জাতীয় সংহতি কী? “রাজনৈতিক উন্নয়নের সমস্যা মূলত রাজনৈতিক সংহতির সমস্যা"-উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

জাতীয় সংহতি কী? জাতীয় সংহতি সমস্যায় রাজনৈতিক সংহতি কতটা দায়ী। তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও ।
উত্তরঃ ভূমিকা : জাতীয় সংহতি বলতে সাধারণত সেই প্রক্রিয়াকে বুঝায়, যার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক, কৃষ্টি এ সামাজিক দিক দিয়ে পৃথক কতকগুলো গোষ্ঠীকে একমাত্র ভূখণ্ড ইউনিটের আওতায় নিয়ে আসা যায়। অর্থাৎ জাতীয় সংহতি বলতে আমরা এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বুঝি যেখানে সকল প্রকার বাধাবিঘ্ন, বৈষম্য, চিন্তাধারা, মতবাদ ও সংস্কৃতিকে একত্রিত করে একটি একক জাতিভিত্তিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায় ।
জাতীয় সংহতি : জাতীয় সংহতি হচ্ছে একটি ভূখণ্ডগত জাতীয়তার চেতনা। এ চেতনা অন্যসব সংকীর্ণ আনুগত্যকে ঢেকে ফেলে, উচ্ছেদ করে বা অধীনস্থ করে নেয় । রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান বলেছেন, “ব্যাপকভাবে জাতীয় সংস্কৃতি বলতে সে প্রক্রিয়াকে বুঝানো হয়, যার দ্বারা এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থার সৃষ্টি করা হয়, যা সব আঞ্চলিক উপব্যবস্থাকে অধীন বা অঙ্গীভূত করে ফেলে।” মোটকথা, সংহতি হলো এমন একটি জাতীয় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা, যা রাষ্ট্রের পৃথক পৃথক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী নিয়ে গঠিত সকল অধীন রাজনৈতিক একক ও অঞ্চলের যাবতীয় দিককে নিয়ন্ত্রণ করে।
জাতীয় সংহতির পূর্বশর্ত : বাস্তব ক্ষেত্রে জনগণের রাজনৈতিক চেতনাকে জাগ্রত ও সংকীর্ণ করার জন্য জাতীয় সংহতি এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। একথা সত্য যে, জাতীয় সংহতি ছাড়া কোন আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি হতে পারে না। জাতীয় সংহতি স্থাপনের জন্য কতকগুলো পূর্বশর্ত পালন করতে হয়। যেমন-
ক. ভৌগোলিক জাতীয়তাবোধ সৃষ্টি
খ. এক জাতিভিত্তিক কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা। গ. শাসক ও শাসিতের মধ্যকার ব্যবধান লোপ করা।
ঘ. জনগণের মধ্যে ন্যূনতম মূল্যবোধ সৃষ্টি করা।
... রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং সংহতিমূলক আচরণ সৃষ্টি
রাজনৈতিক সংহতি সখ্যা : আমরা জানি, রাজনৈতিক উন্নয়নের ধারাকে ত্বরান্বিত করার জন্য রাজনৈতিক সংহতির প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যক। সংহতি বলতে আমরা একাত্মতাকে বুঝে থাকি। তাই রাজনৈতিক উন্নয়ন ও জাতীয় সংহতি হচ্ছে সংযুক্ত বিষয়। এ কারণে রাজনৈতিক সংহতির সমস্যা অবশ্যই রাজনৈতিক উন্নয়নের পক্ষে বাধার সৃষ্টি করে। রাজনৈতিক উন্নয়নের পথে রাজনৈতিক সংহতির সমস্যাগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. ধর্ম-বর্ণ-বংশ ও আঞ্চলিক সমস্যা: ঔপনিবেশিক এলাকাগুলোতে বৈদেশিক শাসন চলাকালে যেসব দ্বন্দ্ব বিরোধ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে রাখা হয় বিদেশি শাসন শেষ হওয়ার সাথে সাথে অর্থাৎ 'স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর তা মারাত্মক আকারে আত্মপ্রকাশ করে। বর্ণগত, বংশগত, ধর্মীয় ও আঞ্চলিক মতপার্থক্য ঔপনিবেশিক আমলে রাজনীতিতে তেমন গুরুত্ব পায় নি। কিন্তু স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর এসব দেশে এ সংকীর্ণ স্বার্থগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠে এবং রাজনৈতিক সচেতন মানুষগুলো ক্রমশই উক্ত স্বার্থ সমন্বিত মূল্যবোধ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে থাকে। ফলে স্বাধীনতা সংগ্রামকালীন সকল ঐক্য ও একক উদ্দেশ্য ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে সেখানে নানা দ্বন্দ্ব বিরোধ ও মতানৈক্য দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াতে প্রবল হয়ে দেখা দেয়। যার ফলে রাজনৈতিক উন্নয়নের পথে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
২. সাংগঠনিক পশ্চাৎপদতা : সাংগঠনিক পশ্চাৎপদতার ফলে রাজনৈতিক উন্নয়নের পথে যে অন্যায়ের সৃষ্টি হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবেই সুস্পষ্ট। অনেক নতুন স্বাধীনতা প্রাপ্ত রাষ্ট্রে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দলের ও সরকারের অভ্যন্তরীণ ঐক্য বজায় রাখার ব্যাপারে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে সেখানে সংসদীয় ধরনের সরকার ভেঙে গৈছে এবং সামরিকতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে যান্ত্রিক যোগাযোগের চেয়ে সাংগঠনিক দুর্বলতাই অধিকতর প্রতিবন্ধতার সৃষ্টি করেছে।
৩. ভাষাগত সমস্যা : 'ভাষাকেও জাতীয় সংহতি অর্জনের অন্যতম সমস্যা হিসেবে নতুন রাষ্ট্রগুলোর রাজনৈতিক পর্যালোচনায় ধরা হয়। কারণ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভাষা অনেক সময় বিভক্তিকরণের উপাদান হিসেবে কাজ করে। সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে ভাষার ভিত্তিতে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উদ্ভব হয়, যা পাকিস্তানের জাতীয় সংহতিকে ব্যাহত করে এবং রাজনৈতিক উন্নয়নের পরিবর্তে তা আরও জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। ভাষাগত সমস্যা অনেক ক্ষেত্রেই জাতীয় সংহতির অন্তরায়স্বরূপ। যেমন- আফ্রিকান নাইজেরিয়া, জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, জায়ারে প্রভৃতি দেশের অভ্যন্তরীণ ভাষাগত দ্বন্দ্ব জাতীয় সংহতি অর্জনের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।

* নব্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশগুলোতে শাসক ও শাসিতের মধ্যকার ব্যবধান প্রान ।সিতদেরকে শাসকগণের শাসন করার অধিকার মেনে নিতে হবে। শাসিতের মধ্যকার ব্যবধানের জন্য জাতীয় সংহতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ নতুবা লক্ষ্য ভ । ১৯৫৭ সালে ঘানার স্বাধীনতার পর ড. নতুমার রাজনৈতিক দলের দুর্বলতার কারণে করে নেয় এবং প্রশাসন চালায়। ফলে এসব এলিট ও জনগণের মধ্যে একটি বিরাট চীয় সংহতিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, ফলে এটি সে দেশের রাজনৈতিক উন্নয়নের অন্তরায়
