ফিলিস্তিন সমস্যার অন্যতম কারণ হল আরব ইহুদি শত্রুতা।

আরব ইহুদি শত্রুতা
ফিলিস্তিন সমস্যার অন্যতম কারণ হল আরব ইহুদি শত্রুতা। আরব ইহুদি চির শত্রুতার পেছনে ঐতিহাসিক কারণ বিদ্যমান রয়েছে। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হল :
ইহুদিদের আন্দোলনের ফলে আরব ইহুদি সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। ইহুদিরা পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও তারা সব সময় মনে করত যে, ফিলিস্তিন হল তাদের আদত বাসভূমি। উনিশ শতকের শেষ ভাগ থেকে ইহুদিদেরকে তাদের বাসভূমিতে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি আন্দোলন শুরু হয় । এ আন্দোলনকে বলা হয় Zionism (জিয়োনিজম) এবং এর প্রবক্তা ছিলেন হার্জ (Herz) নামক একজন অষ্ট্ৰীয় ইহুদি। তিনি ১৮৯৭ সালে প্রথম ইহুদিদের অধিবেশন আহ্বান করেন। এ অধিবেশনের উদ্দেশ্য ছিল ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্যে আইনগত সুরক্ষিত একটি বাসভূমি তৈরী করা। পরবর্তীতে অনেকগুলি এই জাতীয় সম্মেলন আহ্বান করা হয়।
Balfour Declaration বা বেলফুর ঘোষণার ফলে আরব ইহুদি দ্বন্দ্বের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং এক্ষেত্রে ইহুদিরা একটি ‘মাইলফলক' অগ্রগতি অর্জন করে । উল্লেখ্য যে, ফিলিস্তিন ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের অন্তর্গত। ১৯১৪ সালে যখন তুরস্ক প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগ দেয়, তখন আরব প্রজারা ও ইহুদিরা নানা রকমের রাজনৈতিক আন্দোলন শুরু করে। ওয়াইজম্যান নামক একজনের নেতৃত্বে ইহুদিদের আন্দোলন নতুনভাবে শুরু হয়। ইহুদি অধিবেশনের কার্যকলাপ ধীরে ধীরে ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও ছড়িয়ে পড়ে। এর উদ্দেশ্য ছিল ইহুদিদের জন্য ফিলিস্তিনে একটি জাতীয় বাসস্থান তৈরি করা। তারা মনে প্রাণে আশা-পোষণ করছিল যে, যুদ্ধের পর তুরস্কের হাত থেকে ফিলিস্তিন মুক্ত হয়ে যাবে। ১৯১৬ সালে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার দ্বারা ফিলিস্তিনে একটি আন্তর্জাতিক শাসন প্রতিষ্ঠার কথা স্থির হয়। এরই পরবর্তী পদক্ষেপ হল ব্যালফুর ঘোষণা। এ ঘোষণায় ইংরেজরা ওয়াইজম্যান ও তার সমর্থকদের ইহুদি সম্প্রদায়ের সরকারি মুখপাত্র হিসেবে স্বীকার করে যে, এই ব্যালফুর ঘোষণা ইহুদিদের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। লর্ড রথস্ চাইল্ডকে একটি চিঠিতে লর্ড ব্যালফুর লিখেছেন, “His Majesty's Government view with favour the establishment in palestine a "National Home" for the Jewish People and will use their lost endeavours to facilitate the achievement of the object.” এ ঘোষণার পর ইহুদিদের দূরাবস্থায় পশ্চিমা দেশগুলিতেও যথেষ্ট সহানুভূতির সৃষ্টি হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিরা ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী একটি সম্প্রদায় এবং মার্কিন সরকারের উপর তাদের সীমাহীন প্রভাবও ছিল। উপরন্ত, ব্রিটেনের কাছে ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক ও ভৌগলিক গুরুত্বও ছিল অপরিসীম। ফিলিস্তিনের উপর কর্তৃত্ব বজায় রাখার অর্থ হল মিশরের উপর অধিকতর নিয়ন্ত্রণ
কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করে। ইহুদি বসতিগুলিতে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ২২ জুলাই ইহুদি সন্ত্রাসবাদী দল ইরগুন জেরুজালেমেরই ডেভিড হোটেলে অবস্থিথ ব্রিটিশ সিভিল হেড কোয়ার্টারটি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়। ফলে এখানে কর্মরত শতাধিক ব্রিটিশ, আরব ও ইহুদি নিহত হয়। ১৯৪৬ সালের ডিসেম্বর মাসে বাসল শহরে বিশ্ব জাইয়নবাদী সংস্থার এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় মার্কিন জাইয়নবাদীরা ড. ওয়অইজম্যানের ব্রিটিশ ঘেঁষা নীতির তীব্র সমালোচনা করে এবং ফিলিস্তিনে ব্রিটিশ শাসন অবৈধ বলে ঘোষণা করে। ১৯৪৭ সালে সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা আরো বৃদ্ধি পায়। ইহুদিদের দ্বারা বৃটিশ পুলিশ ফাঁড়িগুলি আক্রান্ত হতে থাকে। ২৭ জানুয়ারি ইহুদিরা একজন ব্রিটিশ বিচারকসহ অন্য আরেকজন ব্রিটিশ নাগরিককে অপহরণ করে। ব্রিটিশ হাইকমিশনার চরম পত্র দিয়ে তাদেরকে মুক্তি দিতে বাধ্য করেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে ফিলিস্তিন ত্যাগে বাধ্য করানোই ছিল এসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপের উদ্দেশ্য। বাধ্য হয়ে বৃটিশ সরকার মহিলা ও শিশুদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। ব্রিটিশ সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীরা নিরাপত্তা বেস্টনীর মধ্যে আতঙ্কিত জীবন- যাপন করতে থাকে ৷
বিভক্তি পরিকল্পনা
জাতিসংঘের উদ্যোগে ফিলিস্তিন বিভক্তির পরিকল্পনাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন চাপ, ইহুদিদের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ ও আরবদের প্রতিবাদের ফলে ফিলিস্তিন পরিস্থিতি খুবই জটিল আকার ধারণ করে। এমতাবস্থায় ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জাতিসংঘে উত্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে । ১৯৪৭ সালের ২ এপ্রিল ব্রিটেন ফিলিস্তিন সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের একটি বিশেষ অধিবেশন আহবানের অনুরোধ জানায়। ২৮ এপ্রিল থেকে ১৫ মে পর্যন্ত এ বিশেষ অধিবেশনে ফিলিস্তিন বিভক্তির সমস্যাটি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এবং United Nation Special Committee on Palestine - UNSCOP (ফিলিস্তিন সম্পর্কিত জাতিসংঘের বিশেষ কমিটি) নামে একটি কমিটি গঠিত হয় । কমিটিকে অধিকতর গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ করার জন্য কোন বৃহৎ শক্তিকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি। সুইডেনের নেতৃত্বে ১১ টি দেশের (অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চেকোশ্লোভাকিয়া, গুয়েতেমালা, ভারত, ইরান, হল্যান্ড, পেরু, সুইডেন ও উরুগুয়ে ও যুগোশ্লোভাকিয়া) প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত এ কমিটি ফিলিস্তিন সফর করে এবং ৩১ আগস্ট সাধারণ সভার একটি নিয়মিত অধিবেশনে রিপোর্ট পেশ করে । কিন্তু রিপোর্টটিতে কমিশন সর্বসম্মতিক্রমে কোন একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে নি । তাই রিপোর্টটি সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিকল্পনা এবং সংখ্যালঘু পরিকল্পনা এ দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল। সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিকল্পনায় কানাডা, চেকোশ্লোভাকিয়া, গুয়েতেমালা, হল্যান্ড, পেরু, সুইডেন ও উরুগয়ের প্রতিনিধিবর্গ ফিলিস্তিনকে একটি
আরব রাষ্ট্র ও একটি ইহুদি রাষ্ট্রে বিভক্ত করার পক্ষে মত দেয় এবং জেরুজালেমকে আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলে। অন্যদিকে সংখ্যালঘু পরিকল্পনায় ভারত, ইরান ও যুগোশ্লাভিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ আরব ও ইহুদি এলাকার স্বায়ত্তশাসন সহ একটি ফেডারেল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করে। এ পরিকল্পনায় ইহুদি অভিবাসন সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ৩ জন আরব ৩ জন ইহুদি ও ৩ জন জাতিসংঘের প্রতিনিধির সমন্বয় গঠিত একটি কমিটি ফিলিস্তিনের ধারণ ক্ষমতার প্রতি লক্ষ্য রেখে আগামী ৩ বছর ইহুদি প্রবেশের অনুমতি দিবে। অস্ট্রেলিয়া কোন পক্ষাবলম্বনে বিরত ছিল। ১৯৪৭ সালের শেষের দিকে জাতি সংঘের সাধারণ পরিষদের একটি বিশেষ এডহক কমিটিতে উভয় পরিকল্পনার উপরই বিস্তারিত আলোচনা ও বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয় ।
