লেনিনের মৃত্যুর পর সোভিয়েত রাশিয়া লেনিনের মৃত্যু পর বলশেভিক পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও ক্ষমতা

অক্টোবর ১৯১৭ সালে বিপ্লব দ্বারা ক্ষমতা অধিকারের পর বলশেভিক নেতা লেনিন ও তাঁর সহযোগীরা রাশিয়াকে একটি সমাজতন্ত্রী রাষ্ট্রে পরিণত করার কাজে হাত দেন। বিপ্লবের প্রাক্কালে লেনিন শ্রমিকদের রুটি, কৃষকদের জমি ও সেনাদলকে শাস্তিদানের প্রতিশ্রুতি দেন। তা পূরণের জন্য বিপ্লবী সরকার আত্মনিয়োগ করে।
ব্রেস্টলিটভস্কের সন্ধির শর্ত
লেনিন সর্বপ্রথম জার্মানির সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করে শাস্তিস্থাপনের কাজে হাত দেন এই উদ্দেশ্যে সন্ধির শর্ত আলোচনার দায়িত্ব তাঁর সহকারী লিও ট্রটস্কিকে দেওয়া হয় ট্রটস্কির প্রচেষ্টায় কাইজারের জার্মানির সঙ্গে ব্রেস্টলিটভস্কের সন্ধি (Treaty of Brestlitovsk) স্বাক্ষরিত হয়। এই সন্ধির দ্বারা রাশিয়া জার্মানিকে বহু স্থান ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। লেনিন বিশ্বাস করতেন যে, রুশ বিপ্লবকে স্থায়ী করতে হলে যুদ্ধ বন্ধ করে অবিলম্বে শান্তিস্থাপন করা দরকার। এজন্য তিনি জার্মানির প্রস্তাবিত সন্ধির কঠোর শর্তগুলি স্বীকার করেন। ব্রেস্টলিটভস্কের সন্ধির দ্বারা পোল্যান্ড, তিন বাল্টিক ফিনল্যান্ড, বাইলো রাশিয়া, ইউক্রেন এবং ট্রান্সককেশিয়ার একাংশ রাশিয়াকে ত্যাগ করতে হয়। এছাড়া জার্মানিকে প্রচুর টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। ব্রেস্টলিটভস্কের সন্ধি লেনিনের কূটনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচায়ক ছিল ।
i. পুরাতনতন্ত্রের ধ্বংসের আইন
অতঃপর সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে বলশেভিক সরকার পুরাতনতন্ত্রের প্রশাসনিক কাঠামোগুলোকে ভেঙে ফেলে। (১) ডুমা বা সংবিধান সভাকে বাতিল করা হয়। প্রজাতন্ত্রী সরকারের বহু সদস্যকে নির্বাসিত করা হয়। (২) মস্কো ও পেত্রোগ্রাদ শহরের মিউনিসিপ্যালিটিগুলোকে ভেঙে দেওয়া হয়। কারণ এই মিউনিসিপাল কমিউনগুলো ছিল বলশেভিক বিরোধী। (৩) জারের আমলের সিনেট ভেঙে দেওয়া হয়। (৪) জেমেস্টভো বা জেলা পরিষদগুলোকেও ভেঙে দেওয়া হয়। এই জেলাপরিষদগুলো বুর্জোয়া সংবিধানের সমর্থক ছিল। (৫) সেনাদলে অফিসার নিয়োগের নিয়ম বদল করা হয়। (৬) সেনাদলে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুরাতন আইনকানুন লোপ করা হয়। সেনাদের মধ্যে পুরাতন শ্রেণিবিভাগ লোপ করা হয়। সরকারের সকল গুরুত্বপূর্ণ পদগুলিতে বিশ্বস্ত বলশেভিকদের নিয়োগ করা হয়।
ii. ধর্মীয় সংস্কার
(১) রাশিয়ার জাতীয় গির্জাকে রাষ্ট্র থেকে সম্পূর্ণ পৃথক করা হয়। (২) গির্জার ভূসম্পত্তিগুলো রাষ্ট্র অধিগ্রহণ করে। (৩) রুশ নাগরিকদের বিবাহ দান ও বিবাহবিচ্ছেদ দানের অধিকার গির্জার হাত থেকে তুলে নেওয়া হয়। (৪) ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রীয় আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
এই অবস্থার প্রতিকারের জন্য লেনিন ১৯২১ সালে উগ্রপন্থি মার্কসবাদী প্রতিবাদ অগ্রাহ্য করে তার বিখ্যাত নিপ (NEP) বা নব অর্থনীতি প্রবর্তন করেন। । নীতিকে প্র্যাগমেটিক সাম্যবাদ বা প্রয়োজনভিত্তিক সাম্যবাদ বলা হয়। এর অর্থ ছিল যে, রাশিয়ায় প্রয়োজন বুঝে সাম্যবাদী নীতি প্রয়োগ করা হয়। মার্কসবাদ অক্ষরে অক্ষরে প্রয়োগ করা হবে না। এই নব অর্থনীতির ভিত্তি ছিল যে, (১) এ জমির মালিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এই ব্যবস্থার প যুক্তি দেখানো