মধ্যযুগের ভারতবর্ষে মুঘল যুগ ছিল সাহিত্য ও ইতিহাস চর্চার স্বর্ণযুগ। ইতিহাস চেতনা এ যুগে ব্যাপকতা
লাভ করেছিল। ফলে রচিত হয়েছে মুঘল যুগের ধারাবাহিক ইতিহাস সম্বলিত গ্রন্থরাজি। এসব ঐতিহাসিক
গ্রন্থের বেশিরভাগের রচয়িতা হলেন রাজসভার ঐতিহাসিকগণ।আর সিংহভাগ রচিত হয়েছে ফারসি ভাষায়।
এসব গ্রন্থ রচনায় সরকারি নথিপত্র ও অন্যান্য প্রামাণ্য তথ্য ব্যবহার করার সুযোগও ছিল রাজসভার
ঐতিহাসিকদের। মুঘল যুগে রাজসভার ঐতিহাসিক ছাড়াও হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের ঐতিহাসিক ও
সাহিত্যিকগণ স্বতন্ত্রভাবে ভারতের সাধারণ ইতিহাস ও জীবনচরিত রচনা করেছিলেন। ফারসি ভাষায় রচিত
এসব গ্রন্থের পরিচয় ইংরেজ ঐতিহাসিক স্যার হেনরি ইলিয়ট ও ডাউসন তাঁদের রচিত ঐরংঃড়ৎু ড়ভ ওহফরধ
ধং ঃড়ষফ নু রঃং ঐরংঃড়ৎরধহং গ্রন্থে (আটখন্ড) বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন। মুঘল যুগের গবেষণায় এটি
মৌলিক গ্রন্থ হিসেবে আজও বিবেচিত। মুঘল যুগের ভারতবর্ষের ইতিহাস রচনার উপাদানকে পাঁচ ভাগ
ভাগ করা যায়Ñ (১) সরকারি দলিলপত্র, (২) সমসাময়িক ঐতিহাসিকদের ফারসি ভাষায় রচিত ইতিহাস ও
সাহিত্য, (৩) বিদেশী বণিক ও পর্যটকদের বিবরণী, (৪) মুদ্রা ও শিলালিপি, (৫) স্মৃতিস্তম্ভ ও অট্টালিকা।
(১) সরকারি দলিলপত্র
মুঘল যুগে সম্রাটদের প্রদত্ত ফরমানসমূহ ঐ যুগের ইতিহাস লেখার অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ
উপকরণ। মুঘল সম্রাটদের রাজত্বকালে সরকারি দলিলপত্র সংরক্ষণ করার সুবন্দোবস্ত ছিল। পরবর্তীকালে
যুদ্ধ-বিগ্রহের ফলে উত্তর ভারতের অধিকাংশ শহর ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ায় ঐতিহাসিক তথ্য সম্বলিত ঐসব
দলিলপত্রের অধিকাংশ বিনষ্ট হয়ে গেছে। এ যুগে মূল্যবান গ্রন্থাগার ছিল বলেও প্রমাণ মেলে। শুধুমাত্র
সম্রাট আকবরের গ্রন্থাগারে ২৪,০০০ গ্রন্থ ছিল। যার একটিরও হদিস পাওয়া যায়নি। তা সত্তে¡ও মুঘল
যুগের বেশ কিছু দলিলপত্র, সরকারি ফরমান, সরকারি কাজে ব্যবহৃত কাগজপত্র পাওয়া গেছেÑ সেগুলো
থেকে সে যুগের ঐতিহাসিক তথ্যের সন্ধান পাওয়া সম্ভব হয়েছে। এসব সরকারি দলিলপত্রের মধ্যে
‘ফরমান' (রাজকীয় আদেশ), ‘দস্তুর-উল-আমল' (রাজস্ব-বিধি ও রাজস্ব-পরিসংখ্যান), ‘আকভারাৎ-ই-
দরবার-ই-মুঅল্ল' (দরবারের সংবাদ ও সংবাদ লেখকের প্রতিবেদন), ‘ইন্সা' অথবা ‘মকতুবাত' অথবা
‘রূকাৎ' (চিঠিপত্র সংগ্রহ) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। মধ্যযুগের ভারতবর্ষে মুঘল ইতিহাসে সরকারি আদেশ,
সরকারি কাগজপত্র, দলিল-দস্তাবেজ এবং চিঠিপত্রের সংকলনে আধুনিক ইতিহাস চর্চার মনস্কতা লক্ষণীয়।
উল্লেখিত সরকারি দলিল-দস্তাবেজের কিছু কিছু অনুদিত হয়ে প্রকাশিত হয়েছে। কে.এম. ঝাভেরি সম্পাদিত
‘ওসঢ়বৎরধষ ঋধৎসধহং’ (বোম্বে, ১৯২৮), বি.এল. গোস্বামী ও জে.এস. গ্রোভাল সম্পাদিত ‘ঞযব গঁমযঁষং
ধহফ ঃযব ঔড়মরং ড়ভ ঔধশযনধৎ’, জে.জে.মোদী সম্পাদিত ‘ঞযব চধৎংববং ধঃ ঃযব পড়ঁৎঃ ড়ভ অশনধৎ ধহফ উধংঃঁৎ
