মুখ্য শব্দ বঙ্গভঙ্গ, মুসলিম লীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মুসলিম সম্প্রদায়, ন্যায্য, শিক্ষা বিস্তার
ঢাকার বিখ্যাত নবাব পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও চিন্তা ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে নবাব স্যার খাজা
সলিমুল্লাহ ছিলেন অনেকের থেকে আলাদা। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী নবাব সলিমুল্লাহ বাংলার পশ্চাৎপদ
মুসলিম সমাজের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে ভেবেছেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হলে তিনি খুশি হয়েছিলেন এই ভেবে যে, এই
বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে এ অঞ্চলের দূর্দশাগ্রস্ত মুসলমানদের সরকারি ও প্রশাসনিক সুবিধা পাওয়ার কিছুটা হলেও সুযোগ সৃষ্টি
হবে। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হলে তিনি বঙ্গভঙ্গ রদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে থাকেন এবং বলতে থাকেন
যে বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার মুসলমানদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে দ্বার খুলেছিল সেটাও বন্ধ করে
দিয়েছে। ব্রিটিশ সরকারকে সহযোগিতার মাধ্যমে মুসলমানদের জন্য সুযোগ-সুবিধা আদায়ের পক্ষপাতি ছিলেন তিনি।
নবাব সলিমুল্লাহ মুসলমানদের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য পৃথক নির্বাচনের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্বশাসিত স্থানীয় সংস্থা
ও আইনসভায় প্রতিনিধি নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য দাবী তুলেছিলেন।
নবাব স্যার সলিমুল্লাহ এর জীবন বৃত্তান্ত
১৮৭১ সালের ৭ জুন ঢাকার বিখ্যাত নবাব পরিবারে খাজা সলিমুল্লাহ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম নবাব খাজা
আহসানউল্লাহ। খাজা সলিমুল্লাহ নবাবী পরিবারের বিত্ত-বৈভবের মধ্যে বেড়ে উঠলেও চিন্তা-চেতনায় ছিলেন আলাদা।
নবাব পরিবারের মধ্যে সলিমুল্লাহ ছিলেন সবচেয়ে আলোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। যৌবনকালে তিনি কিছুকাল ডেপুটি
ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সরকারি চাকুরি করলেও পরে চাকুরিতে ইস্তফা দিয়ে সমাজকল্যাণমূলক কাজে আতœনিয়োগ করেন।
১৯০১ সালে তাঁর পিতার মৃত্যু হলে জ্যেষ্ঠ পুত্র হিসেবে তিনি নবাবের পদসহ পারিবারিক কর্তত্ব লাভ করেন। ব্যক্তিগত
জীবনে তিনি সৎ, সাহসী ও ধার্মিক ছিলেন। নবাব সলিমুল্লাহ ১৯১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি কলকাতায় মারা যান।
নবাব স্যার সলিমুল্লাহর রাজনৈতিক চিন্তা ও কর্মকান্ড
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হলে তিনি খুশি হয়েছিলেন এটা ভেবে যে বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে এ অঞ্চলের দুর্দশাগ্রস্ত মুসলমানদের
উন্নয়নের দ্বার কিছুটা হলেও খুলবে। শুধু বঙ্গভঙ্গই নয়, এ জনপদের মুসলমানদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যেকোন রাজনৈতিক
ব্যাপারেই তিনি আগ্রহী ছিলেন।
বঙ্গভঙ্গ ও নবাব সলিমুল্লাহ
নবাব সলিমুল্লাহ ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের পরে ঢাকা নতুন প্রদেশের রাজধানী হলে দারুণ খুশি হয়েছিলেন। পরবর্তীতে
কংগ্রেস বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করলে তিনি বঙ্গবিভাগ টিকিয়ে রাখার পক্ষে জনমত গড়ে তোলার জন্য ব্যাপক তৎপরতা
চালান। কংগ্রেসের আন্দোলনের কাছে নতি স্বীকার করে ১৯১১ সালের ডিসেম্বর মাসে ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গ রদ করলে
নবাব স্যার সলিমুল্লাহ খুবই মর্মাহত হন।
মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা ও নবাব সলিমুল্লাহ
১৯০৬ সালে ডিসেম্বর ঢাকায় নিখিল ভারত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নবাব সলিমুল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
বঙ্গভঙ্গের পক্ষে বাংলার বাইরের মুসলমানদের সমর্থন আদায়ের আশায় মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করার জন্য নবাব সলিমুল্লাহ
উদ্যোগ গ্রহণ করেন। অবশ্য সর্বভারতীয় পর্যায়ে ভারতের মুসলমানদের একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের তাগিদ ও চিন্তাভাবনা বঙ্গভঙ্গের আগেও চলছিল। সে যা হোক, নবাব সলিমুল্লাহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিশিষ্ট মুসলিম নেতৃবৃন্দকে
নতুন প্রদেশের রাজধানী ঢাকায় এক অধিবেশনে মিলিত করে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন।
মুসলিম স্বার্থ অক্ষুন্ন রাখার জন্য নবাব সলিমুল্লাহ সকল প্রদেশের স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে, সংস্থায়, আইনসভায় মুসলমানদের
জন্য স্বতন্ত্র নির্বাচন দাবি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও নবাব সলিমুল্লাহ নানামুখী অবদান রাখেন। এছাড়াও
মুসলিম সম্প্রদায়ের আর্থ-সামাজিক সামগ্রিক উন্নয়নে নবাব সলিমুল্লাহ আজীবন নানামুখী ভূমিকা রেখেছেন।
সারসংক্ষেপ
নবাব স্যার সলিমুল্লাহ সারাজীবন ধরেই বাংলার পশ্চাৎপদ মুসলিম সমাজের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে ভেবেছেন। ১৯০৫ সালে
বঙ্গভঙ্গ হলে তিনি খুশি হয়েছিলেন। সলিমুল্লাহ মনে করেছিলেন বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে এ অঞ্চলের দুর্দশাগ্রস্ত মুসলমানদের
সরকারি ও প্রশাসনিক সুবিধা পাওয়ার কিছুটা হলেও সুযোগ সৃষ্টি হবে। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হলে তিনি এর
বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে থাকেন। তিনি বলেন, বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার মুসলমানদের ন্যায্য অধিকার
প্রতিষ্ঠার জন্য যে দ্বার খুলেছিল সেটাও বন্ধ করে দিল। নবাব সলিমুল্লাহ ১৯০৬ সালের ঢাকায় নিখিল ভারত মুসলিম
লীগ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং এতে তিনি সফল হন। বস্তুত: নবাব সলিমুল্লাহ সারা জীবন মুসলিম সম্প্রদায়ের
কল্যাণে নানামুখী ভূমিকা রেখেছেন।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৩.৫
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। নবাব সলিমুল্লার পিতার নাম কী?
(ক) নবাব খাজা আলীমুল্লাহ (খ) নবাব খাজা হাবিবুল্লাহ
(গ) নবাব খাজা আহসান উল্লাহ (ঘ) খাজা হাসান আশকারী
২। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় কে অবদান রেখেছিলেন?
(ক) নবাব সলিমুল্লাহ (খ) নবাব খাজা আলীমুল্লাহ
(গ) নবার সিরাজউদ্দৌলা (ঘ) নবাব আলীবর্দী খান
৩। মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য নবাব সলিমুল্লাহর সবচেয়ে বড় উদ্যোগ কোনটি?
(ক) মিটফোর্ড হাসপাতাল (খ) সর্বভারতীয় মুসলিম লীগ
(গ) আহসান উল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল (ঘ) মোহামেডান প্রভিন্সিয়াল ইউনিয়ন
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র