আলাউদ্দিন খলজীর মূল্যনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পর্যালোচনা করুন।


আলাউদ্দিন খলজীর রাজত্বকালের বৈশিষ্ট্য
আলাউদ্দিন খলজী ছিলেন তৎকালীন যুগের শক্তিশালী শাসকের এক উলে খযোগ্য দৃষ্টান্ত। আলাউদ্দিনের -
রাজত্বকালের তিনটি বৈশিষ্ট্য স্থায়ী গুরুত্ব অর্জন করেছে। প্রথমত: দিল্লির মুসলমান শাসকদের মধ্যে তিনিই
সর্বপ্রথম ভারতের বৃহত্তর অংশ নিয়ে একটি সাম্রাজ্য গঠন করেন। দ্বিতীয়ত: যে তুর্কি সাম্রাজ্য এতোদিন
পর্যন্ত ছিল কেবল কতকগুলো ‘সামরিক জায়গীর' এর সমবায়, আলাউদ্দিন তার শাসনব্যবস্থায় কিছু
পরিমাণে সংহতি সাধন করেন। তৃতীয়ত: আলাউদ্দিন রাষ্ট্রের সঙ্গে ইসলামি আইনের সম্পর্ক নির্ধারণের
ক্ষেত্রে নতুন বলিষ্ঠ নীতি প্রবর্তন করেন এবং সংস্কার কর্মসূচির দিক থেকে উলে খযোগ্য অবদান রাখেন। -
প্রশাসনিক সংস্কার
মধ্যযুগীয় রীতি অনুযায়ী রাজতন্ত্রের ওপর অভিজাত শ্রেণী এবং উলামাদের প্রভাব ছিল সর্বময়। আমীর,
মালিক প্রভৃতি অভিজাত শ্রেণীর মানুষ ছিলেন রাজনৈতিক পদাধিকারবলে সুবিধাভোগী শ্রেণী এবং প্রবল
কর্তৃত্বের অধিকারী। নব প্রতিষ্ঠিত দিল্লি সালতানাতের রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির উৎসভূমি এই শ্রেণীর
বিরুদ্ধাচরণ করার ক্ষমতা বা সাহস আলাউদ্দিন খলজীর পূর্ববর্তী শাসকদের ছিলনা। বলবনও শ্রেণী হিসেবে
অভিজাতদের মর্যাদা খর্ব করতে চাননি। কিন্তু আলাউদ্দিন খলজী দৃঢ়ভাবে অভিজাত শ্রেণী এবং উলামাদের
রাজনৈতিক কর্তৃত্ব অস্বীকার করে রাজতন্ত্রকে একটি নতুন মর্যাদা দেন। বলবনের মতো সুলতান
আলাউদ্দিনও শাসনকার্যে দক্ষতা ফিরিয়ে আনেন। তিনি নি:সন্দেহে সুচতুর সমরকুশলী ছিলেন এবং
সমরকুশলতার সাথেসাথেশাসনকার্যেও সুচতুর ছিলেন।তিনি প্রথম হতেই কুচক্রী ও বিদ্রোহীদের প্রতি সতর্ক
দৃষ্টি রাখতেন এবং তাদের মূলোৎপাটন করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। তিনি এদের দমন করার জন্য একাধিক
আইন প্রণয়ন এবং কঠোরভাবে তা প্রয়োগ করেন।
আলাউদ্দিন খলজী সুলতানের নিরঙ্কুশ স্বৈরাচারী ক্ষমতার তত্তে¡ বিশ্বাসী ছিলেন। তাই আত্মীয় পরিজন এবং
রাজকর্মচারীদের উপর্যুপরি বিদ্রোহ তাঁকে গভীরভাবে ভাবিয়ে তোলে। তিনি অনুভব করেন যে, প্রচলিত
রাজনৈতিক ও সামরিক ব্যবস্থার মধ্যেই বিদ্রোহাত্মক প্রবণতার বীজ লুকায়িত আছে। তিনি বিভিন্ন সময়
আলোচনার মাধ্যমে সনাক্ত করতে সক্ষম হন যে, বিদ্রোহের চারটি সম্ভাব্য কারণের মধ্যে রয়েছে (১)
প্রজাসাধারণের শুভাশুভ সম্পর্কে সুলতানের অজ্ঞতা; (২) অবাধ মদ্যপানের সুবাদে বিভিন্ন মানুষের একত্রিত
হওয়া এবং মিত্রতাবদ্ধ হয়ে সুলতানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়া; (৩) অভিজাতদের অবাধ মেলা-মেশা,
পারস্পরিক আত্মীয়তা এবং পারিবারিক মিলনসূত্রে সুলতানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে জোটবদ্ধ হওয়া;
এবং (৪) জনগণের হাতে অধিক অর্থ সম্পদ সঞ্চিত হওয়া এবং সেই সূত্রে তাদের মনোবল বৃদ্ধি পাওয়া
