প্রাচীন বাংলার শিল্প ও স্থাপত্য : ভাস্কর্য শিল্প, পোড়ামাটির শিল্প, বাঙালি রীতির বৈশিষ্ট্য Art and Architecture in Ancient Bengal : Sculptural art, Terracotta, Characteristics of the Bengal Style

শিল্প ও স্থাপত্য
Art and Architecture
৭.২ ভস্কর্য শিল্প
Sculptural Art
৭.৩ পোড়ামাটির শিল্প
Terracotta
৭.৪ বাঙালি রীতির বৈশিষ্ট্য
Characteristics of Bengal Style
১২৪ প্রাচীন বাংলার শিল্প ও স্থাপত্য:ভাস্কর্য শিল্প, পোড়ামাটির শিল্প, বাঙালি রীতির বৈশিষ্ট্য
প্রাচীন বাংলার শিল্প ও স্থাপত্য : ভাস্কর্য শিল্প, পোড়ামাটির শিল্প, বাঙালি রীতির | বৈশিষ্ট্য বাংলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাসে অনন্য স্থান দখল করে
রয়েছে। শিল্পকলার মধ্যে স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও পোড়ামাটির শিল্প সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে |
সমৃদ্ধ। স্বকীয় বৈশিষ্ট্য প্রাচীন বাংলার শিল্পকলাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করছে।
সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
৭.১ শিল্প ও স্থাপত্য
Art and Architecture
নিম্নে প্রাচীন বাংলার স্থাপত্য শিল্পের ইতিহাস লেখা অতিশয় কঠিন। কারণ হিন্দু যুগের প্রাসাদ, স্তূপ, মন্দির, বিহার প্রভৃতির কোন চিহ্ন একপ্রকার নেই বললেই চলে। কা- হিয়ান ও হিউয়েন সাংয়ের বিবরণ এবং প্রাচীন শিলালিপি ও তাম্র শাসনগুলোর আলোচনা করলে কোন সন্দেহ থাকে না যে, হিন্দুযুগে বাংলায় বিচিত্র কারুকার্য খচিত বহুহর্ম ও মন্দির এবং স্তূপ ও বিহার প্রভৃতি ছিল। কিন্তু এগুলো সবই ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রাচীন প্রশস্তিকারেরা উচ্ছ্বসিত ভাষায় যে সকল বিশাল গগনস্পর্শী মন্দির ভূ- ভূষণ’, ‘কুল-পর্বত-সদৃশ’ অথবা ‘সূর্যের গতি-রোধকারী' বলে বর্ণনা করেছেন, আজ তার চিহ্নমাত্রও নেই। দ্বাদশ শতাব্দীতেও সন্ধ্যাকর নন্দী বরেন্দ্রভূমিতে ‘প্রাংশু-প্রাসাদ’, মহাবিহার এবং কাঞ্চনখচিত হর্ম্য ও মন্দিরসমূহ দেখেছিলেন, তা সবই কালগর্ভে বিলীন হয়েছে। বাংলার স্থপতি শিল্পের কীর্তি আছে, কিন্তু নিদর্শন নেই ।
এদেশে প্রস্তর সুলভ নয়, তাই অধিকাংশ নির্মাণ কার্যেই ইটের ব্যবহার হতো। আদ্রঅ বায়ু, অতিরিক্ত বৃষ্টি, বর্ষা ও নদী প্লাবনের ফলে ইষ্টক শীঘ্রই ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। বৈদেশিক আক্রমণকারীর অত্যাচারেও অনেক বিনষ্ট হয়েছে। প্রকৃতি ও মানুষ উভয়ে মিলে বাংলার প্রাচীন শিল্পসম্পদ ভূপৃষ্ঠ হতে বিলুপ্ত করে দিয়েছে।
সামান্য কয়েকটি ভগ্নপ্রায় মন্দির এই বিশ্বগ্রাসী ধ্বংসের হস্ত হতে কোন রকমে আত্মরক্ষা করে এখনো দাঁড়িয়ে আছে। জঙ্গল পরিপূর্ণ মৃৎ-স্তূপ খনন করে পুরাতত্ত্ব- অনুসন্ধিৎসুগণ কোন কোন অতীত কীর্তির জীর্ণ ধ্বংসাবশেষ আবার লোকচক্ষুর গোচর করেছেন। এরাই বাংলার অতীত শিল্প-সম্পদের শেষ নিদর্শন। এদের উপর নির্ভর করেই বাংলার স্থাপত্য শিল্পের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস রচনা করতে হবে। কিন্তু এ ইতিহাস নয়, ইতিহাসের কঙ্কালমাত্র। বাংলার প্রাচীন শিল্পসমৃদ্ধ এবং তার অতুলনীয় কীর্তি ও গৌরবের ক্ষীণ প্রতিধ্বনিও এর মধ্য দিয়ে ফুটে উঠবে কিনা সন্দেহ।
