সাইকস-পিকো চুক্তি
১৯১৫ সালের ১৮ মার্চ ব্রিটেন ও ফ্রান্স কন্সটান্টিনোপল চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের পর রাশিয়াকে তুর্কি সাম্রাজ্যের রাজধানী কন্সটান্টিনোপল ও দার্দানেলিস প্রদানের অঙ্গীকার করে। পরবর্তী মাসের ২৬ তারিখে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও রাশিয়া মিত্রপক্ষের হয়ে যুদ্ধে যোগাদানের পুরস্কার হিসেবে লণ্ডন চুক্তির মাধ্যমে ইতালিকে তুর্কি সাম্রাজ্যভুক্ত লিবিয়া, আলবেনিয়া সহ বলকান অঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা প্রদানের অঙ্গীকার করে। চুক্তি দুটির মাধ্যমে রাশিয়া ও ইতালিকে সন্তুষ্ট করার পর ব্রিটেন ও ফ্রান্স তুর্কি সাম্রাজ্যের এশীয় ভূ-খণ্ডের উপর নিজেদের দাবি-দাওয়াগুলির মধ্যে সমন্বয় সাধনের পথে অগ্রসর হয়। যুদ্ধমন্ত্রী লর্ড কিচেনারের পরামর্শক্রমে বৃটিশ সরকার ব্রিটিশ স্বার্থের আলোকে তুর্কি সাম্রাজ্যের উপর ফ্রান্স ও রাশিয়ার দাবি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করে। ১৯১৫ সালের জুন মাসে কমিটি রিপোর্ট প্রদান করে যে, সিরিয়ার উত্তর ভাগের উপর ফরাসি দাবি মেনে নেয়া যেতে পারে। তবে সিরিয়ার দক্ষিণাংশে, যার মধ্যে ফিলিস্তিন রয়েছে, তা ফরাসি প্রভাবমুক্ত রাখা উচিত। কমিটি এ অঞ্চলের জন্য একটি বিশেষ ব্যবস্থা প্রবর্তনের সুপারিশ করে। সম্ভবত শরীফ ম্যাকমেহন পত্রালাপের সাথে সঙ্গতি রেখেই কমিটি এ রিপোর্ট প্রদানে করে। শরীফ ম্যাকমেহন শুধুমাত্র উত্তর সিরিয়ায় ফরাসি স্বার্থের কথা উল্লেখ করেছিলেন। ফ্রান্সের সাথে আলোচনায় ব্রিটেন জেরুজালেম এবং এর পাশ্ববর্তী অঞ্চলে পবিত্র স্থানগুলির কথা বিবেচনা করে ফিলিস্তিনে একটি বিশেষ শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের কথা বলে। ফ্রান্স যুক্তি দেখায় যে, যেহেতু পবিত্র স্থানগুলোর বেশির ভাগই জেরুজালেম ও বেথেলহেমে অবস্থিত সেহেতু এ অঞ্চলে একটি বিশেষ শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা যেতে পারে। তবে ফিলিস্তিনের অবশিষ্টাংশ সিরিয়া থেকে বিযুক্ত করা উচিত নয়। এ আলোচনার বিষয়বস্তু রাশিয়াকে অবহিত করা হলে রাশিয়া ফিলিস্তিনের উপর নিজের দাবি উত্থাপন করে। সমগ্র ফিলিস্তিনে বিশেষত, নাজারেথ, নাবলুস এবং হেবরনে প্রচুর সংখ্যক বিদ্যালয়, কনভেন্ট (সংসারত্যাগী সন্ন্যাসীদের বিশেষ করে নারী সন্ন্যাসীদের আবাস বা মঠ) এবং পবিত্র স্থান রাশিয়ার তত্ত্বাবধানে ছিল। কিন্তু ফিলিস্তিনের উপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবী ফ্রান্স ও ব্রিটেন উভয়েই প্রত্যাখান করে। অবশেষে ফিলিস্তিনকে আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে
ব্রিটেন স্বস্তি লাভ করে। কেননা সুয়েজ খালের নিকটবর্তী এ অঞ্চলে কোন বৃহৎ শক্তির নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হোক ব্রিটেন তা চায় নি। প্রাথমিক আলাপ-আলোচনার পর ব্রিটেন ও ফ্রান্স দু'জন প্রতিনিধি নিয়োগ করে তুর্কি সাম্রাজ্যের সম্ভাব্য পতনকে সামনে রেখে মধ্যপ্রাচ্যে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের প্রভাবাধীন এলাকা নির্ধারণের দায়িত্ব চেয়ে ব্রিটিশ প্রতিনিধি স্যার মার্ক সাইকস ছিলেন মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ এবং বিশিষ্ট কূটনৈতিক উপদেষ্টা। আর ফরাসি প্রতিনিধি জর্জ পিকো যুদ্ধের পর দীর্ঘ দিন বৈরুতের কনস্যুল জেনারেল ছিলেন। তারা দুজনে মিলে চুক্তির একটি খসড়া প্রস্তুত
করেন।
চুক্তিটি চূড়ান্ত করার পূর্বে ব্রিটেন ও ফ্রান্স রাশিয়ার অনুমোদনের জন্য ১৯১৬ সালের বসন্তের শুরুতে সাইকস এবং পিকোকে সেন্ট পিটাসবার্গে প্রেরণ করে। সেখানে তারা চুক্তির খসড়াটি উপস্থাপন করেন। এবং তা রাশিয়ার অনুমোদন লাভ করে। ১৯১৬ সালের ১৬ মে সম্পাদিত ব্রিটেন ফ্রান্সের মধ্যে সম্পাদিত এ চুক্তিটি প্রতিনিধি দুজনের নামানুসারে সাইকস-পিকো চুক্তি নামে পরিচিত। চুক্তির ধারাগুলো ছিল নিম্নরূপ :
১। ফ্রান্স ও ব্রিটেন একজন আরব শাসকের অধীনে এ চুক্তির সাথে সংযুক্ত মানচিত্রের ‘এ’ (সিরিয়ার অভ্যন্তর ভাগ) এবং ‘বি’ জর্ডান নদীর পূর্বাঞ্চল ও মেসোপটেমিয়ার পশ্চিমাংশ) চিহ্নিত এলাকায় একটি স্বাধীন আরব রাষ্ট্রসমূহের সমন্বয়ে গঠিত একটি কনফেডারেশন প্রতিষ্ঠা এবং এর নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়ে একমত হয়। ‘এ’ চিহ্নিত এলাকায় ফ্রান্স এবং ‘বি’ চিহ্নিত এলাকায় ব্রিটেন ব্যবসা- বাণিজ্য ও মূলধন বিনিয়োগে অগ্রাধিকার ভোগ করবে। প্রতিষ্ঠিতব্য আরব রাষ্ট্র অথবা আরব রাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত কনফেডারেশনের অনুরোধক্রমে ‘এ’ চিহ্নিত এলাকায় শুধুমাত্র ফ্রান্স এবং ‘বি’ চিহ্নিত এলাকায় ব্রিটেন উপদেষ্টা ও কর্মকর্তা কর্মচারী প্রেরণের অধিকার ভোগ করবে ।
২। মানচিত্রে নীল রঙের এলাকায় (সিরিয়ার সমুদ্র উপকূল, তুরস্কের দক্ষিণ- পূর্বাংশ এবং ইরাকের উত্তরাংশ) ফ্রান্স এবং লাল রঙে চিহ্নিত এলাকায় (দক্ষিণ ইরাক) ব্রিটেন তাদের ইচ্ছামত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারবে । নীল রঙে চিহ্নিত এলাকাকে Blue Zone বা নীল এলাকা এবং লাল রঙে চিহ্নিত এলাকাকে Red Zone বা লোহিত এলাকা নামে অভিহিত করা হয় ।