এবং প্রচুর অবসরের সুযোগে “অলস মস্তিষ্ককে শয়তানের কর্মশালায়” পরিণত করা ইত্যাদি।



চারটি জরুরি নির্দেশনামা
উপর্যুক্ত কারণগুলো নির্মূল করার উদ্দেশ্যে আলাউদ্দিন খলজী চারটি জরুরি নির্দেশনামা জারি করেন।
প্রথমত: তিনি রাষ্ট্রপ্রদত্ত সমস্ত রকমের ধর্মীয় দান (ওয়াকফ্), অনুদান (মিল্ক), উপহার (ইনাম) ইত্যাদি
হিসেবে প্রদত্ত জমি অধিগ্রহণ করে ‘খালিসা' জমিতে পরিণত করেন। ইতোপূর্বে ইনাম, মিল্ক, ওয়াকফ্
ইত্যাদি সূত্রে সম্পত্তি লাভ করার ফলে বহু পরিবার সম্পদশালী হয়ে উঠেছিল। এমনকি আলাউদ্দিন
খলজীও সিংহাসনে আরোহণ করার সময় এসব খাতে বহু জমি দান করেন। অবশ্য দুএকটি ব্যতিক্রম ছিল।
যেমন ইসামীর বংশধরদের প্রদত্ত দুটি গ্রাম ফিরিয়ে নেয়া হয়নি। তবে সামগ্রিকভাবে এই ব্যবস্থা অনেক
পরিবারের মুখের গ্রাস কেড়ে নেয়। একই সঙ্গে আলাউদ্দিন তাঁর কর্মচারীদের আদেশ দেন যে, আইন
বাঁচিয়ে প্রজাদের কাছ থেকে যতো বেশি সম্ভব অর্থ আদায় করে নেবার ব্যাপারে তাঁরা যেন যতœবান হন।
আলাউদ্দিনের এই ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে দিল্লিতে মালিক, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারী, বণিক ও হিন্দু
ব্যাংকারগণ ব্যতিত খুব কম লোকের হাতেই স্বর্ণ সঞ্চিত ছিল। ফলে জনসাধারণ জীবিকা অর্জনের জন্য
সদাব্যস্ত থাকতে বাধ্য হয় এবং সুলতানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অবকাশ কমে যায়।
দ্বিতীয়ত: আলাউদ্দিন খলজী রাজ্যের গুপ্তচরবাহিনী পুনর্গঠন করেন। তিনি হাট-বাজার এবং অভিজাতদের
আবাস থেকে সমস্ত ধরনের সংবাদ সংগ্রহ করে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে তা সুলতানের কর্ণগোচর করার জন্য
বারিদ, মুনহি, জাসুস নামক অসংখ্য গুপ্তচর নিয়োগ করেন। গুপ্তচর ব্যবস্থার ব্যাপকতার ফলে অভিজাতগণ
সর্বদা সংকুচিত ও সন্ত্রস্ত থাকতেন। এমনকি প্রকাশ্যে তাঁরা নিজেদের মধ্যে মতবিনিময়ের একান্ত প্রয়োজন
হলে মুখে না বলে আকারে ইঙ্গিতে তা ব্যক্ত করতেন। এ ব্যবস্থার ফলে ষড়যন্ত্রের সামান্যতম সম্ভাবনাও নষ্ট
হয়ে গিয়েছিল।
তৃতীয়ত:আলাউদ্দিন খলজী দিল্লিতে মদ্যপান ও মদ প্রস্তুত নিষিদ্ধ করেন। সরকার অনুমোদিত মদ
প্রস্তুতকারকদের দিল্লি থেকে বহিষ্কার করা হয়। সুলতান স্বয়ং মদ্যপান ত্যাগ করেন এবং সমস্ত মদের
বোতল বাদাউন গেটের সামনে এনে ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেন। প্রচলিত আছে, এখানে এতো মদ ঢালা
হয়েছিল যে, বিস্তীর্ণ এলাকা বর্ষাকালের মতো কাদায় পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। অবশ্য মদের চোরাই
আমদানি বন্ধ করার উদ্দেশ্যে এই নির্দেশ কিছুটা সংশোধিত করা হয়। বলা হয় যে, কোন ব্যক্তি
একান্তভাবে নিজের গৃহাভ্যন্তরে আইনানুগভাবেই মদ প্রস্তুত করতে পারতেন। তিনি জুয়া খেলা সমানভাবে
নিষিদ্ধ করেন।
চতুর্থত: আলাউদ্দিন খলজী অভিজাতদের মধ্যে অবাধ মেলামেশা, কোন অনুষ্ঠান উপলক্ষে আনন্দ সভায়
একত্রিত হওয়া এবং সুলতানের অনুমতি ব্যতিত নিজেদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়া নিষিদ্ধ
করেন। বস্তুত, এই নির্দেশের ফলে সমাজ জীবনে বেশ পরিবর্তন সূচিত হয়। তবে অভিজাতদের গোষ্ঠীচক্র
গড়ে ওঠার সম্ভাবনা এই নির্দেশে কিছুটা দূরীভূত হয়।
রাজস্ব নীতি
আলাউদ্দিন খলজী প্রশাসনিক ও সামরিক কর্মসূচির পাশাপাশি সংস্কারমূলক কর্মসূচিও রূপায়িত করার
উদ্যোগ নেন। কৃষিপ্রধান ভারতবর্ষে রাজকোষের আয়ের প্রধান উৎস যে ভ‚মি রাজস্ব, এ বিষয়ে তিনি যথেষ্ট
সচেতন ছিলেন। তিনি পূর্ববর্তী সুলতানদের নীতি পরিহার করেন এবং রাজস্ব ব্যবস্থায় মৌলিক পরিবর্তন
আনার প্রয়োজন অনুভব করেন। কেবল রাজকোষকে সমৃদ্ধ করা নয়; রাজনৈতিক কর্তৃত্ব, সামাজিক
ন্যায়বিচার ইত্যাদির পরিপ্রেক্ষিতেও তিনি রাজস্ব-প্রশাসনের কাঠামোর পরিবর্তনের গুরুত্ব অনুভব করেন।
তিনিই প্রথম রাজস্ব ব্যবস্থায় উলে খযোগ্যভাবে পরিবর্তন ঘটান। -
আলাউদ্দিন খলজী সিংহাসনে আরোহণের সময় প্রচলিত ভুমি ব্যবস্থা অনুসারে কৃষিযোগ্য জমি কয়েকটি
শ্রেণীতে বিভক্ত ছিল। সুলতানের ‘খালিসা' জমির রাজস্ব সরাসরি রাজকোষে জমা পড়তো। দেওয়ান-ই-


উজিরত -এর অধীনে আমিল, কারকুন প্রমুখ কর্মকর্তা এই রাজস্ব সংগ্রহ করতেন। কিছু জমি ‘ইজারা'
হিসেবে ইক্তাদার বা মাক্তিরা ভোগ দখল করতেন। এই জমিকে বলা হতো ইক্তা। মাকতি জমির রাজস্ব
সংগ্রহ করে ইক্তার ব্যয় বাদ দিয়ে উদ্বৃত্ত অংশ কেন্দ্রীয় রাজকোষে পাঠাতে বাধ্য ছিলেন। তবে এই সময়ে
ইক্তা প্রশাসন নানা অজুহাতে সমস্ত রাজস্বই ভোগ করতো।
খুৎ, মুকদ্দম, চৌধুরী নামধারী রাজস্ব সংগ্রাহকবৃন্দ ইক্তার রাজস্ব আদায় এবং কারচুপির কাজে জড়িত
ছিলেন। স্বাধীন হিন্দু রাজাদের অনেকেই সুলতানের বশ্যতা স্বীকার করেছিলেন। এরা দিল্লির আনুগত্য
স্বীকার এবং নিজ নিজ ভ‚খন্ড থেকে আদায়ীকৃত রাজস্বের নির্দিষ্ট অংশ সুলতানের কোষাগারে জমা দেবার
শর্তে কিছু ভূমি ভোগ-দখল করতেন। এ ছাড়া কিছু জমি দান বা উপহার হিসেবে(মিল্ক, ইনাম, ওয়াক্ফ)
জ্ঞানী বা ধার্মিক ব্যক্তিদের বরাদ্দ করা হয়েছিল। বহু সরকারি কর্মকর্তা বা অভিজাতও এরূপ জমি ভোগ
দখল করতেন।
রাজস্ব সংস্কার কর্মসূচি হিসেবে আলাউদ্দিন এক জাওবিৎ জারি করে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, অভিজাত বা
অন্যান্যদের হাতে বরাদ্দ মিলক্, ইনাম, ওয়াকফ্ভুক্ত সম্পত্তি রাষ্ট্রায়ত্ত¡ করে নেন।এগুলো সুলতানের খালিসা
জমির অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং সরকারি সংগ্রাহকদের মারফৎ সরাসরি রাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়।
হিন্দু-মুসলমান, সরকারি বেসরকারি নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর কাছ থেকেই এ ধরনের জমি কেড়ে নেয়া হয়।
অত:পর আলাউদ্দিন গ্রামীণ রাজস্ব সংগ্রাহকদের দিকে নজর দেন।
পূর্বরীতি অনুসারে খুৎ, মুকদ্দম ও চৌধুরীরা নির্দিষ্ট গ্রাম বা গ্রাম সমষ্টির রাজস্ব সংগ্রহ করে তা চুক্তি মতো
