কনফেডারেশন যুগ বলতে কী বুঝ? কনফেডারেশন গঠনের পটভূমি

কনফেডারেশনের যুগ
আমেরিকার কনফেডারেশন এর সময়কাল হচ্ছে ১৭৮১ খ্রি. হতে ১৭৮৯ খ্রি. পর্যনত্ম। কনফেডারেশন হচ্ছে আমেরিকার স্বাধীনতাকামী ১৩টি উপনিবেশের সম্মিলিত অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রীয় একটি কেন্দ্রীয় মিত্র সংঘ যা স্বাধীনতার পরেও ১৭৮৯ সাল পর্যন্ত কার্যকর ছিল। যে বিধিবিধানের ভিত্তিতে কনফেডারেশনটি গড়ে উঠেছিল তার উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছিল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কেন্দ্রীয় সরকার।
কনফেডারেশন গঠনের পটভূমি
ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনামলে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আমেরিকার জনগণের অভিযোগ ছিল ব্যাপক। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ধীরে ধীরে আমেরিকাবাসী ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আন্দোলনমূখী হয়ে উঠে। ব্রিটিশ সরকারও আমেরিকার বিরুদ্ধে কঠোর নীতি অনুসরণ শুরু করে। ফলে দু'পক্ষের মধ্যে সৃষ্টি হয় ব্যাপক উত্তেজনা । এ অবস্থায় উপনিবেশসমূহ নিজেদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে। তবে এ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয় আমেরিকার অন্যতম উপনিবেশ ম্যাসাচুসেটসকে কেন্দ্র করে। ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ম্যাসাচুসেটস এর সংবিধান সংশোধন করে ১৭৭৩ সালে এ মর্মে একটি আইন পাশ করা হয় যে, আমেরিকার উচ্চপদস্থ কর্মচারিদের নিয়োগের ক্ষমতা ইংল্যান্ডের রাজার হাতে ন্যস্ত থাকবে। সেই সাথে ম্যাসাচুসেটস এর গভর্নরের অনুমতি ব্যতিত যে কোনো জনসভা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এর কিছুদিন পর সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মি. গেজকে ম্যাসাচুসেটস এর নতুন গভর্নর নিযুক্ত করা হয় এবং বিশাল একদল সৈন্য বাহিনীকে ঐ রাজ্যে প্রেরণ করা হয়। ব্রিটিশ সরকারের এ কাজের প্রতিবাদে একমাত্র জর্জিয়া ছাড়া সমস্ত উপনিবেশের প্রতিনিধিগণ ১৭৭৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ফিলাডেলফিয়ায় এক সম্মেলনে মিলিত হয়। এ সম্মেলনের মধ্য দিয়েই আমেরিকা কনফেডারেসি গঠনের প্রক্রিয়া আরম্ভ হয় ।
১৭৭৪ সালে ফিলাডেলফিয়ার ঐ সম্মেলনে জর্জিয়া ব্যতিত অবশিষ্ট উপনিবেশ সমূহের মোট ৫৬ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছিলেন। তবে প্রথম থেকেই এ সম্মেলনে উপস্থিত প্রতিনিধিবর্গ দুটি গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এক গোষ্ঠীতে ছিলেন নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকারীগণ - যাঁরা শক্তি প্রয়োগের দ্বারা আমেরিকায় ব্রিটেন ও তাঁর অভিজাত শাসকবর্গকে প্রতিরোধ করার পক্ষপাতি ছিলেন। এ গোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য নেতা ছিলেন ম্যাসাচুসেটস এর স্যাম এ্যাডামস এবং তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র। ভার্জিনিয়ার প্রতিনিধি প্যাট্রিক হেনরি এবং রিচার্ড হেনরি লি ছিলেন এ গোষ্ঠীর আরো দুজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি। এ নিয়মতান্ত্রিক গোষ্ঠীর সদস্যগণ পূর্বে ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনে এবং উপনিবেশের অভিজাত সম্প্রদায়ের শাসনের বিরুদ্ধে মুখপাত্রের ভূমিকা গ্রহণ করতেন। অপরদিকে ছিলেন নরমপন্থি গোষ্ঠী। এ গোষ্ঠীর অধিকাংশ সদস্যই বিশ্বাস করতেন যে, ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আপোষ মীমাংসার সুযোগ তখন পর্যন্ত একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। নরমপন্থি গোষ্ঠীর অধিকাংশই ছিলেন বিত্তশালী। উপনিবেশিক রাজনীতির রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গিকে তারা সর্বদাই সমর্থন করার পক্ষপাতি