হার্ডওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণ
মাইক্রোকম্পিউটার বা ডেস্কটপ কম্পিউটার, নোটবুক এবং ল্যাপটপসহ সকল ধরনের ক¤িপউটারের সঠিক ব্যবহার, পরিচর্যা
ও ট্রাবলশুটিং করা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ইনস্টল এবং আন-ইনস্টল করাকে ক¤িপউটার
রক্ষণাবেক্ষণ বলা হয়। ক¤িপউটার রক্ষণাবেক্ষণ মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথাÑ
১। হার্ডওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণ (ও
২। সফটওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণ
কম্পিউটার সিস্টেমের বিভিন্ন ধরনের হার্ডওয়্যারসমূহ রক্ষণাবেক্ষণের পদ্ধতিকেই বলা হয় হার্ডওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণ।
মাইক্রোকম্পিউটারের প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারসহ অন্য সফটওয়্যারগুলো সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য
প্রয়োজন যথার্থ ও সঠিক হার্ডওয়্যার প্রয়োজন। সামঞ্জস্যপূর্ণ হার্ডওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারসহ অন্যান্য সফটওয়্যার
পরিচালনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া কম্পিউটারের স্পিড অনেকাংশে নির্ভর করে কম্পিউটারের
হার্ডওয়্যারের ওপর। অধিকাংশ মাইক্রোকম্পিউটার সিস্টেমকেই নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারকে
দ্রæত নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচিয়ে রাখা যায়। প্রতিনিয়ত নিয়ন্ত্রিত রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবহারব্যবস্থাটি কম্পিউটারের বিভিন্ন ধরনের
সমস্যা যেমন হার্ডওয়্যারকে ডেটা নষ্ট বা হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। তাই একটি কম্পিউটার সিস্টেমকে সুচারুভাবে
পরিচালনা করতে হলে সঠিকভাবে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণ করা প্রয়োজন। সঠিকভাবে হার্ডওয়্যার
রক্ষণাবেক্ষণের ফলে কম্পিউটার সহজে নষ্ট হয় না, বেশিদিন নিরাপদে চলে, কম্পিউটার পরিচালনার মোট খরচ কমে যায়,
উপাত্তসমূহ সহজে হারিয়ে যায় না এবং আনুষঙ্গিক হার্ডওয়্যার যন্ত্রপাতিসমূহ বেশিদিন টিকে থাকে। একটি কম্পিউটারের
হার্ডওয়্যারসমূহকে সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য নি¤œলিখিত বিষয়গুলো বা নিয়ামকগুলোর প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ
রাখতে হবেÑ
১। তাপমাত্রা
২। কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করা
৩। বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থা (
৪। ময়লা ও দূষণ
৫। নিয়মিত প্রতিরক্ষামূলক রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি।
তাপমাত্রা
কম্পিউটার সিস্টেমকে অবশ্যই সার্বক্ষণিক একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রার রাখতে হবে। কম্পিউটারের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত গরম বা
ঠাÐা উভয়েই ক্ষতিকর। মাইক্রোকম্পিউটারের ক্ষেত্রে যখন সিস্টেম চালু থাকবে তখন আদর্শ রুম তাপমাত্রা ৬০ থেকে ৯০
ডিগ্রি ফারেনহাইট আর যখন সিস্টেম বন্ধ থাকবে তখন ৫০ থেকে ১১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। যদি কখনো কম্পিউটারে অল্প
