রুশ-ইরান সম্পর্ক (১৯১৯-১৯৩৯)

রুশ-ইরান সম্পর্ক (১৯১৯-১৯৩৯)
দুই বিশ্বযুদ্ধের অন্তবর্তীকালীন রুশ-ইরান সম্পর্কে (১৯১৯-১৯৩৯) মধ্যপ্রাচ্য তথা পশ্চিম এশিয়ার ইতিহাসে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। রুশ-ইরান সম্পর্কের যথার্থতা নিরূপণের জন্য একটু পিছনে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ইরান তার নিরপেক্ষতার ঘোষণা করে। কিন্তু এ নিরপেক্ষতা ঘোষণা ছিল নিরর্থক। কারণ এ সময় দেশটি বিদেশি শক্তির আওতাধীন এবং বিদেশি সৈন্যদের পদানত ছিল। বলাবাহুল্য যে, যুদ্ধ ঘোষণার পূর্ব থেকে তেল সমৃদ্ধ ইরানে প্রভাব বলয় সৃষ্টির জন্য রাশিয়া ও ব্রিটেন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতায় নামে। কিন্তু জার্মানির বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনে তারা কোন প্রকার সংঘাতে যায় নি। ইরানের শাসনতান্ত্রিক সরকার উচ্ছেদের যে প্রয়াস রাশিয়া করছিল তাতে ব্রিটেন কোন বাধা দেয় নি। অন্যদিকে ১৯০১ সালে ব্রিটিশ নাগরিক উইলিয়াম নকস দ্যা আর্চি ইরানের তেল সন্ধান, আহরণ ও বাজারজাতকরণের জন্য ইরানির সরকারের সাথে যে চুক্তি করে রাশিয়া তাতে কোন আপত্তি জানায় নি। মসজিদে-ই-সুলায়মানে তেল আবিষ্কৃত হলে ইরান এবং ব্রিটিশ সরকারের মধ্যে ইঙ্গ-ইরানি তেল কোম্পানি গঠিত হয়। ব্রিটিশ ও রুশদের স্বার্থান্বেষী মনোভাব ইরানি জনগণ উপলব্ধি করেছে। পরাশক্তিবর্গের লোলুপ দৃষ্টি ইরানের তেল সম্পদের উপর এবং তারা তা লুট করার ষড়যন্ত্র করছে। ইরান সরকার যখন বুঝতে পারল যে, ইরানের তেল লুণ্ঠন করাই ইঙ্গ-ইরানি তেল কোম্পানির মুখ্য উদ্দেশ্য তখনই ইরান তার ভবিষ্যত পার্টনার খুঁজতে থাকে । আবার ইরান বরাবরই প্রতিবেশী পরাশক্তি রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক গড়তে আগ্রহী । সুতরাং, রুশ-ইরান সম্পর্ক ঐতিহাসিক। রুশ-ইরান সম্পর্ক নিম্নে আলোচনা করা হল :
ঊনবিংশ শতাব্দীর ইরানের ইতিহাস ইঙ্গ-রুশ প্রভাব বলয়ের ইতিহাস। এ সময় ইরানকে বৃহৎ শক্তির চক্রান্তের ‘দাবার গুটি'র মত ব্যবহার করা হয়। ১৯০৭ সালে ইঙ্গ-রুশ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা অব্যাহত থাকে। রাশিয়ার প্ররোচণা ও সশস্ত্র সংঘর্ষের ফলেই আমেরিকান অর্থনীতিবিদ মরগান সুস্তারকে ১৯১১ ইরান থেকে বিদায় নিতে হয়। তার আগে রুশ কশাক বিগ্রেডের নেতা লিয়াখভের সাহায্যে ইরানি মজলিশ বোমা দ্বারা বিধ্বস্ত করা হয়। ১৯০৯ সালের ১৫ নভেম্বর মোহাম্মদ আলী শাহ নির্বাসিত হলে তার পুত্রকে সিংহাসনে বসান হয় । তিনি রিজেন্টের মাধ্যমে দেশ শাসন করেন। ১৯১৪ সালের ২১ জুলাই-আহমদ শাহের অভিষেক সম্পন্ন হয় এবং তৃতীয় মজলিশের সভা ডাকা হয়। উল্লেখ্য যে, এ সময় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে শাহ ইরানের নিরপেক্ষতার নীতি ঘোষণা করেন। ১৯১৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত জাতীয় মজলিস কার্যকরী ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি হয় ১৯১৯ সালে ভার্সাই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পারস্য এক আন্তর্জাতিক