মুখ্য শব্দ কেন্দ্রবিন্দু, পদসোপান, কার্যতালিকা, নীতি প্রণয়ন, তদারকি, সমন্বয়, কার্যবিধি, মূল্যায়ন।
বাংলাদেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজন একটি শক্তিশালী ও দক্ষ প্রশাসন। এ প্রশাসনিক
কাজ-কর্ম পরিচালনার জন্য সরকারের একটি সচিবালয় রয়েছে। এই সচিবালয়ের মাধ্যমেই বাংলাদেশের সকল
প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা হয়ে থাকে। সচিবালয় দেশের গোটা প্রশাসন ও সরকারি কর্মকান্ডের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র। মূলত:
সচিবালয়েই সরকারের অধিকাংশ নীতি-নির্ধারিত সংস্থা প্রতিস্থাপিত। সচিবালয়ে প্রধানত দুই ধরণের দাপ্তরিক প্রধান
থাকেন। যথা- রাজনৈতিক নির্বাহী প্রধান অর্থাৎ মন্ত্রী এবং প্রশাসনিক প্রধান অর্থাৎ সচিব। সচিবদের উপরই রাষ্ট্রের সকল
কার্য পরিচালনা করার দায়িত্ব বর্তায়। মাঠ পর্যায়ের সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমে সরকারের যাবতীয়
নীতিমালার বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব ন্যস্ত থাকে সচিবদের উপর। এ কারণে সচিবালয় একটি সুসংগঠিত কাঠামোর মাধ্যমে
পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ সচিবালয় যথাক্রমে সিনিয়র সচিব, সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, উপসচিব, সিনিয়র
সহকারী সচিব ও সহকারী সচিব ইত্যাদি পদসোপান অনুযায়ী বিন্যস্ত।
সংবিধানের ৫৫ (৬) অনুচ্ছেদে অর্পিত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতির জারি করা আদেশে কার্যবিধি অনুসারে বিভিন্ন
মন্ত্রণালয়/বিভাগে মধ্যে দায়িত্ব বন্টন হয়। অধিকন্তু, সরকারি কার্যবিধির ৪ (১০) ধারার আওতায় প্রস্তুত ‘সচিবালয়
নির্দেশাবলী’ নামে আরেকটি পৃথক দলিলের মাধ্যমে সচিবালয় ও সংশ্ল্ষ্টি বিভিন্ন বিভাগে সরকারি কাজকর্ম সম্পাদনের ধরণ
নির্ধারিত হয়। সচিবালয়ের কার্যাবলি নানাবিধ, যেমন- নীতি প্রণয়ন, পরিকল্পনা গ্রহণ, বাস্তবায়নাধীন পরিকল্পনাগুলির
মূল্যায়ন, জাতীয় সংসদে দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রে মন্ত্রিদের সহায়তা প্রদান, শীর্ষ পর্যায়ে কর্মকর্তা ব্যবস্থাপনা এবং প্রধানমন্ত্রী
কর্তৃক সময়ে সময়ে নির্ধারিত অন্যান্য কার্যাদি সম্পাদন ইত্যাদি। যেহেতু সচিব হলেন মন্ত্রণালয়/বিভাগের প্রশাসনিক
প্রধান, সেহেতু তিনি এর প্রশাসন, নিয়ম-শ্ঙ্খৃলা ও ন্যস্ত যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। সচিবালয় মন্ত্রণালয়/বিভাগ
ও সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর ও অধীনস্ত অফিসসমূহে কার্যবিধি অনুযায়ী কার্যাদি সম্পন্ন হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে তদারকি করে এবং এ
সকল বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীকে অবহিত করে। সচিবালয় সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরসমূহের মধ্যে বরাদ্দকৃত অর্থ বাজেট ও প্রচলিত
হিসাববিধি অনুযায়ী ব্যয় হওয়ার বিষয়টিও তদারক করে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কার্যাদি সম্পাদনের তাগিদে প্রয়োজনীয়
উপাত্ত, তথ্য ও উদাহরণ সংগ্রহ, পরীক্ষা, বিশ্লেষণ ও সমন্বয়ের দায়িত্বও পালন করে সংশ্লিষ্ট সচিবালয়। সর্বোপরি,
সচিবালয় অধীনস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে অর্পিত ক্ষমতা বন্টন এবং মন্ত্রণালয়/বিভাগের কার্যসম্পাদনের ধরণ সম্পর্কিত সুস্পষ্ট