রাজকোষে জমা দিতেন। আলাউদ্দিন এ সব রাজস্ব-সংগ্রাহকদের গ্রামীণ-বৈভব ও অসাধুতা সম্পর্কে
অবহিত হয়ে কঠোরভাবে এদের দমন করার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ এসব খুৎ, মুকদ্দম প্রমুখ মহার্ঘ পোশাক
পড়তো, ঘোড়ায় চড়ে শিকার করে বেড়াতো, কিন্তু নিজেদের জমি থেকে এরা খারাজ, জিজিয়া, ঘরী, চরাই
ইত্যাদি খাতে এক জিতলও রাজকোষে প্রদান করতো না। অথচ এরা সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট জমি থেকে
যথারীতি, অনেক ক্ষেত্রে বেশি, ‘খুতি' আদায় করতেন এবং নিজেদের ভোগে লাগাতো। ফলে সাধারণ চাষী
শোষিত হতো, কিন্তু সরকার উপকৃত হতেন না। এই অব্যবস্থা দূর করার উদ্দেশ্যে আলাউদ্দিন কয়েকটি
সংশোধনমূলক আইন জারি করেন।
আলাউদ্দিনের প্রথম জাওবিৎ অনুযায়ী চাষযোগ্য জমি জরিপ করে খুৎ, মুকদ্দম এবং বলহার বা সাধারণ
কৃষককে একই হারে রাজস্ব প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়। রাজস্বের হার নির্দিষ্ট করা হয় উৎপাদনের ৫০
শতাংশ। দ্বিতীয় জাওবিৎ অনুযায়ী ভূমি রাজস্ব ছাড়াও ‘ঘরী' বা গৃহকর, চরাই বা পশুচারণ কর প্রবর্তন
করেন। ‘করহি' নামের একটি করের উল্লেখ পাওয়া যায়, যদিও এর অর্থ সম্পর্কে ঐতিহাসিকেরা নি:সন্দেহ
নন।
গ্রামীণ মধ্যস্বত্বভোগীদের অস্তিত্ব লুপ্ত করার ফলে প্রশাসন পরিচালনার জন্য একদল সুদক্ষ সরকারি রাজস্ব
কর্মকর্তার প্রয়োজন হয়। আলাউদ্দিন এই কাজের জন্য মুহশিল (রাজস্ব-নির্ধারক), আমিল(করসংগ্রাহক),
গোমস্তা (প্রতিনিধি), মুতাশরিফ (হিসাব-পরীক্ষক), দপ্তরী (অফিস কর্মী), নভীসদাস (করণিক) প্রমুখকে
নিয়োগ করেন। পাটোয়ারী বা গ্রামীণ হিসাব রক্ষকের কাছে সমস্ত দলিল-দস্তাবেজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা
হয়।
আলাউদ্দিনের রাজস্ব-ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল জমির পরিমাপ বা জরিপ। সমগ্র রাজ্য জরিপের
অন্তর্ভুক্ত করতে না পারলেও জমির পরিমাপের ভিত্তিতে রাজস্ব নির্ধারণের রীতি প্রবর্তন করে আলাউদ্দিন
খলজী রাজস্বব্যবস্থাকে বিজ্ঞানসম্মত রূপ দেন। তিনিই সর্বপ্রথম জমি জরিপের রীতি প্রবর্তন করেন।
আলাউদ্দিন রাজস্ব আদায় কাজে নিয়োজিত অন্য কর্মীদের অসাধুতা বন্ধ করার বিষয়েও যথেষ্ট সচেতন
ছিলেন। সুলতানের নির্দেশে গোমস্তা, মুতাশরিফ, মুহশিল প্রভৃতি রাজস্ব-কর্মচারীর ওপর তীক্ষè নজর রাখার
জন্য ‘দেওয়ান-ই-মুস্তাকরাজ' নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর খোলা হয়। কোন কর্মচারী তাঁর কাজে ফাঁকি দিলে
কিংবা সংগৃহীত অর্থ রাজকোষে জমা না দিয়ে পুরোপুরি বা আংশিক আতœসাৎ-এর চেষ্টা করলে তাদের ওপর
কঠোর শাস্তি নেমে আসতো।


আলাউদ্দিন তাঁর রাজস্ব নীতির মাধ্যমে খুৎ, মুকদ্দম প্রমুখের শোষণ থেকে সাধারণ কৃষক বা বলাহারদের
রক্ষা করেন। তবে আলাউদ্দিন একটি নির্দেশে বলেন যে, রাজস্ব এমনভাবে আদায় করতে হবে যাতে
কৃষকের খাদ্যশস্য, দুধ, দই ইত্যাদির অভাব না হয়, আবার তাদের হাতে যেন অতিরিক্ত সম্পদও সঞ্চিত
