সুলতানি আমলে বাংলার বিখ্যাত স্থাপত্যকীর্তিসমূহ The Famous Muslim Architecture Performances in Bengal

মুসলমান শাসকগণ ইসলামের গৌরবকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে এবং নিজেদের রাজ্যজয় ও শাসনামলকে স্মরণীয় করে রাখতে বঙ্গের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময় অনেক। মাজার, মসজিদ, প্রাসাদ, দরগাহ ইত্যাদি নির্মাণ করেছিলেন।
১. বড় সোনা মসজিদ : আসাম বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখার জন্য হুসেন শ ‘বড় সোনা মসজিদ' নির্মাণ করেছিলেন। এর অপর নাম ‘বারদুয়ারি মসজিদ। এতে বৃহৎ বারোটি দরজা ছিল। এ মসজিদে সোনালি রঙের গিলটি করা কারুকার্য ছিল বলে সম্ভবত এটি সোনা মসজিদ নামে অভিহিত হতো। ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে নসরত শাহ্ এর নির্মাণ কার্য শেষ করেন ৷
২. বাবা আদমের মসজিদ : মালিক কাফুর ফতেহ শাহের রাজত্বকালে এটি নির্মিত হয়। ১৪৮৩ খ্রিস্টাব্দে এটি নির্মিত হয়েছিল। ঢাকা জেলার রামপালে 'বাবা আদমের মসজিদ' অবস্থিত। এটা হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের উপর নির্মিত।
৩. ষাট গম্বুজ মসজিদ : পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ষাট গম্বুজ মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। খানজাহান আলীর সমাধির তিন মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে ষাট গম্বুজ মসজিদ অবস্থিত। এটা বাংলার অন্যতম বৃহৎ মসজিদ। অপূর্ব গঠনশৈলীর জন্য বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ বাংলায় মুসলিম শাসনামলের গৌরব বৃদ্ধি করেছে।
৪. ছোট সোনা মসজিদ : আলাউদ্দিন হুসেন শাহের আমলের জনৈক ওয়ালি মুহাম্মদ ‘ছোট সোনা মসজিদ' নির্মাণ করেন। গৌড় শহরের সর্বশেষ দক্ষিণ প্রান্তে বর্তমান ফিরোজাবাদ গ্রামে ছোট সোনা মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। সোনালি রঙের গিলটির কারণে এ মসজিদটি ‘ছোট সোনা মসজিদ' হিসেবে পরিচিত। কারুকার্য ও স্থাপত্যকলার উৎকর্ষতার জন্য এ মসজিদটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
৫. লোটন মসজিদ : সুলতান ইউসুফ শাহের প্রিয়পাত্রী ও অনুগৃহীতা জনৈকা লোটন এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। 'লোটন বিবি' ছিলেন ধর্মান্তরিত মুসলমান। ইতোপূর্বে তিনি একজন নর্তকী ছিলেন। তখন তাঁর নাম ছিল মীরাবাঈ। ১৪৭৫ খ্রিস্টাব্দে এটি নির্মিত হয়। এটা গৌড় শহরের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত।
৬. আদিনা মসজিদ : ১৩৬৯ খ্রিস্টাব্দে সুলতান সিকান্দার শাহ 'আদিনা মসজিদ' নির্মাণ করেন। এটি বাংলার বৃহত্তম মসজিদ। অনেক ঐতিহাসিক গ্রন্থ বিশেষত ‘রিয়াজ-উস-সালাতীনর' অনুসারে সিকান্দার শাহ এ মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ করে যেতে পারেননি
জালালউদ্দিনের শাসনামলে একটি উল্লেখযোগ্য জদ। এ মসজিদের স্থাপত্যকলায় হিন্দু স্থাপত্য রীতির কে মনে করেন যে, রাজা গণেশ এক লক্ষ্মী দেবীর করেছিলেন তাঁর পুত্র জালালউদ্দিন তাকেই একলাখী বাদ আছে যে, তখনকার দিনে এক লাখ টাকা ব্যয়ে একলাখী মসজিদ' নামে পরিচিত। এ মসজিদ আসলে ট। এতে সুলতান জালালউদ্দিন মাহমুদের কবর আছে । খ্রিস্টাব্দে নসরত শাহ মহানবীর পদচিহ্নের প্রতি সম্মান সজিদ নির্মাণ করেছিলেন। এটি গৌড়ে অবস্থিত। এ কারুকার্য খচিত মর্মরবেদির উপর হযরত মুহম্মদ (স) স্তর স্থাপিত হয়েছিল ।
হের সমাধি : গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের সমাধি স্থাপত্যকলার ঢাকা হতে ১৬ মাইল দূরে সোনারগাঁয়ে গিয়াসউদ্দিন আজম ১৪১০ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়। এ কবরের নিকটে পাঁচটি দরগাহ
‘পাঁচ পীরের দরগাহ' নামে পরিচিত।
হ সমাধি : খুলনা জেলার বাগেরহাটে খানজাহান আলীর মাধির স্থাপত্যকলায় দিল্লির তুঘলক আমলের শিল্পকলার
• অনুসারে, খানজাহান আলী নামক জনৈক পীর ঐ স্থানে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। সমাধির শিলালিপির তারিখ লতান নাসিরউদ্দিন শাহের সমসাময়িক ছিলেন। জা : গৌড়ের দাখিল দরওয়াজা আলাউদ্দিন হুসেন শাহের খযোগ্য। দাখিল দরওয়াজা ৬০ ফুট উঁচু ও ৭৩ ফুট প্রশস্ত । চাগের মধ্যস্থলে ৩৪ ফুট উঁচু খিলানযুক্ত বিশাল তোরণ
ংলায় স্থাপত্য শিল্পের যথেষ্ট উৎকর্ষ সাধিত হয়। সুলতানদের চাগে স্থাপত্য শিল্পের বিকাশ ঘটে। গৌড় ও বাংলার বিভিন্ন মাধি আছে তা সে যুগের উৎকৃষ্ট স্থাপত্য শিল্পের পরিচায়ক।
লের বাংলার মুসলিম স্থাপত্য শিল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্য Characteristics of Muslim Architecture in Sultanate Period
গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিল সুলতানি আমল। এ সময় বাংলার ষ্ঠপোষকতায় স্থাপত্য শিল্পের ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়। ত্য শিল্পের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :
৩২৮ বাংলায় মুসলিম স্থাপত্যশিল্প : সুলতানি আমল ও মুঘল আমলে বাংলার মুসলিম স্থাপত্য রীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য।
১. দেয়ালগুলো ছিল ইটের। দেয়ালের উপর কোন আস্তর ছিল না। ২. সুলতানি আমলে বেদের উপর আর্চ থাকত ।
৩. দালানগুলোতে টেরাকোটার সাজসজ্জা দেখা যায়। টেরাকোটা কারুকার্যের
সমাবেশে দেয়ালগুলো নানা বর্ণে চিত্রিত ও রঞ্জিত ছিল।
৪. উজ্জ্বল ও রঙিন চক্‌চকে টালির ব্যবহার করা হয় সুলতানি আমলের
মসজিদগুলোতে।
৫. স্থানীয় নকশা যেমন- লতাপাতা, Chain and Bell ইত্যাদি নকশা দেখা
যায়। তবে তারা কোন প্রাণীর বা জীবের মূর্তি ব্যবহার করেনি। কারণ ইসলামি আইনে নিষেধ থাকার কারণে তারা মূর্তির ব্যবহার করেনি। ৬. অষ্ট ভুজবিশিষ্ট Corner tower ও চক্রাকৃতি প্রাচীরের ব্যবহার দেখা যায়। ৭. পাথরের উপর সাজসজ্জা সুলতানি আমলের দেয়ালগুলোতে দেখা যায়। গেটের তোরণে, খামের স্তম্ভে পাথরের ব্যবহার হয়েছে। তবে পাথরে ব্যবহার কম ছিল। সুলতানি আমলের সবচেয়ে প্রাচীন অট্টালিকাসমূহ হুগলি জেলার ত্রিবেণী পাণ্ডুয়ায় । এখানে ইট ও পাথরের সমন্বয় দেখা যায়। সুলতানি আমলে স্থাপত্য শিল্পের উন্নতির কারণে বাংলার গৌরব বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। এর পেছনে সম্পূর্ণ অবদান ছিল সুলতানি শাসকদের।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]