৩। ফিলিস্তিনে একটি আন্তর্জাতিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারে উভয় পক্ষ একমত হয় । তবে রাশিয়া ও মিত্র শক্তির অন্যান্য দেশ এবং শরীফ হুসেইনের প্রতিনিধির সাথে আলোচনার পর এ শাসন ব্যবস্থার প্রকৃতি নির্ধারণ করা হবে। মানচিত্রে বাদামী রঙে চিহ্নিত এ এলাকাকে Brown Zone বা বাদামী এলাকা নামে অভিহিত করা হয়।
৪ । হাইফা ও আকর বন্দর বাদামি এলাকায় অবস্থিত হলেও ফ্রান্স বন্দর দুটিতে ব্রিটেনের কতৃত্ব মেনে নেয়। এছাড়া ফ্রান্স তার প্রভাবাধীন ‘এ’ অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রিস নদীর পানি ব্রিটিশ প্রভাবাধীন ‘বি’ অঞ্চলে নির্দিষ্ট পরিমাণ সরবরাহের নিশ্চয়তা দেয়। ফ্রান্সের পূর্বানুমতি ছাড়া ব্রিটেন সাইপ্রাস দ্বীপ অন্য কোন শক্তিকে প্রদান করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়।
৫। নীল এলাকায় অবস্থিত আলেকজান্দ্রেত্তা বন্দরটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং এ বন্দরের শুল্ক নির্ধারণ ও অন্যান্য সুযোগ- সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ জাহাজ ও পণ্যের প্রতি কোন প্রকার বৈষম্য করা হবে না। আলেকজান্দ্রেত্তা বন্দর হতে ফ্রান্স নিয়ন্ত্রিত নীল এলাকায় রেলওয়ে দিয়ে ‘এ’ এবং ‘বি’ এলাকা হয়ে ব্রিটিশ পণ্য বিনা বাধায় লোহিত এলাকায় পরিবহনের অধিকার পাবে। উল্লেখিত এলাকার রেলওয়ে এবং বন্দরসমূহে ব্রিটিশ জাহাজ ও পণ্যের প্রতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন প্রকার বৈষম্য আরোপ করা হবে না ।
একইভাবে হাইফা বন্দরটি ফ্রান্স, তার উপনিবেশ ও আশ্রিত রাজ্য সমূহের জন্য উন্মুক্ত থাকবে, এবং এ বন্দরে শুল্ক নির্ধারণের ক্ষেত্রে ফরাসি পণ্য ও জাহাজের প্রতি কোন প্রকার বৈষম্য আরোপ করা হবে না। হাইফা বন্দর হতে বাদামি এলাকার ব্রিটিশ রেলওয়ে এবং ‘এ' ও 'বি' এলাকার মধ্য দিয়ে ফ্রান্স নিয়ন্ত্রিত নীল এলাকায় সরবরাহকৃত অথবা নীল এলাকা থেকে সরবরাহকৃত পণ্য বিনা বাধায় পরিবহনের অধিকার পাবে। উল্লেখিত এলাকার রেলওয়ে এবং বন্দর সমূহে ফরাসি জাহাজ ও পণ্যের প্রতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কোন প্রকার বৈষম্য আরোপ করা
হবে না ।
৬। ইউফেট্রিস নদীর উপাত্যকা হয়ে বাগদাদ ও আলেপ্পোর মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত ‘এ’ চিহ্নিত এলাকায় বাগদাদ রেলপথ মসুলের দক্ষিণে সম্প্রসারিত করা যাবে না এবং 'বি' চিহ্নিত এলাকায় সামাররা হবে এর সর্ব উত্তরের সীমা ।
৭। বাদামি এলাকায় অবস্থিত হাইফা এবং ‘বি’ চিহ্নিত এলাকার মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য রেলপথ নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনার অধিকার পায় বৃটেন এবং এ পথ দিয়ে অবাধে ব্রিটিশ সৈন্য চলাচলের অধিকারও দেয়া হয় ।
৮। আগামী ২০ বছর নীল এলাকা, লোহিত সাগর এলাকা এবং ‘এ' ও 'বি' চিহ্নিত এলাকায় ওসমানিয় শাসনামলে প্রচলিত আমদানি-রপ্তানি শুল্ক বজায় থাকবে। ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সম্মতি ছাড়া এ হার বৃদ্ধি করা যাবে না। এছাড়া উল্লেখিত অঞ্চলে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে কোন আন্তঃশুল্ক থাকবে না। শুধুমাত্র বন্দরে প্রবেশপথে একবার শুল্ক আদায় করা হবে। এবং আদায়কৃত শুল্ক পণ্যের গন্তব্য স্থানের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হবে।
৯। ব্রিটেনের পুর্বা,মতি ছাড়া ফরাসি সরকার নীল এলাকায় প্রাপ্ত তাদের অধিকার ও দায়-দায়িত্ব একমাত্র আরব রাষ্ট্র বা আরব রাষ্ট্রসমূহের সমন্বয়ে গঠিত কনফেডারেশন ছাড়া অন্য কোন তৃতীয় শক্তির নিকট হস্তান্তর করতে পারবে না। লোহিত এলাকার ক্ষেত্রে ও ব্রিটেন ফরাসি সরকারকে অনুরূপ নিশ্চিয়তা দেয় ।
১০। ব্রিটেন ও ফ্রান্স আরবিয় উপদ্বীপ দখল করা থেকে বিরত থাকার এবং তৃতীয় কোন পক্ষকেও আরবীয় উপদ্বীপ দখল ও লোহিত সাগরের পূর্ব-উপকূলবর্তী কোন দ্বীপে নৌ-ঘাটি নির্মাণ করতে দিবে না। তবে সম্ভাব্য তুর্কি আক্রমণ প্রতিহিত করার স্বার্থে এডেনের ক্ষেত্রে এ শর্ত প্রযোজ্য হবে না ।
১১। উভয় পক্ষ সম্মিলিতভাবে আরবদের সাথে আলোচনা করে আরব রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রসমূহের সমন্বয়ে গঠিত কনফেডারেশনের সীমানা নির্ধারণ করবে ।
১২। ব্রিটিশ ও ফরাসী সরকার সম্মিলিতভাবে আরব ভূ-খণ্ডে অস্ত্রের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করবে ।
সাইকস-পিকো চুক্তির মূল্যায়ন : সাইক্স পিকো চুক্তি একটি বিস্ময়কর দিক হচ্ছে ফারটাইল ক্রিসেন্টের সবচেয়ে উর্বর, অগ্রসর এবং স্বশাসনে সক্ষম অঞ্চল সমূহকে স্বাধীনতা না দিয়ে ব্রিটিশ ও ফরাসি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে অনুন্নত অনগ্রসর ঔপনিবেশিক শক্তিগুলোর সহযোগিতা ছাড়া স্বশাসনে সক্ষম নয় এমন মরুময় যাযাবর অধ্যুষিত অঞ্চলসমূহকে স্বাধীনতা প্রদানের কথা বলা হয়েছে। এ সম্পর্কে জর্জ এন্টোনিয়াস মন্তব্য করেছেন, “It was like putting the adults to school and sending the pupils of the elementary classes out into the world.”
