১৯১৯ সালের মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইন প্রবর্তিত হওয়ার কারণ আইনের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো

মুখ্য শব্দ সংস্কার, রাজন্য সভা, ব্যবস্থাপক সভা, সংরক্ষিত, হস্তান্তরিত, হাইকমিশনার।
১৯০৯ সালের মর্লি-মিন্টো সংস্কার আইন ভারতীয়দের আশা আকাংখা পূরণে ব্যর্থ হয়। অন্যদিকে ১৯০৫ থেকে
১৯১১ এই সময়ের মধ্যে বঙ্গভঙ্গ ও পরবর্তীতে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা
যোগ করে। বঙ্গভঙ্গ রদ আন্দোলনের সাফল্য ভারতবাসীর মধ্যে স্বশাসনের দাবি প্রবল করে তোলে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়
ভারতবাসীর সহযোগিতার পুরস্কারস্বরূপ এবং যুদ্ধ শেষে ভারতের জন্য নতুন শাসনতান্ত্রিক সংস্কার অবধারিত ছিল বিধায়
ভারত সচিব মন্টেগু ১৯১৭ সালের ২০ আগস্ট কমন্স সভায় ঘোষণা করেন যে, ভারতীয়দের ভারত শাসনের প্রতিটি ক্ষেত্রে
অধিকতর সুযোগ দিয়ে পর্যায়ক্রমে দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করা ব্রিটিশ সরকারের নীতি। এর ভিত্তিতে ভারত সচিব
মন্টেগু এবং ভাইসরয় ও গভর্ণর জেনারেল চেমসফোর্ড এ দু’য়ের যৌথ প্রচেষ্টায় ১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইন বা মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইন পাশ করা হয়।
মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ
১৯১৯ সালের মেন্টগু-চেমসফোর্ড আইনের মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করা হল :
১. ১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় আইনসভায় পরিবর্তন করা হয়। উচ্চকক্ষের নাম হয় রাজন্য
সভা এবং নি¤œকক্ষের নাম হয় ব্যবস্থাপক সভা । উচ্চকক্ষের সদস্য সংখ্যা ৬০ জন নির্ধারণ করা হয় এবং তন্মধ্যে ৩৪
জন নির্বাচিত এবং অবশিষ্ট ২৬ জন সরকার কর্তৃক মনোনীত হবেন। নি¤œকক্ষের সদস্য সংখ্যা ১৪৫ জন নির্ধারণ করা
হয় তন্মধ্যে ১০৫ জন থাকবেন নির্বাচিত এবং অবশিষ্ট ৪০ জন সরকার মনোনীত হন।
২. এ আইনের মাধ্যমে সকল প্রদেশের জন্য একটি করে এক কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার বিধান করা হয়। প্রাদেশিক
আইনসভার সদস্য সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়। তাছাড়া এ আইনে উল্লেখ করা হয় যে, প্রাদেশিক আইন পরিষদের
সদস্যদের মধ্যে কমপক্ষে শতকরা ৭০ ভাগ নির্বাচিত এবং বাকী সদস্যরা মনোনীত হবেন।
৩. প্রদেশে দায়িত্বশীল সরকার প্রবর্তনের লক্ষ্যে এ আইনে সরকারের কার্যাবলিকে কেন্দ্র ও প্রদেশের মধ্যে দু’ভাগে ভাগ
করা হয়। প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, মুদ্রা, ব্যাংক, বাণিজ্য, আয়কর, শুল্ক, ডাক, রেলওয়ে, তার, যোগাযোগ প্রভৃতি কেন্দ্রীয়
বিষয় হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে রাখা হয়। অপরদিকে আইন শৃঙ্খলা, শিক্ষা, ভ‚মি, রাজস্ব, কৃষি, সেচ, পূর্ত, গণস্বাস্থ্য প্রভৃতি প্রাদেশিক সরকারের হাতে ন্যস্ত করা হয়।
৪. ১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল প্রদেশে দ্বৈতশাসন ব্যবস্থায় প্রবর্তন। এ
ব্যবস্থার প্রাদেশিক বিষয়সমূহকে ‘সংরক্ষিত’ ও ‘হস্তান্তরিত’ এ দু’ভাগে ভাগ করা হয়। আইন-শৃঙ্খলা, ভ‚মি, রাজস্ব,
সেচ। বিচার, জেল প্রভৃতি ‘সংরক্ষিত’ বিষয়ের অন্তভর্‚ক্ত ছিল। অপরদিকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, স্থানীয় সরকার, পূর্ত
