মৃত্যুর পূর্বে স¤্রাট বাবর পুত্র হুমায়ুনকে তাঁর উত্তরাধিকারী নির্বাচন করেছিলেন। তাই ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দে জহির
উদ্দিন মুহম্মদ বাবর মৃত্যুবরণ করলে হুমায়ুন দিল্লির সিংহাসনে আরোহন করেন। বাদশাহ হুমায়ুনের
শাসনামলকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম পর্যায় ১৫৩০-৪০ খ্রিস্টাব্দ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৫৫৫-১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।
মাঝখানে ১৫ বছর তিনি পারস্যে প্রবাস জীবনযাপন করেন।
হুমায়ুনের রাজকীয় ক্ষমতা গ্রহণের সময়ে তাঁর সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক অবস্থা ছিল অস্থিতিশীল ও বিপদসংকুল। পূর্বদিকে
আফগানগণ এবং পশ্চিমে গুজরাটের শাসক বাহাদুর শাহ মোগল প্রভুত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাড়িয়েছিল। হুমায়ুনের আপন
ভাইয়েরাও নানা ধরণের সংকট তৈরি করেন। তাঁর ভগ্নিপতি মুহম্মদ জামান মির্জা এবং চাচাতো ভাই মুহম্মদ সুলতান
মির্জারও দিল্লির সিংহাসনের প্রতি দৃষ্টি ছিল। বিভিন্ন জাতির সংমিশ্রণে গঠিত মোগল সৈন্যবাহিনী কিছুটা বিশৃঙ্খল হয়ে
পরেছিল। এমন দুর্বল অবস্থা থেকে উত্তরণে ব্যর্থ হলে হুমায়ুন দিল্লির সিংহাসনচ্যুত হন।
হুমায়ুনের সাথে বাহাদুর শাহের সংঘর্ষ
সিংহাসনে আরোহণের ছয় মাসের মধ্যে হুমায়ুন কালিঞ্জর দুর্গ অবরোধ করেন। তবে বিহারের শাসনকর্তা মাহমুদ লোদী
বিদ্রোহ করলে তিনি অবরোধ উঠিয়ে ফেলেন এবং বিহার আক্রমণ করে মাহমুদ লোদীকে পরাস্ত করেন। হুমায়ুন এ
বিজয়ের পর আফগান নেতা শের খান সুরের চুনার দুর্গ অবরোধ করেন। শেরখান হুমায়ুনের বশ্যতা স্বীকার করলে তিনি
(হুমায়ুন) আগ্রায় ফিরে আসেন। কিছু দিনের মধ্যে পূর্বাঞ্চলে শের খান এবং গুজরাটে বাহাদুর শাহ তাঁদের নিজ নিজ শক্তি
বৃদ্ধি করে। এ সংবাদে বাদশাহ শংকিত হয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবর্তে গুজরাটে বাহাদুর শাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করেন।
গুজরাট কাথিয়াড়ের সমুদ্র উপক‚লে অবস্থিত। হুমায়ুনের আমলে গুজরাটের শাসনকর্তা ছিলেন বাহাদুর শাহ। তিনি ছিলেন
উচ্চাভিলাষী এবং হুমায়ুনের প্রতি শত্রæভাবাপন্ন। আফগান বিদ্রোহীদের আশ্রয়দান এবং সাহায্য প্রদান করে তিনি হুমায়ুনের
বিরাগভাজন হন। তাছাড়া মালব, রণথম্ভোর, রাজপুতনা ও চিতোর বিজয়ের পরিকল্পনা করলে তাঁর সাথে হুমায়ুনের সংঘর্ষ
অনিবার্য হয়ে পড়ে। হুমায়ুন বিদ্রোহী আমীরদেরকে ফেরত চেয়ে বাহাদুর শাহের সাথে আপোস মীমাংসার চেষ্টা করেন।
কিন্তু বাহাদুর শাহ হুমায়ুনের প্রস্তাব নাকচ করে দেন। ফলে উভয় পক্ষে তুমুল যুদ্ধ সংঘটিত হয়। বাহাদুর শাহ যুদ্ধে
পরাজিত হয়ে পলায়ন করেন আহমদাবাদে। এরপর বাদশাহ হুমায়ুন রাজধানীতে প্রত্যাবর্তন করলে বাহাদুর শাহ গুজরাট
পুনরুদ্ধার করেন। এ সময়ে পূর্বাঞ্চলে শের খান প্রভাবশালী হয়ে উঠলে বাহাদুর শাহের বিদ্রোহ দমন সম্রাটের পক্ষে আর
সম্ভব হয় নি।
হুমায়ুনের সাথে শের খানের সংঘাত
শের খান ছিলেন ভারতবর্ষের পূর্বাঞ্চলে বিহার প্রদেশের আফগান নেতা। শের খান বাদশাহ বাবরের জীবদ্দশাতেই বিহারের
