ইন্টারনেটের সুবিধাসমূহ ব্যাখ্যা কর বিভিন্ন ধরনের ইন্টারনেট সংযোগ পদ্ধতিগুলো বর্ণনা কর

ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা
প্রতিনিয়তই ইন্টারনেটের আওতায় কম্পিউটারের সংখ্যা বেড়ে চলছে, বেড়ে চলছে ইন্টারনেটের গুরুত্ব এবং ব্যবহার।
শিক্ষা, গবেষণা, যোগাযোগ, ব্যবসায়-বাণিজ্য ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রেই ইন্টারনেটের গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারা
বিশ্বকে ‘গেøাবাল ভিলেজ’-এর ধারণায় ধাবিত করছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেট হচ্ছে একটি কম্পিউটারনির্ভর নেটওয়ার্কিং
সিস্টেম, তাই কম্পিউটারের বহুমুখী ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধা বা ব্যবহার। নি¤েœ
ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধা বা ব্যবহার নি¤েœউল্লেখ করা হলোÑ
তথ্যের আদান-প্রদান : তথ্যপ্রবাহের এক অবাধ বিরামহীন বিশাল উৎস হচ্ছে ইন্টারনেট। বর্তমানে ইন্টারনেট তথ্যের
আদান-প্রদানের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই ইন্টারনেট টেলিফোন, ফ্যাক্সের বিকল্প নিজের স্থান করে
নিচ্ছে।
তথ্য আহরণ : পৃথিবীর যেকোনো বিষয়ের ওপর চলতি তথ্যাবলি বর্তমানে ইন্টারনেটে ধারণ করার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। কোনো বিষয়ের ওপর তথ্যাবলি আহরণ করতে চাইলে সার্চ ইঞ্জিনের সহায়তা নেওয়া যায়।
ই-মেইল : ই-মেইল আবিষ্কারের পর যোগাযোগব্যবস্থায় যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে তা আর কোনোটিতে হয়নি। ইলেকট্রনিক উপায়ে বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে ডিজিটাল মেসেজ বা বার্তা আদান-প্রদান করাকে ই-মেইল বলা হয়। এ
ধরনের পদ্ধতির সাহায্যে যেকোনো ইন্টারনেট ব্যবহারকারী যেকোনো তথ্য অন্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে পাঠাতে পারে।
ই-মেইলের মাধ্যমে অত্যন্ত দ্রæতগতিতে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের প্রাপকের কাছে ই-মেইল পাঠানো যায়। ভিডিও কনফারেন্সিং : ভিডিও কনফারেন্সিং হলো এক ধরনের টেলিকনফারেন্সিং, যেখানে ছবি দেখা যায় এবং কথা বলা
যায়। যার ফলে অংশগ্রহণকারীরা পরস্পরের সম্মুখীন হয়ে কথোপকথন করতে পারেন। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহার করে
ভিডিও কনফারেন্সিং করা যাচ্ছে। আবার বর্তমানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে
ইমো বা মেসেঞ্জার। এই ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের উল্লেখযোগ্য ব্যবহার হলো টেলিমেডিসিন সার্ভিস, যেখানে ডাক্তার ও
বিভিন্ন জায়গার রোগী পরস্পরের সম্মুখীন হতে পারেন। এতে করে ডাক্তারদের জন্য চিকিৎসাপদ্ধতি সহজ হয় এবং রোগীরা
উন্নত চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে পারেন। তাছাড়া অপারেশনের মতো জটিল কাজেও ভিডিও কনফারেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
সফটওয়্যার : সফটওয়্যার মূলত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির হার্ডওয়্যারকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে। ইন্টারনেট বর্তমান
বিশ্বের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় একটি সফটওয়্যার সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। ইন্টারনেট থেকে বিনা খরচে অজস্র ইউটিলিটি সফটওয়্যার ডাউনলোড করা যায়।
শিক্ষার ক্ষেত্রে : আজকাল ইন্টারনেট জ্ঞান অর্জনের মহাসমুদ্রেপরিণত হয়েছে। জীবনের যেকোনো প্রয়োজনীয় শিক্ষামূলক
তথ্য ইন্টারনেট থেকে আহরণ করে জ্ঞানার্জন করা যায়। অনলাইনে যে কোনো লাইব্রেরী থেকে কিংবা অনলাইনে অবস্থিত
যেকোনো পুস্তক অধ্যয়ন করা যায়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে পড়ে যেকোনো প্রয়োজনীয় কোর্স করা যায়।
অনলাইন মিডিয়া : আজকাল পত্রপত্রিকা কাগজে প্রকাশনার পাশাপাশি অন-লাইনেও প্রকাশ করা হয়। ফলে ইন্টারনেট
ব্যবহারকারী সহজেই বিশ্বের খবরাখবর পেয়ে থাকে। তাছাড়া অনলাইনে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল দেখারও সুযোগ রয়েছে।
বিনোদন : বিনোদনের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। আজকাল অনেকেই অনলাইনে রেডিও, টেলিভিশন, সিনেমা, ম্যাগাজিন ইত্যাদি থেকে বিনোদন গ্রহণ করে থাকেন। আর বিভিন্ন রকম ইন্টারনেট মাধ্যম থেকে বিনোদনের স্বাদ গ্রহণ করার অবকাশ রয়েছে।
বাণিজ্যিক : ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ইন্টারনেট একদিকে যেমন ব্যবসায়িক
যোগাযোগ বা করসপন্ডেন্সের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, অন্যদিকে পণ্যের বিপণন ও বিজ্ঞাপনের জন্য ওয়েব পেজ বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে।
এছাড়া নিত্যনতুন উদ্ভাবন এবং যুগের চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে দিন দিন ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধা প্রতিনিয়ত বেড়েই
চলেছে। কম্পিউটারের ব্যবহারের বহুমুখিতা যত বৃদ্ধি পাবে, ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধাও তত বৃদ্ধি পাবে।
ইন্টারনেটের সংযোগ পদ্ধতি
ঈড়হহবপঃরড়হ ঝুংঃবস ড়ভ ওহঃবৎহবঃ
বর্তমানে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক ধরনের পদ্ধতি আছে। বহুল প্রচলিত পদ্ধতিগুলো হলোÑ
১. ডায়াল আপ সিস্টেম (
২. আইএসডিএন
৩. ব্রডব্যান্ড
৪. ওয়াই-ফাই
৫. ওয়াইম্যাক্স
ডায়াল আপ সিস্টেম
এ ধরনের পদ্ধতিতে কম্পিউটারের সাথে টেলিফোন লাইন ও মডেম সংযুক্ত থাকে। কম্পিউটার মডেমের মাধ্যমে টেলিফোন
লাইনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট আইএসপি (ওঝচ) বা ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের সাথে সংযোগ স্থাপন করে। তবে ডায়াল আপ
পদ্ধতিটি তুলনামূলক সহজ কিন্তু ইন্টারনেটের স্পিড তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
আইএসডিএন এটি নিয়মিত টেলিফোনের বিকল্প এক ধরনের
টেলিফোন সার্ভিস। ওঝউঘ-এর সুবিধা হচ্ছে এটি নিয়মিত টেলিফোন লাইনের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি দ্রæত ডেটা
ট্রান্সমিশন বা আদান-প্রদান করতে পারে। তবে এটি সাধারণ টেলিফোন লাইনের তুলনায় অনেক বেশি ব্যয়বহুল। বড় বড়
