প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পেছনে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণসমূহ জড়িত ছিল।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পেছনে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণসমূহ জড়িত ছিল। ফলে ১৯১৪ সালের ২৮
জুন অস্ট্রিয়ার আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দের হত্যাকাÐকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের এক এবং একমাত্র কারণ ভাবার কোনো সুযোগ
নেই। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাজনীতি, অর্থনৈতিক স্বার্থ, সংস্কৃতিগত দৈন্য ও উৎকর্ষতার বিপরীতে আরো কিছু গৌণ
কারণ এ যুদ্ধকে প্রণোদিত করেছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। পেন্ডুলামের মত দুলতে থাকা রাজক্ষমতার দেশগুলোতে দৃষ্টি
দিয়ে অনেক রাষ্ট্রচিন্তাবিদই তৎকালীন ইউরোপের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিলেন যার পর নাই হতাশ। বিশেষ করে
ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতার পাশাপাশি একে অন্যের উপর অহেতুক চড়াও হওয়ার মানসিকতা নিয়ে চেষ্টা চলছিল একের পর
এক জোট গঠনের প্রচেষ্টা। বিভিন্ন রাষ্ট্রের এই প্রবণতা তাদের কতটুকু লাভবান করেছিল তা নিয়ে হয়ত নিশ্চিত করে কিছু
বলার সুযোগ নেই। তবে এতে করে পুরো ইউরোপের রাজনৈতিক পরিবেশ যে অশান্ত হয়ে উঠেছিল তা নিশ্চিত করে বলা যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর নানা কারণ রয়েছে। তবে যুদ্ধের একেবারে শুরুর গল্পটাকে সাজানো যেতে পারে সরাসরি সারায়েভো
হত্যাকাÐ থেকেই। বসনিয়ার জাতীয়তাবাদী গ্রæপ বø্যাক হ্যান্ড এক্ষেত্রে তাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে উগ্রপন্থা
অবলম্বনে বাধ্য হয়। তারা অস্ট্রো-হাঙ্গেরি সিংহাসনের উত্তরাধিকারী আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দ ও কাউন্টেস সোফিয়াকে
হত্যা করে। সারায়েভো হত্যাকাÐের দায়টা তারপরেও পুরোপুরি জাতীয়তাবাদীদের উপর বর্তায় না। বিশেষ করে বসনিয়াহার্জেগোভিনা একটি দুর্বল রাষ্ট্র ছিল। তারা ইউরোপের রাজনৈতিক পরিসরে তেমন গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা
কোনোদিনই রাখতে পারেনি। এই সুযোগ নিয়ে অস্ট্রো-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের অহেতুক সাম্রাজ্য বিস্তারের নেশা পেয়ে বসে।
তারা ১৮৭৪ সালে এসে দখল করে নেয় বসনিয়া-হার্জেগোভিনার ভূখÐ। এরপর ১৯০৮ সালে এই ভূখÐ একীভূত করা
হয়।
বসনিয়ায় বসবাসরত মুসলিম স¤প্রদায় থেকে শুরু করে সেখানকার সার্বরাও এ দখলদারিত্ব মেনে নিতে পারেনি। তারা
অস্ট্রো-হাঙ্গেরির সাথে না থেকে সরাসরি সার্বিয়া কিংবা অন্য কোনো ¯øাভ ভূখÐের সাথে যুক্ত হতেই বেশি আগ্রহী ছিল।
দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের পরিণতি ঘটায় তারা ১৯১৪ সালের ২৮ জুন অস্ট্রীয় যুবরাজ হত্যার মধ্যদিয়ে। সম্রাট ফ্রাঞ্জ
জোসেফের অনুজ ফার্দিনান্দ ছিলেন আর্চ ডিউক কার্ল লুডিগের ছেলে। একটি ভোজসভায় ১৮৯৫ সালের দিকে কাউন্টেস
সোফিয়ার সাথে সাক্ষাতের সূত্র ধরে শেষ পর্যন্ত প্রেম গড়িয়ে শুভ পরিণয়। তবে ফার্দিনান্দের প্রথম দিকের বৈবাহিক জীবন
অতটা সুখের হয়নি।