সময়ের ব্যবধানে ব্যাপক তাপমাত্রা পরিবর্তনের সম্মুখীন হয় তবে নি¤েœাক্ত সমস্যাসমূহ হতে পারেÑ
১. সিস্টেম ইউনিটের ভেতরে যে চিপস রয়েছে সেগুলো তাদের নির্দিষ্ট সকেটের বাইরে কাজ করতে শুরু করবে।
পাশাপাশি চিপ কানেক্টর দ্রæত নষ্ট হয়ে যেতে পারে ।
২. তাপমাত্রার হঠাৎ পরিবর্তনের কারণে হার্ডডিস্কের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
উক্ত সমস্যাগুলো সাধারণত হয়ে থাকে যান্ত্রিক সরঞ্জামের দ্রæত ঠাÐা অথবা গরম হয়ে উঠার জন্য। মাইক্রোকম্পিউটারের
জন্য এ ধরনের তাপমাত্রার পরিবর্তন অত্যন্ত বিপদজনক। তাই কম্পিউটার কখনো কোনো উত্তপ্ত বা অধিক ঠাÐা স্থানে রাখা
উচিত নয় বা সরাসরি সূর্যালোকেও রাখা উচিত নয়।
কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করা
হঠাৎ তাপমাত্রার পরিবর্তন কম্পিউটারের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। যখন একটি কম্পিউটার সিস্টেম চালু করা হয় তখন
তাপমাত্রার ব্যাপক পরিবর্তন হতে পারে। কারণ কম্পিউটার সাধারণত বন্ধ অবস্থায় ঠাÐা থাকে। কিন্তু চালু বা অন করার
সাথে সাথেই তা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তাই যত অল্প সময় কম্পিউটার চালু রাখা যায়, তত বেশি সেটা ভালো থাকে। অথবা,
কম্পিউটারকে এমন দীর্ঘ সময় ধরে চালু রাখা যেতে পারে যে এটা দিনে মাত্র একবার বন্ধ ও চালু হয়ে থাকে। কারণ বার
বার চালু ও বন্ধ করা সমস্যার সৃষ্টি করে।
বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থা
অনেক ব্যবহারকারী বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসকে একটি পাওয়ার স্ট্রিপের বা লাইনের মাধ্যমে চালনা করে থাকেন যেমন
কফি মেকার, লেজার প্রিন্টার, কপি মেশিন ইত্যাদি। একই পাওয়ার লাইনে যদি উক্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো সাথে
কম্পিউটার চালনা করা হয় তবে সে ক্ষেত্রে কম্পিউটার সেটটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই কম্পিউটার সিস্টেমটি
ভিন্ন পাওয়ার লাইনে চালনা করা উচিত। কম্পিউটারের হালকা ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো যদি একই পাওয়ার লাইনে থাকে
তবে কম্পিউটার চালনার পূর্বে অন্য ডিভাইসগুলো চালনা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নিশ্চিত হতে হবে যে বৈদ্যুতিক সার্কিট
যন্ত্রগুলো বৈদ্যুতিক চাহিদা যোগান দিতে সক্ষম। কম্পিউটার সিস্টেমকে সাধারণত দুইভাবে বৈদ্যুতিক লাইনের সাথে সংযুক্ত
করা যায়। যথাÑ
১। সরাসরি লাইনের সাথে
২। ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার বা ইউপিএস বা আইপিএসের মাধ্যমে
বিদ্যুতের অনিয়মিত সরবরাহ একটি সাধারণ ব্যাপার। কম্পিউটারের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক বর্তনীতে শক্তি হিসেবে ডিসি
ভোল্টেজ প্রয়োজন হয়। লাইনের এসি ভোল্টেজকে উপযোগী মানের ডিসি ভোল্টেজে পরিণত করে তা সরবরাহ করার জন্য
পাওয়ার সাপ্লাই ব্যবহার করা হয়। খুব বেশি ভোল্টেজ বা খুব কম ভোল্টেজের ফলে কম্পিউটারের বর্তনী ক্ষতিগ্রস্তহয়।
বিদ্যুতের কম বা বেশির কারণে কম্পিউটার যন্ত্রটির অনেক ডিভাইস, এমনকি সম্পূর্ণ কম্পিউটারটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
সাধারণত কম্পিউটার চালনার ক্ষেত্রে নি¤œলিখিত বৈদ্যুতিক সমস্যা দেখা দিতে পারে১. আর্থিং সমস্যা