য়নগামী রাষ্ট্রগুলোতে শিক্ষিত এবং অধিকতর আধুনিক ব্যক্তিবর্গের স্বার্থের দিকে সরকার চুসংহত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অভাবে জাতীয় নেতৃবর্গের সাথে তাদের একাত্মতাবোধকে গুলোতে জাতীয় নেতৃবর্গ সনাতন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন নেতৃবর্গের সাথে সর্বাপেক্ষা ভালো ফলপ্রসূ রাজনৈতিক প্রক্রিয়াতে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে । এভাবে ক্রমেই যদি তারা রাজনৈতিক প্রক্রিয়াতে অংশগ্রহণ করতে না পারেন এবং তাহলে রাজনৈতিক উন্নয়নের ধারা ব্যাহত হতে পারে
লোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, জাতীয় সংহতির ক্ষেত্রে বহুবিদ সমস্যা সমস্যা, ভৌগোলিক সমস্যা, নৃতত্ত্ব, ধর্ম, সাংস্কৃতিক চেতনা প্রভৃতি স্বাভাবিক উন্মেষের সৃষ্টির অন্তরায় সৃষ্টি করতে পারে। বাস্তব ক্ষেত্রে জনগণের রাজনৈতিক চেতনাকে জাগ্রত
বলিষ্ঠ নেতৃত্বের অভাবও অনেক ক্ষেত্রে জাতীয় সংহতিকে বিপদগ্রস্ত করে তুলতে বিভিন্নতা অর্থাৎ রাজনৈতিক ঐক্য ও সাংস্কৃতিক বিভিন্নতা কোন আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি
[হের সমস্যা মূলত জাতীয় সংহতির সমস্যা”- ব্যাখ্যা
নতুন রাষ্ট্রগুলোর সবচেয়ে বড় সমস্যা”- উক্তিটির যথার্থতা
াতিক সংহতি বলতে সাধারণত সেই প্রক্রিয়াকে বুঝায়, যার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক, কৃষ্টি কতকগুলো গোষ্ঠীকে একমাত্র ভূখণ্ড ইউনিটের আওতায় নিয়ে আসা যায়। অর্থাৎ এমন এক জাতীয় ব্যবস্থাকে বুঝি, যেখানে সকল প্রকার বাধাবিঘ্ন, বৈষম্য, চিন্তাধারা, । একটি একক জাতিভিত্তিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়। আবার জাতীয় সংহতি স্থাপনের তে হয়, যার মাধ্যমে বিভিন্ন গোষ্ঠী, সম্প্রদায় ও তাদের বিভিন্ন চিন্তাধারা ও মতবাদ দীন করে দেয়।
স্ট্রিগুলোর সবচেয়ে বড় সমস্যা কি না : আমরা জানি, রাজনৈতিক উন্নয়নের সংহতির প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যক। সংহতি বলতে আমরা একাত্মতাকে বুঝে থাকি । সংহতি হচ্ছে সংযুক্ত বিষয়। এ কারণেই জাতীয় সংহতির সমস্যা অবশ্যই রাজনৈতিক নম্নে নব্য স্বাধীন দেশগুলোর জাতীয় সংহতির সমস্যাগুলো আলোচনা করা হলো : স্বাধীন দেশগুলোতে জাতীয় সংহতি অর্জনের প্রধান সমস্যা হলো ভূখণ্ডগত সমস্যা। র লোক বাস করে। অনেক সময় রাষ্ট্রের এক অংশের সাথে অন্য অংশের ভূবক্ষাভ মধিকাংশ রাষ্ট্রে এ সমস্যা বিদ্যমান। স্বাধীনতা লাভের পর তারা আঞ্চলিক স্বকীয়তা ার সিদ্ধান্ত নেয় । এভাবে দেশে জাতীয় সংহতিতে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
ট দেশে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর লোক বাস করতে পারে। প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর নিজস্ব কৃষ্টি, ধন জাতীয় সংহতি অর্জনের লক্ষ্যে নিজেদের ঐতিহ্যকে অনেক সময় বিসর্জন দিতে ট্রিগুলোতে মূল্যবোধ সমস্যা জাতীয় সংহতি অর্জনের প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়।