১৯৪৭ সালের ২৯ নভেম্বর সাধারণ পরিষদের দুই তৃতীয়াংশ ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিকল্পনাটি পাশ হয়ে যায়। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ৩৩টি রাষ্ট্র। বিপক্ষে ভোট দেয় ১৩টি রাষ্ট্র এবং ১০টি রাষ্ট্র ভোট দানে বিরত ছিল। আরবরা অভিযোগ করে যে ফিলিস্তিন বিভক্তির পরিকল্পনাটি পাশের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রের উপর তার প্রভাবকে কাজে লাগায়। যখন দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত হয় তখনই প্রস্তাবটি ভোটের জন্য প্রেরণ করে। প্রস্তাবটি পাশের পূর্বেই ব্রিটেন ১ আগস্ট ১৯৪৮ এর মধ্যে ফিলিস্তিন হতে ম্যান্ডেটরি শাসন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। ম্যান্ডেটরি শাসন প্রত্যাহারের দুই মাসের মধ্যে যাতে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করা যায় সেজন্য সাধারণ পরিষদ ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিশন গঠন করে। এবং এ কমিশনকে সহযোগিতার জন্য নিরাপত্তা পরিষদকে অনুরোধ করে ৷
ইরগান, স্টার্ন গ্যাং সহ কিছু কট্টরপন্থী ইহুদি গ্রুপ ছাড়া অধিকাংশ ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠ পার্টি পরিকল্পনাটি সমর্থন করে। কেননা এতে তাদের জন্য একটি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রস্তাব করা হয়েছে। সঙ্গত কারণেই আরবরা সংখ্যালঘু পরিকল্পনাটি সমর্থন করে। কেননা এতে একটি অবিভক্ত ফিলিস্তিনের কথা বলা হয়েছে এবং ইহুদি অভিবাসন সীমিত করার কথা বলা হয়েছে। এ পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হলে রাষ্ট্রক্ষমতা সংখ্যাগরিষ্ঠ আরবদের হাতেই থাকার সম্ভাবনা ছিল । কেননা ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনের মোট জনসংখ্যার ৬৭ ভাগ ছিল আরব এবং ৩৩ ভাগ ইহুদি। আরবদের বিরোধীতার আরেকটি কারণ হচ্ছে প্রস্তাবিত আরব রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত ভূ-খণ্ড ছিল অনুর্বর, অধিকাংশ ভূ-খণ্ডই ছিল সমুদ্র থেকে বিচ্ছিন্ন এবং আরব জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশ প্রস্তাবিত ইহুদি রাষ্ট্রের সীমানার মধ্যে বসবাস করত। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হলে তারা একটি ইহুদি রাষ্ট্রে সংখ্যালঘু নাগরিকের মর্যাদা নিয়ে বাস করতে বাধ্য হত। এ ছাড়া সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিকল্পনাটিতে প্রস্তাবিত আরব রাষ্ট্রকে ফিলিস্তিনের মোট ভূ-খণ্ডের শতকরা মাত্র ৪৩.৫৩ ভাগ (জেরুজালেম ছাড়া আয়তন ৪,৫০০ বর্গমাইল) প্রদানের সুপারিশ করা হয়। প্রস্তাবিত আরব ও ইহুদি রাষ্ট্রে বসবাসরত জনসংখ্যা ছিল নিম্নরূপ :


ফিলিস্তিন
২৮৭
জাতিসংঘে পাশকৃত সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিকল্পনা অনুযায়ী ফিলিস্তিনে বসবাসরত
জনসংখ্যা নিম্নরূপ :
অঞ্চল
আরবজনসংখ্যা % আরব ইহুদি জনসংখ্যা % ইহুদি
মোট জনসংখ্যা
আরব রাষ্ট্র ৭,২৫,০০০ ৯৯%
১০,০০০

৭,৩৫,০০০
ইহুদি রাষ্ট্র ৪,০৭,০০০ ৪৫% আন্তর্জাতিক ১,০৫,০০০ ৫১%
৪,৯৮,০০০
৫৫.০০%
৯,০৫,০০০
১,০০,০০০ ৪৯%
২,০৫,০০০
মোট
১২,৩৭,০০০ ৬৭%
৬,০৮,০০০

১৮৪৫০০০
