আফ্রিকান জাতীয়তাবাদ বিকাশে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণ লিখ।

উত্তর ভূমিকা : আফ্রিকান জাতীয়তাবাদ বিকাশে আফ্রিকার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থা সহায়তা করেছিল। প্রাক ঔপনিবেশিক আমলে আফ্রিকায় গোত্রতান্ত্রিক সমাজ কাঠামো ছিল। কিন্তু ঔপনিবেশিক প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর আফ্রিকার সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনীতি নতুন মাত্রা লাভ করে। ঔপনিবেশিক শাসনের প্রাথমিক পর্বে আফ্রিকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি ধীরগতি হলেও স্বল্প পরিসরে যন্ত্রনির্ভর আধুনিকীকরণ এ সময়েই শুরু হয় শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে আফ্রিকার শ্রম ও প্রাকৃতিক সম্পদের আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে আইন- শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং তারই দায়ভাগে আফ্রিকানদের মধ্যে নতুন এলিট শ্রেণি সৃষ্টি ছিল এ সময়ের পরিবর্তনের প্রকৃতি অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও পরিবর্তন সূচিত হয়। বিশ শতকের দ্বিতীয় দশক থেকেই আফ্রিকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে উঠে, যা আফ্রিকান জাতীয়তাবাদ বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা রাখে ।
সামাজিক কারণ : ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকায় ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার পর দ্রুত শহরায়ন ঘটেছিল থাক ঔপনিবেশিক আমলে মিশরের কায়রো ও আলেকজান্দ্রিয়া ছিল গুরুত্বপূর্ণ শহর। ঔপনিবেশিক শাসনামলে শহরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে আফ্রিকায় সামাজিক স্তরবিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। এ সময়ে মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব হয় ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকায় গোত্রপ্রথা বিলুপ্ত করায় গোত্রের বন্ধন থেকে বেরিয়ে এসে একদল লোক শিক্ষা লাভের আশায় শহরে আসে। যে শ্রেণি শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে শহরে আসে তারা আঞ্চলিকতার উর্ধ্বে উঠে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে পরিণত হয়। অন্যদিকে, কাজের সন্ধানে যে শ্রেণি শহরে আসে তারা বেতনভোগী শ্রেণিতে পরিণত হয়। বিভিন্ন বাণিজ্য কেন্দ্র, বন্দর ও খনিগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে শহর। এসব শহরগুলোতে নানাবিধ সমস্যা পরিলক্ষিত হয় দরিদ্র, বঞ্চিত, শোষিত শ্রেণি শহরের বস্তিতে আশ্রয় গ্রহণ করে। এ বৃহত্তর বঞ্চিত জনগোষ্ঠী নিজেদেরকে একত্রিত করে এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এভাবে আফ্রিকায় জাতীয়তাবাদ বিকাশ লাভ করে।
ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকায় পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তন করায় একশ্রেণীর লোক পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত হয়। এসব শিক্ষিত আফ্রিকানদের অনেকে উচ্চশিক্ষার ন্য ইউরোপে যায় এবং সেখানে গিয়ে তারা আধুনিক মূল্যবোধ, মানবতাবোধ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ইত্যাদি ধারণা সম্পর্কে অবগত হয়। এসব শিক্ষিত আফ্রিকান দেশে ফিরে গিয়ে তাদের আদর্শ প্রয়োগ করতে যেে ইউরোপীয় শক্তির বাধার সম্মুখীন হয়। ফলে তাদের মধ্যে জাতীয়তাবাদের চেতনা প্রবল হয়ে উঠে। এছাড়া ঔপনিবেশিক শক্তিবর্গ নিজেদের স্বার্থে আফ্রিকার যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করেছিল। রেলপথ, সড়কপথ, নৌপথ প্রভৃতি উন্নয়নের ফলে আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলের দূরত্ব কমে যায় এবং তারা একে অন্যের সাথে নিজেদের ভাবধারা বিনিময় করে। এভাবে গোত্রের বন্ধন থেকে ছিন্ন করে এক ধরনের সামাজিক গতিশীলতা সৃষ্টি হয়, যা আফ্রিকান জাতীয়তাবাদ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অর্থনৈতিক কারণ : প্রাক ঔপনিবেশিক আমলে আফ্রিকায় ভূমিতে গোষ্ঠীয় মালিকানা ছিল। ভূমিতে গোষ্ঠীয় মালিকানা আফ্রিকার অর্থনৈতিক উন্নতির প্রতিবন্ধক ছিল। তাছাড়া যৌথপরিবার প্রথা ও গৃহপালিত দাসপ্রথাও আফ্রিকার অর্থনৈতিক উন্নতির পরিপন্থী ছিল বলে ব্যক্তিকেন্দ্রিক ধনতন্ত্রী সমাজের ঐতিহাসিকেরা মনে করেন। ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার পর ভূমিতে ব্যক্তিমালিকানা সৃষ্টি হয়। ব্যক্তিমালিকানার ফলে ধনী শ্রেণি কৃষকের হাতে পুঁজির সমাবেশ ঘটে সমাজে এ পরিবর্তনের ফলে ধনী ও দরিদ্র শ্রেণির ব্যবধান বৃদ্ধি পায় ৷
ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার পর ইউরোপীয়রা আফ্রিকার খাদ্যশস্যের পরিবর্তে রপ্তানিমুখী অর্থকরী ফসল উৎপাদনের উপর গুরুত্বারোপ করে। রাস্তাঘাট, রেলপথ ও নৌপথ উন্নয়নের ফলে কৃষির বাণিজ্যিকীকরণ হলে কার ইকোনমির উদ্ভব হয়। এর ফলে আফ্রিকার অর্থনীতির কাঠামোগত পরিবর্তন আসে। কোকো, সোনা, রবার, কার, কোলাবাদাম, চা, কফি প্রভৃতি রপ্তানি দ্রব্য আফ্রিকায় ব্যাপকভাবে উৎপাদন শুরু হয়। ১৮৫৭ সালে মিশনারিদের প্রচেষ্টায় আফ্রিকায় প্রথম কোকো চাষ হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে দ্রুত কোকো চাষ বৃদ্ধি পায় এবং ১৯১০ সালের মধ্যে ঘানা পৃথিবীর বৃহত্তম কোকো রপ্তানিকারক দেশ হয়ে উঠে। কতিপয় লেখক (Meek, Mcmillan, Hussey) এর মতে, কোকে দিয়ে অংশগ্রহণকারী আফ্রিকানরা সনাতনী চাষি ছিলেন না, প্রকৃতপক্ষে তারা ছিলেন মধ্যবিত্ত, উদ্যোগী ও শিক্ষিত বণিক শ্রেণি। উপনিবেশিক অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্য থেকেই এই মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব ও বিকাশ লাভ করে। এই নতুন শ্রেণি শিক্ষিত ছিল এবং এরা গোত্রীয় আনুগত্য মানতে যেমন রাজি ছিল না তেমনি ঔপনিবেশিক শাসন মানতে রাজি ছিল না পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে তারা ঔপনিবেশিক শাসন মেনে নিতে অস্বীকার করে। আফ্রিকার জাতীয়তাবাদ বিকাশে এই সমাধিত শ্রেণি বিশেষ ভূমিকা রাখে।

আফ্রিকান জাতীয়তাবাদ বিকাশে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণ লিখ।


উত্তরঃ ভূমিকা : আফ্রিকান জাতীয়তাবাদ বিকাশে আফ্রিকার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সহায়তা করেছিল। প্রাক ঔপনিবেশিক আমলে আফ্রিকায় গোত্রতান্ত্রিক সমাজ কাঠামো ছিল। কিন্তু ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর আফ্রিকার সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনীতি নতুন মাত্রা লাভ করে। ঔপনিবেশিক শাসনের প্রাথমিক পর্বে আফ্রিকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি ধীরগতি হলেও স্বল্প পরিসরে যন্ত্রনির্ভর আধুনিকীকরণ এ সময়েই শুরু হয়। শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে আফ্রিকার শ্রম ও প্রাকৃতিক সম্পদের আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে আইন- শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং তারই দায়ভাগে আফ্রিকানদের মধ্যে নতুন এলিট শ্রেণি সৃষ্টি ছিল এ সময়ের পরিবর্তনের প্রকৃতি অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও পরিবর্তন সূচিত হয়। বিশ শতকের দ্বিতীয় দশক থেকেই আফ্রিকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে উঠে, যা আফ্রিকান জাতীয়তাবাদ বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
সামাজিক কারণ : ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকায় ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার পর দ্রুত শহরায়ন ঘটেছিল। প্রাক ঔপনিবেশিক আমলে মিশরের কায়রো ও আলেকজান্দ্রিয়া ছিল গুরুত্বপূর্ণ শহর। ঔপনিবেশিক শাসনামলে শহরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে আফ্রিকায় সামাজিক স্তরবিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। এ সময়ে মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব হয় ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকায় গোত্রপ্রথা বিলুপ্ত করায় গোত্রের বন্ধন থেকে বেরিয়ে এসে একদল লোক শিক্ষা লাভের আশায় শহরে আসে। যে শ্রেণি শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে শহরে আসে তারা আঞ্চলিকতার ঊর্ধ্বে উঠে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে পরিণত হয়। অন্যদিকে, কাজের সন্ধানে যে শ্রেণি শহরে আসে তারা বেতনভোগী শ্রেণিতে পরিণত হয়। বিভিন্ন বাণিজ্য কেন্দ্র, বন্দর ও খনিগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে শহর। এসব শহরগুলোতে নানাবিধ সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। দরিদ্র, বঞ্চিত, শোষিত শ্রেণি শহরের বস্তিতে আশ্রয় গ্রহণ করে। এ বৃহত্তর বঞ্চিত জনগোষ্ঠী নিজেদেরকে একত্রিত করে এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করে । এভাবে আফ্রিকায় জাতীয়তাবাদ বিকাশ লাভ করে।
ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকায় পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তন করায় একশ্রেণীর লোক পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত হয়। এসব শিক্ষিত আফ্রিকানদের অনেকে উচ্চশিক্ষা ণ্য ইউরোপে যায় এবং সেখানে গিয়ে তারা আধুনিক মূল্যবোধ, মানবতাবোধ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ইত্যাদি ধারণা সম্পর্কে অবগত হয়। এসব শিক্ষিত আফ্রিকান দেশে ফিরে গিয়ে তাদের আদর্শ প্রয়োগ করতে যেয়ে ইউরোপীয় শক্তির বাধার সম্মুখীন হয়। ফলে তাদের মধ্যে জাতীয়তাবাদের চেতনা প্রবল হয়ে উঠে। এছাড়া ঔপনিবেশিক শক্তিবর্গ নিজেদের স্বার্থে আফ্রিকার যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করেছিল। রেলপথ, সড়কপথ, নৌপথ প্রভৃতি উন্নয়নের ফলে আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলের দূরত্ব কমে যায় এবং তারা একে অন্যের সাথে নিজেদের ভাবধারা বিনিময় করে। এভাবে গোত্রের বন্ধন থেকে ছিন্ন করে এক ধরনের সামাজিক গতিশীলতা সৃষ্টি হয়, যা আফ্রিকান জাতীয়তাবাদ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অর্থনৈতিক কারণ : প্রাক ঔপনিবেশিক আমলে আফ্রিকায় ভূমিতে গোষ্ঠীয় মালিকানা ছিল। ভূমিতে গোষ্ঠীয় মালিকানা আফ্রিকার অর্থনৈতিক উন্নতির প্রতিবন্ধক ছিল। তাছাড়া যৌথপরিবার প্রথা ও গৃহপালিত দাসপ্রথাও আফ্রিকার অর্থনৈতিক উন্নতির পরিপন্থী ছিল বলে ব্যক্তিকেন্দ্রিক ধনতন্ত্রী সমাজের ঐতিহাসিকেরা মনে করেন। ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার পর ভূমিতে ব্যক্তিমালিকানা সৃষ্টি হয়। ব্যক্তিমালিকানার ফলে ধনী শ্রেণি কৃষকের হাতে পুঁজির সমাবেশ ঘটে। সমাজে এ পরিবর্তনের ফলে ধনী ও দরিদ্র শ্রেণির ব্যবধান বৃদ্ধি পায় ।
1
ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার পর ইউরোপীয়রা আফ্রিকার খাদ্যশস্যের পরিবর্তে রপ্তানিমুখী অর্থকরী ফসল উৎপাদনের উপর গুরুত্বারোপ করে। রাস্তাঘাট, রেলপথ ও নৌপথ উন্নয়নের ফলে কৃষির বাণিজ্যিকীকরণ হলে ক্যাশ ইকোনমির উদ্ভব হয়। এর ফলে আফ্রিকার অর্থনীতির কাঠামোগত পরিবর্তন আসে। কোকো, সোনা, রবার, কোলাবাদাম, চা, কফি প্রভৃতি রপ্তানি দ্রব্য আফ্রিকায় ব্যাপকভাবে উৎপাদন শুরু হয়। ১৮৫৭ সালে মিশনারিদের প্রচেষ্টায় আফ্রিকায় প্রথম কোকো চাষ হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে দ্রুত কোকো চাষ বৃদ্ধি পায় এবং ১৯১০ সালের মধ্যে ঘানা পৃথিবীর বৃহত্তম কোকো রপ্তানিকারক দেশ হয়ে উঠে । কতিপয় লেখক (Meek, Mcmillan, Hussey) এর মতে, কোকো শিল্পে অংশগ্রহণকারী আফ্রিকানরা সনাতনী চাষি ছিলেন না, প্রকৃতপক্ষে তারা ছিলেন মধ্যবিত্ত, উদ্যোগী ও শিক্ষিত বণিক শ্রেণি। ঔপনিবেশিক অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্য থেকেই এই মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব ও বিকাশ লাভ করে। এই নতুন শ্রেণি শিক্ষিত ছিল এবং এরা গোত্রীয় আনুগত্য মানতে যেমন রাজি ছিল না তেমনি ঔপনিবেশিক শাসন মানতে রাজি ছিল না। পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে তারা ঔপনিবেশিক শাসন মেনে নিতে অস্বীকার করে। আফ্রিকার জাতীয়তাবাদ বিকাশে এই মধ্যবিত্ত শ্রেণি বিশেষ ভূমিকা রাখে।
রাজনৈতিক কারণ : প্রাক ঔপনিবেশিক আমলে আফ্রিকায় গোত্রীয় শাসনব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার হওয়ার পর গোত্রতন্ত্রের বিলুপ্তি ঘটে এবং সমাজে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়। এ শূন্যতা পূরণে এগিয়ে আসে পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত আফ্রিকান নেতৃবৃন্দ। এদের প্রচেষ্টায় বিশ শতকের দ্বিতীয় দশক থেকেই আফ্রিকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে উঠে। যেমন- ১৯১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় African National Congress, ১৯১৮ সালে ঘানায় National Congress of British West Africa, ১৯১৮ সালে West African Student Union, ১৯৫৩ সালে Central African Federation প্রভৃতি সংগঠন গড়ে উঠে। এসব সংগঠনের মাধ্যমে আফ্রিকায় জাতীয়তাবাদী আন্দোলন পরিচালিত হয়। প্রথম পর্যায়ে বিচ্ছিন্নভাবে এ কর্মকাণ্ড পরিচালিত হলেও পরবর্তীকালে বিভিন্ন আফ্রিকান নেতৃকাণ্ড রাজনৈতিক সংগঠনের মাধ্যমে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আফ্রিকায় জাতীয়তাবাদী আন্দোলন স্বাধীনতা আন্দোলনে পরিণত হয়।
দুই মহাযুদ্ধের অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয়তাবাদ ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় এবং তা শেষ হয় ১৯১৯ সালে। আবার ১৯৩৯ সালের ১লা সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়, যা শেষ হয় ১৯৪৫ সালে। এ দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে সময়ের ব্যবধান মাত্র ২০ বছর এবং এ ২০ বছর সময়কালকে বলা হয় দু"বিশ্বযুদ্ধের অন্তর্বর্তীকালীন সময়। এসময় আফ্রিকান জাতীয়তাবাদের বিকাশপর্ব। প্রথম মহাযুদ্ধে আফ্রিকানদের সৈনিক হিসেবে ইউরোপে পাঠানো হয় এবং যুদ্ধের অভিজ্ঞতা নিয়ে তারা দেশে ফিরে আসে। দেশে ফিরে তারা ঔপনিবেশিক শাসকদের শোষণ সম্পর্কে অবহিত হয় এবং ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়, যা জাতীয়তা বা উন্মেষের পথে প্রথম পদক্ষেপ। এরপর এসময়ে তাদের জাতীয়তাবাদ বিকাশ হতে থাকে ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আফ্রিকান জাতীয়তাবাদ ভিন্ন ও স্বতন্ত্র ধারায় গড়ে উঠেছে এবং এ জাতীয়তাবাদ হঠাৎ করে একদিনে একটি মাত্র কারণে উদ্ভব ও বিকাশ হয় নি।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]