ও স্থায়ী আদেশও প্রদান করে থাকে।
প্রশাসনিক নীতিমালা অনুযায়ী সচিবালয়ের নির্দিষ্ট কিছু কার্যাবলি তুলে ধরা হল :
নীতি নির্ধারণ :
সচিবালয় হল সরকারের যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষেত্র। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব হলেন মন্ত্রীর উপদেষ্টা ও পরামর্শ
দাতা। তিনি সরকারি নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রীকে সকল প্রয়োজনীয় তথ্য ও উপাত্ত সরবরাহ করেন। সিদ্ধান্ত
গ্রহণে মন্ত্রী সচিবের মতামতকে গুরুত্ব প্রদান করেন।
হিসাব-নিকাশ পরীক্ষা :
হলেন মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা। তিনিই মন্ত্রণালয়ের সকল হিসাব-নিকাশ পরীক্ষা করেন।
সরকারি নীতি বাস্তবায়নে সমন্বয় :
সরকারি নীতি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা, সচিবালয় সে বিষয়ে সমন্বয় সাধন করে। এক্ষেত্রে একজন সচিব নীতি
বাস্তবায়নের সমস্যা নির্ধারণ, বিশ্লেষণ, মূল্যায়ন ও সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় সাধন :
সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ ও সংযুক্ত অফিস-দপ্তর রয়েছে। সচিবালয় এসব অফিস বিভাগের সাথে
যোগাযোগ করে, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান এবং তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে।
এছাড়া একজন মন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ, সংসদে তা উত্থাপন ও বক্তব্য প্রস্তুত করতে সহযোগিতা
প্রদানসহ নানাবিধ প্রশাসনিক কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকেন। জনগণের কল্যাণ সাধন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির
বিষয়টি সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা, নিষ্ঠা ও সততার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
সারসংক্ষেপ
সচিবালয় হল বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু। প্রশাসনিক সংগঠনের পদসোপানে সচিবালয়ের স্থান
সর্বোচ্চ। সচিবালয় মন্ত্রীকে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ ও পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রণালয়ের কাজকে এগিয়ে নিয়ে থাকে। এছাড়া
মন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ, সংসদে তা উত্থাপন ও বক্তব্য প্রস্তুত করতে সহযোগিতা প্রদানসহ নানাবিধ
প্রশাসনিক কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে। সচিবালয় মন্ত্রণালয় চালনার অন্যতম প্রশাসনিক ব্যবস্থা হিসেব কাজ করে।
সচিবালয়ের সাহায্য সহযোগিতা ব্যতিত মন্ত্রণালয় কোন কার্যাবলি সম্পাদন করতে পারে না। বস্তুত প্রশাসনিক নীতিনির্ধারণ ও তার বাস্তবায়নে এই অরাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানটি গোটা রাষ্ট্রীয় প্রশাসনকে চালিত করে থাকে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৫.১১
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। কেন্দ্রিয় প্রশাসনের অতিগুরুত্বপূর্ণ কাঠামোর নাম-
(ক) অধিদপ্তর (খ) দপ্তর
(গ) সচিবালয় (ঘ) পরিদপ্তর
২। সচিবালয়ে কাজ হলর. নীতি নির্ধারণ
রর. হিসাব নিকাশ পরীক্ষা
ররর. নীতির সমন্বয়
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) র (খ) রর (গ) র, রর ও ররর (ঘ) কোনটি নয়
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র