বাংলার ভৌগোলিক পরিচয়ঃ


বাংলার ভৌগোলিক পরিচয়ঃ (এক)
মানুষের সামগ্রিক কর্মকান্ড ও কীর্তিকলাপ এবং তার অবস্থান ও পরিবেশের মধ্যে এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। তাই ইতিহাস ও ভূগোলের মধ্যে এক নিবিড় যোগসূত্রের কথা সবাই স্বীকার করেছেন ।  মানুষের অতীত কার্যক্রমের ভৌগোলিক পরিমণ্ডল নির্ধারণ করা তাই আবশ্যক। এই আবশ্যকতা একাধারে স্বীকার করেন ভূগোলবিদ এবং ইতিহাসবিদ। তবে স্ব স্ব বিদ্যার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়ের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গির বিভিন্নত রয়েছে ।
> ইমানুয়েল কান্টের মতামত অনেকখানি এই কার্যক্রমের দলিল হিসেবে আর ভূগোলকে দেখেছেন মানুষের আবাসিক পরিমণ্ডলের পরিবর্তনের নিদর্শন হিসেবে। যেহেতু মানুষের কর্মকাণ্ড এক বিশেষ ভৌগোলিক পরিবেশে সংঘটিত হয়, তাই ভূগোলই ইতিহাসের ভিত্তি ।
>বাংলা বলতে কোন ভূখণ্ডকে বোঝাতো তা স্পষ্ট করে নেওয়া প্রয়োজন। । ইতিহাসের দৃষ্টিতে এই ভূখণ্ডের একটি আঞ্চলিক সত্তা ছিল এবং ভৌগোলিকগণও এই উপমহাদেশের মধ্যে বাংলা’কে একটি ভৌগোলিক অঞ্চল বলে স্বীকার করেছেন । প্রায় ৮০,০০০ বর্গমাইল বিস্তৃত নদী বিধৌত পলি দ্বারা গঠিত এক বিশাল সমভূমি এই বাংলা । এর পূর্বে ত্রিপুরা, গারো ও লুসাই পর্বতমালা; উত্তরে শিলং মালভূমি ও নেপাল তারাই অঞ্চল; পশ্চিমে রাজমহল ও ছোটনাগপুর পর্বতরাজির উচ্চভূমি এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। এই বিস্তৃত সমভূমির দক্ষিণ দিক সাগরাভিমুখে ঢালু এবং গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনার জলরাশি দ্বারা বয়ে আনা বিপুল পরিমাণ পলি সাগরে উৎসারিত হচ্ছে।
মূদ্রোপকূলবর্তী নিম্নভূমি জঙ্গলাকীর্ণ। এর পেছনেই প্রায় পঞ্চাশ হাজার বর্গমাইল সমভূমি, যার গঠনে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা প্রবাহের অবদান রয়েছে। এই বিস্তৃত সমতলভূমির মধ্যে ত্রিপুরা অঞ্চল (৩০০০ বর্গমাইল) নিকটবতী প্লাবন ভূমির তুলনায় গড়ে ৬ ফুট উচু এবং এর মাঝামাঝিই রয়েছে ময়নামতি পাহাড়। সিলেট অঞ্চলেও গড়ে প্রায় ১০ ফুট উচু এবং এরই দক্ষিণ সীমায় অবস্থিত প্লাইস্টোসিন যুগে সুগঠিত মধুপুর উচ্চভূমি। এই উচ্চভূমির উত্তর-পশ্চিম বিস্তৃতিই হচ্ছে বরেন্দ্র’ বা বারিন্দ' এলাকা। ব্ৰহ্মপুত্র নদী (যমুনা প্রবাহ) বরেন্দ্রের পূর্ব সীমা এবং এর প্রবাহই এই উচ্চভূমিকে মধুপুরের উচ্চভূমি থেকে ভাগ করেছে। পশ্চিমে রাজমহল ও ছোট নাগপুর পাহাড় সংলগ্ন উত্তর থেকে দক্ষিণাভিমুখে বিস্তৃত প্লাইস্টোসিন ভূভাগ রয়েছে।
>নীহাররঞ্জন রায়ের ভাষায়: ‘এই প্রাকৃতিক সীমাবিবৃত ভূমিখণ্ডের মধ্যেই প্রাচীন বাংলার গৌড়-পুন্ড-বরেন্দ্রী-রাঢ়া-সুহ্ম-তাম্রলিপ্তি-সমতট-বঙ্গ-বঙ্গাল-হরিকেল প্রভৃতি জনপদ; ভাগীরথী-করতোয়া-ব্রহ্মপুত্র-পদ্মা-মেঘনা এবং আরও অসংখ্য নদনদী বিধৌত বাংলার গ্রাম, নগর, প্রান্তর, পাহাড়, কান্তার। এই ভূখণ্ডই ঐতিহাসিক কালের বাঙালির কর্মকৃতির উৎস এবং ধর্ম-কৰ্ম-নর্মভূমি। একদিকে সুউচ্চ পর্বত, দুই দিকে কঠিন শৈলভূমি আর একদিকে বিস্তীর্ণ সমূদ্র মাঝখানে সমভূমির সাম্য—ইহাই বাঙালির ভৌগোলিক ভাগ্য’ ।
ইংরেজ শাসনকালের ‘বেঙ্গল’(Bengal), যা ১৯৪৭ পর্যন্ত প্রযুক্ত ছিল, উপরে আলোচিত ভূখণ্ডকেই বোঝাতো। ইংরেজদের ‘বেঙ্গল অন্যান্য ইউরোপীয়দের (বিশেষ করে পর্তুগীজদের) বেঙ্গালা থেকেই নেওয়া হয়েছে।
ই নামটিই তারা আধিপত্য বিস্তারের সময় পেয়েছিল বা এই ভূভাগ ইউরোপীয়দের কাছে এই নামেই পরিচিত ছিল। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকে ইউরোপীয়দের লেখনীতে ‘বেঙ্গালা’ নামে দেশের উল্লেখ পাওয়া যায়।
সীজার ফ্রেডারিক (১৫৬৩-১৫৮১) ‘বেঙ্গালা’ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত চাটিগামের ১২০ মাইল দূরে অবস্থিত সোন্দিব দ্বীপের উল্লেখ করেছেন।
দুজারিক (১৫৯৯) প্রায় ২০০ লিগ উপকূল বিশিষ্ট বেঙ্গালা’ দেশের উল্লেখ করেছেন। স্যামুয়েল পর্চাস (১৬২৬)-এর বর্ণনায়ও বেঙ্গালা’ রাজ্যের উল্লেখ রয়েছে।
স্যামুয়েল ফিচ (১৫৮৬) 'বেঙ্গালা দেশে চাটিগান', 'সতগামী (সপ্তগ্রাম), হুগেলি (হুগলি) এবং তাভা (রাজমহলের নিকটবর্তী) শহরের উল্লেখ করেছেন।

FOR MORE CLICK HERE

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]