সিরাজউদ্দৌলা ও পলাশীর যুদ্ধের কারণ

উপমহাদেশের ইতিহাসে আলীবর্দী খান বিশেষ উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব। তাঁর
প্রকৃত নাম মির্জা মুহম্মদ আলী এবং তিনি ছিলেন তুর্কি বংশের।
প্রথমে তিনি বিহারের শাসনকর্তা ছিলেন এবং পরে স্বীয় যোগ্যতা বলে গিরিয়ার যুদ্ধে
বাংলার নবাব সরফরাজ খানকে হত্যা করে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাবী (১৭৪০
খ্রি.) লাভ করেন। তাঁর রাজত্বকালের উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো মারাঠা ও বর্গীদের দমন
করা। তিনি ইংরেজদের সম্পর্কে সচেতন ও সজাগ ছিলেন।
আলীবর্দী খানের কোনো পুত্র ছিল না; ছিল আমেনা, ময়মুনা ও ঘষেটি নামে তিন কন্যা।
ময়মুনা ও আমেনার দুই পুত্র ছিল; কিন্তু ঘষেটি বেগমের কোনো পুত্র ছিল না। আলীবর্দী
খান আমেনার পুত্র সিরাজউদ্দৌলাকে অত্যন্ত ¯েœহ করতেন এ কারণে তাঁকেই তাঁর
জীবিতকালে বাংলার নবাব পদে মনোনীত করে যান। সিরাজ ১৭৩৩ খ্রিস্টাব্দে জš§গ্রহণ
করেছিলেন তাঁর পিতার নাম মির্জা মুহম্মদ হাসিম মইনুদ্দীন খান। ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে নবাব
আলীবর্দী খানের মৃত্যু হলে সিরাজউদ্দৌলা বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার মসনদে আরোহণ
করেন।
পলাশীর যুদ্ধের কারণ
পলাশীর যুদ্ধের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ ছিল নিচে তা
আলোচনা করা হলো
সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র
সিরাজউদ্দৌলার সিংহাসন আরোহনকে আলীবর্দী খানের অপর দুই
কন্যা সহজে মেনে নিতে না পেরে ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে শুরু
করেন। এতে ইন্ধন যোগান ঘষেটি বেগমের দেওয়ান রাজা
রাজবল্লভ। সিরাজউদ্দৌলা কৌশলে তাঁর খালা ঘষেটি বেগমকে
প্রাসাদে নজরবন্দি করেন ও খালাত ভাই শওকত জঙ্গকে যুদ্ধে
পরাজিত ও নিহত করে পূর্ণিয়া দখল করেন।
সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে পারিবারিক ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হলেও প্রাসাদ
ষড়যন্ত্র নতুনভাবে শুরু হলো। একদিকে রাজদরবারের প্রভাবশালী দেশীয় রাজন্যবর্গ ও অপরদিকে ইংরেজ বেনিয়ারা।
ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের লোক জড়িত ছিল। এরা সিরাজের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করে
যাচ্ছিল।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা
ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ও ইংরেজদের অবাধ্যতা: বাংলায় বাণিজ্যরত ইংরেজ বণিক সম্প্রদায় সিরাজের সিংহাসনে
আরোহনের পর প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী উপঢৌকন প্রদান কিংবা সৌজন্য সাক্ষাৎ পর্যন্ত করে নি; এতে নবাবের প্রতি
ইংরেজের অবাধ্যতাই প্রকাশ পায়। ফলে সিরাজ অপমানবোধ করেন।
নবাবের আদেশ অমান্য: নবাব আলীবর্দী খানের সময়ে ইংরেজগণ বাণিজ্য করার অনুমতি পেলেও দুর্গ নির্মাণ করার
অনুমতি পায় নি। কিন্তু সিরাজের রাজত্বকালে দাক্ষিণাত্যের যুদ্ধের অজুহাতে ইংরেজরা কলকাতায় এবং ফরাসিরা চন্দনগরে
দুর্গ নির্মাণ শুরু করলে সিরাজ তাদের দুর্গ নির্মাণ বন্ধ করতে আদেশ দেন। ফরাসিরা এ আদেশ মান্য করলেও ইংরেজরা তা
অমান্য করে। ফলে নবাব তাদের উপর অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন।
ইংরেজ কর্তৃক শওকত জঙ্গকে সাহায্য: নবাব সিরাজের বিরুদ্ধে খালা ঘষেটি বেগম ও পূর্ণিয়ার শাসক শওকত জঙ্গ বিদ্রোহ
ঘোষণা করলে ইংরেজরা নবাবের বিরুদ্ধে তাদের সমর্থন করেন। এতে নবাব ইংরেজদের উপর অসন্তুষ্ট হন।
বাণিজ্যিক সুবিধার অপব্যবহার: ইংরেজরা বাণিজ্য শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ব্যক্তিগত ব্যবসায়ে অবাধে ‘দস্তক’ ব্যবহার শুরু করলে
এদেশীয় ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বাণিজ্য শর্ত মেনে চলার নির্দেশ প্রদান করলে ইংরেজরা তা অমান্য করে। ফলে
নবাব ইংরেজদের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়ে উঠেন।
সন্ধির শর্ত ভঙ্গ: নবাব সিরাজউদৌলার সাথে সন্ধির যাবতীয় শর্ত ভঙ্গ করে ইংরাজরা জনসাধারণের উপর অত্যাচার শুরু
করে ও নবাবকে কর প্রদানে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে নবাবের সঙ্গে ইংরেজদের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে।
ইংরেজ কর্তৃক কৃষ্ণদাসকে আশ্রয় দান: ঘষেটি বেগমের পক্ষ অবলম্বনকারী রাজা রাজাবল্লভের পুত্র কৃষ্ণদাস ও তাঁর পরিবার
প্রচুর ধনদৌলতসহ কলকাতায় পালিয়ে গিয়ে
ইংরেজদের আশ্রয় গ্রহণ করে। নবাব সরাসরি
কৃষ্ণদাসকে তাঁর নিকট সমর্পণের জন্য
নারায়ণসিংহকে দূত হিসেবে ইংরেজদের কাছে
পাঠান। কিন্তু, ইংরেজ গভর্নর নবাবের দূতকে
অপমানিত করে বের করে দেন ও কৃষ্ণদাসকে
ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করেন। ফলে নবাবের
ধৈর্যের বাধন ছিঁড়ে যায়।

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]