সোভিয়েত ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতির ঐতিহাসিক পথ পরিক্রমার (১৯১৭ ১৯৩৯) একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও ।

সোভিয়েত ইউনিয়নের ইতিহাসে এ দেশটির বৈদেশিক নীতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পৃথিবীর দুইটি মহাশক্তির (Super Power) মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন একটি। তাই আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবী যে দুইটি রাষ্ট্রজোটে বিভক্ত হয় তার একটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে কেন্দ্র করে এবং অপরটি সোভিয়েত ইউনিয়নকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তাই অনেকাংশে সোভিয়েত বৈদেশিক নীতি দ্বারা প্রভাবিত। পৃথিবীর সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবেও সোভিয়েত বৈদেশিকনীতি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী কালে (১৯১৭-১৯৩৯) সোভিয়েত ইউনিয়নের বৈদেশিক এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
সোভিয়েত ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতির ঐতিহাসিক পথ পরিক্রমা (১৯১৭-১৯৩৯)
The Historical Background of the Foreign Policy of the Soviet Union (1917-1939)
১. সোভিয়েত রাশিয়ার উত্থান পর্বের বিদেশনীতি
প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর যুগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লব। শাসনতান্ত্রিক ক্ষেত্রে শাসকশ্রেণির সার্বিক ব্যর্থতায় রাশিয়ার সাধারণ মানুষের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ে। জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার ১৮৬১ সালে রাশিয়ার ভূমিদাস শ্রেণিকে মুক্তি দিয়েছিলেন। কিন্তু এই ব্যবস্থায় কৃষক শ্রেণির অবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়নি। ১৮৮১ সালে জার সন্ত্রাসবাদীদের হস্তে নিহত হন। পরবর্তী জার তৃতীয় আলেকজান্ডার নির্মমভাবে উদারনৈতিক ও বিপ্লবীদের দমন করেন। জার শাসিত রাশিয়ায় কারাবাস, সাইবেরিয়াতে নির্বাসন প্রভৃতি দমনমূলক ঘটনা প্রতিদিনের ঘটনায় পরিণত হয় । দ্বিতীয় নিকোলাসের সময় রাশিয়ায় প্রতিক্রিয়াপন্থি অভিজাত ও ধর্মযাজক শ্রেণির হাতে ক্ষমতার চাবিকাঠি চলে যায়। রাসপুটিন নামে এক ভণ্ড সাধুর মন্দ প্রভাব এই সময় রাশিয়ার রাজনীতিতে অনুভূত হতে থাকে। ১৯০৫ সালে জাপানের নিকট রাশিয়ার শোচনীয় পরাজয় রাশিয়ার স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের ভিত্তিকে দুর্বল করে ফেলে এবং জার একটি প্রতিনিধি সভার আহ্বানের মাধ্যমে জনগণের দাবিকে আংশিক স্বীকৃতি দেন। কিন্তু এতে রাশিয়ার অগণিত সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি। এর কিছুদিন পরে ইউরোপে প্রথম মহাযুদ্ধ শুরু হয় এবং জার্মানির সঙ্গে যুদ্ধে রাশিয়ার পরাজয় ঘটে। এই যুদ্ধ রাশিয়াকে আরও দুর্বল করে ফেলে। লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিক পার্টি ১৯১৭ সালে বিপ্লবের সূচনা করল যার পরিণতি জারতন্ত্রের উচ্ছেদ এবং শ্রমিক শ্রেণির সরকার গঠন। এ সময় বিদেশনীতিতেও পরিবর্তন আসে।
বাদে বিশ্বাসী। প্রথম জীবনে রাজনৈতিক এপত্রিকার লেখনী মারফত বলশেভিক । ১৯০৩ সালে লণ্ডনে অনুষ্ঠিত সোস্যাল র অনুসারীরা বলশেভিক নামে পরিচিত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর দেশে অশান্তি নকোলাস পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। [ক্র্যাটরা রাষ্ট্রের কর্ণধার হন। কিন্তু তাঁরা তে পারেননি। এই অবস্থায় লেনিন বিপ্লব সালের অক্টোবরে বলশেভিক পার্টি ক্ষমতা । ক্ষমতার কেন্দ্র ক্রেমলিন দখল করে। ইতিহাসের স্মরণীয় ঘটনা এই ঘটনায় ।। সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্ম পৃথিবীর বিভিন্ন ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো একযোগে শিশুরাষ্ট্র র। এই সময় লেনিনের সুযোগ্য নেতৃত্বে রেড কে রক্ষা করতে সমর্থ হয়। লেনিন অবশ্য র জন্য ১৯১৮ সালে জার্মানির সঙ্গে ব্রেস্ট পরেই শুরু হয় বিদেশি আক্রমণ। এই সময় ৷ পৌঁছায় ।
এত রাশিয়ার আর্থিক কাঠামোটি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত রিত্রাণ পাবার জন্য লেনিন একটি নতুন আর্থিক কৃষকদের নিকট থেকে বাধ্যতামূলকভাবে ফসল ছোট ব্যবসায় ও ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত শিক লগ্নির ক্ষেত্রে বাধা অপসারণ এবং উৎপাদন করা, এগুলোই ছিল নতুন আর্থিক নীতির কয়েকটি গেল; ১৯২৬-এ রাশিয়ার উৎপাদন ক্ষমতা যুদ্ধ-পূর্ব