হয় যে, এই ধরনের কৃষক বা ব্যবসায়ীরা কাউকেও শোষণ করে না সকল শিল্পকারখানায় ২০ জনের মতো শ্রমিক বা কর্মী কাজ করতো, সেগুলি তা মালিককে ফেরত দেওয়া হয়। (২) এর ফলে নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির সৃষ্টি হয়। অপরদিকে বৃহৎ শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ও জমিদারদের অস্তিত্ব নিষিদ্ধ করে সমাজতন্ত্র স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বড় বড় কালকারখানার রাষ্ট্রায়ত্তকরণ বহাল রাখা হয়। কার্যে ১০% বড় বড় শিল্প ও মূল শিল্প কারখানাগুলো রাষ্ট্রের অধীনে থাকে। ৯০ শিল্পকারখানার বেসরকারীকরণ করা হয়। কিন্তু সরকারি মালিকানাধীন ১০ শিল্পকারখানায় মোট শ্রমিকের ৮০% কাজ করতো। বাকি ২০% বেসরকা মালিকানার অধীনে থাকে। ক্ষুদ্র চাষিদের জমির মালিকানা দেওয়া হয়। ক্ষুদ্র চাষি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মালিকানা দিয়ে ধনতন্ত্রকেও আংশিক স্বীকার করা হয়। এ ব্যবস্থাকে মিশ্র অর্থনীতি বলা যায়। (৪) কৃষকরা তাদের খেতের উৎপন্ন ফা বাজারদরে বিক্রয়ের সুযোগ পায়। চাষিদের বলা হয় যে, তারা নগদ টাকার কর আদা না দিয়ে ফসলের ভাগ দেবে। পরে পুরো নগদ টাকার কর আদায় চালু করা হয়। ( খাদ্যের মূল্যমান যাতে না বাড়ে সেদিকে দৃষ্টি রাখা হয়। (৬) বিদেশ থেকে মূল্য এনে শিল্প গঠন নীতি গ্রহণ করা হয়। (৭) গরিব কৃষকদের করভার থেকে অব্যাহ দেওয়া হয়। (৮) কুলাক বা সচ্ছল কৃষকদের জমির উপর কর বাড়ানো হয়। এভা লেনিন তাঁর শাসনকালে বলশেভিক বিপ্লবকে সংহত করেন।
বলশেভিক সরকারের স্বীকৃতি লাভ
লেনিনের সর্বশেষ কৃতিত্ব ছিল বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের নিকট বলশেভিক সরকারে স্বীকৃতি লাভ। লেনিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিকেরিনের কূটনীতির ফলে ১৯২৪ সালে ইংল্যা সর্বপ্রথম রাশিয়াকে স্বীকৃতি দেয়। এর পর ফ্রান্স, ইতালি প্রভৃতি দেশগুলো সোভিয়ে রাশিয়াকে স্বীকৃতি দেয় । মার্কিন দেশ বহু পরে রুশ সরকারকে স্বীকৃতি জানায় ।
viii. ব্রেস্টলিটভস্কের সন্ধি
১৯১৭ সালে বলশেভিক বিপ্লবের পর বিপ্লবের ভাবধারার সঙ্গে সংগতি রে লেনিন জারের আমলের পুরাতনপন্থি বিদেশ নীতিকে বর্জন করেন। ১৯১৮ সাল লেনিন জার্মানির সঙ্গে ব্রেস্টলিটভস্কের সন্ধির দ্বারা শান্তিস্থাপন করেন।
স্থাপন এবং রাশিয়ার উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মে শান্তি ক্রয় করেন।
রাশিয়া সরে দাঁড়াবার পর সোভিয়েত সরকার বর লক্ষ্য ঘোষণা করে। E. H. Carr নামক তর মূল কথা ছিল যে, শান্তির সময় একটি রাষ্ট্র ত দিবে না। কিন্তু সোভিয়েত সরকার এই বিপ্লবের ডাক দেয়। রুশ নেতারা ইউরোপের নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বলেন এবং পরাধীন তে উৎসাহ দেন। মার্কসবাদ অনুসারে পুঁজিবাদী খাদ্য-খাদক সম্পর্ক ছিল। সুতরাং পুঁজিবাদী
নিপীড়িত শ্রমিকদের মুক্তিদান করা ছিল রুশ যুদ্ধের চাপে ধনতন্ত্রী দেশগুলো দুর্বল হওয়ায় কোনো কোনো সোভিয়েত নেতা মনে করেন। নোভিয়েভ প্রমুখ। লেনিন বলেন যে, “বিজ্ঞানের বলা যায়, সেরূপ নির্ভুলতা নিয়ে আমি দেখতে দের প্রসার আসন্ন। ( I see the spread of g in the nature of scientific prediction)
রূপায়িত করার জন্য ১৯১৯ সালে কমিনটার্ন বা হ্বান করা হয়। বিশ্বের কমিউনিস্ট আন্দোলনকে দফতর গঠিত হয়। রুশ বিপ্লবী জিনোভিয়েভ শে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের জন্য এই দফতর থেকে । ও প্রচার পদ্ধতি বুঝিয়ে দেওয়া হয় ।
[বের লক্ষ্য পূরণ সফল হয়নি। জার্মানির ব্যাভেরিয়া সরকার গঠিত হলেও তা জাতীয়তাবাদী বুর্জোয়া ইংল্যান্ড, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশে বুর্জোয়া সরকারগুলো গুলোতে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব করা আদপেই সম্ভব কারগুলো বলশেভিক সরকারকে ধ্বংস করার জন্য
রাশিয়া ও সোভিয়েত ইউনিয়নের ইতিহাস ১৯৪৫ খ্রি. পর্যন্ত রাশিয়ায় সামরিক আক্রমণ চালায়। বৈদেশিক আক্রমণ এবং রাশিয়ার অভ্যন্তরে প্রতিবিপ্লবের সাঁড়াশির চাপে, রুশ সমাজতন্ত্রী সরকার আপাতত বিশ্ব বিপ্লবের রক্ষা করা বেশি দরকারি বলে মনে করা হয়। ১৯২০ সাল নাগাদ বিশ্ব বিপ্লবের আওয়াক্ত সরকারের পক্ষ থেকে ত্যাগ করা হয়। মার্কসীয় তত্ত্বের দিক থেকে নীতিগতভাবে বিশ্ব বিপ্লবের নীতিকে স্বীকার করা হলেও, হাতেকলমে সোভিয়েত রাশিয়া ১৯২০ সাল পর তা করা থেকে অনেকটা বিরত থাকে। অন্যান্য জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রের মতোই জাতীয় স্বার্থ এবং বিশ্ব বিপ্লবের নীতির মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে সোভিয়েত রাশিয়া জাতীয় স্বার্থকেই শ্রেষ্ঠ স্থান দেয়। তবে মুখে বিশ্ব শ্রমিক বিপ্লবের কথা মাঝে মাঝে বলা হয় এবং মার্কসীয় গোঁড়ামি নিয়ে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের প্রতি ঘৃণা দেখানো হয়। বলশেভিক বিপ্লবের পর সোভিয়েত সরকারের প্রধান সমস্যা ছিল বিভিন্ন রাষ্ট্রের কাছ থেকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি আদায় করা ।
ইউরোপের প্রধান রাষ্ট্রগুলো এবং মার্কিন দেশ একাট্টা হয়ে নবগঠিত সোভিয়েত সরকারকে বৈঠক ত্যাগ করে জার্মানির সঙ্গে র‍্যাপালোর সন্ধি (Treaty of Rapallo) ১৯২২ সালে স্বাক্ষর করেন। র‍্যাপালোর সন্ধি ছিল পশ্চিমি দেশগুলোর বিনা মেঘে বজ্রপাত। কারণ এই সন্ধির দ্বারা জার্মানি ও রাশিয়া দুই ভার্সাই বিরোধী শক্তি জোটবদ্ধ হয়। জার্মানিতে সাম্যবাদের অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা দেখা দেয়। জার্মানির প্রতিবেশী ফ্রান্স এজন্য আতঙ্ক বোধ করে। র‍্যাপালোর সন্ধি (১৯২২ সাল) দ্বারা স্থির করা হয়, (১) সোভিয়েত ভূমিতে জার্মান সেনাদের সামরিক তালিম ও অস্ত্র দেওয়া হবে। জার্মান সেনাপতিরা লাল ফৌজকে আধুনিক যুদ্ধের তালিম দেবেন। (২) জার্মানি সোভিয়েত রাশিয়াকে স্বীকৃতি দেবে এবং বাণিজ্যিক সুবিধা দেবে। এই সন্ধির ফলে ভার্সাই সন্ধির সামরিক শর্ত ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। জার্মানির রূঢ় জেলা ফ্রান্স অধিকারের জন্য জার্মানিতে যে অর্থ সংকট দেখা দেয়, তা মিটাতে রাশিয়া জার্মানিকে অর্থ সাহায্য করে।
সোভিয়েত সরকারের স্বীকৃতি দান
র‍্যাপালোর সন্ধির পর পশ্চিমি রাষ্ট্রগুলো রুশ কূটনীতিকে সমীহ করে চলতে বাধ্য হয়। জর্জ চিকেরিন এই সময় ঘোষণা করেন যে, যে রাষ্ট্র সর্বাগ্রে রাশিয়াকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেবে, রাশিয়া সেই রাষ্ট্রকে বাণিজ্যের বিশেষ সুবিধা দেবে। এর ফলে ইংল্যান্ড, ইতালি ও ফ্রান্সের মধ্যে স্বীকৃতি দানের জন্য প্রতিযোগিতা আরম্ভ হয়। ইংল্যান্ড ১৯২৪ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নকে 'সকল দেশের আগে স্বীকৃতি জানায়। এর পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া আর সকল রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেয় । দেশ বহু বিলম্বের পর ১৯৩৯ সালে এই স্বীকৃতি দেয় ৷