৩. ধর্ম-বর্ণ-বংশ ও আঞ্চলিক সমস্যা : ঔপনিবেশিক এলাকাগুলোতে বৈদেশিক শাসন চলাকালে যেসব দ্বন্দ্ব বিরোধ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে রাখা হয় বিদেশি শাসন শেষ হওয়ার সাথে সাথে অর্থাৎ স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর তা মারাত্মক আকারে আত্মপ্রকাশ করে। বর্ণগত, বংশগত, ধর্মীয় ও আঞ্চলিক মতপার্থক্য ঔপনিবেশিক আমলে রাজনীতিকে তেমন গুরুত্ব পায় নি। কিন্তু স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর এসব দেশে এ সংকীর্ণ স্বার্থগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠে এবং রাজনৈতিক সচেতন মানুষগুলো ক্রমশই উক্ত স্বার্থ সমন্বিত মূল্যবোধ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে থাকে। ফলে স্বাধীনতা সংগ্রামকালীন সকল একা একক উদ্দেশ্য ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে সেখানে নানা দ্বন্দ্ব বিরোধ ও মতানৈক্য দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াতে প্রবল দেখা দেয়। যার ফলে রাজনৈতিক উন্নয়নের পথে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
৪. সাংগঠনিক পশ্চাৎপদতা : সাংগঠনিক পশ্চাৎপদতার ফলে রাজনৈতিক উন্নয়নের পথে যে অন্যায়ের সৃষ্টি তা সম্পূর্ণভাবেই সুস্পষ্ট। অনেক নতুন স্বাধীনতা প্রাপ্ত রাষ্ট্রে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দলের ও সরকারের অভ্যন্তরীণ বাকা বজায় রাখার ব্যাপারে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে সেখানে সংসদীয় ধরনের সরকার ভেঙে গেছে এবং সামরিকতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । সেখানে অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে যান্ত্রিক যোগাযোগের চেয়ে সাংগঠনিক দুর্বলতাই অধিকতর প্রতিবন্ধতার সৃষ্টি করেছে
৫. ভাষাগত সমস্যা': ভাষাকেও জাতীয় সংহতি অর্জনের অন্যতম সমস্যা হিসেবে নতুন রাষ্ট্রগুলোর রাজনৈতিক পর্যালোচনায় ধরা হয়। কারণ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভাষা অনেক সময় বিভক্তিকরণের উপাদান হিসেবে কাজ করে। সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে ভাষার ভিত্তিতে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উদ্ভব হয়, যা পাকিস্তানের জাতীয় সংস্কৃতিকে ব্যাহত ক এবং রাজনৈতিক উন্নয়নের পরিবর্তে তা আরও জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। ভাষাগত সমস্যা অনেক ক্ষেত্রেই জাতীয় সংহতির অন্তরায়স্বরূপ। যেমন- আফ্রিকান নাইজেরিয়া, জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, জায়ারে প্রভৃতি দেশের অভ্যন্তরীণ ভাষাগত দ্বন্দ্ব জাতীয় সংহতি অর্জনের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
৬. শাসক শাসিতের সম্পর্ক : নব্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশগুলোতে শাসক ও শাসিতের মধ্যকার ব্যবধান জয় সংহতি বিনষ্ট করে। শাসিতদেরকে শাসকগণের শাসন করার অধিকার মেনে নিতে হবে। নতুবা লক্ষ্য ও মূল্যবোধের ব্যাপারে শাসক ও শাসিতের মধ্যকার ব্যবধানের জন্য জাতীয় সংহতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ আমরা থানার কথা বলতে পারি। ১৯৫৭ সালে ঘানার স্বাধীনতার পর ড. নক্রুমার রাজনৈতিক দলের দুর্বলতার কারণে সেনাবাহিনী শাসনক্ষমতা দখল করে নেয় এবং প্রশাসন চালায়। ফলে এসব এলিট ও জনগণের মধ্যে একটি বিরাট পার্থক্য সৃ ঘানার জাতীয় সংহতিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, ফলে এটি সে দেশের রাজনৈতিক উন্নয়নের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
