রেনেসাঁর প্রভাবে ১৫ শতকে ইউরোপের সমাজ ও অর্থনীতিতে বিশেষ পরিবর্তন দৃষ্টিগোচর হয়। তখন ভূমধ্যসাগরীয়
অঞ্চলের শহরগুলোকে কেন্দ্র করে ইতালির ব্যবসা-বাণিজ্য বিকাশ লাভ করে। এ নতুন উৎপাদন পদ্ধতি ও সম্পর্কের
বিকাশ ইউরোপে প্রতিষ্ঠিত সামন্তবাদী আর্থসামাজিক কাঠামোকে ভেঙে দেয়। ১৫ শতকের শেষ এবং ১৬ শতকের
প্রথমার্ধের এসময় ইউরোপের ইতিহাসে প্রাথমিক পুঁজি বিস্তৃতির যুগ হিসেবে চিহ্নিত। তবে ইউরোপে সামন্তবাদ পতনের
পটভূমিতে যে আধুনিক পুঁজিবাদী অর্থনীতির বিকাশ ঘটে তার পরিণতিও শুভ হয়নি। তবে ১৬ শতকের মধ্যভাগ থেকে
পশ্চিম ইউরোপের ব্যবসা-বাণিজ্যে এগিয়ে থাকা দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক প্রতিদ্ব›িদ্বতা চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। তবে পূর্ব
ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল অটোমান তুর্কিদের দখলে থাকায় এশিয়ার সাথে বাণিজ্য টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে যায়। এ
সময়কালে গুরুত্বপূর্ণ বিশ^জনীন রাজনৈতিক ঘটনা বলশেভিক বিপ্লব।
সা¤্রাজ্যবাদের উত্থান, বিকাশ ও ফলাফল
১৮ শতকের শিল্প বিপ্লব ইউরোপের সমাজ ও অর্থনীতিতে এক গুণগত পরিবর্তন সাধন করে। কায়িক-শ্রমের পরিবর্তে
যন্ত্রভিত্তিক উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হয়। বস্তুত এই সময় থেকে পুঁজিবাদের ব্যাপক উত্থান প্রক্রিয়া লক্ষ করা হয়। এর ফলে
বাণিজ্য পুঁজির স্থান ক্রমাগত সংকুচিত হয়ে আসতে থাকে এবং শিল্প পুঁজির প্রসার প্রবলভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ১৯
শতকের প্রথমার্ধ কাল হলো বাণিজ্য পুঁজি এবং শিল্প পুঁজির মধ্যে সংঘাতের সময়। এই সময়ে বাণিজ্য পুঁজির প্রবক্তারা
একচেটিয়া বাণিজ্য এবং অন্যদিকে শিল্প পুঁজির মালিকেরা অবাধ বাণিজ্যের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে। ফলে সারা পৃথিবীর
ইউরোপীয় উপনিবেশগুলিতে এই দুই ধারার সংঘাত চলতে থাকে।
১৯ শতকের প্রথমদিকে এশিয়া আফ্রিকা ও আমেরিকা মহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশ ঘটে।
সেখানে ইউরোপের ঔপনিবেশিক শাসন, শোষণ এবং সীমাহীন অত্যাচারের বিরুদ্ধে শুরু হয় স্বাধীনতা অর্জনের লড়াই।
১৮১৫ সালের মধ্যে আমেরিকায় অবস্থিত ফরাসি উপনিবেশগুলো হাতছাড়া হতে থাকে। পরিস্থিতির দায় মেনে নিয়ে
১৮২২ সালে লাতিন আমেরিকার ব্রাজিল থেকে নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার করে পর্তুগাল। এরপর ১৮৫২ সালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
ডিজরেলি ক্রমান্বয়ে ব্রিটিশ উপনিবেশগুলোকে স্বাধীনতা প্রদানের ঘোষণা করেন। ১৮৬১ সালে এসে ফরাসি সরকারও
ঘোষণা দিয়ে তাদের উপনিবেশে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে। তারা এ সব অঞ্চলে অবাধ বাণিজ্য নিশ্চিত করে। সে হিসেবে
উনিশ শতকের প্রথম ভাগ পশ্চিম ইউরোপের উপনিবেশগুলোর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারানোর যুগ শুরু হয়।
