আফ্রিকার প্রতি মার্কিন নৈকট্য নীতি গ্রহণের কারণগুলো উল্লেখ কর।

উত্তর ভূমিকা : ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত কর্মকাণ্ডে আফ্রিকা সমর্থন দেয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্র আফ্রিকা মহাদেশের প্রতি নৈকট্যের নীতি গ্রহণ করে। এ নৈকট্য নীতি গ্রহণ করার পিছনে কতিপয় কারণ নিহিত রয়েছে।
আফ্রিকার প্রতি মার্কিন নৈকট্য নীতির কারণ : নিম্নে মার্কিন নৈকট্য নীতির কারণ দেয়া হলো :
১. স্নায়ুযুদ্ধ ও মার্কিন প্রভাব : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্র নিয়ে যে আদর্শগত দ্বন্দ্ব হয় তাই স্নায়ু যুদ্ধ। এ যুদ্ধ শেষে একক পরাশক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্থান ঘটে এবং বিশ্বকে শাসন করার ক্ষমতা পায়। স্বাধীনোত্তর আফ্রিকায় সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেখানে পুঁজিবাদ বিস্তারের চেষ্টা করে। ফলে মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্র তার প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পায় এবং তাই আফ্রিকার পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে মার্কিন নৈকট্য নীতি গ্রহণ করে।
২. ৯/১১ ঘটনা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে ৯/১১ ঘটনা একটি স্মরণীয় ঘটনা। কেননা ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জঙ্গিবাদ হামলায় নিউইয়র্কের টুইনটাওয়ার ধ্বংস হয়। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়। শুরু করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ। কারণ মার্কিনরা এ ঘটনার জন্য মুসলমানদেরকেই দায়ী করে। অথচ মুসলিম মহাদেশ হওয়া সত্ত্বেও আফ্রিকার প্রতি নৈকট্য নীতি গ্রহণ করে।
৩. মুসলিম সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আফ্রিকা : আফ্রিকা মহাদেশ সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে মার্কিন যে কোন উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওসামা বিন লাদেন ও আল কায়েদা বিরোধী কর্মকাণ্ডে নৈতিক সমর্থনের পাশাপাশি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র আফ্রিকার প্রতি নৈকট্য নীতি গ্রহণ করেছে।
৪. আফ্রিকান ইউনিয়নের নীতি : ১৯৬৩ সালে গঠিত হয় আফ্রিকান ঐক্য সংস্থা বা OAU। সংস্থাটি ২০০২ সালে এসে পরিবর্তিত হয়ে গঠিত হয় AU। AU গঠনের পর এর নীতিরও পরিবর্তনের ঘটনা ঘটে। এ সময় দুটি নীতির কথা হবে সুশাসন নিশ্চিত করা। আফ্রিকার এ নীতি গ্রহণ মার্কিন প্রশাসনকে সন্তুষ্ট করে। ফলে মার্কিন আফ্রিকার প্রতি নৈকট্য বলা হয় যা আমেরিকাকে আকর্ষণ করে। যথা : ক. সমগ্র আফ্রিকায় গণতন্ত্রায়ন, খ. প্রত্যেকটি আফ্রিকান সরকারের লক্ষ্য নীতি গ্রহণ করে ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ইউরোপীয় শক্তিবর্গ আফ্রিকা থেকে চলে
যাওয়ার পর সেখানে পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত যুক্তরাষ্ট্র নিজ স্বার্থেই আফ্রিকার ক্ষেত্রে নৈকট্য নীতি গ্রহণ করেছে এবং নৈকট্য নীতি দ্বারাই আফ্রিকাকে নব্য উপনিবেশবাদে পরিণত করেছে।

আফ্রিকান নীতি গ্রহণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ/কৌশলগুলো লিখ।


উত্তরা ভূমিকা : আফ্রিকা মহাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র নৈকট্য নীতি গ্রহণ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফ্রিকার প্রতি যে নৈকট্য নীতি গ্রহণ করে তা বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য কতকগুলো পদক্ষেপ বা কৌশল অবলম্বন করে। নিম্নে তা দেয়া হলো : ১. মর্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথমেই আফ্রিকার শক্তিশালী দেশের উপর আধিপত্য বিস্তারের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। কারণ শক্তিশালী দেশকে নিয়ন্ত্রন করতে পারলে সমগ্র আফ্রিকাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, নাইজেরিয়া ও ইথিওপিয়া এই চারটি দেশের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে। কারণ এই চারটি দেশ আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী।
২. যেহেতু আফ্রিকা এক সময় ইউরোপীয় দেশের উপনিবেশ ছিল তাই আফ্রিকার উপর কতিপয় ইউরোপীয় দেশের প্রভাব ছিল। এ লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় এসব দেশের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে। কারণ এদের মাধ্যমেই আফ্রিকার প্রভাব বিস্তার সহজ হয়।
৩. আফ্রিকার গণতন্ত্র, সুশাসন ও মুক্তবাজার অর্থনীতি চালুর ব্যাপারে না। তিনি যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করে এবং এর মাধ্যমে সেখানে প্রভাব বিস্তার করে ।
৪. মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন আফ্রিকার অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সহায়তা দানের মাধ্যমে সেখানে প্রভাব বিস্তার করে। প্রথমে ক্লিনটন প্রশাসন কংগ্রেসে পাস করে African Growth and Opportunity Act, 2000. এ আইনের দ্বারা যুক্তরাষ্ট্র নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের বাজার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বুশ ক্ষমতায় এসে এ আইনের কিছুটা সংশোধন করে পাস করেন AGO 11। এ আইনের মাধ্যমেই আফ্রিকানদের অর্থনীতিতে কিছু সুবিধা দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
৫... মার্কিন প্রশাসন আফ্রিকানদের সাহায্য ও সহযোগিতা করার জন্য গঠন করে Millenniums Challenge Account নামক ফান্ড। এ ফান্ডের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফ্রিকানদের সুবিধা প্রদান করে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ইউরোপীয় শক্তিবর্গ চলে যাওয়ার পর সেখানে পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত যুক্তরাষ্ট্র নিজ স্বার্থেই আফ্রিকার ক্ষেত্রে নৈকট্য নীতি গ্রহণ করেছে এবং নৈকট্য নীতি দ্বারাই আফ্রিকাকে নব্য উপনিবেশবাদে পরিণত করেছে।

রুশ নীতি কী? এ সম্পর্কে পীট বুকস এর বক্তব্য লিখ।


উত্তর ভূমিকা : স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই আফ্রিকার দিকে রাশিয়া নজর দেয় এবং স্বাধীনতার পর তা জোরালো হয়। এ রুশ নীতির প্রকৃতি ছিল সহযোগিতামূলক, যার সাহায্যে আফ্রিকায় রাশিয়ার প্রভাব বিস্তার করাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য।
রুশ নীতি : ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গিয়ে ১৫টি রাষ্ট্রে পরিণত হয় এবং রাশিয়া গঠিত হয় মূল এলাকা নিয়ে। ফলে ১৯৯১ সালে পথচলা শুরু হয় রাশিয়া নামক রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন মিখাইল গর্বাচেভ। গর্বাচেভ ক্ষমতায় এসেই অভ্যন্তরীণ সংস্কারের দিকে মনোযোগ দেন। ফলে আফ্রিকায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্র সীমিত করা হয়। এ সময় তিনি মিত্র দেশের সাথে সম্পর্ক ধরে রাখার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে সেখানে প্রভাব বিস্তার করে। তিনি স্বল্প সুদে আফ্রিকান দেশসমূহে ঋণ প্রদান করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি বর্তমানে আফ্রিকার উপর যুক্তরষ্ট্রের প্রায় একক প্রাধান্য বিদ্যমান।

। জাতিসংঘের মোজাম্বিক ও রুয়ান্ডা সাহায্য মিশনের কৃতিত্ব উল্লেখ কর।


উত্তরা ভূমিকা : ১৯৪৮ সালে মধ্যপ্রাচ্যে জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষক নিয়োগের মধ্য দিয়ে মূলত শান্তি
রক্ষা কার্যক্রমের যাত্রা শুরু হয়। এরপর থেকে প্রায় ১১৫টি সদস্য রাষ্ট্রে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর আট লক্ষাধিক সদস্য।
কাজ করছে।
মোজাম্বিক জাতিসংঘ মিশন (UNOMOZ) ১৯৯৩ : ১৯৭৫ সালে পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই সরকার ও REAMO নামক গ্রুপের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ গৃহযুদ্ধ চলে আসছিল। এ অবস্থা নিরসনে UNOMOZ মোজাম্বিক প্রেরণ করা হয়। বাংলাদেশ সহ ২৪টি রাষ্ট্রের বাহিনী সেখানে মোতায়েন করা ছিল। এর কার্যাবলি হলো :
ক. ১৯৯২ সালে স্বাক্ষরিত রোম শান্তিচুক্তি অনুযায়ী অস্ত্র বিরতি পর্যবেক্ষণ ও মনিটরি করা।
খ. বিবদমান গ্রুপগুলোকে পৃথক স্থানে সরিয়ে দিতে সাহায্য করা।
গ. গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণ করা।
রুয়ান্ডা সাহায্য মিশন (UNAMIR) ১৯৯৩ : ১৯৯০ সাল থেকে রুয়ান্ডার ‘হুত' প্রধান সরকার এবং 'ভূতসী'দের সংগঠন প্যাপ্রিয়াটিক ফোর্সের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে এ জাতিগত দ্বন্দ্ব পার্শ্ববর্তী উগান্ডা ও বুরুন্ডিতে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে ১৯৯৩ সালে UNAMIR রুয়ান্ডাতে মোতায়েন করা হয়। পরবর্তীতে ব্যাপক নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে সেখানে স্থিতিশীল অবস্থা ফিরে এলে জাতিসংঘ তার বাহিনী প্রত্যাহার করে নেয়। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের প্রায় ১৩টি রাষ্ট্রের সৈন্য সেখানে মোতায়েন ছিল। এ বাহিনীর কার্যাবলি নিম্নরূপ : ক. রুয়ান্ডা থেকে আসা শরণার্থীদের সাহায্য ও আশ্রয়দানের জন্য অপারেশন।
খ. শরণার্থীদের জন্য পানি সরবরাহ এবং বিমান থেকে খাদ্য সরবরাহে সাহায্য ...ার জন্য অপারেশন সাপোর্ট। গ. রুয়ান্ডার বেসামরিক লোকদের মানবিক সাহায্য প্রদান।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, জাতিসংঘ আফ্রিকার যুদ্ধোত্তর পুনর্গঠন থেকে শুরু করে জাতিগত দাঙ্গা নিরসন, যুদ্ধের মুখোমুখি অবস্থা থেকে শান্তিপূর্ণ অবস্থা আনয়ন, মানবিক ত্রাণ তৎপরতা | ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। তাই জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনের অবদান অনস্বীকার্য।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]