মুখ্য শব্দ জনদরদী, কৃষক সমাজ, জমিদারি, পৃথকরাষ্ট্র, বঙ্গীয় আইন সভা, নিখিল বঙ্গ প্রজাসমিতি,
লাহোর প্রস্তাব।
বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে যে সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আজীবন সংগ্রাম করেছেন শেরেবাংলা আবুল কাশেম
ফজলুল হক তাদের একজন। তাঁকে একজন জনদরদী রাজনীতিবিদ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। বাংলার
কৃষক সম্প্রদায়ের দাবি-দাওয়া বাস্তবায়ন করার জন্য তিনি সবসময় তৎপর থাকতেন। এ জন্য তাঁকে অবহেলিত
কৃষক সমাজের যোগ্য অভিভাবক হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। বাংলার সাধারণ মানুষ তথা কৃষকের জীবন মানোন্নয়ন
করার জন্য তিনি শিক্ষার অগ্রগতিতে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। কৃষকের স্বার্থরক্ষার ব্যাপারটি মাথায় রেখেই এবং তাদেরকে
অগ্রাধিকার দিতে গিয়েই এ কে ফজলুল হক ১৯৩৫ সালে তাঁর সৃষ্ট রাজনৈতিক দলের নতুন নামকরণ কৃষক প্রজা পার্টি
করেন। মহাজন ও জমিদারদের অত্যাচার থেকে কৃষকদের মুক্তিদান ও জমিদারি ব্যবস্থা উচ্ছেদ করার জন্য ফজলুল হকের
নেতৃত্বে কৃষক প্রজা পার্টি গণ-আন্দোলন পর্যন্ত করেছে। তিনি নানান সময়ে রাষ্ট্রীয় পদে আসীন থাকা অবস্থায় সর্বনাশা
ঋণের হাত থেকে কৃষকদের রক্ষার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। শিক্ষামন্ত্রী থাকা অবস্থায় এ অঞ্চলের মুসলমানদের
মধ্যে শিক্ষা প্রসারের জন্য তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তাঁর সময়ে বঙ্গীয় আইনসভায় প্রাথমিক শিক্ষাকে
অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করে আইন পাশ করা হয়। বাংলার হতদরিদ্র প্রজাকূলের জন্য আজীবন লড়াই করেছেন
শেরেবাংলা। লাহোর প্রস্তাবের উত্থাপক ছিলেন শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক। এই লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমেই
প্রথম বাংলার মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখানো হয়।
শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের জীবন বৃত্তান্ত
১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক বৃহত্তর বরিশাল জেলার রাজাপুর থানাধীন সাতুরিয়া গ্রামে নিজ
মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার বাড়ি বরিশালের চাখার। তাঁর পিতা কাজী ওয়াজেদ ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী।
ফজলুল হক বাল্যকাল থেকেই তীক্ষè মেধা শক্তির পরিচয় দেন। তৎকালে জমিদারের জুলুম ও ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর
শোষণ তাঁর অন্তরে মর্মপীড়া সৃষ্টি করেছিল। ফজলুল হক সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দারুণভাবে অনুভব করতেন। তাঁর
সারা জীবনের রাজনীতির অন্যতম লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষের কল্যাণ সাধন। ফজলুল হকের কর্মময় জীবন ছিল অত্যন্ত
বিচিত্র। তাঁর জীবদ্দশায় তিনি পত্রিকা সম্পাদনা, আইন ব্যবসা, অধ্যাপনা, সরকারি চাকরি এবং রাজনীতি সবই করেছেন।
১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি মারা যান।
শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের রাজনৈতিক চিন্তা ও কর্মকান্ড
পিছিয়ে পড়া মুসলমান সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এ কে ফজলুল হক কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক
শাসনব্যবস্থায় সকল সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ব্রিটিশ শাসন এবং অবাঙালি নেতৃত্বের বিরোধিতা ছিল তাঁর
চেতনামূলে। কৃষক-প্রজা সাধারণ মানুষ ছিল তাঁর রাজনৈতিক চিন্তার কেন্দ্রবিন্দুতে। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকল
সম্প্রদায়ের কাছে সমান জনপ্রিয় ছিলেন এ কে ফজলুল হক। নি¤েœ শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের কিছু রাজনৈতিক
চিন্তা ও কর্মকান্ড তুলে ধরা হল-
ক্স ১৯১৬ সালের হিন্দু-মুসলমান ‘লক্ষেèৗ চুক্তি’ সম্পাদনে বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছিলেন।
ক্স ১৯১৮-১৯ সালে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
ক্স ১৯২৯ সালে তিনি ‘নিখিল বঙ্গ প্রজা সমিতি’ প্রতিষ্ঠা করেন, ১৯৩৬ সালে যার নতুন নামকরণ হয় কৃষক-প্রজা পার্টি।
ক্স ১৯৩০-১৯৩২ সালে লন্ডনে ভারতের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের লক্ষে যে গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে
তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং জোরালো বক্তব্য রাখেন।
ক্স ১৯৪২ সালে সামান্য কয়েক দিন বাদে, ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আসীন ছিলেন।
ক্স ১৯৪০ সালে লাহোরে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের বার্ষিক অধিবেশনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল
হক ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এ প্রস্তাবে একাধিক স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছিল।
১৯৪২ সাল থেকেই শেরেবাংলা সাম্প্রদায়িক “দ্বিজাতি তত্তে¡র” জোরালো বিরোধীতা শুরু করেন।
শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকই এ জনপদের রাজনীতিতে জমিদার-অভিজাত নেতৃত্বের চিরাচরিত বেষ্টনী ভেঙ্গে দেন।
তিনি সাধারণ মানুষের জন্য ‘ডাল-ভাত’ কর্মসূচি প্রবর্তন করেন।
সারসংক্ষেপ
একজন জনদরদী, সাহসী ও বলিষ্ঠ রাজনীতিবিদ হিসেবে বাংলার কৃষক, বাংলার মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য আজীবন
সংগ্রাম করেছেন শেরেবাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক। বাংলার সাধারণ মানুষ তথা কৃষকের স্বার্থরক্ষার তাগিদে
ফজলুল হক ১৯৩৫ সালে তাঁর সৃষ্ট রাজনৈতিক দলের নতুন নামকরণ করেন কৃষক প্রজা পার্টি । জোতদার-মহাজন ও
জমিদারদের অত্যাচার থেকে কৃষকদের মুক্তিদান ও জমিদারি ব্যবস্থা উচ্ছেদ করার জন্য ফজলুল হকের নেতৃত্বে কৃষক
প্রজা পার্টি গণ-আন্দোলনে লিপ্ত হয়েছিল। ভারতবর্ষের মুসলমানদের জন্য একাধিক আলাদা রাষ্ট্রের দাবি সম্বলিত
“লাহোর প্রস্তাব” উত্থাপন করেছিলেন শেরেবাংলা। ১৯৪০ সালে এ প্রস্তাব উত্থাপন করলেও, ১৯৪২ সাল থেকেই তিনি
সাম্প্রদায়িক “দ্বিজাতি তত্তে¡র” বিরোধীতা শুরু করেন।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৩.৬
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
(ক) ১৮৫২ সালে (খ) ১৮৬৪ সালে
(গ) ১৮৭৩ সালে (ঘ) ১৮৮১ সালে
২। কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ কে ফজলুল হক-
র. ঋণ সালিসী বোর্ড স্থাপন করেন
রর. প্রজাস্বত্ব আইন সংশোধন করেন
ররর. ডাল-ভাত কর্মসূচি চালু করেন
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) র (খ) র ও ররর
(গ) রর ও ররর (ঘ) র, রর ও ররর
৩। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের নাম জড়িয়ে আছে
(ক) কৃষক প্রজা পার্টি (খ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
(গ) ভাষা আন্দোলন (ঘ) ছয় দফা
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র