ভূমি ও রাজস্ব প্রশাসন: মুর্শিদকুলী খান Land and Revenue Administration : Murshidkuli Khan

ভূমি ও রাজস্ব প্রশাসক মুর্শিদকুলী খানের পরিচিতি
Introduction to land and revenue administrator Murshidkhuli
Khan
মুর্শিদকুলী খানের ভূমি ও রাজস্ব ব্যবস্থা
Land and revenue system of Murshidkhuli Khan
মুর্শিদকুলী খানের ভূমি ও রাজস্ব সংস্কার (মালজামিনী)
Land and revenue reforms (Maljamini) of Murshidkhuli Khan
মুর্শিদকুলী খানের ভূমি ও রাজস্ব সংস্কারের ফলাফল
Results of land and revenue reform of Murshidkhuli Khan
হিন্দু জমিদার শ্রেণির উদ্ভব ও বিকাশ
Orgin and development of Hindu landlords
ভূমি ও রাজস্ব প্রশাসক হিসেবে মুর্শিদকুলী খানের কৃতিত্ব
Acheivements of Murshidkhuli Khan as land and revenue administrator ভূমি ও রাজস্ব প্রশাসক মুর্শিদকুলী খানের পরিচিতি
Introduction to Land and Revenue Administrator
Murshidkhuli Khan
মুর্শিদকুলী খান বাংলায় নওয়াবী শাসনের প্রতিষ্ঠাতা। বাংলায় মুর্শিদকুলী খানের কর্মজীবন শুরু হয় প্রাদেশিক দিউয়ান হিসেবে। একে একে বাংলা ও উড়িষ্যার নাজিম বা গভর্নর, বিহারের দিউয়ান এবং কয়েকটি জেলার ফৌজদারের পদ অলঙ্কৃত করার পর অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে তাঁর কর্মজীবনের সমাপ্তি ঘটে।
মুর্শিদকুলী খানের পরিবার ও পিতামাতা সম্পর্কে নিশ্চিত কিছু জানা যায় না। ইস্পাহান শহরের হাজী শফি নামক একজন পদস্থ মুঘল কর্মকর্তা তাঁকে ইরানে নিয়ে পিতৃস্নেহে লালন-পালন ও প্রয়োজনীয় শিক্ষাদান করেন। হাজী শফির মৃত্যুর পর তিনি ভারতে এসে গোলকুন্ডার দিউয়ান ও ফৌজদার হিসেবে মুঘল সরকারের চাকরিতে যোগদান করেন এবং মনসব লাভ করেন। সম্রাট আওরঙ্গজেব বাংলার জন্য একজন সৎ ও দক্ষ দিউয়ান খুঁজতে গিয়ে তরুণ মুর্শিদকুলী খানকে এ পদের যোগ্য মনে করে। ১৭০১ সালে তাঁকে দিউয়ান নিয়োগ করে বাংলায় পাঠানো হয়। তিনি সম্মানসূচক ‘করতলব খান’ উপাধিতে ভূষিত হন।
নতুন নিয়োগ পেয়ে করতলব খান ঢাকায় পৌঁছেন। তিনি রাজস্ব ও অর্থনৈতিক প্রশাসনে স্বীয় যোগ্যতার পরিচয় দেন। তিনি ছিলেন সৎ এবং সম্রাটের অত্যন্ত বিশ্বস্ত। কিন্তু রাজকীয় স্বার্থ রক্ষা করতে বাংলার নাজিম ও সম্রাটের দৌহিত্র আজিমুদ্দীনের (পরবর্তী সময়ে আজিম-ইস-শান) সঙ্গে তাঁর বিবাদ বাঁধে। ফলে করতলব খানের জীবন হুমকির সম্মুখীন হয়। তিনি সাহসের সঙ্গে সমস্যার মোকাবিলা করে কোন রকমে রক্ষা পান। এই ঘটনায় সম্রাট হস্তক্ষেপের মাধ্যমে করতলব খানের প্রতি সুবিচার করেন। ১৭০২ সালে সম্রাট তাঁকে গঙ্গার তীরবর্তী (ভাগীরথী শাখা) মকসুদাবাদে দফতর স্থানান্তরের অনুমতি দেন। অন্যদিকে সম্রাট তাঁর দৌহিত্রকে পাটনায় প্রেরণ করেন এবং নায়েবের মাধ্যমে প্রদেশ শাসনের হুকুম দেন। করতলব খান তাঁর সৎ প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করেন। ১৭০৩ সালে সম্রাটের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তিনি দাক্ষিণাত্য যান এবং সেখানে মুর্শিদকুলী খান উপাধি লাভ করেন। এভাবে তাঁর পদমর্যাদা আরো বৃদ্ধি পায়। নতুন খেতাব ও অপরাপর মর্যাদাসহ দাক্ষিণাত্য থেকে ফেরার পর ১৭০৪ সালের প্রথমদিকে ইউরোপীয় কোম্পানির প্রতিনিধিগণ এবং হুগলির ফৌজদার তাঁর সঙ্গে কটক, মেদিনীপুর ও বর্ধমানে সাক্ষাৎ করেন। সম্রাট মকসুদাবাদের নাম পরিবর্তন করে তাঁর নতুন উপাধি অনুসারে মুর্শিদাবাদ রাখার অনুমতি দেন।
আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর মুঘল সাম্রাজ্যে গোলযোগ শুরু হয় এবং । মধ্যে সাম্রাজ্য ধ্বংস হবার উপক্রম হয়। সে সময় অনুপস্থিত তাঁর প্রতিনিধি (নায়েব) বাংলার শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। রাজত্বকালে মুর্শিদকুলী খানকে দাক্ষিণাত্যে বদলি করা হয়। তবে ১৭১০ সালে তাঁকে আবার ফেরত আনা হয়। ১৭১৩ সালে তিনি র নাবালক পুত্র ফরখুন্দ সিয়ারের পক্ষে ডেপুটি সুবাহদার নিযুক্ত হন। তিনি অনুপস্থিত সুবাহদার মীরজুমলার ডেপুটি সুবাহদার হন। বিাদে অবস্থান করতেন। মুর্শিদকুলী খান ঢাকায় সর্বোচ্চ পদমর্যাদার এ প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা তাঁর হাতেই ছিল। বাংলার জন্য এটা শদকুলী খান এই প্রদেশকে সব রকমের বিশৃঙ্খলা থেকে মুক্ত রাখতে ৭১৬ সালে মুর্শিদকুলী খান বাংলার নাজিম পদে উন্নীত হন। তিনি ও পদবিতে ভূষিত হন। প্রথমে তিনি ‘জাফর খান' উপাধি পান এবং [তামিন-উল-মুলক আলা-উদ-দৌলা জাফর খান নাসিরী নাসির জঙ্গ 1 দেওয়া হয় । তাঁকে সাত হাজারি মনসব প্রদান করা হয় । ১৭১৭ সালে * রাজধানী ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে স্থানান্তর করেন। সাফল্যের সঙ্গে শেষে ১৭২৭ সালে ৩০ জুন মুর্শিদকুলী খান মৃত্যুবরণ করেন ।
লী খান কেবল বাংলার দিউয়ান ও সুবাহদার ছিলেন তা নয়, একই ছলেন উড়িষ্যার দিউয়ান ও সুবাহদার, বিহারের দিউয়ান এবং কয়েকটি দোর। তাঁর নিয়ন্ত্রণে ছিল তিনটি প্রদেশ। এই সুবাদে তিনি তাঁর আত্মীয়- -বান্ধবদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করেন। তারা তাঁকে রাজস্বসহ গজে সহায়তা করেন। ১৭২২ সালে মুর্শিদকুলী খান পূর্ববর্তী টোডরমল ও বর্তিত ভূমিরাজস্ব বন্দোবস্ত পদ্ধতির সংস্কার করে একটি নতুন বন্দোবস্ত নি। রাজস্ব কর্মচারীদের মাধ্যমে তিনি ভূমির উৎপাদনক্ষমতা নিশ্চিত করেন ব সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধিরও ব্যবস্থা করেন। তাঁর রাজস্ব ব্যবস্থা মাল জমিনী চত, অর্থাৎ তিনি জমিদারদের উপর তাদের জমির রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব ন। তাঁর আমলে জমিদার হিসেবে সাধারণভাবে হিন্দুরাই অধিকতর পছন্দের গরণ তিনি মনে করতেন, হিন্দুদের কাছ থেকে সহজে রাজস্ব আদায় করা জস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে মুর্শিদকুলী খান অত্যন্ত কঠোর ছিলেন এবং নিয়ম াদের তিনি শাস্তি দিতেন। এই শাস্তি কখনো কখনো অত্যাচার ও তে পরিণত হতো ।
দিকুলী খানের আমলে অভ্যন্তরীণ ও বহির্বাণিজ্যে বাংলার প্রভূত উন্নতি হয়। আরব, পারস্য ও আরমেনীয় ব্যবসায়ীরা বাংলায় বেশ সক্রিয় ছিল। ণতাব্দী থেকে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো বাংলায় উৎপাদিত সুতা, রেশম ও তা উৎপন্ন বস্ত্রসামগ্রী ক্রয় শুরু করে। এসব ক্রয়ের জন্য তারা স্বর্ণ ও রৌপ্য
আমদানি করতো। এর ফলে এদেশে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। এই ব্যবসায় প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে মুদ্রা ব্যবসায়ী, সাহু বা পোদ্দার, মহাজন, বানিয়া দালালরা দ্রুত মহাজনি ব্যবসায় উন্নতি লাভ করে। এ ধরনের বহু মহাজনের মধ্যে জগৎ শেঠ অতি প্রসিদ্ধ হয়ে ওঠেন। মুর্শিদকুলী খান বাণিজ্যের গুরুত্ব অনুধাবন করেন। এবং ব্যবসায়ী ও কোম্পানিগুলোকে সৎ ব্যবসায়ে উৎসাহ প্রদান করেন। তিনি অসং ব্যবসায়ীদের কঠিন শাস্তিদানের ব্যবস্থা করেন। মুর্শিদকুলী খান সম্রাটের প্রতি এতট কৃতজ্ঞ ছিলেন যে, ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কে তিনি কলকাতার আশেপাশে বেশি গ্রাম ক্রয়ের অনুমতি দেননি, এমনকি কোম্পানির রাজকীয় ফরমান লাভের পরও তিনি অনমনীয় ছিলেন।
মুর্শিদকুলী খান একজন বিখ্যাত নির্মাতা ছিলেন। তিনিই ঢাকার করতলব মসজিদ (বেগম বাজার মসজিদ) এবং মুর্শিদাবাদ মসজিদ নির্মাণ করান। ব্যক্তি-জীবনে তিনি অত্যন্ত ধার্মিক ছিলেন এবং কখনো শরিয়তের পথ থেকে বিচ্যুত হননি। তিনি স্ত্রীর প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন। স্বহস্তে পবিত্র কুরআনের অনুলিপি তৈরি করে তিনি পবিত্র স্থানে বিতরণ করতেন। তিনি শিয়া মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন।
১৪.২ মুর্শিদকুলী খানের ভূমি ও রাজস্ব ব্যবস্থা
Land and Revenue System of Murshidkhuli Khan ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদকুলী খানকে বাংলার দেওয়ান নিযুক্ত করা হয়। রাজস্ব সংস্কার মুর্শিদকুলী খানের চরম কৃতিত্ব এবং এই কারণে তিনি বাংলার ইতিহাসে এক বিশিষ্ট আসন অধিকার করে আছেন। দেওয়ান হিসেবে তাঁর আগমনের (১৭০০ খ্রি.) পূর্বে বাংলার রাজস্ব ব্যবস্থা মোটেই সুষ্ঠু ছিল না। সে সময় সরকারের আয়ের উৎস ছিল দুটি। যথা : ভূমি রাজস্ব (মাল জামিনী) ও বাণিজ্যশুল্ক (সায়ের)। মুর্শিদকুলী খানের রাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে সলিমুল্লাহর ‘তারিখ-বাঙ্গালা' জেমস্ গ্রান্টের এনালিসিস অব দ্যা ফিনান্স অব বেঙ্গল' এবং এনায়েত উল্লাহ খানের 'আহকাম-ই-আলমনগরী' থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
১৭০০ খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদকুলী খানের দেওয়ান নিযুক্ত হয়ে আগমনের সময় বাংলার ভূমি রাজস্ব সম্পর্কে কোন সুষ্ঠু ব্যবস্থা ছিল না। তখন বাংলায় ভূমি রাজস্ব থেকে সরকারের কোনরূপ আয় হতো না বললেই চলে। সমগ্র বাংলা প্রদেশের ভূভাগ মুঘল কর্মচারীদের মধ্যে নগদ বেতনের পরিবর্তে জায়গীররূপে বণ্টন হয়ে গিয়েছিল। ফলে সরকারের নিজস্ব খাস জমি (crown land) বলে কিছু অবশিষ্ট ছিল না। বাণিজ্য শুল্কই ছিল রাষ্ট্রের একমাত্র প্রধান আয় । এছাড়া বাংলার ভূমি রাজস্ব পুরাতন প্রথায় চলছিল। মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় বাংলার ভূমি রাজস্ব নির্ধারণের জন্য নিয়মিত জরিপ ব্যবস্থা প্রচলিত হয়নি। জমিদাররা সরকারকে একটা নির্দিষ্ট রাজস্ব দিতেন এবং তাঁরা
প্রজাদের নিকট থেকে নিজদের নির্ধারিত হারে অর্থাৎ ইচ্ছামত খাজনা আদায় করতেন । এতে একদিকে প্রজারা নির্যাতিত হত, অন্যদিকে অতিরিক্ত রাজস্ব সরকারি কোষাগারে এমা হতো না। রাজস্ব ব্যবস্থা ছিল সম্পূর্ণরূপে ত্রুটিপূর্ণ। মুর্শিদকুলী রাজস্ব সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
মুর্শিদকুলী খান রাজস্ব সংস্কার তথা রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য প্রধানত দুই ধরনের ব্যবস্থা অবলম্বন করেন। প্রথমত, তিনি মুঘল কর্মচারীদের বাংলার জায়গীরগুলোকে সরকারের খাস জমিতে পরিণত করেন এবং তাদেরকে এর পরিবর্তে উড়িষ্যার অনুন্নত ও জঙ্গলাবৃত্ত অঞ্চলে জায়গীর প্রদান করেন। দ্বিতীয়ত, তিনি জমি জরিপের মাধ্যমে প্রজাদের দেয় খাজনা নির্ধারিত করে দেন এবং রাজস্ব আদায়ের ভার জমিদারদের পরিবর্তে ইজারাদারদের (contractors) হাতে ন্যস্ত করেন। মুর্শিদকুলী খানের প্রবর্তিত এই ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা ‘মালজামিনী' নামে অভিহিত। ভূমি অর্থ মাল এবং রাজস্ব অর্থ জামিন ।