নানা স্থানে অবস্থিত উপনিবেশগুলোতে প্রশাসনিক শিথিলতা ছিল সাময়িক ব্যাপার। তখন পুরো ইউরোপে বাণিজ্য পুঁজির
স্থান দখল করে নেয় শিল্প পুঁজি। ইউরোপের প্রায় প্রত্যেকটি দেশে শিল্প পুঁজির প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সঙ্গে সঙ্গে নতুন
বাজার তৈরি ও কাঁচামাল সংগ্রহের প্রয়োজনে নতুন দেশ দখল করাটা ইউরোপীয়দের স্বভাবে পরিণত হয়। তাদের
নতুনভাবে সাম্রাজ্য গড়ে তোলার এ পর্বকে ইতিহাসে সাম্রাজ্যবাদী যুগ বলে ইতিহাসে চিহ্নিত করা হয়। তাদের হিসেবে
১৮৭০ সাল থেকে শুরু করে প্রথম মহাযুদ্ধের সময় পর্যন্ত ইতিহাসের পাতায় সাম্রাজ্যবাদ বিস্তারের যুগ হিসেবে চিহ্নিত।
আর পরপর দুটি বিশ্বযুদ্ধ এ ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। তবে সাম্রাজ্যবাদী এ চেতনা বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার রূপ পাল্টে
আবার নতুন করে ফিরে আসতে চেয়েছে। নতুন করে সাম্রাজ্যবাদ ঘুরে দাঁড়ানোর এ চেষ্টা বিশ্ব শান্তিকে ঠেলে দিয়েছে
হুমকির মুখে। বিশেষ করে একের পর এক নতুন ভূখÐ দখলের চেষ্টা সহজে কোনো জাতি মেনে নিতে রাজি হয়নি। তারা
যখনি এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চেয়েছে তখনি বেঁধেছে দীর্ঘস্থায়ী বিপত্তি। আর দুর্বল দেশগুলো যাদের প্রতিরোধ
গড়ে তোলার মত ক্ষমতা ছিল না তাদেরকে নির্বিচারে গ্রাস করেছে শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো।
সাম্রাজ্যবাদের বিকাশ
বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অনেকটা কাছাকাছি সময়ে সাম্রাজ্যবাদ বিস্তার লাভ করলেও তার কারণ, ফলাফল ও প্রভাব ভিন্ন ভিন্ন
ছিল। বিশেষ করে ভারত উপমহাদেশ, চীন কিংবা আফ্রিকায় ভিন্ন ভিন্ন কারণে সাম্রাজ্যবাদ বিস্তার লাভ করেছিল।
সাম্রাজ্যবাদ-পূর্ব সময়কালে মোগল শাসিত ভারতবর্ষে বাণিজ্যিক প্রাধান্য বিস্তার এবং সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে দুটি
ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স। স্থায়ী বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রবল লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয় দখলদার দেশ দুটি।
১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের ভেতর দিয়ে বাংলায় ইংরেজদের রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা পায়। এদিকে চীনে
সাম্রাজ্যবাদের বিস্তার ঘটে ১৭ শতকে। সেখানে বাণিজ্য বিস্তারে এগিয়ে ছিল পর্তুগিজরা। তারা দক্ষিণ চীনের ম্যাকাও
বন্দর দখল করে বাণিজ্য পরিচালনা করে।
ধীরে ধীরে ইংরেজ, ফরাসি ও ডাচ কোম্পানি চীনের সমুদ্র উপক‚ল ধরে বসতি স্থাপন করে। এরই ধারাবাহিকতায় ক্যান্টন,
হংকং, তাইওয়ান প্রভৃতি এলাকায় ইঙ্গ-ফরাসি প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৩৯ সালে চীন সরকার ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া
কোম্পানির সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে নানকিংয়ের সন্ধিতে স্বাক্ষর করে। তার শর্তানুযায়ী সমুদ্র উপক‚লের পাঁচটি বন্দর
ইংরেজ কোম্পানির দখলে চলে যায়। এই সময়ে চীনে ইংরেজদের আফিম ব্যবসা ও আফিম বাণিজ্যের বিরুদ্ধে চীনা
জনগণের সংগ্রামের ফলে ঘটে যায় প্রথম ইঙ্গ-চীন যুদ্ধ ও নানকিং সন্ধি। পরিস্থিতি সংঘাতময় হয়ে ওঠে ১৮৫৬ সালের
দিকে।
ইংরেজ ও ফরাসি কোম্পানির তাবেদার জনৈক ফরাসি ধর্মযাজককে কৃত অপরাধের জন্য চীন সরকার মৃত্যুদÐ প্রদান করে।
এর প্রতিবাদে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স যৌথভাবে চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ইতিহাসে এটাকে দ্বিতীয় চীন যুদ্ধ হিসেবে
উল্লেখ করা হয়। তিয়েন্তসিন সন্ধির মাধ্যমে এ যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটলেও সন্ধির শর্তানুসারে ক্ষতিগ্রস্ত হয় চীন।
উপক‚লবর্তী এগারোটি চীনা বন্দরে ইংরেজ ও ফরাসি শক্তির কর্তৃত্ব সুদৃঢ় হয় এ সন্ধির মাধ্যমে। ১৯ শতকের শেষাংশে চীন
দখলের জন্য ইউরোপীয় শক্তিগুলোর প্রবল প্রতিদ্ব›িদ্বতা এর অখÐতাকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়। ঠিক তখনি নতুন করে
চীনে বাণিজ্য বিস্তারের চেষ্টা করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের এশীয় বাণিজ্যেসমূহ ক্ষতির আশঙ্কা আঁচ করে তাদের সরকার ও
ব্যবসায়ীরা বিশাল চীন সাম্রাজ্যের খÐ-বিখÐ হয়ে যাওয়া মেনে নিতে পারেন নি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় মার্কিন পররাষ্ট্র
সচিব জন হে চীনের অখÐতা বজায় রাখা এবং চীন অঞ্চলে পশ্চিমা দেশগুলোর বাণিজ্য সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার একটি প্রস্তাব
উত্থাপন করেন। প্রস্তাবে ফ্রান্স, ব্রিটেন, স্পেন, ইতালি, পর্তুগালসহ অধিকাংশ ইউরোপীয় দেশ একাত্ম হয়। ‘মুক্ত বাণিজ্য
দ্বার’ নীতি হিসেবে পরিচিত এ চুক্তি বলতে গেলে চীনের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়।
আধুনিক বিশ্বের অর্থনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনার ক্ষেত্রে এই মুক্তদ্বার নীতির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষ করে ১৯০১
সালে গৃহীত এ নীতির মূল লক্ষ্যগুলো পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় বিশ্ব রাজনীতিতে এর প্রভাব কেমন ছিল। প্রথমত, এ
নীতির মাধ্যমে প্রত্যেকটি পশ্চিমা পুঁজিবাদী দেশ চীনের অখÐতা এবং স্বাধীনতা মেনে নেয়। দ্বিতীয়ত, চীনে বাণিজ্য
পরিচালনায় আগ্রহী কিংবা বাণিজ্যরত দেশ ও কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বাণিজ্য শুল্ক আদায় করার সুযোগ পায় চীন
সরকার। তৃতীয়ত, চীনে সব পশ্চিমা দেশ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সমান অধিকার লাভ করে তবে বাণিজ্য ক্ষেত্রে একই নীতি
অনুসরণে বাধ্য থাকে তারা। চতুর্থত, চীন সরকার সব দেশ ও বাণিজ্যিক কোম্পানির জন্য সমানুপাতিক হারে শুল্ক ধার্য করে।
এ শুল্ক আদায়ে সবার প্রতি একই নীতি অনুসৃত হয়। পঞ্চমত, বাণিজ্য পরিচালনা করতে গিয়ে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে
কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি চীনের অভ্যন্তরে খ্রিস্টান মিশনারিদের ধর্মান্তর করণের
অবৈধ তৎপরতাকেও প্রবলভাবে বাধা প্রদান করা হয় এ নীতির মাধ্যমে। আর যাই হোক এ মুক্তদ্বার নীতি চীনের অখÐতা
বজায় রাখতে পেরেছিল। তবে দেশটি সাম্রাজ্যবাদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়ে সব ধরনের শিল্প বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ
চলে যায় পুঁজিবাদী দেশগুলোর নিয়ন্ত্রণে। এতে করে নাম মাত্র অখÐ স্বাধীন দেশ হলেও বাস্তবে তাদের সার্বভৌম ক্ষমতা
বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকেনি।
দক্ষিণ এশিয়া ও চীনের পর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া তথা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিস্তার লাভ করে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর
আগ্রাসন নীতি। পশ্চিমে এ অঞ্চলের গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে মাঝারি থেকে শুরু করে ভারী শিল্পের কাঁচামাল
সমৃদ্ধ এ অঞ্চলের অবস্থান সাগর তীরে। সুয়েজ খাল খননের পরে এই অঞ্চলের সাথে ইউরোপের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো
উন্নত হয়। এদিকে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা প্রথমে পতুর্গিজ ও ওলন্দাজদের দখলে ছিল। তবে সাম্রাজ্যবাদী যুগের সূচনাপর্বেই
শ্রীলঙ্কা দখল করে ইংরেজরা। তারা এখানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চা উৎপাদন শুরু করলে ক্রমে শ্রীলঙ্কা পৃথিবীতে চা শিল্পে
শীর্ষস্থান অর্জন করে। ১৮ শতকের মালয়েশিয়ায় পর্তুগিজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা পেলেও প্রতিযোগিতায় তারা ইংরেজদের কাছে
টিকতে পারেনি। সাম্রাজ্যবাদী যুগে এসে মালয়েশিয়াও ইংরেজদের দখলে চলে গেলে দূরপ্রাচ্যের ব্যবসা-বাণিজ্যে তাদের
আধিপত্য নিরঙ্কুশ হয়ে ওঠে।
১৮৭০ সালে ওলন্দাজদের জাভা দ্বীপপুঞ্জ অধিকার ও তার ১৬ বছর ব্যবধানে ১৮৮৬ সালে ইংরেজদের বার্মা দখল পরিস্থিতি
পুরো পাল্টে দেয়। তারা বার্মাকে ভারতের সাথে সংযুক্ত করলেও থাইল্যান্ড ও আশেপাশের অঞ্চলে কর্তৃত্ব ধরে রেখেছিল
ফ্রান্স। তবে ঠিক এই সময়েই যুক্তরাষ্ট্র স্পেনকে তাড়িয়ে ফিলিপাইন দখল করে। এভাবে একের পর এক দখলবাজির মধ্য
দিয়েই এগিয়ে যায় সাম্রাজ্যবাদী যুগের ইতিহাস। প্রথম দিকে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে ইংরেজদের একাধিপত্য লক্ষ করা গেলেও
শেষ পর্যন্ত মার্কিনরা শক্তিমত্তায় এগিয়ে যায়। বলতে গেলে দুটি মহাযুদ্ধের পূর্বে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি প্রায় পুরো পৃথিবীকেই গ্রাস
করে নেয়। তবে উনিশ শতকে সাম্রাজ্যবাদ বিস্তৃত হওয়ার পেছনে কয়েকটি বিশেষ কারণ চিহ্নিত করা যায়। তা হচ্ছেÑ
১. শিল্প সংরক্ষণ নীতি : উনিশ শতকের শিল্প বিপ্লব ইউরোপের আর্থ রাজনৈতিক পরিস্থিতি পুরো পাল্টে দিয়েছিল। বিশেষ