প্রতিষ্ঠান যেখানে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ ডেটা আদান-প্রদান করেতে হয়, সেখানে এ ধরনের সার্ভিস ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ব্রডব্যান্ড
এ ধরনের সার্ভিস সিস্টেম ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার প্রদান করে থাকে। ব্রডব্যান্ড সিস্টেমে ডেটা ট্রান্সমিশন বা আদানপ্রদানের হার অনেক বেশি। তবে তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল।
ওয়াই-ফাই Wi-Fi
Wi-Fi-এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Wireless Fidelity। Wi-Fi এর অপর নাম হচ্ছে ওয়্যারলেস ইন্টারনেট এক্সেস। অর্থাৎ ডর-ঋর
হলো তারবিহীন এক ধরনের প্রযুক্তি, যা রেডিও ওয়েব ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদান
করে। ওয়াই-ফাই (ডর-ঋর) প্রযুক্তিই-বিশ্ব পর্যায়ে মানুষকে জোগাচ্ছে ব্রডব্যান্ড ওয়্যারলেস সার্ভিস। তবে ডর-ঋর এ ২.৪
গিগাহার্টজ (এঐু) ফ্রিকোয়েন্সির রেডিও ওয়েভ ব্যবহার করা হয়।
Wi-Fi এর স্ট্যান্ডার্ড হচ্ছে ওIEEE 802.11b (Institute of Electrical and Electronics Engineers)| তবে ওঊঊঊ
৮০২.১১ হচ্ছে একটি ওয়্যারলেস বা তারবিহীন খঅঘ স্ট্যান্ডার্ড। একটি ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে দশটি বা তার অধিক
কম্পিউটার বা অন্যান্য ডিভাইস সংযুক্ত করতে পারে। সাধারণত সকল নোটবুক, ল্যাপটপ, পেরিফেরাল ডিভাইস, প্রিন্টার,
স্মার্ট ফোন, এমপি থ্রিপ্লেয়ার, ভিডিও গেইম কনসোল এবং ব্যক্তিগত কম্পিউটার ডর-ঋর-এর মাধ্যমে সংযুক্ত করা যায়। ডাচ
কম্পিউটার বিজ্ঞানী ভিক্টর ভিক হেরেসকে ওয়াই-ফাই-এর জনক বলা হয়। তিনি ডেল্ফট ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির
সিনিয়র ফেলো হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ওঊঊঊ ৮০২.১১ন ওয়াই-ফাই আবিষ্কার করেন। তবে অন্য স্ট্যান্ডার্ডসমূহ হলো
৮০২.১১ধ, ৮০২.১১ম ও ৮০২.১১হ এবং যাদের গতি যথাক্রমে ৫৪ গনঢ়ং, ৫৪ গনঢ়ং ও ৩০০ গনঢ়ং. বর্তমানে বেশি ব্যবহৃত
হচ্ছে IEE ৮০২.১১হ স্ট্যান্ডার্ডটি। আর ওঊঊঊ ৮০২.১১ধ স্ট্যান্ডার্ডটি অধিক ব্যয়বহুল হওয়ায় বর্তমানে এর চঁনষরপ ধপপবংং
নেই।
১৯৯১ সালে নেদারল্যান্ডসের ঘঈজ ঈড়ৎঢ়ড়ৎধঃরড়হ আবিষ্কৃত এক ধরনের তারবিহীন নেটওয়ার্ককে আজকের ডর-ঋর টেকনোলজির
ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ওয়াই-ফাই (ডর-ঋর)-এর কভারেজ এরিয়া একটি কক্ষ, একটি ভবন কিংবা কয়েক কিলোমিটার
এলাকাজুড়ে হয়ে থাকে। সাধারণত ইনডোরের ক্ষেত্রে এই দূরত্ব ৩২ মিটার এবং আউটডোরের ক্ষেত্রে ৯৫ মিটারের মত হয়ে থাকে।
তবে আউটডোরের ক্ষেত্রে একাধিক অ্যাকসেস পয়েন্ট ব্যবহার করে এই কভারেজ আরো বৃদ্ধি করা যায়। অবশ্য ডর-ঋর-এর ডেটা
ট্রান্সফার রেট সাধারণত ১১ গনঢ়ং থেকে ৩০০ গনঢ়ং পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ওয়াই-ফাইয়ের বৈশিষ্ট্যসমূহ
 এটি IEE ৮০২.১১ স্ট্যান্ডার্ডের ওয়্যারলেস লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক।
 সাধারণত নেটওয়ার্কের জন্য কোনো প্রকার ক্যাবল বা তারের প্রয়োজন হয় না।
 কভারেজ এরিয়া সাধারণত ৫০ মিটার থেকে ২০০ মিটারের মতো হয়ে থাকে।
 নেটওয়ার্কে সহজে নতুন নোড যুক্ত করে নেটওয়ার্কের পরিধি বাড়ানো যায়।
চিত্র ৯.২.১ : ডর-ঋর ডিভাইস চিত্র ৯.২.২ : একটি সাধারণ ওয়াই-ফাই সংযোগ সিস্টেম
 হাফ ডুপ্লেক্সিং মোড ব্যবহৃত হয়।
 এটি সাধারণত ২.৪ এঐু–৫এঐু ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে। তবে বর্তমানে তা ৫.৮৫ এঐু পর্যন্ত হয়ে থাকে।
 সিগন্যাল নয়েজ (ঝঘজ-ংরমহধষ ঃড় হড়রংব ৎধঃরড়) সর্বোচ্চ ১০ ফই (ফবপরনবষ)।
 বাধামুক্ত সিগন্যাল ট্রান্সফারের জন্য বিভিন্ন ধরনের এনক্রিপশন সুবিধা আছে।
 মিডিয়া অ্যাকসেস কন্ট্রোলের জন্য প্রোটোকল ব্যবহার করা হয় ইত্যাদি।
ওয়াই-ফাইয়ের সুবিধাসমূহ
১. ওয়াই-ফাইয়ের কনফিগারে খরচ তুলনামূলকভাবে কম।
২. আইপি টিভি সেবা প্রদান করে।
৩. যেকোনো মানের ডর-ঋর বিশ্বের যেকোন জায়গায় কাজ করে।
৪. দ্রæতগতির ইন্টারনেট ও অধিক নিরাপদব্যবস্থা।
৫. শতাধিক ব্যবহারকারী একক বেজ স্টেশন ব্যবহার করতে পারে।
৬. সহজে নতুন ব্যবহারকারী নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে পারে।
৭. একাধিক অ্যাকসেস পয়েন্টের জন্য নেটওয়ার্ক রোমিং সুবিধা।
৮. ওয়াই-ফাইয়ের পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে কম।
৯. একই সাথে মাল্টিফাংশনালি সুবিধা পাওয়া যায়।
১০. বর্তমানের ডর-ঋর স্ট্যান্ডার্ডগুলো ফ্রিকোয়েন্সি হোপিং সুবিধা প্রদান করে ইত্যাদি।
ওয়াই-ফাইয়ের অসুবিধাসমূহ
১. ওয়াই-ফাইয়ের সীমানা নির্দিষ্ট এলাকা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ।
২. দূরত্ব বেশি হলে একাধিক বেজ স্টেশনের প্রয়োজন হয়।
৩. রক্ষণাবেক্ষণ খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি।
৪. বিদ্যুৎ খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি।
৫. ডেটার আদান-প্রদানে নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে।
৬. নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে।
৭. তুলনামূলক কম নির্ভরযোগ্য।
৮. নির্দিষ্ট এলাকায় ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ব্যান্ডউইথ কমে যায়।
৯. ঝড়-বৃষ্টিতে সিগন্যালের সমস্যা দেখা দেয়।
ওয়াইম্যাক্স Wi-Max
Wi-Max এর পূর্ণরূপ হলো World Wide Interoperability for Microwave Access.. বহনযোগ্য কম্পিউটার এবং
মোবাইল ফোনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার সুবিধাকে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি বলে। এটি একটি তারবিহীন ব্রডব্যান্ড
ইন্টারনেট প্রযুক্তি। এটি ওঊঊঊ ৮০২.১৬ স্ট্যান্ডার্ডের ওয়্যারলেস মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক। ২০০১ সালের এপ্রিলে ওয়াইম্যাক্সের জন্ম হয়।
বিভিন্ন প্রকার ইন্টারনেট সেবার মধ্যে স্বল্প ব্যয়ে সীমিত আয়তনের এলাকায় ওয়াইম্যাক্স একটি সহজ ও সুবিধাজনক প্রযুক্তি।
এটি ওয়্যারলেস মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক (ম্যান)-এর মতো এবং এর গতি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মতোই গতিসম্পন্ন
অথচ ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম। তবে ব্রডব্যান্ড ওয়াইম্যাক্স পদ্ধতির দুটি প্রধান অংশ থাকে। যথাÑ
১। বেজ স্টেশন : ইনডোর ও আউটডোর টাওয়ার নিয়ে গঠিত। বেজ স্টেশনগুলো একটি ওয়াইম্যাক্স হাব বা সুইচের সাথে
যুক্ত থেকে নেটওয়ার্ক তৈরি করে এবং ইন্টারনেট সার্ভিস দেয়।
২। ওয়াইম্যাক্স রিসিভার : এর সঙ্গে একটি অ্যান্টেনা থাকে
এবং এটিই কম্পিউটারগুলোর মধ্যে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান
করে। এর কভারেজ এরিয়া ১০ থেকে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ওয়াইম্যাক্স সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথাÑ
১. ফিক্সড ওয়াইম্যাক্স ও
২. মোবাইল ওয়াইম্যাক্স
ফিক্সড ওয়াইম্যাক্স : ফিক্সড ওয়াইম্যাক্স ওঊঊঊ ৮০২.১৬ফ
স্ট্যান্ডার্ডের এবং এর ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জ ১০ এঐু থেকে ৬৬
এঐু। এ ধরনের সংযোগের জন্য গ্রাহক প্রান্তে একটি
রিসিভার টাওয়ার বা অ্যান্টেনা বসানো থাকে এবং
ওয়াইম্যাক্সের ব্যান্ডইউডথ মোবাইল ওয়াইম্যাক্সের তুলনায়
বেশি থাকার পরও মোবালিটি না থাকার কারণে এটি জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারেনি।
মোবাইল ওয়াইম্যাক্স : মোবাইল ওয়াইম্যাক্স ওঊঊঊ ৮০২.১৬ব স্ট্যান্ডার্ডের এবং এর ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জ ২ এঐু থেকে ১১
এঐু। এ ধরনের সংযোগের ক্ষেত্রে গ্রাহক প্রান্তে মূলত এজ মডেম ব্যবহৃত এবং ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্যরে ট্রান্সমিশনের কারণে
সিগন্যাল যেকোনো জায়গায়, অর্থাৎ বাসার ভেতরে বা বাইরে অনায়াসে চলাচল করতে পারে। তবে এ ধরনের সংযোগের
ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে ওয়াইমাক্সের বেজ স্টেশনের কাছাকাছি অবস্থান করতে হয়। অন্যথায় রেডিও সিগন্যাল লস বা ক্ষয়
হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই মোবাইল ওয়াইম্যাক্স সার্ভিসের ক্ষেত্রে সার্ভিস প্রোভাইডারদেরকে অধিকসংখ্যক বেজ স্টেশন স্থাপন করতে হয়।
ওয়াইম্যাক্সের বৈশিষ্ট্যসমূহ
ড় এটি ওঊঊঊ ৮০২.১৬ স্ট্যান্ডার্ডের ওয়্যারলেস মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক।
ড় কভারেজ এরিয়া সাধারণত ১০ থেকে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ড় সাধারণত নেটওয়ার্কের জন্য কোনো প্রকার ক্যাবল বা তারের প্রয়োজন হয় না।
ড় নেটওয়ার্কে সহজে নতুন ব্যবহারকারী যুক্ত করে নেটওয়ার্কের পরিধি বাড়ানো যায়।
ড় ডেটা ট্রান্সফারের রেট সাধারণত ৮০ গনঢ়ং থেকে ১ এনঢ়ং পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ড় ফুল ডুপ্লেক্সিং মোড ব্যবহৃত হয়।
ড় এটি সাধারণত ২ এঐু–৬৬ এঐু ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে। তবে ঘড়হ খরহব ড়ভ ঝরমযঃ-এর জন্য ফ্রিকোয়েন্সি এর জন্য ফ্রিকোয়েন্সি
ড় সিগন্যাল নয়েজ ( সর্বোচ্চ ৭ ফই (ফবপরনবষ)।
ড় বাধামুক্ত সিগন্যাল ট্রান্সফারের জন্য বিভিন্ন ধরনের এনক্রিপশন সুবিধা আছে।
ড় ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড লাইসেন্স বা লাইসেন্সবিহীন হতে পারে।
ড় ওয়াইম্যাক্স কানেকশন ওরিয়েন্টেড গঅঈ প্রোটোকল ব্যবহার করে ইত্যাদি।
ওয়াইম্যাক্সের সুবিধা
১. অধিক নিরাপদ ও দ্রæতগতির ইন্টারনেট সেবা।
২. তারের নেটওয়ার্কে নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তা মেরামতের প্রয়োজন হয় কিন্তু ওয়াইম্যাক্সে সে ঝামেলা নেই।
৩. যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রেও এখানে বিনিয়োগ এককালীন। সেদিক দিয়ে খরচ অনেক কম।
৪. এর যোগাযোগের আওতা অনেক বেশি হওয়ায় (১০ থেকে ৬০ কিলোমিটার) পথে-ঘাটে যেকোনো জায়গা থেকেই
উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করা সম্ভব।
৫. ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল বা ভিওআটি ব্যবহার করে যোগাযোগ হয় আরো সহজে।
৬. শতাধিক ব্যবহারকারী একক বেজ স্টেশন ব্যবহার করতে পারে।
৭. কোয়ালিটি অব সার্ভিসের নিশ্চয়তা প্রদান করে।
৮. একই সাথে মাল্টিফাংশনালি সুবিধা পাওয়া যায়।
ওয়াইম্যাক্সের অসুবিধা
১. অধিক ব্যয়বহুল।
২. দূরত্ব বেশি হলে একাধিক বেজ স্টেশনের প্রয়োজন হয়।
৩. রক্ষণাবেক্ষণ খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি।
৪. ঝড়-বৃষ্টিতে সিগন্যালের সমস্যা দেখা দেয়।
৫. বিদ্যুৎ খরচ অন্যান্য স্ট্যান্ডার্ডের তুলনায় বেশি।
৬. নির্দিষ্ট এলাকায় ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ব্যান্ডউইথ কমে যায়।
৭. অন্যান্য ডিভাইস কর্তৃক সিগন্যাল জ্যামের সৃষ্টি হয়।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের কার্যপ্রণালী ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের সংক্ষিপ্ত রূপ ডডড। একে ওয়েবও বলে। ওয়েব হলো এমন একটি বৃহৎ
সিস্টেম, যা অনেকগুলো ওয়েব সার্ভারের মধ্যকার সংযুক্তির মাধ্যমে গঠিত হয়। ওয়েব ক্লায়েন্ট-সার্ভার আর্কিটেকচার
অনুযায়ী গড়ে উঠেছে। এর অর্থ হচ্ছে ক্লায়েন্ট কম্পিউটার ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে প্রোগ্রামটি বা ওয়েবটি রান করে
অনুরোধ (জবয়ঁবংঃ) পাঠাবে সার্ভারে। সার্ভার, ক্লায়েন্ট কম্পিউটারের অনুরোধকৃত তথ্যটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ক্লায়েন্ট
কম্পিউটারের ব্রাউজারের কাছে পাঠিয়ে দেবে এবং ব্রাউজার তা অনুবাদ করে স্ক্রিনে প্রদর্শন করবে। আর এভাবেই ওয়েব
ব্রাউজার তার কার্যক্রম সম্পাদিত করে।
ওয়েব ব্রাউজার
ওয়েব ব্রাউজার হলো এক ধরনের অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার। ইন্টারনেট হতে তথ্য পাওয়ার জন্য ব্যবহারকারীকে বিশেষ
ধরনের অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম ব্যবহার করতে হয় তাকে ব্রাউজার বলে। অর্থাৎ সার্ভারগুলো ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে তথ্য
(টেক্সট, ছবি, শব্দ ইত্যাদি) সরবরাহ করতে পারে। এসব তথ্য পাবার জন্য ব্যবহারকারীকে বিশেষ ধরনের অ্যাপ্লিকেশন
প্রোগ্রাম ব্যবহার করতে হয় যাকে বলে ওয়েব ব্রাউজার।
বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত ওয়েব ব্রাউজার হলোÑ