প্রভৃতি। হস্তান্তরিত বিষয় ছিল, গভর্ণর এবং তার নির্বাহী পরিষদের সদস্যগণ ‘সংরক্ষিত’ বিষয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
আর ‘হস্তান্তরিত’ বিষয়সমূহ গভর্ণর ও তাঁর মন্ত্রীদের দায়িত্বে ছিল। মন্ত্রীগণ আইনসভার সদস্যদের মধ্য থেকে গভর্ণর কর্তৃক নিযুক্ত হতেন।
৫. এ আইনের মাধ্যমে ভারতবর্ষের বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি পাঞ্জাবের শিখ, এ্যাংলো-ইন্ডিয়ান,
ভারতীয় খ্রিষ্টান এবং ইউরোপীয় সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়।
বাংলাদেশ উš§ুক্ত বিশ^বিদ্যালয় পৌরনীতি ও সুশাসন দ্বিতীয় পত্র
ইউনিট এক পৃষ্ঠা ২৪
৬. নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রবর্তন এ আইনের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক। এ আইনের মাধ্যমে বেসরকারি সদস্যদের প্রত্যক্ষ
নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। ভোটার হওয়ার যোগ্যতার মধ্যে ছিল শিক্ষা, সম্পত্তির মালিকানা, পৌরকর প্রদান
ইত্যাদি। স্বাভাবিক কারণে ভোটারের সংখ্যা ছিল খুবই সীমিত।
৭. এ আইনের মাধ্যমে ইংল্যাÐে ভারতীয়দের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য হাইকমিশনারের একটি পদ সৃষ্টি করা হয়।
মূল্যায়ন
১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইনে প্রদেশে দ্বৈতশাসনের মাধ্যমে দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু
প্রকৃতপক্ষে, এ ব্যবস্থার ফলে প্রদেশগুলোতে শাসনক্ষেত্রে নানাবিধ অসুবিধার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া সংসদীয় পদ্ধতির দায়িত্বশীল ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য আরো কিছু বিষয় যেমন- মন্ত্রীদের যৌথ দায়িত্বশীলতা, দায়বদ্ধতা ইত্যাদি আবশ্যক।
কিন্তু এ সমস্ত বিষয় এ আইনে ছিল অনুপস্থিত। তথাপি, ভারতবর্ষে দায়িত্বশীল ব্যবস্থা প্রবর্তন করার ক্ষেত্রে ১৯১৯ সালের
ভারত শাসন আইন ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর পদক্ষেপ।
সারসংক্ষেপ
১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইনের মাধ্যমে ভারতীয়রা সীমিত আকারে হলেও দায়িত্বশীল সরকার পরিচালনার
সাথে সংশ্লিষ্ট হবার সুযোগ পায়। আইনের ফলে আইনসভায় দুটি কক্ষের সৃষ্টি হয়। প্রত্যেক কক্ষেই নির্বাচিত
সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাও জোরদার হয়। বিশেষ জনগোষ্ঠীর জন্য পৃথক নির্বাচন
ব্যবস্থাও বহাল ছিল।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-১.১০
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। ১৯১৯ সালে প্রবর্তিত নতুন শাসন ব্যবস্থা ছিলÑ
(ক) প্রধানমন্ত্রীর শাসন (খ) দ্বৈতশাসন
(গ) গভর্নরের শাসন (ঘ) রাষ্ট্রপতির শাসন
২। ১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইনের দ্বারা আইনসভায় যে চিত্র ফুটে ওঠে তাহলোÑ
র. দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় আইনসভা
রর. এক কক্ষবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় আইনসভা
ররর. প্রাদেশিক আইনসমূহের ৭০ ভাগ সদস্য ছিল নির্বাচিত
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) র ও রর (খ) রর ও ররর
(গ) র ও ররর (ঘ) র, রর ও ররর <

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]