২. শর্ট সার্কিট (
৩. বিদ্যুৎ সরবরাহ সমস্যা
আর্থিং সমস্যা : সাধারণত আমাদের দেশের অধিকাংশ বাড়িতে বিদ্যুতের জন্য আর্থিং ব্যবস্থা থাকে
না। এক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা কম্পিউটারের ধাতব অংশে হাত দিলে স্বল্প মাত্রার বিদ্যুৎ সৃষ্ট হতে পারে। এক্ষেত্রে
সাধারণত কম্পিউটারের কোনো ক্ষতি হয় না। তবে কম্পিউটার ব্যবহারকারী এক ধরনের আতঙ্কের মধ্যে থাকে। তবে পায়ে
রাবার জাতীয় পদার্থের তৈরি স্যান্ডেল থাকলে এ জাতীয় আঘাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
শর্ট সার্কিট : বিদ্যুৎ শক্তি প্রবাহের ক্ষেত্রে যে পথে বিদ্যুৎ কম বাধার সম্মুখীন হয় তাকে শর্ট সার্কিট বলে।
শর্ট সার্কিটের ফলে বিদ্যুৎ লাইনে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ প্রবাহ চলে। ফলে বৈদ্যুতিক যন্ত্রে মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
এমনকি বৈদ্যুতিক যন্ত্র অকেজো হতে পারে বা পুড়ে যেতে পারে।
বিদ্যুৎ সরবরাহ সমস্যা : বিদ্যুতের অনিয়মিত সরবরাহ একটি সাধারণ ব্যাপার। বিদ্যুৎ
পাওয়ার লাইনে সাধারণত চার ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যথাÑ
১. ব্রাউন আউট (Brown Out)
২. বøাকআউট (Black Out)
৩. ট্রানসিয়েন্ট (Transient) I ও
৪. নয়েজ (Noise)
ব্রাউন আউট : পরিকল্পিত বা অপরিকল্পিত কোনো কারণে সরবরাহ লাইনে বিদ্যুতের ভোল্টেজ কমে
যাওয়াকে ব্রাউন আউট বলা হয়। সাধারণত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর অক্ষমতার কারণে এ ঘটনা ঘটে। এক্ষেত্রে
কম্পিউটার বন্ধ রাখা উচিত।
বøাক আউট : হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যাওয়াকে বøাক আউট বলে। সাধারণত প্রচÐ ঝড়, তুফান, বজ্রপাত প্রভৃতি
কারণে বøাক আউট হতে পারে। বøাক আউটের কারণে কম্পিউটারের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই ঝড়, তুফান ও
বজ্রপাতের সময় কম্পিউটার বন্ধ রাখা উচিত।
ট্রানসিয়েন্ট : বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন সৃষ্ট ভোল্টেজ বা কারেন্টের অপেক্ষাকৃত বড় ধরনের স্পাইককে
ট্রানসিয়েন্ট বলা হয়। অনেক ট্রানসিয়েন্ট পাওয়ার সাপ্লাই দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে নিঃশ্বেষ হয় কিন্তু অনেক ট্রানসিয়েন্ট এ বাধা
অতিক্রম করে কম্পিউটারের ভেতরের অনেক বর্তনীসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট করে দিতে পারে।
নয়েজ (ঘড়রংব) : সাধারণত প্রিন্টারের শব্দ, স্পিকারের উচ্চমাত্রার শব্দ, পাওয়ার সাপ্লাই, কুলিং ফ্যান ইত্যাদি থেকে নয়েজ
সৃষ্টি হয়ে থাকে। প্রিন্টার, ডিস্ক ড্রাইভ, স্পিকার ইত্যাদির নয়েজকে শাব্দিক নয়েজ এবং পাওয়ার সাপ্লাই, কুলিং ফ্যান
ইত্যাদির নয়েজকে সিস্টেম নয়েজ বলা হয়। এ ধরনের নয়েজ কম্পিউটারের বিভিন্ন হার্ডওয়্যারের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব
ফেলতে পারে।
বৈদ্যুতিক সমস্যাসমূহের সমাধানের উপায় : আর্থিন সমস্যা কম্পিউটারের জন্য তেমন কোনো সমস্যাই না। আর শর্ট
সার্কিট বা বিদ্যুৎ সরবরাহজনিত সমস্যা প্রতিরোধের জন্য উপযুক্ত বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি পণ্য ব্যবহার করে কম্পিউটার
নিরাপদ রাখা যায়। যেমনÑ
১. আইসোলেটর, রেগুলেটর, ফিল্টার ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি পণ্য ব্যবহার করে কম্পিউটার নিরাপদ রাখা যায়।
২. ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করলে স্থির এসি ভোল্টেজ পাওয়া যায়। বøাক আউটের সময় বিকল্প বিদ্যুৎ সোর্স
হিসেবে ইউপিএস (টচঝ) , আইপিএস (ওচঝ) কিংবা পোর্টেবল জেনারেটর ব্যবহার করা যেতে পারে।
ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার
ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার হচ্ছে এক ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যা এর আউটপুটের সাথে সংযুক্ত যন্ত্রপাতিগুলোকে একটি
নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোল্টেজ সরবরাহ করে থাকে। ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজারকে বিদ্যুৎ সরবরাহের গতি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। মূল
বৈদ্যুতিক লাইন থেকে বিদ্যুৎ ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার যন্ত্রের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এর সাথে সংযুক্ত কম্পিউটারে বা
অন্যান্য ইলেকট্রনিকস ডিভাইসে যায়। মূলত বিদ্যুৎতেএর হঠাৎ উঠা-নামাকে নিয়ন্ত্রণ করাই ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজারের
কাজ। অর্থাৎ ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার বৈদ্যুতিক পরিবর্তনকে (ঝঃধনষব) স্থিতিশীল করে। অনেক সময় বিদ্যুৎপ্রবাহ হঠাৎ
বৃদ্ধি পেয়ে চলমান ভোল্টেজ লেবেলের অনেক বেশি বা কম ভোল্টেজে প্রবাহিত হয়, যা কম্পিউটারসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক
যন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তবে ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার একটি নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে প্রাপ্ত বিদ্যুৎকে গ্রহণ করে
সাধারণত ২২০ ভোল্টেজে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। যদি কোনো সময় স্ট্যাবিলাইজারের ক্ষমতার অধিক বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়
তাহলে স্ট্যাবিলাইজারের অভ্যন্তরীণ ফিউজ বিচ্ছিন্ন হয়ে কম্পিউটারকে বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসকে রক্ষা করে।
ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজারের ক্ষমতা সাধারণত ভোল্ট অ্যাম্পিয়ার (ঠড়ষঃ অসঢ়বৎব) দ্বারা পরিমাপ করা হয়। বাজারে বিভিন্ন
ক্ষমতার স্ট্যাবিলাইজার পাওয়া যায়। সাধারণত ৫০০ঠঅ বা ৬০০ ঠঅ দ্বারা একটি কম্পিউটার ও প্রিন্টার ব্যবহার করা যায়।
ইউপিএস UPS
UPSএর পূর্ণ অর্থ হচ্ছে Uninterrupted Power Supply. এটি এক ধরনের ইলেকট্রনিক যন্ত্র, যা কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ
শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে পারে। সাধারণত কোনো কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে কিছু সময় এর জন্য কম্পিউটারকে
সচল রাখার জন্য কম্পিউটারে ইউপিএস (টচঝ) ব্যবহার করা হয়। ইউপিএস যন্ত্রটি সরাসরি বিদ্যুৎ লাইনের সাথে সংযুক্ত
থাকে এবং এর আউটপুট লাইনের সাথে কম্পিউটারের পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট সংযুক্ত থাকে। ফলে হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে
গেলে ইউপিএস IPS) থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। প্রকারভেদে টচঝ পাঁচ মিনিট, দশ মিনিট বা কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত
ক্রমাগত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে। কম্পিউটার, প্রিন্টার, প্লটার, রেফ্রিজারেটর, টিভি ইত্যাদিতে টচঝ ব্যবহার করা
যায়।
আইপিএস
IPS
ওচঝ-এর পূর্ণ অর্থ হলো Instant Power Supply এটি মূলত পাওয়ার স্টোরেজ ডিভাইস হিসেবে কাজ করে। ওচঝ বিদ্যুৎ
সরবরাহের মেইন লাইন হতে পাওয়ার রিজার্ভ করে সঞ্চিত রাখে এবং বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে গেলে ব্যাকআপ প্রদান করে। এটি
অনেকটা ইউপিএসের মতো। তবে টচঝ বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সাথে সাথে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে পারে, সেখানে ওচঝ ০.১
সেকেন্ড পরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। টচঝ এর তুলনায় ওচঝ বেশি সময় ব্যাকআপ দিয়ে থাকে। যেসব
ক্ষেত্রে বেশি সময় বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রয়োজন হয় সেখানেই ওচঝ বেশি ব্যবহৃত হয়। যেমন লোডশেডিংয়ের ফলে বাসাবাড়িতে লাইট, টিভি, ফ্যান, রেফ্রিজারেটর, কম্পিউটার ইত্যাদি চালনার জন্য পাওয়ার স্টোরেজ ডিভাইস হিসেবে ওচঝ
ব্যবহৃত হয়।
ময়লা ও দূষণ
ধুলাবালি তাপ প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে। এটি কম্পিউটারের ভেতর তাপ নিঃশ্বরণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। পাওয়ার
সাপ্লাইয়ের বাতাস প্রবেশযোগ্য স্থানে, কি-বোর্ড, মাউস, স্পিকার, মাদারবোর্ড, হার্ডডিস্ক ইত্যাদিতে ধুলাবালি সাধারণত
আঠালোভাবে আটকে থাকে। এ ধরনের সমস্যা দূর করার জন্য কম্পিউটার অব্যবহৃত অবস্থায় থাকাকালীন ডাস্ট কভার বা
ধুলাবালি নিরোধক ঢাকনা ব্যবহার করা উচিত।
আবার প্রতিটি কম্পিউটারের মাইক্রোপ্রসেসরের সাথে একটি কুলিং ফ্যান থাকে। কুলিং ফ্যানের কাজ হলো বাইরে থেকে
বাতাস টেনে নিয়ে কম্পিউটারের সিস্টেম ইউনিটকে ঠাÐা রাখা। কুলিং ফ্যানটি যখন বাতাস টেনে নেয় তখন বাতাসের
সাথে অনেক ধুলাবালিও সিস্টেম ইউনিটে প্রবেশ করে। ফলে সিস্টেম ইউনিটের ওপর একটি ময়লার আবরণ পড়ে এবং
সিস্টেম ইউনিট সঠিকভাবে কুলিং হয় না। বিধায় মাইক্রোপ্রসেসর অতিরিক্ত গরম হতে পারে; এমনকি মাইক্রোপ্রসেসর নষ্ট
হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই মাইক্রোপ্রসেসরের ওপর যাতে এ রকম আস্তরণ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং
প্রয়োজনে একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর পরিষ্কার করতে হবে।
নিয়মিত প্রতিরক্ষামূলক রক্ষণাবেক্ষণ
কম্পিউটার ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক প্রভৃতি সময় সাপেক্ষে এর যথার্থ যতœ নেয়া বা
রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়াকে রুটিন প্রিভেন্টিভ মেইনটেন্যান্স বা নিয়মিত প্রতিরক্ষামূলক রক্ষণাবেক্ষণ বলে। নি¤েœএগুলোর বর্ণনা
দেওয়া হলোÑ
প্রতিদিনের রক্ষণাবেক্ষণ বা পরিচর্যা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
১. প্রতিদিন কম্পিউটার চালু করার সময় বৈদ্যুতিক সংযোগের দিকে খেয়াল রাখা।
