স্টালিনের শাসনামলে রাশিয়ার শিল্পায়নের ইতিহাস সংক্ষেপে আলোচনা স্টালিনের শাসনামলে রাশিয়ায় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসমূহের বর্ণনা দাও।

জোসেফ স্টালিন সোভিয়েত ইউনিয়নের ইতিহাসে অন্যতম সফল শাসক স্টালিনের
জীবনী
১৮৭৯ সালের ২১ ডিসেম্বর টিফলিস প্রদেশে গোরি নামক শহরে যোসে স্টালিন এর জন্ম হয়। তাঁর পিতা ভিসারিওন আইভানোভিচ যুগাশভিলি ছিলেন কৃষক সম্প্রদায়-সম্ভূত। তিনি মুচির কাজ করতেন। জার তৃতীয় আলেকজান্ডার-এর আমলে দরিদ্র জনসাধারণ হতেও ধর্মযাজক হওয়ার অধিকার স্বীকৃত হলে স্টালিন এর পিতা তাঁকে টিফলিসের এক ধর্মশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করেন। কিন্তু অল্পকালের মধ্যেই স্টালিন সোশাল ডেমোক্র্যাটিক দলের সদস্য হিসাবে রাজনৈতিক কার্যকলাপে সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়ায় তাঁকে ঐ প্রতিষ্ঠান হতে বহিষ্কৃত করে দেওয়া হয়। স্টালিনের অবশ্য যাজক হওয়ার আদৌ কোনো ইচ্ছা ছিল না। তিনি বাইবেল অপেক্ষা মার্কস এর গ্রন্থাদিই অধিক মনোযোগের সাথে পাঠ করতেন। সুতরাং ধর্মশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে বহিষ্কৃত হওয়াতে তাঁর কোনো অসুবিধা হলো না। তিনি সর্বান্তঃকরণে মার্কসবাদ কীভাবে কার্যকরী করা যেতে পারে, তা ভাবতে লাগলেন। ঐ সময় শ্রমিক আন্দোলন সমাজতান্ত্রিক প্রভাবের ফলে অত্যধিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। স্টালিন এ সকল আন্দোলনের পশ্চাতে যে সকল গোপন বিপ্লববাদী সমিতি ও দল ছিল, সেগুলোর দিকে আকৃষ্ট হলেন। পনেরো বৎসর বয়সে তিনি বিপ্লবী দলের সদস্য হলেন
স্টালিন ছিলেন নির্ভীক, গম্ভীর প্রকৃতির দৃঢ়চেতা পুরুষ। নিজ আদর্শে পৌঁছাবার জন্য ন্যায় অন্যায়ের বিচার তিনি করতেন না। বিপজ্জনক কার্যাদি সম্পাদনে তাঁর ন্যায় অপর কেউ এত পারদর্শী ছিল না। এজন্য বিপ্লবীদের মধ্যে তিনি যথেষ্ট খ্যাতি ও । প্রতিপত্তি অর্জন করেছিলেন। ‘স্টালিন' কথাটির অর্থ হলো 'ইস্পাত' - তাঁর চরিত্রের সাথে তাঁর এই নামের সামঞ্জস্য ছিল। ১৯০৩ সালে যে সকল সোশাল ডেমোক্র্যাটি লেনিন এর পক্ষ সমর্থন করেছিলেন তাদের মধ্যে স্টালিন ছিলেন অন্যতম। সে সময় হতে আরম্ভ করে লেনিন-এর মৃত্যু পর্যন্ত তিনি লেনিন-এর অনুগত সহচর ছিলেন।
স্টালিন দর্শন, রাজনীতি, ইতিহাস, বিজ্ঞান প্রভৃতি নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। সাহিত্য সম্পর্কেও তাঁর জ্ঞান নেহাত কম ছিল না। কিন্তু মার্কসবাদী এহাদি সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান ছিল অত্যন্ত গভীর। স্টালিন ছিলেন একজন প্রকৃত শিক্ষিত মার্কসবাদী। ১৯১৮ সালে তিনি টিফলিসের রেলকর্মচারীদের শিক্ষাকেন্দ্র (Study Circle) পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। ১৯০২ হতে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত স্টালিন চয় বার ধরা পড়েছিলেন এবং ছয় বারই নির্বাসন দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন। পাঁচ বার তিনি নির্বাসন হতে পলায়ন করতে সমর্থ হয়েছিলেন, কিন্তু ষষ্ঠ বার তাঁকে আর্কটিক অঞ্চলে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। ১৯১৭ সালে জারতন্ত্রের পতনের পর তিনি মুক্তিলাভ করেছিলেন ।
বলশেভিক বিপ্লব সাধনে স্টালিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিপ্লবাত্মক প্রভাব বিস্ত ার ও বলশেভিক দলের সংগঠন সুদৃঢ় করার জন্য প্রচারপত্র রচনা, অর্থসংগ্রহ প্রভৃতি নানাপ্রকার কার্যে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন তখন পার্টির সেক্রেটারি-জেনারেল। ১৯১৭ সালের নভেম্বর (৬,৭) মাসের বলশেভিক বিপ্লবে স্টালিন তাঁর সামরিক ক্ষমতারও পরিচয় দান করেছিলেন। নবগঠিত শাসনব্যবস্থায় স্টালিন Commissar of Nationalities নিযুক্ত হলেন। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই তিনি ট্রান্স-ককেশিয়ার রিপাবলিকের ঐক্যসাধন এবং USSR এর সংগঠন সম্পন্ন করেন। সংখ্যালঘিষ্ঠ সম্প্রদায়ের স্বার্থ যাতে সংরক্ষিত হয়, সে বিষয়েও তিনি যথেষ্ট সচেতন ছিলেন ।
বলশেভিক বিপ্লবকে বানচাল করার জন্য রাশিয়ায় বৈদেশিক সহায়তায় যে অন্তযুদ্ধের (Civil War) সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে লেনিন স্টালিনকে সর্বাপেক্ষা কঠোর এবং কঠিন সামরিক দায়িত্ব দান করেছিলেন। যেখানেই জটিল সামরিক পরিস্থিতি উপস্থিত হতো সেখানে স্টালিনকে প্রেরণ করা হতো। পরিকল্পনার কোনো পরিবর্তন করা ছিল বেআইনি কাজ। কয়লা, তৈল এব পরিবহণ শিল্পের উন্নয়নে বিশেষ জোর দেওয়া হয়। রাস্তাঘাট তৈরি, ক্যানাল খনন প্রভৃতি কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় ।
এর ফলে শিল্প উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। কৃষিপ্রধান রাশিয়া একটি শিল্পপ্রধান দেশে পরিণত হয়। বিদ্যুৎ, রেলইঞ্জিন, ট্রাক্টর, রেলপথ, লোহা, ইস্পাত, কয়লা প্রভৃতি উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি পায় ।
শিক্ষা সংস্কৃতির বিস্তারেও পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় জোর দেওয়া হয়। রাশিয়ায় বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হয়। কারিগরি বিদ্যা ও বিজ্ঞান শিক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়। ছাত্রদের মার্কসবাদী দর্শনের মূল বিষয় শিক্ষা দেওয়া হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল জনসাধারণের মন থেকে পুঁজিবাদী মনোবৃত্তি দূর করা। ধর্মনিরপেক্ষতাকে গ্রহণ করা হয়। গির্জায় প্রাধান্য নাশ করা হয়। গির্জার সম্পত্তি রাষ্ট্রীয়করণ করা হয়। রাশিয়ায় নিরক্ষরতা দূর হয়। বেকার সমস্যা লোপ পায়। কারিগরি শিক্ষার বিরাট প্রসার ঘটে। ভারী শিল্পে সোভিয়েত রাশিয়া প্রায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ হয়। খাদ্য উৎপাদন দারুণ বাড়ে। সামরিক অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণে সোভিয়েত ইউনিয়ন স্বয়ম্ভর হয়। মোট কথা, বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শক্তি হিসেবে সোভিয়েত দেশ আত্মপ্রকাশ করে সমাজতান্ত্রিক সমাজ গঠন করে ব্যক্তিগত মালিকানা লোপ করে দেশের সর্বসাধারণের মধ্যে সুবিধা ভাগ করে স্টালিন রাষ্ট্র পরিচালনার এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন জারতন্ত্রের অনগ্রসরতার যুগ অতীত ইতিহাসে পরিণত হয়। স্টালিনীয় শাসনকালের অপর একটি দিক ছিল প্রখ্যাত নেতাদের বহিষ্কার অথবা মৃত্যুদণ্ড দ্বারা স্টালিনীয় ডিক্টেটরশিপের নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা। স্টালিন বনাম ট্রটস্কিপন্থিদের দ্বন্দ্ব এবং ট্রটস্কি ও তাঁর সমর্থকদের উৎখাতের কাজ সমাধা করে স্টালিন ক্ষান্ত হননি। পলিটবুরো অথবা সুপ্রিম সোভিয়েত, অথবা সামরিক বিভাগের কোনো ক্ষেত্রে তিনি তাঁর বিরুদ্ধ প্রতিবাদীদের তিষ্টাতে দেননি। ১৯৩৬-৩৮ সালের মধ্যে তিনি প্রখ্যাত বলশেভিক নেতাগণ কামানভ, জিনোভিয়েভ প্রভৃতির তথাকথিত বিচার অনুষ্ঠান দ্বারা দোষ স্বীকারের স্বীকৃতি আদায় করেন। স্টালিনের বিশ্বস্ত ভিসিনিস্কি এই সকল বিচারকার্যে অভিযোগ পরিচালনা করেন। পলিটবুরোর অধিকাংশ সদস্যের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯৩৪ সালে কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সমিতির ১৩৯ সদস্যের প্রায় ৯০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বেশিরভাগ সন্দেহভাজন সদস্যের মৃত্যুদণ্ড হয়। রাশিয়ার ১৫ জন সেনাপতি বা ফিল্ড মার্শালের মধ্যে ১৩ জন বন্দি হয়ে পদচ্যুত ও দণ্ডপ্রাপ্ত হন। বহু সহস্র রুশ বুদ্ধিজীবী, অধ্যাপক, ছাত্র, সাহিত্যিক কারারুদ্ধ বা নির্বাসিত হন। প্রত্যেকের কাছ থেকে দোষের স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। এই Parge বা বহিষ্কারের সম্ভাব্য কারণ হিসেবে স্টালিনের বিরুদ্ধে সমালোচনার কণ্ঠরোধ ও তাঁর নিরঙ্কুশ একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ছিল। অথবা এটি তাঁর স্বৈরাচারী মনোবৃত্তির পরিচয় বলেও অনেকে মনে করেন।
স্টালিন পার্টিতে স্বৈরতন্ত্র শিয়াকে একটি পুলিশি রাষ্ট্রে হয়।
এখনও হয়নি। তিনি কিছুটা াভী ও সন্দেহপরায়ণ ছিলেন। চনি হয় বহিষ্কার করেন অথবা শার্টির প্রায় ৮ লক্ষ লোক নিহত নে। কয়েকজন ফিল্ড মার্শালও লিন এই নীতি নেন তার প্রকৃত ট্রটস্কি ও জিনোভিয়েভ গোষ্ঠীর অপর একটি ব্যাখ্যা এই যে, * রাষ্ট্রকে কার্যকর রাখতে হলে
কে সমৃদ্ধি ঘটিয়ে তাকে পৃথিবীর তিনি ভারী শিল্প গঠন করার করতে সক্ষম হয়। রাষ্ট্র সংগঠন
নামার বা Collectivism নীতি কৃষিকার্যে উৎসাহহীন হয়ে পড়ে। নজাররা শাস্তির ভয়ে উৎপাদন খামারের আগে যে সকল খামারে র কমে যায়। কৃষকেরা উদ্যমহীন অনেকটা সফল হয়। তবে তিনি র উৎপাদন হ্রাস করায় রুশিদের । না। স্টালিনের সকল দোষত্রুটি । রাষ্ট্র জগতে তিনি লৌহ মানব ও ; উইনস্টন চার্চিলের মতে ব্যক্তি ারিক জীবনে অনুরাগী। চার্চিল তাঁর জীবনের ও তাঁর আতিথেয়তার