অবদান অনস্বীকার্য। বৈদেশিক নীতিতে শান্তিপূর্ণ লনিন আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি শান্তিপূর্ণ আবহের জানুয়ারি মাসে লেনিনের মৃত্যু হয়। তিনি শুধুমাত্র থিবীয় শোষিত মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হিসেবে উনি সাম্যবাদী রাষ্ট্রের তাত্ত্বিক ধারণাকে অসাধারণ হয়েছিলেন। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের সাধারণ মানুষ, কর্মপ্রণালির দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়। রাশিয়ার । লেনিনের জীবন ও আদর্শের অনুপ্রেরণায় বাস্তবায়িত সে লেনিনের মৃত্যু হয়।
২. বলশেভিক বিপ্লবের প্রথম কয়েক বছর
"The Bolshevik Revolution of 1917 first introduced the conflic
• relations." এই বিপ্লবের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা তাদের নিজেদের দেশে এই সামাজি of social philosophies as a major factor in modern international বিপ্লবেই কেবল সন্তুষ্ট ছিলেন না, আন্তর্জাতিক সামাজিক বিপ্লব এবং অবশেষে বিশ্ব
সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠাই ছিল তাদের লক্ষ্য। স্বভাবতই রাশিয়ার প্রাক্তন
কল্পনাতীত ঘটনায় নিজেদের বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থাকে আশঙ্কাজনক বলে মনে করতে থাকে। ১৯১৭ থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে তারা সক্রিয়ভাবে "White Russians"-দের সমর্থন করতে থাকে। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বলশেভিকদের দমন করা। কিন্তু তাদের চেষ্টা সফল হয়নি। রাশিয়ার গৃহযুদ্ধ এবং পশ্চিমি হস্তক্ষে ১৯২০ সাল নাগাদ বন্ধ হয়ে যায়। এটা বলশেভিকদের পক্ষে শুধুমাত্র একটি বিষয়ই। ছিল না, তারা এর থেকে রাজনৈতিক শিক্ষালাভও করে। যদিও তারা নিজেদের দেশে জয়ী হয়েছিল, কিন্তু ব্যাভেরিয়া ও হাঙ্গেরিতে তারা কমিউনিস্ট সরকার স্থাপন করছে কৃতকার্য হয়নি। তারা অন্তত এটি বুঝতে পারল যে, বিপ্লব কোনো রপ্তানির পণ্য নয় এদিকে পশ্চিমি শক্তিগুলোও বুঝতে পারল যে, তাদের হস্তক্ষেপ বলশেভিকদের সত তাদের দূরত্বকেই আরও বাড়িয়ে তুলেছে অথচ রাশিয়ায় তারা রাজনৈতিক সুবিধা কিছু পায়নি। রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতির এই পর্বে একটা অনিশ্চিত অবস্থা বিদ্যমান ছিল। পর্বে বলশেভিক সরকার যার আমলে সমস্ত ঋণ বাতিল বলে ঘোষণা করে। বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পূর্ণ রাষ্ট্রায়ত্তকরণের ব্যাপারটি গণতান্ত্রিক দেশসমূহ সুনজরে দেখেনি। ধনতান্ত্রিক দেশসমূহ রাশিয়ার শান্তিপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে তৃতীয় আন্তর্জাতিকের ধারণার সামঞ্জস্য স্থাপনে সক্ষম হয়নি। পররাষ্ট্রনীতিতে শান্তির কথা বলে পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রের শ্রমিক আন্দোলনকে মদদ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করে ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো বলশেভিক সরকারের বিরোধিতায় অবতীর্ণ হয় । এই বিরোধিতার প্রভাব এই পর্বে রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতিতে প্রতিফলিত হয়। লেনিনের আততায়ীর সঙ্গে ইংরেজের যোগ ছিল, এটাও রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতিকে প্রভাবিত করে।
৩. মন্থর পুনর্মিলন (১৯২১-৩৪)
এটা অবশ্য খুবই স্বাভাবিক যে, আগের তিক্ত স্মৃতি রাশিয়ার সঙ্গে মিত্রশক্তিবর্গের সম্পর্ককে যুদ্ধের পরও অনেকটা প্রভাবিত করেছিল । তবে পৃথিবী জোড়া বিপ্লবের ব্যর্থ পরিকল্পনায় এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক উন্নতির তাগিদে রাশিয়া ধীরে ধীরে বুঝতে পারল যে, ‘বুর্জোয়া’ জগতের সঙ্গে কিছুটা সমঝোতায় আসা তাদের পক্ষেও কাম্য। তাই এবার থেকে রাশিয়ার নীতি হলো কোনো রকমে পশ্চিমী দুনিয়ার সঙ্গে সহাবস্থানের একটা চলনসই সূত্র খুঁজে বের করা। আবার একই সঙ্গে কিন্তু 'কমিন্টান তার স্থানীয় শাখাগুলোর মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল ধনতান্ত্রিক সরকারগুলোকে উচ্ছেদ করার। রাশিয়ার এই দ্বি-মুখীনীতি স্বভাবতই পশ্চিমে যথেষ্ট সন্দেহ ও অসন্তোষ সৃষ্টি করেছিল।
প্রথমেই বৃহৎ কোনো শক্তির দ্বারস্থ হওয়ার আগে রাশিয়ার নীতি ছিল তার ছোটখাট প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা। তুরস্কের সঙ্গে ১৯২৫ সালে, লিথুনিয়ার সঙ্গে ১৯২৬ সালে, ইরানের সঙ্গে ১৯২৭ সালে, আফগানিস্তানের সঙ্গে ১৯৩১ সালে এবং পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, ল্যাটভিয়া ও ইস্টোনিয়ার সঙ্গে ১৯৩২ সালে পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, ল্যাটভিয়া অথবা ইস্টোনিয়ার মতো যারা প্রাক্তন 'জার' সাম্রাজ্য রাশিয়া 'অনাগ্রাসী চুক্তি' (Non-aggression pact) -তে সই করে। লিথুয়ানিয়া, থেকে ভেঙে বেরিয়ে এসে রাষ্ট্র গঠন করেছিল, তাদের সঙ্গে হাত মেলানোর পেছনে রাশিয়ার একটাই মাত্র উদ্দেশ্য ছিল-পশ্চিমের কাছে প্রমাণ করা যে, তাদের বর্তমান নীতি আর প্রাক্তন জাতীয় উচ্চাকাঙ্ক্ষা দ্বারা চালিত নয় ।