সঙ্কটের ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার সম্মুখীন হয়। সাম্রাজ্যবাদী ও স্বৈরাচারী জারের পতনে ১৯১৩ সালে রাশিয়া বিখ্যাত বলশেভিক বিপ্লব শুরু হয়। সমাজতন্ত্র ও মার্কসবাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধ লেনিন রাশিয়ায় জারের শাসনের উচ্ছেদ কল্পে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ১৯১৮ সালে বলশোভিক সরকার ইরানকে প্রদত্ত সকল সুযোগ-সুবিধা বাতিল করে। কমিউনিস্ট সরকার ১৯০৭ সালে সম্পাদিত ইঙ্গ-রুশ চুক্তি বাতিল ঘোষণা করে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পতনে ইরানের সাথে রাশিয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। ১৯২০ সালে বাকুতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে রুশ সরকার উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের নীতি বর্জন করে পারতপক্ষে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি কটাক্ষ করে ।
রুশ-ইরান সম্পর্কের ক্ষেত্রে রাশিয়ার কম্যুনিস্ট সরকারের ভূমিকা লক্ষ্যণীয় I রাশিয়ার নতুন ক্ষমতা প্রাপ্ত বিপ্লবী সরকার পর্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুসুলভ ও পারস্পরিক মর্যাদার ভিত্তিতে বৈদেশিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে। রাশিয়া তার প্রতিবেশী তুরস্ক, ইরান ও আফগানিস্তানের সাথে মৈত্রী ও পরস্পরের সমঝোতার মাধ্যমে নতুন চুক্তি সম্পাদনের আগ্রহ প্রকাশ করে। ১৯২০ সালের ২০ অক্টোবর মুসির-উদ-দৌল্লাহ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন মস্কোতে রাশিয়ার সাথে মৈত্রী চুক্তির ব্যাপারে প্রাথমিক আলাপ হয়। কিন্তু এ আলোচনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ইরানের পক্ষ থেকে এ আলোচনায় অংশ নেন মুসাভিরুল মামালিক । ১৯২০ সালের ১৮ মে রুশ নৌবহর কাম্পিয়ান সাগরের তীরবর্তী এনজিলীতে অবতরণ করে এবং ইরানের রাজদ্রোহী কুচিক খানকে রাশিয়া সাহায্য করলে ইরানী সরকার এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। তিনি ৬০০০ সদস্য বিশিষ্ট একটি ব্যক্তিগত সেনাবাহিনী গঠন করে রাশিয়ার সহায়তায় ইরানি সরকার উৎখাতের চেষ্টা করেন। কুচিক খানের সাথে সমঝোতা করে ১৯২০ সালের ১৮ মে রুশ বাহিনী এনজেলীতে অবতরণ করে। কুচিক খানের সহায়তায় রাশিয়া গিলানে একটি রুশ প্রদেশ প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু রাশিয়ার আগ্রাসন নীতিতে শঙ্কিত হয়ে কুচিক খান সাময়িকভাবে তার নীতি পরিবর্তন করলেও রুশ বাহিনীর সাথে যৌথভাবে এনজেলীতে অবরোধ সৃষ্টি করেন। যাহোক, ইরানি সরকার কশাক বিগ্রেডের সাহয্যে বিশেষ করে রেজা খানের প্রচেষ্টায় রুশ ও কুচিক বাহিনীকে ১৯২১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পরাজিত করেন। গিলানে ইরানের আধিপত্য পুনপ্রতিষ্ঠিত হয়। এবং কুচিক খান পলায়ন করেন। তিনি মৃত্যুবরণ করলে তার মাথার খুলি রেজা শাহের নিকট আনা হয়। ফলে ইরানের সাথে রাশিয়ার সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। যাহোক, ইরানে সোভিয়েত