মুখ্য শব্দ প্রতিভাবান, গণতন্ত্রমনা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, অসাম্প্রদায়িক, অখন্ড, বাংলা,
সংবিধান।
ভারত বিভাগের প্রাক্কালে বাংলা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ভারত ও পাকিস্তানের
পাশাপাশি অখন্ড স্বাধীন বাংলা নামে আর একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৪৯ সালে
পাকিস্তানের বিরোধী দল আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। পরবর্তীতে এ দলটিই
আওয়ামী লীগ নাম ধারণ করে এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়। শুধু তাই নয় এমনকি ব্রিটিশ-ভারতেও তিনি
একজন তুখোড় প্রতিভাবান রাজনৈতিক সংগঠক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। একজন শ্রমিক নেতা হিসেবে কলকাতায়
রাজনৈতিক কর্মজীবন শুরু করলেও, অল্প সময়ে তিনি মেহনতি মানুষের জন্য প্রায় ৩৬টি ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তোলেন।
তিনি ১৯২১ সালে বঙ্গীয় আইন পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং আইনসভায় জনগণের অধিকারের
প্রশ্নে অনেক জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেন। সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বের কারণেই ১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগ জনপ্রিয়তার শীর্ষে
অবস্থান করে। গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তিনি আমৃত্যু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেতৃত্ব
দিয়েছেন। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর রাজনৈতিক দীক্ষা পেয়েছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর
কাছ থেকে।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর জীবন বৃত্তান্ত
১৮৯২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে সম্ভ্রান্ত এক পরিবারে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর পিতা জাহিদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন কলিকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। সোহরাওয়ার্দীর শিক্ষাজীবন ছিল পারিবারিক
ঐতিহ্যের ধারায় পূর্ণ ও বৈশিষ্ট্যমÐিত। তিনি বিজ্ঞান, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আইনশাস্ত্র ইত্যাদিতে অগাধ পান্ডিত্য অর্জন
করেন। ১৯১৮ সালে তিনি বিলেত থেকে বার-এট-ল পরীক্ষা পাশ করে স্বদেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে তিনি স্বল্প
সময়ের মধ্যেই কলিকাতার একজন নামকরা আইনজীবি এবং বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান। এরপর থেকে শুরু
করে তিনি জীবনের অধিকাংশ সময় আইন ব্যবসা ও রাজনীতি করে কাটিয়েছেন।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক চিন্তা ও কর্মকান্ড
১৯২১ সনে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হবার পর দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের অসাম্প্রদায়িক মানসিকতা,
উদার দৃষ্টিভঙ্গি ও গভীর দেশপ্রেম দ্বারা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হন। অসাধারণ ব্যক্তিত্ব,
রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও বাগ্মিতার বলে তিনি একজন উঁচুদরের রাজনীতিবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠেন।
অবহেলিত ও অসংগঠিত মুসলমান সম্প্রদায়ের স্বার্থ ও অধিকার আদায়ের জন্য সোহরাওয়াদী সর্বদা সচেষ্ট থেকেছেন।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সারা জীবন ধরে চেয়েছিলেন যে এ জনপদে পাশ্চাত্য ধাঁচের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠুক;
যার মাধ্যমে মানুষের মুক্তি ঘটবে। নি¤েœ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর আরো রাজনৈতিক চিন্তা ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড
তুলে ধরা হল-
ক্স ১৯২১ সালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী বঙ্গীয় আইন পরিষদে সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
ক্স তিনি ব্রিটিশ শাসন অবসানের লক্ষ্যে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯২৩ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ এর
নেতৃত্বে ‘বেঙ্গল প্যাক্ট’ চুক্তি সম্পাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
ক্স ১৯৩৭ সালে তিনি মুসলিম লীগে যোগ দেন।
ক্স শহীদ সোহরাওয়ার্দী ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অবসানের প্রাক্কালে ভারত ও পাকিস্তানের পাশাপাশি একটি
অখন্ড স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন।
ক্স ১৯৪৯ সালের আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
ক্স পাকিস্তানে ১৯৫৬ সালে যে সংবিধান প্রণয়ন হয় তার পিছনেও শহীদ সোহরাওয়ার্দীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।
ক্স তিনি মূলত একজন বাস্তববাদী রাজনীতিবিদ ছিলেন। ভারত বিভাগের পূর্বে তিনি মুসলমানদের পশ্চাৎপদতার জন্য
পৃথক নির্বাচনের সমর্থন দিতেন। কিন্তু পাকিস্তান সৃষ্টির পর তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যৌথ নির্বাচনের সমর্থন
দিতেন।
ক্স ১৯৫৬-১৯৫৭ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
ক্স সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক পদে আসীন থেকেছেন।
এছাড়াও পুরোধা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সারাজীবন একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সংগঠক হিসেবে
বিভিন্ন সংগঠন সৃষ্টি করেছেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন।
সারসংক্ষেপ
গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও রীতিনীতির প্রতি হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদী ছিলেন অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। তিনি আমৃত্যু গণতন্ত্র
প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও বাগ্মিতার বলে তিনি একজন
প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠেন। অবহেলিত ও অসংগঠিত মুসলমান সম্প্রদায়ের স্বার্থ ও অধিকার
আদায়ের জন্য তিনি সর্বদা সচেষ্ট থেকেছেন। আওয়ামী মুসলিম লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। পরবর্তীতে এ
দলটিই আওয়ামী লীগ নাম ধারণ করে এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর যে
রাজনৈতিক দীক্ষা তা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কাছ থেকে তিনি পেয়েছিলেন।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৩.৮
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। সোহরাওয়াদী কোন দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা?
(ক) কংগ্রেস (খ) মুসলিম লীগ
(গ) আওয়ামী লীগ (ঘ) কৃষক-প্রজা পার্টি
২। সোহরাওয়ার্দী কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
(ক) মেদিনীপুর খ) বর্ধমান
(গ) কলকাতা ঘ) ঢাকা
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র