ধারণ করে। উল্লেখ্য, ১৯১৮ সালে প্ররোচিত হয়ে এক মহিলা লেনিনকে রুতর আহত হন। এর ফলে তাঁর শরীর পর প্রচণ্ড চাপ ছিল। কারণ ১৯১৭ সালে ত্রপাত ঘটে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় প্রশাসনিক শ্রিম। ১৯২১ সালের শেষদিকে শারীরিক কাজকর্ম থেকে অনেক সময়ই ছুটি নিতে কে তাঁর স্বাস্থ্যের আরও অবনতি ঘটে। এ
কাজকর্ম থেকে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ ছি গর্কিতে গিয়ে তিনি বসবাস শুরু করেন। গ (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত রোগে) প্রথম পক্ষঘাত ঘটে। সাময়িকভাবে তাঁর হাত, পা [র ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন এবং কথার ক্ষেত্রে য় লেনিনের শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি অবস্থার খানিকটা উন্নতি ঘটে। জুলাই মাসে দের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করার অনুমতি দেন প-আলোচনা করতে দেওয়া হয়নি। অক্টোবর স্থার উন্নতি ঘটলে তিনি পুনরায় গর্কি থেকে র আসার পর তিনি ৩ অক্টোবর গণপ্রতিনিধি ।। তিনি ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত পার্টির কেন্দ্রীয়
হওয়ায় তাঁর ব্যক্তিগত ডাক্তাররা এ অবস্থা ন করেন, তাঁর ভেতর বিশ্রামের নির্দেশনাই ছিল য়ার পরপরই পুনরায় কঠোর পরিশ্রম করতে শ কার্যকরী কমিটির অধিবেশনে ভাষণ দেন। গ্রেসে নয়া অর্থনীতি ও বিশ্ব বিপ্লবের সম্ভাবনা । তিনি প্রায় এক ঘণ্টা জার্মান ভাষায় বক্তৃতা I বেশ অসুস্থ বোধ করেছিলেন তা স্পষ্টতই বুঝা ও মনে হচ্ছিল ।
হওয়া সত্ত্বেও তিনি বিশ্রামে যাননি। বরং তিনি াভিয়েতের (নগর পালিকা) এক প্লেনারি সেশনে তা প্রদান করেন। জনসভায় এটিই ছিল তাঁর শেষ
ভাষণ । এই ভাষণে তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলেন যে, “এই নয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে রাশিয়া যদি অগ্রসর হয়, তবে একদিন অবশ্যই সে সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে
নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।
তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা দিনের পর দিন আরও খারাপ হতে থাকে। তারপরও তি বিশ্রাম না নিয়ে কাজ করতে থাকেন। এ সময়েই তিনি আবার নিখিল রাশিয়ান কংগ্রেসে ভাষণ দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অবশেষে ১৯২২ সালের ১২ ডিসেম্বর ১ ক্রেমলিন থেকে শেষ বিদায় নেন। কিন্তু তারপরও কাজ থেকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে যাননি তিনি নেপথ্যে থেকে পার্টির কাজকর্ম তদারকি করতে থাকেন। তাঁর শারীরিক অবস্থ যে দিনে দিনে খারাপ হচ্ছিল তা তিনি নিজেও বেশ ভালোভাবে উপলব্ধি করছে পারছিলেন। তাই ১৫ ডিসেম্বর তারিখে তিনি লিখেছিলেন, “আমার কাজ আমি ৫ গুছিয়ে ফেলেছি, এখন আমি শান্তিতে যেতে পারি।”
১৯২৩ সালের প্রথম দু মাসে লেনিনের স্বাস্থ্যের বেশ উন্নতি পর্যবেক্ষণ কর যাচ্ছিল। এ সময়ে তিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা করেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা অতিরিক্ত খারাপ হওয়ায় তিনি প্রবন্ধগুলো মুখে বলে যান ও তাঁর স্টেনোগ্রাফার সেগুলো টুকে নেন। তাঁর প্রবন্ধগুলোর মূল বিষয়বস্তু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল শ্রমিকের একনায়কতন্ত্র, প্রশাসনিক ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং একটি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কী ধরনের অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণ করা হবে সেগুলি। সমাজে কৃষকের সাথে শ্রমিকের সম্পর্কের স্বরূপ কী হবে, রাষ্ট্রের কাঠামো, বিধিব্যবস্থা, সোভিয়েত ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতি কী ধরনের হবে এবং পার্টির ঐক্য ও সংহতি ধরে রাখতে কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে তা বিস্তৃতভাবে আলোকপাত করেন একটি সমাজতান্ত্রিক কাঠামো নির্মাণ তথা নয়া চৈতন্য বিকাশের প্রশ্নে এ প্রবন্ধগুলো ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, লেনিন তাঁর নিজস্ব ধ্যানধারণা, চৈতন্য ও জ্ঞানতত্ত্বের উপর ভিত্তি করে যে লেনিনবাদ প্রচার করেছিলেন, সেই লেনিনবাদের মূলতত্ত্বগুলো প্রবন্ধের মধ্য দিয়ে পুনরায় আলোচনা করা হয়। মূলত এই প্রবন্ধগুলো ছিল অনাগত দিনের সোভিয়েত রাষ্ট্রনায়কদের জন্য একটি 'মেনিফেস্টো' তাদের ভবিষ্যৎ কর্মপদ্ধতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
-
যার আলোকে তাঁরা ১৯২৩ সালের ৯ মার্চ লেনিন পুনরায় সন্ন্যাস রোগে আক্রান্ত হন। এ সময়ে তাঁর শারীরিক অবস্থা পুনরায় অত্যন্ত সংকটজনক পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছে। মে মাস নাগাদ লেনিনের শারীরিক অবস্থার কোনো প্রকার উন্নয়ন লক্ষ করা যায়নি। এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে তাঁকে পুনরায় গর্কিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কয়েক মাস অবস্থান করার পর জুলাই মাস নাগাদ তাঁর শারীরিক অবস্থার পুনরায় কিছুটা উন্নতি লক্ষ করা যায়। ১৯২৩ সালের ১৯ অক্টোবর কয়েক ঘণ্টার জন্য তিনি পুনরায় মস্কোতে আসেন, যা ছিল তাঁর জীবনের সর্বশেষ বারের মতো মস্কোতে আসা ।
১৯২৪ সালের ২১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় লেনিন পুনরায় সন্ন্যাস রোগে আক্রান্ত
৫.৫০ মিনিটে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর সংবাদ খুব দ্রুত সমগ্র পৃথিবীতে ছড়িয়ে হন। এ সময়ে তাঁর চেতনা সম্পূর্ণরূপে লোপ পায়। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলে সন্ধ্যা পড়ে। লেনিন মারা যাওয়ার পর তার মৃতদেহ কী করা হবে এ নিয়ে এক দ্বিধাদ্বন্দ্ব দেখা দেয়। কারণ লেনিনের স্ত্রী ক্রুপস্কারা ও বেশ কয়েকজন বলশেভিক নেতৃবৃন্দ তাঁকে প্রচলিত নিয়মে কবরস্থ করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু স্টালিন লেনিনের দেহকে সমাধিস্থ না করে বরং তাঁকে সমাধিবন্দরে ধরে রাখবার ব্যবস্থা করেন। ১৯২৪ সালের ২৭ জানুয়ারি সকাল ৯ টায় লেনিনের মৃতদেহ ট্রেড ইউনিয়ন ভবন থেকে রেড স্কয়ারে আনা হয়। সেখানেই তাঁর শেষকৃত্য করার পর বিকাল ৪ টায় বাদ্য-বাজনা, কলকারখানার বাঁশিগুলোর অবিরাম ধ্বনি ও কামানের মুহুর্মুহু গর্জনের মধ্য দিয়ে। লেনিনের মৃতদেহ সমাধিবন্দরে স্থাপন করা হয়। ঐ দিন বিশ্বের সকল শ্রমিক পাঁচ মিনিটের জন্য নীরবতা পালন করে।
লেনিনের মৃত্যু পরবর্তী সময়ে রাশিয়ার রাজনীতি কোন দিকে মোড় নেয় সে বিষয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। বিশেষ করে পুঁজিবাদী দেশগুলো ধারণা করেছিল যে, তাঁর অবর্তমানে সোভিয়েত ইউনিয়ন একটি জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে পড়বে। এর ফলে পৃথিবীর প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পক্ষে টিকে থাকা অত্যন্ত কঠিন হবে। তাঁদের এই আশঙ্কা যে একবারে অমূলক ছিল, তাও নয়। এ ধরনের একটি আশঙ্কা লেনিনও তাঁর নিজের মৃত্যুর পূর্বে করেছিলেন। এর পেছনে সক্রিয় ছিল স্টালিন-ট্রটস্কির দ্বন্দ্ব। এ বিষয়ে লেনিন তার বিখ্যাত স্মারকলিপিতেও উল্লেখ করেছিলেন। তবে এ অবস্থা থেকে স্টালিন খুব ভালোভাবেই সোভিয়েত ইউনিয়নকে রক্ষা করেছিলেন। তিনি পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করে সোভিয়েত ইউনিয়নকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যান। এই পুরো প্রক্রিয়াটি তুলে ধরার প্রয়াস আলোচ্য অংশে। তবে আলোচনার সুবিধার্থে এর পটভূমি হিসেবে ধরতে হবে লেনিনের বিখ্যাত