ড় ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার
ড় মজিলা ফায়ারফক্স
ড় সাফারি
ড় অপেরা
ড় গুগল ক্রম
ড় নেটস্কেপ নেভিগেটর ইত্যাদি।
অবশ্য ইন্টারনেটে ওয়েবসাইট প্রদর্শন করাকেই ওয়েব ব্রাউজিং বলা হয়। ওয়েব ব্রাউজিংয়ের জন্য যেকোনো ব্রাউজার চালু
করে অ্যাড্রেস বারে যেকোনো ওয়েবসাইটের ঠিকানা লিখে এড় বাটন বা কি-বোর্ডের এন্টার কি চাপলেই কিছুক্ষণের মধ্যে
উক্ত ওয়েবসাইটটি প্রদর্শিত হবে। এভাবে সাধারণত ওয়েব ব্রাউজিং করা হয়ে থাকে।
সারসংক্ষেপ :
প্রতিনিয়তই ইন্টারনেটের আওতায় কম্পিউটারের সংখ্যা বেড়ে চলছে, বেড়ে চলছে ইন্টারনেটের গুরুত্ব এবং ব্যবহার।
শিক্ষা, গবেষণা, যোগাযোগ, ব্যবসায়-বাণিজ্য ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রেই ইন্টারনেটের গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে
ইন্টারনেট ব্যবহার করার পূর্বে ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন হয়। ডায়াল-আপ, ব্রডব্যান্ড, ওয়াই-ফাই, ওয়াইমাক্স ইত্যাদি হলো বিভিন্ন ধরনের ইন্টারনেট সংযোগ পদ্ধতি।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব হলো অনেকগুলো মাধ্যমের একটি মাধ্যম যার সাথে ইন্টারনেট ব্যবহার করে তথ্য আদান-প্রদান
করা যায়। আর ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোনো ধরনের তথ্য প্রদর্শনের জন্য প্রয়োজন ওয়েব ব্রাউজার। ইন্টারনেট
এক্সপ্লোরার, মজিলা ফায়ারফক্স, সাফারি, অপেরা, গুগুল ক্রম ইত্যাদি হলো বিভিন্ন ধরনের ওয়েব ব্রাউজার।
ইউনিট উত্তর মূল্যায়ন
১. ইন্টারনেট কী? ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সম্পর্কেলিখুন।
২. ‘আজকাল ঘরে বসে কেনাকাটা অধিকতর সুবিধাজনক’Ñব্যাখ্যা করুন।
৩. ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব বিস্তারিত বর্ণনা দিন।
৪. সার্চ ইঞ্জিন কী? সংক্ষেপে বর্ণনা করুন।
৫. ই-কমার্স কী? ই-কমার্সের বৈশিষ্ট্যগুলো লিখুন।
৬. ই-কমার্সের সুবিধা ও অসুবিধা বর্ণনা করুন।
৭. ই-মেইল ও ই-মেইলের অ্যাড্রেস বলতে কী বোঝায়?
৮. ওয়াইম্যাক্স কী? ওয়াইম্যাক্সের বৈশিষ্ট্য লিখুন।
৯. ওয়াইম্যাক্সের সুবিধা ও অসুবিধা লিখুন।
১০. ওয়াই-ফাই কী? ওয়াই-ফাইয়ের বৈশিষ্ট্যসমূহ লিখুন।
১১. ওয়াই-ফাইয়ের সুবিধা ও অসুবিধা লিখুন।
১২. ওয়াই-ফাই ও ওয়াইম্যাক্সের মধ্যে পার্থক্য লিখুন।
১৩. ব্রাউজার কী? কয়েকটি ব্রাউজারের নাম লিখুন।
১৪. ই-কমার্সকে আধুনিক ব্যবসার পদ্ধতি বলা হয় কেন? বর্ণনা করুন।
১৫. ই-কমার্স পণ্যের ক্রয়-বিক্রয়কে কীভাবে সহজ করেছে? ব্যাখ্যা করুন।
১৬. টেলনেট কী? ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রাপ্ত সুযোগ ও সুবিধাগুলো আলোচনা করুন।
১৭. ই-মেইল কী? ই-মেইল পাঠানোর নিয়ম বর্ণনা করুন।
১৮. ই-মেইল কম্পোজ উইন্ডোর বিভিন্ন অংশ বর্ণনা করুন।
১৯. ইন্টারনেট রিলে চ্যার্ট সম্পর্কে আলোচনা করুন।
২০. ই-কমার্সের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করুন।
২১. ডায়াল আপ, আইএসডিএন ও ব্রডব্যান্ড সম্পর্কে আলোচনা করুন।

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]