করে এর ফলেই ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশে পুঁজিস্ফীতি ঘটে। তারা পরিস্থিতির দায় ভেবে কঠিন শিল্প সংরক্ষণ নীতি
গ্রহণ করেছিল এ সময়ে। তারা বাইরের দেশগুলোর সাথে বাণিজ্যিক প্রতিদ্ব›িদ্বতায় কম গুরুত্ব দিয়ে নিজেদের শিল্প
প্রতিষ্ঠান রক্ষার প্রয়াস নেয়। তাদের গৃহীত এ শিল্প সংরক্ষণ নীতি আন্তঃইউরোপীয় বাণিজ্যে সৃষ্টি করে এক
অচলাবস্থা। ইউরোপের নানা দেশে পণ্য চলাচল প্রায় বন্ধ হয়। নানা অযুহাতে সুযোগ বুঝে সব ধরনের পণ্যে
পুঁজিপতিদের মূল্যবৃদ্ধির প্রয়াস সবাইকে বিরক্তির শেষ সীমায় নিয়ে যায়। রাজক্ষমতার পৃষ্ঠপোষকতায় অবাধ ও নির্মম
শ্রমিক শোষণ পণ্যের অভ্যন্তরীণ বাজারকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করায়। পক্ষান্তরে ১৯ শতকের শেষাংশ পর্যন্ত
এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলো অন্তত শিল্পের দিক থেকে তেমন উন্নতি অর্জন করতে পারেনি। তবে জনবহুল এ অঞ্চল
ইউরোপের শিল্প পণ্যের জন্য এক সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে দেখা দেয়। বিশেষ করে নিজেদের শিল্পজাত পণ্যের
বাজার সৃষ্টির জন্যই তারা এসব দেশ দখলে আগ্রহী হয়েছিল। কারণ তারা জানতো কোনোভাবে এদেশগুলোর
রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করা গেলে আর যাই হোক জোরপূর্বক সেখানে তাদের পণ্য বিক্রির সুযোগ সৃষ্টি হবে। বলতে
গেলে অধিক জনসংখ্যার এসব দেশে মুক্ত বাজার সৃষ্টিতেই ইউরোপীয়রা নিজেদের রাজনৈতিক প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ
নেয়। আর তার গৌণ প্রভাবে হলেও ধীরে ধীরে সূচনা ও বিস্তার ঘটে সাম্রাজ্যবাদী যুগের।
২. কাঁচামালের যোগান নিশ্চিতকরণ : শিল্প বিপ্লব ঘটে যাওয়ার পর ইউরোপের নানা দেশে বিভিন্ন রকমের কলকারখানা
প্রতিষ্ঠা পেলেও তার সিংহভাগ কাঁচামাল ইউরোপে পাওয়া সম্ভব হত না। তারা কাঁচামালের জন্য পুরোপুরি নির্ভরশীল
ছিল আমেরিকার নানা দেশ, এশিয়া ও আফ্রিকার উপর। ইন্দো-মালয় ও পূর্ব ভারতীয় দ্বীপগুলো ছিল তাদের রাবার
সরবরাহ কেন্দ্র। অন্যদিকে বস্ত্রশিল্পের কাঁচামাল তুলা উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে ভারতবর্ষ এবং মিশরের উষ্ণ আর্দ্র
জলবায়ুর এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করা যায়। অন্যদিকে আফ্রিকা অঞ্চলের কয়লা, লৌহ, স্বর্ণ, তাম্র এবং মধ্যপ্রাচ্যের
তেল ভাÐারও ছিল তাদের শিল্পের বিকাশে অনেক জরুরি। এজন্যও তারা অনেক দেশ দখল করে সাম্রাজ্যবাদের
বিস্তার ঘটিয়েছিল।
৩. খাদ্যশস্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা : ইউরোপে জনসংখ্যা বেড়ে গেলে সে অনুপাতে খাদ্য উৎপাদন সক্ষমতা বাড়েনি
তাদের। ফলে খাদ্যশস্য বিশেষ করে চা, চিনি, তামাক প্রভৃতির জন্য নির্ভরশীলতা বেড়ে যায় তাদের। তারা এশিয়া ও
মধ্য আমেরিকা অঞ্চলের উপর এক্ষেত্রে পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিল একথা বলা যেতেই পারে। অন্যদিকে ইউরোপের
মসলা সরবরাহের জন্য ভারতবর্ষ, বার্মা, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কার গুরুত্ব বহুগুণে বেড়ে গেছে ততদিনে।
বলতে গেলে খাদ্যশস্যের সরবরাহ অব্যাহত রাখার জন্যও শিল্পোন্নত ইউরোপের দেশগুলো এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন
দেশ দখল করে সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটায়।
৪. সস্তা শ্রমবাজার : ১৯ শতকে এশিয়া ও আফ্রিকার জনসংখ্যা ছিল বেশি। স্বাভাবিকভাবে এই সুবিধা ইউরোপের চেয়ে
এ অঞ্চলের শ্রম বাজার সস্তা ও সহজলভ্য করে দেয়। ইউরোপের শিল্প সংরক্ষণ নীতি এক দেশ থেকে অন্য দেশে
শ্রমিক চলাচল সীমিত করে দেয়। ফলে প্রয়োজনীয় বাড়তি শ্রমিকের জন্যই এশিয়া ও আফ্রিকার সস্তা শ্রমবাজারের
দিকে আকৃষ্ট হতে হয়েছিল ইউরোপয়ীয় শিল্পপতিদের। এ অবস্থায় শিল্পোন্নত ইউরোপীয় দেশগুলো বেশি মুনাফা
লাভের আশায় এশিয়া ও আফ্রিকার নানা অঞ্চলে কয়েকটি শিল্প ইউনিট প্রতিষ্ঠা করে। এর থেকে অর্জিত সাফল্য
তাদের অনুপ্রাণিত করে। পরবর্তীকালে তারা এই সস্তা শ্রম বাজার দখলের জন্য মরিয়া হয়ে সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনার
বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করে। অনেক ক্ষেত্রেই সহজ ও সস্তা শ্রমবাজারের দখল নিতে গিয়ে আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। তাদের আগ্রাসী নীতি দেশ বিশেষে ভিন্ন ছিল, কিন্তু উদ্দেশ্যগত দিক থেকে তাদের তেমন কোনো
পার্থক্য করার সুযোগ ছিল না।
৫. উগ্র জাতীয়তাবাদ : জার্মানি ও ইতালির উগ্র জাতীয়তাবাদী আচরণ ১৯ শতকে এসে ভয়াবহ রূপ লাভ করে। তারা
অর্থ, বিত্ত, প্রভাব-প্রতিপত্তি ও শিক্ষায় নিজেদের আফ্রিকা, এশিয়া ও এর বাইরের জাতি থেকে শ্রেষ্ঠ ভাবতে থাকে।
তাই রাষ্ট্রীয় মর্যাদা বৃদ্ধি এবং নিজেদের শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয় তারা। এক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে
নানা অঞ্চল দখলের মনোবৃত্তি তাদের মাঝে প্রবল হয়ে উঠে। জার্মান ও ইতালির এই উগ্র জাতীয়তাবাদী ভাবধারা
সাম্রাজ্যবাদকে প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ করেছিল নিঃসন্দেহে। তবে দেশ ও অঞ্চল দখলের পৈশাচিকতায় বদলে যায় সবার
রাজনৈতিক ধারা। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরাজিত শক্তি হিসেবে জার্মানিকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়, আগ্রাসী
নীতির ক্ষেত্রে ইউরোপের অন্যদেশগুলোও কোনো অংশে পিছিয়ে ছিল না।
৬. সামরিক দিক : আধুনিক যুগের শুরু থেকেই ইউরোপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি সংঘাতপূর্ণ হয়ে ওঠে। সামরিক শক্তি
বৃদ্ধি করা না গেলে এই সময়ের ইউরোপে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়তো যেকোনো দেশের জন্যই। এ জন্য তারা
নিজ সামরিক শক্তি বৃদ্ধিকল্পে বহুমুখী চেষ্টা চালায়। এরফলেই জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও ব্রিটেন প্রবল প্রতিদ্ব›িদ্বতায়
অবতীর্ণ হয়। তবে এ দেশগুলোর জনসংখ্যা কম বলে আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশ থেকে সামরিক বাহিনীর সদস্য
সংগ্রহেরও প্রয়োজন পড়ে অনেক ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ এবং সামরিক বাহিনীর সদস্য সংগ্রহের
উদ্দেশ্যেই পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলো এশিয়া আফ্রিকার অনেক দেশ দখল করে নেয়। একই সঙ্গে সামরিক ঘাঁটি
প্রতিষ্ঠা করে গড়ে তোলে স্ব স্ব সামরিক কমাÐ। তবে সাম্রাজ্যবাদী যুগের চূড়ান্ত বিকাশ বলা যায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মধ্য
দিয়ে। এরপর এ সংঘাতের রেশ টিকে থাকে পুরো বিশ শতকজুড়েই।
সাম্রাজ্যবাদের ফলাফল
ঔপনিবেশিক আধিপত্য শেষ হলে সাম্রাজ্যবাদী চিন্তা ইউরোপের মানচিত্র বদলে দিতে সহায়তা করে। উনিশ শতকের সত্তর
দশক থেকে সাম্রাজ্যবাদের উদ্ভব পৃথিবীর ইতিহাস নতুন করে লিখতে বাধ্য করেছে। শোষণের ধারাবাহিকতা অব্যাহত
থাকলেও কার্যত সাম্রাজ্যবাদী চিন্তা এবং এর বিকাশ ঘটে বিভিন্ন ধরনের রূপান্তরের মধ্য দিয়ে। এর ফলাফল ছিল তাই
বিস্তৃত ও সুদূরপ্রসারী। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছেÑ
১. শিল্পের বিকাশ : ইউরোপের পুঁজিপতিরা অধিক মুনাফার জন্য দখলকৃত বা সাম্রাজ্যভুক্ত অঞ্চলসমূহে কিছু নতুন ধরনের
শিল্প কারখানা স্থাপন করেছিল। তারা এগুলো নিজেদের মুনাফার জন্য করলেও এর মধ্য দিয়ে আফ্রিকা ও এশিয়ার
ইতিহাসে শিল্পের নবজাগরণ ঘটে। বিশেষ করে উপনিবেশ যেমন তাদের কোম্পানি স্বার্থ টিকিয়ে রাখতে গিয়ে
মসলিনের মত ঐতিহ্যবাহী শিল্প ধ্বংস করেছে সে হিসেবে সাম্রাজ্যবাদী যুগে কিছু কিছু নতুন অর্জন লক্ষ করা
গিয়েছে। পরিস্থিতি বিশেষে সেটা ছিল উপনিবেশ যুগের থেকে পুরোপুরিই ভিন্ন। বিশেষত, ভারতে পাট ও বস্ত্রশিল্পের
বিকাশ অনেকাংশে সাম্রাজ্যবাদী যুগের অবদান বলা যেতেই পারে।
২. যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন : সাম্রাজ্যবাদী শক্তি তাদের প্রয়োজনীয় শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহ ত্বরান্বিত করার
উদ্দেশ্যেই বিভিন্ন দেশে প্রতিষ্ঠা করে উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা। তাদের প্রয়োজনে কাঁচামাল সরবরাহের গতিকে দ্রæততর
করার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটালেও তা টিকে যায় বছরের পর বছর। বিশেষ করে অনুন্নত দেশেও প্রত্যন্ত
অঞ্চলের সাথে বন্দরগুলোকে সম্পৃক্ত করা হয়। বিভিন্ন স্থানজুড়ে শক্তিশালী রেললাইন স্থাপন করা হয়। বলতে গেলে
এশিয়ার বিভিন্ন দেশে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার বিকাশ ঘটে এ সময়টাতেই। বিশেষত, ভারতবর্ষ, চীন, বার্মা,
জাভা, মালয়েশিয়া ও চীনের যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নয়নে সাম্রাজ্যবাদী যুগের ভূমিকা রয়েছে।
৩. শিক্ষার উন্নয়ন : প্রশাসন পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষিত জনবল গড়ে তোলা ছিল সাম্রাজ্যবাদীদের জন্য
অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে তাদেরকে নির্ভর করতে হয় দখলকৃত অঞ্চলের বিশাল অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর
উপর। এক্ষেত্রে দখলকৃত অঞ্চল থেকেই তাদের প্রয়োজনীয় জনবল সৃষ্টির জন্য পশ্চিমা দেশগুলো প্রবর্তন করে নতুন
নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এশিয়ার ইতিহাসে এভাবেই শুরু হয় তাদের ভাষায় আধুনিক শিক্ষার অভিযাত্রা। বাস্তবে এর
মধ্যে দিয়েই সৃষ্টি হয় সাম্রাজ্যবাদ নির্ভর ইংরেজি ও ইউরোপীয় ভাবধারার পোষ্য শিক্ষিত শ্রেণি। সাম্রাজ্যবাদীদের
কাছে শিক্ষা নিয়ে এরাই কালক্রমে হয়ে ওঠে সাম্রাজ্যবাদের রক্ষক ও পৃষ্ঠপোষক।
৪. কৃষির বিকাশ : শিল্পের অনেক কাঁচামাল ছিল কৃষিনির্ভর। তাই সাম্রাজ্যবাদীরা শিল্পের কাঁচামাল ও খাদ্যশস্য সরবরাহ
নিশ্চিত করতে গিয়ে অনেকটা তাদের প্রয়োজনেই এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কৃষির বিকাশ ঘটায়। এক্ষেত্রে তাদের
পাশাপাশি উপকৃত হয় স্থানীয়রাও। বিশেষ করে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তুলা, রাবার, মসলা, চা, পাট উৎপাদন এবং
আধুনিক বনায়ন তাদের কৃষি নীতির অবদান। অনেক ক্ষেত্রে জবরদস্তিমূলক কৃষি উৎপাদন করতে গিয়ে স্থানীয় কৃষির
অনেক ক্ষতিসাধনও করেছে। তারা এসব দেশে সেই ধরনের পণ্য উৎপাদনেই বেশি আগ্রহ দেখাতো যেগুলো তাদের
প্রয়োজন ছিল। এতে করে প্রচলিত সনাতন পদ্ধতির চাষবাস ও শস্যগুলো হারিয়ে যেতে থাকে কৃষি থেকে।
৫. সাংস্কৃতিক পরিবর্তন : সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসন একটি দেশের সংস্কৃতিকে নানা দিক থেকে পাল্টে দেয়। মানুষের
আচার আচরণ, পোশাক আশাক এমনকি খাদ্যাভাসের উপর পর্যন্ত প্রভাব বিস্তার করে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। তবে
পরিস্থিতির দায় হিসেবে এটা মেনে নিতেই হবে যে এশিয়া অঞ্চল ইউরোপীয় শক্তির সাম্রাজ্যবাদ বিস্তারের পটভূমিতে
ইউরোপের শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে।
৬. বিচার ও প্রশাসন : নিজেদের প্রয়োজনেই বিচার ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে তাদের মত করে ঢেলে সাজায়
সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী। বিশেষ করে শিক্ষিত শ্রেণির একাংশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির অনুগত হলেও অন্য অংশ বিদেশি
শাসনের অবসান কল্পে উদ্যোগী হয়ে উঠেছিল তখন। এ পটভূমিতে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আধুনিক জাতীয়তাবাদী
আন্দোলনের উন্মেষ ও বিকাশ ঘটে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সারা এশিয়া অঞ্চলে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন উত্তাল
আকার ধারণ করে। বিপ্লবীদের দমন করার জন্য বিশেষ আইনের প্রয়োজন ছিল। এই আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের
উদ্দেশ্যেই তারা বিচার ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক কাঠামোতে নানা ধরনের সংস্কার ঘটায়।
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র