায়, কিন্তু বাকি ছিল আফ্রিকা মহাদেশ। তবে সেই আফ্রিকাও শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় মহাদেশের ঔপনিবেশিকদের শিকার হয়। ১৮৮০ এর দশকে স্ক্র্যাম্বলের মাধ্যমে ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকায় প্রবেশ করে এবং পরবর্তী ত্রিশ বছরের মধ্যে সমগ্র আফ্রিকা দখল করে নিয়ে সেখানে তাদের উপনিবেশ স্থাপন করে। উপনিবেশবাদের আফ্রিকীয় কারণ : ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন করে উনিশ শতকের শুরুতে এবং উপনিবেশ স্থাপনের পর সেখানে তাদের শাসন ও শোষণ প্রক্রিয়া চালু করে। কিন্তু এ উপনিবেশ স্থাপনের পিছনে শুধু ইউরোপীয়রাই দায়ী ছিল না। এজন্য আফ্রিকাও দায়ী ছিল। অর্থাৎ আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপনের পিছনে ইউরোপীয় ও আফ্রিকীয় উভয় কারণ নিহিত ছিল।
নিম্নে আফ্রিকীয় কারণসমূহ আলোচনা করা হলো :
 ১. ভূত কারণ : আফ্রিকার ইউরোপীয় উপনিবেশ স্থাপনের অন্যতম কৃষরণত কৌশল। কারণ বৃত্তগত দিক দিয়ে আফ্রিকা ছিল উপনিবেশের আফ্রিকার মিশনারি অন ইউরোপীয় আফ্রিকা সম্পর্কে তেমন উ • জীর্ণ অঞ্চল। তবে ইউরোপীয় এশিয়ার বিি এক জলপথ ছিল ভূমধ্যসাগর যার একটা অঞ্চলে মিশর অবস্থিত। আর মিশরের নীলনদ সম্পর্কে সবার সুয়েজ খাল ছিল প্রধান কৃত্রিম সাগর, যা মিশরে অবস্থিত। এ সুয়েজখানা নিয়েই পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ইউরোপে মালা বহন করা হতো এবং জাহাজ চলাচল করতো। ফলে কৃষকগত দিক দিয়ে মিশরের সুয়েজ খাল ছিল অত্যন্ত গুরুত্ব সুয়েজখাল খনন করে তা ১৮৬৯ সালে উন্মুক্ত করা হয় এবং এ খালের উপর ফ্রান্স, ব্রিটেন ও মিশরের আধিপতা স্থাপি হয়। এদিকে ফ্রান্সের আর্থিক অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ায় মিশর সুযোগের সদ্ব করে। ফ্রান্সের আধিপত্য বিস্তার বেশি ছিল। তাই মিশরের কর্নেল আশীদ্রোহ ঘোষণা করে। প্রেক্ষাপটে ব্রিটেন ১৮৮২ সালে সম্পূর্ণ মিশর দখল করে নেয়। এর ফলে মিশর ব্রিটিশ চলে য এতে ব্রিটিশ উপনিবেশ আফ্রিকার বিশেষত উত্তর আফ্রিকার সুযোগ লাভ করে। ব্রিটেন অ দেশসমূহকে আফ্রিকার উপনিবেশ স্থাপনে বাধা প্রদানের জন্য তাদেরকে আবার নীল বা দীনের উপরে রেখেছিল ১৮৮০ দশকে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটে এবং বার্তিন সম্মেলন যারা সকলের জন্য আফ্রিকার উপনিবেশ স্থাপনের সুে দেয়া হয়। ফলে তারা কৃষ্ণগত দিক দিয়ে নীলনদ নদী ও নইেউরোপীয় বণিক শ্রেণি আফ্রিকার আফ্রিকার প্রবেশ করে তা মূলত বাস্ত
 2. সীমান্ত অঞ্চলে। কারণ আফ্রিকা ছিল। তাই অপরিচিত কেউ এ অঞ্চলে প্রবেশ করার সাহস পেত না। আফ্রিকা ব্যবসার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হতো অক্তি অধিবাসীদের।  ाন ব্যবসায় হতো। বলতে ে তৎকালীন পৃথিবীতে প্রধান ব্যবসার ছিল মান ব্যবসায়, যার কেন্দ্রবিন্দু ছিল আফ্রিকা। তবে আফ্রিকার ভিতরে ইউরোপীয় দাস ব্যবসায় করতে পারত না। তার সীমারী এর আসর এবং বিভিন্ন সামগ্রীর বিয়ে স র এসব দাসদের আবার ইউরোপ ও আমেরিকায় বিক্রি করা হতো। আফ্রিকার মান ব্যবসায় সহযোগিতা করতো আফ্রিক দালাল শ্রেণি। এসব শ্রেণি আফ্রিকার এবার থেকে সামনের ধার এনে ইউরোপীয়দের হাতে বিক্রি দিত। এভাবে বেশ ভাব বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিছুদিন পর ণ ন ইউরোপীয়দের সাথে তাদের হওয়ার ভিতরে ইউরোপীয়রা প্রবেশ করে নাম ব্যাবসায়মানের চেষ্টা করে। কিন্তু তখন আফ্রিকানদের প্রতিরোধের সম্মুখী এ অবস্থায় ইউরোপীয় ব্যবসায়ী শ্রেণি তাদের সরকারকে আফ্রি পাঠিয়ে তা দখল করে নেয়ার জন্য চ সরকারও বাধ্য হয়ে সৈন্য পাঠিয়ে আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চল দখল করতে থাকে। এর অঞ্চল দখল করে তা হলো, নাইজেরিয়া, কেনিয়া প্রভৃি
 ৩. উপ-উপনিবেশবাদ - প্রথম ে উপনিবেশিক রাজ্যের মধ্যে ছোট আরে উপনিবেশ। অন্য কথায় উপনিবেশ সদৃশ উপনিবেশ। ইউরোপীয় শক্তিবর্গ বিশেষ করে শাসকগোষ্ঠী কখনো সরাসরি উপনিবেশ স্থাপন করে নি। এখয়ে উপনিবেশ স্থাপন করেছে ব্যবসায়ী শ্রেণি। যেমন- রায়েল নাইজার কোম্পানি, ব্রিটিশ আফ্রিকান কোম্পানি ইত্যাদি। এসব ব্যবসায়ী কোন অঞ্চলে জমি ক্রয় করে সেখানে ব্যবসা নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ব্যবসা নাবিকদের নিয়ে আসা হতো। এ সৈনিকদের সাহায্য দেয়া হতো পার্শ্ববর্তী সরকার ইউরোপীয়দের আক্রমণ করতো, তখন ইউরোপীয় আসে এবং আফ্রিকার পিত্তর সরকারকে না জানিয়েই। যখন প সাহায্য করার জন্য সৈন্য এসব সৈন্যের সাহায্যে আফ্রিকান রাজ্য দখল করে তাকে উপনিবেশে পরিণত করা হতো, যা পরবর্তীতে ইউরোপীয় উপনিবেশে পরিণত হতো। এভাবে উপ-উপনিবেশ থেকে পূর্ণাঙ্গ উপনিবেশে ৪. শোর বিভাজন: আফ্রিকা ছিল গোত্র বিভাজিত। সে জীনকাল থেকে আফ্রিকার পোয়াতি সমাজকাঠামো ও সরকার ব্যবস্থার চলে আসছে। কিন্তু এসব গোত্রের মধ্যে কোন সুসম্পর্ক বজ নিজেদের মধ্যে অন্তর্কোলাহলে শিশু থাকতো। এ অবস্থার পূর্ণ গ্রহণ করতো ইউরোপীয়। সাহায্যের নামে তাদেরই দখল করতে থাকে। আফ্রিকানরা গোৱাৰনে লিপ্ত থাকার দরুন এক পোৱা অন্য গোয়েন ইউরোপীয়দের সাহায্য করতো। ফলে ইউরোপীয়রা সহজেই আফ্রিকার উপনিবেশ স্থাপন করতে আফ্রিকাননের এ গোত্র বিভাজনই ইউরোপীয় উপনিবেশবাদের প্রধান কারণ ছিল। 
. ধর্মীয় বিভাজন : আফ্রিকায় শুধু গোত্র বিভাজনই ছিল না, ধর্মীয় বিভাজনও ছিল। আফ্রিকায় যদিও ইসলাম ধর্মের প্রভাব ছিল, তবে সেটা মিশরভিত্তিক। অধিকাংশ রাজ্যে কোন নির্দিষ্ট ধর্ম ছিল । ফলে তাদের মধ্যে একাত্মবোধ ছিল। না। এ সুযোগে ইউরোপীয় খ্রিস্টধর্ম প্রবেশ করে এবং ইউরোপীয় মিশনারিরা সহজেই আফ্রিকানদের খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করতে পারে । ফলে খ্রিস্টধর্ম প্রচার ও ধর্মান্তরিত করতো আফ্রিকার উপনিবেশ তৈরির কাজ সহজ হয়েছিল। কায় গলে য়রা কান 
৬. অজ্ঞতা : আফ্রিকা ছিল পৃথিবীর অন্ধকারাচ্ছন্ন দেশ। এ কথার অর্থ হচ্ছে আফ্রিকা মহাদেশ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল। আর যে জাতি যত শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত সে জাতি তত উন্নত জাতি দ্বারা পদানত। আফ্রিকার ক্ষেত্রেও ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে। আফ্রিকান জাতি অজ্ঞ ছিল বিধায় এরা ইউরোপীয়দের দূরভিসন্ধি ও কৌশল বুঝতে পারে নি। তাইতো তারা ইউরোপীয়দের প্রাথমিক পর্বে উপনিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করেছিল এবং আফ্রিকানদের সাহায্য নিয়েই ইউরোপীয়রা উপনিবেশ স্থাপন করতে পেরেছিল। অতএব, দেখা যাচ্ছে যে, ইউরোপীয়দের উপনিবেশ সৃষ্টির পিছনে আফ্রিকানদের অজ্ঞতা অনেকাংশে দায়ী। করে কলে কার হয়। য়। সব কটি থমে
 ৭. অপর্যাপ্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা : আফ্রিকা মহাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশ এবং এখানকার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল অপর্যাপ্ত। এখানে ছিল না কোন সীমান্তরক্ষী বাহিনী। কারণ গ্রোত্রবিভাজিত সমাজকাঠামোতে আফ্রিকার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল অপ্রতুল। এখানে ছিল না কোন আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র এবং সনাতনী অস্ত্র নিয়ে আফ্রিকানরা ইউরোপীয় উন্নত অঙ্কুশস্ত্র সজ্জিত সৈন্যবাহিনীর কাছে সহজে পরাজিত হয়। ফলে আফ্রিকা সহজে ইউরোপীয় উপনিবেশবাদের শিকার হয়। উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ইউরোপীয়রা আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন করার পিছনে যেসব কারণ দেখিয়েছেন তা মূলত ইউরোপীয়ই নয়, এর পশ্চাতে কতিপয় আফ্রিকীয় কারণও নিহিত ছিল। এসব কারণের মধ্যে ভূখণ্ডগত, গোত্র বিভাজন ও অজ্ঞতাই মূল দায়ী। তাই ইউরোপীয়দের উপনিবেশ সৃষ্টির পিছনে শুধু ইউরোপীয়দের দায়ী করলেই চলবে না, বরং এর পিছনে আফ্রিকানরাই বেশি দায়ী ছিল। 

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]