কমনওয়েলথ প্রতিষ্ঠার পটভ‚মি কমনওয়েলথ এর গঠন ও কার্যক্রম কমনওয়েলথ ও বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে পারবে

মুখ্য শব্দ ব্রিটিশ উপনিবেশ বেলফোর ঘোষণা, লন্ডন ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধ, কলম্বো পরিকল্পনা, উচ্চতর শিক্ষা, রাজনৈতিক সঙ্কট, হাইকমিশনার।
কমনওয়েলথ
কমনওয়েলথ হল সাবেক ব্রিটিশ সা¤্রাজ্যভুক্ত স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রসমূহের সংগঠন। এক সময় যে সকল
অঞ্চল বা জনপদগুলো ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে শাসিত হয়ে পরবর্তীতে ব্রিটিশ শাসন ও শোষণের হাত থেকে মুক্ত হয়ে
বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেসব রাষ্টের প্রতিষ্ঠান হচ্ছে কমনওয়েলথ। স্বাধীন ও
সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য ব্রিটেনের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে কমনওয়েলথ। ব্রিটেনের রাজা বা
রাণী হলেন এ সংস্থার প্রধান। কমনওয়েলথের সদর দফতর লন্ডনে অবস্থিত। এ সংস্থার অফিশিয়াল ভাষা ইংরেজি।
১৯ নভেম্বর, ১৯২৬ সালে ‘বেলফোর ঘোষণার’ মাধ্যমে ব্রিটিশ কমনওয়েলথ অব নেশনস
ধারণার গোড়াপত্তন হয়। ১১ ডিসেম্বর, ১৯৩১ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট কর্তৃক
‘স্ট্যাটিউট অব ওয়েস্ট মিনিস্টার’ ) আইন অনুমোদিত হয়। এ আইনের মাধ্যমে
উপনিবেশগুলোর পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশ কমনওয়েলথ স্বতন্ত্র মর্যাদা লাভ করে। ২৮
এপ্রিল, ১৯৪৯ সালে ‘লন্ডন ঘোষণা’র ) মাধ্যমে কমনওয়েলথ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। তবে এ সময় সংস্থাটি থেকে ব্রিটিশ শব্দটি বাদ দিয়ে ‘কমনওয়েলথ অব নেশনস’ (ঈড়সসড়হবিধষঃয ড়ভ ঘধঃরড়হং) করা
হয়। ব্রিটিশ উপনিবেশ না হয়েও মোজাম্বিক ও রুয়ান্ডা যেমন কমনওয়েলথের সদস্য রাষ্ট্র, তেমনি ব্রিটিশ উপনিবেশ হয়েও
অনেক রাষ্ট্র যেমন- মায়ানমার, আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, মিসর, ইরাক, কুয়েত, সুদান, জর্ডান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
কমনওয়েলথের সদস্য হয় নি। বিভিন্ন ধারা পরিক্রমায় বর্তমান কমনওয়েলথের সদস্য রাষ্ট্র সংখ্যা ৫২।
কমনওয়েলথ ও বাংলাদেশ
বাংলাদেশ কমনওয়েলথ-এর অন্যতম সদস্য। ২৮ এপ্রিল, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ কমনওয়েলথের ৩২তম সদস্য রাষ্ট্র
হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হয়। এর পর থেকে কমনওয়েলথের সাথে বাংলাদেশের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সংস্থার মূল লক্ষ্য
হল কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা সমৃদ্ধি করা।
কমনওয়েলথ এর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। যে রাষ্ট্রকে কেন্দ্র করে কমনওয়েলথ এর উৎপত্তি সেই ব্রিটেন
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে সমর্থন করেছিল। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় ব্রিটেনের প্রচার মাধ্যমগুলো স্বাধীনতাকামী বাঙালি জনগণের ওপর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নির্মম নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, প্রতিরোধ
আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রচার করে বিশ্বজনমত সৃষ্টি করেছিল। এই ধারাবাহিকতাতে স্বাধীনতার পর
ব্রিটেন তথা কমনওয়েলথের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব স্থাপিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় অস্ট্রেলিয়ার বেতার তথা অস্ট্রেলিয়ার
ভ‚মিকাও ছিল প্রশংসনীয়। ব্রিটেনসহ কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের বিভিন্নভাবে সাহায্য-