১৯২১ সালে রাশিয়া ইংল্যান্ডের সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক চুক্তি করে। ১৯২০ সালে ইংল্যান্ডের শ্রমিক সরকার (Labour Government) রাশিয়াকে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু পরবর্তী বছরে টোরি সরকার এসে সে স্বীকৃতি তুলে নেয় এবং ‘জিনোভিয়েব পত্রের (Zinoviev letter) প্রকাশনা ও ১৯২৬ সালে ইংল্যান্ডের সাধারণ ধর্মঘট (General strike) লন্ডন-মস্কো মৈত্রীকে কিছুটা পিছিয়ে দেয় ।
‘অনাগ্রাসী নীতি' বাণিজ্যিক সম্পর্কে এবং পারস্পরিক বন্ধুত্বের উপর ভিত্তি করে ১৯২২ সালে বিপ্লবী রাশিয়া পরাজিত জার্মানির সঙ্গে রাপালো সন্ধিতে স্বাক্ষর করে ৷ রাশিয়া ও জার্মানি-উভয়েই তখন ইউরোপীয় শক্তিবর্গের পরিবারের বাইরে এবং দু'জনেরই মনে তখন মিত্রশক্তি সম্বন্ধে বেশ ভয়। দু'জনেরই তখন আর্থিক উন্নতির জন্য দরকার বহির্বাণিজ্য। ১৯২৬ সালে রাশিয়া ও জার্মানি বার্লিনের সন্ধিতে স্বাক্ষর করে। স্থির হয় যে, তাদের মধ্যে একটি শক্তি যদি আক্রান্ত হয়, তবে অন্যজন নিরপেক্ষ থাকবে।
মিত্রশক্তিবর্গের মধ্যে রাপালো সন্ধি নিয়ে যথেষ্ট অসন্তোষ দেখা দেয়। তবে অবশ্যই কমিউনিস্ট রাশিয়া নিজেকে এর মধ্যে যথেষ্ট গুছিয়ে ফেলছে এবং রাশিয়াকে স্বীকৃতিদানও আর অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেলে রাখা যাচ্ছিল না। তদুপরি ১৯২৫ সালে ট্রটস্কির পতন ও স্টালিনের জয় অসমাজতান্ত্রিক দুনিয়ায় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র স্থাপনের সম্ভাবনার প্রতি মস্কোর বিশ্বাসকেই প্রমাণ করল। স্পষ্টই এখন থেকে ‘পৃথিবী জোড়া বিপ্লব' আর মস্কোর মূলমন্ত্র থাকল না। ইতালি, ফ্রান্স ও জাপান সহ প্রায় প্রতিটি ইউরোপীয় দেশই রাশিয়াকে স্বীকৃতি দিল। আমেরিকা যদিও রাশিয়াকে ১৯৩৩ সালের আগে স্বীকৃতি দেননি, তবুও উভয়ের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আগেই স্থাপিত হয়েছিল।
৪. রাশিয়া ও জাতিপুঞ্জ
গোড়ার দিকে রাশিয়া জাতিসংঘ সম্বন্ধে যথেষ্ট সন্দিহান ছিল এবং মনে করতো যে, এই আন্তর্জাতিক সংগঠনটি হয়ত বা ধনতান্ত্রিক দেশগুলোর কোনো অস্ত্র। ধীরে ধীরে অবশ্য মস্কো জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও মানবিক কাজকর্মের এবং নিরস্ত্রীকরণ কর্মসূচির দিকে সহযোগিতার হাত এগিয়ে দিয়েছিল। ১৯২৭ সালে রুশি প্রতিনিধিরা জেনেভায় আসেন। পরের বছর পশ্চিমি রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাশিয়া প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষর করে।
১৯৩৩ সালে হিটলার জার্মানিতে ক্ষমতায় আসেন এবং জাপান, মাঞ্চুরিয়ার নিয়ে জাতিসংঘ ত্যাগ করে। জার্মানি সম্বন্ধে ফ্রান্স ও রাশিয়া উভয়েরই সমান ভয় ছিল তাই এই ভয় থেকে তারা খুব সহজেই পরস্পর পরস্পরের কাছে চলে আসতে পেরেছিল। ১৯৩৫ সালে ফ্রান্সের সঙ্গে জার্মানির একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। এই চুদি। দ্বারা পরস্পর পরস্পরের প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় যে, কোনো ইউরোপীয় শক্তি যদি একজনকে আক্রমণ করে, তবে অন্যজন বন্ধুর সাহায্যে এগিয়ে আসবে। এইভাবে মহাযুদ্ধের আগের রুশ-ফরাসি-মৈত্রী অন্যরূপে আবার স্থাপিত হলো। আবার এই ভীতি
অন্যদিকেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া, উভয়েই ছিল জাপানের ভয়ে ভীত। আবার তাদের উভয়কে কাছে টেনে আনল। ওয়াশিংটন মস্কোকে ১৯৩৩ সালে স্বীকা দিল। এইভাবে রাশিয়া পূর্ব ও পশ্চিমে, দুই ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে দুই মিত্র জোগাড় করল। ১৯৩৪ সালে রাশিয়া জাতিপুঞ্জের সদস্য হলে রাশিয়ার একাকিত্বের হলো এবং কমিউনিস্ট রাশিয়া একটি বৃহৎ শক্তি হিসেবে ও জাতিসংঘের উৎসাহী অনুগত সদস্য হিসেবে গণ্য হতে লাগল ।
এই সময় লিগের ব্যর্থতা প্রকাশিত হতে শুরু করে। এই সময় লিটভিক্ত শক্তিবর্গের উদ্দেশ্যে সাবধান বাণী উচ্চারণ করেন, "Tomorrow it may be too late, but today the time has not yet passed if all the states and especially the great powers will adopt a firm and unequivocal stand in regard to the problem of collective savings of peace." কিন্তু এই সাবধান বাণীতে কেউ কর্ণপাত করেনি, যার অনিবার্য পরিণতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা
৫. রাশিয়া ও হিটলার
১৯৩৫ সালে ফ্রান্সের সঙ্গে রাশিয়ার যে মৈত্রী স্থাপিত হয়, তাতে জার্মানি খুব সন্তুষ্ট হতে পারেনি। হিটলার মনে করতেন যে, এই মৈত্রী হলো আসলে জার্মানিরই বিরুদ্ধে একটি সামরিক মৈত্রী। পরবর্তী চার বছর ধরে রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানির সম্পর্কের ভিত্তিই ছিল পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধতার আশঙ্কা। স্পেনের গৃহযুদ্ধে রাশিয়া ও জার্মানি দুই বিপক্ষ দলকে সাহায্য করেছিল। এর মধ্যে ইতালির আবিসিনিয়া অধিগ্রহণের সময়ে জাতিসংঘের বাধাদানে ব্যর্থতা ‘সমষ্টিগত নিরাপত্তা' (Collective Security)র জোর অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। হিটলারও কম্যুনিজমের বিপক্ষে উঠেপড়ে লাগেন। তিনি জাপান ও ইতালির সঙ্গে ‘কমিউনিস্ট বিরোধী চুক্তি' (Anti Comintern Pact) তে সই করেন ।