গবযবৎলর জধহধ’ এবং বিকানীর ডিরেক্টরেট অব আর্কাইভস কর্তৃক ১৯৬২ খ্রি. প্রকাশিত ‘অ ফরংপৎরঢ়ঃরাব ষরংঃ
ড়ভ ঋধৎসধহং, গধহংযঁৎং ধহফ ঘরংযধহং অফফৎবংংবফ নু ওসঢ়বৎরধষ গঁমযঁষং ঃড় ঃযব চৎরহপবং ড়ভ
জধলধংঃযধহ’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ঐতিহাসিক উপাত্ত হিসেবে মুঘল যুগের ইতিহাস রচনায় এগুলো এক
অমূল্য সম্পদ।
(২) সমসাময়িক ঐতিহাসিকদের ফারসি ভাষায় রচিত ইতিহাস ও সাহিত্য
মুঘল ভারতের ইতিহাসে উৎস হিসেবে ফারসি ভাষায় রচিত ঐতিহাসিক গ্রন্থাবলির গুরুত্ব অপরিসীম। নি¤েœ
এসব গ্রন্থের পরিচিতি সংক্ষেপে তুলে ধরা হলোÑ
তুজুক-ই-বাবুরী ঃ মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মুহাম্মদ বাবুরের অনবদ্য সৃষ্টি তাঁর
আত্মজীবনীমূলক লেখা ‘তুজুক-ই-বাবুরী'। এ গ্রন্থে বাবুরের জীবনের প্রায় সকল ঘটনা এবং ভারতবর্ষ,
আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ার সামাজিক ও রাজনৈতিক চিত্র প্রাঞ্জল ভাষায় তুলে ধরেছেন। তুর্কি ভাষায়
রচিত জনপ্রিয় ও ঐতিহাসিক তথ্য সম্বলিত এই গ্রন্থ সম্পর্কে প্রখ্যাত ঐতিহাসিক স্ট্যানলি লেনপুল মন্তব্য
করেছেন, “বাবুরের প্রতিষ্ঠিত রাজবংশ বিলুপ্ত হয়েছে, কিন্তু তাঁর লিখিত জীবন স্মৃতি আজও অমর ও অক্ষয়
হয়ে আছে।” এই গ্রন্থে বাবুরের বৌদ্ধিক সততা, তীক্ষè পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা, সহজাত দক্ষতা এবং উচ্চমানের
রুচির পরিচয় মেলে। গ্রন্থটি বাবুরের রাজত্বকাল থেকে হুমায়ুনের প্রথম জীবনের পরিচয় সম্পর্কিত একটি
ঐতিহাসিক দলিল। উল্লেখ্য, মুঘল যুগে গ্রন্থটি চারবার ফারসিতে অনুদিত হয়েছিল।
তারিখ-ই-রশিদী ঃ গ্রন্থটি রচনা করেন বাবুরের জ্ঞাতি ভাই মীর্জা মুহাম্মদ হায়দার দুখলাত (১৪৯৯-
১৫৫১খ্রি.)। ১৫৫১ খ্রি. রচিত এই গ্রন্থে বাবুর ও হুমায়ুনের রাজত্বকালের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক তথ্য
পাওয়া যায়। লেখক নিজে বাবুরের সংগ্রাম, হুমায়ুনের পলায়ন, কাশ্মিরের তৎকালীন জটিল ঘটনাবলির
একজন প্রত্যক্ষদর্শী। একমাত্র তিনিই প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে কনৌজ যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেছেন
তাঁর গ্রন্থে, যা অন্য কোন গ্রন্থে পাওয়া যায় না। প্রকৃতপক্ষে ‘তারিখ-ই-রশিদী' গ্রন্থটি হলো ‘তুজুক-ইবাবুরী' গ্রন্থের একমাত্র পরিপূরক। ঐতিহাসিকগণ গ্রন্থটিকে ‘ধ ভরৎংঃ ৎধঃব ধঁঃযড়ৎরঃু’ হিসেবে স্থান
দিয়েছেন। ১৮৯৫ খ্রি. এন. ইলিয়াস এবং ই. ডেনিসন রস গ্রন্থটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন।
হবীব-উস-সিয়র ও হুমায়ুননামা ঃ ‘তারিখ-ই-রশিদী'র পর মুঘল যুগের ঐতিহাসিক তথ্য হিসেবে খবান্দ
আমীর (১৪৭৫-১৫৩৪) রচিত ‘হবীব-উস-সিয়র' এবং ‘হুমায়ুননামা'র স্থান। ‘হবীব-উস-সিয়র' গ্রন্থে
বাবুরের রাজত্বকাল এবং হুমায়ুনের প্রথম তিন বৎসরের শাসনকালের পরিচয় পাওয়া যায়। হুমায়ুন নামা
হলো ‘হবীব-উস-সিয়র' এর শেষ অংশের বিস্তৃতি মাত্র। এই গ্রন্থে হুমায়ুনের রাজত্বকালের প্রথম তিন
