মুখ্য শব্দ ফরমালিন, ইউরিয়া, কীটনাশক, কার্বাইড, আইনী কাঠামো, মান নিয়ন্ত্রণ, পর্যবেক্ষণ
প্রতিটি মানুষেরই বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। আবার ভেজাল খাদ্য গ্রহণ জীবন নাশ করে।
বাংলাদেশে খাদ্যে ভেজাল এক ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই কর্মকান্ডের সাথে
সংশ্লিষ্ট। এক শ্রেণীর রাজনীতিবিদ ও আমলাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও উদাসীনতার সুযোগে তারা এই ঘৃণিত কাজ করে যাচ্ছে।
যখন কোন সঠিক খাবার বা উৎকৃষ্ট খাবারের সঙ্গে খারাপ খাবার বা নিকৃষ্ট খাবার মেশানো হয় তাকে খাদ্যে ভেজাল বলে।
যে খাবার মানসম্মত নয়, স্বাস্থ্যকর নয়, বরং স্বাস্থ্যের জন্য অধিক ক্ষতিকর সেটাই ‘ভেজাল খাদ্য’। সুস্থ জীবন আর
রোগমুক্ত জীবনের নিশ্চয়তার জন্য ভেজাল প্রতিরোধে সকল মানুষেরই সোচ্চার হতে হবে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে
হবে।
ভেজাল একটি আইনি শব্দ, যার অর্থ মিশ্রিত, মেকী বা খাঁটি নয় এমন। উৎকৃষ্ট দ্রব্যের সাথে নিকৃষ্ট দ্রব্যের মিশ্রণকে
ভেজাল বলে। অন্য কথায় খাদ্যের পরিমাণ, স্থায়ীত্ব অথবা স্বাদ বৃদ্ধির জন্য কাঁচা বা প্রস্তুতকৃত খাদ্য সামগ্রীতে এক বা
একাধিক ভিন্ন পদার্থ সংযোজন। নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ আলোকে “ বিভিন্ন উপায়ে খাদ্যে পরিবর্তন সাধন করে মানব
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, আইনের অধীন নিষিদ্ধ, খাদ্য দ্রব্যের ক্ষতি হয়েছে, গুণাগুন বা পুষ্টিমান হ্রাস পেয়েছে, খাদ্য ক্রেতার
আর্থিক বা স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়েছে” এমন খাদ্যই ভেজাল খাদ্য। খাদ্যে ভেজাল দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদন্ড ও
২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
খাদ্যে ভেজালের সাম্প্রতিক চাল চিত্র ও ধরণ
বাংলাদেশ চাল, ডাল, আটা, ময়দা, সুজি, তেল-মসলা, মাছ-মাংস সব কিছুতে ভেজাল দেয়া হচ্ছে। মাছে ও খাদ্য দ্রব্যে
ফরমালিন, চালে পাথর কুচি, বালি, চালের রং উজ্জ্বল করার জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক ইউরিয়া মেশানো হচ্ছে। ফলে
মানুষের কিডনি, লিভার, চোখের দৃষ্টি হারিয়ে যাচ্ছে, ক্যান্সারসহ ভয়াবহ রোগের প্রবণতা বাড়ছে।
খাদ্যে ভেজালের কারণ
খাদ্যে ভেজাল এখন মানব জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ। ভেজালের প্রবণতা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে খাদ্যে
ভেজাল মহামারি আকার ধারণ করেছে। খাদ্যে ভেজাল এর জন্য নি¤œরূপ কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে১. অধিক মুনাফা লাভের আশা
২. তদারকির অভাব
৩. আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া
৪. নৈতিকতার অভাব
৫. খাদ্য পরিবহণ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থার অভাব
৬. ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ
খাদ্য ভেজাল প্রতিরোধ
খাদ্যে ভেজাল একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি। কাজেই যেকোনো মূল্যে ভেজালের হাত থেকে সমাজকে রক্ষা করতে
হবে। খাদ্যে ভেজালের প্রতিকার ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হল:-
১. আইনী কাঠামো ও প্রয়োগ: খাদ্য ভেজাল রোধের জন্য যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন অথবা প্রচলিত আইনের
সংশোধন করতে হবে। বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশ ১৯৫৯. (সংশোধিত ২০১৫), নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ এর
যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগের জন্য নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা ও
মিডিয়ায় প্রচারণা চালাতে হবে।
২. পণ্যের আন্তর্জাতিক মান নির্ণয়: প্রচলিত মানদন্ড ও নিবন্ধীকরণ প্রক্রিয়া সংশোধন করতে হবে। মানব স্বাস্থ্যের
সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত পণ্য আইএসও (ওঝঙ) কর্তৃক যাচাই করতে হবে।
৩. খাদ্য নিরাপত্তা বলয় গঠন : প্রতিবেশী বা আঞ্চলিক দেশ সমূহের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, সরবরাহ, বিনিময়
ও মান নির্ণয়ে নিরাপত্তা বলয় গঠন করতে হবে। প্রয়োজনে ডঋঙ, ওঝঙ, ডঐঙ এর মত আন্তর্জাতিক সংস্থার
সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে।
৪. সুশীল সমাজের দায়বদ্ধতা: খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে সুশীল সমাজকে সম্পৃক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ
ভোক্তা সমিতি, বিভিন্ন বণিক সমিতি ও পরিবেশবাদী সংগঠনকে আরও বলিষ্ঠ ভ‚মিকা পালন করতে হবে।
৫. কারিগারি দক্ষতা ও অবকাঠামো বৃদ্ধি : বাংলাদেশ মান নিয়ন্ত্রণ ও পরীক্ষণ ইন্সটিটিউট (ইঝঞও), ভোক্তা সংরক্ষণ
অধিদপ্তর, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (ঞঈই), বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে আরও শক্তিশালী করে
সম্প্রসারিত করা উচিত।
খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে একটি যুগোপযোগী নিয়ন্ত্রক সংস্থা একান্ত জরুরি। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা
থাকতে হবে এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা মুক্ত হতে হবে। সর্বোপরি দেশের জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে।
আইনের প্রয়োগ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সারসংক্ষেপ
খাদ্যে ভেজাল বাংলাদেশে সবচেয়ে আলোচিত একটি বিষয়। এটি একটি সামাজিক ব্যাধি। যারা খাদ্যে ভেজাল মিশ্রিত
করে তারা সমাজ, রাষ্ট্র ও মানুষের শত্রæ। যারা এই অপরাধের সাথে জড়িত থাকে বা জড়িত হয় তারা জঘন্য অপরাধী।
খাদ্যে ভেজাল রোধে বিদ্যমান আইনের কঠোর প্রয়োগ, অপরাধের শাস্তি নিশ্চিতকরণ ও নিয়মিত বাজার পরিদর্শন
প্রয়োজন। এছাড়াও খাদ্যে ভেজাল রোধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-১০.৭
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। অসাধু ব্যবসায়ী কেন খাদ্যে ভেজাল দিয়ে থাকে?
(ক) মানসিক রোগের জন্য (খ) অধিক মুনাফা লাভের জন্য
(গ) আইন না থাকার কারণে (ঘ) সামাজিক সমর্থন থাকায়
২। ‘নিরাপদ খাদ্য আইন’, কত সালে প্রণীত হয়েছে?
(ক) ২০১১ (খ) ২০১২ (গ) ২০১৩ (ঘ) ২০১৪
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র