স্মারকলিপিকে। সেই আলোকেই পরবর্তী ঘটনা পরস্পর অগ্রসর হয়েছিল।
লেনিনের শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ার ফলে ১৯২২ সাল থেকেই তিনি মূলত সকল প্রকার সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তবে সমকালীন রাজনীতির ওপর তাঁর অত্যন্ত তীক্ষ্ণ নজর ছিল। তাই এ সময়ে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত সেক্রেটারিকে দিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর চিন্তাভাবনাগুলো লিপিবদ্ধ করাতেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটলে লেনিন অনুধাবন করেন যে, মৃত্যু অত্যাসন্ন। এ রকম অবস্থায় তিনি তাঁর সেক্রেটারিকে দিয়ে একটি স্মারকলিপি লিপিবদ্ধ করেন। এই স্মারকলিপিতে তিনি ভবিষ্যতে পার্টির অভ্যন্তরে ভাঙন প্রসঙ্গে আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। এতে তিনি স্টালিন ও ট্রটস্কিকে পার্টির সবচেয়ে শক্তিশালী নেতা এবং একে অপরের
দুরভিসন্ধিমূলক কার্যকলাপের জন্য দায়ী না করে উভয়কেই সচেতনভাবে কাজ করার জন্য পরামর্শ দেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই, অর্থাৎ
অর্থাৎ ১৯৬১ সালের ৩০ ডিসেম্বর স্মারকলিপিতেই আরও কিছু মন্তব্য যুক্ত করেন। উল্লেখ্য, একই দিনে টিকিন হাতীর নয়া সংবিধান সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রীয় নিখিল সোভিয়েত প্রাগ্রেসের অধিবেশনে পরীর হয়েছিল। কিন্তু তারপরও লেনিন তাঁর স্মারকলিপিতে স্টালিনের বিরুদ্ধেই সেখানে বহু ব্য যুক্ত করেন। এর পেছনে কারণ হিসেবে কাজ করেছিল যে, জর্জিয়ার কমিউনিক পার্টির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। সেখানে স্টালিনের সমর্থকদের সাথে তাঁর সাহায্যার্থে বিরে মতের মানুষের কারারুদ্ধ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, বিরোধীদের দমন করতে যাই উৎপীড়নও করা হয়েছিল। এ বিষয়ে লেনিনের কাছে অনেকেই অভিযোগ উদাপন করেছিলেন। খুব সম্ভবত, এ ধরনের একটি প্রেক্ষাপটে লেনিন স্টালিনের প্রতি যঙ্গেই বিরক্ত হন। যার ফলশ্রুতিতে তিনি উক্ত স্মারকলিপিতে তাঁর রাজনৈতিক স স্টালিনের প্রতি এরূপ বিরূপ মন্তব্যসমূহ লিপিবদ্ধ করেন। বস্তুত ৩০ ডিসেম্বর জর্জিয়ার
এর ছয়দিন পর স্টালিনের কর্মকাণ্ডকে বাড়াবাড়ি বলে অভিমত ব্যক্ত করেন জানুয়ারি তিনি তাঁর স্মারকলিপিতে নিম্নোক্ত মন্তব্যটি যুক্ত করেন, স্টালিন অত্যন্ত রূঢ় এবং জেনারেল সেক্রেটারির পদের পক্ষে এই ত্রুটি অসহনীয়। আমি কংগ্রেসের নিকট এই প্রস্তাব করছি যে, স্টালিনকে ঐ পদ থেকে অপসারিত করে সেখানে অধিকতর ধৈর্যশীল, বিশ্বস্ত, বিনয়ী ও সহকর্মীদের প্রতি মনোযোগী অপর কাউকে নিযুক্ত করা হোক ।
লেনিন স্মারকলিপিতে স্টালিন সম্পর্কে উপরোক্ত মন্তব্য লিপিবদ্ধ করলেও তা যেন জনসম্মুখে প্রকাশিত না হয়, সে ব্যবস্থাও করেন। বস্তুত পুরো বিষয়টি লেনিনের স্ত্রী ক্রুপস্কায়া ও লিপিবদ্ধকারী সেক্রেটারি ছাড়া অন্য কেউই জানতেন না। লেনিনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটলে তিনি নিজে অনেক কাজকর্মে জড়িয়ে পড়েন। তবে সে সময় এ স্মারকলিপি বাইরে প্রচার করা থেকে বিরত থাকেন। এ সময়ে লেনিন জর্জিয়ার প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে কামেনেভকে সেখানে প্রেরণ করেন এবং জর্জিয়ার বিরোধী প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগগুলো নিজে কংগ্রেসে উত্থাপন করবেন বলে প্রতিশ্রুতিও প্রদান করেন। কিন্তু ১৯২৩ সালে মাসে তিনি পুনরায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে ঐ বৎসরের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত পার্টি কংগ্রেসের অধিবেশনে তিনি যোগদান করতে পারেননি। এর ফলে যেভাবেই হোক, স্টালিনের বিরুদ্ধে জর্জিয়া প্রসঙ্গে যে অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার কথা তা আর উত্থাপন করা হয়নি।
কন্দ্রীয় কমিটির অধিবেশনে এই চই লেনিন ট্রটস্কি সম্পর্কে মন্তব্য রশীল’, ‘অবলশেভিক' ইত্যাদি। পার্টি কংগ্রেসে উত্থাপন করা হবে ভিভ, কামেনেভ প্রমুখ সকলে এই র উত্থাপনের প্রয়োজন নেই । তবে ন নেতৃবৃন্দকে এই স্মারকলিপিটি ২ণ করা হয় এবং তা কার্যকর করা স্টালিন নিজ থেকে পার্টির প্রধান পার্টির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ স্টালিনকে তারা সকলেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত ই কোনো একক ব্যক্তির বা নেতৃত্বের পূরণ করা যেতে পারে কেবল যৌথ 5 প্রাপ্ত প্রস্তাব স্টালিন গ্রহণ করলেন। াগিতামূলক সম্পর্ক' তৈরি ও লেনিনের করেন। সুতরাং স্টালিনের রাষ্ট্র ক্ষমতা স্মারকলিপি সম্পর্কে জানতেন না, এ াওয়া যায় না।
• পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও
অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব চরম য়েত ইউনিয়নে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এক পছনে প্রধান কারণ ছিল ভালো ফসল না
হয়ে যায়। অর্থনৈতিক সংকটকে কেন্দ্র মনে চলে আসে। এ সংকট আরও ঘনীভূত নের মৃত্যুর পর ট্রটস্কি, জিনোভিভ প্রমুখ ঠত্বের প্রতি সহযোগিতার কথা মুখে বললেও কাজে লাগিয়ে পুনরায় মাথা তুলে দাঁড়াতে টি প্রবন্ধ লেখেন যার শিরোনাম ‘অক্টোবর ইনি অধিকাংশ কমিউনিস্ট নেতার বিরুদ্ধে মারও উল্লেখ করেন যে, এই সকল নেতৃবৃন্দ পরিপূর্ণভাবে সহযোগিতা করেননি। বস্তুত এ রে পার্টির অভ্যন্তরে 'নয়া বিরোধী দল' নামে এর ফলে পার্টির অভ্যন্তরে ট্রটস্কি ও । করে এক তীব্র সংগ্রামের সূত্রপাত হয়।
এ বিরোধী দলগুলো পাতি ও জনমানুষের সামনে বেশ কিছু প্রশ্ন নিয়ে আসেন। প্রথমত, দেশে যদি প্রকৃত অর্থে শিল্পায়ন করতে হয়, তাহলে শিল্পায়নের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি যদি বিদেশ থেকে আমদানি না করা হয় তাহলে দেশের অভ্যন্তরে প্রকৃত অর্থে শিল্পায়ন সম্ভব কি না? দ্বিতীয়ত, নিম্ন বর্ণের কৃষকদের স্বার্থের নির বিবেচনা না করে দেশের অভ্যন্তরীণ কৃষি ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তন আনা সম্ভব কি না? তৃতীয়ত, সোভিয়েত ইউনিয়নে সকল শিল্পায়নের ক্ষেত্রে যে ধরনের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, একে কি প্রকৃত অর্থে সমাজতান্ত্রিক পদক্ষেপ যাবে কি না? নাকি এটি পুরোপুরি রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদেরই নামান্তর? চতুর্থত, মধ্য শ্রেণির কৃষক বলে যাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে তারা কি প্রকৃত অর্থে শ্রমিক শ্রেণির স্বপক্ষের শক্তি হিসেবে বিকশিত হবে? নাকি তারা পরবর্তী সময়ে সমাজতন্ত্রের অগ্রগতির পথে প্র অন্তরায় হিসেবে দাঁড়াবে?