प्रजात
৩২৬ রাশিয়া ও সোভিয়েত ইউনিয়নের ইতিহাস ১৯৪৫ খ্রি. পর্যন্ত ৯.৩ স্ট্যালিনের শাসনামলে রাশিয়ায় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা
১. প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা
১৯২৪ সালে লেনিন-এর মৃত্যুর পর ট্রটস্কি, কামানভ, জিনোভিয়েভ, বুখারিন প্রমুখ নেতৃবৃন্দের বিরোধিতা দমন করে স্টালিন লেনিন প্রবর্তিত অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের পন্থা এবং প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মূলধনের সাহায্য গ্রহণের নীতি চ রাখলেন। ১৯২৮ সালের অক্টোবর মাসে স্টালিন এর ব্যক্তিগত চেষ্টা পরিদর্শনাধীনে রাশিয়ার প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গৃহীত হয়। NEP এর হলে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা পাঁচ বৎসরে মধ্যে (১৯২৮-৩০) নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধন করতে সমর্থ হলে গোসপ্ল্যান বা স্টেট প্ল্যানিং কমিশন (Gosplan or State Planning Commission এই পরিকল্পনা প্রস্তুত করে ছিলেন এবং এটি কার্যকরী করার দায়িত্ব এই কমিশনে উপর ছিল। উৎপাদন, উৎপন্ন দ্রব্যের বণ্টন, মূলধনের ব্যবস্থা, শিল্প, কৃষি, পরিবহণ কিছুই ছিল এই কমিশনের অনুমোদনসাপেক্ষ
এই পরিকল্পনা অনুসারে শতকরা ৫৫ ভাগ ফসল বৃদ্ধি করা এবং এই কারণে সাড়ে পাঁচ কোটি একর জমি যৌথ কৃষি প্রতিষ্ঠানগুলোর অধীনে স্থাপন করা স্থির হলো রাশিয়ার কৃষকদের অধীনে মোট জমির এক-পঞ্চমাংশ এ ভাবে যৌথ কৃষি প্রতিষ্ঠানের অধীনে আনবার ব্যবস্থা হলো। কয়লা এবং তেলের উৎপাদন দ্বিগুণ করা, বৈদ্যুতিক শক্তি অন্তত তিন গুণ বৃদ্ধি করা এবং শিল্পোৎপাদন মোট চার গুণ বৃদ্ধি করবার পরিকল্পনা গৃহীত হলো। শিল্পজ্ঞান বৃদ্ধির জন্য টেকনিক্যাল স্কুল স্থাপন, বিদেশি শিল্প শিক্ষকদের আমন্ত্রণ, নিরক্ষরতা সম্পূর্ণভাবে দূরীকরণ, মুদ্রিত পুস্তকের সংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষ্টিমূলক আনন্দদানের জন্য প্রতি গ্রামে সংগীত, অভিনয় প্রভৃতির প্রতিষ্ঠান স্থাপনও প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অন্যতম অংশ হিসেবে গৃহীত হলো।
এই অল্প সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন সাধন একমাত্র সর্বসাধারণের অক্লান্ত শ্রমের দ্বারাই সম্ভব হয়েছিল। সংবাদপত্র, বক্তৃতা, সিনেমা, রেডিও, শোভাযাত্রা প্রভৃতির মাধ্যমে সমগ্র রুশ জাতির মধ্যে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা কার্যকরী করবার ইচ্ছা সংক্রামক ব্যাধির ন্যায়ই ছড়িয়ে পড়েছিল ।
প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা পাঁচ বৎসরের পূর্বেই সম্পন্ন করা হলো। এই পরিকল্পনা কার্যকরী হবার ফলে ১৯১৩ সালে রাশিয়ার অর্থনৈতিক পরিস্থিতির তুলনায় রাশিয়ার কয়লা ও খনিজ তেলের উৎপাদন দ্বিগুণ হলো। লৌহ ও ইস্পাতের উৎপাদনও ঠিক অনুরূপ বৃদ্ধি পেল। বৈদ্যুতিক শক্তির উৎপাদন তিন গুণে পরিণত হলো। দেশের সর্বত্র বিশাল বিশাল শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠল। জলবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান, লৌহ ইস্পাত শিল্প, রেল ইঞ্জিনের কারখানা, যন্ত্রপাতি প্রস্তুতের কারখানা, মোটর গাড়ি প্রস্তুতের কারখানা, ঔষধ প্রস্তুতের প্রতিষ্ঠান, নয়া নয়া কয়লার খনি, ট্রাক্টর প্রস্তুতের কারখানা গড়ে উঠল। মানুষের শ্রমে অল্প সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যুগান্তর আনয়নের এক চরম দৃষ্টান্ত রাশিয়া স্থাপন করতে সমর্থ হলো। পরিকল্পনা গ্রহণের দুই বৎসরের মধ্যে মোট এগারো শত মাইল রেলপথ প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল।
ষ্ঠান স্থাপনের ফলে কুলাক অর্থনৈতিক প্রাধান্য নাশ করুহ্রাস, পুরস্কার ইত্যাদি
রকল্পনা এক যুগান্তর আনয়ন স্তার দ্বারা ধনতান্ত্রিক মনোবৃত্তি কনিক্যাল স্কুল প্রভৃতি স্থাপিত শূন্য স্কুলে বিদ্যাভ্যাস করা ছিল সংখ্যা ছিল শতকরা ৭৩ জন নে এসে দাঁড়িয়েছিল ।
স্থান আছে বলে কমিউনিস্টরা র্বাপেক্ষা অধিক জোর দিয়েছে। রা, ধর্মপ্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয় রা নিষিদ্ধ হয়েছিল। কমিউনিস্ট ষিদ্ধ করা হয়েছিল। জারতন্ত্রের ই কারণে চার্চের সম্পত্তি রাষ্ট্রায়ত্তে প্রধান যুক্তি হলো এই যে, ধর্ম জ্যে ভগবানের নিকট হতে যথাযথ কষ্ট সহ্য করবার কথাই ধর্মে বলা দলেই মানুষ নিজ অবস্থার উন্নতি এই কারণেই রাশিয়ার ধর্ম সম্পর্কে
