মুসলমান, খ্রিস্টান ও ইহুদি এ তিন ধর্মের কাছে পবিত্র ঐতিহ্যবাহী নগরী জেরুজালেমের দখল নিয়ে ১৯১৭ সালের ৮-২৬
ডিসেম্বর তুমুল যুদ্ধ চলে। এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যন্ডের মিশরীয় এক্সপিডিশনারি ফোর্সের সৈন্যরা
জেনারেল এডমন্ড অ্যালেনবাইয়ের নেতৃত্বে আক্রমণ করে ফিলিস্তিনের জেরুজালেম অঞ্চল। তাদের প্রতিরোধে জেনারেল
এরিক ফন ফাকেন হায়েনের সপ্তম আর্মি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়। ব্রিটিশদের পক্ষে ১৮ হাজার হতাহতের বিপরীতে তুর্কি
সৈন্যদের মধ্যে ২৫ হাজার সৈন্য নিহত হয়। তবে অবাক করার বিষয় হচ্ছে উভয় পক্ষ প্রথমে পবিত্র এ নগরীর মর্যাদা
রক্ষার শপথ নিলেও শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশরা শপথ ভঙ্গ করে জয়লাভের জন্য নগরীর আশে পাশেও লড়াই চালিয়ে যায়।
¯িপ্রং অফেন্সিভ
মর্কিন বাহিনী এসে পৌঁছে গেলে তাদের বিশাল বহরের সামনে জার্মানদের টিকে থাকার আর কোনো সম্ভাবনা নেই জেনেই
লড়াইয়ের শেষ চেষ্টা হিসেবে চালানো হয় ¯িপ্রং অফেন্সিভ। জেনারেল লুডেনডর্ফের বাহিনী ১৯১৮ সালে পশ্চিম রণাঙ্গনে
এক ব্যাপক অভিযান শুরু করে। ২১ মার্চ ব্রিটিশ বাহিনীর উপর আক্রমণ চালিয়ে জার্মানরা ৬০ কিলোমিটার এগিয়ে যেতে
সক্ষম হয়। বলতে গেলে ১৯১৪ সালের পর এটাই তাদের প্রথম সাফল্য। এক্ষেত্রে পদাতিক বাহিনী হুঁশিয়ার কৌশলে
এগিয়ে যেতে থাকে। তারা শত্রæর এগিয়ে আসা বাহিনীগুলোকে ছত্রখান করে দিতে স্টর্মস্ট্রুপার গঠন করে। অন্যদিকে
লেফটেন্যান্ট কর্নেল গিওর্গ ব্রæচমুলার ফিউয়ারভালজি কৌশলে গোলন্দাজ বাহিনীকে পরিচালনা করেন। তাদের কার্যকর ও
পরিমিত গোলাবর্ষণে শত্রæ কমান্ড ধ্বংস হয়। পাশাপাশি এর মাধ্যমে খুব সহজে শত্রæর অগ্রবর্তী ইউনিটগুলোর গতিরোধ
করে তাদের কমান্ড ও লজিস্টিক এরিয়াগুলোর দখল নেয়া সম্ভব হয়। এভাবে জার্মান বাহিনী প্যারিসের ১২০ কিলোমিটার
ভিতরে চলে গিয়ে তিনটি ভারী সুপার ক্রুপ রেলওয়ে গান থেকে এক প্যারিসেই ১৮৩ টি গোলা নিক্ষেপ করে। লোকজন
প্যারিস থেকে পালাতে শুরু করে উচ্ছ¡সিত কাইজার দ্বিতীয় উইলহেম ২৪ মার্চ জাতীয় ছুটি ঘোষণা করেন। তবে
মিত্রবাহিনীর প্রবল প্রতিরোধ জার্মানদের সব চেষ্টা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ করে দেয়। তারা বিভিন্ন স্থান থেকে সৈন্য এনে পশ্চিম
রণাঙ্গনে নিজেদের অবস্থান আরো শক্তিশালী করে। অন্যদিকে ট্যাংক ও মোটরচালিত আর্টিলারি ফোর্সের ঘাটতি জার্মানদের
অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে দেয়নি।
মিত্রবাহিনীর জয়লাভ
জার্মানির দুর্নিবার আক্রমণে অপারেশন মিচেল, জর্জেটি এবং বøুচার ইয়র্ক শিরোনামে শেষ হয় ¯িপ্রং অফেন্সিভ। প্রথম দিকে
আশাতীত সাফল্য পেলেও শেষ পর্যন্ত তারা সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি। তারপর ১৯১৮ সালের গ্রীষ্ম ও শরৎ আসতে না
আসতেই মিত্রবাহিনী নানা স্থানে জার্মানদের ওপর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে শুরু করে। বিশেষ করে মার্কিন সৈন্যরা রণাঙ্গনে
পা রাখতেই যুদ্ধের মোড় পরিবর্তন শুরু করে। নানা স্থানে এগিয়ে থাকা জার্মান সৈন্যরাও এবার ধীরে ধীরে পিছু হটতে
থাকে। এতদিন মিত্রবাহিনী সহযোগী হিসেবে থাকা মার্কিনরা সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে পা রেখে ফলাফল ভিন্নদিকে ঘুরিয়ে দেয়।
১৯১৭ সালের ৬ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন সরাসরি জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। একইভাবে জার্মানির সাথে
বন্ধুত্ব ধরে রাখায় ১৯১৭ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রো-হাঙ্গেরির বিরুদ্ধেও যুদ্ধ ঘোষণা করে।
জার্মানি মনে করেছিল তাদের ইউবোট মার্কিন বাহিনীর অগ্রযাত্রা রোধ করে দেবে। অন্যদিকে ¯িপ্রং অফেন্সিভের মাধ্যমে
তারা দ্রæত জয়লাভের যে স্বপ্ন দেখেছিল সেটাও আস্তে আস্তে ফিকে হয়ে আসতে শুরু করে। আর এমনি পরিস্থিতি
যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী সরাসরি মিত্রবাহিনীর সাথে যুক্ত হয়ে ১৯১৮ সালের ৮ আগস্ট হান্ড্রেড ডেজ অফেন্সিভ শিরোনামে শুরু
করে পাল্টা অভিযান। মার্শাল ফচের সুদক্ষ অভিযান জার্মানির গড়ে তোলা হিন্দেনবার্গ লাইনকে ছত্রখান করে দেয়। জার্মান
ইউবোটগুলোকে আগেই প্রতিরোধ করেছিল বিশেষ মার্কিন নৌ ব্যবস্থা। মিত্রবাহিনী সার্বিয়া দখল করে নিলে ৩০ সেপ্টেম্বর
বুলগেরিয়া শান্তিচুক্তিতে সই করে। এর একদিন পরেই ৩১ অক্টোবর যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য হন তুর্কি সুলতান। একইভাবে
ইতালির যুদ্ধ পরাজিত হয়ে ৩ নভেম্বরেই শান্তিচুক্তিতে সম্মত হয়েছিল অস্ট্রিয়া। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ গোলযোগের পাশাপাশি
মিত্রবাহিনীর সুগঠিত আক্রমণ দেখে কাইজার দ্বিতীয় উইলহেম হল্যান্ডে পালিয়ে যান। ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর জার্মানির
আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে মিত্রবাহিনীর চূড়ান্ত বিজয় সম্পন্ন হয়।
অস্ত্র সমর্পণ
প্রচুর আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি ৩৫ লাখ সৈন্য নিয়ে যুদ্ধ শুরু করা জার্মানির সৈন্যসংখ্যা ২৫ লাখে এসে দাঁড়ায়। ১০
লক্ষাধিক সৈন্য হারিয়ে অনেক দিক থেকেই দুর্বল হয়ে পড়ে জার্মানরা। এসময় মিত্রবাহিনীর সাথে সাথে তাদের সহযোগী
হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা সরাসরি মাঠে নামলে পরিস্থিতি জার্মানির নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় । রণাঙ্গনে অপ্রতিদ্ব›দ্বী জার্মান
সৈন্যরা প্রতিপক্ষের বহুমুখী আক্রমণ ও কূট কৌশলের পাশাপাশি একটি বৈশ্বিক বাহিনীর বিরুদ্ধে একা একা লড়াই করে শেষ
পর্যন্ত টিকতে পারেনি। জনমত থেকে শুরু করে সবকিছু তাদের বিরুদ্ধে চলে গেলে ১৯১৮ সালের ৩ অক্টোবর যুদ্ধবিরতির
প্রস্তাব দেয় জার্মানি। তবে পুরোটা সময় বীরত্বের সাথে লড়াই করে শেষ পর্যায়ে এসে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে রাজি না হয়ে
বরং ২৬ অক্টোবর পদত্যাগ করেন জেনারেল লুডেনডর্ফ। এদিকে কাইজার দ্বিতীয় উইলহেম দেশ ছেড়ে হল্যান্ড পালিয়ে গেলে
সিংহাসনে বসেন প্রিন্স ম্যাক্স। এ অবস্থায় ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর কম্পেইনের বনাঞ্চলে একটি রেলওয়ের বগিতে
স্বাক্ষরিত হয় জার্মান-মিত্রবাহিনী অস্ত্রবিরতি চুক্তি। বলতে গেলে এর মধ্যে দিয়েই অবসান হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের।
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র