মুখ্য শব্দ সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ, সচিবালয়, মহাসচিব, মানবাধিকার, আন্তর্জাতিক
আদালত।
জাতিসংঘের গঠন
বর্তমানে জাতিসংঘের সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয় পাঁচটি প্রধান অঙ্গসংস্থার মাধ্যমে। এই অঙ্গসংস্থা হলর. সাধারণ পরিষদ
রর. নিরাপত্তা পরিষদ
ররর. অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ
রা. আন্তর্জাতিক আদালত ও
া. সচিবালয়
(র) সাধারণ পরিষদ : জাতিসংঘ সনদের নিয়ম কানুন মেনে চলার শর্তে বিশ্বের যে কোনো শান্তিকামী দেশ জাতিসংঘের
সদস্য হতে পারে। জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র সাধারণ পরিষদের সদস্য। মহাসচিব নিয়োগ, নতুন সদস্য গ্রহণ,
কোন সদস্য রাষ্ট্রকে বহিষ্কার, বাজেট পাস, সদস্য রাষ্ট্রের চাঁদার পরিমান নির্ধারণ, বিভিন্ন সংস্থার সদস্য নির্বাচন,
নিরাপত্ত পরিষদের অস্থায়ী সদস্য নির্বাচন, অন্যান্য সংস্থার বার্ষিক রিপোর্ট পর্যালোচনা প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ এ
পরিষদ সম্পাদন করে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার বার্ষিক
অধিবেশন শুরু হয়। সাধারণ পরিষদের প্রত্যেক রাষ্ট্রের একটি মাত্র ভোটদানের অধিকার রয়েছে। প্রত্যেক
অধিবেশনের শুরুতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের ভোটে পরিষদের একজন সভাপতি এক বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
(রর) নিরাপত্তা পরিষদ : নিরাপত্তা পরিষদকে জাতিসংঘের নির্বাহী পরিষদ বলা হয়। এ পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন
সদস্যরাষ্ট্র ১১টি (৫টি স্থায়ী ও ৬টি অস্থায়ী)। ১৯৬৩ সালের জাতিসংঘ সনদের সংশোধন করে অস্থায়ী সদস্য ৬
থেকে ১০ এ উন্নীত করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদ গঠন করা হয়। নিরাপত্তা পরিষদের ৫টি স্থায়ী সদস্য
রাষ্ট্র হল- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ফ্রান্স ও চীন। এ পাঁচটি সদস্য দেশের ভেটো প্রদানের ক্ষমতা রয়েছে।
কোনো প্রস্তাবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কোনো স্থায়ী সদস্যদেশ দ্বিমত পোষণ করলে সে প্রস্তাব আর
অনুমোদিত হয় না। এ পরিষদ আলাপ-আলোচনা, আপোষ, মধ্যস্থতা ও সালিশীর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিরোধের
নিষ্পত্তির চেষ্টা চালায়। এ চেষ্টা ব্যর্থ হলে নিরাপত্তা পরিষদ সামরিক শক্তি প্রয়োগ করতে পারে। বিশ্বের শান্তি ও
নিরাপত্তা রক্ষার প্রধান দায়িত্ব এ পরিষদের উপর ন্যস্ত।
(ররর) অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ : এ পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যা ৫৪। প্রতি তিন বছরে এক তৃতীয়াংশ সদস্য
অবসর গ্রহণ করে। বছরে কমপক্ষে দু’বার নিউইয়র্ক অথবা জেনেভায় এর অধিবেশন বসে। প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্রের
একটি করে ভোটের অধিকার আছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে যে কোন প্রস্তাব গৃহীত হয়ে থাকে। এ পরিষদের কাজ হল
সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, বেকার সমস্যার সমাধান, শিক্ষা প্রসার ও মানবাধিকার নিশ্চিত
করা। বিভিন্ন কল্যাণমূলক বিষয়ে সাধারণ পরিষদে সুপারিশ করাও এ পরিষদের অন্যতম দায়িত্ব। বাংলাদেশ
২০১০-২০১২ মেয়াদের জন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিল।
(রা) আন্তর্জাতিক আদালত: আন্তর্জাতিক আদালত হল জাতিসংঘের বিচারালয়। যেটি নেদারল্যান্ডস এর দ্যা হেগ শহরে
অবস্থিত। আন্তর্জাতিক বিরোধের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের যে কোনো সদস্য রাষ্ট্র অন্য সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক
আদালতের বিচারপ্রার্থী হতে পারে। এ আদালতে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না। আন্তর্জাতিক
আদালতের রায় নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক কার্যকরি হয়। ১৫ জন বিচারকের সমন্বয়ে এ আদালত গঠিত।
বিচারকদের মেয়াদকাল ৯ বছর। বিচারকদের মধ্যে একজন সভাপতি তিন বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
(ার) সচিবালয় : জাতিসংঘের সচিবালয় মহাসচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে গঠিত। মহাসচিব জাতিসংঘের
প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তিনি নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশক্রমে সাধারণ পরিষদ কর্তৃক পাঁচ বছরের জন্য নিযুক্ত
হন। জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব ছিলেন নরওয়ের ট্রিগভে লি এবং বর্তমান মহাসচিব হলেন পর্তুগালের এন্টোনিও
গুটেরিস।
অছি পরিষদ নামে জাতিসংঘের অপর একটি অঙ্গসংস্থা রয়েছে। কিন্তু এটি ১৯৯৪ সাল থেকে অকার্যকর।
জাতিসংঘের উদ্দেশ্য
কয়েকটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নি¤েœ জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি উদ্দেশ্য তুলে
ধরা হল১. বিশ্বব্যাপী শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করা।
২. বিভিন্ন জাতিসমূহের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা।
৩. আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্তর্জাতিক বিরোধের মীমাংসা করা।
৪. দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সহায়তা প্রদান করা।
৫. আন্তর্জাতিক মৌলিক মানবাধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা করা।
৬. জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের মানবিক অধিকার সংরক্ষণ করা।
পরিশেষে বলা যায়, বিশ্বশান্তি রক্ষার্থে জাতিসংঘের কিছু ব্যর্থতা থাকলেও সামগ্রিক দিক দিয়ে বিচার করলে জাতিসংঘের
ভ‚মিকা প্রশংসার দাবি রাখে।
সারসংক্ষেপ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা করাই ছিল লিগ অব নেশনস বা জাতিপুঞ্জ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
এড়াতে ব্যর্থ হওয়ায় ১৯৪৬ সালের ১৮ এপ্রিল সংস্থাটি বিলুপ্ত হয়। সংস্থাটির উত্তরসূরি হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের
পর জাতিসংঘের জন্ম হয়। জাতিসংঘ বর্তমানে পাঁচটি মূল অঙ্গসংস্থার মাধ্যমে তার সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা
করে থাকে। এগুলোর মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদ সর্বাপেক্ষ ক্ষমতার অধিকারী।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৯.৯
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১। জাতিসংঘের প্রধান অঙ্গসংস্থা কয়টি?
(ক) ৪ (খ) ৫ (গ) ৬ (ঘ) ৮
২। আন্তর্জাতিক আদালত কোথায় অবস্থিত?
(ক) নিউইয়র্ক (খ) দ্য হেগ (গ) লন্ডন (ঘ) দিল্লি
৩। কোন দেশটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য নয়?
(ক) রাশিয়া (খ) জার্মানি (গ) ফ্রান্স (ঘ) ব্রিটেন
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র