ইউনিয়নের আগ্রাসন নীতির দুটি কারণ বিদ্যমান ছিল। যেমন (এ) রাশিয়ায় নতুন কম্যুনিস্ট সরকার ইরানের সাথে মৈত্রী চুক্তির জন্য সামরিক চাপ প্রদান; এবং (বি) ব্রিটেনকে তার সেনাবাহিনী যা দক্ষিণাঞ্চলে ছিল প্রত্যাহারের জন্য চাপ সৃষ্টি। রুশ খসড়া চুক্তি প্রচারণার মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে সদ্ভাব গড়ে তোলার চেষ্টা করে। রুশ যোগাযোগকারী ছিলেন টিচিচেরিন (Tehicherin) তিনি ঘোষণা করেন যে, নবগঠিত সোভিয়েত রাশিয়ার নীতি হচ্ছে ইরানের সাথে মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষর করা যাতে ইরান স্বাধীনতা, রাজনৈতিক একতা এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধন করতে পারে। অবশেষে অনেক আলাপ-আলোচনার পর সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে রাশিয়ার সাথে ইরানের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ।
রুশ-ইরান চুক্তিতে বেশ কতগুলো শর্ত ছিল । পিটার এভেরি তার ‘Modern' গ্রন্থে ১৯২০ সালে সম্পাদিত রুশ-ইরান চুক্তির শর্তাবলীর বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। মস্কোতে ১৯২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং স্বাক্ষর দান করেন রাশিয়ার পক্ষে টিচিচেরিন এবং ইরানের পক্ষে মুসাভভিরুল মামালিক রুশ-ইরান চুক্তির শর্তাবলী ও বিস্তারিত বিবরণ আগেই দেয়া হয়েছে। এবার এ চুক্তিতে রুশ-ইরান সম্পর্কের উন্নতি ও অবনতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হল ।
১৯২১ সালে রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি উভয় দেশের মধ্যে দীর্ঘ দিনের বৈরিতা ও শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব দূর করলেও চুক্তিটির বিভিন্ন অনুচ্ছেদের পুঙ্খনাপুঙ্খ বিশ্লেষণ করলে প্রতীয়মান হয় যে, চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল রাশিয়ার স্বার্থে এবং উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটেনকে কোণঠাসা করা। অবশ্য বৃহৎ শক্তির প্রভাব বলয়ের ‘দাবার গুটি’ হিসেবে ব্যবহৃত ইরান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক প্রগতি ও বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মর্যাদা লাভ করেছিল। বস্তুত উনবিংশ শতাব্দীর ইরানের ইতিহাস বৃহৎ শক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইতিহাস। রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও অর্থনৈতিক সংকটের ফলে ইরান ব্রিটেন ও রাশিয়ার বিভিন্ন সুযোগ নিতে বাধ্য হয়। ১৯২১ সালের সম্পাদিত রুশ-ইরান চুক্তি দৃশ্যত ১৮২৮ সালের রুশ-ইরান তুর্কো মানচাই চুক্তি এবং ১৯১১ সালের ইঙ্গ-রুশ চুক্তিকে বাতিল করে । ইরান থেকে রাশিয়া তার সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করলে ব্রিটেনও তার বাহিনী সরিয়ে নেয়। ১৯২১ সালের চুক্তি পরবর্তীকালে ১৯২৫ সালের ২৫ এপ্রিল তারিখে সম্পাদিত পারস্য, তুরস্ক ও আফগানিস্তানের মধ্যে একটি মৈত্রী চুক্তি সম্পাদনের সহায়তা করে। এ চুক্তির ফলে পূর্বের ঘৃণ্য ক্যাপিচুলেশন প্রথা বিলুপ্ত হয় এবং ইরান একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক মর্যাদা লাভ করে ।