মুর্শিদকুলী খানের ভূমি ও রাজস্ব সংস্কার (মালজামিনী)
Land and Revenue Reforms (Maljamini) of Murshidkhuli Khan
১. ইজারাদার নিয়োগ : ইতোপূর্বে বাংলার প্রাচীন জমিদারগণ মোটা অংকের রাজস্ব সরকারকে প্রদান করতো। কিন্তু কালক্রমে তাদের অলসতা, বিলাসিতা, অমিতব্যয়িতা প্রভৃতি কারণে তাদের নিকট থেকে নিয়মিত রাজস্ব পাওয়ার সকল আশা তিরোহিত হয়। উত্তর ভারতে প্রচলিত রাজস্ব-ব্যবস্থা (অর্থাৎ সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় ব্যবস্থা) বাংলায় প্রবর্তন করা সম্ভব ছিল না। তাই মুর্শিদকুলী খান জমিদারদের পরিবর্তে “ইজারাদার” নিযুক্ত করে তাদের উপর রাজস্ব আদায়ের ভার অর্পণ করেন। ইজারাদারগণ নিয়মিত সরকারের রাজকোষে নির্দিষ্ট রাজস্ব প্রদানের শপথ গ্রহণ করতেন। ইজারাদার পদে মুর্শিদকুলী সাধারণত হিন্দুদেরকেই নিয়োগ করতেন। এভাবে তিনি বাংলায় এক নতুন জমিদার শ্রেণি সৃষ্টি করেন।
২. চাকলা ও পরগণা : ভূমি রাজস্ব বন্দোবস্তের সুবিধার জন্য মুর্শিদকুলী সমগ্র বাংলাকে ১৩টি চাকলায় এবং ১৬৬০ টি পরগণায় বিভক্ত করেন। তিনি মেদিনীপুরকে উড়িষ্যা থেকে পৃথক করে বাংলার সাথে যুক্ত করেন।
৩. ভূমি জরিপ ও তদনুযায়ী রাজস্ব নির্ধারণ : ইজারাদারদের সাথে বন্দোবস্তের পূর্বে মুর্শিদকুলী সমস্ত ভূমি বিঘাপ্রতি পরিমাপ করেন। টোডরমলের রাজস্ব ব্যবস্থার মতো বাংলা প্রদেশের সকল আবাদি ও অনাবাদি জমি জরিপ করে জমির উৎপাদন শক্তি কয়েক বছরের উৎপন্ন শস্যের বাৎসরিক গড় ইত্যাদি বিবেচনা করে এক- তৃতীয়াংশ (তিন ভাগের এক ভাগ) শস্য ভূমিকর নির্ধারিত করেন। আবার কয়েক
বছরের শস্যের মূল্যের বাৎসরিক গড় হিসাব করে টাকায় বিঘাপ্রতি খাজনা নির্ধারণ করেন। প্রজারা ইচ্ছামত শস্যে বা টাকায় ভূমিকর দিতে পারতো। ইজারাদারগণ প্রজাদের নিকট থেকে নির্ধারিত হারের বেশি ভূমিকর দাবি করতে পারতো না। অতিরিক্ত কর নিষিদ্ধ করা হয়। এই জরিপের উপর ভিত্তি করে মুর্শিদকুলী
ইজারাদারদের দেয় রাজস্ব ধার্য করেন।
৪. প্রাচীন জমিদারদের ভরণ-পোষণ ব্যবস্থা : মুর্শিদকুলী প্রাচীন জমিদারদের অধিকাংশকেই উচ্ছেদ করেছিলেন বটে, কিন্তু তাঁদের ভরণ-পোষণের জন্য তিনি উপযুক্ত ব্যবস্থা করেন। প্রাচীন জমিদারদের মধ্যে যারা মুর্শিদকুলীর নতুন রাজস্ব- ব্যবস্থা ও রাজস্ব আদায়ের চুক্তি গ্রহণে স্বীকৃত হয়েছিলেন তাদেরকেও ইজারাদার পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। ভূমি রাজস্ব ছাড়াও তিনি জমিদার ও ইজারাদারদের নিকট থেকে তাদের খাওয়া-পরা, বাসস্থানের জন্য নানকর আদায় করেছেন।
৫. আমিল ও অন্যান্য সরকারি রাজস্ব আদায়কারী নিয়োগ : ইজারাদারদের সাথে ভূমি বন্দোবস্তের পর তাদের নিকট থেকে বকেয়া ও হাল রাজস্ব আদায়ের জন্য মুর্শিদকুলী ‘আমিল’ উপাধিধারী সরকারি কর্মচারী নিয়োগ করেন। এছাড়া কানুনগো, মুৎসুদ্দি, পাটোয়ারী প্রভৃতি রাজস্ব আদায়কারী কর্মচারী ছিল। ইজারাদারগণ তাদের উপর ধার্যকৃত রাজস্ব ১২ কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারতো।
৬. রাজস্ব আদায়ের ব্যয় হ্রাস ও হিসাব সংরক্ষণ : সরকার কর্তৃক নিয়োজিত রাজস্ব বিভাগের কর্মচারী আমিলদের রাজস্ব আদায়ের খরচ হ্রাসের ব্যবস্থা করা হয়। পূর্বে তারা রাজস্ব আদায়ের ব্যাপারে অত্যধিক খরচ দেখাতো। তিনি আদায়কৃত সরকারি রাজস্বের হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি যথাযথভাবে গড়ে তোলেন। পাটোয়ারী, আমিল, কানুনগো, দেওয়ান সকলের ক্ষেত্রেই জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করা হয়। রাজস্ব আদায় ও হিসাব রাখার ব্যাপারে অনিয়ম বা শৈথিল্য উপেক্ষা করা হতো না। মুর্শিদকুলীর রাজস্ব ব্যবস্থা কার্যকরী হওয়ায় রাজস্ব ঘাটতি দূর হয়ে তা বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি পায় ৷
৭. রাজস্ব আদায়ের কঠোরতা : সমসাময়িক ইতিহাস লেখক সলিমুল্লাহ লিখেছেন যে, মুর্শিদকুলী রাজস্ব আদায় ও হিসাব রাখার ব্যাপারে খুব কড়াকড়ি করতেন। রাজস্ব বাকি পড়লে তিনি জমিদার, আমিল, কানুনগো, মুৎসুদ্দিদের দেওয়ান খানায় বন্দী করে অমানবিক শাস্তি দিতেন। দিনের পর দিন তাদের খাদ্য বা পানি না দেয়া, মাথা নিচের দিকে ঝুলিয়ে চাবুক মারা, ‘বৈকুণ্ঠ' বা আবর্জনাপূর্ণ গর্তে ফেলা ইত্যাদি শাস্তির কথা সলিমুল্লাহ উল্লেখ করেছেন। আধুনিক কালের ঐতিহাসিকগণ তাঁর বর্ণনাকে অতিরঞ্জিত বলে বিবেচনা করেন। তবে এটা ঠিক যে, মুর্শিদকুলী খেলাপি কিছু কিছু ইজারাদার-জমিদারদের শাস্তি দেন। তাদের বদলে তিনি কয়েকজন হিন্দু জমিদার বা ইজারাদারদের জমি দেন।
• রাজস্ব সংস্কারের ফলাফল nd Revenue Reform of
an
1 বৃদ্ধি পায়। ‘মালজামিনী' ব্যবস্থা প্রচলনের ফলে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা উদ্বৃত্ত হয়। মুর্শিদকুলী এ * ১ কোটি ৩ লক্ষ টাকা পাঠাতেন।
র আয় সুনির্দিষ্ট হয়। মুর্শিদকুলী ভূমি রাজস্ব নির্দিষ্ট করেন। এছাড়া তিনি জমিদার ও থকে আবওয়াব-ই-খাসনবিশ (হিসাব লেখকের কর)
কা আদায় করতেন।
ও মুঘল কর্মচারীদের উৎপীড়ন থেকে কৃষকগণ রক্ষা বন্ধ হয় এবং দেশে শান্তি বিরাজিত থাকায় প্রজাদের দ্ধি পায়।
ওয়ায় ব্যবসায় বাণিজ্যের প্রভূত উন্নতি হয়।
সরকার থেকে কৃষকগণকে ঋণদানের নীতি গৃহীত উন্নতি হয় ৷
র ফলে অনেক পুরাতন জমিদার বিশেষত মুসলমান হারান। মুর্শিদকুলী রাজস্ব বিভাগের চাকরিতে
■ হিন্দুদের বেশি করে নিয়োগ করতেন। তিনি হিন্দু র রাজস্ব আদায়ের ভার অর্পণ করেন ।
স্ব সংস্কারের পরোক্ষ ফলস্বরূপ তাঁর সময়ে বাংলায় দু জমিদারির ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। রঘুনন্দনের নাটোর রর দিঘাপতিয়া জমিদারি, ময়মনসিংহ, মুক্তগাছা, নদীয়া ও রি মুর্শিদকুলী খানের সময় প্রতিষ্ঠিত হয়।
মুর্শিদকুলী খানের রাজস্ব সংস্কারের ফলে রাজস্ব বিভাগে প্রবর্তিত হয়, অপরদিকে তেমনি সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি রক্ত করের বোঝা থেকে রেহাই পায় এবং তাদের কর । এছাড়া কৃষিরও উন্নতি ঘটে। রাজস্ব সংস্কারের কৃতিত্বের পার ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছেন।
হিন্দু জমিদার শ্রেণির উদ্ভব ও বিকাশ
Orgin and Development of Hindu Landlords মুর্শিদকুলীর রাজস্ব সংস্কারের ফলে বাংলায় বড় হিন্দু জমিদারির ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয় ।
১. নাটোর জমিদারি : মুর্শিদকুলীর আমলে বাংলার কয়েকটি বড় হিন্দু জমিদারির ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। রঘুনন্দনের নাটোর জমিদারি এদের অন্যতম। রঘুনন্দন বরেন্দ্র ব্রাহ্মণ ছিলেন। তিনি মুর্শিদকুলীর রাজস্ব বিভাগের কর্মচারী ছিলেন। তাঁর কাজে সন্তুষ্ট হয়ে মুর্শিদকুলী খান তাঁকে প্রধান কানুনগো এবং নিজের বিশ্বস্ত উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করেন। এই পদে থেকে রঘুনন্দন তাঁর ভাই রামজীবনের নামে অনেক ভূসম্পত্তি ইজারা নেন। মুর্শিদকুলী খান রাজশাহী জেলার দেবী নগরে জমিদারের অবাধ্যতার জন্য তার জমিদারি বাজেয়াপ্ত করেন। রঘুনন্দন দেবীনগর জমিদারি তার ভাইয়ের নামে ইজারা নেন। দেবীনগর জমিদারি হতে নাটোর জমিদারির সূত্রপাত হয়। রাজস্ব প্রদানে গাফিলতির জন্য মুর্শিদকুলী খান বেলগাচি, ভাতুরিয়া, সুলতানপুর, সরূপপুরের জমিদারদের ও অন্যান্য কতিপয় জমিদারদের উৎখাত করেন এবং রঘুনন্দনের ভাই রামজীবনকে এসব জমিদারির অধিকাংশ ইজারা দেন। এছাড়া রঘুনন্দন সীতারামের ভূষণা জমিদারির অনেকাংশ ইজারা দেন। এছাড়া রঘুনন্দন সীতারামের ভূষণা জমিদারির অনেকাংশ লাভ করেন। সীতা রাম দস্যুতা করে ভূষণা অঞ্চলে জমিদারি স্থাপন করেছিলেন। মুর্শিদকুলী খান ১৭১৪ খ্রিস্টাব্দে তাকে পরাজিত ও নিহত করে তার জমিদারির অধিকাংশ রামজীবনকে ইজারা দেন। এভাবে বৃহৎ নাটোর জমিদারির উৎপত্তি হয়। রঘুনন্দনের অনুগত কর্মচারী দয়ারাম রায় ভূষণার কিছু অংশ ইজারা পান এবং রাজশাহী জেলার অন্যতম নাটোরের দিঘাপতিয়া জমিদারি স্থাপন করেন। দয়ারাম রায় সীতারামের রাজকোষ লুণ্ঠন করে ধনী হয়ে উঠেন।
২. ময়মনসিংহ ও মুক্তাগাছা জমিদারি : মুর্শিদকুলী খানের রাজস্ব নীতির ফলে ময়মনসিংহ জেলায় দুটি বড় জমিদারির পত্তন হয়। মুর্শিদকুলী কান ১৭১৮ খ্রিস্টাব্দে শ্রীকৃষ্ণ হালদার (হাওলাদার) নামক তাঁর এক প্রিয় ব্রাহ্মণ কানুনগোকে মোমেন সাহী (ময়মনসিংহ) পরগণার ইজারা দেন। তিনি বনজঙ্গল পরিষ্কার, খাল খনন এবং বিশাল অনুর্বর এলাকা আবাদযোগ্য করে পরগণার উন্নতি সাধন করেন। শ্রীকৃষ্ণের পুত্র চাঁদরায় নবাব আলীবর্দী খানের সময় খালসা বিভাগের প্রধানরূপে নিয়োজিত থাকার সুযোগে তাঁর পিতার জন্য জাফরশাহী পরগণা লাভ করেন। এভাবে বিশাল ময়মনসিংহ জমিদারি গড়ে উঠে।
মুক্তাগাছা জমিদার পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শ্রীকৃষ্ণ আচার্য নামক অন্য একজন বরেন্দ্র ব্রাহ্মণ। পরবর্তীকালে তিনি ময়মনসিংহের মহারাজ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি প্রথমে ছিলেন একজন রাজস্ব আদায়কারী। মুর্শিদকুলী খান তাঁকে আলোপশাহী পরগনার (মুক্তাগাছা) ইজারাদার নিয়োগ করেন। পরবর্তীতে তিনি মুক্তাগাছায় বিশাল জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন ।
রাজপুরের হিন্দু জমিদারগুলো মুর্শিদকুলীর পূর্বে ব্যবস্থার ফলে এরা অনেকগুলো পরগনা ইজারা বৃদ্ধি পায়। এভাবে মুর্শিদকুলী খানের সময় বহু
ইসেবে মুর্শিদকুলী খানের কৃতিত্ব
Murshidkhuli Khan as Land ministrator
লাভের পর মুর্শিদকুলী খানকে ১৭১৩ খ্রিস্টাব্দে । হয় । ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদকুলী বাংলার সুবাদার দার রূপেও মুর্শিদকুলী যথেষ্ট শাসন-দক্ষতার পরিচয় নিরবচ্ছিন্ন শান্তি বিরাজমান ছিল। কৃষি, শিল্প ও ং বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হয় ।
যে, দেশের সমৃদ্ধি বাণিজ্যের উন্নতির উপর নির্ভর র ব্যবসায়ীকে বাণিজ্য প্রসারে উৎসাহ দিতেন। তিনি খাতির করতেন এবং তাদের ব্যবসায়ে পৃষ্ঠপোষকতা কটি সমৃদ্ধ বন্দরে পরিণত হয় এবং সেখানে অনেক স্থাপন করে। এরা আরব, পারস্য ও অন্যান্য দেশের