না হয়। তাঁর নীতি অনুসারে দুর্ভিক্ষ বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব রাষ্ট্র বহন করতো। কারণ
দৈনিক খাদ্য-পানীয়ের অতিরিক্ত সঞ্চয় চাষীদের কাছে থাকতো না, যা দিয়ে আপদকালীন অবস্থা তারা
সামাল দিতে পারতো। তথাপি ইতোপূর্বে কখনোই মোট উৎপাদনের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশের বেশি রাজস্ব
হিসেবে আদায় করা হতো না। কিন্তু আলাউদ্দিন এই হার ৫০ শতাংশে উন্নিত করেন। অনেক ঐতিহাসিক
এই বৃদ্ধিকে সুস্থ অর্থনৈতিক চিন্তাপ্রসূত সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন না।
সামরিক সংস্কার
মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ, সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ ও সুদক্ষ শাসনব্যবস্থা স্থাপনই আলাউদ্দিনের সুলতানি
রাজতন্ত্রের চরম সাফল্য। তিনি বুঝেছিলেন, এই সাফল্য নির্ভর করে স্থায়ী এক সুদক্ষ সেনাবাহিনীর ওপর।
তাই তিনি এক সুদক্ষ সেনাবাহিনী গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে সামরিক বাহিনীর সংস্কারে তাঁর সমস্ত শক্তি
নিয়োগ করেন।
আলাউদ্দিন খলজীই দিল্লির প্রথম সুলতান, যিনি একটা স্থায়ী শক্তিশালী সেনাবাহিনীর ভিত্তি স্থাপন
করেছিলেন। দিল্লিতে সদা-সর্বদা যে-কোন প্রয়োজনের জন্য এই স্থায়ী সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা
হয়েছিল। তিনি এই বিশাল সুগঠিত ও সুসংহত সামরিক বাহিনীর জন্যই প্রায় বিশ বছর ধরে নিরঙ্কুশ
একনায়কের মতো বিশাল সাম্রাজ্য পরিচালনায় সক্ষম হয়েছিলেন। তাই আলাউদ্দিন পূর্ববর্তী সামরিক
বিভাগের ত্রুটিগুলো দূর করে সেনাবাহিনীকে নতুন পদ্ধতিতে সংগঠিত ও সামরিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে,
এক নতুন খলজী সামরিক পদ্ধতির গোড়াপত্তন করেন।
সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণের ও সংস্কারের জন্য ‘আরিজ-ই-মমালিক' নামে সামরিক বিভাগের মন্ত্রীকে বিশেষ
ক্ষমতা দেন। সামরিক বিভাগের মন্ত্রী প্রত্যক্ষভাবে প্রতিটি সৈন্য নিয়োগ করতে থাকেন। প্রতিটি রাজকীয়
বাহিনীকে একজন দক্ষ সামরিক অফিসারের কর্তৃত্বে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। আলাউদ্দিনের সেনাবাহিনীতে
দেহরক্ষী, অশ্বারোহী ও পদাতিক এই তিনটি বিভাগ ছিল। এই বাহিনীতে হিন্দু-মুসলমান উভয়কেই নিয়োগ
করা হতো।
আলাউদ্দিন খলজীর সেনাবাহিনীর গঠন ও ব্যবস্থাসমূহ মূলত তুর্কিদের সামরিক ব্যবস্থার আদর্শের ওপর
গড়ে ওঠে। তবে তিনি জায়গীরের পরিবর্তে রাজকোষ থেকে সরাসরি নগদে সৈন্যদের বেতন দেয়ার ব্যবস্থা
করেন। তাঁর মোট ৪,৭৫,০০০ অশ্বারোহী সৈন্য ছিল। প্রত্যেক স্থায়ী সৈন্যকে বছরে ২৩৪ তঙ্কা বেতন
দেয়া হতো। তবে কোন অশ্বারোহী সৈন্য যদি দুটি ঘোড়া রাখতো, তাদের ৭৮ তঙ্কা বেশি দেয়া হতো।
আলাউদ্দিন খলজী সৈন্যবাহিনীতে দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য হুলিয়া ও দাগ প্রথার প্রচলন করেন। নিয়মিত
সৈন্যরা যুদ্ধের সময় হাজিরা না দিয়ে অশিক্ষিত লোকদের বদলী হিসেবে পাঠাতো এবং যুদ্ধের ভাল ঘোড়ার
পরিবর্তে চাষের ঘোড়া পাঠাতো। এই দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য তিনি হুলিয়া ব্যবস্থা দ্বারা খাতায় প্রতি সৈন্যের
দৈহিক বৈশিষ্ট্য লিপিবদ্ধ করেন। ঘোড়ার গায়ে লোহা পুড়িয়ে দাগ দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
অর্থনৈতিক সংস্কার ঃ মূল্যনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা
আলাউদ্দিন খলজী একজন সাম্রাজ্যবাদী শাসক ছিলেন। তিনি বুঝতে পারেন যে, তাঁর বিরাট সাম্রাজ্যের
স্থায়িত্ব বিধানের জন্য বিরাট সৈন্যবাহিনী প্রয়োজন । সুতরাং তিনি সৈন্যবাহিনী পুনর্গঠন করেন। বিশাল
সৈন্যবাহিনীর পাশাপাশি আলাউদ্দিন খলজীকে প্রায় ৫০ হাজার ক্রীতদাস কর্মচারীর ভরণপোষণ করতে
হতো। তিনি সৈন্যবাহিনীর সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের প্রতিও খেয়াল রাখতেন। অধিকন্তু, ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দের পর
আলাউদ্দিন খলজী বেশ কয়েকটি ব্যয়বহুল প্রাসাদ নির্মাণ করেন। এ সব কারণে তাঁর বিপুল অর্থের
প্রয়োজন হয়। এদিকে দাক্ষিণাত্য জয়ের পর দিল্লিতে প্রচুর স্বর্ণ-রৌপ্যের আমদানির ফলে দ্রব্যমূল্য বেড়ে


যায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সৈন্যদের বেতন বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। যদিও তিনি রাজস্বের হার
বৃদ্ধি করেন এবং দেবগিরি হতে বহু অর্থ সংগ্রহ করেন। কিন্তু হিসাব করে দেখা যায় যে বর্ধিত হারে বেতন
দিলে পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে রাজকোষ শূন্য হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় তিনি উপলদ্ধি করেন যে, যদি
জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় তবে সৈন্যবাহিনীর প্রতিজনকে ২৩৪ টাকা হারে বেতন দিলেই
চলবে। কারণ জিনিসপত্রের দাম কম থাকলে এই টাকায় সৈন্যরা তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহ করতে
পারবে। আলাউদ্দিন খলজী মূলত তাঁর বিশাল সৈন্যবাহিনীর স্বার্থেই মূল্য নিয়ন্ত্রণ প্রথার প্রচলন করেন।
সুলতান আলাউদ্দিনের সময় যুদ্ধ-বিগ্রহ লেগেই থাকতো; স্বভাবতই যুদ্ধের সময় ব্যবসায়ীদের মালপত্র আনা
নেয়ার বিশেষ অসুবিধা হতো। মোঙ্গল আক্রমণের সময় মুলতানের শস্য-বিক্রেতারা দিল্লিতে আসতে
পারতো না এবং এই কারণে দিল্লির শস্যের বাজার প্রায়ই উর্ধ্বগামী থাকতো। সুলতান এটি বিশেষভাবে
অনুধাবন করেন এবং এই অসুবিধা দূর করার জন্য তিনি দুটি পন্থা অবলম্বন করেন। প্রথমত: তিনি দিল্লি ও
এর আশেপাশে রাজকীয় শস্যভান্ডার নির্মাণ করে সেখানে খাদ্যশস্য মজুদ করতেন, যাতে অভাবের সময়
কম মূল্যে ঐ খাদ্যশস্য বাজারে ছাড়া যায় এবং দ্বিতীয়ত: তিনি বাজারদরও নির্ধারণ করে দেন। অভাবের
সময় তিনি খাদ্যশস্য বন্টন ও সীমিত করে দেন অর্থাৎ নির্ধারিত পরিমাণের বেশি কেউ ক্রয় করতে পারতো
না। অবশ্য অন্যান্য সময়ে জনসাধারণ ইচ্ছামতো কেনাবেচা করতে পারতো।
