বেঙ্গল প্যাক্ট এর পটভূমি ও বৈশিষ্ট্য বেঙ্গল প্যাক্টের পরিণতি তথা ফলাফল ব্যাখ্যা করতে পারবেন।

মুখ্য শব্দ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সংখ্যাগরিষ্ঠ, সংখ্যানুপাত, ধর্মীয় অনুভ‚তি, ইতিবাচক,
অস্বীকৃতি, অকার্যকর।
ব্রিটিশ বিরোধী অহিংস খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন সহিংস রূপ ধারণ করলে, মহাত্মা গান্ধী ১৯২২ সালে
এ আন্দোলন প্রত্যাহার করেন। আন্দোলন তুঙ্গে থাকা অবস্থায় তা বন্ধ ঘোষণা করার পর পক্ষে-বিপক্ষে
মতামত ব্যক্ত হতে থাকে। অপরদিকে, ১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইন অনুযায়ী প্রাদেশিক আইনসভার দ্বিতীয় নির্বাচন
১৯২৩ সালের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হবার কথা। এমতাবস্থায়, ১৯২২ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের বার্ষিক
সম্মেলন ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে এ সম্মেলনে মতভেদ দেখা দেয়। গান্ধীর
নেতৃত্বাধীন একটি অংশ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার বিপক্ষে ছিলেন না অপরদিকে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের (সি আর দাশ)
এর নেতৃত্বাধীন আরেকটি অংশ নির্বাচনের পক্ষে ছিলেন। সি আর দাশের প্রস্তাব কংগ্রেস সম্মেলনে গৃহীত হয়নি
এমতাবস্থায়, তিনি তাঁর সমর্থকদের নিয়ে ১৯২২ সালের ৩১শে ডিসেম্বর গঠন করেন স্বরাজ পার্টি।
সি.আর দাশ ছিলেন সাম্প্রদায়িক ঐক্যের পক্ষের মানুষ। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তিনি ব্রিটিশদের সহযোগিতা করতে
চাননি বরং নিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্রিটিশদের বিরোধিতা করতে চেয়েছিলেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে তিনি নিজ প্রদেশ বাংলায়
মুসলমান নেতৃবৃন্দের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্যে ১৯২৩ সনে এক চুক্তি সাক্ষর করেন যা বেঙ্গল প্যাক্ট নামে পরিচিত।
বৈশিষ্ট্যসমূহ
বেঙ্গল প্যাক্টের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নি¤œরূপ:
১. বাংলায় প্রাদেশিক কাউন্সিল নির্বাচনে হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায় জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতিনিধিত্ব করবে।
২. স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় পাবে শতকরা ৬০ ভাগ আসন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়
পাবে শতকরা ৪০ ভাগ আসন।
৩. মুসলমান সম্প্রদায়ের পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থার স্বীকৃতি।
৪. সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য শতকরা ৪৫ ভাগ বরাদ্দ করা হয়। যতদিন পর্যন্ত হিন্দু ও মুসলমান
সম্প্রদায়ের চাকরি লাভের একই অনুপাত অর্জিত না হবে, ততদিন পর্যন্ত মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য ৮০ ভাগ চাকরি
লাভের বিধান রাখা হয়।
৫. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায় এমন কোন কাজ করবে না যা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে।
প্যাক্টের পরিণতি
মুসলমানদের প্রতিক্রিয়া
বেঙ্গল প্যাক্টের প্রতি মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া ছিল খুবই ইতিবাচক। এ প্যাক্টের মাধ্যমে মুসলমান সম্প্রদায় তাদের
স্বার্থ সংরক্ষিত হয়েছে দেখে সর্বাত্মকরণে চুক্তিকে স্বাগত জানায়। এ প্যাক্টের মাধ্যমে মুসলমানরা বাংলায় সংখ্যানুপাতে
প্রাদেশিক কাউন্সিল ও স্থানীয় পরিষদে আসন পায়। তাছাড়া মুসলমান সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ দাবি পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা এ
প্যাক্টে স্বীকৃত হয়। তাই এ প্যাক্টের প্রতি মুসলমানদের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত হতে থাকে।
হিন্দুদের প্রতিক্রিয়া
বেঙ্গল প্যাক্টের প্রতি বাংলা ও বাংলার বাইরের হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের ছিল বিরূপ প্রতিক্রিয়া। হিন্দু
সম্প্রদায়ের নিয়ন্ত্রাধীন পত্রিকাসমূহ বেঙ্গল প্যাক্টের সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। সি আর দাশকে সুবিধাবাদী ও মুসলিম
স্বার্থ রক্ষাকারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। মহাত্মা গান্ধী বেঙ্গল প্যাক্টের কয়েকটি অংশের সমালোচনা করেন। ১৯২৩
সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে কংগ্রেস বেঙ্গল প্যাক্ট অনুমোদন করতে অস্বীকৃতি জানায়। কারণ হিসেবে বলা
হয়, হিন্দু-মুসলিম সমস্যা সমাধানে প্রাদেশিক পর্যায়ের প্রচেষ্টা সর্বভারতীয় পর্যায়ের প্রচেষ্টাকে বিঘিœত করতে পারে।
বেঙ্গল প্যাক্টের প্রতি কংগ্রেসের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্যাক্টের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করে তোলে। ১৯২৫ সালে সি
আর দাসের অকস্মাৎ মৃত্যু প্যাক্টের ভবিষ্যত অনিশ্চিত করে তোলে। তাঁর অনুপস্থিতিতে এ প্যাক্টের সমর্থনে কাজ করার
মতো কোন জনপ্রিয় ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন কোন নেতা ছিলেন না। এভাবে সি আর দাশের মৃত্যুর এক বছরের মধ্যে বেঙ্গল প্যাক্ট অকার্যকর হয়ে পড়ে।
সারসংক্ষেপ
হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সমঝোতার ক্ষেত্রে ‘বেঙ্গল প্যাক্ট’ নিঃসন্দেহে একটি
প্রশংসনীয় উদ্যোগ ছিল। অনগ্রসর মুসলিম জনগণের উন্নয়নে বেঙ্গল প্যাক্ট নি:সন্দেহে কার্যকর ছিল। কিন্তু হিন্দু
সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশের বিরোধীতা ও সি আর দাশের হঠাৎ মৃত্যুতে বেঙ্গল প্যাক্ট মুখ থুবড়ে পড়ে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-১.১২
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১নং ও ২নং প্রশ্নের উত্তর দিন।
‘ক’ অঞ্চলে বিভিন্ন স¤প্রদায়ের লোক বসবাস করে। নানা অজুহাতে এ অঞ্চলে বসবাসকারী হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে
মারামারি ও হানাহানি লেগে থাকে। এ ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের জন্য উভয় স¤প্রদায়ের কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি
একটি চুক্তি সম্পাদন করে।
১। উদ্দীপকের ‘ক’ অঞ্চলে কোন চুক্তির আভাষ পাওয়া যায়?
(ক) লক্ষেèৗ চুক্তি (খ) বেঙ্গল প্যাক্ট
(গ) পুনা চুক্তি (ঘ) সিমলা চুক্তি
২। এই চুক্তির উল্লেখযোগ্য দিক-
র. স্বায়ত্তশাসনের বুনিয়াদ প্রতিষ্ঠা
রর. ধর্মভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা
ররর. সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি প্রতিষ্ঠা
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) র ও রর (খ) র ও ররর
(গ) রর ও ররর (ঘ) র, রর ও ররর

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]