১. স্তূপ : বৌদ্ধস্তূপই ভারতের সর্বপ্রাচীন স্থাপত্য-নিদর্শন। ভগবান বুদ্ধের অস্থি বা ব্যবহৃত বস্তু রক্ষা করার জন্যই প্রথমে স্তূপের পরিকল্পনা হয়। পরে বিশেষ বিশেষ ঘটনা চিরস্মরণীয় করার জন্য যে যে স্থানে তা ঘটেছিল, সেখানে স্তূপ নির্মিত হতো। বৌদ্ধদের পূর্বেও হয়ত এই প্রথা ছিল। পরে জৈনরাও স্তূপ নির্মাণ করতো। কিন্তু
বাংলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাস
বৌদ্ধগণের মধ্যেই স্তূপ বিশেষ বিখ্যাত ছিল। বৌদ্ধগণ কে পবিত্র মন্দিরের জ্ঞান করতো এবং পরবর্তী কালে তারা স্তূপকেও পূজা ও অর্চনা করতো। নির্মাণ উৎসর্গ করা অতিশয় পুণ্য-কার্য বলে বিবেচিত হতো। এর ফলে যেখানেই বৌদ্ধধর্ম প্রসারলাভ করেছে, সেখানেই ক্ষুদ্র ও বৃহৎ আকারের অসংখ্য স্তূপ নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশেও অনেক স্তূপ নির্মিত হয়েছিল।
স্তূপের তিনটি অংশ। সর্বপ্রাচীন স্তূপে অনুচ্চ গোলাকৃতি অধোভাগের উপর গম্বুজাকৃতি মধ্যম বা প্রধান অংশ এমনভাবে হতো, যাতে অধোভাগের কতকটা স্থান যুক্ত থাকে এবং এর উপর দিয়ে গম্বুজের চারদিকে ঘুরে আসা যায়। গুরুগণের প্রদক্ষিণ পথস্বরূপ এই উন্মুক্ত অংশ ব্যবহৃত হতো। গম্বুজের উপর প্রথমত চতুষ্কোণ হর্মিকা ও তার উপর একটি গোলাকৃতি চাকা থাকত ।
কালক্রমে স্তূপের আকৃতি ক্রমশই দীর্ঘাকার হতে থাকে। অধোভাগ অনেকটা পিপার আকার ধারণ করে এবং মধ্যভাগের অর্ধবৃত্তাকার গম্বুজও ক্রমশ দীর্ঘতর হয়। উপরের গোল চাকার সংখ্যাও বেড়ে যায় এবং পর পর ছোট হতে সর্বশেষ চাকাটি প্রায় বিন্দুতে পরিণত হয়। স্তূপের এই তিন অংশের নাম মেধি, অণ্ড ও ছত্রাবলী। ক্রমে এই তিন অংশের নিচে একটি অধোভাগ সংযুক্ত হয়। এর অধোভাগ চতুষ্কোণ এবং এর প্রতিদিকের মধ্যভাগ খানিকটা অংশ সম্মুখে প্রসারিত থাকে। কোন কোন স্থলে এই প্রসারিত অংশের খানিকটাও আবার সম্মুখে প্রসারিত হয়। এরূপ এক বা একাধিক প্রসারের ফলে অধোভাগ ক্রমশ ক্রসের আকার ধারণ করে। ক্রমশ নিচের এই ক্রস- আকৃতি অধোভাগ ও মেধি এবং উপরের অসংখ্য ছত্রাবলীই প্রাধান্য লাভ করে। এই দুইয়ের মধ্যকার অংশ অন্ড-এককালে যা স্তূপের প্রধান অংশ বলে বিবেচিত হতো, এখন আর দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করে না। স্তূপগুলোও প্রায় মন্দির-চূড়া বা শিখরের আকার ধারণ করে।
হিউয়েন সাং লিখেছেন, পুণ্ড্রবর্ধন, সমতট ও কর্ণসুবর্ণের যে যে স্থানে গৌতমবুদ্ধ ধর্মোপদেশ দান করেছিলেন সেই সেই স্থানে মৌর্যসম্রাট অশোক কর্তৃক নির্মিত স্তূপগুলোও তিনি দেখেছিলেন। এটি হতে প্রমাণিত হয় যে, হিউয়েন সাং এর সময়ও বাংলায় এমন বহু প্রাচীন স্তূপ ছিল যা লোকে অশোকের তৈরি বলে বিশ্বাস করতো। কিন্তু বাস্তবিকই গৌতমবুদ্ধ যে ঐ স্থানগুলো পরিদর্শন করেছিলেন এবং এর স্মরণার্থেই অশোক ঐ সকল স্তূপ নির্মাণ করেছিলেন, অন্য প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত কেবল হিউয়েন সাংয়ের উক্তির উপর নির্ভর করে এর কোনটিই বিশ্বাস করা যায় না। অশোকের কথা দূরে থাকুক, হিউয়েন সাংয়ের সময়কার কোন স্তূপের ধ্বংসাবশেষও অদ্যাবধি বাংলায় আবিষ্কৃত হয়নি। বাংলায় যে সকল স্তূপ দেখা যায়, তা সাধারণত ক্ষুদ্রাকৃতি । পুণ্য অর্জনের জন্য দরিদ্র ভক্তগণ এগুলো নির্মাণ করতো।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]