সুলতানের আদেশ মতো খাদ্যশস্য রাজকীয় শস্যাগারে জমা করা হতো। বিভিন্ন এলাকা হতে শস্য
আমদানি করার জন্য ব্যবসায়ীদের অগ্রিম টাকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। দোয়াব এলাকায় জমির
খাজনাস্বরূপ শস্য আদায় করতে সুলতান নির্দেশ দেন। বিভিন্ন প্রকারের খাদ্য-শস্য, কাপড়-চোপড়, ঘোড়া
এবং অন্যান্য গৃহপালিত পশু, এমনকি দাসদাসীও বাজারদর নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতাভুক্ত হয়। এই আইন
যথাযথভাবে পালনের জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয় এবং আইন ভঙ্গকারীদের কঠোর শাস্তি
দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এই আইন যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে কিনা তা তদারক করার জন্য সুলতান
একটি বিশেষ গোয়েন্দা বাহিনী নিয়োগ করেন।
বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করা হয়। সকল ব্যবসায়ীকে রেজিস্ট্রি করা
হয় এবং তাদের পরিবারের দিল্লিতে বসবাস বাধ্যতামূলক করা হয়। বাজারদর নিয়ন্ত্রণ এবং বাজার তদারক
করার জন্য সুলতান আলাউদ্দিন খলজী ‘দিওয়ান-ই-রিয়াসাত' এবং ‘শাহানা-ই-মন্ডি' উপাধিধারী দুজন
উচ্চপদস্থ অফিসার নিযুক্ত করেন। তাদের অধীনে আরও অসংখ্য নিম্ন বেতনভুক্ত কর্মচারী নিযুক্ত করেন।
তারা ঘুরে ঘুরে বাজার পরিদর্শন করতো এবং আইন ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতো।
সুলতান কর্তৃক আইন প্রণয়নের ফলে জিনিসপত্রের দাম কমে যায়। একটি প্রথম শ্রেণীর ঘোড়া ১০০ টাকা
হতে ১২০ টাকায় পাওয়া যেতো। একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর ঘোড়া ৮০ হতে ৯০ টাকায় এবং একটি ৩য় শ্রেণীর
ঘোড়া ১০ হতে ২৫ টাকার মধ্যে পাওয়া যেতো। একটি গাভীর দাম ছিল ৪ থেকে ৫ টাকা। অনুরূপভাবে
সব ব্যবহার্য জিনিসের দাম কম ছিল। খাদ্যশস্যের দাম মণ প্রতি নির্দিষ্ট ছিল এবং কোন ব্যবসায়ীই তা
অমান্য করতে পারতো না। সুলতান নিজেও মাঝে মাঝে বাজার তদারক করতেন। তিনি কারও কারও
মাধ্যমে বাজার দর পরীক্ষার জন্য বাজার থেকে জিনিসপত্র ক্রয় করাতেন। জিনিসপত্রের ওজন কম হলে বা
দাম বেশি হলে সুলতান দিওয়ান ও শাহানাকে সতর্ক করে দিতেন এবং অপরাধীর বিচারের ব্যবস্থা
করতেন।
আলাউদ্দিন খলজী তাঁর মূল্য নিয়ন্ত্রণ নীতিকে কার্যকরী করার জন্য মালিক কাবুলকে শাহানা-ই-মন্ডির
দায়িত্ব দেন। এই সৎ কর্মচারীটি তার সহকারীদের সাহায্যে মূল্য তালিকা স্থির করতেন, ব্যবসায়ীদের নামধামের খবর রাখতেন এবং অশ্বারোহী সৈন্যের দ্বারা বিদ্রোহী কৃষকদের খাদ্য বিক্রি করতে বাধ্য করতেন।
আলাউদ্দিন খলজীর মূল্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ফলাফল সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ আছে।
মতভেদের প্রধান কারণ হলো, সুলতান সারা সাম্রাজ্যে এই নীতি প্রবর্তন করতে পারেননি। এই নীতি শুধু
দিল্লি এবং এর আশেপাশের জন্য প্রযোজ্য ছিল। ফলে অন্যান্য অঞ্চলে এটি বাস্তবায়নের জন্য গৃহীত
