মুখ্য শব্দ পল্লী সমাজ, নির্বাচন, নীতিমালা, অবকাঠামো প্রণোদনা, শান্তি-শৃঙ্খলা, সরাসরি
নির্বাচন, স্ট্যান্ডিং কমিটি, পল্লী উন্নয়ন, জনকল্যাণ।
বাংলাদেশে স্থানীয় সরকারের সর্বনি¤œ স্তরটি হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ। প্রাচীন কাল থেকে এই জনপদে যে
পঞ্চায়েত ব্যবস্থাটি কার্যকর ছিল সেটিই বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তনের মাধ্যমে আজকের ইউনিয়ন পরিষদের রূপটি
নিয়েছে। ব্রিটিশ আমল থেকে বাংলাদেশের পল্লী সমাজের মানুষের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় পর্যায়ের
শাসনের কাজ করে থাকে। অনেক দিন ধরে সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়।
স্থানীয় পর্যায়ের মানুষের নিরাপত্তা বিধান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি
কার্যাবলি ইউনিয়ন পরিষদ করে থাকে। ইউনিয়ন পরিষদের কাঠামো নি¤œরূপ:
১ জন চেয়ারম্যান
৯ জন সদস্য
৩ জন সংরক্ষিত নারী সদস্য
১ জন সচিব, অফিস সহকারি ও গ্রাম পুলিশ
প্রতি পাঁচ বছর পরপর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের
প্রধান নির্বাহী অর্থাৎ চেয়ারম্যান, নয়টি ওয়ার্ডের প্রতিটি থেকে একজন করে সদস্য ও প্রতি তিনটি ওয়ার্ডের জন্য সংরক্ষিত
একজন নারী সদস্যকে নির্বাচিত করে। এই ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত সদস্য ছাড়াও ১৩ টি স্ট্যান্ডিং কমিটি থাকে। এই
স্টান্ডিং কমিটিতে ইউনিয়ন পরিষদের একজন নির্বাচিত সদস্য কমিটির চেয়ারম্যান এবং পাঁচ থেকে সাত জন স্থানীয়
নাগরিক সদস্য হিসেবে অন্তভর্‚ক্ত থাকেন। ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন কার্যাবলি সম্পাদন করার জন্য স্ট্যান্ডিং কমিটি ও
সচিব নানানভাবে সহযোগিতা করে থাকে। এই স্টান্ডিং কমিটি প্রশাসনের বাইরে সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে
ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলিকে আরও ফলপ্রসূ করে তোলে। কেননা, গ্রাম উন্নয়নই হল ইউনিয়ন পরিষদ গঠনের মূল
উদ্দেশ্য। গ্রাম উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রায় চল্লিশটি কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান কার্যক্রমের অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এদের
মধ্যে প্রধান হলো জনকল্যাণ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, রাজস্ব সংগ্রহ, উন্নয়ন ও বিচার। ইউনিয়ন পরিষদের আয়ের মধ্যে
আছে রাজস্ব উৎস, সরকারি অনুদান, ট্যাক্স ও ফি ইত্যাদি। ইউনিয়ন পরিষদকে স্থানীয় স্বায়ত্বশাসিত একটি প্রতিষ্ঠান
হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে এই পরিষদ নিজেদের আয়ের মাধ্যমে নিজেদেরকে পরিচালিত করবে। কিন্তু শাসন ও
প্রশাসন নীতি-মালা অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের কার্যকলাপ ও সার্বিক কলেবর বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ব্যবস্থায় সরকারী
অনুদাননীতি গৃহীত হয়েছে। বস্তুতঃ স্থানীয় পর্যায়ে জনকল্যাণ সাধনের নিমিত্তে জনগণের একেবারে কাছ থেকে উন্নয়ন
প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখার তাগিদে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যকরি ভূমিকা রাখে।
ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলি
ইউনিয়ন পরিষদ বাংলাদেশের স্থানীয় স্বায়ত্বশাসনের ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ের সর্বনি¤œ স্তর। সুতরাং মাঠ বা পল্লী উন্নয়ন করাই
ইউনিয়ন পরিষদের মুখ্য উদ্দেশ্য।
উন্নয়নমূলক কাজ:
ইউনিয়ন পরিষদ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, কুটির শিল্প, রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্ট নির্মাণ, বৃক্ষ রোপণ ও সংরক্ষণ, রাস্তাঘাট