২. বৈদ্যুতিক সরবরাহ লাইন, স্ট্যাবিলাইজার বা ইউপিএস কম্পিউটার ও মনিটর বা সুইসের সাথে ঠিকমতো কাজ
করছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখা।
৩. কম্পিউটার টেবিলের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কাগজপত্র পরিষ্কার করা।
৪. কম্পিউটার কক্ষের ধুলাবালি বা মাকড়সার জাল পরিষ্কার করা।
৫. দৈনিক ব্যবহারের কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করা এবং তা লিখে রাখা।
৬. কাজ শেষে কম্পিউটারের যন্ত্র বা যন্ত্রাংশগুলো কাপড় বা প্লাস্টিক কভার দিয়ে ঢেকে রাখা।
৭. সঠিক নিয়মে কম্পিউটার বন্ধ করা।
সাপ্তাহিক রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
১. সপ্তাহে অন্তত এক দিন কম্পিউটার টেবিল ও আশপাশের স্থান এবং মেঝে সাবান গলানো পানিতে ভেজানো কাপড়
বা স্যাভলন দিয়ে ভলোভাবে পরিষ্কার করা।
২. কেসিং, কি-বোর্ড বা মনিটরের পর্দা মিথাইল জাতীয় তরল পদার্থের সাহায্যে নরম কাপড় বা তুলা দিয়ে পরিষ্কার
করা।
৩. ডিস্ক ও সিডি বা ডিভিডি ড্রাইভের হেড পরিষ্কার করা।
৪. অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম চালানো।
৫. ডিস্ক ডিফ্রাগমেন্টার বা এ জাতীয় টুলস ব্যবহার করা।
মাসিক রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
১. কম্পিউটারের সিপিইউ বক্সের ভেতরের যন্ত্রাংশ খুলে পরিষ্কার করা।
২. প্রিন্টারের ভেতর যতটুকু সম্ভব পরিষ্কার করা।
৩. অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম আপডেড করা এবং চালানো।
৪. কম্পিউটারের বিদ্যুৎ সংযোগের লাইন চেক করা।
৫. সংযোগ প্লাগ খুলে পরিষ্কার করা।
কম্পিউটার অতি মাত্রার জটিল সিস্টেম হলেও খুব সাধারণ কতকগুলো নিয়মাবলি মেনে চললে একে দীর্ঘ সময় ধরে ঝামেলা
মুক্তভাবে চালানো যায়। আর এজন্য প্রয়োজন সামান্য সদিচ্ছা ও সচেতনতা।
সারসংক্ষেপ :
ক¤িপউটার হলো একটি বহুমুখী সফটওয়্যারচালিত একটি ইলেকট্রিক মেশিন যা, অন্যান্য ইলেকট্রিক যন্ত্র থেকে আলাদা।
মাইক্রোকম্পিউটারের প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারসহ অন্য সফটওয়্যারগুলো সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য
প্রয়োজন যথার্থ ও সঠিক হার্ডওয়্যার। সামঞ্জস্যপূর্ণ হার্ডওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারসহ অন্যান্য সফটওয়্যার
পরিচালনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া কম্পিউটারের স্পিড অনেকাংশে নির্ভর করে
কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারের ওপর। ক¤িপউটার অনেক দিন কার্যক্ষম রাখতে এর রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। কম্পিউটারের
বিভিন্ন অংশ যেমনÑ ইনপুট ডিভাইস, আউটপুট ডিভাইস, প্রসেসিং ডিভাইস, পাওয়ার সাপ্লাই ডিভাইস, পেরিফেরাল
পোর্ট ইত্যাদির রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতিই হলো কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণ। কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার
রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামকগুলো হলো তাপমাত্রা, সঠিকভাবে কম্পিউটার চালু করা এবং বন্ধ করা, বিদ্যুৎ
সংযোগব্যবস্থা, ময়লা দূষণ ইত্যাদি।
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র