আফ্রিকা মহাদেশের সমস্যাগুলোর বিবরণ দাও । স্বাধীনতাউত্তর আফ্রিকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা কর।

উত্তরা ভূমিকা : পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশ হচ্ছে আফ্রিকা মহাদেশ এবং পৃথিবীর প্রচুর প্রাকৃতিক দসহ মূল্যবান খনিজ সম্পদ এ মহাদেশেই রয়েছে। অথচ আফ্রিকা মহাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে দরিদ্রতম ও অনুন্নত প। প্রচুর প্রাকৃতিক ও খনিজসম্পদ থাকা সত্ত্বেও আফ্রিকা মহাদেশ উন্নতির ধারে কাছেও যেতে পারে নি। এর পিছনে কতিপয় কারণ নিহিত, যার মধ্যে ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ প্রধান। তাছাড়া আফ্রিকার অজ্ঞতা ও সংস্কারাচ্ছন্ন ও অনেকাংশে দায়ী। স্বাধীনতার পরও আফ্রিকা মহাদেশ উন্নতির পথে অগ্রসর হতে পারে নি। এর পিছনে অাফ্রিকা মহাদেশের কতিপয় সমস্যা বিদ্যমান । অবশ্য এ সমস্যা কাটিয়ে উঠে বর্তমান আফ্রিকায় বেশকিছু সম্ভাবনাময় দিক তন নোচিত হয়েছে ।
আফ্রিকা মহাদেশের সমস্যা : স্বাধীনতার পর আফ্রিকা মহাদেশ উন্নতির পথে অগ্রসর হতে পারে নি। তারা এটা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সফল হতে পারছে না। অবশ্য এর পশ্চাতে কতিপয় সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে। নিম্নে এ সমস্যাসমূহ সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :
১. রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা : স্বাধীনতাউত্তর আফ্রিকা মহাদেশের প্রধান সমস্যা হচ্ছে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিরাজমান অস্থিতিশীলতা। এ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার জন্য কতিপয় পরিবেশ বিশেষভাবে দায়ী এর মধ্যে গোত্রীয় সংঘাত, ক্ষমতার লড়াই, জাতিগত দাঙ্গা, সামরিক শাসন প্রভৃতি প্রধান। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অস্থিতিশীলতা সমগ্র আফ্রিকার ট্রায়ন কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করছে যার জন্য আফ্রিকার দেশগুলো অনুন্নত দেশের তালিকায় রয়ে গেছে ।
২. কৃষিনির্ভর অর্থনীতি : সুপ্রাচীনকাল থেকে আফ্রিকার প্রধান পণ্যদ্রব্য হচ্ছে কৃষিপণ্য। ঔপনিবেশিকতার পূর্বে মফ্রিকানরা সংখ্যায় কম ছিল বলে নিজেদের পণ্য নিজেরা উৎপাদন করতো এবং তারা ছিল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু মধুনিক যুগে এসে তা আর সম্ভব হচ্ছে না। কারণ আধুনিক বিশ্ব শিল্পের যুগ। এ যুগে কৃষিনির্ভর অর্থনীতি দিয়ে কোন দেশ উন্নতি করতে পারে না। আফ্রিকার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।
৩. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অবহেলা : আফ্রিকার আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অবহেলা। কারণ মধুনিক শিক্ষা ও চিকিৎসার ছোঁয়া আফ্রিকায় এখনও লাগে নি। শিক্ষা ক্ষেত্রে আফ্রিকানরা অনেক পিছিয়ে এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। তাই তো আফ্রিকা মহাদেশে রোগব্যাধি লেগেই আছে। ফলে আফ্রিকার জনগণ প্রকৃত মানবসম্পদে পরিণত হতে পারছে না যার কারণে আফ্রিকা আজও অনুন্নত রয়ে গেছে।
৪. প্রশাসনিক দুর্নীতি : আফ্রিকা মহাদেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি বিশেষ করে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে। মাফ্রিকার সর্বত্র দুর্নীতিতে ছেঁয়ে গেছে যার জন্য আফ্রিকায় সমগ্র উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ দুর্নীতি সম্পর্কে বাৰ্লিন হারলেন বলেছেন, “দুর্নীতি উইপোকার মত সবকিছু নিঃশেষ করে ফেলেছে।”