অন্তর্গত সাসারামের সামন্ত শাসক ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি চুনার দুর্গের অধিপতি তাজ খানের বিধবা পতœী লাদ
মালিকাকে বিয়ে করে চুনার দুর্গের অধিপতি হন। ১৫৩১ খ্রিস্টাব্দে বাদশাহ হুমায়ুন চুনার দুর্গ অবরোধ করলে শের খান
তাঁর সাথে সন্ধি করেন এবং বাদশাহের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে নিজকে রক্ষা করেন। ইতোমধ্যে বিহারের শাসনকর্তা
জামাল খান লোহানী বাংলার সুলতান গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ শাহের সাহায্যে শের খানকে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু
বীর যোদ্ধা শেরখান এই সম্মিলিত বাহিনীকে সুরাজগড়ের যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন। এভাবে তিনি বিহারের
অধিপতি হন। অতঃপর শেরখান বাংলার প্রতি দৃষ্টি দেন। তিনি উপর্যুপরি দু’বার বাংলা আক্রমণ করে রাজধানী গৌড়ের
দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিলেন।
বাদশাহ হুমায়ুন পূর্বাঞ্চলে শেরখানের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কিছুটা চিন্তিত হন এবং তাঁকে দমন করার উদ্দেশ্যে ১৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে
সসৈন্যে বাংলা অভিমুখে যাত্রা করেন। বাংলার পথে হুমায়ুন চুনার দুর্গ আক্রমণ করে অধিকার করে নেন। চুনার দুর্গ জয়
করে হুমায়ুন দীর্ঘ ছয় মাস বাংলায় অতিবাহিত করেন। এ সুযোগে শের খান বানারস ও জৌনপুর অধিকার করেন।
সুচতুর শেরখান হুমায়ুনের সাথে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ না হয়ে তাঁর পিছু ধাওয়া করেন। তিনি বিহার ও জৌনপুরে মোগল
অধিকৃত অঞ্চল দ্রæত অধিকার করে কনৌজ পর্যন্ত অগ্রসর হন। শের খান দিল্লির সাথে বাংলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন
করে দেন। ফলে হুমায়ুন আতংকিত হয়ে পড়েন এবং কাল বিলম্ব না করে সসৈন্যে আগ্রার দিকে যাত্রা করেন। পথে গঙ্গা
নদীর তীরে চৌসা নামক স্থানে শেরখান তাঁর গতিরোধ করেন। এই দুঃসময়ে হুমায়ুন তাঁর ভাইদের নিকট সাহায্য প্রার্থনা
করে ব্যর্থ হন। অবশেষে তিনি মুষ্টিমেয় সৈন্য নিয়ে শেরখানের সাথে যুদ্ধ শুরু করেন। এ যুদ্ধে ১৫৩৯ খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুন
পরাজিত হন। হুমায়ুনের সৈন্য বাহিনী আত্মরক্ষার জন্য গঙ্গা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং এতে অনেকের সলিল সমাধি
ঘটে। হুমায়ুন কোনো রকমে গঙ্গা পার হয়ে প্রাণ বাঁচান এবং আগ্রায় পৌঁছেন। কথিত আছে যে তিনি যখন গঙ্গায় নিমজ্জিত
হওয়ার উপক্রম হন তখন নিজাম নামে এক ভিস্তিওয়ালা তাঁকে প্রাণে রক্ষা করেন। তিনি তাঁর প্রাণরক্ষাকারীকে বিপুল
সম্মানে ভ‚ষিত করেন এবং একদিনের জন্য দিল্লির সিংহাসনে বসান। এই যুদ্ধ জয়ের ফলে বাংলা, বিহার, জৌনপুর,
কনৌজ শেরখানের হস্তগত হয়। তাঁর শক্তি ও মর্যাদা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে তিনি ১৫৩৯ খ্রিস্টাব্দে. ‘শেরশাহ’ উপাধি ধারণ
করে রাজকীয় মর্যাদায় নিজেকে ভ‚ষিত করেন। তিনি নিজের নামে খুৎবাহ পাঠ ও মুদ্রা ইস্যুর ব্যবস্থা করেন।
বিলগ্রামের যুদ্ধ (১৫৪০ খ্রি.)
চৌসার যুদ্ধের পরাজয়ের গøানি এবং ব্যর্থতার বেদনা সহ্য করতে না পেরে হুমায়ুন পুনরায় ভাইদের নিকট সৈন্য সাহায্য
প্রার্থনা করেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় সাহায্য তিনি পান নি। তাই তিনি মাত্র চল্লিশ হাজার সৈন্যের এক বাহিনী নিয়ে শেরশাহকে
বাধা দেয়ার জন্য কনৌজের পথে অগ্রসর হন। অপর পক্ষে শেরশাহের সৈন্য সংখ্যা ছিল পনের হাজার। তিনি এ সৈন্য
নিয়ে ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দের ১৭ মে কনৌজের অদূরে বিলগ্রামে হুমায়ুনের মুখোমুখী হন। উভয়ের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ সংঘটিত
হয়। বিলগ্রামের যুদ্ধে হুমায়ুন পুনরায় শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়ে আগ্রার পথে পলায়ন করেন। শেরশাহ দ্রæত দিল্লি, আগ্রা
অধিকার করে নিলে হুমায়ুন পারস্যের দিকে পলায়ন করেন। এ যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে ভারতে সাময়িকভাবে মোগল
সাম্রাজ্যের অবসান ঘটে এবং শেরশাহের নেতৃত্বে আফগান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
শেরশাহের সাফল্য ও হুমায়ুনের ব্যর্থতার কারণ
শেরশাহের সাফল্য ও হুমায়ুনের ভাগ্য বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে নি¤েœাক্ত বিষয়গুলো উল্লেখ করা যায়:
১. শেরশাহের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও সামরিক দক্ষতা- শেরশাহ ছিলেন কৌশলী ও দূরদর্শী শাসক। তিনি হুমায়ুনকে
গৌড় জয় করতে সুযোগ দিয়ে কৌশলে নিজের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির কাজ সম্পন্ন করেন। অন্যদিকে হুমায়ুনের
দূরদর্শিতার অভাব ছিল। চুনার এবং পরে গৌড়ে অযথা কালক্ষেপণ তাঁর অদূরদর্শিতা প্রমাণ করে।
২. বাবরের সাম্রাজ্যের সাংগঠনিক দুর্বলতা- বাবর যে সাম্রাজ্য ও শাসন ব্যবস্থা রেখে যান তা এত দুর্বল, কাঠামোহীন ও
ভঙ্গুর ছিল যে হুমায়ুনের পক্ষে তা রক্ষা করা সম্ভব হয় নি। বাবর রাজকোষ শূন্য রেখে যান এবং তিনি সুষ্ঠু রাজস্ব
ব্যবস্থা কায়েম করে যেতে পারেন নি।
৩. সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক বৈশিষ্ট্য- শেরশাহের সেনাবাহিনী যুদ্ধ নিপুণ সৈন্য দ্বারা সুগঠিত ছিল। কিন্তু হুমায়ুনকে অত্যন্ত
তাড়াতাড়ি সৈন্য সংগ্রহ করতে হয়েছিল বলে তিনি সৈন্য বাহিনীকে সুগঠিত করার সময় ও সুযোগ পান নি।
৪. হুমায়ুনের চারিত্রিক দুর্বলতা- হুমায়ুন ছিলেন দুর্বল চিত্তের অধিকারী। তিনি তাঁর ভাইদের প্রতি কোমলতা দেখিয়ে পরে
অনুতাপ করতে বাধ্য হন। ঐতিহাসিক লেনপুল বলেছেন যে হুমায়ুনের চরিত্রে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, জেদ ও অধ্যবসায়ের
অভাব ছিল। তিনি কোনো বিষয়ে আংশিক সফলতার পর আমোদ প্রমোদে অযথা সময় ব্যয় করতেন।
৫. হুমায়ুনের ভাইদের বিরোধিতা- হুমায়ুনের তিন ভাই কামরান, হিন্দাল এবং আশকারী বিপদের সময়ে হুমায়ুনকে
কোনোরূপ সাহায্য করেন নি। ফলে একা হুমায়ুনের পক্ষে দিল্লির সিংহাসন রক্ষা করা সম্ভব হয় নি।
৬. আফগানদের নিরঙ্কুশ সমর্থন- শেরশাহের প্রতি আফগানদের পূর্ণ সমর্থন ছিল। অন্যদিকে হুমায়ুন তাঁর আপনজনের
সমর্থন থেকেও বঞ্চিত হয়েছিলেন। ফলে হুমায়ুন সিংহাসনচ্যুত হন এবং ভারতের ভাগ্যাকাশে ধুমকেতুর মতো
শেরশাহের আবির্ভাব ঘটে।
হুমায়ুনের দেশ-দেশান্তরে ভ্রমণ
শেরশাহের নিকট পরাজিত হয়ে হুমায়ুন বহু দুঃখ দুর্দশার মধ্যদিয়ে আশ্রয়ের সন্ধানে দেশ-দেশান্তরে ঘুরে বেড়াতে
লাগলেন। যোধপুরে আশ্রয় লাভে ব্যর্থ হয়ে তিনি অমরকোটে রানা প্রসাদের আশ্রয় প্রার্থী হন। রানা প্রসাদ তাকে আশ্রয়
দেন এবং সিন্ধু ও খাট্টা পুনরুদ্ধারে সহায়তার প্রতিশ্রæতি দেন। অমরকোটে থাকা অবস্থায় হুমায়ুনের স্ত্রী হামিদা বানুর গর্ভে
পুত্র আকবরের জন্ম হয়। রানা প্রসাদের সাথে হুমায়ুনের মত বিরোধ দেখা দিলে তিনি হুমায়ুনকে সাহায্য করতে অস্বীকৃতি
জ্ঞাপন করেন। হুমায়ুন আশ্রয়ের আশায় কান্দাহারে ভাই আশকারীর স্মরণাপন্ন হন। কিন্তু আশকারী সম্মত না হওয়ায় তিনি
শিশু পুত্র আকবরকে কান্দাহারে রেখে পারস্য অভিমুখে রওনা হন। ১৫৪২ খ্রিস্টাব্দে পারস্যে পৌঁছলে সম্রাট শাহ তামসপ
হুমায়ুনকে আন্তরিক অভ্যর্থনা জানান। পারস্য সম্রাটের সাথে সম্পাদিত এক চুক্তি অনুসারে হুমায়ুনকে বোখারা, কাবুল,
কান্দাহার ও তাঁর ভারতে মোগল রাজ্য পুনরুদ্ধারে সেনাবাহিনী ও অর্থ দিয়ে সাহায্যের প্রতিশ্রæতি দেয়া হয়। বিনিময়ে
হুমায়ুন শাহ তামসপকে কান্দাহার ফিরিয়ে দিতে এবং শিয়া ধর্মমত গ্রহণ করতে রাজী হন।
হুমায়ুনের রাজ্য পুনরুদ্ধার
পারস্য সম্রাটের সহায়তায় হুমায়ুন তাঁর ভাইদের পরাজিত করে কাবুল ও কান্দাহার অধিকার করেন। কান্দাহার থেকে
শিশুপুত্র আকবরকে উদ্ধার করা হয়। ১৫৫৪ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বাসী সেনাপতি বৈরামখানের সহায়তায় হিন্দুস্তান পুনরুদ্ধারে
অগ্রসর হন। ১৫৫৫ খ্রিস্টাব্দে সিকান্দর শূরকে পরাজিত করে পাঞ্জাব দখল করেন। দিল্লি ও আগ্রা অধিকার করে তিনি
মোগল শাসন পুনপ্রতিষ্ঠা করেন। তবে তিনি বেশি দিন রাজ্য ভোগ করতে পারেন নি। ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি
হুমায়ুন দিল্লিতে তাঁর পাঠাগারের সিঁড়ি হতে পড়ে গিয়ে আকস্মিক মৃত্যু বরণ করেন।
হুমায়ুনের চরিত্র ও কৃতিত্ব
হুমায়ুন শান্ত স্বভাব, দয়ালু ও বাৎসল্য প্রবণ ছিলেন। তাঁর মধ্যে মমত্ববোধও ছিল অপরিসীম। সহিষ্ণুতা ও ক্ষমাশীলতার
মতো দুর্লভ গুণও তাঁর মধ্যে ছিল। তিনি ছিলেন শিক্ষিত, মার্জিত ও শিষ্টাচার সম্পন্ন। এছাড়াও তাঁর মধ্যে সমরদক্ষতা ও
সাহসিকতারও অভাব ছিল না। তবে তাঁর মধ্যে বিচক্ষণতা ও রাজনৈতিক দুরদর্শিতার অভাব ছিল। নব প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্য
রক্ষা করার এবং আফগানদের বিরোধিতা মোকাবেলা করে সাম্রাজ্যের সংহতি বিধান করার জন্য প্রয়োজনীয় দুরদর্শিতা,
কুটকৌশল ও ধৈর্য্য তাঁর ছিল না। ঐতিহাসিক লেনপুল এর মতে, হুমায়ুনের চরিত্র ছিল আকর্ষণীয়, কিন্তু প্রভাবশালী নয়।