হিটলারের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সোভিয়েত রাশিয়া পশ্চিমি দুনিয়ার সমর্থনের উপরে ভরসা রাখতে পারল না। নাৎসি আগ্রাসী নীতির প্রতি রাশিয়ার প্রধান অবলম্বন ছিল তোষণ। ১৯৩৯ সালে স্টালিন হিটলারের সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক এবং অনাগ্রাসী সন্ধিতে স্বাক্ষর করেন। পরের বছর এই দুই মিত্র নিজেদের মধ্যে পোল্যান্ড ভাগ করে নেয়।
কন্তু ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স ছিল এ । পশ্চিমি দুনিয়া রাশিয়াকে হয়েই রাশিয়াকে হিটলারের টা অন্যথা করার উপায় ছিল । দ্ধ রাখতে হয়েছিল। কারণ, যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। অবশ্য স্বীকার করতে হবে যে, ল না এবং এ চুক্তির অসারত্ব এত হয়।
এনার অন্তর্গত ছিল না। Taylor et Raussia and Germany, ery much an inprovisation Germans." রুশ পররাষ্ট্রনীতির পর্ব সম্পন্ন করার জন্য সময় বের প্রতিরোধ করার জন্য সোভিয়েত নময়ে নিজের ভূখণ্ডের অনেক বেশি ন্ডের রাজনৈতিক নেতারা এই প্রস্তাব এই যুদ্ধের ফলে ইঙ্গ-ফরাসি শক্তি র ২২ জুন হিটলার রাশিয়া আক্রমণ an danger is, therefore our
troduced the conflict or social lern international relations." এই কেবল নিজেদের দেশেই বিপ্লব সফল সামাজিক বিপ্লবই ছিল তাদের সুনির্দিষ্ট বন্ধু রাষ্ট্রগুলো এই কল্পনাতীত ঘটনায় অটুট রাখার উপরেই বেশি জোর দিতে । মধ্যে তারা কমিউনিস্ট বিরোধী White াদের উদ্দেশ্য ছিল বলশেভিক দলকে ম দুনিয়ার হস্তক্ষেপ নীতি অবশ্য ১৯২০ সময়ের মধ্যে নবগঠিত সরকারকে হেনস্তা পূর্ণ ভূমিকা ছিল ।
১৯১৭ সালের নভেম্বর মাসে বিপ্লব শুরু হওয়ার ঠিক অব্যবহিত পরেই ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও আমেরিকা বলশেভিক সরকারকে যাবতীয় সাহায্য ও সরবরাহ বন্ধ করে দিল। ঠিক এক মাসের মধ্যেই আবার ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স নিজেদের মধ্যে একটি গোপন চুক্তির দ্বারা দক্ষিণ রাশিয়াকে নিজেদের 'প্রভাবাঞ্চলে' (Sphere of influence) ভাগ করে নিল। ১৯১৮ সালের এপ্রিল মাসে ফরাসি, ইংরেজ ও জাপানি সৈন্যদল ব্লাডিভোস্টক এসে উপস্থিত হয়। এর কিছু পরেই শুরু হয়ে যায় তাদের বিবাদ ব্লাডিভোস্টক দখল হয়ে যায়। ১৯১৮ সালের আগস্ট মাস নাগাদ রাশিয়ার চতুর্দিকে বিরুদ্ধ সৈন্যরা বড় বড় অঞ্চল দখলে রেখেছিল। বলশেভিক অঞ্চল অবরোধের ফলে মানুষের দুঃখকষ্টের কোনো সীমা ছিল না। এসব কাজে ফ্রান্স যে কেবল একটা বড় গোছের অংশই নিয়েছিল তাই নয়; পূর্ব-ইউরোপে তার দুই উপগ্রহকেও পোল্যান্ড এবং রুমানিয়া রাশিয়াকে ঘিরে ফেলার কাজে লাগিয়েছিল। ফরাসি সেনাধ্যক্ষ Weygand সোভিয়েত রাশিয়ার বিরুদ্ধে একজাতীয় পোলিশ প্রতিরোধও গড়ে তুলেছিলেন
ফ্রান্সের সোভিয়েত রাশিয়ার বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ ছিল। জার্মানির সঙ্গে লড়াইয়ের একটি অত্যন্ত সংকটময় মুহূর্তে বলশেভিকের ফ্রান্স, ইতালি বা ইংল্যান্ডের মতো রাশিয়া পশ্চিমি মিত্রদের পরিত্যাগ করে। শুধুমাত্র তাই নয়, তারা ১৯১৮ সালে ব্লাডিভোস্টকের সন্ধিও করে জার্মানির সঙ্গে। তদুপরি, জারের সময়কার যাবতীয় ঋণ অস্বীকার করল । রাশিয়ার যাবতীয় বিদেশি শিল্পকে জাতীয়করণ করেছিল এবং বিদেশি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের একচেটিয়া অধিকার বিস্তার করেছিল।
৭. ফরাসি-সোভিয়েত চুক্তি (১৯৩৫)
পশ্চিমের হস্তক্ষেপের অবসানের পরেও কিন্তু ফ্রান্সের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের খুব একটা উন্নতি হয়নি । রাশিয়া যখন জার্মানির সঙ্গে র‍্যাপালো সন্ধিতে স্বাক্ষর করে, তখন ফ্রান্স খুবই অসন্তুষ্ট হয়েছিল। ফরাসিদের চোখে এটা ছিল দুই সম্ভাবনাময় শত্রুর মধ্যে 'Upholly alliance' অর্থনৈতিক দিক থেকে দেখতে গেলে, সোভিয়েত পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাও ফ্রান্সের মোটেই মনঃপূত হয়নি। ফ্রান্স সন্দেহ করতে শুরু করল যে, হয়ত বা সস্তায় রাশিয়ার পণ্য পশ্চিম ইউরোপে রপ্তানি করে পশ্চিমি ধনতন্ত্রকে বিনষ্ট করাই বুঝি রাশিয়ার মূল উদ্দেশ্য। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যে ফ্রান্স কোনোদিনই লাভবান হয়নি। এখন ফ্রান্স সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আমদানিকে নিয়ন্ত্রিত করে নিজের স্বার্থরক্ষা করতে লাগল ।
কিন্তু হিটলারের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গেই ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে আবার ধীরে ধীরে যোগসূত্র গড়ে উঠতে লাগল। হিটলার যখন ক্ষমতায় আসেননি অর্থাৎ ১৯৩২ সাল নাগাদ, তখন থেকে কিন্তু দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সন্ধি ও অনাগ্রাসী চুক্তি সম্পাদনার কথাবার্তা চলছিল। ১৯৩২ সালে একটি অনাগ্রাসী চুক্তি দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত হয়। দু'বছর পরে স্বাক্ষরিত হয় একটি বাণিজ্যিক চুক্তি। এর মধ্যে আবার তৃতীয় আন্তর্জাতিক (Third International) বাতিল হয়ে গেছে। ফলে ফরাসিদেরও কমিউনিজমের প্রতি ভীতির ভাবটাও অনেকটাই কমে এসেছে। ১৯৩৫ সালে যখন হিটলার তাঁর ক্ষমতার শীর্ষে তখন রাশিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে একটা পাঁচ বছরের পারস্পরিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়। এইভাবে প্রথম মহাযুদ্ধের আগে রুশ-ফরাসি মৈত্রী নতুন পরিবেশে নতুনভাবে পুনরুজ্জীবিত হলো ।
হিটলার কিন্তু ফ্রান্সের সঙ্গে রাশিয়ার এই মৈত্রীতে মনে মনে সম্ভষ্ট হতে পারেননি। তিনি মনে করতেন যে, এই সন্ধির আক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিল জার্মানি। পরবর্তী চার বছর ধরে রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানির সম্পর্কের ভিত্তিই ছিল পরস্পরের বিরুদ্ধতার আশঙ্কা। স্পেনের গৃহযুদ্ধে রাশিয়া ও জার্মানি দুই বিপক্ষদলকে সাহায্য করেছিল। এর মধ্যে, ইতালির আবিসিনিয়া অধিগ্রহণের সময়ে জাতিসংঘে বাধাদানে ব্যর্থতা সমষ্টিগত নিরাপত্তার (Collective Security) জোর অনেকটা কমিয়ে দেয়। হিটলার নিজেও কমিউনিজমের বিপক্ষে উঠেপড়ে লাগেন। তিনি জাপান ও ইতালির সঙ্গে 'কমিউনিস্ট বিরোধী চুক্তি' (Anti Comintern Pact) তে সই করেন।
হিটলারের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, সোভিয়েত রাশিয়া পশ্চিমি দুনিয়ার সমর্থনের উপর ভরসা রাখতে পারল না। নাৎসি আগ্রাসী নীতির প্রতিরোধে রাশিয়ার প্রধান অবলম্বন ছিল তোষণ। ১৯৩৯ সালের নাৎসি সোভিয়েত চুক্তির আগে অবশ্য ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স রাশিয়ার সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করে। কিন্তু সফল হয়নি। হিটলারের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য স্ট্যালিন নিজেও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ছিলেন। কিন্তু ইংল্যাণ্ড ও ফ্রান্স ছিল এ বিষয়ে বেশ উদাসীন। স্ট্যালিন সন্দেহ করলেন যে, বোধ হয়, পশ্চিমী
দনিয়া রাশিয়াকে অক্ষশক্তির সঙ্গে জড়িত দেখতে চায়। তাই বলতে গেলে বাধ্য হয়েই রাশিয়াকে হিটলারের সঙ্গে হাত মেলাতে হয়েছিল এবং এর জন্য মুখ্যত দায়ী ছিল ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের দূরদৃষ্টির অভাব ।
৯. রাশিয়া ও দূরপ্রাচ্য
দূরপ্রাচ্যে রুশ বিপ্লবের গভীরতর প্রভাব পড়ে চীনের উপর। জাপানের সাম্রাজ্যবাদী আক্রমণে বিব্রত চীন সাম্যবাদী রাশিয়ার দিকে স্বাভাবিকভাবেই আকর্ষণ বোধ করে। ১৯১১ সালে সান ইয়াৎসেনের নেতৃত্বে যে বিপ্লব চীনে অনুষ্ঠিত হয় তার অভিঘাতে চীনে মাঞ্চু বংশের পতন ঘটলেও চীনের দুর্দশার সমাপ্তি ঘটেনি। এই পরিস্থিতিতে কমিউনিস্ট না হয়েও সান ইয়াৎ সেন রাশিয়ান বিপ্লবকে অভিনন্দন জানান। নতুন সোভিয়েত সরকার যে শুধু কুয়োমিনটাঙ সরকারের সহিত সম্বন্ধ স্থাপন করেছিল তাই নয়, জার শাসিত মাঞ্চুরিয়া প্রভৃতি চীনের ভূখণ্ডের উপর সমস্ত দাবি পরিত্যাগ করে। এছাড়াও চীনের উপর যে সকল অতি রাষ্ট্রিক অধিকার, অসম চুক্তির ফলে যে সকল সুযোগ সুবিধা জার শাসিত রাশিয়া ভোগ করত নতুন সোভিয়েত রাষ্ট্র চীনের উপর সেই সমস্ত অধিকার ত্যাগ করে। চীনের পূর্ব রেলপথ, খনি ও অরণ্যের উপর রাশিয়া অধিকার ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে কুয়োমিনটাং সরকারকে সমর্থন করার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ দলও রাশিয়া চীনে পাঠায়
সান-ইয়াৎ-সেনের মৃত্যুর পর চীন-সোভিয়েত সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ১৯২৭ সালে চিয়াং-কাইশেক রুশ বিশেষজ্ঞদের চীন থেকে বিতাড়িত করেন। এরপর ১৯৩১ সালে জাপান চীন আক্রমণ করলে চীনের সঙ্গে সোভিয়েতের সম্পর্কের উন্নতি পরিলক্ষিত হয়। ১৯৩৭ সালে জাপান চীন আক্রমণ সোভিয়েত রাশিয়া তার প্রতিবাদ করে। ১৯৪১ সালে জাপানের সঙ্গে সোভিয়েতের নিরপেক্ষতার চুক্তি স্বাত হলেও চীন-সোভিয়েত সম্পর্কের কোনো হেরফের অরনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শেষ প সোভিয়েত রাশিয়া জাপানের বিরোধী পক্ষে পরিণত হলে চীন-সোভিয়েত সম্পর্ক হ নিবিড়তা প্রাপ্ত হয়