আর্চডিউক ফ্রেডরিখের স্ত্রী এলিজাবেথের লেডি ইন ওয়েটিং সোফিয়ার সাথে ফার্দিনান্দের এই সম্পর্ককে ফ্রেডরিখ প্রথম
প্রথম আঁচ করতে পারেননি। তিনি যখন বুঝতে পারেন তখন একে যেকোনো মূল্যে আটকাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এতে
করে আর্চডিউক কন্যা মারিয়া ক্রিস্টিনের পর্যন্ত কপাল পোড়ে। অন্যদিকে সোফিয়া রাজপরিবারের কেউ না হওয়াতে তাকে
বিয়ে করার ব্যাপারে ঘোর আপত্তি জানান ফ্রাঞ্জ জোসেফ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার জার দ্বিতীয় নিকোলাস, জার্মান সম্রাট
দ্বিতীয় উইলহেম ও ১৩ তম পোপ লিও ফার্দিনান্দের পক্ষাবলম্বন করে রাজার কাছে সুপারিশ করেন। এতে বরফ গললেও
শেষ রক্ষায় হয়নি ফার্দিনান্দের। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৭ জন অনভিজ্ঞ বন্দুকধারী আততায়ীর সামনেই তাঁকে সস্ত্রীক জীবন দিতে
হয়েছিল।
অস্ট্রো-হাঙ্গেরির রাজ পরিবার অবৈধভাবে দখল করেছিল বসনিয়ার ভূখÐ। সেখানে বসবাসরত মুসলমানদের অনেককে
গণহত্যার শিকার হতে হয় হাঙ্গেরীয় হানাদার বাহিনীর হাতে। পাশাপাশি সেখানে বসবাসরত সার্ব-ক্রোয়াটরাও রেহাই
পায়নি এ নির্মম হত্যাযজ্ঞ থেকে। তারপর যারা হাঙ্গেরির বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য হয় তাদের উপর সীমাহীন জুলুমনিপীড়ন চলতে থাকে। অনেকে শুধুমাত্র স্বাধীন বসনিয়া আন্দোলনের সাথে জড়িত অনেকের শিক্ষাজীবন শেষ হয়ে যায়।
এমনি এক তরুণের নাম প্রিন্সিপ যে কৈশোরেই জীবনের স্বপ্ন মুছে যাওয়ায় বাধ্য হয় প্রতিশোধ নেয়ার সংকল্পে। আর তার
হাতেই প্রাণ যায় ফার্দিনান্দ ও সোফিয়ার। এর পাশাপাশি নেদেলজাকো ক্যাবরিনোভিস কিংবা ড্যানিলো আইলিচও
জীবনের নানা ক্ষেত্রে হাঙ্গেরির দখলদারিত্বের যন্ত্রণা ভোগ করছিলেন। জীবনের নানা ক্ষেত্রে বলতে গেলে সর্বস্ব খুইয়ে
তারা বাধ্য হয়েছিলেন সরাসরি ফার্দিনান্দকে নির্বংশ করে বসনিয়ার উপর থেকে হাঙ্গেরির অশুভ ছায়া দূর করতে। প্রথম
কয়েকজন পরিকল্পনাকারী পরপর ব্যর্থ হলেও কিশোর প্রিন্সিপ তিনটি গুলিতে হত্যা করে ফার্দিনান্দ-সোফিয়াকে।
নেহাত ক্রোধ ও প্রতিশোধস্পৃহা থেকে হত্যাযজ্ঞে অংশগ্রহণকারীরা মরতে গিয়েও পারেনি। তাদের কেউ কেউ গুলি চালাতে
গিয়ে ব্যর্থ হয়, কেউবা সায়ানাইড পিল খেয়েও অদ্ভুতভাবে বেঁচে যায়। আর শেষ পর্যন্ত ধরা পড়তে হয় হাঙ্গেরিয়ান
বাহিনীর হাতেই। কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে য²া আক্রান্ত হয়ে পচে মরার আগে তাদের কপালে রিমান্ডের যে নির্যাতন
জোটে তাতেই ফাঁস হয় এ হত্যাকাÐের। হাঙ্গেরি দাবি করে সার্বিয়া এই হত্যাকাÐকে প্রণোদিত করেছে। আর এর সূত্র
ধরেই তারা নানাবিধ চাপ প্রয়োগ করতে থাকে সার্বিয়ার উপরে। বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কোণঠাসা করার
চেষ্টা চলে সার্বিয়াকে। কিন্তু প্রথম থেকেই অবিচল সার্বিয়া এতে টলতে রাজি ছিল না। হত্যাকাÐে অংশগ্রহণকারীদের
জবানবন্দি থেকে নিশ্চিত করা হয় যে এর নীলনকশা সাজানো হয়েছিল বেলগ্রেডে। সার্বিও জাতীয়তাবাদী গ্রæপ নারোদনা
ওদব্রানার প্রণোদনাতেই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এত সহজে সংগঠিত হয়ে এ হত্যাকাÐ ঘটাতে সক্ষম হয়েছিল। এমন দাবি করে
সার্বিয়ার উপর আক্রমণের চিন্তা করে হাঙ্গেরির বাহিনী।

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]