ব্যক্তি জীবনে হয়ত মনোরম সঙ্গী ও বিশ্বাসী বন্ধু ছিলেন কিন্তু সম্রাট হিসেবে ছিলেন সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
শিক্ষার্থীর কাজ শিক্ষার্থীগণ স¤্রাট হুমায়ুনের দেশ-দেশান্তরের উপর মানচিত্রসহ একটি রচনা তৈরি
করবেন।
সম্রাট বাবরের মৃত্যুর পর তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র হুমায়ুন দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন। হুমায়ুন আফগানদের সাথে বিশেষ
করে শেরখানের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে দিল্লির সিংহাসন হারান। পরবর্তীকালে দীর্ঘ পনের বছর পর ১৫৫৫ খ্রিস্টাব্দে
তিনি দিল্লির সিংহাসন পুনরুদ্ধার করলেও বিজয়ের সুফল ভোগ করতে পারেন নি। ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি তিনি
পাঠাগারের সিঁড়ি থেকে পড়ে মৃত্যুবরণ করেন।
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন।
১। হুমায়ন কত খ্রিস্টাব্দে দিল্লির সিংহাসন বসেন?
ক) ১৫২৫ খ) ১৫৩০
গ) ১৫৩৫ ঘ) ১৫৪০
২। হুমায়ুন প্রবাস জীবনযাপন করেনÑ
ক) ১৫ বছর খ) ১৬ বছর
গ) ১৮ বছর ঘ) ২০ বছর
৩। হুমায়ুনের শাসনামলে বাংলার রাজধানী কোথায় ছিল?
ক) মুর্শিদাবাদ খ) গৌড়
গ) ঢাকা ঘ) ল²নাবতী
৪। হুমায়ুনের শাসনামলে গুজরাটের শাসক ছিলেন কে?
ক) মাহমুদ শাহ খ) বাহাদুর শাহ
গ) জামাল খান ঘ) শেরখান
উদ্দীপকটি পড়ে ৫ ও ৬ নং প্রশ্নের উত্তর দিন।
কবির উদ্দিন ছিলেন জোতদার। প্রতিপক্ষের হাতে জমি জমা সব হারিয়ে দীর্ঘদিন তিনি এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ান।
অবশেষে বন্ধুদের সহায়তায় জোতদারী উদ্ধার হলেও হঠাৎ মৃত্যুবরণ করায় বেশি দিন ভোগ করতে পারেন নি।
৫। উদ্দীপকের কবির উদ্দিনের সাথে কোন মোগল শাসকের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়?
ক) বাবর খ) হুমায়ুন
গ) আকবর ঘ) জাহাঙ্গীর
৬। উক্ত শাসক আশ্রয় নিয়েছিলেনÑ
র. অমরকোটে
রর. কান্দাহারে
ররর. পারস্যে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) র ও রর খ) র ও ররর
গ) রর ও ররর ঘ) র, রর ও ররর
সৃজনশীল প্রশ্ন
ক একটি রাষ্ট্রের স¤্রাট ছিলেন। পিতার মৃত্যুর পর অল্প বয়সেই তাকে রাষ্ট্রের দায়িত্বভার গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু অচিরেই
তার নিকটাত্মীয় পরিজন, সভাসদ, আমীর ওমরাদের বিরুদ্ধাচারণের ফলে তার রাজ্য হাত ছাড়া হয়ে যায়। অনেক বার
চেষ্টা করেও রাজ্য পুনরুদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে পাশ্ববর্তী রাজ্যের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার সুযোগে তা দখল করে শক্তিশালী রাজ্য
প্রতিষ্ঠা করেন।
ক. স¤্রাট হুমায়ুন কে ছিলেন? ১
খ. বিলগ্রামের যুদ্ধ কেন হয়? ২
গ. হুমায়ুনকে কেন এদেশ থেকে সে দেশ পালিয়ে বেড়াতে হয়? ৩
ঘ. হুমায়ুনের ব্যর্থতা ও শেরশাহের সাফল্যের কারণ কী? ৪
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র