সাইক্স-পিকো চুক্তিতে সম্ভবত ব্রিটেন ও ফ্রান্সের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের কথা বিবেচনা করা হয়েছে । কেননা ফ্রান্স নিয়ন্ত্রিত নীল এলাকা ছিল ভূ-মধ্য সাগরের পূর্ব উপকূল এবং ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত লোহিত এলাকা ছিল পারস্য উপসাগরের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত। শরীফ হুসেইনের অগোচরে চুক্তিটি সম্পাদন করা হয় এবং চুক্তির ধারাগুলি শরীফ-ম্যাকমেহন পত্রালাপের সাথে বিরোধপূর্ণ ছিল। চুক্তিটি সম্পাদনের প্রায় আট মাস পর ১৯১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে শরীফ হুসাইন এ বিষয়ে জানতে পারেন। মাত্র এক মাস পূর্বে রাশিয়ার বলশেভিক পার্টি ক্ষমতায় আসে এবং সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ থেকে রাশিয়াকে প্রত্যাহার করে নেয়। ক্ষমতায় আসার পরপরই বলশেভিক নেতৃবৃন্দ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আর্কাইভ হতে পূর্ববর্তী সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত গোপন চুক্তিগুলি প্রকাশের উদ্যোগ নেয়। ২৩ নভেম্বর Izvestia ও Pravda এবং ২৬ নভেম্বর Manchester Guardian পত্রিকায় চুক্তিটি প্রকাশিত হয়। কালবিলম্ব না করে তুরস্ক চুক্তির একটি কপি শরীফের নিকট প্রেরণ করে এবং তুর্কি আরব সমঝোতার প্রস্তাব দেয়। বিষয়টি শরীফকে অত্যন্ত মর্মাহত করলেও তিনি তুরস্কের সমঝোতা প্রস্তাবে সাড়া দেন নি। ব্যালফোর ঘোষণার মাত্র তিন সপ্তাহ পরে প্রকাশিত এ চুক্তি জাইয়নবাদীদেরও দারুণভাবে মর্মাহত করে ।
শরীফ হুসেইন কায়রোতে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার স্যার রেজিনাল্ড উইং গেটের (তিনি ম্যাকমেহনের পর মিশরের হাই কমিশনার নিযুক্ত হন।) নিকট এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠান। এতে উইংগেট অত্যন্ত বিব্রত বোধ করেন এবং বিষয়টি যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরকে অনুরোধ করেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী আর্থার ব্যালফোর টেলিগ্রাফের মাধ্যমে জানান, এটি তুর্কি সরকারের একটি গভীর ষড়যন্ত্র। তিনি এ বিষয়ে একটি অত্যন্ত চাতুর্যপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন যা উইংগেট টেলিগ্রামের মাধ্যমে শরীফকে অবহিত করেন। টেলিগ্রামে বলা হয় যে, বলশেভিক সরকার কর্তৃক প্রকাশিত দলিলগুলি আসলে কোন চুক্তি ছিল না । এগুলি ছিল যুদ্ধের শুরুর দিকে মিত্র শক্তির মধ্যে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনের উদ্দেশ্যে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পাদিত প্রাথমিক আলোচনা, যা আরবদের বিদ্রোহ ঘোষণার পূর্বেই পরিচালিত হয় ।
সর্বোপরি ১৯১৮ সালের নভেম্বর মাসে এ্যাংলো ফ্রান্স যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে সিরিয়া ও মেসোপটোমিয়ায় একটি আরব রাজ্য প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতার ঘোষণা দেয়া হয়। ফ্রান্স তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও ব্রিটেনের চাপে এ ঘোষণা দিতে সম্মত হয়। এতে আশ্বস্থ হয়ে শরীফ হুসেইন মিত্র শক্তির পক্ষে তার সমর্থন অব্যাহত রাখেন ।
,
কৃষ্ণ সাগর
আঙ্কারা
তুরস্ক
নীল এলাকা সরাসরি ফরাসি নিয়ন্ত্রণ)
আদনা
রাশিয়া
ভ্যান হ্রদ
কাম্পিয়ান
সাইপ্রাস
ভূমধ্য সাগর
বাসি প্রভাবাধীন এলাকা)
হাইফা
(আন্তর্জাতিক এলাকা)
জামদান
উরসিয়া হ্রদ তারি
ইউফ্রেটিস
'বি' এলাকা
(ব্রিটিশ প্রভাবাধীন এলাকা)
কারব
ইान
কারক
শিশ
সাইকস-পিকো চুক্তি ১৯১৬
মাইল
FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত