প্রাথমিক পর্যায়ে ইসলাম গ্রহণকারীদের পরিচয় ইসলামের বিরু্েদ্ধ কোরাইশ কাফিরদের ষড়যন্ত্র আক্রমণ সম্পর্কে অবহিত হবে

> মুখ্য শব্দ দ্বীনের দাওয়াত, গোপনে দ্বাওয়াত, প্রকাশ্যে দাওয়াত ও পৌত্তলিকতা
ইসলামের দাওয়াত
নবী রাসূলদের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বপ্রধান কাজ হলো দ্বীনের দাওয়াত। আর তাই দাওয়াত মুমিন জীবনের অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ মিশন। হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বেলায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এভাবেই মহানবী (সা.)-এর
জীবনের প্রথম পর্ব শেষ হয়ে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। তিনি সত্য প্রচারে আদিষ্ট হলেন, “হে আমার প্রিয় রাসূল! আপনার প্রভু
আপনাকে যে সত্য দান করেছেন, তা প্রচার করুন।” (সূরা মায়িদা-৬৭)। তখন থেকে রাসূল (সা.) সত্য প্রচারে ব্রতী হন।
গোপনে ইসলাম প্রচার
প্রথম তিন বছর গোপনে প্রচার কার্য চালান। সর্বপ্রথম মুসলমান হলেন তাঁর সহধর্মিণী খাদিজা (রা:), তারপর পিতৃব্য পুত্র
আলী (রা:), মুক্ত দাস যায়িদ বিন হারিসা ও তাঁর অন্তরঙ্গ বন্ধু আবু বকর সিদ্দীক (রা:)। আবু বকর সিদ্দীক (রা:) ছিলেন
কুরাইশদের মধ্যে অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি ইসলাম গ্রহণ করেই বন্ধুবান্ধব ও সমমনাদের মাঝে ইসলাম প্রচার শুরু
করে দেন। অচিরেই হযরত উসমান, আবদুর রহমান, সাদ, যোবায়ের, তালহা (রা:) প্রমুখ ইসলাম গ্রহণ করেন। এছাড়া
হযরত আবু ওবায়দা, আবু সালামা, উসমান ইবনে মাযউন, সাঈদ ইবনে যায়িদ, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ প্রমুখও হযরত
আবু বকর (রা:)-এর আহŸানে ইসলামে দীক্ষিত হন। বস্তুত ইসলামের ইতিহাসের প্রথম তিন-চার বছর পর্যন্ত উপরিউক্ত
মনীষীদের মধ্যেই ইসলাম সীমাবদ্ধ ছিল। তাঁরাই ছিলেন রাসূলের প্রাথমিক সহচর। রাসূলের সুখে-দুঃখে তাঁরাই ছিলেন নিত্যসঙ্গী, সমব্যথী।
প্রকাশ্যে প্রচারের আদেশ
গোপন প্রচারের প্রথম তিন বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর চতুর্থ বছরের প্রারম্ভেই প্রকাশ্যে দাওয়াত দেয়ার নির্দেশ হয়“আপনি আদিষ্ট বিষয় (আল্লাহ তায়ালার বাণী) প্রকাশ্যভাবে শুনিয়ে দিন।” (হিজর-৯৪) “আপনি আপনার পরিবার
পরিজন ও নিকটাত্মীয়দের (আল্লাহ তায়ালার) ভয় প্রদর্শন করুন।” (শুআরা- ২৯৪)
যেমন নির্দেশ তেমন কাজ। এ নির্দেশ পেয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) মক্কার অদূরবর্তী সাফা পর্বতে আরোহণ করেন এবং
গোত্রপতিদের সবাইকে আহবান করে পর্বতের পাদদেশে জমায়েত করেন। অতঃপর তাদের উদ্দেশ্যে বলেন- “হে কুরাইশ!