পদক্ষেপের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল Ñ এটাই স্বাভাবিক। কেননা কৃষক এবং ব্যবসায়ী তাঁরা
উৎপাদন এবং বাণিজ্য কার্য পরিচালনা করে থাকে অধিক লাভের আশায়। সঙ্গত কারণেই তারা ছিল ক্ষুব্ধ;


তেমনি ভাবে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত জনগণও তুষ্ট ছিলনা এটাই স্বাভাবিক। কারণ দিল্লির অধিবাসীদের
মঙ্গল সাধন করে সকল মানুষের মঙ্গল কামনা করা সুলতানের পক্ষে সম্ভবপর ছিল না। তারপরেও মধ্য
যুগের পরিস্থিতিতে আলাউদ্দিন খলজীর ব্যবস্থা অভিনব ছিল সন্দেহ নেই। এই নীতি প্রবর্তনের মাধ্যমে
তিনি মুদ্রাস্ফীতি রোধ করতেও সক্ষম হন।
সারসংক্ষেপ
দিল্লির মুসলমান শাসকদের মধ্যেআলাউদ্দিন খলজী সংস্কারক হিসেবে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসনিক দিক থেকে আলাউদ্দিন অভিজাত শ্রেণী এবংউলামাদের কর্তৃত্ব অস্বীকার করেন। তিনি
ছিলেন সুলতানের নিরঙ্কুশ স্বৈরাচারী ক্ষমতায় বিশ্বাসী। তিনি চারটি জরুরি নির্দেশনাও জারি করেন।
রাজস্ব ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধন আলাউদ্দিনের অবদান। তিনি জমি জরিপ এবং রাজস্ব
আদায়ের জন্য সরকারি কর্মচারি নিয়োগ করেন। এ কাজে তিনি কঠোর শাস্তিরও প্রবর্তন করেন।
মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ, সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ ও সুদক্ষ শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই আলাউদ্দিনের
সুলতানি রাজতন্ত্রের চরম সাফল্য। সামরিক বিভাগে তিনি কার্যকর সংস্কার সাধন করেন। তাঁর
প্রবর্তিত হুলিয়া ব্যবস্থা ও দাগপ্রথা কার্যকর হয়। আলাউদ্দিন খলজীর মূল্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ছিল এক
অভিনব পরীক্ষা-নিরীক্ষা। অবশ্য এ ব্যবস্থার মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতি রোধ করাও সম্ভব হয়েছিল।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ঃ
সঠিক উত্তরের পাশে (√) চিহ্ন দিন।
১। আলাউদ্দিন খলজী বিশ্বাসী ছিলেনÑ
(ক) গণতান্ত্রিক ক্ষমতায় (খ) প্রজাহিতৈষী স্বৈরাচারী ক্ষমতায়
(গ) নিরঙ্কুশ স্বৈরাচারী ক্ষমতায় (ঘ) রাজতান্ত্রিক ক্ষমতায়।
২। ‘মুহশীল' কারা ছিলেন?
(ক) রাজস্ব নির্ধারক (খ) হিসাব পরীক্ষক
(গ) করণিক (ঘ) অফিস কর্মী।
৩। ‘ঘরী' অর্থকী?
(ক) পশুচারণ কর (খ) যুদ্ধ কর
(গ) গৃহকর (ঘ) বাণিজ্য কর।
৪। আলাউদ্দিন খলজীর স্থায়ী সৈন্যের বেতন ছিলÑ
(ক) ২০০ তঙ্কা (খ) ২১৪ তঙ্কা
(গ) ২৩০ তঙ্কা (ঘ) ২৩৪ তঙ্কা।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ঃ
১। আলাউদ্দিন খলজীর প্রশাসনিক সংস্কার আলোচনা করুন।
২। আলাউদ্দিন খলজীর চারটি জরুরি নির্দেশনামা বর্ণনা করুন।
রচনামূলক প্রশ্ন ঃ


১। সংস্কারক হিসেবে আলাউদ্দিন খলজীর মূল্যায়ন করুন।
২। আলাউদ্দিন খলজীর মূল্যনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পর্যালোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]