সহযোগিতা করেছিল। স্বাধীনতা লাভের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করার জন্য কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো সাহায্য-সহযোগিতা করেছিল।
কমনওয়েলথের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ কলম্বো পরিকল্পনার সদস্য। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের অনেক
শিক্ষার্থী কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে উচ্চতর শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ লাভ করছে। শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি কমনওয়েলথ বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট সমাধানেও প্রচেষ্টা চালায়। বাংলাদেশ
কমনওয়েলথের সদস্য হওয়ার পর কমনওয়েলথের প্রতিটি শীর্ষ সম্মেলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ এবং কার্যকর ভ‚মিকা
পালন করে। বাংলাদেশের প্রথম সরকার প্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে অটোয়ায় অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেন।
সারসংক্ষেপ
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিক শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষার্থে কমনওয়েলথ প্রশংসনীয় ভ‚মিকা পালন
করছে। কমনওয়েলথ সদস্য রাষ্ট্রগুলো পরস্পরের মধ্যে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির
লক্ষ্যে কাজ করে। কমনওয়েলথের সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য উৎপাদন, বিজ্ঞান
ও প্রযুক্তি, পল্লী ও শিক্ষা উন্নয়ন, আইনগত বিষয়, প্রশিক্ষণ, নারী উন্নয়ন, রপ্তানি বাজার উন্নয়ন, অর্থনৈতিক ও
আর্থিক ব্যবস্থাপনা। মুক্তিযুদ্ধের সময়কাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত কমনওয়েলথের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক
প্রশংসনীয়। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে কমনওয়েলথের ভ‚মিকা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট মুহূর্তেও কমনওয়েলথের ভ‚মিকা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৯.৭
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। কোন ঘোষণার মাধ্যমে কমনওয়েলথের গোড়াপত্তন হয়?
(ক) লন্ডন (খ) বেলফোর
(গ) প্যারিস (ঘ) কোনটিই নয়
২। কমনওয়েলথ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালে?
(ক) ১৯৪৯ (খ) ১৯৫৯
(গ) ১৯৫০ (ঘ) ১৯৬৯
৩। কমনওয়েলথের প্রধান কে?
(ক) ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী (খ) ব্রিটেনের কমন্সসভার স্পিকার
(গ) ব্রিটেনের রাজা বা রাণী (ঘ) অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী
৪। কমনওয়েলথের অফিশিয়াল ভাষা কোনটি?
(ক) ইংরেজি (খ) স্প্যানিশ
(গ) হিন্দি (ঘ) বাংলা
৫। কমনওয়েলথ যে ধরণের সংস্থার. সহযোগিতামূলক সংস্থা
রর. স্বাধীন ও স্বেচ্ছাধীন সংস্থা
ররর. স্বাধীনতা লাভে সাহায্যকারী সংস্থা
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) র ও ররর (খ) র ও রর (গ) রর ও ররর (ঘ) র, রর ও ররর
৬। বাংলাদেশ কমনওয়েলথ এর সদস্য হয় কত তারিখে?
(ক) ১ এপ্রিল, ১৯৭২ (খ) ২৮ এপ্রিল, ১৯৭২
(গ) ১৫ এপ্রিল, ১৯৭২ (ঘ) ২০ এপ্রিল, ১৯৭২
৭। বাংলাদেশ কমনওয়েলথ এর কততম সদস্য?
(ক) ২৫তম (খ) ৩০তম
(গ) ২৮তম (ঘ) ৩২তম
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৮নং ও ৯নং প্রশ্নের উত্তর দিন।

৮। প্রশ্ন (?) চিহ্নিত স্থানে কোন সংখ্যাটি বসবে?
(ক) ৫৪ (খ) ৫১
(গ) ৫২ (ঘ) ৫৩
৯। বাংলাদেশ যেসব সংস্থার সদস্য-
র. সার্ক
রর. জাতিসংঘ
ররর. কমনওয়েলথ
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) র ও রর (খ) র ও ররর (গ) রর ও ররর (ঘ) র, রর ও ররর
১৯৩ ?

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]