আজ যদি আমি বলি, এ সাফা পর্বতের পশ্চাতে একদল প্রবল শত্রæ তোমাদের আক্রমণ করার জন্য অপেক্ষমান, তবে কি
তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে?” সবাই জবাব দিল, “নিশ্চয়ই করব, কারণ এ পর্যন্ত তোমাকে আমরা কোনো দিন
মিথ্যা বলতে শুনিনি।” তিনি বললেন, “আমি এখন তোমাদের বলছি, তোমরা যদি ইসলাম গ্রহণ না কর, তবে তোমাদের
ওপর কঠিন শাস্তি আরোপিত হবে।” রাসূলের দাওয়াতী বাণী শ্রবণ করে কুরাইশ নেতৃবৃন্দ অত্যন্ত রাগান্বিত হয়। এদের
মধ্যে তাঁর চাচা আবু লাহাবও উপস্থিত ছিল।
এমতাবস্থায় রাসূল (সা.) মনোবল চ্যুত হলেন না। নিরাশাও তাঁকে আঁকড়ে ধরতে পারেনি। এবার তিনি এক ভোজসভার
আয়োজন করে আবদুল মুত্তালিবের দাওয়াত দেয়ার দায়িত্ব হযরত আলী (রা:)-এর ওপর ন্যস্ত করেন। সকলেই
ভোজসভায় উপস্থিত হয়। আহারান্তে তিনি ইসলামের কথা শুরু কররে সকলে হৈহুল্লোড় করে চলে যায়। কিছুদিন পর তিনি
আরেক ভোজসভার আয়োজন করেন। এবার তিনি আহারের পূর্বেই বক্তব্য শুরু করেন। সম্ভবত খাবার গ্রহণের পূর্বে বিশেষ
কারণে শ্রোতারা চুপ থাকে। তাই সামনে নিয়ে সকল শ্রোতা চুপ করে বসে ছিল। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, “হে বনু
মুত্তালিব! আমি তোমাদের জন্য এমন এক জিনিস নিয়ে এসেছি, যা আজ পর্যন্ত কোনো ব্যক্তিই তার কওমের জন্য আনতে
পারেনি। আমি তোমাদের আল্লাহর দিকে আহবান করছি। তোমরা যদি আমার ডাকে সাড়া দাও, তবে দুনিয়ার সকল ঐশ্বর্য
তোমাদের দখলে আসবে। এবার বল, এ কাজে কে আমাকে সাহায্য করবে?” সমগ্র ভোজসভা একেবারে নীরব নিস্তব্ধ।
অকস্মাৎ আলী (রা:) দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন, “আমি আপনাকে সাহায্য করব। এভাবে সকল বেড়াজাল ছিন্ন করে ইসলাম
বেড়েই চলল। মুসলমানদের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে লাগল।
কুরাইশদের বিরোধিতার কারণ
ইসলাম হলো সাম্য, মৈত্রী, বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও একত্ববাদের ধর্ম। হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর এ সত্য সুন্দরের আহবান
কুসংস্কারাচ্ছন্ন কায়েমী স্বার্থবাদী কুরাইশরা মেনে নিতে পারল না। তারা ইসলাম প্রচারে তীব্র বাধার সৃষ্টি করল। তাদের এ
বিরোধিতার পেছনে ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণ ছিল। যার বিবরণ এখানে তুলে ধরা হলো১. ধর্মীয় কারণ : ইসলাম ধর্ম কবুল করার অর্থ হচ্ছে নিজেকে সকল প্রকারের শিরক হতে মুক্ত করা। হযরত মুহাম্মদ
(সা.) একত্ববাদের দাওয়াত দিয়ে আরববাসীকে মূর্তিপূজা থেকে বিরত থাকতে বললেন, তখন মূর্তিপূজক কুরাইশ
স¤প্রদায় তাঁর ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে এবং তাঁর ইসলাম প্রচারে বাধা সৃষ্টি করে।
২. সামাজিক কারণ : সাম্য ও বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ইসলামের বক্তব্য হলো ধনী-নির্ধন, উঁচু-নীচু, আশরাফআতরাফ, সাদা-কালো সকলেই সমান। মুহাম্মদ (সা.) আরবে তাওহীদের দাওয়াত দেয়ার সাথে সাথে সমাজে
বিরাজিত অত্যাচার-অনাচার, ব্যভিচার, দুর্নীতি, নরবলী, মদ্যপান, জুয়া খেলা, কুসিদ প্রথা, লুণ্ঠন ইত্যাদি
পাপাচারের বিরুদ্ধে কথা বলেন। আরবরা তাই নবী (সা.)-এর বিরোধিতা করতো।
৩. রাজনৈতিক কারণ : কাবার বদৌলতে সমগ্র আরবের নেতৃত্ব কুরাইশদের কুক্ষিগত ছিল। ইসলামের ক্রমবর্ধমান
শক্তি দেখে পৌত্তলিক নেতৃবৃন্দ উদ্বেগের সাথে লক্ষ করল এভাবে ইসলামের শক্তি উত্থিত হলে, তাদের নেতৃত্ব ও
রাজনৈতিক ক্ষমতা হারিয়ে যাবে। তাই উপায়ন্তর না দেখে তারা ইসলামের বিরোধিতা শুরু করে।
৪. অর্থনৈতিক কারণ : কুরাইশরা হজ্জের মওসুমে অনেক প্রকার আর্থিক সুবিধা ভোগ করতো। যদি মুহাম্মদ (সা.)