এ চুক্তির কুফল রুশ-ইরান সম্পর্কের অবনতিও ঘটায়। অনুচ্ছেদ ৫ এ উল্লেখ আছে যে কোন তৃতীয় পক্ষ ইরান ও রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এ শর্ত বিশেষভাবে ব্রিটেনের দিকে ইঙ্গিত করে। এ ধারার পাশাপাশি ৬-এ উল্লেখ আছে যে, যদি কোন বৈদেশিক শক্তি ইরান আক্রমণ করে, তাহলে ইরান সরকারের আমন্ত্রণে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করবে। এ ধারাটিও ব্রিটেনের হস্তক্ষেপের দিকে ইঙ্গিত করছে। মূলতঃ ব্রিটেন যেমন রুশ ভাল্লুকের থাবার জন্য শঙ্কিত ছিল অনুরূপভাবে রাশিয়াও পরাক্রমশালী ব্রিটিশ সিংহের গর্জনে ব্যতিব্যস্ত ছিল। ইরানের শসস্ত্র বাহিনীতে বিদেশিদের অংশগ্রহণের যে ধারা অনুচ্ছেদ-৭এ আছে সেটাও স্পষ্টতঃ ব্রিটিশ সামরিক হস্তক্ষেপকে ইঙ্গিত করছে। অবশ্য উভয় দেশের সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করার কথা থাকলেও রুশ কশাক বিগ্রেড উত্তরাঞ্চলে অবস্থান করছিল। বিদ্রোহী ইরানী নেতা কুচিক খান রাশিয়ার সহায়তায় ১৯১৯- ১৯২০ সালে ইরানে অরাজকতা সৃষ্টি করলে রেজা শাহ তাকে পরাজিত করেন। ১৯নং অনুচ্ছেদে রুশ ইরান বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ আছে যা পূর্বের ১৮২৮ সালের তুর্কো মানচাই চুক্তি এবং ১৯০২ সালের ট্যারিফ কনভেনশনের পুনরাবৃত্তি, মূলত ব্রিটেন অপেক্ষা রাশিয়া ইরানের নিকট থেকে ব্যবসায়িক সুবিধা অধিক অর্জন করে । এ পক্ষপাতিত্ব বিশেষ করে রুশ পণ্যের জন্য স্বল্প শুল্ক নির্ধারণ ইরানি ব্যবসায়ীদের বিক্ষুব্ধ করে তোলে । এ শর্তের ফলে ১৯২১ হতে ১৯২৫ সাল পর্যন্ত ইরানি ব্যবসা-বাণিজ্য মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এ সমস্যা সমাধানের জন্য রেজা শাহ তার উপদেষ্টা তৈমুরতাশকে মস্কোতে পাঠান। জারের আমলে ইরানের উপর স্বল্প ও সুবিধাজনক ট্যারিফ নির্ধারিত হলে প্রতি বছর ইরানে এক মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হতে থাকে। অপরদিকে 'সুবিধা ভোগকারী দেশ রাশিয়া অর্থনৈতিক দিক থেকে লাভবান হতে থাকে। ১৯২১ সালের চুক্তির ৯নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে যে, রুশ ডিসকাউন্ট ব্যাংকের যাবতীয় সম্পত্তি ইরান সরকারের নিকট হস্তান্তর করা হবে। কিন্তু ১৯২১-১৯২৫ সালের মধ্যে রাশিয়াকে ইরানে একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক খোলার অনুমতি দেয়া হয় । যদিও সকল প্রকার সামরিক কর্মকান্ড বন্ধ করার ধারা (৭ নং) ছিল তবু বিদেশি লিগেশনে ইরানি রাজনীতিবিদেরা যাতে আশ্রয় গ্রহণ করতে না পারে সে জন্য দূতাবাসগুলিতে সৈন্যসামন্ত দ্বারা সুরক্ষিত রাখা হত । মজলিশে ১৯২২ সালের চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপিত হলে এ ধারাসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করা হয়। ইরানি গণতন্ত্রী দলের তাকিজাদেহ এ চুক্তির বিরোধীতা করে বলেন যে, ৫ ও ৬নং অনুচ্ছেদে রাশিয়াকে অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের সুযোগ দেয়া হয়। যা ইরানের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করবে। এছাড়া ১৯২১ সালের চুক্তিটি রাশিয়ার জন্য Propaganda value বা প্রচারণার সীমাহীন গুরুত্ব ছিল। এ প্রচারণার মূলে দুটি উদ্দেশ্য ছিল (এ) ইরানে ব্রটিশ প্রভাবকে খর্ব করা এবং (বি) ইরানে রুশ প্রভাব বৃদ্ধি করা। এ কারণে বাগদাদ হতে তেহরান পর্যন্ত সড়ক পথে যাতায়াতের জন্য ইঙ্গ-ইরানি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করা হয়। বিদেশিদের প্রতি এ ধরনের বিদ্বেষমূলক মনোভাব প্রবল আকার ধারণ করে। ঐতিহাসিক এভোরির ভাষায়, “Xenophobia was given a wider rein.” অবশ্য রেজা শাহ ক্ষমতা লাভ করার পর ইরানকে বৈদেশিক প্রভাব বলয় থেকে রক্ষা করার জন্য ১৯২১ সালে সম্পাদিত ইঙ্গ-ইরানি চুক্তি এবং ১৯২১ সালে সম্পাদিত রুশ-ইরানি সন্ধি বাতিল করেন ।
চুক্তিটি মূল্যায়ন করলে রুশ-ইরান সম্পর্কের একটি স্পষ্ট চিত্র ফুটে উঠে। কেননা রেজা শাহের ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই ইরান সোভিয়েত সম্পর্কে পরিবর্তন সূচিত হয় এবং মাত্র ৫ দিন পর ১৯২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে এ রুশ-ইরান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তি ইরানের আন্তর্জাতিক গুরুত্ব ও মর্যাদা বৃদ্ধি করে। কেননা চুক্তিটি ছিল সমতার ভিত্তিতে সম্পাদিত একটি চুক্তি। এ সময় রাশিয়া তার অভ্যন্তরীণ সংকট মোকাবেলায় ব্যস্ত ছিল। রুশ বিপ্লব পরবর্তী এ পরিস্থিতি রাশিয়াকে চুক্তিটি সম্পাদনে বাধ্য করে ছিল। ফলে রাশিয়া সামাজিকভাবে হলেও পারস্য উপসাগরে তার চিরন্তন সাম্রাজ্যবাদি নীতি পরিত্যাগ করতে বাধ্য হল । তবে সোভিয়েত বিরোধী আগ্রাসন মোকাবেলায় ইরানে রাশিয়ার সৈন্য পাঠানোর অধিকার সংক্রান্ত ধারাটির মধ্যে কিছুটা পুরাতন সাম্রাজ্যবাদী চরিত্রের পরিচ্ছেদ পাওয়া যায়। যা হোক, এ চুক্তির সুফল হিসেবে ১৯২১ সালের অক্টোবর মাসে জিলান থেকে সৈন্য অপসারিত হয় এবং রেজা শাহের পক্ষে জিলানের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা কুচিক খানকে দমন করা সম্ভব হয়। ১৯২১ সালের চুক্তির পর রাশিয়া ও ইরানের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে আসে। কিন্তু আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পথে তখনও কিছু প্রতিবন্ধকতা ছিল।(এ) জিলানের বিদ্রোহের ঘটনা ছাড়াও ইরানের আজারবাইজান ও খোরাসানের বিদ্রোহগুলি সংঘটিত হয়েছিল রাশিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে। ফলে রেজা শাহের পক্ষে এসব বিদ্রোহের পিছনে সোভিয়েত ইঙ্গিত রয়েছে ভাবার যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ বিদ্যমান ছিল। এসব বিদ্রোহ ইরানকে রাশিয়ার দিকে আবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকাতে বাধ্য করেছিল ।
(বি) কমিউনিস্টদের প্রতি কঠোর দমনমূলক নীতি গ্রহণের ফলে ইরানের কমিউনিস্ট পার্টি গোপনে কার্যক্রম পরিচালনা করতে বাধ্য হয়। রেজা শাহের এ কমিউনিস্ট বিরোধী পদক্ষেপ রাশিয়ার বিরুক্তির উদ্রেক করে। অথচ, ব্রিটিশ সরকারের সমর্থনে রেজা শাহ যখন ইরানের ক্ষমতা দখল করেছিলেন তখন রাশিয়া মুগ্ধ দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়েছিল। কেননা রাশিয়ায় দৃষ্টিতে রেজা শাহের ক্ষমতা দখল ছিল সামন্তবাদ বিরোধী আধা বুর্জোয়া বিপ্লব, যা ক্রমান্বয়ে মার্কসীয় বিপ্লবের পথ ধরে এগিয়ে যাবে। কিন্তু ক্ষমতায় এসে যখন রেজা শাহ কমিউনিস্টদের দমনে অগ্রসর হলেন তখন রাশিয়ার পক্ষে অনুশোচনা করা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না ।
(সি) কিছু অর্থনৈতিক সমস্যাও রুশ-ইরান সু-সম্পর্ক স্থাপনে বাধা সৃষ্টি করেছিল। এর মধ্যে ইরানের উত্তরাঞ্চলের তেল সম্পদ অনুসন্ধান ও উত্তোলনের বিষয়টি ছিল উল্লেখযোগ্য। উত্তর ইরান থেকে রাশিয়া তার সুযোগ সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়ার পর ইরান সরকার উত্তরাঞ্চলে তেল অনুসন্ধান ও উত্তোলনের ব্যাপারে কয়েকটি ব্রিটিশ ও মার্কিন কোম্পানির সাথে চুক্তি সম্পাদন করে। ১৯২১ সালের চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া এর বিরোধীতা করে। কেননা উক্ত চুক্তিতে ইরান-রাশিয়ার পরিত্যাক্ত সুযোগ-সুবিধা অন্য কোন দেশকে প্রদান করবে না বলে অঙ্গীকার করেছিল। এর স্বপক্ষে ব্রিটেনের যুক্তি ছিল যে, চুক্তি সম্পাদনের পর এ সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছিল জর্জিয়া, রাশিয়া নয়। কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে ব্রিটেনের এ যুক্তি প্রতিষ্ঠা পায় নি। ইরান সরকার রাশিয়ার সাথে সম্পর্কের অবনতির আশঙ্কায় ১৯২৪ সালে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পাদিত চুক্তিগুলি বাতিল ঘোষণা করে। ১৯৩৭ সালের পূর্ব পর্যন্ত এ বিষয়ে আর কোন পদক্ষেপ গৃহীত হয় নি । ১৯৩৭ সালে ইরান সরকার আমেরিকান অয়েল কোম্পানিকে উত্তরাঞ্চলে তেল অনুসন্ধান ও উত্তোলনের অনুমতি প্রদান করে। সে সময় অবশ্য সোভিয়েত সরকারের পক্ষ থেকে কোন আপত্তি করা হয় নি। তবে বিরাজমান বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে কোম্পানি তার কার্যক্রম শুরু করতে পারে নি। ১৯৩৮ সালে কোম্পানিটি ইরানে তেল অনুসন্ধান ও উত্তোলনের অধিকার পরিত্যাগ করে।
(ডি) রুশ-ইরান বিবাদের আরেকটি অন্যতম বিষয় ছিল বাণিজ্য । উত্তর ইরানের রপ্তানিযোগ্য পণ্যের একমাত্র বাজার ছিল রাশিয়া। অর্থাৎ বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে উত্তর ইরান ছিল সম্পূর্ণরূপে রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল। সে কারণে তেহরানে সোভিয়েত রাষ্ট্রদূত Petrovsky বলেছিলেন, আমরা যদি ইরান থেকে দ্রব্য সমাগ্রী ক্রয় করা বন্ধ করে দেই তাহলে একমাসের মধ্যে ইরান দেউলিয়া হয়ে যাবে। এর ফলে ইরানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলো মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে। অবশেষে ১৯২৭ সালে ইরান সরকার কাস্পিয়ান সাগরে মৎস্য শিকারের ব্যাপারে রাশিয়ার দাবির অনুকূলে একটি চুক্তি সম্পাদন করে এ অর্থনৈতিক অবরোধ হতে মুক্তি পায়। উত্তর ইরানের অর্থনীতিতে রাশিয়ার প্রভাব এত বেশি ছিল যে, ইচ্ছা করলে রাশিয়া বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য বিনষ্ট করতে পারত। গোটা বিশের দশক জুড়ে প্রতিনিয়তই ইরান রাশিয়ার দ্বারা এ ধরণের হয়রানির শিকার হয়েছে। রাশিয়ার আন্ত:বাণিজ্য সৰ্বদা সম্পূর্ণরূপে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে থাকায় ইরানের ব্যবসায়ীরা এ অবস্থান মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়। এ বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বাধ্য হয়ে ১৯৩১সালে রেজা শাহ আন্ত: বাণিজ্যের উপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে জার্মানিতে হিটলারের আবির্ভাব এবং ইরান সরকারের সাথে নাজি সরকারের সম্পর্কোন্নয়নের ফলে রাশিয়ার পরিবর্তে জার্মানির সাথে ইরানের বৈদেশিক বাণিজ্যের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পরিচালিত হতে থাকে। বলশেভিক বিপ্লবের পূর্বে রাশিয়ায় ইরানের Non-Oil-Export এর পরিমাণ ছিল শতকরা ৭০ ভাগ । ১৯২১-১৯৪১ সালে এর পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। ১৯২৫-১৯২৯ সালে এর পরিমাণ হ্রাস পেয়ে দাড়ায় ৪০ ভাগে এবং ১৯৩০-১৯৩৪ সালে ২৭ ভাগে। এরপর থেকে ১৯৪১ সালে রেজা শাহের সিংহাসন ত্যাগের পূর্ব পর্যন্ত এর পরিমাণ আরো কমে শতকরা ২১ ভাগে নেমে আসে। সুতরাং রুশ-ইরান সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল ।
উপরোক্ত প্রেক্ষাপটে রুশ-ইরান সম্পর্কের উন্নয়ন করা অপরিহার্য ছিল। উপরন্তু ইরানের সাথে রাশিয়ার সুসম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে আলোচিত কারণগুলো কিছুটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলেও ১৯৩০ এর দশকে এসে উভয় দেশের সম্পর্ক কিছুটা ঘনিষ্ঠ হয়। হিটলার ও মুসোলিনীর উত্থান, নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনের ব্যর্থতা ইত্যাদি রাশিয়াকে তার নিরাপত্তার ব্যাপারে ভাবিয়ে তোলে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রাশিয়া সব ধরনের আগ্রাসনের বিরোধীতা করে । এবং ১৯৩৩ সালে ইরানের সাথে অনাক্রমণ চুক্তি করে। ১৯৩২-১৯৩৩ সালে ইঙ্গ-ইরানি তেল কোম্পানির সাথে ইরান সরকারের দ্বন্দ্বের সময় রাশিয়া ইরানকে সমর্থন দেয়। ফলে রুশ-ইরান সম্পর্কের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়। যদিও ইরানের কমিউনিস্ট পার্টি ছিল দুর্বল, ধ্বংসপ্রাপ্ত ও সরকারের দমন নীতিতে ভীতসন্ত্রস্ত তবু রাশিয়া ইরানে কম্পিউনিজম বিস্তারের আশা কখনো পরিত্যাগ করে নি। তাই ইরানের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা হতে রাশিয়া নিজেকে কখনো বিরত রাখে নি। সোভিয়েত বাণিজ্যিক কর্মকর্তা,
