আফ্রিকার অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক শাসনের ইতিবাচক ফল আলোচনা কর। 

আফ্রিকায় ঔপনিবেশিক শাসনের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিব তুলে ধর। অথবা, আফ্রিকায় ঔপনিবেশিক শাসনের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুফল ও কুফলসমূহ নির্ণয় কর 
উত্তর ভূমিকা : সুবিশাল আফ্রিকার ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে ঔপনিবেশিক শাসনের ইতিহাস পৃথিবীর সর্বত্র ইউরোপীয়রা উপনিবেশ স্থাপন করেছে এবং শাসনও করেছে দীর্ঘকাল। যেমন- ভারতীয় উপমহাদেশ পা ২০০ বছর শাসন করেছে। ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকায় যেমন আগমন করেছিল সবার শেষে, আবার শাসনও করেে স্বল্প সময়। মাত্র অর্ধশতক বছর। অথচ ইউরোপীয় উপনিবেশ শাসনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি প্রতিফলিত হয়েছে আফ্রির মহাদেশে। অর্থাৎ শাসন করেছে কম কিন্তু প্রভাব ফেলেছে বেশি গভীরভাবে। তাই আফ্রিকার ইতিহাসের ইউরো ঔপনিবেশিক শাসনের প্রভাব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। অর্থনৈতিক প্রভাব : আফ্রিকায় ইউরোপীয় শাসকবর্গ তাদের উপনিবেশ স্থাপন করে মূলত আফ্রিকার প্রাকৃতি সম্পদসহ বিভিন্ন কাঁচামাল ইউরোপে পাচার করার উদ্দেশ্যে। তবে তারা যে অর্থনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে তার কিং ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো : ইতিবাচক প্রভাব/দিক : নিম্নে ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরা হলো : ১. প্রতিকূল বাণিজ্য : আফ্রিকার উপনিবেশবাদের প্রথম অর্থনৈতিক প্রভাব হচ্ছে প্রতিকূল বাণ
Ted Robert Gurr's Theory: Ted Robert Gurr ছিলেন একজন ব্রিটিশ লেখক। তিনি আফ্রিক প্রতিরোধ আন্দোলন নিয়ে গবেষণার পর একটি গ্রন্থ লিখেন। এ গ্রন্থের নাম Why Man Rebelled ? এ গ্রন্থে তিনি আফ্রিকানদের প্রতিরোধের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর মতে, “মানুষ তখনই প্রতিরোধ করে যখন মানুষের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ে। সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ হলো সেসব উপাদান, বৈশিষ্ট্য, আচার আচরণ, যেগুলো কোন একটি জনগোষ্ঠীর সামাজিক ব্যবস্থাকে গড়ে তোলে।" Ted Robert Gurr মানুষের এ মূল্যবোধার
দু'ভাগে বিভক্ত করেছেন। যথা :
ক. Core বা মৌল উপাদান। ভাষা হচ্ছে মৌল উপাদানের প্রধান ভিত্তি।
খ. Periphery বা প্রান্তিক উপাদান। আচরণ বিধি হচ্ছে প্রান্তিক উপাদানের অন্যতম ভিত্তি ।
Ted Robert Gurr বলেছেন যে, “আঘাত যদি Core বা মৌল উপাদানে হয় তখন প্রতিরোধ তীব্র হয়। এ আঘাত যদি Periphery বা প্রান্তিক উপাদানে হয় তখন প্রতিরোধ কম হয়।"