৫. দুর্বল মনমানসিকতা : এক সময় বলা হতো যে, আফ্রিকান মহাদেশ অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ। এর কারণ আফ্রিকা যাধুনিক জগৎ থেকে দূরে ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ইউরোপীয়দের দ্বারা এরা আধুনিক জগতে প্রবেশ করে। তবে ইউরোপীয়দের শাসন ও শোষণ প্রক্রিয়ার ফলে আফ্রিকানদের মধ্যে হতাশা, ব্যর্থতা জন্ম নেয় যা তাদেরকে দুর্বল মানসিক জাতিতে পরিণত করে। এর ফলে তারা কোন সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, যা তাদের উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। ৬. বিশ্ব বাজারে আফ্রিকান পণ্য : ঔপনিবেশিকগণ ইচ্ছে করে আফ্রিকায় কোন বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও বৈজ্ঞানিক পাতি স্থাপন করে যায় নি। ফলে আফ্রিকা শিল্প ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করতে পারে নি। আফ্রিকান পণ্যসামগ্রী উন্নত না হওয়ায় বিশ্ব বাজারে এর চাহিদা কম। ফলে আফ্রিকান দেশ অনুন্নত ।
৭. মাদক পাচারের রুট : আন্তর্জাতিক চোরাচালানিগণ মাদক দ্রব্যের নিরাপদ রুট হিসেবে আফ্রিকার অনেক দেশকে ব্যবহার করে থাকে। এতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ আফ্রিকার দেশগুলো সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে যার জন্য তারা আফ্রিকার বাণিজ্য করতে সাহস পায় না। ফলে আফ্রিকা অনুন্নতই রয়ে গেছে।
৮. আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের শর্ত : বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ হচ্ছে বিশ্বের ঋণদানের সংস্থা। এরা পৃথিবীর অনুন্নত । উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাহায্যের জন্য ঋণ প্রদান করে। আফ্রিকান দেশগুলো যেহেতু অনুন্নত, তাই তারা আফ্রিকাকে সাহায্যে: জন্য ঋণ দেয়। কিন্তু এসব ঋণ দেয়ার সময় যেসব শর্ত জুড়ে দেয়া হয়, তা মূলত আফ্রিকার দেশগুলোর স্বার্থের বিরোধী। ঝি তারা বাধ্য হয়েই ঋণ নেয়। এতে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। ফলে আফ্রিকা অনুন্নতই রয়ে গেছে ।
৯. নব্য উপনিবেশবাদ : নয়া উপনিবেশবাদ হচ্ছে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পরাধীনতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপী শক্তিবর্গ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আফ্রিকান উপনিবেশগুলো ধরে রাখার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলে। এ প্রেক্ষাপটে ইউরোপী ঔপনিবেশিক শক্তিবর্গ আফ্রিকান দেশ ছেড়ে আসতে বাধ্য হয়। ফলে আফ্রিকার স্বাধীনতা আসে। কিন্তু এ স্বাধীনত রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নয়। কারণ স্বাধীনতার পর আফ্রিকার অর্থনীতির সম্পূর্ণভাবে ইউরোপীয় দেশগুলো উপর নির্ভর করে এবং ইউরোপীয় সাহায্য ছাড়া আফ্রিকা অর্থনীতির চাকা ঘুরে না। আফ্রিকার এ অর্থনীতির নির্ভরশীলতা নব্য উপনিবেশবাদ যা আফ্রিকার অন্যতম প্রধান সমস্যা।
১০. সামরিক শাসন : আফ্রিকা স্বাধীনতার পর বার বার সামরিক শাসনের কবলে পড়ে এবং এটা আফ্রিকার জন প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কারণ সামরিক শাসনের ফলে আফ্রিকার সমগ্র উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাহ্যত হচ্ছে এবং জনগণে মৌলিক অধিকার খর্ব হচ্ছে। ফলে আফ্রিকান দেশগুলোর মানবাধিকার বার বার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আফ্রিকার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এবং আফ্রিকান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে কোন বিদেশি সংস্থা অংশগ্রহণ কতে চা না। কারণ সামরিক শাসন কোন দেশের জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে না। ফলে আফ্রিকা সমস্যায় পতিত হয় ।
১১. দলীয় কোন্দল : আফ্রিকান দেশগুলোর অন্যতম প্রধান সমস্যা হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোন্দল । স্বাধীনতার প একযোগে ১৩টি আফ্রিকান দেশ স্বাধীনতা পায় এবং ক্রমান্বয়ে অন্যান্য আফ্রিকান দেশও স্বাধীনতা অর্জন করে। কিন্তু স্বাধীনতার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলে ক্ষমতার দখল নিয়ে প্রতিযোগিতা যা কোন্দলে পরিণত হয়। এ অভ্যন্তরীণ কোন্দল আফ্রিক রাজনৈতিক পরিবেশকে অশান্ত করে তোলে । ফলে আফ্রিকার রাজনৈতিক ইতিহাসে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করেছে ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, স্বাধীনতার পূর্বে আফ্রিকা ঔপনিবেশি শাসন ও শোষণের ফলে উন্নয়ন ঘটাতে পারে নি। তাই স্বাধীনতার পর উন্নয়ন করা স্বাভাবিকভাবেই সম্ভব হতো। কিন্তু। না হয়ে আরও অবনতি ঘটেছে। অবশ্য এর পশ্চাতে রয়েছে কতিপয় সমস্যা যার জন্য আফ্রিকার উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে ন কিন্তু এসব সমস্যার পাশাপাশি রয়েছে কতিপয় সম্ভাবনাময় দিক যার সুষ্ঠু ব্যবহার দ্বারা আফ্রিকার উন্নয়ন সম্ভব।

স্বাধীনতাউত্তর আফ্রিকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা কর। অথবা, স্বাধীনতাউত্তর আফ্রিকার রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপট আলোচনা কর। অথবা, স্বাধীনতা পরবর্তী আফ্রিকার সামগ্রিক রাজনৈতিক চিত্র তুলে ধর ।


উত্তরঃ ভূমিকা : চারদিকে জলবেষ্টিত প্রায় ৩০ মিলিয়ন বর্গ কি. মি. আয়তন বিশিষ্ট আফ্রিকা বিচিত্র পরিবেশে সমন্বয়ে গঠিত একটি মহাদেশ। বিস্তীর্ণ সমতল ভূমি, দীর্ঘ বনাঞ্চল, অসংখ্য পামবৃক্ষ ও সুমিষ্ট ফলে পরিপূর্ণ সমুদ্র সৈকা হীরা, মনি মুক্তার অপূর্ব সমাহার সুদূর অতীতকাল হতেই অন্যান্য মহাদেশের শক্তিবর্গের প্রলুব্ধ করত। ফলে তারা আফ্রি মহাদেশে উপনিবেশ স্থাপন করে তাদের লুণ্ঠনকার্য চালাতে থাকে এবং এক পর্যায়ে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের চাপে তা আফ্রিকা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। ফলে আফ্রিকা মহাদেশ স্বাধীন হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই আফ্রিকা উন্নত হওয়ার কথ কিন্তু বিদেশি শাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার পরও আজ পর্যন্ত আফ্রিকার রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। আফ্রিকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি বা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপট : নিম্নে এ সম্পা আলোকপাত করা হলো :
১. আকস্মিকভাবে স্বাধীনতা প্রাপ্তি : ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন করে সেখানে স্বল্প সময় শা‍ করে বিশ্ব প্রেক্ষাপটে ঔপনিবেশিক শাসনের ইতি টেনে আফ্রিকা ছেড়ে চলে আসে। ফলে আফ্রিকা স্বাধীন হয়। বি আফ্রিকার এ স্বাধীনতা হঠাৎ করে দেয়া হয়েছে। তাই আফ্রিকানদের কাছে স্বাধীনতা প্রাপ্তি ছিল আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত
২. গোত্র বিভাজিত রাষ্ট্রীয় কাঠামো : সুপ্রাচীনকাল থেকে আফ্রিকায় গোত্র বিভাজিত সমাজ ও রাষ্ট্রীয় কাঠামো চা আসছে। গোত্র বিভাজিত সমাজে সব সময় বিশৃঙ্খলা থাকে। কারণ বড় গোত্রগুলো সব সময় ছোট গোত্রগুলোর উ আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে। ফলে শুরু হয় গোত্রীয় সংঘাত। তাছাড়া গোত্র বিভাজিত সমাজকাঠামোতে রাষ্ট্রের চে গোত্রের প্রতি আনুগত্য বেশি থাকে। কারণ তারা গোত্রের প্রধানের কথা মান্য করে। ফলে রাষ্ট্রের সাথে গোত্রের একটা। দেখা দেয়, যার প্রভাব গিয়ে পড়ে রাজনৈতিক পরিবেশের উপর এবং গোত্রীয় সংঘাতই রাজনৈতিক পরিবেশকে অশ করে তোলে। ফলে জন্ম নেয় রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অস্থিতিশীল পরিবেশ।
৩,০৩,১৯,০০০ কি. মি. আয়তন বিশিষ্ট আফ্রিকা হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশ এবং এর জনসংখ্যা প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন। কিন্তু পৃথিবীর অধিকাংশ দরিদ্রদের বাস এ মহাদেশে। তার কারণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। ইউরোপীয়রা যখন আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশ দখল করে তখন নিজেদের ইচ্ছা ও সুবিধামতো উপনিবেশ স্থাপন করে। আবার যখন আফ্রিকা ত্যাগ করে তখন নিজেদের সুবিধামতো রাষ্ট্র তৈরি করে আফ্রিকার স্বাধীনতা দিয়ে যায়। ফলে বর্তমানে আফ্রিকার ৬০টি দেশ আছে। কিন্তু এক রাষ্ট্রের সীমানা অন্য রাষ্ট্রের মধ্যে আবার এক জনগোষ্ঠী অন্য জনগোষ্ঠীর মধ্যে পড়ে। ফলে প্রায়ই সংঘাত ও দ্বন্দ্ব হয়, যা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিতে সাহায্য করে।
৬. স্বাধীনতা পরবর্তী প্রশাসনিক বিপর্যয় : স্বাধীনতা পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে প্রশাসনিক বিপর্যয়। ঔপনিবেশিক যুগে ইউরোপীয় শক্তিবর্গ ইচ্ছে করে আফ্রিকানদের প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে দূরে রেখেছিলেন। ফলে আফ্রিকায় দক্ষ প্রশাসনিক জনবল গড়ে উঠে নি। যার প্রভাব গিয়ে পড়ে স্বাধীনতা পরবর্তী আফ্রিকান প্রশাসনিক যন্ত্রে। কারণ স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতাই পরবর্তীতে সে দেশের শাসকে পরিণত হন এবং তারা সুষ্ঠুভাবে প্রশাসন পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিলেও ব্যর্থ হন। কারণ হলো তাদের গৃহীত স্বৈরাচারী পদক্ষেপ। এ পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে জনমনে অসন্তোষ দেখা দেয়, যা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অস্থিতিশীলতার জন্ম দেয়। এক্ষেত্রে ঘানার স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা ও জনক ড. নক্রুমার কথা ধরা যাক। তিনি বলেছিলেন, “আমরা সংসদীয় গণতন্ত্রের সফল বাস্তবায়ন করে আফ্রিকার অন্যান্য দেশকে সাহায্য করব।” কিন্তু পরবর্তীতে তাঁর গৃহীত সকল পদক্ষেপই ছিল স্বৈরাচারী, যার ফলে তাঁর বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে।
৭. সংবিধান প্রণয়নের ব্যর্থতা : যে কোন দেশের প্রশাসন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করার জন্য দরকার সে দেশের সংবিধান এবং তা দেশের প্রচলিত সমাজ ও সংস্কৃতি অনুযায়ী হতে হবে। স্বাধীনতার পর অধিকাংশ আফ্রিকান দেশ তাদের সমাজ ও রাষ্ট্র উপযোগী সংবিধান প্রণয়ন করতে ব্যর্থ হয়। তারা ঔপনিবেশিক শাসন কাঠামোই স্বাধীনতাত্তোর আফ্রিকায় চালু করে, যার প্রতি জনগণের ক্ষোভ পূর্ব থেকেই ছিল। ফলে দেখা যাচ্ছে যে, এখানে ব্যক্তির পরিবর্তন ঘটেছে কিন্তু শাসনতন্ত্র ঠিকই অনুপযোগী রয়ে গেছে। এতে জনগণের অসন্তোষ আরও বৃদ্ধি পায়। ফলে এ অসন্তোষ গিয়ে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পড়ে।
৮. রাজনৈতিক দলের কোন্দল : আফ্রিকান ছিল গোত্র বিভাজিত সমাজব্যবস্থা এবং এখানে প্রচলিত অর্থে কোন রাজনৈতিক দল গড়ে উঠে নি। আধুনিক গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আফ্রিকার কোন রাজনৈতিক দল গড়ে উঠে নি, আফ্রিকার রাজনৈতিক দল গড়ে উঠেছে গোত্রকে কেন্দ্র করে। যেসব গোত্র শাসনক্ষমতা দখল করে তারা তাদের গোত্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে বেশি সুযোগ সুবিধা দেয় এবং অন্য গোত্রগুলোর উপর নির্যাতন চালায়। ফলে দেখা দেয় গোত্রভিত্তিক দলীয় সংঘাত। এ দলীয় কোন্দল বা সংঘাত রাজনৈতিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তোলে।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]