গুপ্তচর ও কমিন্টার্ন এজেন্টরা স্বাধীনভাবে সমগ্র ইরান ঘুরে বেড়াত । রেজা শাহের একনায়কত্বে যদিও ইরানে মাঝে মাঝে কিছুটা অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল । তথাপি বিপ্লবের কোন সম্ভাবনা ইরানে তখন ছিল না। ইরানে একটি কমিউনিজস্ট সরকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে রাশিয়াও কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে নি। তৎকালীন বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ইরান যদি সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের কবলে পড়ত তাহলে ইরান বৈদেশিক আগ্রাসনের শিকার হত। রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য তা আরো হুমকি হয়ে দাঁড়াত। তাই দুই যুদ্ধের অন্তবর্তীকালে ইরানে একটি সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ঘটানোর ঝুঁকি রাশিয়া নিতে চায় নি। তবে একটি বৃহৎ প্রতিবেশী দেশ হিসেবে রাশিয়ার পক্ষে ইরানে প্রভাব বিস্তার ছিল খুবই স্বাভাবিক। ভৌগোলিক, কৌশলগত ও তেল · সম্পদের কারণে রাশিয়া সব সময়ই কোন না কোনভাবে প্রভাব বিস্তারে সচেষ্ট ছিল। রুশ বিপ্লবের পর অল্প কিছুকাল রাশিয়া ইরানের সাথে বৈদেশিক সম্পর্ক নির্ধারণের ক্ষেত্রে কিছুটা উদারতার পরিচয় দিলেও তা স্থায়ী হয় নি। আবারও রাশিয়া তার পুরাতন সাম্রাজ্যবাদী পথ অনুসরণ করতে থাকে। তবে দুই বিশ্বযুদ্ধের অন্তবর্তীকালে ভেতরে ভেতরে রুশ-ইরান সম্পর্কের ক্ষেত্রে অবনতি ঘটলেও বাহ্যিকভাবে দুদেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতেই ইরান নিরপেক্ষতা ঘোষণা করে। ইরানের এ নিরপেক্ষতা নীতি জার্মানির পক্ষে গিয়েছিল। ইরানের সর্বত্র প্রচার-প্রচারণা বৃদ্ধি পায়। ব্রিটেন ও রাশিয়ার চাপ সত্ত্বেও ইরান জার্মানির সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন করতে অস্বীকৃতি জানায়। আর তখনই রাশিয়া ব্রিটেনের সাথে একযোগে ইরান আক্রমণ করে ।
সার্বিক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯১৯ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত রুশ-ইরান সম্পর্ক আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । দুই বিশ্ব যুদ্ধের অন্তবর্তীকালীন সময়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতির এ তাৎপর্যপূর্ণ সময়ে রুশ-ইরান সম্পর্কের ক্ষেত্রে উন্নতি ও অবনতি দুটিই পরিলক্ষিত হয়। সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুই দেশের স্বার্থ যেমন প্রাধান্য পেয়েছিল, তেমনি আন্তর্জাতিক রাজনীতির লবিংও ছিল মূখ্য। ১৯১৯-১৯৩৯ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ দুই বিশ্বযুদ্ধের অন্তবর্তীকালে ভেতরে ভেতরে রুশ-ইরান সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি ঘটলেও বাহ্যিকভাবে দু'দেশের মধ্যে লোক দেখানো স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতেই ইরান নিরপেক্ষতা ঘোষণা করলে রুশ-ইরান সম্পর্কের চূড়ান্ত টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়। উল্লেখ্য যে, ইরানের এ নিরপেক্ষতা নীতি জার্মানির পক্ষে গিয়েছিল। ইরানের সর্বত্র নাৎসী প্রচার-প্রচারণা বৃদ্ধি পায়। ব্রিটেন ও রাশিয়ার যৌথ চাপ সত্ত্বেও ইরান জার্মানির সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন করতে অস্বীকৃতি জানায় । আর তখনই রাশিয়া ব্রিটেনের সাথে এক যোগে ইরান আক্রমণ করে। এরই মধ্যে দিয়ে রুশ-ইরান দু'দশক ব্যাপী সম্পর্কের পরিসমাপ্তি ঘটে।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]