পশ্চিম এশিয়া তথা মধ্যপ্রাচ্যের সীমা নির্ধারণ নিয়ে যেহেতু মতভেদ রয়েছে- সেহেতু এ অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত দেশসমূহের নাম উল্লেখের ক্ষেত্রেও কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়। সাধারণভাবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো হলো-বাহরাইন, মিশর, ইরান, ইরাক, ইসরাইল, জর্ডান, কুয়েত, ওমান, ফিলিস্তিনি, কাতার, সৌদি আরব, সিরিয়া, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন ।
কিন্তু ঐতিহাসিকভাবে কোন কোন দেশকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্তর্ভুক্ত করা যায়? সরকারি কাগজপত্রে যুক্তরাজ্য সরকার ২১টি দেশকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করেছেন। এ দেশগুলো হলো-মাল্টা, ত্রিপলীতানিয়া, সিরেনাইকা, মিশর, সাইপ্রাস, লেবানন, সিরিয়া, ইসরাইল, জর্ডান, ইরাক, ইরান, পারস্য উপসাগরের শেখ-শাসিত অঞ্চলসমূহ, সউদী আরব, আশ্রিত এডেন, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, বৃটিশ, ফরাসীও ইটালীয় সোমালিল্যাণ্ড এবং সুদান। এ বিভাগ এখন অচল । মাল্টাকে এখন কেউ মধ্য প্রাচ্যের অংশ বলে মনে করে না। ত্রিপালীয়তানিয়া ও সিরেনাইকা দুটি পৃথক দেশ নয় স্বাধীন সার্বভৌম লিবিয়ার অংশ। সাইপ্রাস দ্বীপ দক্ষিণ তুরস্ক ও সিরিয়ার উপকূল হতে প্রায় ৪০ মাইল দূরে ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত হলেও একে মধ্যপ্রাচ্যের অংশ মনে করা যুক্তিযুক্ত নয়। যদিও এ দ্বীপটি তুরস্ক ও গ্রীসের মধ্যে সংঘর্ষের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি দ্বারা এটা মোটেও প্রভাবিত নয়। আবার পারস্য উপসাগরে শেখ শাসিত অঞ্চলসমূহ
একটি রাষ্ট্র নয়। কুয়েত একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। তদুপরি রয়েছে অধুনা প্রতিষ্ঠিত সংযুক্ত আরব-আমিরাত । ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া ও তিনটি সোমালিল্যাণ্ডকে কোন দিক হতেই মধ্যপ্রাচ্যের অংশ বলে মনে করা যায় না ।
পশ্চিমা এশিয়া তথা মধ্য প্রাচ্যের অন্তর্ভুক্ত দেশসমূহের নাম উল্লেখের ক্ষেত্রেও কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়। তবে এ সমস্যাকে অতিক্রমের একটি উপায় হচ্ছে ঐতিহাসিকভাবে সব সময় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে এমন দেশগুলোকে মধ্যপ্রাচ্যের মূল দেশ হিসেবে ধরে নিয়ে পরবর্তীতে প্রান্তিক দেশগুলোকে বিবেচনায় আনা। অর্থাৎ মধ্যপ্রাচ্যের এমন কিছু দেশ রয়েছে যে দেশগুলোকে মধ্য প্রাচ্যের মূল দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মিশর, ইসরাইল, ফারটাইল ক্রিসেন্টভুক্ত আরব দেশসমূহ (সউদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও ইয়েমেন) এবং তুরস্ককে নিয়ে গঠিত মধ্যে প্রাচ্যের মূল অংশ। সুতরাং, এসব দেশের মধ্য প্রাচ্যে অন্তর্ভুক্ত নিয়ে কোন বিতর্ক নেই । বিতর্ক রয়েছে শুধু প্রান্তিক দেশগুলো নিয়ে ।
তাই মধ্যপ্রাচ্যের একটি গ্রহণযোগ্য সীমানা পেতে হলে মূল দেশগুলোর সাথে প্রান্তিক দেশগুলোর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। এ মানদণ্ডে উত্তীর্ণ প্রান্তি দেশগুলোকে মূল দেশগুলোর সাথে যুক্ত করে মধ্য প্রাচ্যের একটি গ্রহণযোগ্য সীমানা পাওয়া সম্ভব, প্রান্তিক দেশগুলোর মধ্যে প্রথমেই আসে ইরানের কথা। ইরানকে কখনো কখনো পাকিস্তান ও আফগানিস্থানের সাথে দক্ষিণ এশিয়ার বর্ধিতাংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ দৃষ্টিকোণ থেকে অনেক ঐতিহাসিক ইরানকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করেন না। কিন্তু পারস্য উপসাগরের তীরে অবস্থিত হওয়ায় এতদঞ্চলের অন্যতম তেল উৎপাদনকারী দেশ ইরানকে মধ্য প্রাচ্যের অন্তর্ভুক্ত মনে করাই যুক্তিসঙ্গত। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশ আফগানিস্তান ও পাকিস্থানের মধ্য প্রাচ্যের মূল দেশগুলোর সাথেই ইরানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক অনেক বেশী ঘনিষ্ঠ । তাই প্রান্তিক ইরান মধ্যপ্রাচ্য তথা পশ্চিম এশিয় দেশ হওয়ার দাবী রাখে ।
মৌরিতানিয়া, সোমালিয়া, লিবিয়া, সুদান, জিবুতি আরব লীগভুক্ত দেশ হলেও মধ্যপ্রাচ্যভুক্ত মূল দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতার বিচারে এদেশগুলোকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ হিসেবে বিবেচনা করা যায় না। তবে কোনো কোনো ঐতিহাসিক মরক্কো, আলজেরিয়া ও তিউনেসিয়াকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষপাতী। তাদের দৃষ্টিতে আফ্রিকার অন্যান্য দেশের তুলনায় মধ্যপ্রাচ্যের সাথে এদেশগুলোর সম্পর্ক অপেক্ষাকৃত নিবিড়। কিন্তু তাদের এ মত সর্বজনগ্রাহ্য নয়। তবে 'পশ্চিম এশিয়া' অঞ্চলটিকে সুনির্দিষ্ট করতে হলে মধ্যপ্রাচ্যভুক্ত দেশগুলো থেকে ইউরেশিয়ার দেশ তুরস্ক এবং আফ্রিকার দেশ মিশরকে বাদ দিতে হবে বলে কোনো কোনো ঐতিহাসিক মন্তব্য করেছেন।
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত