ঘানার স্বাধীনতাত্তর রাজনৈতিক পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধর।

ঘানার স্বাধীনতা পরবর্তী অবস্থা বর্ণনা কর।
অথবা, ঘানার স্বাধীনতাত্তর রাজনৈতিক পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধর।
অথবা, স্বাধীনতা পরবর্তী ঘানার রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশ সম্পর্কে যা জান লিখ।
উত্তরা ভূমিকা : বর্তমান ঘানার সূত্রপাত ঘটে আশান্টে রাজ্যের দক্ষিণমুখী সম্প্রসারণে এবং উপকূলবর্তী ফান্টে রাজ্যে আধিপত্য বিস্তারে। ১৮০৭ সালে উপকূলে ফান্টে অধিকার প্রায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং পরবর্তীতে এ অঞ্চলে আসে ইউরোপীয় শক্তি পর্তুগাল। তারা এখানে এসে ব্যবসায় বাণিজ্য শুরু করে এবং এর সূত্র ধরে বিভিন্ন ইউরোপীয় শক্তিবর্গের আগমন ঘটে। সর্বশেষে আসে ব্রিটিশ শক্তি এবং তারা ঘানায় ঔপনিবেশিক শাসন কায়েম করে। এক সময় ঘানায় জাতীয়তাবাদী আন্দোলন শুরু হয় এবং ড. নক্রুমার নেতৃত্বে ১৯৫৭ সালে ঘানা স্বাধীন হয়। স্বাধীনতাত্তোর ঘানার শাসক হন ড. নক্রুমা। কিন্তু তিনি ব্যর্থতার পরিচয় দেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে এবং এরই সূত্র ধরে বার বার ঘানা সামরিক অভ্যুত্থানের শি র হয়। অবশেষে ২০০০ সালে ঘানায় গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
স্বাধীনতা পরবর্তী ঘানা : নিম্নে স্বাধীনতা পরবর্তী ঘানার রাজনৈতিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরা হলো :
ড. নক্রুমার শাসন নীতি : ঘানার স্বাধীনতার পর প্রথম প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন ড. নক্রুমা এবং তিনি ১৯৬০ সালে সাধারণ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন। তিনি ঘানার শাসনব্যবস্থায় সমাজতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করেন এবং তা স আফ্রিকায় বিস্তারের চেষ্টা করেন। ক্রমান্বয়ে তিনি সমস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন এবং স্বৈরাচারী শাসকে পরিণত হন এরপর তিনি তাঁর শাসন নীতিতে একনায়কতন্ত্রের পথ অনুসরণ করেন। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য তিনি কতিপয় স্বৈরাচারী
পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যেমন-
১. ১৯৫৮ সালে সংবিধান সংশোধনী বিল পাস করেন।
২. ১৯৫৯ সালে প্রণয়ন করেন 'বিনা বিচারে আটক' আইন যার উদ্দেশ্য ছিল বিরোধীদলের রাজনৈতিক
নেতৃবৃন্দকে দমন ও নির্যাতন করা।
৩. ১৯৬০ সালে সংবিধান সংশোধন করে ঘানাকে প্রজাতন্ত্রী সরকার ঘোষণা করা।
৪. ১৯৬০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর নিজেকে জাতির জনক হিসেবে ঘোষণা করা।
৫. ১৯৬১ ও ১৯৬২ সালে পর পর দুইবার ঘানায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা।
৬. ১৯৬৪ সালে সকল রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
৭. রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে তাঁর মূর্তির পাশে স্থাপনকৃত যিশুর মূর্তি ভেঙে ফেলা।
৮. সমাজতান্ত্রিক দেশ হওয়া সত্ত্বেও পুঁজিবাদী বিশ্ব হতে বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করা।
৯. সমাজতান্ত্রিক নেতৃবৃন্দের কথা অগ্রাহ্য করে একতরফাভাবে ভোল্টা বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়নে ইঙ্গ-মার্কিন কোম্প
হতে অর্থ গ্রহণ করা।
১০. সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিজ দলীয় লোকদের নিয়োগ করা।
ড. নতুষার পতন : ড. নক্রুমা ছিলেন স্বাধীনতার জনক ও জাতীয়তাবাদী নেতা এবং তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই মানার স্বাধীনতা আসে। কিন্তু স্বাধীনতার পর ঘানার শাসনক্ষমতা হাতে পেয়ে তিনি ঘানাকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারেন নি। ফলে তার পতন ত্বরান্বিত হয়। কারণ তিনি যেসব স্বৈরাচারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন তা ঘানার জনগণ মেনে নিতে পারে নি। এমনকি তাঁর শাস। নীতিতে বিদেশি শক্তিবর্গও অসন্তোষ প্রকাশ করে। এ সুযোগ গ্রহণ করে ঘানার সেনাবাহিনী কুমাকে সরিয়ে শাসনক্ষমতা দখল করে নেয়। ফলে নক্রুমা সরকারের পতন ঘটে ১৯৬৬ সালে এবং ঘানায় চলে আসে সামরিক শাসন।
প্রথম সামরিক অভ্যুত্থান (১৯৬৬) : স্বাধীনতার পর রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে মानায় প্রথম সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে ১৯৬৬ সালে এবং এর নায়ক ছিলেন মেজর জেনারেল আমঞা। ড. নক্রুমা বিশেষ সফরে চীনে অবস্থান করছিলেন এবং এ সুযোগে মেজর জেনারেল আমক্রা এক রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের শাসন ক্ষমতা দখল করে নেন। ফলে ড. নক্রুমার পতন ঘটে এবং দেশে প্রথম সামরিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। জেনারেল আমক্রা ন্যাশনাল লিবারেশন কাউন্সিল নামক সংস্থা গঠন করে তার মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করতে থাকে। তিনি একটি সিভিল সরকার গঠন করতে চেষ্টা চালান। এলক্ষ্যে তিনি বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের প্রতিশ্রুতিসহ নকুমার গ্রহণ করার পরও আমক্রার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে।
দ্বিতীয় সামরিক অভ্যুত্থান (১৯৬৯) : একটি সামরিক অভ্যুত্থান আরেকটি সামরিক অভ্যুত্থানকে ডেকে আনে। ঘানার ক্ষেত্রেও এটি হয়েছে। অর্থাৎ জেনারেল আমক্রার বিরুদ্ধে কিছু দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করে মেজর জেনারেল আফ্রিকা ক্ষমতা দখল করে নেয় এবং তিনি দ্বিতীয় সামরিক শাসক হিসেবে ঘানার শাসনক্ষমতায় বসেন।
প্রথম সাধারণ নির্বাচন (১৯৬৯) : জেনারেল আফ্রিফা ক্ষমতা দখলের পর ঘানায় প্রথম সাধারণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। উক্ত নির্বাচনে প্রগ্রেসিভ পার্টির নেতা ড. কফি বুচিয়া নির্বাচিত হন। ফলে ঘানার গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। ড. কফি বুচিয়া
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন এবং তিনি একজন জ্ঞানী ও বিজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন। কিন্তু তিনি শাসন পরিচালনায় ব্যর্থতার পরিচয় দেন। কারণ ঘানা ছিল বৈদেশিক ঋণে জর্জরিত এবং এ ঋণ পরিশোধের জন্য বিদেশ থেকে চাপ আসে। কিন্তু এ ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। কারণ ঋণ পরিশোধের জন্য তিনি তিনটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যেমন-
১. মুদ্রার অবমূল্যায়ন,
২. ঘানায়ান ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস নিষিদ্ধ ও
৩. আমদানি নিষিদ্ধকরণ।
এসব পদক্ষেপের ফলে ঘানার গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ হয় এবং জনগণ অসন্তুষ্ট হয়। ফলে ড. কফি বুচির জনপ্রিয়তা হ্রাস পায় এবং তাঁর পতনের পথ প্রশস্ত হয়।
তৃতীয় সামরিক অভ্যুত্থান (১৯৭২) : ড. কফি বুচির পদক্ষেপে ঘানার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হয় এবং এ সুযোগ গ্রহণ করে কর্নেল আচিয়াম পোং তাঁকে সরিয়ে ঘানার শাসনক্ষমতা দখল করে নেয়। ফলে ঘানায় তৃতীয়বারের মত সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে ১৯৭২ সালে। আচিয়াম পোং শাসনক্ষমতা দখল করার পর মিলিটারি কাউন্সিল গঠন করেন এবং তিনি এ সংস্থার মাধ্যমে শাসনকার্য পরিচালনা করতে থাকেন। কিন্তু আচিয়াম পোং শাসন পরিচালনায় দুর্নীতির আশ্রয় নেয় । ফলে তাঁর পতন নিশ্চিত হয় ।
চতুর্থ সামরিক অভ্যুত্থান (১৯৭৮) : ঘানা আবার সামরিক অভ্যুত্থানের কবলে পড়ে এবং এ সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত হয় ১৯৭৮ সালে। এ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন মেজর জেনারেল ফ্রেড আকুফো। তিনি ঘানার শাসনক্ষমতা দখল করে সামরিক সরকার গঠন করেন। কিন্তু তিনি বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেন নি। ১৯৭৯ সালে তাঁর পতন ঘটে।
পঞ্চম সামরিক অভ্যুত্থান (১৯৭৯) : স্বাধীনতা পরবর্তী ঘানার রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে পঞ্চমবারের মতো ঘানায় সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে ১৯৭৯ সালে এবং এর নেতৃত্বে ছিলেন নতুন সামরিক অফিসার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট জেরি রোলিং। তিনি ফ্রেড আকুফোকে সরিয়ে ঘানার শাসনক্ষমতা দখল করে নেন। জেরি রোলিং ছিলেন সৎ ও সাহসী সেনা অফিসার এবং তিনি ঘানা স্কটিস পরিবারের সন্তান ছিলেন। তাই তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করার পরই ঘানার দুর্নীতি ধ্বংস করার প্রতিশ্রুতি দেন। এলক্ষ্যে তিনি প্রথমেই পূর্ববর্তী শাসকদের দুর্নীতির দায়ে বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি দেন। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ১৯৭৯ সালেই সাধারণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন।
দ্বিতীয় সাধারণ নির্বাচন (১৯৭৯) : ঘানার প্রথম সাধারণ নির্বাচনের দীর্ঘ ১০ বছর সামরিক শাসনের পর আবার সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করা হয় এবং এর আয়োজক ছিলেন জেরি রোলিং। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে বিজয়ী নে হিলিয়া লামানু। তিনি বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ ছিলেন এবং ঘানার অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতিকে তাঁর প্রথম কাজ হিসেবে গণ্য করেন। এ সময় ঘানায় চরম গোত্রীয় দ্বন্দ্ব প্রকাশ পায়। ফলে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দারুণ অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করে। এ প্রেক্ষাপটে দেশ পরিচালনায় হিলিয়া লামানু ব্যর্থতার পরিচয় দেন।
ষষ্ঠ সামরিক অভ্যুত্থান (১৯৮১) : হিলিয়া লামানু সরকারের ব্যর্থতার প্রেক্ষাপটে ঘানা আবার সামরিক অভ্যুত্থানের শিকার হন এবং ১৯৮১ সালে পুনরায় সামরিক অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন জেরি রোলিং। তিনি হিলিয়া লামানুকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে নিজে ক্ষমতা দখল করে নেন।
জেরি রোলিং সরকার : ঘানার শাসনক্ষমতার সবচেয়ে শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী শাসক ছিলেন জেরি রোলিং। তিনি পরপর দুইবার সামরিক অভ্যুত্থান ঘটান এবং দীর্ঘ ১৯ বছর শাসনক্ষমতায় ছিলেন। তিনি প্রথমে সামরিক সরকারে থাকলেও পরবর্তী বেসামরিক সরকারে চলে আসেন। অর্থাৎ তিনি ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত সামরিক শাসক ছিলেন এবং ১৯৯২ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বেসামরিক শাসনে প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এ দীর্ঘ সময় শাসনকালে তিনি কতিপয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
জন কাফুর সরকার : ঘানার সংবিধান অনুযায়ী পর পর দুই বারের বেশি কেউ প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। তাই ২০০০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জেরি রোলিং প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ছিলেন না। ফলে এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাঁর বিরোধীদলের নেতা অর্থাৎ নিউ প্যাট্রিয়াটিক পার্টির জন কাফুর। এ হিসেবে তিনিই ঘানার প্রথম বেসামরিক প্রেসিডেন্ট তিনি সফলতার সাথে ঘানাকে পরিচালিত করেন। ফলে ২০০৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং বর্তমান পর্যন্ত ক্ষমতাসীন।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, দীর্ঘ ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণের হাত থেকে ঘানার স্বাধীনতা আসে ১৯৫৭ সালে ড. নক্রুমার হাত ধরে এবং স্বাধীনতার পর তিনি ঘানার প্রেসিডেন্ট হন কিন্তু সঠিকভাবে তিনি দেশকে পরিচালনা করতে ব্যর্থ হন। ফলে তার পতন ঘটে এবং ঘানায় সামরিক শাসন চলে আসে ঘানায় একবার সামরিক অভ্যুত্থান ঘটার সুযোগে পরবর্তী ১৫ বছরের মধ্যে ছয় বার সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে এবং সর্বশেষ সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে ১৯৮১ সালে জেরি রোলিং এর নেতৃত্বে। অবশেষে ১৯৯২ সালে রোলিং এর নেতৃত্বে ঘানায় গণতন্ত্রের সূচনা হয় এবং আজ পর্যন্ত ঘানায় গণতন্ত্র টিকে আছে।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]