এতই দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার দোষত্রুটি দূর ঙ্গ সেগুলোর গুণও যাতে বৃদ্ধি পায় পরিগণিত হতে পারে, সেই ব্যবস্থা দিয়ে রাশিয়া যাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে
পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে বেসরকারি ও রাষ্ট্র পরিচালিত, তথাকথিত অবৈতনিক স্বায়ত্তশাসিত ইত্যাদি বহু ধরনের বিদ্যালয় রয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন এদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যবস্থা গড়ে তোলে। এখানে স্থাপন করা হয় সর্বসাধারণের শিক্ষার জন্য একই ধরনের বিদ্যালয় ব্যবস্থা যার দ্বার সকলের জন্য উন্মুক্ত। তাহলে এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কী শিক্ষা দেওয়া হতো? বিপ্লবোত্তর প্রথম বছরগুলোতে নিরক্ষরতা দূরীকরণের লক্ষ্যে বাধ্যতামূলক চার বছরের শিক্ষা কোর্স, তারপর সাত বছর মেয়াদি শিক্ষা শেষে সর্বজনীন বাধ্যতামূলক মাধ্যমিক শিক্ষা প্রবর্তন করা হয়। ১৯৭৬ সালে সর্বজনীন বাধ্যতামূলক মাধ্যমিক শিক্ষা প্রবর্তনের কাজ অনেকাংশে সমাপ্ত হয়।
স্টালিনের একজন ঐতিহাসিক ন্যায় বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতি উপজাতির শিক্ষাগত স্তরের দারুণ বৈষম্য দূর করে দেয়। পুরানো রাশিয়ার নির্মমভাবে অত্যাচারী এইসব মানুষদের অনেকের জন্য উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা দূরে থাক, মাধ্যমিক স্কুলও ছিল গৃহযুদ্ধ অবসানের অব্যবহিত পরেই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে প্রথম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের নির্মাণ শুরু হয়। আজ সোভিয়েত ইউনিয়নের মোট উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক সপ্তমাংশই (৮৬০টির মধ্যে প্রায় ১২০টা) চারটি মধ্য-এশীয় প্রজাতন্ত্র ও নিকটবর্তী কাজাখস্তানে প্রতিষ্ঠিত হয়। যদিও এদের জনসংখ্যা দেশের জনসংখ্যার নয় ভাগের এক ভাগ মাত্র ।
বিদ্যালয়সমূহের সংখ্যা ক্রমবৃদ্ধির ফলে এক বৃহত্তর শিক্ষক বাহিনীর প্রয়োজন দেখা দেয়। প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রয়োজন মেটানোর জন্য প্রাথমিক মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকদের চাহিদা যথাক্রমে পাঁচগুণ ও প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পায়।
প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রথম দুই বছরে শিক্ষকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় প্রায় ৫০ হাজারের মতো। কিন্তু শিক্ষকদের এই বিরাট বাহিনীও সর্বজনীন শিক্ষা কর্মসূচির প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজগুলোতে ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। ১৯২৮ সালে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের সংখ্যা ছিল ১০ হাজার, ১৯৩২ সালে এটা দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৮৪ হাজার।
এছাড়া ক্লাব, গ্রন্থাগার, জাদুঘর, সিনেমা ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের জাল সম্প্রসারিত হয় এবং এসবের জন্য কর্মচারীর চাহিদা বৃদ্ধি পায়। প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আমলে সংস্কৃতি কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এক তৃতীয়াংশেরও বেশি। ফলে সাংস্কৃতিক বিপ্লব ঘটে ।
শিল্পায়ন ও কৃষির যৌথীকরণের দ্রুততার ফলে অধিকতর শিক্ষাপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ-ইঞ্জিনিয়ার, কৃষিবিদ, পশুপালন বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসা কর্মী, হিসাবরক্ষক ইত্যাদির ক্রমবর্ধমান চাহিদা সৃষ্টি হয়। রাষ্ট্র বিশেষজ্ঞ তৈরির জন্য প্রচুর অর্থ বরাদ্দ করে। এর ফলেই উদাহরণস্বরূপ সম্ভব হয় পাঁচ বছরের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারের সংখ্যা দ্বিগুণ করা ও ডাক্তারের সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি করা। অন্যদিকে, মস্তিষ্কের কাজ যাঁরা করেন তাদের মধ্যকার বেকারত্বের অবসান ঘটাবার উদ্দেশ্যে এসব ব্যবস্থা গৃহীত হয়। সাধারণ উচ্চতর বিদ্যালয়গুলোর পুনর্গঠন দ্বারা নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও জনগণের
বদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা দিানের ব্যবস্থা প্রবর্তন করা
তি প্রস্তুত করে। যার জন্য ক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ
শযজ্ঞ তৈরির উদ্দেশ্যে এক র প্রথম বছরগুলোতে হাজার
মক স্কুলে ভর্তি হয়। এভাবে বহনতি জনগণকে অতীতের সমাজের সক্রিয় নির্মাতা হতে ও শিল্পকলার উপর মেহনতি নিয়ম সম্পর্কে সঠিক উপলব্ধি
দ্রুত উন্নতি সাধিত হয়। নয়া ন্ন ধরনের স্যানিটারি ও রোগ তৃসদন, নার্সারি ও কিন্ডাগার্টেন 1 বৃদ্ধি পায়। কাজ খুঁজে পেতে
• সালে শ্রম বিনিময় কেন্দ্রের রি এলাকাগুলোতে, এই সময়
পরেই ঘাটতিটা প্রধান প্রধান পরিহার্য প্রয়োজন ও কল্যাণের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার সম্প্রসারণ বকারত্ব দূর হয়। জনস্বাস্থ্যের

সের পর মাস কমতে থাকে। মতে আগেকার সংখ্যা তিরিশের [দ্ধিজীবী ও অদক্ষ শ্রমিকদের হয়। ১৯৩০ সালের ৭ নভেম্বর ন প্রাভেদা পত্রিকায় লেখা হয়, কদের সহযোগিতায় বেকারত্বের যৌথচাষি ও বুদ্ধিজীবীদের কাজ জতান্ত্রিক বিপ্লবের বিজয়ের ফলে নর্মাণের ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্যের রে মেহনতি জনগণের সাংস্কৃতিক
দেশ বিদেশের বন্ধুরা সোভিয়েত ইউনিয়নের বেকারত্বের অবসানকে অভিন করেন। প্রখ্যাত ওলন্দাজ লেখক মাটিন এন্ডারসন নেস্কো ১৯৩১ সালে উল্লেখ করে যে, সোভিয়েত ইউনিয়নে বেকারত্বের অবসান এক নয়া সমাজতান্ত্রিক সমাজ নিয়ে যুক্তিসংগত সুফল। বিখ্যাত ফরাসি কবি, লেখক ও প্রচারবিদ পল ভাইলা কুতুরিয়ে চ সমকালীন তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, “কল্পনা করুন একটা দেশের কথা, যে দে ফ্রান্সের চাইতে ৪০ গুণ বড়, যেখানে কোনো বেকারত্ব নেই এবং যেখানে চাই' বিজ্ঞাপন লাগানো রয়েছে। সেই দেশটি হচ্ছে সোভিয়েত ইউনিয়ন বেকারত্ব নেই।” অক্টোবর বিপ্লব বার্ষিকী উদযাপনের জন্য প্রতিবছর বিদেশ দেয় অতিথিরা সোভিয়েত ইউনিয়নে আসেন।
১৯৩১ সাল ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নে বেকারত্ব মুক্ত প্রথম বছর। সেই বছর অত্যন্ত বেশি সংখ্যক বিদেশি অতিথির সমাগম হয়। তাদের একটি দল কয়েকটি শহর ঘুরে এই কথাগুলো লেখেন : “অতি আনন্দের সাথে আমরা এই সত্য সমর্থন করছি যে সোভিয়েত ইউনিয়নে বেকারত্বের সম্পূর্ণ অবসান ঘটানো হয়েছে। এই সত্যই পুঁজিবাদী অর্থনীতির অরাজকতার উপর পরিকল্পিত সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির শ্রেষ্ঠত্ব যথেষ্টভাবে
তখনকার দিনে পাশ্চাত্যের লোকেরা সোভিয়েত ইউনিয়নের অধিবাসীদের কাছে জানতে চাইত বেকারত্ব পুনরায় দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না। উত্তর ছিল একটাই, সুদৃঢ় ‘না’। কিন্তু সন্দেহবাদীদের এতে বিশ্বাস জন্মাত না। তারা ভবিষ্যদ্বাণী করতো যে, যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন শিল্পোন্নত দেশগুলোর স্তরে পৌঁছুবে তখন শিল্পোন্নত দেশগুলোর ভাগ্যই তাকে বরণ করতে হবে এবং বেকারত্ব, সংকট ও অন্যান্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। কেউ কেউ একথা প্রমাণের চেষ্টা করেছেন এবং এখনো করছেন যে জাতীয় অর্থনীতিতে বৈজ্ঞানিক কৌশলগত সাফল্যগুলো প্রয়োগ করার ফলে অবশ্যম্ভাবীরূপে জনশক্তি অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে। এসব ভবিষ্যদ্বাণী সত্ত্বেও ১৯৩০ সাল থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নে বেকারত্ব নেই, সকল সক্ষমদেহী সোভিয়েত নাগরিক লাভজনকভাবে কর্মে নিযুক্ত রয়েছে। এভাবে রাশিয়ায় ব্যাপক কর্মসংস্থান ভিত্তিক বিপ্লব ঘটে।
সোভিয়েত রাষ্ট্র তার একেবারে প্রথম ফরমানগুলো দ্বারাই নারীদের সকল ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক অসমতার বিলোপসাধন করে। নারীদেরকে সমাজের সকল ক্ষেত্রে, পারিবারিক সম্পর্ক ও শিক্ষা ক্ষেত্রে পুরুষদের সমঅধিকার দেওয়া হয়।
নারী শ্রম সংরক্ষণ এবং মাতা ও শিশুসেবা সংগঠনকল্পে ব্যবস্থা গৃহীত হয় এবং সমাদ কাজের জন্য সমান বেতন দেওয়ার নীতি অনুসরণ নিশ্চিত করা হয়।
সোভিয়েতসমূহের দ্বিতীয় নিখিল রুশ কংগ্রেসে (নভেম্বর ৭-৯, ১৯১৭) গৃহীত শ্রমিক-কৃষক
“কৃষক রাজ প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত ফরমানে নারী শ্রমিক ও নারী কৃষক সংগঠনসমূহের মাধ্যমে রাষ্ট্র শাসনের কাজে নারীদের অংশগ্রহণের বিষয় বিবেচিত হয়। নারীদের রাজনৈতিক সমতা প্রথম সোভিয়েত সংবিধানের (১৯১৮) স্বীকৃতি লাভ করে
কিন্তু এটা জানা কথা যে সমতা আইনের বিধানে প্রতিষ্ঠিত হলেও বাস্তব জীবনে অংশগ্রহণ করতে পারে না। আর খোদ রাশিয়াতেও মেয়েদের মধ্যে নিরক্ষরতার হার প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে একজন অশিক্ষিত লোক রাষ্ট্র পরিচালনায়-নয়া জীবন নির্মাণের ভয়াবহ : প্রতি চার জনে মাত্র একজন লিখতে ও পড়তে জানত। দেশের পূর্ব সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে মেয়েদের সবাই ছিল নিরক্ষর। তারপর মেয়েরা স্কুল ও পাঠচক্রগুলোতে পুরুষদের পাশাপাশি বসে অক্ষর পরিচয় শিখতে শুরু করে। তখনকার দিনে নানা অসুবিধা ও রাষ্ট্রীয় বাজেটে অর্থের স্বল্পতা সত্ত্বেও সরকার নারীশ্রমিক ও নারী
কৃষকদের শিক্ষার জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করেন। এক্ষেত্রে বিপ্লব সাধিত হয়।
1 সোভিয়েত রাষ্ট্র নারীদের কেবল পুরুষদের সাথে সমতার ভিত্তিতে কাজ করার অধিকারই দেয়নি নারীদেরকে যে কোনো দক্ষ কাজ করার জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলাও উচিত বলে বিবেচনা করে। এর ফলে ১৯২৯ সালে দেখা যায় যে ফ্যাক্টরি স্কুলগুলোর ছাত্র সংখ্যার প্রায় অর্ধেকই মেয়ে। শ্রেষ্ঠ নারী শ্রমিকদেরকে ভর্তি হওয়ার বিশেষ সুযোগ দান করা হয়।
তৃতীয় দশকে পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে মেয়েদের জন্য স্কুল, আবাসিক স্কুল, মেয়েদের ক্লাব ইত্যাদি স্থাপিত হয়। নারীদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ দেওয়ার জন্য সরকার একের পর এক অনেকগুলো বিশেষ ব্যবস্থা না নিলে তৃতীয় দশকে মেহনতি নারীরাই হতো বেকারত্বের প্রথম শিকার। মধ্য এশিয়ার নারী শ্রমিকদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়। সেখানে রুশ বন্ধুদের সহায়তায় দক্ষ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ, মস্কোর নিকটবর্তী, রুশ কারখানাগুলোতে তুর্কমেনীয় মেয়েদেরকে তাঁত চালানো শেখানো হয় ।
আন্তর্জাতিক শ্রম দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বহু দেশে নারীদের মধ্যে বেকারত্বের হার পুরুষদের তুলনায় দ্বিগুণ। ইতালিতে গত দশ বছরে এক কোটিরও বেশি নারী কর্মচ্যুত হয়। জাপানে ত্রিশ বছরের বেশি বয়স্কা মেয়েরা কাজ পায় না। আর বিবাহিতা ও সন্তানের মায়েদের চাকরি না দেওয়া প্রায় নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নে ১৯৩০ সাল থেকে নারী বা পুরুষদের মধ্যে বেকারত্ব নেই। বয়স, জাতীয়তা ইত্যাদি নির্বিশেষে যে কোনো কর্মজীবী নারী তার কাজের গুণ ও পরিমাণ অনুযায়ী বেতন পায়। একমাত্র জ্ঞান ও কর্মদক্ষতাই বিচার করা হয়। একই কাজে নিয়োজিত একজন নারী তার পুরুষ সহকর্মীর চাইতে বেশি যোগ্য ও অভিজ্ঞ হলে তার কাজের উচ্চতর মূল্যনির্ধারণ করা হয় এবং তদনুসারে তাকে বেশি বেতন দেওয়া হয় ।
যখনই কোনো মেয়ে একটা কাজ পায় সে তা ছিনিয়ে নেয় একজন পুরুষের হাত থেকে- এ সমস্যা সোভিয়েত ইউনিয়নে নেই। সমাজতান্ত্রিক দেশে পুরুষ ও নারী-শ্রমিকের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনো অবকাশ নেই। সোভিয়েত ইউনিয়নে পরিকল্পিত, সংকটমুক্ত অর্থনৈতিক বিকাশ ও পূর্ণ কর্মসংস্থানের অবস্থা বিদ্যমান থাকায় তাকে নারী অথবা পুরুষ কাকে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দান করা উচিত সেটা স্থির করতে হয় না।
পুরুষদের চাইতে উচ্চে। এটা সত্য যে নারী বৃদ্ধি পাচ্ছে- উদাহরণস্বরূপ ফ্রান্সের উৎপাদন কর বেশি নারী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এর ৪
পার্থক্য রয়েছে : সোভিয়েত ইউনিয়নের নারীদের
ক্ষেত্রেই বেশি (জনস্বাস্থ্য), সামাজিক নিরাপত্তা ও
বেতার-ইলেকট্রনিকদের ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে -
পশ্চিমি দেশগুলোতে নারী শ্রমের ব্যবহার হয় প্রধানত জনতত্যকের ক্ষে
বুর্জোয়া অর্থনীতিবিদরা বলেন যে, সোভিয়েত অর্থনীতি এমন এক স্কুলে পৌছা যেখান থেকে তার বিকাশ মন্থর হয়ে পড়বে এবং তদনুযায়ী কর্মসংস্থানের হার হ্র পেতে বাধ্য। তাঁরা দাবি করেন যে সেই মুহূর্তে থেকে বেকারত্ব পুনরায় দেখা দেবে। সাক্ষীরূপে তারা অগ্রসর পুঁজিবাদী দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নের ইতিহাসকে তুলে ধরেন।
সোভিয়েত অর্থনীতিবিদরা বলেন তা ঠিক নয়, যেহেতু
যেহেতু সমাজতান্ত্রি অর্থনীতির বিকাশ ঘটে পরিকল্পিত পথে, এমন সব নিয়মের অধীনে যাতে মা সংকট ও বেকারত্বের জন্মদানকারী অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিকাশের কোনো স্থান নেই সমাজতন্ত্রের অধীনে উৎপাদনের লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের ক্রমবর্ধমান বৈষয়িক ও সাংস্কৃতিক প্রয়োজন পরিপূর্ণভাবে মেটানো। কাজেই সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সীমাহীন সুযোগ বর্তমান ।
সোভিয়েত ইউনিয়নের কারিগরি প্রগতি কাজের বোঝা হাল্কা করে ও কাজের অবস্থার উন্নয়ন ঘটায়। সকল অদক্ষ শ্রম বিলুপ্ত করে এবং কর্মদিন হ্রাস করে। একট হ্রাসকৃত কর্মদিন মানে পেশাগত ও শিক্ষাগত যোগ্যতা উন্নয়নের জন্য সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকলাপ, খেলাধুলা ও চিত্তবিনোদনের জন্য অধিকতর সময়। সুতরাং সোভিয়েতে ইউনিয়নের নাগরিকদের সামনে আগামীকাল কিংবা ভবিষ্যতে বেকারত্ব বা কম সংখ্যার
র উপর নয়া লিন সংবিধান' য়েত রাশিয়ার প্রতিটি সদস্য ধর্ম নির্বিশেষে ন্ট পার্টি, ট্রেড নর্বাচনের প্রার্থী চ করা হয়। এ নতা, সাম্য ও
থকে তারা প্রাণ জবাদী শ্রেণির
প্রতিষ্ঠিত হয়। তারিয়েত কর্তৃত্ব বস্থার মধ্য দিয়ে কৃষিক্ষেত্রে এক নয়া দ্বার উন্মোচন করা হয়। সমাজে বুদ্ধিজীবী শ্রেণির মধ্যেও পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। পুরো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জনসাধারণ রাজনৈতিক সচেতন হয়ে ওঠে। এরকম একটি রাজনৈতিক কাঠামোর পরিপ্রেক্ষিতে, রাষ্ট্রের অনু রাজনৈতিক চরিত্রের কাঠামোগত পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ফলে ১৯ সালে যে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছিল নয়া বাস্তব প্রেক্ষাপটে একটি নয়া সংবি প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল।
সংবিধান প্রণয়নের পদক্ষেপসমূহ (১৯৩৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৪ সালের ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত)
১৯৩৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্ব সোভিয়েত সংসারে অধিবেশনে একটি নয়া সংবিধানের খসড়া প্রণয়নের লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব গৃহীত সেই প্রস্তাব অনুসারে স্টালিনের নেতৃত্বে একটি সংবিধান প্রণয়ন কমিশন গঠিত এবং উক্ত কমিশনের নেতৃত্বে একটি খসড়া সংবিধান প্রণয়ন করা হয়
১৯৩৬ সালের জুন মাসে খসড়া সংবিধান জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়। সংবিধানের উপর আঠারো বছরের উর্ধ্বে সকল প্রাপ্তবয়স্ক নরনারীরা ভোট সুযোগ পান। তবে কেবল অপরাধীরা এ ভোট দিতে পারেননি। এ সংবিধানে আলোকে সোভিয়েত ইউনিয়নের শোষক শ্রেণি বিলুপ্ত হওয়ায় আগের যে বাধানিষে ছিল তা তুলে নেওয়া হয়। এ সংবিধানের আলোকে সোভিয়েত ইউনিয়নের স সংস্থার প্রতিনিধিকেই এখন থেকে প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হওয়ার বিধি অন্তর্ভুক্ত কর হয়। ভোটারগণের ভোট দেওয়ার জন্য গোপন ব্যালটের ব্যবস্থা করা হয়। এক্ষেত্রে প্রার্থী নির্বাচনের বিষয়টি নির্ধারণের দায়দায়িত্ব শ্রমিক ও কৃষক সংগঠনের উপর দেওয় হয়। নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রার্থীর ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করা হয় আঠারো বছর তবে তা বাড়িয়ে পরবর্তীতে তেইশ বছর করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রার্থীর যোগ্যতা পরিমাপে জন্য সম্পত্তি, বাসস্থান, শিক্ষা প্রভৃতি অন্য কোনো প্রকার যোগ্যতার প্রয়োজন ছিল ন নির্বাচিত হওয়ার জন্য একজন প্রার্থীকে অবশ্যই নির্বাচকমণ্ডলী বা প্রদত্ত ভোটের অর্থের পেতে হতো। তা না হলে কোনো প্রার্থী নির্বাচিত হতে পারতেন না। স্থানীয় সোভিয়ে থেকে সর্বোচ্চ সোভিয়েত পর্যন্ত সকল স্তরের বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত সদস্যদেরকে ফিরিয়ে আনার অধিকার নির্বাচকমণ্ডলীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। পূর্বের মতের সর্বোচ্চ সোভিয়েত দুটি পরিষদ নিয়ে গঠনের কথা বলা হয়। যার মধ্যে একটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রীয় সোভিয়েত। এই সোভিয়েতে সকল অঞ্চল থেকে জাতি নির্বিশেষ ৩,০০,০০০ অধিবাসীর জন্য একজন করে প্রতিনিধি নির্বাচনের বন্দোবস্ত করা হয় দ্বিতীয়টি ছিল জাতিসমূহের পরিষদ। এই পরিষদে জাতীয়তার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট সংখার প্রতিনিধি বিভিন্ন জাতি থেকে নির্বাচিত হওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তবে যে কোনো আইন প্রণয়নের জন্য উভয় পরিষদের সম্মতি লাগবে বলে স্থির করা হয়।
এ সংবিধানের আলোকে কমিউনিস্ট পার্টি ছাড়া অন্য সকল পার্টিকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয় বা বেআইনি ঘোষণা করা হয়। পুরো বিষয়টিকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে এই আইন নিয়ে বুর্জোয়া দেশগুলোতে প্রচণ্ড সমালোচনা করা হয়। এই সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে স্টালিন এই বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরেন। তাহলো-
“কোনো পার্টি কোনো না কোনো বিশেষ শ্রেণির অংশ মাত্র। সর্বাপেক্ষা অগ্রণী। । বিরোধী শ্রেণিসমূহ রয়েছে। শ্রমিক ও কৃষক, এদের স্বার্থ পরস্পর বিরোধী হওয়া দূরের অংশ। সুতরাং পাটিসমূহের স্বাধীনতা কেবল সেই সমাজে থাকতে পারে, যেখানে।
| বিভিন্ন পার্টির অস্তিত্বের যেমন প্রয়োজন নেই, নেই তেমনি বিভিন্ন পার্টির স্বাধীনতা, কথা, এদের স্বার্থ পরস্পরের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে জড়িত। তাই সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রে। সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রের একটি মাত্র পার্টি। কমিউনিস্ট পার্টির অস্তিত্বের কারণ।
কমিউনিস্ট পার্টি শেষ পর্যন্ত সাহসের সাথে শ্রমিক ও কৃষকদের
তবে সোভিয়েত ইউনিয়নে অন্য কোনো পার্টির অস্তিত্বের স্বীকৃতি না দিলেও পার্টি | বহির্ভূত যে কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন-এমন স্বীকৃতি দেওয়া হয় । প্রার্থী মনোনয়নের আগে প্রার্থীদের পক্ষে ও বিপক্ষে যে কোনো ধরনের আলোচনা ও | ভোটাধিকার প্রয়োগকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় তা করা হতো সোভিয়েত ইউনিয়নের লেগঠনগুলোর মাধ্যমে। এই ধরনের নিয়ম পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে প্রচলিত ছিল না। বস্তুত, প্রার্থী মনোনয়নের মধ্য দিয়েই প্রাথমিক স্তরের নির্বাচন হয়ে যেত।
খসড়া সংবিধানটির ৬ কোটি কপি ছাপানো হয়। এই সংবিধানের খুঁটিনাটি নানা নিয়ে আলোচনার জন্য দেশের অভ্যন্তরে পাঁচ লক্ষ সাতান্ন হাজারেরও বেশি সভাসমিতি অনুষ্ঠিত হয়। নানা খুঁটিনাটি সংশোধনের পরামর্শ দিয়ে প্রায় দেড় লক্ষেরও বেশি প্রস্তাব আসে। এই প্রস্তাবগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুনরাবৃত্তি হলেও সেগুলোর উপর যথাযথ গুরুত্ব দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দফায় তা বিভক্ত করা হয়। এর মধ্য থেকে অনেক পরামর্শকে গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিল- সর্বোচ্চ সোভিয়েতের উভয় পরিষদের সদস্য সংখ্যা সমান করা এবং জাতিসমূহের সোভিয়েত প্রত্যক্ষ ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচন সংক্রান্ত প্রস্তাব গ্রহণ ।
১৯৩৬ সালের নভেম্বর মাসে সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্ব সোভিয়েতের অষ্টম অতিরিক্ত কংগ্রেসে সংবিধানটি গ্রহণ করা হয় এবং ১৯৩৬ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে তা আইন হিসেবে কার্যকর বা চালু করা হয়।
এই সংবিধানের আলোকেই ঐ একই দিন (অর্থাৎ ৫ ডিসেম্বর, ১৯৩৬ সাল) থেকেই কাজাক ও কিরঘিজের স্বায়ত্তশাসিত সাধারণতন্ত্রগুলো পূর্ণাঙ্গ সাধারণতন্ত্রের মর্যাদা লাভ করে। জর্জিয়া, আর্মেনিয়া, আজারবাইজানও পৃথকভাবে সাধারণতন্ত্রে পরিণত হয়। ঐ সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নে পূর্ণাঙ্গ সাধারণতন্ত্রের সংখ্যা ছিল মোট এগারোটি।
নয়া সংবিধানের আলোকে পুরো এক বৎসরব্যাপী আলোচনা ও প্রচার প্রচারণার পর ১৯৩৭ সালের ১২ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে শতকরা ৯৬ ভাগেরও বেশি লোক ভোটার হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচনে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ও পার্টি বহির্ভূত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ‘ব্লক' বা ‘জোট' গঠন করা হয়। সেই ‘ব্লক’ প্রদত্ত ভোটের শতকরা ৯৮ ভাগ পায়। গোপন ব্যালটে ভোট হওয়া সত্ত্বেও কমিউনিস্ট পার্টির এই বিপুল পরিমাণে ভোট প্রাপ্তি, তাদের ব্যাপক হারে জনসমর্থন রয়েছে এই মতকেই সমর্থন করে।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]