প্রাচীন কাল থেকে বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে পরিচিত হয়ে আসছে।এর কারন মাটির উর্বরতা, অনুকুল আবহাওয়া,শস্যের প্রাচুর্যেতা ইত্যাদি।
ভুপ্রকৃতি,অধিবাসী,তিহাস,সমাজ,সংস্কৃতি এই সমস্ত ক্ষেত্রে এই দেশের বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়।
বাংলাদেশ প্রধানত সমভুমি হলপও এই দেশে বৈচিত্র্যময় ভৌগোলিক পরিবেশ লক্ষ্যনীয়।ভূপ্রকৃতি অনুসারে বাংলাদেশকে ৫ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।
১)প্রত্যন্ত অঞ্চলের পার্বত্যভুমিঃ
হিমালয়ের পার্বত্য সানুদেশ এবং গারো খাসিয়া পর্বতশ্রেনী দেশের উত্তরাঞ্চলের পার্বত্যভুমি গঠন করেছপ।প্রধানত জয়ন্তিয়া কাছার পার্বত্য ত্রিপুরা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পর্বতশ্রেনী দেশের পুর্বাঞ্চলে অবস্থিত।চট্টগ্রামের পর্বতশ্রেনী সমুদ্রের তটরেখা বরাবর দেখা যায়।প্রধানত বালু ও পাললিক শিলা দ্বারা এই অঞ্চল গঠিত।সাওতাল,পাঞ্চেট,রামগড়,বাকুরা পর্বতশ্রেনী এই পার্বত্যঅঞ্চলে অবস্থিত।
২)প্রাচীন শিলাবিন্যাস দ্বারা গঠিত অনুচ্চ পার্বত্যভুমি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যায়।এই উচ্চভুমি লালমাটি ও ভঙ্গুর শিলা দ্বারা গঠিত। বীরভুম-বর্দ্ধমানের রাঢ,রাজশাহী দিনাজপুরের বরেন্দ্র,ঢাকা ময়মনসিংহের ভাওয়াল মধুপুর,বৃহত্তর কুমিল্লার লালমাই ময়নামতি এবং চট্টগ্রামের দেয়াঙ্গ আনোয়ারা পার্বত্য অঞ্চল এই শিলার দ্বারা গঠিত।প্রাচীন যুগে এই সমস্ত অঞ্চল বৃক্ষরাজি দ্বারা পরিপুর্ন ছিল।প্রবল বৃষ্টিপাত ও প্লাবনের ফলে শিলাস্তর ক্ষয় প্রাপ্ত হয়ে পৃষ্টভাগ বালি ও উপলখন্ডের রুপ লাভ করেছে।
৩) মধ্যভারতের গন্ডোয়ানা ভুভাগ দক্ষিনপশ্চিম বাংলার প্রান্তভাগ স্পর্শ করেছে।ভৌগোলিক দিক দিয়ে গান্ডোয়ানা বিশ্বের প্রাচীনতম ভুখন্ডসমুহের অন্যতম।প্রকৃতপক্ষে দক্ষিনপশ্চিম বাংলার উচ্চভুমি গান্ডোয়ানা ভুভাগের অন্তর্গত ছোটনাগপুর মালভুমির ঢালু বৃস্তিতি মনে করা যেতে পারে।
৪) নদীবাহিত পলিমাটি দ্বারাই বাংলার অধিকাংশ অঞ্চল গঠিত।এই ভুৃমিগঠন প্রক্রিয়া যুগ যুগ ধরে চলছে।প্রকৃতপক্ষে সমগ্র বাংলাদেশই একটি বিস্তীর্ন সমভুমি।এই সমভুমি দুইভাগে বিভক্ত।(ক) প্রত্যন্ত অঞ্চলের পর্বতশ্রেনী হতে উৎপন্ন অসংখ্য ক্ষুদ্র ও বৃহৎ নদীসমুহের নিম্ন অববাহিকায় পলিগঠিত সমতল অঞ্চল।
খ)গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চল।
৫)দক্ষিনবঙ্গের সমুদ্রতটবর্তী অঞ্চল।বাংলার দক্ষিনাংশে দীর্ঘ তটভুমি অবস্তিত।এইসমুদ্র তটাঞ্চলে অসংখ্য খাড়ী দেখা যায়।প্রাচীনযুগে বর্তমান চব্বিশ পরগনা ও খুলনার দক্ষিনাঞ্চলে খাড়িমন্ডল নামে পরিচিত ছিল।এই সমুদ্রতট দক্ষিনাংশে ক্রমসম্প্রসারনশীল।জনজীবনে প্রভাবঃ
দেশের মৃদু ও নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু প্রকৃতিগতভাবে বাঙ্গালী অধিবাসীদের করেছে শান্ত প্রকৃতিী এবং অমায়িক।স্নিগ্ধ কোমল অন্তকরনের চমৎকার আবেগময়তা তাদের পারিবারিক জীবন ও সামাজিক সম্পর্ককে করেছে মধুময় স্বজনদের জন্য তাদের অপরিমিত স্নেহমমতা ও প্রেম বাংলাদেশে ব্যাপক পরিমানে একান্নাবর্তী পরিবার প্রথার অস্তিত্বের জন্য দায়ী।এটা তাদের মাঝপ সাধারন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে।দেশের সর্বত্র বিরাজমান সুন্দরী প্রকৃতি তাদের জীবনে এনে দিয়েছে উদার দৃষ্টিভঙ্গি।এই প্রকৃতিই আবার বাঙালি অধিবাসীদের বিশিষ্ট খাদ্য পোষাক পরিচ্ছদ ও গৃহ নির্মান ইত্যাদির জন্য দায়ী।বাংলার সমতলভূমি উৎপন্ন করে চাল আর নদনদী যোগান দেয় প্রচুর মাছ।ফলে ভাত আর মাছ হয়েছে তাদের প্রধান খাদ্য।আবুল ফজল মন্তব্য করেন তাদের প্রধান খাদ্য ভাত আর মাছ; গম বার্কে ও এ ধরনের খাদ্য তারা সুস্বাদু মনে করত না।
বৃষ্টি বাদল প্রধানত নিয়ন্ত্রন করেছে তাদের পোশাক পরিচৃছদ এবং গৃহ নির্মান প্রনালী বাংলার সাধারন অধুবাসীরা যে ধরনের পোশাক পরিধান করে থাকে (ধুতি,লুঙ্গি) তা বছরে ছয়মাসকাল জলপ্লাবিত একটা দেশের পক্ষে খুব উপযোগী। নদনদীর পরিবর্তনশীল প্রকৃতি বৃষ্টি বাদল ও বন্যা পরিপ্রপ্রেক্ষিতে ঢেউতোলা টিন খড়কুটা কাঠ কাদামাটি ও বাশ ইত্যাদি হালকা উপকরনসমুহ ছিল গৃহাদি নির্মানের একমাত্র উপযোগী অবলম্বন।