ছিলেন। ফিলাডেলফিয়া সম্মেলনে 'সাফোক রিসলভস' (Suffolk Resolves- ১৭৭৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ম্যাসাচুসেটস্ এর সাফোক কাউন্ট্রির রাজনীতিবিদগণ ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সাফোক রিসলভস ঘোষণা করেন) গৃহীত হলে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকারী গোষ্ঠীর প্রাথমিক বিজয়ের সূচনা হয়। এ প্রস্তাবে বলা হয় আমেরিকা ব্রিটিশ প্রদত্ত ‘কোয়ারসিভ এ্যাক্ট' (Coersive Acts- আমেরিকা উপনিবেশ পরিচালনার জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্ট কর্তৃক গৃহীত আইন) মেনে চলতে অস্বীকার করবে। কনভেনশন কর্তৃক এ প্রস্তাব গৃহীত হলে পরোক্ষভাবে সমগ্র প্রতিরোধের নীতির প্রতি সমর্থন জানানো হয়। কিন্তু কনভেনশনের অধিকাংশ সদস্যই যুদ্ধ অনিবার্য বলে স্বীকার করতে সম্মত ছিলেন না। এ সভা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, আমেরিকা গ্রেট ব্রিটেনের সঙ্গে সমস্ত প্রকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তা ও পরিদর্শন কমিটি বণিকগণ যাতে এ নির্দেশ লঙ্ঘন না করে সেদিকে দৃষ্টি রাখবে। এ চুক্তি Continental Association নামে পরিচিত। অন্যদিকে আমেরিকার ব্রিটিশ উপনিবেশগুলিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের মতো নেতৃবর্গ ছিলেন সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত একটা সরকার ব্যবস্থা গঠনের পক্ষে। এর মধ্যে ১৭৭৫ সালে প্রধানমন্ত্রী লর্ড নর্থ ঘোষণা করেন যে, কোনো উপনিবেশ যদি স্বেচ্ছায় ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য অর্থ দিতে প্রস্তুত থাকে তাহলে সেই উপনিবেশটির উপর পার্লামেন্টের আর কোনো কর ধার্য করার অধিকার থাকবে না ।
১৭৭৫ সালের মে মাসে উপনিবেশসমূহের প্রতিনিধিবর্গ দ্বিতীয় বারের মত ফিলাডেলফিয়া শহরে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে। জর্জিয়ার প্রতিনিধিরাও এ সম্মেলনে যোগ দেয়। প্রথম সম্মেলনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের তুলনায় এ সম্মেলনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ অধিকতর নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এদের একজন হলেন বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন এবং অপরজন হলেন টমাস জেফারসন। তেমন কোনো বিরোধিতা ছাড়াই এ মহাসভা ম্যাসাচুসেটস এর অধিবাসীদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন প্রদান করে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভিন্ন উপনিবেশের জাতীয় বাহিনীর দ্বারা উপনিবেশসমূহের সম্মিলিত বাহিনী গঠনের ব্যবস্থা করা হয়। জন এডামসের প্রস্তাব অনুযায়ী ১৭৭৫ সালের ১৫ জুন জর্জ ওয়াশিংটনকে সম্মিলিত বাহিনীর সেনাপতি পদে নিযুক্ত করা হয়। এ মহাসভা একদিকে যুদ্ধ পরিচালনা করে এবং অপরদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব পালন করে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও বাস্তবে উপনিবেশসমূহে ইংরেজ কর্তৃত্বের অবসান ঘটে। রাজকীয় সরকারকে উচ্ছেদ করা হয়, উপনিবেশের আইনসভাগুলি প্রাদেশিক মহাসভার দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং শাসনকার্য পরিচালনার দায়িত্ব কমিটি অব সেফটির উপর ন্যস্ত করা হয়। ফিলাডেলফিয়ার প্রথম সম্মেলনের পর বিভিন্ন শহর এবং কাউন্টিতে যে সব স্থানীয় কমিটি স্থাপিত হয়েছিল, কমিটি অব সেফটির নির্দেশ অনুযায়ী সেগুলি স্থানীয় শাসন পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এভাবে দেখা যায় সম্পূর্ণ নতুন এবং বৈপ্লবিক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ একটি সরকার আমেরিকার তেরটি উপনিবেশেই স্থাপিত হয়। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এবং উপনিবেশবাদীদের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সুস্পষ্টভাবে উপলব্ধি করা যায় যে, ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে আর কোনো সুযোগ সুবিধা মঞ্জুর করা হবে না। ফলে আমেরিকার পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি ক্রমেই আরো জোরদার হয়ে উঠে। ১৭৭৬ সালের ১০ জানুয়ারি প্রবাসী ইংরেজ টম পেইন (Tom Paine) লিখিত 'Common Sense' শীর্ষক একটি ইস্তেহার প্রকাশিত হলে এ দাবি আরো শক্তিশালী হয়ে উঠে। টম পেইন তাঁর ইস্তেহারে আমেরিকায় ব্রিটিশ শাসনকে অবৈধ নির্যাতনমূলক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন একটি দ্বীপ একটি মহাদেশ শাসন করবে তা প্রাকৃতিক নিয়ম বহির্ভূত। তাছাড়া আমেরিকার country' mother ব্রিটেন হলে ব্রিটেন আমেরিকা বাসীর আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণার মহাসভা উপর এত অত্যাচার করতে পারত না, কারণ কোনো মা তার সন্তানকে নির্যাতন করে না। টম পেইন তাঁর এ ইস্তেহারগুলিকে 'Common Sense' নামে আখ্যায়িত করেছিলেন। টম পেইনের এ ইস্তেহার আমেরিকার জনগণকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছিল। এ সকল ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জুন ১৭৭৬ সালে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি তৈরি করা হয় স্বাধীনতার ঘোষণার দলিল রচনার জন্য। কমিটিতে ছিলেন ম্যাসাচুসেটস এর জন এডামস, পেনসিলভানিয়ার বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন, ভার্জিনিয়ার টমাস জেফারসন, নিউইয়র্কের রবার্ট এল লিভিংস্টোন এবং কানেকটিকাট এর রজার সারম্যান। এ কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের খসড়া লিখবেন টমাস জেফারসন। কংগ্রেসে ২৮ জুন এ খসড়াপত্র উত্থাপন করা হয়। ২ জুলাই ভার্জিনিয়ার হেনরি লির প্রস্তাব এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়। অবশেষে ৪ জুলাই ১৭৭৬ সালে আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। আমেরিকার তেরটি রাজ্য থেকে যারা এ ঘোষণা পত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন তাদের মধ্যে নিউ হ্যাম্পাশায়ার এর জন বার্টলেট, জোসেফ হিউয়েস; ম্যাসাচুসেটস এর স্যামুয়েল এডামস, জন এডামস, জন হ্যানকক; রোডস আইল্যান্ড এর স্টিফেন হপকিনস, উইলিয়াম ইলেরি; কানেকটিকাট এর রজার শারম্যান, স্যামুয়েল হাটিংটন; নিউইয়র্ক এর উইলিয়াম ফ্লয়েড, ফিলিপ লিভিংস্টোন; নিউ জার্সি'র রিচার্ড স্টকটন, জন হার্ট, আব্রাহাম ক্লার্ক; পেনসিলভানিয়ার রবার্ট মরিস, বেঞ্জামিন রাস; ডেলওয়ার এর জর্জ রিড, টমাস ম্যাকিন; ম্যারিল্যান্ড এর স্যামুয়েল চেজ, উইলিয়াম পাক; ভার্জিনিয়ার রিচার্ড হেনরি লি, টমাস জেফারসন; উত্তর ক্যারোলাইনার উইলিয়াম হোপার, জন পেন; দক্ষিণ ক্যারোলাইনার এডওয়ার্ড রুটলেজ, আর্থার মিডিলটন; জর্জিয়ার লেম্যান হল, জর্জ ওয়ালটন অন্যতম ।
এ সময় থেকেই মূলত আমেরিকার রাষ্ট্রগুলি মিত্র রাষ্ট্রে পরিণত হতে থাকে। অবশ্য ১৭৭৬ সালের ২০ মে কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপনিবেশগুলিকে নতুন সরকার গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল । আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রীয় কেন্দ্রীয় সরকার গঠিত হয়েছিল কনফেডারেশনের বিধানাবলী অর্থাৎ আর্টিকেলস অব কনফেডারেশন অনুযায়ী। কনফেডারেশনের বিধানাবলীর খসড়া প্রণয়ন করেছিলেন জন ডিকিনসন। তবে রাষ্ট্রগুলির সুবিধার্থে পরবর্তীসময়ে তাতে বহু সংশোধনী আনয়ন করা হয়। ১৭৭৭ সালে মহাসভা (Continental Congress)কর্তৃক এ সংবিধান গৃহীত হয়। অবশ্য ১৭৮১ সালের পূর্বে তা কোনো রাজ্যেই অনুমোদিত হয়নি। কনফেডারেশন অর্থাৎ কেন্দ্রীয় শাসন বিভাগ আমেরিকার বিদেশনীতি, প্রতিরক্ষা, ঋণ গ্রহণ, মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি সহ আরো গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করে। এ সংবিধানে শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার কোনো চেষ্টা করা হয়নি এবং সমস্ত ক্ষমতাই কংগ্রসের উপর ন্যস্ত করা হয়েছিল। কংগ্রেসে তেরটি উপনিবেশের প্রত্যেকটি রাষ্ট্রই একটি ভোট প্রয়োগ করার অধিকার লাভ করে। কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে কমপক্ষে নয়টি ভোটের প্রয়োজন হত।
