আধুনিক যুগ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্রমবিকাশ মানুষের দীর্ঘ দিনের
চেষ্টার ফসল। অনসন্ধানে দেখা যায় মানুষ সূচনা লগ্নে আকার-ইঙ্গিতে তথ্যের আদান-প্রদান করত। পরবর্তীতে দেয়ালে
আঁচড় কেটে, পাথর খোদাই করে ইত্যাদি পদ্ধতিতে তথ্য সংরক্ষণ করা হত। অবশেষে কাগজ-কলমের আবির্ভাব ঘটে।
আধুনিক সভ্যতার উন্নয়ন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সঠিক প্রয়োগের উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে ইলেক্ট্রনিক্স, ইলেক্ট্রনিক
যোগাযোগ এবং কম্পিউটার প্রযুক্তির উন্নয়নের হার অত্যন্ত উচ্চ। ইলেক্ট্রনিক্স প্রযুক্তির উৎকর্ষের ফলে টেলিযোগাযোগ,
কম্পিউটিং, কনজিউমার ইলেক্ট্রনিক্সসহ প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখাকে পৃথকভাবে কল্পনা করা যায় না। এসব প্রযুক্তি মিলে সৃষ্টি
হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।
ষাটের দশকে উপগ্রহ যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে নতুন অগ্রযাত্রা শুরু হয়। ১৯৬৫ সালে প্রতিটি
ইন্টেলস্যাট উপগ্রহে ২৪০টি টেলিফোন সার্কিট অথবা একটি টেলিভিশন চ্যানেল পরিবহনের ব্যবস্থা ছিল। তথ্য যুগের
সূচনা হলো কম্পিউটারের প্রাথমিক যুগের বিবর্তনসমূহ। মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে যন্ত্রের সাহায্যে গণনা কাজের সহায়তা পেতে
শরু করে ছিল। তথ্য প্রযুক্তির সত্যিকার বিকাশ ঘটে মূলত ১৯৭০-৭১ সালে মাইক্রোপ্রসেসরের আবিষ্কার ও সফলভাবে
কম্পিউটারের ব্যবহারের মধ্য দিয়ে। তাই তথ্য প্রযুক্তির যুগকে মাইক্রোপ্রসেসরের যুগ বললেও খুব বেশি বলা হবে না।
মাইক্রোপ্রসরের কল্যাণে ১৯৭৬ সালে মাইক্রোকম্পিউটার, ১৯৮১ সালে পার্সোনাল কম্পিউটার, ১৯৮৪ সালে মেকিনটোশ
এবং সেই থেকে ১৯৯৬ সালে ভার্চুয়্যাল রিয়েলিটি, ইন্টারনেট ইত্যাদি প্রতিটি মুহূর্তই তথ্য প্রযুক্তির ক্রমবিকাশের গুরুত্বপূর্ণ
ঘটনা। এ প্রযুক্তির মূলে রয়েছে আধুনিক টেলিযোগাযোগ, ডাটা নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট ব্যবস্থা।
টেলিযোগাযোগ আধুনিক বিশ্বের একটি অপরিহার্য ব্যবস্থা। বাঁধা বা কোন প্রকার সেন্সরশীপ ছাঁড়াই পৃথিবীর এক স্থান হতে
অন্য স্থানে টেলিফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ সম্ভব। টেলিফোন কল ছাড়াও বিশাল পরিমাণ ডাটা এ নেটওয়ার্ক দিয়ে
স্থানান্তর করা যায়। ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট, ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্স এবং সফ্টওয়্যার কৌশলের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে আধুনিক
ইলেক্ট্রনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায়। কম্পিউটার দিয়ে ডাটা প্রক্রিয়াকরণের ব্যাপক প্রসারের সাথে বিভিন্ন কম্পিউটারের মধ্যে
সরাসরি ডাটা স্থানান্তরের গুরুত্ব ও প্রযোজনীয়তা বেড়ে চলেছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এখন পর্যন্ত সর্বশেষ ধারাটি হলো ডিজিটাল প্রযুক্তি যার মূলে রয়েছে বাইনারি পদ্ধতি। তাই
বর্তমান যুগকে ডিজিটাল যুগও বলা যায়। ফাইবার অপটিক ক্যাবল আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন
নিয়ে এসেছে। চুলের মত সরু এ ক্যাবল দিয়ে বয়ে নেয়া যায় একসাথে অসংখ্য টেলিফোন কল, বিশাল পরিমাণ ডাটা
এবং অনেক টেলিভিশন সংকেত। বিশ্বব্যাপি দ্রæত যোগাযোগের জন্য সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে স্থাপিত হয়েছে ফাইবার
অপটিক ক্যাবল। ফাইবার অপটিক ক্যাবল দিয়ে প্রেরিত সংকেতের গুণ ও মান উপগ্রহ দিয়ে প্রেরিত সংকেতের তুলনায়
অনেক উন্নত।
১.৩.২ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবদান
আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিকাশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রভাব অপরিসীম। এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির
উল্লেখযোগ্য অবদান হলো
১। অপচয় রোধ করে।
২। সময় সাশ্রয় হয়।
৩। তথ্যের প্রাপ্যতা সহজ হয়।
৪। তাৎক্ষণিক যোগাযোগ সম্ভব হয়। ফোন, ফ্যাক্স, ইন্টারনেট, ই-মেইল, এসএমএস, এমএমএস প্রভৃতি এর প্রকৃষ্ট
উদাহরণ।
৫। প্রশিক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকাÐের গতিকে ত্বরান্বিত করে।
৬। সর্বক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
৭। ব্যবসায়-বাণিজ্যে লাভজনক প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে।
৮। ই-কমার্সের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পণ্যের বাজার সৃষ্টি করা যায়।
৯। ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে পছন্দের এবং প্রয়োজনীয় জিনিসের অর্ডার দেয়া যায়।
১০। শিল্প প্রতিষ্ঠানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার মনুষ্যশক্তির অপচয় কমায়।
১১। মানবসম্পদের উন্নয়ন ঘটায়।
১২। শিক্ষার্থীরা এখন ঘরে বসেই অনলাইনে বিশ্বের বিভিন্ন নামী-দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে।
১৩। ই-গভর্নেন্স চালুর মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের মধ্যে কাজের সমন্বয় ঘটানো যায়।
১৪। সিটিজেন চার্টারের মতো নাগরিক সুবিধাগুলো ঘরে বসেই পাওয়া যায়।
১৫। ঘরে বসেই বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফোন বিলের মতো বিভিন্ন ইউটিলিটি বিলগুলো এখন মোবাইল ফোনেই দেয়া
যায়।
সারসংক্ষেপ
তথ্য প্রযুক্তির সত্যিকার বিকাশ ঘটে মূলত ১৯৭০-৭১ সালে মাইক্রোপ্রসেসরের আবিষ্কার ও সফলভাবে কম্পিউটারের
ব্যবহারের মধ্য দিয়ে। তাই তথ্য প্রযুক্তির যুগকে মাইক্রোপ্রসেসরের যুগ বললেও খুব বেশি বলা হবে না।
মাইক্রোপ্রসরের কল্যাণে ১৯৭৬ সালে মাইক্রোকম্পিউটার, ১৯৮১ সালে পার্সোনাল কম্পিউটার, ১৯৮৪ সালে
মেকিনটোশ এবং সেই থেকে ১৯৯৬ সালে ভার্চুয়্যাল রিয়েলিটি, ইন্টারনেট ইত্যাদি প্রতিটি মুহূর্তই তথ্য প্রযুক্তির
ক্রমবিকাশের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-১.৩
সঠিক উত্তরের পাশে টিক () চিহ্ন দিন
২। কত সালে মাইক্রোপ্রসেসরের আবিষ্কার হয়?
ক. ১৯৭০-৭১ সালে খ. ১৯৭৫-৭৬ সালে
গ. ১৯৮০-৮১ সালে ঘ. ১৯৮৫-৮৬ সালে
৩। মাইক্রোকম্পিউটার আবিষ্কৃত হয়Ñ
ক. ১৯৭২ সালে খ. ১৯৭৬ সালে
গ. ১৯৭৮ সালে ঘ. ১৯৮২ সালে
পাঠ - ১.৩ ১ ক ২ খ
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র