চীনের মতো জাপানের সঙ্গে সোভিয়েত রাশিয়ার সম্পর্ক কখনই ভালো বস্তুত ১৯১৮ সালে রুশ বিপ্লবকে ব্যান করার জন্য জাপান কিন্তু ছিল। অবশ্য ১৯ সালে জাপান কার্যত সোভিয়েত রাশিয়াকে স্বীকৃতি দান করে বাণিজ্যিক সুবিধার বদলে জাপান সারাদিন থেকে সেনাবাহিনী অপসারণ করে ফলে জাপানের সঙ্গে সোভিয়েত সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি ঘটে। কিন্তু জাপান মারি আক্রমণ করলে সোভিয়েত রাশিয়া চীনের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করলে সোভিয়ে জাপান সম্পর্কের অবনতি ঘটে অবশ্য ১৯৪১ সালে জাপানের সঙ্গে সোভিয়েতে একটি অনাক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এই অনাক্রমণ চুক্তির কারণে ১৯৪৫ সালের আগস্টের পূর্ব পর্যন্ত সোভিয়েত ও জাপান একে অন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা বিরত ছিল। যদিও জাপান ইতোমধ্যেই অক্ষশক্তির একজন সক্রিয় অংশীদার হিসে নিজেকে পরিগণিত করে তুলেছিল।
১০. রাশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে বিপ্লবোত্তর রাশিয়ার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠই ছিল আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার সম্বন্ধে উদারনীতি মধ্যপ্রাচ্যের অনুন্নত দেশগুলোকে রাশি নিকটবর্তী করে তোলে। অবশ্য ১৯২১ সালে সম্পাদিত রাশিয়ার সঙ্গে ব্রিটেনের আমি চুক্তি রাশিয়াকে মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কে কিছুটা সংযত করে। মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার প্রশ্ন যাতে ব্রিটেনের পক্ষে আশঙ্কার কারণ না হয় সে বিষয়ে রাশিয়া যথেষ্ট সচেতন ছিল ১৯২১ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সাথে আফগানিস্তানের একটি চুক্তি সম্পাদি হয়। ঐ বছরেই ব্রিটেনের সঙ্গেও আফগানিস্তানের একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়, এইভা উভয় শক্তির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার ব্যবস্থা হয়।
১৯২৬ সালে রেজা শাহ পহলভী পারস্যে ক্ষমতা দখল করে। রাশিয়া পহলভী সঙ্গে একটি মৈত্রী চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। ১৯৩২ সালে অ্যাংলো-ইরানীয় অনে কোম্পানির স্বার্থের বিরুদ্ধে রাশিয়া রেজা শাহকে সমর্থন করে। ১৯২১ সালে রাশি তুরস্কের সঙ্গেও অনুরূপ চুক্তি করে। দার্দেনিলিস প্রণালিতে তুরস্কের অধিকারকে রাশি স্বীকৃতি দান করে। ১৯৩৯-৪১ সালে নাৎসি শক্তির কূটনৈতিক চাপের সম্মুখীন হ তুরস্ক রাশিয়ার সহযোগিতা লাভ করে। কিন্তু রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষরি হওয়ার পর তুরস্ক ইঙ্গ-ফরাসি শক্তির মুখাপেক্ষী হয়ে পড়ে।
তুরস্ক, পারস্য ও আফগানিস্তান ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের আর কোনো শক্তির সা রাশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়নি।
১৯১৭ সালের নভেম্বর মাসে লেনিনের নেতৃত্বে রাশিয়ার বিপ্লবের দ্বিতীয় পর্যায় ন্ন হয়। এবং বলশেভিকগণ রাশিয়ার শাসন দায়িত্ব গ্রহণ করে। কিন্তু নতুন এই সরকারের সামনে নানারকম সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যার অন্যতম ছিল বৈদেশিক fe নির্ধারণ। প্রকৃতপক্ষে পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে বলশেভিক সরকার শান্তিস্থাপনের পক্ষপাতী ছিল। অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন এবং জাতীয় জীবনকে সুদৃঢ় ভিত্তির উপর স্থাপন করাই ছিল তখনকার রাশিয়ার প্রধান সমস্যা। বৈদেশিক যুদ্ধে শক্তি ও সামর্থ্য ব্যয় না করে অভ্যন্ত | উন্নতির জন্য বলশেভিক সরকার জার্মানির সহিত ব্রেস্টলিটভস্কের সন্ধি স্বাক্ষর করে। এই সন্ধির শর্ত অনুসারে রাশিয়াকে বহু স্থান ত্যাগ করতে হয়। কিন্তু জাতির পার্থের খাতিরে বলশেভিক সরকার সেই পন্থাই অবলম্বন করে।
তবে বলশেভিক সরকারের সর্বাপেক্ষা বড় বিপদ ছিল ইউরোপের বিভিন্ন রাষ্ট্রের বিরোধিতা। বলশেভিকগণ সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা পৃথিবীর সর্বত্র স্থাপন করার ইচ্ছা পোষণ করে। তাদের প্রচারের আন্তর্জাতিক আবেদন ইউরোপের শক্তিবর্গের মধ্যে দারুণ ভীতির সঞ্চার করে। যুদ্ধের ফলে প্রত্যেক দেশেই তখন অর্থনৈতিক দুর্দশা দেখা দেয়। এইরূপ পরিস্থিতিতে সমাজতান্ত্রিক প্রচারকার্য এবং রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লবের গাফল্য অপরাপর দেশসমূহের জনসাধারণকে স্বাভাবিকভাবেই প্রভাবিত করে। ইউরোপীয় শক্তিমাত্র এই কারণে সন্তুষ্ট হয়ে ওঠে এবং রাশিয়ার অভ্যন্তরের বিপ্লব- বিরোধী দলগুলোর শক্তিবৃদ্ধির জন্য সকল প্রকার গোপন চেষ্টা শুরু করে। ইংল্যান্ড, জাপান ও ফ্রান্স বলশেভিক বিপ্লব দমন করার জন্য রাশিয়ায় সৈন্য পাঠাতেও দ্বিধাবোধ শয়ার করেনি। কিন্তু বলশেভিক সরকারের পশ্চাতে জনগণের সমর্থন থাকায় এই অপচেষ্টায় রাশিয়ার কোনো ক্ষতিসাধন করা সম্ভব হলো না। শেষ পর্যন্ত ১৯১৯ সালে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জাপান প্রভৃতি দেশ নিজ নিজ সৈন্য রাশিয়া থেকে অপসারণ করে। বিদেশি শক্তিসমূহের সাহায্য থেকে বঞ্চিত হওয়ায় দেশের অভ্যন্তরের বিরোধী দলগুলোকে দমন করা রাশিয়ার পক্ষে বিন্দুমাত্র কঠিন ছিল না। তাছাড়া এর ফলে রাশিয়ার বিপ্লব সুদৃঢ় ভিত্তির উপর স্থাপিত হয়। কিন্তু বিদেশি শক্তিগুলো তখনও বলশেভিক সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়নি। ক্রমে পরিস্থিতির চাপে বলশেভিক সরকার ইউরোপের শক্তিবর্গের স্বীকৃতিলাভে সমর্থ হয় ।
১২. স্বীকৃতিলাভ
ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ সাধারণভাবে লেনিন নামেই সুপরিচিত। ১৯১৭ শিয়া সালের নভেম্বর মাস থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তিনি রাশিয়ার বলশেভিক সরকার পরিচালনা করেন। বলশেভিক সরকারের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণেই তিনি খুব দক্ষতার পরিচয় দেন। লেনিন ছিলেন বিশ্বব্যাপী সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবে বিশ্বাসী। ১৯১৯ সালে তিনি থার্ড ইন্টারন্যাশনাল বা কমিন্টার্ন (Third Internation or Commintern) এর অধিবেশন আহ্বান করেন। আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট প্রতিষ্ঠানের এই কেন্দ্র মস্কোতে স্থাপিত হয়। সোভিয়েত সরকার এবং কমিন্টার্ন ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থা উচ্ছেদের জন্য সচেষ্ট হয় এবং পৃথিবীর | সর্বত্র কমিউনিস্ট বিপ্লব সংগঠনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। কমিউনিস্ট নীতি এবং কার্যের মধ্যে সামঞ্জস্য প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে রাশিয়ার জারদের আমলে
চীন প্রভৃতি দেশের কাছ থেকে যেসব সুযোগ সুবিধা আদায় করেছিল তা সবই স্বেচ্ছায় পরিত্যাগ করে। সোভিয়েত সরকার এশিয়ার পরাধীন দেশগুলোকে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সাহায্য দিতেও শুরু করে। কিন্তু বলশেভিক সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি জানাতে তখন পর্যন্ত একমাত্র জার্মানি ব্যতীত অপর কোনো রাষ্ট্র অগ্রসর হয়নি ১৯২৩ সালে এই অবস্থার প্রথম পরিবর্তন দেখা দেয়।
১৯২৩ সালে ইংল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি বা শ্রমিক দল ক্ষমত আসীন হলে ব্রিটিশ সরকারের রাশিয়া-বিরোধী নীতি অনেকাংশে হ্রাস পায়। ইতোমধে ইতালির মুসোলিনি সোভিয়েত সরকারকে আইনত স্বীকৃতি দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ১৯২৪ সালে ব্রিটিশ সরকার সোভিয়েত সরকারকে আইনত স্বীকার করছে ইতালি, নরওয়ে, অস্ট্রিয়া, গ্রিস, সুইডেন, ডেনমার্ক, মেক্সিকো, হাঙ্গেরি ও ফ্রা সোভিয়েত সরকারের প্রতি স্বীকৃতি জ্ঞাপন করে। বিভিন্ন রাষ্ট্র কর্তৃক এইর স্বীকৃতিদানের ফলে রাশিয়ার সোভিয়েত সরকারের সমমর্যাদায় অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে মিত্রতামূলক ও বাণিজ্যিক চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়ার পথ প্রশস্ত হয় । তাছাড়া ১৯২৪ সালে লেনিনের মৃত্যু এবং ১৯২৭ সালে বিশ্বব্যাপী সমাজতন্ত্রবাদী আন্দোলন সম্প্রসারণের সর্বাপেক্ষা প্রবল সমর্থক ট্রটস্কি রাশিয়া থেকে বিদায় গ্রহণ ও লেনিনের উত্তরাধিকারী জোসেফ স্ট্যালিনের শাসনকালে সোভিয়েত সরকারের বৈদেশিক নীতি সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গির যে পরিবর্তন ঘটে তার ফলে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার সুসম্পর্ক স্থাপনের বাধাসমূহ অনেকাংশে দূরীভূত হয়। তবে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলার নীতি লেনিনের আমল থেকেই অনুসরণ করতে শুরু করে।
১৩. বিভিন্ন চুক্তি
১৯১৭ সালের বিপ্লবের পর সোভিয়েত ইউনিয়নের পক্ষে ইউরোপীয় তথা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক আদানপ্রদান যেভাবে ব্যাহত হয়েছিল তার অবসান ঘটানোর কথা সোভিয়েত সরকার বিশেষভাবে চিন্তা করতে শুরু করে। তাদের এইরূপ নীতি পরিবর্তনের অন্যতম কারণ ছিল অর্থনৈতিক। ১৯২১ সালের দুর্ভিক্ষের পর সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক কারণে পূর্ণ সাম্যবাদের পরিবর্তে নতুন অর্থনৈতিক নীতি (New Economic Policy = NEP) প্রবর্তন করে। আবার অর্থনৈতিক কারণেই সোভিয়েত ইউনিয়ন অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে নতুন বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। ১৯২১ সালে ইংল্যান্ড ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে ইঙ্গ-রুশ বাণিজ্য চুক্তি স্থাপিত হয়। পরবর্তী বছরে প্রধানমন্ত্রী লয়েড জর্জের চেষ্টায় প্রথমে কেনেস ও পরে জেনোয়ায় বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের এক সম্মেলন আহত হয়। লয়েড জর্জের আশা ছিল যে জেনোয়া সম্মেলনে ইউরোপের শক্তিবর্গের সাথে রাশিয়ার সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা সম্ভব হবে। কিন্তু সোভিয়েত রাশিয়া জারতন্ত্রের আমলের বৈদেশিক ঋণ স্বীকার করায় সৈন্য সংগ্রহ করার কথা ঘোষণা করলে ফ্রান্স নয়নের সঙ্গে সকল প্রকার সম্পর্ক ত্যাগ করে। যে, ১৯২৪ থেকে ১৯২৭ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত এর সাম্যবাদী প্রচারের ফলেই ঘটেছিল ।
ত থেকে ট্রটস্কির বিদায় গ্রহণের পর সোভিয়েত রবর্তী কয়েক বছরের মধ্যে সোভিয়েত রাশিয়া পূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে সমর্থ হয়। ১৯২৯ সালে । অধিষ্ঠিত হলে রাশিয়ার সঙ্গে পুনরায় ইংল্যান্ডের ালে ইতালি ও তুরস্কের সাথে বাণিজ্য চুক্তি, ১৯৩৩ তুরস্ক, লাটভিয়া, মাফগানিস্তান, রুমানিয়া, তুরস্ক, স্লোভাসিয়ার সহিত অনাক্রমণ চুক্তি সম্পাদন করে। তক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রথম দিকে সোভিয়েত রাশিয়া ভার্সাই চুক্তির প্রতি সমর্থন না জা পরবর্তীকালে সোভিয়েত সরকার উপলব্ধি করে যে, জার্মানির সম্ভাব্য বিস্তী রোধের উপায় হিসেবে ভার্সাই চুক্তির শর্তগুলো অপরিবর্তিত রাখা প্রয়োজন পশ্চিমি রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যুগ্মভাবে হিটলার-নিয়ন্ত্রিত জার্মানির অভ্যুত্থান প্রতিরোধ কর এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা রক্ষা করার কথাও রাশিয়া উপলব্ধি করে। সে জাতিসংঘের আদর্শের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে ১৯৩৪ সালে রাশিয়া জাতিসারে সদস্যপদ গ্রহণ করে।
সোভিয়েত রাশিয়ার এইরূপ নীতি পরিবর্তন স্বাভাবিকভাবে ফ্রান্সের রাশিয়ার সম্পর্কের পরিবর্তন অনিবার্য করে তোলে। বিশেষত হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানিতে নাৎসিবাদ ইতালিতে মুসোলিনির নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদের অভ্যুত্থান এ জাপান কর্তৃক মাঞ্চুরিয়া আক্রমণের ফলে ফ্রান্স ও রাশিয়া উভয় দেশের পররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তন অপরিহার্য হয়ে ওঠে। ১৯৩৪ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ফ্রান্সের ম একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদিত হয়। ১৯৩৫ সালে চেকোস্লোভাকিয়ার সাথে সোভিয়ে রাশিয়া পারস্পরিক সাহায্যের এক মিত্রতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৩৬ সোভিয়েত রাশিয়া বহির্মঙ্গোলিয়ার সাথে পারস্পরিক সামরিক সাহায্যের একটি যুক্ত সম্পাদন করে।
এইভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি যখন ইউরোপের বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছিল, সেই সময় ইতালি ইথিওপিয় আক্রমণ করলে ফ্রান্স ও পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর উদাসীনতায় রাশিয়ার মনে সন্দেহের হয়। স্পেনের গৃহযুদ্ধের সময় ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের নিষ্ক্রিয়তা সোভিয়েত সরকার করতে পারেনি। এরপর রাইন অঞ্চল জার্মানি দখল করলে ইউরোপের শক্তিবর্গের প্রতিহত করার কোনো প্রকার চেষ্টা পরিলক্ষিত না হওয়ায় রাশিয়ার সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। তাছাড়া জার্মানি, ইতালি ও জাপান এই তিনটি অক্ষশক্তির কমিউনিস্ট বিরোধী চুক্তি স্বাক্ষর এবং হিটলার কর্তৃক অস্ট্রিয়া অধিকারের সময় ইচ্ছা- ফরাসি নিষ্ক্রিয়তা সোভিয়েত সরকারের ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া ১৯৩৮ সালে মিউনিখ চুক্তি স্বাক্ষর করে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইতালি হিটলারকে চেকোস্লোভ গ্রাস করতে দিলে ইউরোপীয় শক্তিবর্গ যে রাশিয়ার নিরাপত্তার বিষয় স উদাসীন সোভিয়েত সরকার তা স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করে। হিটলারের প্রতি ইংল্যান্ড ফ্রান্সের এইরূপ তোষণনীতি রাশিয়ার পক্ষে সহ্য করা অসম্ভব হয়ে ওঠে।
সুতরাং এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য এবং জার্মানিকে যুগ্মভাবে বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে রাশিয়া, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মধ্যে এক ত্রি-শক্তি চুক্তি স্বাক্ষরের প্র সোভিয়েত সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়। কিন্তু ব্রিটেন ও ফ্রান্স এই প্রস্তাবের উপর কোনো গুরুত্ব আরোপ না করায় রাশিয়ার সন্দেহ ও ভীতি ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে সেজন্য আত্মরক্ষার উপায় হিসেবে রাশিয়া জার্মানির সঙ্গে মিত্রতা স্থাপনের জন্য সচেষ্ট হয়ে ওঠে। ১৯৩৯ সালে রাশিয়া জার্মানির সাথে অনাক্রমণ চুক্তি (Non Aggression Pact) স্বাক্ষর করে অন্তত কিছুকালের জন্য জার্মানির প্রকাশ্য শত্রুতা হতে আত্ম করার এবং সেই সুযোগে সামরিক প্রস্তুতির ব্যবস্থা করে। এই চুক্তি সম্পাদিত হওয়া কিছুদিনের মধ্যেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]