এ পরিকল্পনায় আরবদের মনোভাব ও এ্যাংলো মার্কিন মনোভাব বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। উল্লেখ্য যে, পরিকল্পনাটি পাশের পরপরই আরবরা ফিলিস্তিনি বিভক্তির বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করে। তারা জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত প্রস্তাবটির আইনগত বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাদের মতে জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী সাধারণ পরিষদ কেবল সুপারিশ করতে পারে কোন সিদ্ধান্ত বাধ্যতামূলকভাবে চাপিয়ে দিতে পারে না। তারা ফিলিস্তিনে ৩ দিনের হরতাল আহবান করে । অন্যদিকে ইহুদি সামরিক ও আধা-সামরিক দলগুলি আরব বসতিগুলির উপর আক্রমণ করে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফিলিস্তিনি আরবদের রক্ষা করার জন্য পাশ্ববর্তী আরব দেশগুলো হতে বেশ কিছু আরব স্বেচ্ছাসেবী ফিলিস্তিনে প্রবেশ করে। ফলে সংঘর্ষ ক্রমশ তীব্র হতে তীব্রতর আকার ধারণ করে। এমতাবস্থায় ১৯৪৮ সালের ১ জানুয়ারি ব্রিটেন ঘোষণা দেয় যে যেহেতু আবর ও ইহুদিরা পরিকল্পনাটির ব্যাপারে একমত পোষণ করে নি সেহেতু পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে তারা জাতিসংঘকে সহযোগিতা করবে না। ব্রিটেন তার পূর্ব ঘোষিত ১ আগস্টের বদলে ১৯৪৮ সালের ১৫ মে এর মধ্যে ফিলিস্তিন হতে ম্যান্ডেটরি শাসন প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘোষণা দেয়। এবং এর পূর্বে জাতিসংঘ কমিশনকে ফিলিস্তিনে প্রবেশ না করার কথা বলে ।
আরবদের তীব্র বিরোধীতা মার্কিন নীতিতেও পরিবর্তন আনে। ১৯ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদে ঘোষণা করে যেহেতু ফিলিস্তিন বিভক্তির পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না সেহেতু ফিলিস্তিনকে আপাতত জাতিসংঘের অছি পরিষদের উপর ন্যাস্ত করা হোক। ইহুদিরা যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রস্তাবের তীব্র বিরোধীতা করে। ১৯৪৮ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে ১৫মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আরেকটি বিশেষ অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবটির উপর আলোচনা হয় এবং তা সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়। বিশেষত সোভিয়েত ইউনিয়ন পূর্ব পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেয় ।
মাত্র একটি ধর্মীয় পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত হতে থাকে। এরপর আব্বাসীয় রাজবংশের (৭৫০-১২৫৮) রাজধানী হয় বাগদাদ। মোঙ্গলদের দ্বারা বাগদাদ নগরী ধ্বংস হওয়ার পর খেলাফত আর আরবদের হাতে ফিরে আসে নি। পরবর্তীতে ১৫১৭ সালে ওসমানিয় তুর্কিদের নেতৃত্বে ইসলামি বিশ্বের শেষ বড় সাম্রাজ্যটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সাম্রাজ্যের কেন্দ্রবিন্দু ছিল কনস্টান্টিনোপল । প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত আরবীয় উপদ্বীপ তথা বর্তমান সউদি আরবের অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলসমূহ কনস্টান্টিনোপল থেকেই শাসিত হত । তুর্কি শাসনামলে এ অঞ্চল কোন ব্যক্তি বা বংশের শাসনাধীনে ছিল না। বিভিন্ন বংশ তুর্কিদের প্রতি আনুগত্য বজায় রেখে নিজ নিজ অঞ্চল শাসন করত । উত্তর আরব তুর্কিদের করদমিত্র রশীদী বংশের অধীনে ছিল। হিজাজ, নজদ ও আল হাসা নিয়ে গঠিত ছিল মধ্য আরব। ওসমানিয় সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে হিজাজে মক্কার হাশেমি বংশের প্রতিপত্তি ছিল। দশম শতাব্দী থেকেই তারা মক্কায় শাসন করে আসছিল। নজদে ওহাবি মতবাদের অনুসারি সউদ বংশ ছিল প্রভাবশালী। পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত আল হাসা এবং লোহিত সাগর তীরবর্তী আসিরও ছিল তুর্কি সাম্রাজ্যের অংশ। দক্ষিণ আরবের ইয়েমেন ছিল তুর্কি সাম্রাজ্যের অন্যতম প্রদেশ এবং জায়েদি ইমামদের দ্বারা শাসিত। আরবিয় উপদ্বীপের হিজাজ, নজদ ও আসির অঞ্চল নিয়ে বর্তমান সউদি আরব রাজ্য গড়ে ওঠে বিশ্ববিখ্যাত মক্কা ও মদীনা শহর সউদি আরবেই অবস্থিত। এ দুটি স্থানে যথাক্রমে কাবাশরীফ ও হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মাজার শরীফ রয়েছে।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]