মূল্যায়ন : আফ্রিকানরা কেন প্রতিরোধ করেছিল এ সম্পর্কে বিভিন্ন ঐতিহাসিক, লেখক, সমাজবিজ্ঞানী গবে করেছেন এবং তাদের মতামত দিয়ে তা ব্যাখ্যা করে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু প্রায় সকল মতামতেই কোন না কে ত্রুটি বা পক্ষপাতিত্ব রয়েছে। কিন্তু ঐতিহাসিক Ted Robert Gurr এর মন্তব্য নির্ভুল । তাই আমরা তাঁর মতামতকে করে বলতে পারি যে, আফ্রিকার ক্ষেত্রে তাঁর মতামতটি প্রযোজ্য। যেমন- আমরা দেখেছি, যখন ইউরোপীয়রা আফ্রিক উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যবসায় বাণিজ্য করেছে তখন আফ্রিকানরা তাদের সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু যখনই তারা ভিন্ন প্রবেশের চেষ্টা করেছে তখনই আফ্রিকানদের বাধার সম্মুখীন হয়েছে এবং যখন ইউরোপীয়রা আরও ভিতরে প্রবেশ করে তখন আফ্রিকানরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে । তাই রবার্ট গারের তত্ত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, আফ্রিকায় ইউরোপীয় উপনিবে স্থাপনের প্রথম পর্যায়ে কোন বাধার সম্মুখীন হতে হয় নি। কিন্তু পরবর্তী পর্যায় আফ্রিকানরা প্রতিরোধ আন্দোলন গা তোলে। এ প্রতিরোধের কারণ নিয়ে তিন ধরনের মতামত প্রকাশ হলেও কোনটিই পূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে পারে নি। তবে Ta Robert Gurr যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ এবং আফ্রিকার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য।

প্রতিরোধের প্রাথমিক পর্যায়ে আফ্রিকানরা কেন ইউরোপীয়দেরকে সাহায্য করেছিল?


অথবা, প্রতিরোধের প্রাথমিক পর্যায়ে আফ্রিকানরা ইউরোপীয়দেরকে সাহায্যের কারণস
বর্ণনা কর।
অথবা, কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আফ্রিকানরা ইউরোপীয়দের প্রাথমিক পর্বে সহযোগিত
করেছিল? ব্যাখ্যা কর ।
অথবা, কেন ইউরোপীয়রা প্রথমে আফ্রিকায় সহজে প্রবেশ করতে পেরেছিল? এক্ষেতে
আফ্রিকানদের ভূমিকা কী ছিল? ব্যাখ্যা কর ।
অথবা, ইউরোপীয়দের আফ্রিকানদের সহযোগিতামূলক আচরণের কারণ/প্রেক্ষাপট/পটভূ
আলোচনা কর ।
অথবা, ইউরোপীয়দের আগমনের প্রাথমিক পর্বে আফ্রিকানদের সাহায্য করার পটভূ
আলোচনা কর ।
উত্তরঃ ভূমিকা : অষ্টাদশ শতকে ইউরোপীয় দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে যা শিল্পবিপ্লব নামে পরিচিত এ শিল্পবিপ্লবের ফলে ইউরোপে প্রচুর শিল্পপণ্য উৎপন্ন হতে থাকে এবং এর জন্য কাঁচামাল ও বাজারের প্রয়োজনীয়তা ে দেয়। তাছাড়া শিল্পবিপ্লবের ফলে পুঁজিবাদী শ্রেণির হাতে প্রচুর পুঁজি সমাগম হতে থাকায় পুঁজির বিনিয়োগ করার ম ক্ষেত্রের অভাব দেখা দেয়। এসব কারণে ইউরোপীয়রা বিভিন্ন দেশে বেরিয়ে পড়ে এবং কতিপয় দেশে তাদের
উপনিবে
স্থাপন করে। এ অবস্থার প্রেক্ষাপটে উনিশ শতকের শেষে ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকায় প্রবেশ করে সেখানে তালে উপনিবেশ স্থাপনে সক্ষম হয়। এ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার পিছনে আফ্রিকানদের বড় ভূমিকা নিহিত ছিল। কারণ উপনিবে
প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পর্বে আফ্রিকানরা ইউরোপীয়দের সহায়তা করেছিল।
আফ্রিকায় ইউরোপীয় উপনিবেশ : উনিশ শতকের প্রথম দিকে ইউরোপীয় বণিক শ্রেণি বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে আফ্রিকায় আগমন করে এবং সেই সাথে ইউরোপীয় পর্যটক শ্রেণিও আফ্রিকায় আসে। তারা আফ্রিকার প্রাকৃতিক সম্পদ ও ঐশ্বর্য দেখে প্রলুব্ধ হয়ে পড়ে এবং ইউরোপীয় শক্তিবর্গকে আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপনে উৎসাহিত করে তোলে। এ অবস্থার প্রেক্ষাপটে ১৮৮০ এর দশকে ইউরোপীয় শক্তিবর্গ স্ক্র্যাম্বলের মাধ্যমে আফ্রিকায় প্রবেশ করে এবং পরবর্তী ত্রিশ বছরের মধ্যে সমগ্র আফ্রিকা দখল করে নিয়ে সেখানে তাদের উপনিবেশ স্থাপন করে।
ইউরোপীয় শক্তিবর্গকে আফ্রিকানদের সহযোগিতার কারণ : আফ্রিকায় ইউরোপীয়রা যখন প্রবেশ করে তখন তাদের সাথে ছিল উন্নত সমরাস্ত্র, বন্দুক ও গানপাউডার যা যুদ্ধক্ষেত্রে সফলতা বয়ে আনার পক্ষে সহায়ক ছিল। কারণ আফ্রিকানদের হাতে ছিল পুরানো যুগের তীর, ধনুক, বলম ইত্যাদি। তাছাড়া আফ্রিকানরা ছিল গোত্রভিত্তিকভাবে দুর্বল রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অধিবাসী। তবে এসব কারণ ছাড়াও আরেকটি বড় কারণ ছিল যা ইউরোপীয়দের উপনিবেশ স্থাপনে সাহায্য করেছিল; তা হচ্ছে প্রাথমিক পর্বে আফ্রিকানদের সহযোগিতামূলক আচরণ। এ সহযোগিতার জন্য ইউরোপীয়দের পক্ষে আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন সহজতর হয়েছিল। আফ্রিকানরা যে ইউরোপীয়দের সহযোগিতা করেছিল তার পিছনে দুটি কারণ নিহিত ছিল । যথা : ক. রাজনৈতিক কারণ ও খ. অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কারণ । নিম্নে এ সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :
ক. রাজনৈতিক কারণ : ইউরোপীয়দেরকে প্রাথমিক পর্যায় আফ্রিকানদের সহযোগিতামূলক আচরণের প্রধান কারণ ছিল রাজনৈতিক স্বার্থগত কারণ। রাজনৈতিক কারণেই তারা ইউরোপীয়দেরকে সহযোগিতা করেছিল। এ রাজনৈতিক কারণ আবার কয়েকটি ভাগে বিভক্ত।
১. আত্মসম্মান বা মর্যাদা রক্ষা : আফ্রিকার অনেক গোত্র ছিল বৃহত্তর ও শক্তিশালী। তারা আফ্রিকান সমাজে বিশেষ সম্মানের আসনে ছিল। ইউরোপীয়রা যখন আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন করে তখন তাদের এ সম্মান হারানোর ভয় ছিল এবং এমনকি রাজ্য হারানোর ভয় ছিল। কারণ তারা ইউরোপীয়দের চেয়ে শক্তিশালী ছিল না। তাই এসব গোত্র আফ্রিকান সমাজে নিজেদের আত্মসম্মান বা মর্যাদা রক্ষা করার জন্য ইউরোপীয়দের সহযোগিতা করেছে । যেমন- নাইজেরিয়ায় ইউরুবা গোত্র প্রধান ।
২. শক্তি বৃদ্ধি : আফ্রিকায় কিছু কিছু গোত্র নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ইউরোপীয়দের সহযোগিতা করেছে। কারণ তারা নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করে অন্য গোত্রকে পরাজিত করে তার বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করার সুপ্ত ইচ্ছা পোষণ করত। যেমন- জাঞ্জিবার অঞ্চলের মিরাম্বো গোত্র, পূর্ব আফ্রিকা অঞ্চলের হানগু গোত্র প্রভৃতি।
৩. বড় গোত্রের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া : আফ্রিকায় বহু গোত্র রয়েছে এবং এগুলোর মধ্যে অনেক গোত্র ছোট ও দুর্বল। এসব দুর্বল গোত্র প্রায়ই বড় গোত্র দ্বারা অত্যাচারিত ও নির্যাতিত হতো। তাই এসব দুর্বল গোত্র বড় গোত্রের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ইউরোপীয়দের সাথে বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে সহযোগিতা করেছে। যেমন- পশ্চিম আফ্রিকার বড় গোত্র আশান্টির হাত থেকে রক্ষার জন্য ছোট গোত্র বারোস্টে ব্রিটিশদের সাথে চুক্তি করেছে।
৪. দাসপ্রথা থেকে রক্ষা পাওয়া : ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকায় আগমন করে দাস ব্যবসার জন্য এবং পর্তুগিজরা ছিল এর প্রবর্তক। পরবর্তী অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তি এর সাথে জড়িত হয়। ইউরোপীয়রা আফ্রিকানদের ধরে দাস বানাতো এবং ইউরোপ ও আমেরিকায় বিক্রি করে দিত। পরবর্তীতে ব্রিটিশ (১৮৩২ সালে) এবং ফ্রান্স তার সাম্রাজ্যে দাস ব্যবসায় নিষিদ্ধ করে। ফলে আফ্রিকানরা দাস ব্যবসায়ীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ইউরোপীয়দের বিশেষ করে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সাথে চুক্তি করেছে।
৫. অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা : ইউরোপীয়রা আফ্রিকায় আগমন করে এবং উপনিবেশ স্থাপন নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত থাকে। এ সুযোগ গ্রহণ করে আফ্রিকান কিছু গোত্র, তারা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ইউরোপীয় শক্তিবর্গের একদেশের সাথে চুক্তি করেছে অন্যদেশের বিরুদ্ধে এবং ইউরোপীয়দের মধ্যে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত করে দিয়েছে। যেমন- নাইজেরিয়ার ইয়ালো গোত্র নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য প্রথমে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ফরাসি জেনারেল এল. টি. মিজোনের সাথে চুক্তি করেছে। আবার ফরাসিদের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ রয়েল নাইজার কোম্পানির সাথে চুক্তি করেছে।
খ. অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কারণ : ইউরোপীয়রা আফ্রিকায় আগমন করে ব্যবসায় বাণিজ্যের জন্য এবং তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিল করার জন্য। কিন্তু এতে আফ্রিকানদেরও কিছু অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থ জড়িত ছিল। তাই তারা ইউরোপীয়দের সহযোগিতা করেছে। নিম্নে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কারণগুলো দেয়া হলো :
১. মধ্যস্বত্বভোগী বা দালাল শ্রেণি : ইউরোপীয়রা প্রথমে আফ্রিকার ভিতরে উপনিবেশ স্থাপন করতে পারে নি তাছাড়া প্রথমে ইউরোপীয়দের আফ্রিকায় আগমনের প্রধান কারণ ছিল বাণিজ্যিক। অর্থাৎ তারা আফ্রিকা থেকে দাস, হীরা হাতির দাঁত ও কাঠ নিয়ে যাবে। এ লক্ষ্যে তারা আফ্রিকায় উপকূলীয় অঞ্চলে আগমন করে তাদের ব্যবসায় বাণিজ্য চালিে যায়। ইউরোপীয়দের এ কাজে সহযোগিতা করে আফ্রিকায় একশ্রেণির লোক যারা আফ্রিকার ভিতর থেকে দাসসহ অন্যান দ্রব্য ইউরোপীয়দের এনে দিত। এরা মধ্যস্বত্বভোগী বা দালাল শ্রেণি নামে পরিচিত। এরাই প্রথমে ইউরোপীয়নে সহযোগিতা করেছে।
২. ইউরোপীয় পণ্যের চাহিদা : আফ্রিকায় ইউরোপীয়রা যেসব পণ্যসামগ্রী নিয়ে আসত তার মধ্যে কাপড়, অলংকার গানপাউডার, অ্যালকোহল, বন্দুক, কুইনাইন, তৈজসপত্র প্রভৃতি। এসব পণ্যের চাহিদা আফ্রিকানদের কাছে ছিল ব্যাপক তাই তারা এসব পণ্য পাওয়ার জন্য ইউরোপীয়দের সাহায্য করেছে।
৩. আগ্নেয়াস্ত্র ও গানপাউডারের চাহিদা : আফ্রিকা ছিল গোত্র বিভাজিত সমাজকাঠামো এবং এখানে প্রায়ই গোষ্ঠ সংঘাত লেগে থাকত। এ সংঘাতের কারণে বিভিন্ন গোত্রের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ও গানপাউডারের ব্যাপক চাহিদা ছিল। কা এসব অস্ত্র পাওয়ার জন্য তারা ইউরোপীয়দের সহযোগিতা করেছে।
৪. বাণিজ্যিক চুক্তি : আফ্রিকানরা ইউরোপীয়দের সহযোগিতা করেছে বিভিন্ন সময়ে প্রণীত বাণিজ্যিক চুক্তি কারণে । আফ্রিকার বিভিন্ন গোত্র বিভিন্ন সময় সামান্য স্বার্থের জন্য দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ-
ক. তাঞ্জানিয়ার তাজুরা গোত্র : দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থিত তাঞ্জানিয়ার তাজুরা গোত্র প্রধান ব্রিটেনের সাথে এর বাণিজ্যিক চুক্তি করে যা দেশের জন্য ক্ষতি বয়ে এনেছিল। এ চুক্তির শর্ত ছিল যে, ব্রিটেন তাকে মাত্র ১০ ব্যাগ চাল নি এবং বিনিময়ে তিনি ব্রিটেনকে মুসা দ্বীপটি দিয়ে দিবে।
খ. মেটাবেল ল্যান্ড গোত্র : দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থিত জাম্বিয়ার মেটাবেল ল্যান্ড গোত্রের প্রধান লোবিং গোলার স ব্রিটিশ সাউথ আফ্রিকান গোষ্ঠীর প্রধান সিসিল রোডসের একটি বাণিজ্যিক চুক্তি হয়। এতে বলা হয় যে, লোবিং গোলা ব্রিটেন প্রতিমাসে ১০০০ পাউন্ড বন্দুকের গুলি দিবে এবং হাম্বেসী নদীতে চলাচলের উপযোগী একটি স্টিম বোর্ড দিে বিনিময়ে সিসিল রোডস উক্ত অঞ্চলে একচেটিয়া বাণিজ্যিক অধিকার লাভ করবে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকায় আগ করে এবং উপনিবেশ স্থাপনের প্রথম পর্যায় তারা আফ্রিকানদের সাহায্য ও সহযোগিতা লাভ করে। অবশ্য আফ্রিকা কতিপয় কারণে ইউরোপীয়দের সাহায্য করে যার মধ্যে ইউরোপীয় পণ্যের চাহিদা, বাণিজ্যিক স্বার্থ ও রাজনৈতিক অন্যতম। তবে আফ্রিকানদের মধ্যে গোত্রীয় দ্বন্দ্বই ইউরোপীয়দের সাহায্যের প্রধান কারণ। যাহোক, আফ্রিকান সহযোগিতা নিয়েই অতি সহজে ইউরোপীয়রা আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিল। তাই বলা যায় আফ্রিকানরা নিজের ক্ষতি নিজেরাই করেছিল।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]