■ ইউরোপীয় বণিকদের বাণিজ্য বৃদ্ধি পায়। বিশেষত খুব উন্নতি হয়। এরা ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট বাণিজ্য বিষয়ে বিশেষ সুবিধা লাভ করে। মাত্র তিন বিনিময়ে তারা সমগ্র প্রদেশে বিনা শুল্কে বাণিজ্য করার স্থানে এদের বাণিজ্য কুঠি স্থাপিত হয়। ইংরেজদের উন্নতি হয়। পর্তুগীজ, আর্মেনিয়ান, ইরানী ও হিন্দু বেশ স্থাপন করে। এ সময়ে ইংরেজ বণিকরা বাণিজ্যের কদেরকেও হার মানায়। স্পেনের সাথে যুদ্ধের ফলে এবং ন ফরাসি বণিকদের বাণিজ্যের অবনতি হয়েছিল। সম্রাট কদের জন্য বাণিজ্য শুল্ক হ্রাস করে শতকরা ২ টাকা ধার্য াসি বণিকদেরকেও শুল্ক বিষয়ে অনুরূপ সুবিধা দান করেন । দ্য আবার উন্নতির পথে অগ্রসর হয়।
রাজস্ব প্রশাসক হিসেবে বাংলায় সুনাম অর্জন করেছেন। * সলিমুল্লাহ তাঁর খুব প্রশংসা করেছেন। তিনি লিখেছেন যে, দকুলীর ন্যায় এরূপ ধর্মপরায়ণ, বিজ্ঞ, বদান্য, ন্যায়নিষ্ঠ ও
প্রজাদরদী শাসনকর্তা দেখা যায়নি। সকালের নাশতার পর থেকে মধ্যাহ্ন পর্যন্ত তিনি কুরআন শরীফ নকল করতেন। কুরআন শরীফ পাঠ ও ধর্মানুষ্ঠানের জন্য তিনি ২০০০ হাজার ক্বারী ও ধার্মিক লোক নিয়োগ করেন। মুর্শিদকুলী বিলাসিতা পছন্দ করতেন না। তিনি পোশাক-পরিচ্ছদ ও আহারে আড়ম্বরহীন ছিলেন। তিনি খুব শিক্ষিত ছিলেন আলেম ও ধর্মপরায়ণ লোকদেরকে সমাদর করতেন। তার শাসনকালে অতি সাধারণ প্রজাও অত্যাচার হতে নিরাপত্তা ভোগ করতো। মুর্শিদকুলী সপ্তাহে দুইদিন বিচারকা করতেন এবং সকলের প্রতি ন্যায়বিচার করতেন। তিনি অত্যাচারীকে এরূপ কঠের শাস্তি দিতেন যে, কেহ অত্যাচার করতে সাহস করতো না। গোলাম হোসেন সলিম লিখেছেন যে, মুর্শিদকুলীর পারিবারিক জীবন খুব সরল ও শান্তিপূর্ণ ছিল। তাঁর একজন মাত্র স্ত্রী ছিল। বিশ্বস্ত খোজা বা স্ত্রীলোক ছাড়া তাঁর অন্তঃপুরে আর কারো প্রবেশাধিকার ছিল না। চরিত্র ও ধর্মপরায়ণতায় সম্রাট আওরঙ্গজেব মুর্শিদকুলীর আদর্শ ছিল।
সুবাদার মুর্শিদকুলী ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন মৃত্যুবরণ করেন। সুবাদাররূপে তিনি কার্যত স্বাধীনভাবে বাংলা, উড়িষ্যা শাসন করেছেন। সম্রাট আওরঙ্গজেবের বংশধরদের মধ্যে সিংহাসন নিয়ে গৃহবিবাদ, আমীরদের স্বার্থপরতা ইত্যাদি কারণে মুঘল সম্রাজ্যের অবনতি হয় এবং এ সুযোগে প্রাদেশিক শাসনকর্তারা স্বাধীনতা অবলম্বন করেন। দুর্বল সম্রাটের পক্ষে সাম্রাজ্যের ঐক্য বজায় রাখা সম্ভবপর হয়নি। মুর্শিদকুলী নামমাত্র সম্রাটের আনুগত্য মেনে চলতেন এবং তাঁকে বার্ষিক ১ কোটি ৩ লক্ষ টাকা রাজস্ব পাঠাতেন। শাসন ব্যাপারে মুর্শিদকুলী নিজ প্রদেশে সর্বেসের্বা ছিলেন। মুর্শিদকুলীর মৃত্যুর পর তাঁর জামাতা সুজাউদ্দীন খান বাংলার মসনদে আরোহণ করেন। এভাবে বাংলার সুবাদারী বংশগত হয়ে যায় এবং বাংলায় আবার স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয় ।
8
আगाক্ষত প্রশ্নোত্তর (Brief Questions & Answers )
প্রতিষ্ঠাতা কে?
র কর্মজীবন কিভাবে শুরু হয়?
বে।
দকুলী খান কোন কোন পদ অলংকৃত করেন?
হারের দিউয়ান ও কয়েকটি জেলার ফৌজদারের পদ
খানকে বাংলার দিউয়ান নিযুক্ত করা হয়?
বাংলার দিউয়ান নিযুক্ত করেন?
চলব খান' উপাধিতে ভূষিত হন?
বাংলার নাজিম পদে উন্নীত হন?
রাজধানী ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে স্থানান্তর করা হয়?
পর্দাবাদে রাজধানী স্থানান্তর করেন?
বে মৃত্যুবরণ করেন?
জুন ।
কান কোন প্রদেশের সুবাদার ছিলেন?
উড়িষ্যার সুবাদার ছিলেন ।
লী খান নতুন ভূমি রাজস্ব বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন? তাজ
প্রবর্তিত রাজস্ব ব্যবস্থা কী নামে পরিচিত?
৩৫০
১৪
ভূমি ও রাজস্ব প্রশাসন : মুর্শিদকুলী খান
মালজামিনী ব্যবস্থায় জমির রাজস্ব আদায়ের ভার কাদের উপর ন্যস্ত করা হয়।
উত্তর : জমিদারদের ওপর।
১৫
মুর্শিদকুলী খানের সময় জমিদাররা কোন ধর্মাবলম্বী ছিল?
উত্তর : হিন্দু।
১৬
মুর্শিদকুলী খানের সময় বিখ্যাত মহাজন কে ছিলেন?
উত্তর : জগৎশেঠ।
১৭. ঢাকার করতলব খান মসজিদ, বেগম বাজার মসজিদ এবং মুর্শিদাবাদ মসজি
কে নির্মাণ করেন?
উত্তর : মুর্শিদকুলী খান ।
১৮. মুর্শিদকুলী খান কোন মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন? উত্তর : শিয়া মতবাদে।
১৯. মুর্শিদকুলী খানকে কখন বাংলার দেওয়ান নিযুক্ত করা হয়? উত্তর : ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে।
২০. মুর্শিদকুলী খানের ধার্যকৃত বাণিজ্য শুল্ক কী নামে পরিচিত? উত্তর : সায়েব।
২১
মুর্শিদকুলী খানের রাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে কোন কোন গ্রন্থ থেকে জানা যায়? উত্তর : ‘তারিখ-বাঙ্গালা' ও 'আহকাক-ই-আলমনগরী' গ্রন্থ থেকে জানা যায় ।
‘তারিখ-বাঙ্গালা' কে রচনা করেন?
২২
উত্তর : সলিমুল্লাহ।
২৩. ‘আহকাম-ই-আলমনগরী' গ্রন্থের রচয়িতা কে?
উত্তর : এনায়েত উল্লাহ খান ।
২৪
মুর্শিদকুলী খানের রাজস্ব ব্যবস্থার উপর “এনালিসিস অব দ্যা ফিনাল অব বেঙ্গল” কার লেখা?
উত্তর : জেমস গ্রান্টের ।
২৫
'মাল' অর্থ কী?
উত্তর : ভূমি ।
২৬
‘জামিনী' অর্থ কী?
উত্তর : রাজস্ব।
২৭
রাজস্ব আদায় সুনিশ্চিত করার জন্য মুর্শিদকুলী খান জমিদারদের পরিবর্তে কাদের উপর রাজস্ব আদায়ের ভার অর্পণ করেন?
উত্তর : ইজারাদারদের ওপর।
২৮
ইজারাদার পদে মুর্শিদকুলী খান কাদের নিয়োগ করতেন?
উত্তর : হিন্দুদের।
বিধার জন্য মুর্শিদকুলী সমগ্র বাংলাকে কয়টি
পায় বিভক্ত করেন?
ক পৃথক করে কোন প্রদেশের সাথে যুক্ত করেন?
পরিমাপ করেন?
দিতে পারত?
1
নকট থেকে ‘নানকর' আদায় করতেন?
নিকট থেকে ।
কারি কর্মচারী কে নিয়োগ করেন?
চারীদের নাম লিখ ৷
পাটোয়ারী।
ছর সম্রাটকে কত টাকা পাঠাতেন?
• কত টাকা ভূমি রাজস্ব নির্ধারণ করেন?
1
নয় প্রতিষ্ঠিত জমিদারির নাম লিখ । মুক্তগাছা, নদীয়া ও দিনাজপুরের ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলি
(Short Questions )
t)
র্কে একটি টীকা লিখ ।
সম্পর্কে আলোচনা কর।
মি ও রাজস্ব সংস্কারের ফলাফল সংক্ষেপে লিখ ।
মিলে বাংলায় হিন্দু জমিদার শ্রেণির উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে
কর।
লক হিসেবে মুর্শিদকুলী খানের কৃতিত্ব নিরূপণ কর ।
ভূমি ও রাজস্ব প্রশাসন : মুর্শিদকুলী খান
৩৫২
গ-বিভাগ
(C-Part)
রচনামূলক প্রশ্নাবলি
(Broad Questions)
১. ভূমি ও রাজস্ব প্রশাসক মুর্শিদকুলী খানের পরিচিতি সংক্ষেপে লিখ ।
উত্তর : ১৪.১।
2
3
মুর্শিদকুলী খানের ভূমি ও রাজস্ব ব্যবস্থার বর্ণনা দাও ।
উত্তর : ১৪.২।
মুর্শিদকুলী খানের ভূমি ও রাজস্ব সংস্কার (মালজামিনী) এর বিবরণ দাও ।
উত্তর : ১৪.৩।
৪. মুর্শিদকুলী খানের ভূমি ও রাজস্ব সংস্কারের ফলাফল লিখ।
উত্তর : ১৪.৪ ।
৫. “মুর্শিদকুলী খানের ভূমি ও রাজস্ব সংস্কারের ফলে হিন্দু জমিদার শ্রেণির উদ্ভব ও
বিকাশ ঘটে”- আলোচনা কর ।
উত্তর : ১৪.৫।
ভূমি ও রাজস্ব সংস্কারক হিসেবে মুর্শিদকুলী খানের কৃতিত্ব নিরূপণ কর। উত্তর : ১৪.৬।
hod)

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]