ইতিহাসের পাতায় ১৯৯১ সালের ৩১ ডিসেম্বর দিনটি স্মরণীয় হয়ে আছে সোভিয়েত ইউনিয়ন বিলুপ্তির দিন হিসেবে।
এদিন পুরো বিশ্বের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এক নিমিষে বদলে গিয়েছিল মনে করা হয়। বিশেষত, বিশ্বের রাজনৈতিক
ভারসাম্যে একটি বদল লক্ষ্য করা যায়। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন নিছক কোনো রাষ্ট্রজোটের পতন নয়। এর মধ্য দিয়ে
দীর্ঘ সাত দশকের প্রতাপশালী একটি এক পরাশক্তির পতন ঘটেছিল। ১৯৮৯-৯১ সালের এই তিন বছরে পর পর তিনটি
নাটকীয় ঘটনা ঘটে যায়। বস্তুত এই ঘটনাগুলোর প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ফলাফল বলা যেতে পারে সোভিয়েত ইউনিয়নের
পতনকে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্বে প্রায় ১৫ টি নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রের উত্থান ঘটতে দেখা যায়। এরপর
বিশ্বের উদীয়মান রাষ্ট্রগুলোকে সন্ত্রাসবাদী আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ যুদ্ধে লিপ্ত হয় আমেরিকা। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ব
রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ লক্ষ করা যায়।
সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পটভূমি
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত বিশ্বের পরাশক্তি বলতে বোঝাত ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রিয়া এসব রাষ্ট্রকে। রাশিয়া তখনও ততটা
শক্তিশালী ছিল না। এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে আন্তর্জাতিক সংঘাত থেকে সযতেœ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। প্রথম
বিশ্বযুদ্ধজনিত বিধ্বস্ত সামরিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগে রাশিয়ায় ১৯১৭ সালে বলশেভিক বিপ্লব সংঘটিত হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় পূর্ব ইউরোপীয় ১৫ টি রাষ্ট্র নিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন গঠিত হয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন গঠনের পর
থেকেই বিশ্বের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ লক্ষ করা যায়। এই রাজনৈতিক মেরুকরণ এবং সংশ্লিষ্ট সংঘাত তথা শক্তি
প্রদর্শনের মহড়ার একটা পর্যায়ে এসে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন বলশেভিক বিপ্লব সংঘটিত হলে উক্ত বিপ্লবের নেতা লেনিন বিশ্বযুদ্ধ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন।
এজন্য তিনি ত্রি-শক্তি জোটের প্রধান শরিক জার্মানির সাথে সন্ধির মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপীয় রাষ্ট্র পোল্যান্ডসহ বিভিন্ন বাল্টিক
প্রজাতন্ত্রসমূহ, ফিনল্যান্ড এবং ইউক্রেনের অধিকার জার্মানিকে হস্তান্তর করেছিলেন। ককেশাস অঞ্চলের একটা অংশও তিনি
তুরস্কের নিকট ছেড়ে দিয়েছিলেন। কমিউনিজমের লাল ফৌজের বিরুদ্ধে জার সমর্থকগণ দক্ষিণ এশিয়ায় এবং
সাইবেরিয়ান অঞ্চলে শ্বেতাঙ্গ সেনাবাহিনী গৃহযুদ্ধ শুরু করলে ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যবাহিনী রাশিয়ায়
অবতরণ করে ‘হোয়াইট আর্মি’ কে সহায়তা দান করে। ১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয় ঘটলে মিত্রবাহিনী
তাদের সমস্ত শক্তি রাশিয়ার গৃহযুদ্ধে তথা কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে নিয়োজিত করে।
১৯১৯ সালের মধ্যে রাশিয়া ১৬ শতকের দিকে মস্কো নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি তাদের
বিশাল অঞ্চল বিদ্রোহী হোয়াইটআর্মির' নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। তবে রাশিয়ার কমিউনিস্ট বিরোধী ‘হোয়াইট আর্মি'’
ভৌগোলিকভাবে বিরক্ত হয়ে পড়েছিল। এই পরিস্থিতিতে চলমান সংঘাতে একের পর এক রাশিয়ার অঞ্চলসমূহ নিজেদের
বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছেই পরাজিত হতে থাকে। ১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ শেষ হলে মিত্রপক্ষ রুশ-জার্মান সন্ধিটি
বাতিল করেছিল। ফলে রাশিয়া এ অঞ্চলে তার ছেড়ে দেওয়া দেশগুলো যেন মিত্রপক্ষের পতাকাতলে সমবেত না হয়
সেজন্য চেষ্টা চালায়। ফলাফল হিসেবে দেখা যায় এ দেশটি বেলারুশ, ইউক্রেন, আজারবাইজান, আর্মেনিয়া, জর্জিয়া
প্রভৃতি দেশ জোরপূর্বক দখল করে নিয়ে সোভিয়েত রিপাবলিক গঠন করে।
অন্যদিকে বাল্টিক অঞ্চলের লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া ও এস্তোনিয়ায় সোভিয়েত রিপাবলিক গঠন অত সহজ ছিল না। কেননা
এ অঞ্চল গুলোতে রুশ বিপ্লব এর পর স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হয়েছিল। তাছাড়া বিপ্লবের সময় ফিনল্যান্ডে গৃহযুদ্ধ চলায় স্বাধীন
ফিনল্যান্ডকে রাশিয়া স্বীকৃতি দিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে পোল্যান্ডের পুনর্জন্ম হয়। তখন এ দেশটি সফলভাবে
রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়। ১৯১৯ সালের মার্চে লেনিন কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল কমিটি গঠন করে
ঘোষণা করেন বিশ্বের যেকোনো স্থানে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবে এর মাধ্যমে সহায়তা দেয়া হবে। তিনি ভেবেছিলেন যে এর
মাধ্যমে শিল্পসমৃদ্ধ দেশ গুলোর সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন গুলোকে বিপ্লবের দিকে ধাবিত করা সহজ হবে। তখন বেশ দ্রæত
সে বিপ্লব সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু মিত্রপক্ষের সরকারগুলোর প্রবল বাধার কারণে লেনিনের স্বপ্নপূরণ বিলম্বিত
হয়েছিল। এরপর ১৯২০ সালের দিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা মিত্রপক্ষীয় দেশগুলোর জনসাধারণকে যুদ্ধ
বিমুখ করে তুললে রাশিয়ার গৃহযুদ্ধে তাদের সহায়তা কমে যায়। ১৯২২ সালের মধ্যে সাইবেরিয়া থেকে শেষ মিত্রপক্ষীয়
সৈন্যটি অপসারিত হলে পূর্ব ইউরোপের রাশিয়া অপ্রতিদ্ব›দ্বী শক্তিতে পরিণত হয়। পাশাপাশি শক্তির মহড়ায় দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়া বিশ্বের ক্ষমতাধর পরাশক্তির একটিতে পরিণত হয়।
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র