সবশেষে তাঁরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেন সেটি হলো- যদি অন্যান দেশের শ্রমিক শ্রেণির চাপে বুর্জোয়া রাষ্ট্রগুলো সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়, তথাপি কোনো প্রকার যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং সেক্ষেত্রে যদি যুদ্ধের ফলাফল সোভিয়েত ইউনিয়নের পক্ষেই আসে- এ কথা যদি ধরে নেওয়া হয়- তারপরও সোভিয়েত ইউনিয়নে কি পরিপূর্ণভাবে সমাজতন্ত্র গড়ে তোলা সম্ভব হবে? মূলত এই প্রশ্নটিই প্রধান হিসেবে সবার সামনে আলোচনায় চলে আসে
তবে উপর্যুক্ত শেষ প্রশ্নের উত্তর বিভিন্ন সময়ে লেনিন নানাভাবে দিয়েছিলেন এমনকি তাঁর লেখা সর্বশেষে তিনটি প্রবন্ধেও তিনি এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন সেখানে যুক্তি সহকারে তিনি বলেছিলেন যে, “একটি পরিপূর্ণ সমাজতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য সকল উপাদানই সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেতর বিদ্যমান রয়েছে স্টালিন লেনিনের দেখানো যুক্তির আলোকেই ট্রটস্কিপন্থিদের প্রশ্নের উত্তর দেন স্টালিন যুক্তি হিসেবে তুলে ধরেন যে, সোভিয়েত ইউনিয়ন একটি বিশাল মহাদেশ সমতুল্য, এর রয়েছে সুবিশাল জনসংখ্যা ও প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ । সুতরাং এ রকম সমাজে বাইরের কোনো প্রকার সাহায্য সহযোগিতা ছাড়াই সমাজতন্ত্র গড়ে তোলা সম্ভব।
স্টালিনের এই নীতি ঘোষণার পর বলশেভিক পার্টির চতুর্দশ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কংগ্রেস স্টালিনের নীতির স্বপক্ষে অনেক ভোট পড়ে। এর বিপরীত মতের পক্ষে শতকরা ৩টি ভোটও পড়েনি। ফলে স্টালিনের মত পার্টি কংগ্রেসে গ্রহণ করে। এ সময়ে কেন্দ্রীয় কমিটি অত্যন্ত সুদৃঢ় ভাষায় ঘোষণা করে যে, কেবল সোভিয়েত ইউনিয়নেই সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব-এ রকম একটি বিশ্বাস ও আকাঙ্ক্ষা এবং তা বাস্তবায়নের জন্যই বলশেভিক পার্টির নেতৃত্বে ১৯১৭ সালে বিপ্লব হয়েছিল। পক্ষান্তরে, মেনশেভিকরা ছিল এই মতের বিরোধী। তাই যারা এই মতের বিরোধিতা করছে, তারা বস্তুত মেনশেভিকদেরই পথ অনুসরণ করছে। তবে কেন্দ্রীয় কমিটি এই কথা বলে সতর্ক বার্তা দেয় যে, যুক্তরাষ্ট্রের চারপাশে যে সকল পুঁজিবাদী দেশ রয়েছে, সেখান থেকেও এই রাষ্ট্রের প্রতি হুমকি আসতে পারে। এই সম্ভাবনা সোভিয়েত ইউনিয়নে

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]