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি উন্নয়নমূলক কাজ সম্পাদন করে জনকল্যাণ সাধন করে থাকে। জনস্বাস্থ্য রক্ষার তাগিদে টিকা
দান কর্মসূচি, খাদ্যে ভেজাল রোধ, বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করাও ইউনিয়ন পরিষদের অন্যতম কাজ। এছাড়া
শিক্ষা বিস্তার ও বিনোদনের জন্য পাঠাগার স্থাপন, পার্ক, উদ্যান ও খেলার মাঠ ও সেগুলোর যতœ, পরিচর্যা ও সংস্কার করে
ইউনিয়ন পরিষদ জনকল্যাণ নিশ্চিত করে থাকে। দূর্যোগকালীন সময়ে দুঃস্থদের সাহায্য ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে থাকে।
জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনকরণ, কবরস্থান ও শ্মশান ঘাটের রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে।
রাজস্ব সংক্রান্ত কাজ:
ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় জনগণের ওপর কর ধার্য ও আদায় করে থাকে। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন ধরনের রাজস্ব সংগ্রহে
সহযোগিতা করে থাকে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশমত কোন রেকর্ড প্রস্তুত, কর ধার্য, জরিপ, শস্য পরিদর্শন রাজস্ব
প্রশাসনের সাথে জড়িত যেকোন কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করা ইউনিয়ন পরিষদের কাজ।
কৃষি উন্নয়নমূলক কাজ:
কৃষি উন্নয়নের জন্য এই পরিষদ উন্নতমানের বীজ, সার ও কীটনাশক সরবরাহ ও সমবায় আন্দোলনে উৎসাহ দান ইত্যাদি
নানা ধরনের প্রণোদনামূলক কাজে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে থাকে।
বিচার ও শান্তিরক্ষামূলক কাজ:
ইউনিয়নের অধীনে গ্রামসমূহে বিভিন্ন সমস্যা ও মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে সালিশি আদালত হিসেবে কাজ করে থাকে।
এছাড়া ইউনিয়নের অভ্যন্তরে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য চৌকিদার ও দফাদার নিয়োগ করে এবং গ্রাম পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক
বাহিনী গঠন ও পরিচালনা করে থাকে।
এসব গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ সেবামূলক কাজ, সরকারের সংগে সংযোগ স্থাপন, খবরাখবর প্রদান ও
প্রচার কার্য ইত্যাদি কাজসমূহ সম্পাদন করে গ্রাম্য উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে থাকে।
শিক্ষার্থীর কাজ ইউনিয়ন পরিষদ কী কী উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকে?
সারসংক্ষেপ
স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে নীচের স্তর হল ইউনিয়ন পরিষদ। জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয় ইউনিয়ন পরিষদের
প্রতিনিধিগণ। এছাড়া স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য হিসাবে অনির্বাচিত প্রতিনিধিরা নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরকে পল্লী উন্নয়ন কর্মে
সহযোগিতা করে থাকে। স্থানীয় পর্যায়ের মানুষের নিরাপত্তা বিধান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা, অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্য,
শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি কার্যাবলি এই ইউনিয়ন পরিষদ করে থাকে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৬.৪
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সংখ্যা কত?
(ক) ১১ (খ) ১২
(গ) ১৩ (ঘ) ১৪
২। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কিভাবে নির্বাচিত হন?
(ক) গণভোটে (খ) স্থানীয় জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে
(গ) সদস্যদের ভোটে (ঘ) জেলা প্রশাসকের দ্বারা
৩। ব্যয় নির্বাহের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ করারোপ করতে পারে-
র. ঘরবাড়ির জন্য ও জমির ওপর রর. যানবাহনের ওপর
ররর. হাটবাজারের ওপর
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) র ও রর (খ) রর ও ররর
(গ) র ও ররর (ঘ) র, রর ও ররর
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র