তারহীন মাধ্যম
ওয়্যারলেস কথাটির অর্থ তার বিহীন বা তারহীন। এই ধরনের মাধ্যম হল বায়ুমন্ডল, পানি এবং বায়ুমন্ডলের
উপরের আরো অন্যান্য স্তর।তার বিহীন যোগাযোগ বা ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন হলো এমন ধরণের যোগাযোগ যেখানে
কোন তার বা ক্যাবলের প্রয়োজন হয় না। ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনে সাধারণত রেডিও ওয়েভ ব্যবহার করা হয়।
ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন মাধ্যমেকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা১। রেডিও ওয়েভ (জধফরড় ধিাব)
২। মাইক্রো ওয়েভ Micro Wave ও
৩। ইনফ্রারেড infrared)
৩.৬.২ রেডিও ওয়েভ বা বেতার তরঙ্গ
১০ কিলোহার্টজ থেকে ১ গিগাহার্টজের মধ্যে সীমিত ইলেকক্ট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রামকে বলা হয় রেডিও ওয়েভ। রেডিও
ওয়েভ সহজে তৈরি করা যায় যা অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে এবং বিল্ডিংকেও ভেদ করতে পারে। এ কারণে
যোগাযোগের ক্ষেত্রে ঘরে ও বাইরে ব্যাপকভাবে রেডিও ওয়েভ ব্যবহার করা হয়। এই যোগযোগ ব্যবস্থায় সংকেত
প্রেরণের গতিবেগ প্রায় ২৪ শনঢ়ং।
রেডিওতে যেমন বেতার তরঙ্গ দ্বারা সংকেত পাঠানো হয়, দু’টি কম্পিউটারের মধ্যেও তেমন বেতার তরঙ্গ দ্বারা যোগাযোগ
সম্ভব। রেডিও ওয়েভ দুই ধরণের হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে নিয়ন্ত্রিত এবং অপরটি হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত। নিয়ন্ত্রিত রেডিও
ওয়েভ সরকারের অনুমতি ব্যতিত কেউ ব্যবহার করতে পারে না। অপরদিকে অনিয়ন্ত্রিত রেডিও ওয়েভ সরকারের অনুমতি
ছাড়াই যে কেই ব্যবহার করতে পারে।
বৈশিষ্ট্য
১। অনেক দূরুত্বে সহজে ডাটা প্রেরণ করা যায়।
২। রেডিও ওয়েভ ফ্রিকুয়েন্সির উপর নির্ভর করে।
৩। রেডিও ওয়েভ স্থাপনা ও ম্যানেজমেন্ট অনেক ব্যয়বহুল।
৩.৬.৩ মাইক্রোওয়েভ
মাইক্রোওয়েভ এক ধরনের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ যা সেকেন্ডে প্রায় ১ গিগা বা তার চেয়ে বেশিবার কম্পন বিশিষ্ট।
মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে ডাটা স্থানান্তর অর্থাৎ কম্পিউটার প্রদত্ত ডাটা, কথা এবং ছবি ইত্যাদি অনেক দ্রæত স্থানান্তর
করা সম্ভব। মাইক্রোওয়েভ সিস্টেমে মূলত দুটো ট্রান্সসিভার থাকে। এর একটি সিগন্যাল ট্রান্সমিট
করে এবং অন্যটি রিসিভ (জবপবরাব) করে। মাইক্রোওয়েভ এর ফ্রিকুয়েন্সী রেঞ্জ হচ্ছে
300MHz থেকে
30GHz |
মাইক্রোওয়েভ বাঁকা পথে চলাচল করতে পারে না। প্রেরক ও গ্রাহক কম্পিউটারের মধ্যে কোন বাধা থাকলে ডাটা প্রেরণ
বাধাগ্রস্থ হয়। তাই মাইক্রোওয়েভ এ্যান্টিনা বড় কোন ভবন বা টাওয়ারের ওপর বসানো হয়।
মাইক্রোওয়েভ যোগাযোগ দু’ ধরনের হতে পারে। যথা :
১। টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ (Terrestrial Microwave) ও
২। স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ (Satellite Microwave)
টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ
এ ধরনের প্রযুক্তিতে ভূ-পৃষ্ঠেই ট্রান্সমিটার ও রিসিভার বসানো হয়। এতে মেগাহার্টজ
ফ্রিকোয়েন্সী সীমার নিচের দিকে ফ্রিকোয়েন্সী ব্যবহার করা হয়। ট্রান্সমিটার ও
রিসিভার মুখোমুখি বা LOS-Line of sight যোগাযোগ করে থাকে এবং সিগন্যাল
কোন ক্রমেই মধ্যবর্তী কোন বাধা (যেমন উচ্চ ভবন, পাহাড় ইত্যাদি) অতিক্রম
করতে পারে না বা বক্রপথে যেতে পারে না। অল্প পরিসরে ডাটা পাঠানোর ক্ষেত্রে এই টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার
করা হয়।
স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ
স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনকে সংক্ষেপে Cosmate” বলে। স্যাটেলাইট হল মহাকাশে একটি উপগ্রহ যার মাধ্যমে