কনফেডারেশনের আওতায় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মোট ১০ জন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাঁরা হলেন: ১. স্যামুয়েল হান্টিংটন (Samuel Huntington) ২. টমাস ম্যাককিন (Thomas McKean) ৩. জন হ্যানসন (John Hanson) ৪. এলিয়াস বাউডিন (UElias Boudinot) ৫. টমাস মিফলিন (Thomas Mifflin ) কনফেডারেশনের বিধানসমূহ ৬. রিচার্ড হেনরি লি (Richard Henry Lee) ৭. জন হ্যানকক (John Hancock) ৮. নাথানিয়াল গরহাম (Nathaniel Gorham) ৯. আরথার সেন্ট ক্লেয়ার (Arthur St. Clair) ১০. সাইরাস গ্রিফিন (Cyrus Griffin) ১৭৮১ সালের ১ মার্চ ম্যারিল্যান্ডে কনফেডারেশনের বিধানসমূহ (Article of Confederation) অনুমোদন করা হয়। কনফেডারেশনে যে সকল বিধান উল্লেখ করা হয়েছিল তার সার-সংক্ষেপ নিম্নরূপ: ১. 2. কনফেডারেশনের নাম দেয়া হয় 'The United States of America' আর্টিকলস অব কনফেভারেশনের ২য় ধারায় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অধিকার সম্পর্কে বর্ণনা করা হয় ।
৩. আমেরিকার রাজ্যসমূহকে একত্র করে একটি লীগ গঠন করা হয় এবং তাদের প্রতিরক্ষা, স্বাধীনতার নিরাপত্তা এবং উন্নতির জন্য সকল প্রকার বাঁধাকে সংঘবদ্ধভাবে দমন করার সংকল্প গ্রহণ করা হয় ।
৪. প্রত্যেকটি রাজ্যের জনগণের এক রাষ্ট্র থেকে অন্য রাষ্ট্রে সহজে যাতায়াতের অধিকার স্বীকৃত হয়। রাষ্ট্রের অধিকার ও দায়িত্ব সকল নাগরিকের উপর সমান বলেও স্বীকৃত হয়। এক রাজ্যের অপরাধী অন্য রাজ্যে গমন করলে তাকে নিজ রাজ্যে এনে শাস্তি প্রদানের কথা বলা হয় । ৫. কনফেডারেশনের কংগ্রেসে প্রত্যেকটি রাজ্যকে একটি করে ভোট দেয়ার অধিকার দেয়া হয়। কংগ্রেসে প্রতিটি রাজ্যের দুই থেকে সাতজন প্রতিনিধি থাকবে - যারা রাজ্যের বিধানমণ্ডলী কর্তৃক নির্বাচিত হবেন।
৬. বৈদেশিক সম্পর্ক পরিচালনা ও যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষেত্রে রাজ্যসমূহের ক্ষমতা সীমিত করা হয়।
৭. রাজ্যের প্রতিরক্ষার প্রয়োজনে যখন আর্মি ফোর্স গঠন করা হবে তখন কর্নেল এর নীচে সকল পদের নিয়োগ দিবেন রাজ্যের বিধানসভা।
৮. যুদ্ধ সংক্রান্ত ও রাজ্যের অন্যান্য ব্যয় পরিচালনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিধানসভা একটি ফান্ড গঠন করে।
কেন্দ্রীয় সরকারকে যুদ্ধ ঘোষণা, মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ এবং রাজ্যসমূহের মধ্যকার বিবাদ নিয়ন্ত্রণের অধিকার দেয়া হয়।
১০. কংগ্রেসের অধিবেশন না থাকলে একটি কমিটির উপর সরকার পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়।
১১. কনফেডারেসিতে নতুন রাষ্ট্রের যোগদানের জন্য কমপক্ষে নয়টি রাজ্যের অনুমোদনের প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করা হয়
১২. যুদ্ধ সংক্রান্ত সমস্যাবলী কনফেডারেসি পরিচালনা করবে।
১৩. রাজ্যসমূহের বিধানমণ্ডলী দ্বারা আর্টিকলস অব কনফেডারেশন অনুমোদিত হলে তা কার্যকর করা হবে।
এ কনভেনশনের ধারা গুলিতে রাজ্যের সার্বভৌমত্বের কথা বলা ছিল। যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার সে ক্ষমতাগুলি পেয়েছিলেন এবং উপনিবেশগুলির রাজা ও পার্লামেন্ট তা মেনে নিয়েছিল। এভাবে দেখা যায় ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আমেরিকার রাজ্যসমূহ কনফেডারেসি গঠন করতে সক্ষম হয় এবং আর্টিকলস অব কনফেডারেশন আমেরিকার প্রথম সংবিধান হিসেবে রাষ্ট্রসমূহ কর্তৃক অনুমোদিত হয় ।

FOR MORE CLICK HERE

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]