বৎসরের আনুপূর্বিক বিস্তৃত বিবরণ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এই গ্রন্থে হুমায়ুনের প্রারম্ভিক সমস্যা এবং তাঁর
বিভিন্ন পরিকল্পনার সম্যক পরিচয় পাওয়া যায়। এই কারণে গ্রন্থটির তথ্যাবলী প্রথম শ্রেণীর ঐতিহাসিক
তথ্য হিসেবে পরিগণিত।
আহসন-উস-সিয়র ঃ মীর্জা বার্খওয়াদার তুর্কমান লিখিত আহসন-উস-সিয়র নামক গ্রন্থটি একটি বিখ্যাত
গ্রন্থ। এতে বাবুরের সঙ্গে পারস্যের শাহ ইসমাইলের রাজনৈতিক সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়েছে।
সাইবানীনামা ঃ মুহাম্মদ সালিহ তুর্কি ভাষায় গ্রন্থটি রচনা করেন। উক্ত গ্রন্থে বাবুরের সঙ্গে উজবেক শাসকের
রাজনৈতিক সম্পর্কের বিবরণ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
তারিখ-ই-আলমারাই-আব্বাসী ঃ ইসিকন্দার মুনশী ফারসি ভাষায় গ্রন্থটি রচনা করেন। এতে ষোড়শ শতকে
ভারতের সঙ্গে পারস্যের রাজনৈতিক সম্পর্কের বিবরণ পাওয়া যায়। গ্রন্থটি একটি মূল্যবান ঐতিহাসিক
উপাদান হিসেবে বিবেচিত।
হুমায়ুননামা ঃ ১৫৮৭ খ্রি. আকবরের নির্দেশে বাবুর কন্যা গুলবদন বেগম (১৫২৩Ñ১৬০৩) গ্রন্থটি রচনা
করেন। বাবুর ও হুমায়ুনের ব্যক্তিগত পারিবারিক জীবন এবং মুঘল হারেমের ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে এ
গ্রন্থটি প্রথম শ্রেণীর ঐতিহাসিক তথ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। বাবুর সম্পর্কিত বিবরণ সংক্ষিপ্ত হলেও
হুমায়ুনের সমগ্র জীবনই বিস্তৃতভাবে এতে স্থান পেয়েছে। এ গ্রন্থের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দিক হলো, এতে
সে সময়ের সামাজিক রীতিনীতি এবং জনজীবনের প্রতিচ্ছবি অংকিত হয়েছে।
তেজকিরাৎ-উল-ওয়াকিয়াৎ ঃ হুমায়ুনের রাজত্বকালের বিবরণ সম্বলিত আর একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ হলো
জৌহর আফতাবচী লিখিত ‘তেজকিরাৎ-উল-ওয়াকিয়াৎ'। সম্রাট আকবরের নির্দেশে ১৫৮৭ খ্রি. গ্রন্থটি
রচিত হয়। হুমায়ুনের অনুচর এবং প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে লেখক হুমায়ুনের ব্যক্তিগত জীবনের আনুপূর্বিক
বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন এ গ্রন্থে। তবে লেখক যেহেতু ঐতিহাসিক ছিলেন না তাই সাল-তারিখের
অপ্রতুলতা এবং স্মৃতি থেকে লেখা বলে ত্রুটি ও অসঙ্গতি লক্ষণীয়। তবুও প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে হুমায়ুনের
রাজত্বকাল এবং আকবরের বাল্যজীবন সম্পর্কে রচিত এই গ্রন্থটি এক নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক দলিল।
তারিখ-ই-আকবরশাহী ঃ ১৫৮০ খ্রি. রচিত এ গ্রন্থটি হলো আকবর সম্পর্কিত প্রথম গ্রন্থ। আকবরের রাজস্ব
বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মচারি হাজি মুহাম্মদ আরিফ কান্দাহারী এটি রচনা করেছিলেন। আকবরের
রাজত্বকালের নির্ভরযোগ্য বিবরণ সম্বলিত এ গ্রন্থে লেখক আকবরের ব্যক্তিত্ব ও শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে
সুচিন্তিত মতামত দিয়েছেন। বাদায়ুনীর মতো তিনি মৌলবাদী ছিলেন তথাপি তিনি আকবরের ধর্মনীতি