৭. স্বার্থ একত্রীকরণ : উন্নয়নগামী রাষ্ট্রগুলোতে শিক্ষিত এবং অধিকতর আধুনিক ব্যক্তিবর্গের স্বার্থের দিকে সরকার কম দৃষ্টি দিয়ে থাকেন। এখানে সুসংহত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অভাবে জাতীয় নেতৃবর্গের সাথে তাদের একাত্মতাবোধকে প্রভাবিত করে। উন্নয়নকামী দেশগুলোতে জাতীয় নেতৃবর্গ সনাতন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন নেতৃবর্গের সাথে সর্বাপেক্ষা ভালো সম্পর্ক বজায় রাখেন। ফলে তারা ফলপ্রসূ রাজনৈতিক প্রক্রিয়াতে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে তাদের একাত্মতা খুব কমই হয়। এভাবে ক্রমেই যদি তারা রাজনৈতিক প্রক্রিয়াতে অংশগ্রহণ করতে না পারেন এবং তাদের স্বার্থের একত্রীকরণ না ঘটে তাহলে রাজনৈতিক উন্নয়নের ধারা ব্যাহত হতে পারে।
মূল্যায়ন : জাতীয় সংহতি বা রাজনৈতিক সংহতি একটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এ সমস্যার ফলে দেশের জাতীয় ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এর ফলে একটা দেশের উন্নয়নের গতি হ্রাস পায়। একটি উন্নয়নশীল দেশে ভাষা, বর্ণ, জাতিগত বিভিন্ন সমস্যা থাকে। একই দেশে অনেক ধরনের বর্ণের ভাষাভাষী লোক বাস করে। এর ফলে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। এসব উন্নয়নশীল দেশের সংহতি সমস্যা কখনই পুরোপুরি মিটে যায় না। এর ফলে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তারা স্বাধীনতার পর থেকেই এ সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে যায়। আফ্রিকায়ও এ সমস্যা আছে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, নব্য স্বাধীন রাষ্ট্রগুলোতে জাতীয় সংহতির ক্ষেত্রে বহুবিধ সমস্যা রয়েছে। অর্থনৈতিক বৈষম্য, জাতিগত সমস্যা, ভৌগোলিক সমস্যা, আবার নৃতাত্ত্বিক সমস্যা, ধর্ম, সাংস্কৃতিক চেতনার স্বাভাবিক উন্মেষের পথে বাধাগ্রস্ততাও জাতীয় সংহতি সৃষ্টির পথে অন্তরায় সৃষ্টি করতে পারে। বাস্তব ক্ষেত্রে জনগণের রাজনৈতিক চেতনাকে জাগ্রত ও সংকীর্ণমুক্ত করার প্রয়োজনে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের অভাব অনেক সময় জাতীয় সংহতিকে বিপদগ্রস্ত করে তুলতে পারে। অনেক নতুন রাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দ মন্ত্রিসভার উপর গুরুত্বারোপ করেন। একথা সত্য যে, ঐক্য ও বিভিন্নতা অর্থাৎ রাজনৈতিক ঐক্য ও সাংস্কৃতিক বিভিন্নতা কোন আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি হতে পারে না। এক্ষেত্রে নাইজেরিয়ার দৃষ্টান্ত উল্লেখযোগ্য। নব্য স্বাধীন দেশগুলোর প্রধান সমস্যা হলো জাতীয় সংহতির সমস্যা। এ জাতীয় সংহতির সমস্যাই সৃষ্টি করে অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সমস্যা, যা বাধাগ্রস্ত করছে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে ।

বিরোধই আফ্রিকার উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়”-


নতিক উন্নয়নের বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আফ্রিকা চলমান বিশ্বব্যবস্থার সাথে সঙ্গতি ন্নয়নের ধারা বিশ্বের অন্যান্য মহাদেশে প্রবাহিত হলেও আফ্রিকা মহাদেশ এখনও বঞ্চিত কতায় ইউরোপ আজ অনেক উঁচুতে। এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকা পিছনে পড়ে থাকলেও নি আফ্রিকা। দীর্ঘদিনের ঔপনিবেশিক শাসন, পশ্চিমা শক্তিবর্গের সাম্রাজ্যবাদী শোষণ । ঠেলে দিলেও উন্নয়নের জাতিগত বিরোধকে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বিবেচনা করা াতিগত বৈষম্যের কারণে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হয় নি এবং এর
ক্ষাপট : আফ্রিকার মানুষগুলো সর্বকালেই অবহেলিত। এরা পশ্চিমা শক্তিবর্গের কাছে ত। আফ্রিকার মানুষগুলোকে তারা ব্যবহার করেছে দুটি বিশ্বযুদ্ধে। আফ্রিকার প্রাকৃতিক দেশগুলোর কাঁচামাল হিসেবে। যার বিনিময়ে উপযুক্ত মূল্য তারা পায় নি কখনই খন আফ্রিকার দেশগুলোতে পরিলক্ষিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে ন নিয়ে আফ্রিকার অধিকাংশ দেশে বিভিন্ন উপজাতীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি মা সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো, যাদের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ প্ররোচনায় ঘটতে থাকে কান রাষ্ট্রের মাধ্যমে অথবা বিদ্রোহ গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তার মাধ্যমে জাতিগত বিভেদ তা আজও চলছে।
ন্ত : আফ্রিকা মহাদেশের অধিকাংশ রাষ্ট্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো রাজনৈতিক তার বণ্টন এবং প্রাধান্য নিয়ে বিরোধ। বিগত তিন দশক ধরে এভাবে চলে আসছে, ক শাসনের পথ উন্মুক্ত হয়, যা অস্থিতিশীলতাকে দীর্ঘায়িত করে। নিম্নে জাতিগত
। শ্বেতাঙ্গদের বিরোধ বহু পুরানো। বিগত বছরগুলোতে এ বিরোধ তীব্রতর হতে থাকে । বর্তমান ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগারের ভারসাম্যহীন নীতির কারণে সাম্প্রতিক রাজ করছে। ফলে কমনওয়েলথ থেকে জিম্বাবুয়েকে সাময়িক স্থগিত করে। এতে ত্যাহার করে নেয়। ইউরোপ থেকে অন্যান্য দেশগুলো জিম্বাবুয়ের উপর অর্থনৈতিক জ্ঞা এবং বিবদমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে জিম্বাবুয়ের অর্থনীতিতে ধস হ্রাস পাচ্ছে মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ এবং বাড়ছে বিদেশি ঋণের বুঝা।
চলছে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গেরিলা গোষ্ঠীর মধ্যে। স্বাধীনতার শুরু থেকেই ষ্ট এবং বিদ্রোহী বাহিনী ইউনিটাকে সমর্থন দিচ্ছে পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ আফ্রিকা। ই, ক্ষমতা দখলের সংঘর্ষ চলে আসছে অনেক দিন থেকে। এ সংকট নিরসনে ৩ সালে জাতিসংঘ ইউনিটা অ্যাঙ্গোলা সরকারকে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব দেয়। হিনী ও ইউনিটা বিদ্রোহী উভয়ের উদাসীনতার কারণে ১৯৯৮ সাল থেকে আবার
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে রুয়ান্ডা ও বুরুন্ডিকে ট্রাস্ট অঞ্চল গঠন করে বেলজিয়ামের তে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৬ সালে রাজার মৃত্যু হলে বুরুন্ডি প্রজাতন্ত্রের সৃষ্টি তের ফলস্বরূপ রুয়ান্ডার স্বাধীনতা আসে। এ দুই উপজাতির মধ্যে জাতিগত বা য়ান্ডা-বুরুন্ডি উভয় দেশেই হুতরা সংখ্যাগুরু এবং তুতসিরা সংখ্যালঘু। দেশ দুটির দর প্রতি তুতসিদের অত্যাচার নিপীড়নের কারণে সংঘাত চলছে। এ দুই দেশে হয়েছে বুরুন্ডির তুলনায়। জাতিসংঘ সেখানে বিরোধ প্রশমনে উদ্যোগ নিয়েছিল। দ্যাগের কার্যকারিতা ব্যর্থ হয়েছে।
কৃষ্ণাঙ্গ আন্দোলন : ইউরোপীয় শক্তিবর্গ দক্ষিণ আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপনের পর সেখানে তাদের শাসন ও শোষণ
চালিয়ে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিটিশ উপনিবেশ স্থাপন করে এবং শাসন প্রক্রিয়া জোরদার করার জন্য বর্ণবাণী করে। এর ফলে কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য সবকিছু স্বতন্ত্র করে দেয়া হয় এবং কৃষ্ণাঙ্গদেরকে রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। এমনকি সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ শিক্ষা, ধর্ম, সংস্কৃতি প্রভৃতির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। দীর্ঘদিনের শাসন ও শোষণের মধ্যে থাকা কৃষ্ণাঙ্গরা এর মাধ্যমে সচেতন হয়ে উঠে। ফলে তারা প্রথমে এ নিয়ে অ প্রকাশ করে এবং ক্রমান্বয়ে তা বিদ্রোহে রূপ নেয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত হয় ১৯১২ সালে ANC বা আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস। এ সংগঠনের উদ্দেশ্য হলো সকল বর্ণের মানুষের জন্য এক বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। এ সংগঠনটি ১৯৫২ সালে শ্বেতাঙ্গ সরকারের পৃথকীকরণ নীতির বিরুদ্ধে আইন অমান্য আন্দোলন শুরু করে। এরই মধ্যে ১৯৫৬ সালে সকল বর্ণের লোকদের নিয়ে আরেকটি সংগঠনের জন্য নেয় যার নাম দেয়া হয় করোস অব দ্য পিপল। অবশ্য সরকারি দমননীতির ফলে এ সংগঠনটি ধ্বংস হয়ে যায়। এদিকে কৃষ্ণাঙ্গ আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হয় প্যান আফ্রিকান মুভমেন্ট। যা ১৯৫৬ সালের পরে জোরদার হয়। তবে আন্দোলন ছিল শুধু কৃষ্ণাঙ্গ লোকদের নিয়ে এবং এটা সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। এদিকে সরকারও দমননীতি জোরদার করে। ১৯৬০ সালে কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য বৈষম্যমূলক আইনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হলে শার্পেভিলে নিরস্ত জনতার উপর পুলিশ গুলি চালায়। এতে ৮৩ জন কৃষ্ণাঙ্গ নিহত এবং ৩৬৫ জন কৃষ্ণাঙ্গ আহত হয়। এর প্রতিবাদে দেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ১৯৬০ সালের ৩০ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকায়। ৩০ হাজার লোকের এক শোভাযাত্রা কেপটাউন পার্লামেন্ট ভবন পর্যন্ত গেলে সরকার ভীত হয়ে পড়ে। এর প্রেক্ষাপনা প্রধানমন্ত্রী ভেরউডের সরকার দেশে জরুরি আইন জারি করে ANC ও প্যান আফ্রিকান মুভমেন্টকে নিষিদ্ধ করেন। ফলে কৃষ্ণাঙ্গ আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায় এবং অবিসংবাদিত কৃষ্ণাঙ্গ নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা ও ওয়াল্টার সিমুলুকে আজীবন
জেল দেয়া হয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, নব্বই এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনৈতিক ইতিহাস অত্যন্ত জটিল ইতিহাস। ওলন্দাজগণ দক্ষিণ আফ্রিকার গোড়াপত্তন করলেও উপনিবেশ স্থাপন করে ব্রিটিশগণ এবং স্বাধীনতার পর শুরু হয় আফ্রিকায় বর্ণবাদী প্রথা অর্থাৎ কৃষ্ণাঙ্গদের উপর নির্যাতন ও অত্যাচারের প্রথা। এক পর্যায়ে কৃষ্ণাঙ্গরা শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করলেও তা সরকারি দমন নীতির ফলে ব্যর্থ হয়। ফলে নব্বই এর দশক পর্যন্ত বর্ণবাদ অব্যাহত থাকে ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]