প্রচারিত ধর্ম বিশ্বাসে একমত হয়ে মানুষ একত্ববাদের শিক্ষা গ্রহণ করে, তাহলে পৌত্তলিকদের উপার্জনের পথ বন্ধ
হয়ে যাবে। এজন্য তারা ইসলাম ও মুহাম্মদ (সা.)-এর বিরোধিতা করে।
শিক্ষার্থীর কাজ মক্কায় ইসলাম প্রচারে মহানবী (সা.)-এর প্রথমিক পদক্ষেপগুলো চিহ্নিত করুন।
কে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন?
গোপনে ইসলাম প্রচারের
কোন সালে প্রকাশ্যে
ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু হয়।?
মানবী (সা.) কোন পাহাড়ের
পাদদেশে প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দেন?
সারসংক্ষেপ :
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রাসূল মুহাম্মদ (সা.)-কে গোটা বিশ্বের জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছিলেন। আর তাঁর
প্রচারিত সত্য ধর্মেই রয়েছে সার্বিক কল্যাণ। কাফিররা ইসলামের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেও তাঁকে এতটুকু দমিয়ে দিতে
পারেনি; বরং ক্রমশ ইসলামের ব্যাপ্তি, বিস্তৃতি বেড়েই চলেছে। অবশেষে কুরাইশদের বাধাসহ অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা মাড়িয়ে ইসলামের সুমহান আদর্শ আরবসহ সমগ্র পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন।
১। হযরত মুহাম্মদ (সা.) কত সনে প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচার শুরু করেন?
(ক) ৬১১ (খ) ৬১২
(গ) ৬১৩ (ঘ) ৬১৪
২। সর্বপ্রথম কুরআনের যে কথা মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর অহী হিসেবে অবতীর্ণ হয়-
(ক) পড়ুন, আপনার রবের নামে (খ) লিখুন, আপনার প্রভুর নামে
(গ) বলুন, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই (ঘ) লিখুন, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই
৩। ওয়াহী অবতরণের অলৌকিক ঘটনা অবগত হয়ে হযরত খাদীজা (রা:) রাসূল (সা.)-কে প্রদান করেনর. সাহস রর. সহযোগিতা ররর. উৎসাহ
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) র (খ) রর
(গ) ররর (ঘ) র, রর ও ররর
চূড়ান্ত মূল্যায়ন
সৃজনশীল প্রশ্ন:
জনাব জামিল সাহেব বিশ্রাম নগর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়র প্রধান শিক্ষক। গ্রামের মানুষ তাকে খুবই বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা
করে এবং যেকোনো পরামর্শের জন্য তার কাছে আসে। মাতবর শ্রেণির কিছু লোকজন গ্রামে মেলার নামে অশ্লীল
নাচগানসহ, মদ-জুয়ার আসর বসায় বিভিন্ন অনৈতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজির মাধ্যমে সামাজিক ও
ধর্মীয় পরিবেশ নষ্ট হয়। এই অবস্থায় আতিক সাহেব এগুলো বন্ধের আহŸান জানালে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠি তার উপর
অমানবিক নিপীড়ন শুরু হয়।
(ক) নবী করীম (স) কত বছর বয়সে নবুয়তপ্রাপ্ত হন? ১
(খ) কুরাইশদের ইসলামের বিরোধিতা করার কারণ কী? ২
(গ) উদ্দীপকের ঘটনার সাথে নবী করীম (স)-এর কোন ঘটনার মিল পাওয়া যায়? ৩
(ঘ) উক্ত ঘটনা মহানবী (স) কিভাবে মোকাবেলা করেন? ৪

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]