টেলিযোগাযোগ করা যায়। কো-এক্সিয়াল ক্যাবল বা রিলে স্টেশনের মধ্য দিয়ে টিভি সম্প্রসারণ সম্ভব হলেও দূরবর্তী কোন
স্থানের খবর সংগ্রহ করা সম্ভব হত না। প্রথম দিকের
স্যাটেলাইটগুলো ষড়ি low orbit (Echo satellite, Telster
communication satellite)-- এ স্থাপন করা হত। এই
সব পৃথিবী পরিভ্রমণে যেমন অধিক সময় নিত তেমনি
পৃথিবীর কম অংশই অধিগ্রহণ করতে পারতো। এই
সমস্যা দূরীকরণের জন্য ১৯৬০ এর দশকে
জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট ভূপৃষ্ঠ হতে ২২০০ মাইল
দূরে জিওসিনক্রোনাস অরবিটে স্থাপন করা হয়। এটি
পৃথিবীর গতির সমান গতিতে পরিভ্রমণ করতে থাকে।
প্রতিটি স্যাটেলাইটের বেসিক উপাদানগুলো হলো প্রাপক ও রিসিভার এ্যান্টিনা, প্রেরক
ও ট্রান্সমিটার এ্যান্টিনা এবং এই
ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রগুলো চালানোর জন্য প্রয়োজন
পাওয়ার, যা সোলার (ঝড়ষধৎ) প্যানেলের মাধ্যমে জেনারেশন করা হয়ে থাকে।
মাইক্রোওয়েভ যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রধান অসুবিধা হলো ট্রান্সমিটার ও রিসিভারের মধ্যে কোন বাধা থাকতে পারবে না।
কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে এই অসুবিধা দূর করা সম্ভব। কৃত্রিম উপগ্রহগুলি ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৩৬০০০ কিলোমিটার উর্ধ্বে
কক্ষে থেকে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে।
স্যাটেলাইটের ব্যবহার
১. টেলিভিশন সিগন্যাল পাঠানোর কাজে।
২. বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের ক্ষেত্রে।
৩. প্রতিরক্ষা বিভাগে খবরা-খবর আদান-প্রদানে।
৪. আবহাওয়ার অবস্থা পর্যবেক্ষণে।
স্যাটেলাইটের সুবিধা :
১. বিপুল পরিমান ডাটা পাঠানো যায়।
২. অনেক ধরনের সেবা যেমন- ভয়েস কল, ভিডিও কল ইত্যাদি সেবা প্রদান করা যায়।
৩. প্রতিরক্ষা, প্রাকৃতিক দূর্যোগে যোগাযোগ করা যায়।
৩.৬.৪ ইনফ্রারেড
এটি এক ধরনের ওয়েভ যার ফ্রিকুয়েন্সী সীমা ৩০০ এঐু থেকে ৪০০ঞঐু হয়ে থাকে। খুব কাছাকাছি অবস্থিত দুইটি
ডিভাইসের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইনফ্রারেড ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের যোগাযোগে দুই প্রান্তে ট্রান্সমিটার ও
রিসিভার থাকে। টেলিভিশন, ভিসিআর এ ব্যবহৃত রিমোট কন্ট্রোলে, বিভিন্ন ডিভাইস যেমন- কী-বোর্ড, মাউস, প্রিন্টার
ইত্যাদির ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনে ব্যবহৃত হয়।
স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ ও টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ এর মধ্যে পার্থক্য তৈরি করুন।
সারসংক্ষেপ
তারবিহীন মাধ্যম ইলেক্ট্রিক্যাল বা অপটিক্যাল কন্ডাক্টর বা তার ব্যবহার করে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পৃথিবীর বায়ু
মন্ডলই ডাটা সঞ্চালনের ফিজিক্যাল পথ হিসেবে কাজ করে। যখন ডাটা সঞ্চালনের পথে প্রতিবন্ধকতা থাকে এবং
তারযুক্ত মাধ্যম স্থাপনে সমস্যার সৃষ্টি হয় তখন ওয়্যারলেস সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের মাধ্যম হলো
বায়ুমন্ডল, পানি এবং মহাশূন্যে বাযুমন্ডলের উপরের আরও অন্যান্য স্তর। তবে তারবিহীন মাধ্যমে এ্যান্টিনা ডাটা আদান
প্রদানে বিশেষ ভ‚মিকা রাখে। তারবিহীন মাধ্যম রেডিও ওয়েভ, মাইক্রোওয়েভ ও ইনফ্রারেড এই তিন ধরনের হয়ে
থাকে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৩.৬
সঠিক উত্তরের পাশে টিক () চিহ্ন দিন
২। মাইক্রোওয়েভ সিস্টেমে মূলত কতটি ট্রান্সসিভার থাকে?
ক) ২ খ) ৩
গ) ৪ ঘ) ৫
৩। খরহব ড়ভ ংরমযঃ যোগাযোগ করে থাকে -
ক) টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ খ) স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ
গ) রেডিও ওয়েভ ঘ) ইনফ্রারেড
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র