সম্পর্কে বিশেষ কিছু লিখেন নি।
আকবরনামা ঃ মুঘল যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ লেখক আবুল ফজল সম্রাট আকবরের নির্দেশে তিন খন্ডে ‘আকবরনামা'
গ্রন্থটি রচনা করেন। আকবরের গুণগ্রাহী হওয়ার সুবাদে উক্ত গ্রন্থে তিনি আকবরকে ঝঁঢ়বৎসধহ হিসেবে
চিত্রিত করেছেন। এ কারণে গ্রন্থটির বৈজ্ঞানিক দিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গ্রন্থটির প্রথম খন্ডে আবুল ফজল
তৈমুরের সময় থেকে হুমায়ুনের সময় পর্যন্ত মুঘল রাজপরিবারের সাধারণ ইতিহাস বর্ণনা করেছেন। দ্বিতীয়
ও তৃতীয় খন্ডে বর্ণনা করেছেন আকবরের রাজত্বকালের ঘটনাবলি। তিনি ঘটনা বর্ণনার সঙ্গে সঙ্গে
ঘটনাবলির পিছনের উদ্দেশ্যও ব্যাখ্যা করেছেন।
আইন-ই-আকবরী ঃ আবুল ফজলের দ্বিতীয় সুবিখ্যাত গ্রন্থ হলো ‘আইন-ই-আকবরী'। এটিও তিন খন্ডে
রচিত। এ গ্রন্থে আকবরের শাসনামলের ভারতবর্ষের একটি পরিসংখ্যানগত বিবরণ পাওয়া যায়। গ্রন্থটি
বিস্তারিত তথ্যবহুল এবং জ্ঞানকোষ বিশেষ। এতে বিভিন্ন বৃত্তিধারী সমাজের প্রতিটি মানুষের পরিচয় তুলে
ধরেছেন লেখক। তবে আকবরের শাসনকার্য বর্ণনায় আকবরকে গৌরবের সকল অধিকার দিতে গিয়ে
পূর্ববর্তী সকল মুঘল সম্রাটের অবদানকে ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করা হয়েছেÑ যা পক্ষপাতমূলক। তথাপি
বøকম্যান জোর দিয়ে বলেছেন, ‘আইন-ই-আকবরী হলো ফারসি ভাষায় রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে অদ্বিতীয়
গ্রন্থ।'
রূকাৎ-ই-আবুল ফজল ঃ আবুল ফজলের তৃতীয় গ্রন্থ হলো চিঠিপত্র সংকলন বিষয়ক গ্রন্থ ‘রূকাৎ-ই-আবুল
ফজল'। এই গ্রন্থে লেখক আকবর, মুরাদ, দানিয়েল, মরিয়াম, মাকানি, সেলিম, আকবরের বেগম ও
কন্যাগণ সহ লেখকের পিতা-মাতা-ভ্রাতা এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের লেখা চিঠি সংকলিত করেছেন।
এসব ঐতিহাসিক তথ্য সম্বলিত গুরুত্বপূর্ণ চিঠিপত্র সংকলন করে আবুল ফজল আকবরের শাসনকাল
সম্পর্কে নতুন আলোকসম্পাতের সুযোগ করে দিয়েছেন।
ইন্সা-ই-আবুল ফজল ঃ আবুল ফজল রচিত এই গ্রন্থের অপর নাম হলো ‘মুক্তুবাৎ-ই-আল্লামী'। এটিও
আকবরের শাসনামলে বিভিন্ন ব্যক্তির লেখা চিঠিপত্র ও সরকারি আদেশ-নির্দেশাদির সংকলন।
তবকাৎ-ই-আকবরী ঃ তিনখন্ডে রচিত এই গ্রন্থটির লেখক হলেন বাবুর ও হুমায়ুনের শাসনামলের উচ্চ
রাজকর্মচারী খাজা নিজামউদ্দিন আহম্মদ। গ্রন্থটির প্রথম খন্ডে সুলতানি শাসনামল, দ্বিতীয় খন্ডে মুঘল সম্রাট
বাবুর, হুমায়ুন এবং আকবরের শাসনামলের ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। বিশেষত আকবরের শাসনকালে
গুজরাটের ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে গ্রন্থটি অতীব প্রয়োজনীয়।
মুন্তখব-উৎ-তাওয়ারিক বা তারিখ-ই-বাদায়ুনী ঃ মওলানা আবদুল কাদির বাদায়ুনী তিন খন্ডে এই গ্রন্থটি
রচনা করেন। এ গ্রন্থের প্রথম খন্ডে বাবুর ও হুমায়ুনের রাজত্বকালের বিবরণ, দ্বিতীয় খন্ডে আকবরের
রাজত্বকালের আনুপূর্বিক বিবরণ এবং তৃতীয় খন্ডে মুসলিম সাধক ও পন্ডিতদের বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন।
গ্রন্থটির সাল-তারিখ ত্রুটিপূর্ণ এবং ঘটনার বিবরণও অসংঘবদ্ধ। মৌলবাদী এই লেখক ছিলেন আকবরের
কট্টর সমালোচক। তাই আবুল ফজল ও মওলানা বাদায়ুনীর লেখা পাশাপাশি খুটিয়ে পড়লে ঐতিহাসিক
সত্যটি উদ্ঘাটন করতে অসুবিধা হয় না।
তুজুক-ই-জাহাঙ্গীরী ঃ সম্রাট জাহাঙ্গীরের নিজের লেখা ঐতিহাসিক তথ্যসম্বলিত আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ।
এই গ্রন্থে জাহাঙ্গীরের সিংহাসন আরোহণকাল থেকে তাঁর বার বৎসরের রাজত্বকালের ঘটনাবলি বিবৃত
হয়েছে। জাহাঙ্গীরের অসুস্থতার কারণে তাঁর রাজত্বের ১৭তম বৎসরে (১৬২২ খ্রি.) লেখায় ছেদ পড়ে। সেই
অংশটি (১৬২২Ñ১৬২৪ খ্রিস্টাব্দের প্রারম্ভ পর্যন্ত) তাঁর প্রত্যক্ষ তত্ত¡াবধানে মুতামিদ খান বক্শী রচনা
করেন। গ্রন্থটিতে জাহাঙ্গীরের ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র, তাঁর শাসনকালের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি এবং সে যুগের
সামরিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবনের পরিচয় পাওয়া যায়। তবে পিতার বিরুদ্ধে
জাহাঙ্গীরের বিদ্রোহ, খসরুর মৃত্যু এবং নুরজাহানের সঙ্গে তাঁর বিবাহÑ এসবের স্থান দেননি তাঁর এই গ্রন্থে।
পাদশাহনামা ঃ ১৬৩৬ খ্রি. আমীন কজ্বিনী সম্রাট শাহজাহানের নির্দেশে গ্রন্থটি রচনা করেন। ‘পাদশাহনামা'য়
শাহজাহানের শাসনকালের দশ বছরের ঘটনাবলি তুলে ধরা হয়েছে। একই নামে (পাদশানামা)
শাহজাহানের জীবন ও কার্যাবলি এবং প্রথম বিশ বছরের তথ্যবহুল ঘটনাবলি সম্বলিত গ্রন্থ রচনা করেছেন
বিখ্যাত ঐতিহাসিক আবদুল হামিদ লাহোরি। পরে তাঁর ছাত্র মুহাম্মদ ওয়ারিস শাহজাহানের রাজত্বকালের
পূর্ণ ইতিহাস রচনা করেন। তিনি তাঁর গ্রন্থ ‘পাদশানামা'য় শাহজাহানের শাসনকালের প্রথম কুড়ি বৎসরের
ইতিহাস তাঁর শিক্ষক আবদুল হামিদকে অনুসরণ করে লেখেন। শেষ দশ বছরের ইতিহাস তিনি নিজে
স্বাধীনভাবে অপর এক খন্ডে সমাপ্ত করেন।
শাহজাহাননামা ঃ এনায়েত খাঁ রচিত ‘শাহজাহাননামা' হলো শাহজাহানের শাসনকালের একটি গুরুত্বপূর্ণ
গ্রন্থ। আওরঙ্গজেবের ক্ষমতা দখল এবং আগ্রা দুর্গ অধিকারের ঘটনাবলি এই গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া
মুহাম্মদ শালিহ কম্বু লিখিত ‘অমল-ই-শালিহ' এবং মুহাম্মদ সাদিক খানের রচিত ‘শাহজাহাননামা' গ্রন্থ দু'টি
শাহজাহানের রাজত্বকালের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক গ্রন্থ।
আলমগীরনামা ঃ মীর্জা মুহাম্মদ কাজিম রচিত ‘আলমগীরনামা' গ্রন্থটিতে আওরঙ্গজেবের রাজত্বকালের প্রথম
দশ বৎসরের নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক বিবরণ বিবৃত হয়েছে। আধুনিক ঐতিহাসিকগণ গ্রন্থটিকে
আওরঙ্গজেবের শাসনকালের ‘ভরৎংঃ ৎধঃব ধঁঃযড়ৎরঃু’ হিসেবে বিবেচনা করেন।
মসির-ই-আলমগীরী ঃ এই গ্রন্থটি মুহাম্মদ সাকি মুস্তাইদ খান রচনা করেন। সরকারি তথ্যের ওপর ভিত্তি
করে লেখা এই গ্রন্থে আওরঙ্গজেবের রাজত্বকালের সম্পূর্ণ চিত্র পাওয়া যায়।
এছাড়া আকীল খান রচিত ‘জাফরনামা-ই-আলমগীরী' মুহাম্মদ হাসিম কাফী খান রচিত ‘মন্তখাব-উল-গুলাব'
এবং আওরঙ্গজেবের নিজের লেখা ‘রূকাইৎ-ই-আলমগীরী' আওরঙ্গজেবের রাজত্বকালের ঐতিহাসিক তথ্য
সম্বলিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।
(৩) বিদেশী বণিক ও পর্যটকদের বিবরণী
মুঘল যুগে ভ্রমণ পিপাসু ইউরোপীয়রা ব্যাপকভাবে ভারতবর্ষে এসেছিলেন। কেউ এসেছেন ব্যবসা করতে,
কেউবা এসেছিলেন ভারত ভ্রমণে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই রেখে গেছেন তাঁদের ভারত ভ্রমণের লিখিত
বিবরণ। এসব বিবরণে মুঘল যুগের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক অবস্থার এক তথ্যবহুল চিত্র
পাওয়া যায়। স্বভাবতই বিদেশী বণিক ও পর্যটকদের এসব লিখিত বিবরণ সে যুগের ঐতিহাসিক দলিল।
এঁরা যা দেখেছেন বা শুনেছেন তা লিখেছেন। ফলে এসব বিবরণীতে বহু ত্রুটিও লক্ষ্য করা যায়। তথাপি
এসবের ঐতিহাসিক মূল্য অপরিসীম।
রাল্ফ ফিচ্ ঃ সম্রাট আকবরের রাজত্বকালের মাঝামাঝি সময়কালে (১৫৮৩Ñ১৫৯১) রাল্ফ ফিচ্ (ইংরেজ)
ভারতবর্ষে এসেছিলেন। তিনি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে বেড়ান। তাঁর ভ্রমণ বৃত্তান্তে ভারতের বিভিন্ন
খাদ্যশস্য, সুতীবস্ত্র এবং জনজীবনের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর প্রাচুর্যের কথা তিনি তুলে ধরেছেন। তিনি দিউ,
আগ্রা, বাংলাদেশ, পেগু, দক্ষিণ-ভারত ও সিংহলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ভ্রমণ করেছেন। আর সে সমস্ত অঞ্চলের
মানুষের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় জীবনের প্রতিচ্ছবি তাঁর ভ্রমণ বৃত্তান্তে লিপিবদ্ধ করেছেন।
উইলিয়াম হকিন্স ঃ সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে বহু ইউরোপীয় ভারতবর্ষে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে
উইলিয়াম হকিন্স উল্লেখযোগ্য। তিনি ১৬০৮ খ্রি. ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম জেমসের পত্র নিয়ে রাজদরবারে
উপস্থিত হলে জাহাঙ্গীর তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করেন। এক সময়ে তিনি জাহাঙ্গীরের বন্ধুতে পরিণত
হন। তিনি ১৬১১ খ্রি. পর্যন্ত ভারতবর্ষে অবস্থান করেছিলেন। তাঁর ভ্রমণ বৃত্তান্তে তিনি জাহাঙ্গীরের ব্যক্তিগত
জীবন সম্পর্কে এক জীবন্ত চিত্র তুলে ধরেন।
এডওয়ার্ড ঃ ১৬১৫ খ্রি. রাজা প্রথম জেমসের চিঠি নিয়ে এডওয়ার্ড জাহাঙ্গীরের দরবারে এসেছিলেন। তিনি
তাঁর ভ্রমণ বিবরণীতে জাহাঙ্গীরের রাজদরবারের যেসব ঘটনাবলি লিপিবদ্ধ করেছেন তাতে সেই সময়ের
ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।
স্যার টমাস রো ঃ তিনিও রাজা প্রথম জেমসের দূত হিসেবে জাহাঙ্গীরের দরবারে আগমন করেন। তিনি
মুঘল রাজদরবারের ঐশ্বর্য দেখে অভিভ‚ত হন। তাঁর ভ্রমণ বৃত্তান্তে মুঘল রাজদরবারের দলীয় ষড়যন্ত্র ও
বিশ্বাসঘাতকতার নির্ভরযোগ্য ও তথ্যবহুল বিবরণী পাওয়া যায়।
পিয়েত্রে দেল্লা ভালে ঃ - জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে ১৬২৩ খ্রি. ইতালীয় পর্যটক পিয়েত্রে দেল্লা ভালে সুরাটে -
আগমন করেন। তিনি তাঁর ভ্রমণ বিবরণীতে ধর্মীয় সহনশীলতার সঙ্গে গুজরাটে নিষ্ঠুর সতীদাহ প্রথার
অবনয়নের কথা তুলে ধরেছেন।
এফ পেলসারেত ঃ জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে আগত ডাচ্ পরিব্রাজক এফ পেলসারেত কর্তৃক রচিত
‘জাহাঙ্গীরের ভারত' মুঘল যুগের ইতিহাস রচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ।
ডে-লায়েট ঃ জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালের অন্য একজন গুরুত্বপূর্ণ পরিভ্রাজক হলেন ডে-লায়েট। তিনি তাঁর
ভ্রমণ বৃত্তান্তে জাহাঙ্গীরের ব্যক্তিগত জীবন, তাঁর রাজত্বকালের বিশদ বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন। তাঁর ভ্রমণ
বৃত্তান্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে নুরজাহানের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিবাহের কথা তিনি বর্ণনা
করেছেনÑ যা জাহাঙ্গীর তাঁর আত্মজীবনীতে উল্লেখ করেন নি।
ব্রুটন ও কার্টরাইট ঃ শাহজাহানের রাজত্বকালে যে কয়জন পরিব্রাজক ভারতে এসেছিলেন তাঁদের মধ্যে ব্রুটন
ও কার্টরাইট নামক দু'জন ইউরোপীয় ব্যবসায়ীর নাম পাওয়া যায়। তাঁরা ১৬৩২ খ্রি. বঙ্গদেশ ও উড়িষ্যা
ভ্রমণ করেছিলেন। তাঁদের ভ্রমণ বৃত্তান্তে বঙ্গদেশ ও উড়িষ্যার তৎকালীন অবস্থা সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে।
ট্যাভার্নিয়ে ঃ ফরাসি পর্যটক ট্যাভার্নিয়ের ভ্রমণ বৃত্তান্তে মুঘল যুগের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি রয়েছে। তিনি
১৬৪০Ñ১৬৬৭ খ্রি. পর্যন্ত ভারতবর্ষে ছিলেন। তাঁর ভ্রমণ বৃত্তান্ত মুঘল ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
বার্নিয়ে ঃ ফরাসি চিকিৎসক বার্নিয়ে ভারতবর্ষে ১৫৫৬Ñ১৫৬৭ খ্রি. পর্যন্ত ছিলেন। তাঁর ভ্রমণ বৃত্তান্তে মুঘল
প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। তাঁর বিস্তৃত ও মূল্যবান ভ্রমণ বৃত্তান্তে উল্লেখযোগ্য সংযোজন হলো
ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী মঁসিয়ে কলেবরকে লেখা একটি দীর্ঘ চিঠি। এ চিঠিতে তিনি তৎকালীন ভারতের সামাজিক
ও অর্থনৈতিক অবস্থার একটি নিখুঁত ছবি চিত্রিত করেছেন।
মানুচি ঃ ট্যাভার্নিয়ে ও বার্নিয়ে ছাড়াও আওরঙ্গজেবের শাসনকালে যে গুরুত্বপূর্ণ ইউরোপীয় পরিব্রাজক
ভারতবর্ষে আসেন তিনি হলেন ইতালীয় পরিব্রাজক মানুচি। মানুচি ১৬৫৩Ñ১৭০৮ খ্রি. পর্যন্ত দীর্ঘ সময়
ভারতবর্ষে অবস্থান করেন। তিনি তাঁর ভ্রমণ বৃত্তান্ত ‘ঝঃড়ৎরবং ফড় সড়মড়ৎ’ নামক গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন।
(৪) মুদ্রা ও শিলালিপি
মধ্যযুগের ভারতবর্ষের ইতিহাস রচনায় মুদ্রা ও শিলালিপি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। মুঘল আমলের
মুদ্রাগুলো একদিকে যেমন সে যুগের মুদ্রানীতির পরিচয় বহন করে, অন্যদিকে ধাতুশিল্পেরও পরিচয় পাওয়া
যায়। যেকোন যুগের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা জানতে মুদ্রা সহায়ক উপাদান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ
ভ‚মিকা রাখতে পারে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলির তারিখ নির্ধারণে মুদ্রা অন্যতম উৎস হিসেবে
বিবেচিত। মুঘল যুগে পাথর অথবা তাম্রপাত্রের ওপর বিভিন্ন অনুশাসন লিপি লেখার প্রচলন ছিল। মুঘল
যুগের ঐতিহাসিক ঘটনাবলির তারিখ নির্ধারণে অন্যতম উপাদান হিসেবে এসব অনুশাসন লিপি ব্যবহার
করা যায়।
(৫) স্মৃতিস্তম্ভ ও অট্টালিকা
মুঘল যুগের স্থাপত্য শিল্পের প্রচুর নিদর্শন বর্তমানেও বিদ্যমান। এসব স্মৃতিস্তম্ভ ও অট্টালিকা সেই যুগের
অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার আলোকপাত করতে উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
মুঘল সম্রাটগণ কর্তৃক নির্মিত স্থাপত্যসমূহে তাঁদের উন্নত রুচিবোধ লক্ষ্য করা যায়।
সারসংক্ষেপ
বিভিন্ন প্রকার উপাদান সন্নিবেশিত করার মাধ্যমে ইতিহাস লিখিত হয়। মুঘল যুগের ইতিহাস লিখনে
পাঁচটি ধারার উপাদান পরিলক্ষিত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ঃ (১) সরকারি দলিলপত্র ও
(২) সমসাময়িক ঐতিহাসিকদের ফারসি ভাষায় রচিত ইতিহাস ও সাহিত্য, (৩) বিদেশী বণিক ও
পর্যটকদের বিবরণী। চতুর্থ ও পঞ্চম ধারার উপাদান হচ্ছে যথাক্রমে মুদ্রা ও শিলালিপি এবং মুঘল যুগে
নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ ও অট্টালিকা। এসব উপাদানের ওপর ভিত্তি করে ভারতে মুঘল যুগের ইতিহাস রচিত
হয়েছে।
পাঠোত্তর মূল্যায়নÑ
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ঃ
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন।
১। আকবরের লাইব্রেরিতে গ্রন্থসংখ্যা কত ছিল?
(ক) ২৫,০০০ (খ) ২৩,০০০
(গ) ২৪,০০০ (ঘ) ২৮,০০০।
২। ‘তুজুক-ই-বাবুরী'র লেখক কে?
(ক) হুমায়ুন (খ) শেরশাহ
(গ) বাবুর (ঘ) শাহজাহান।
৩। তারিখ-ই-রশিদী' কে রচনা করেন?
(ক) মীর্জা মুহাম্মদ কাজিম (খ) আবুল ফজল
(গ) মীর্জা মুহাম্মদ হায়দার দুখলাত (ঘ) মীর্জা বার্খওয়াদার তুর্কমান।
৪। আকবরের আমলে কোন ইউরোপীয় পর্যটক ভারতে এসেছিলেন?
(ক) উইলিয়াম হকিন্স (খ) স্যার টমাস রো
(গ) রাল্ফ ফিচ্ (ঘ) এডওয়ার্ড।
৫। ফরাসি পর্যটক বার্নিয়ে কত সময় ভারতে ছিলেন?
(ক) ১৫৫৬-১৫৬৭ খ্রি. পর্যন্ত (খ) ১৫৬৬Ñ১৫৬৭ খ্রি. পর্যন্ত
(গ) ১৫৬৭Ñ১৫৬৮ খ্রি. পর্যন্ত (ঘ) ১৫৬৮Ñ১৫৬৯ খ্রি. পর্যন্ত।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ঃ
১। তুজুক-ই-বাবুরী গ্রন্থের বিষয়বস্তু উল্লেখ করুন।
২। তারিখ-ই-রশিদীর ওপর একটি টীকা লিখুন।
৩। আবুল ফজল লিখিত দু'টি গ্রন্থের বিবরণ দিন।
৪। জাহাঙ্গীরের দরবারে আগত দু'জন ইউরোপীয় দূত সম্পর্কে যা জানেন লিখুন।
৫। মধ্যযুগের ভারত ইতিহাস রচনায় মুদ্রা ও শিলালিপির ভ‚মিকা নিরূপন করুন।
রচনামূলক প্রশ্ন ঃ
১। মুঘল যুগের ইতিহাস রচনায় সরকারি দলিলপত্র ও সমকালীন ঐতিহাসিকদের রচিত গ্রন্থের ভ‚মিকা
পর্যালোচনা করুন।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত