মুখ্য শব্দ মদীনা সনদ, আনসার, মুহাজির, আউস, খাজরাজ ও ইসলামিক ভ্রাতৃত্ববোধ
মদিনা সনদ
মহানবী (সা.) প্রিয় জন্মভূমি মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করার পর সেখানে একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র স্থাপন
করার পরিকল্পনা করেন। মহানবী (সা.) মদিনার সংহতির চিন্তা করে সেখানকার অধিবাসীদের নিয়ে তথা
পৌত্তলিক, ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলিমদের মধ্যে এক লিখিত সনদ বা চুক্তি স্বাক্ষর করেন। আর এ সনদের মাধ্যমে রাষ্ট্র
পরিচালনার ঘোষণা দেন। এ সনদকেই ‘মদিনা সনদ’ বলা হয়। ইসলামের ইতিহাসে এ সনদের গুরুত্ব ‘লীগ অব নেশন্স’,
বা ‘জাতিসংঘ’, ‘চার্টার অব হিউম্যান রাইটস’ বা জেনেভা কনভেনশনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ও সুদূরপ্রসারী ছিল। হযরত
মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক। তিনি তাঁর রাজনৈতিক দূরদর্শিতার দ্বারা অবলোকন
করলেন যে, মদিনা ও পাশবর্তী অঞ্চলে বসবাসকারী ইহুদি, খ্রিস্টান, পৌত্তলিক ও মুসলিমদের মধ্যে সহাবস্থান এবং
স¤প্রীতি স্থাপিত না হলে একটি সুসংহত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই তিনি এ চার জাতির লোক নিয়ে একটি ‘আন্তর্জাতিক
সনদ’ রচনা করেন। এ সনদের ৪৭ টি ধারা ছিল। এ সনদকেই ‘মদিনা সনদ’ বা æঞযব ঈযধৎঃবৎ ড়ভ গধফরহধ’ বলা হয়।
মদিনা সনদের ধারা বা শর্তসমূহ
আবু ওবাইদ তার ‘কিতাব আল আমওয়াল’ নামক গ্রন্থে বলেন: সামাজিক নিরাপত্তা, বিচারব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক,
প্রতিরক্ষা, কেন্দ্রীয় প্রশাসনের বিভিন্ন বিষয় এবং বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ ক্ষমতা হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর ন্যস্ত করা
হয়। এ সনদ বলে হযরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনার সর্বাধিনায়ক ছিলেন। মদিনা সনদের প্রধান ধারাসমূহ নিম্নরূপ১. মদিনা সনদে স্বাক্ষরকারী ইহুদি, খ্রিস্টান, পৌত্তলিক ও মুসলিমগণ মদিনা রাষ্ট্রে সমান নাগরকি অধিকার ভোগ করবে
এবং একটি জাতি (উম্মাহ) গঠন করবে।
২. সনদ অনুযায়ী মহানবী (সা.) মদিনা রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান এবং মদিনার সর্বোচ্চ বিচারলয়ের প্রধান পদে অধিষ্ঠিত হবেন।
৩. মদিনা রাষ্ট্রের পূর্ণ স্বাধীনতা বজায় থাকবে। সকল শ্রেণির লোক নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে পারবে।
৪. মদিনা সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো পক্ষ মদিনার জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী কোনো ঘৃণ্য পক্ষে যোগ দিবে না।
৫. সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো স¤প্রদায়কে বহিঃশত্রæ আক্রমণ করলে স¤প্রদায়ের সমবেত শক্তির সাহায্যে সে বহিঃশত্রæর
মোকাবেলা করতে হবে।
৬. সনদে স্বাক্ষরকারী স¤প্রদায়সমূহ বহিঃশত্রæর হামলার সময় স্ব স্ব স¤প্রদায়ের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ব্যয়ভার বহন করবে।
৭. সনদে স্বাক্ষরকারী স¤প্রদায়ের কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে তা ব্যক্তিগত অপরাধ বলে গণ্য করা হবে। এজন্য
অপরাধীর স¤প্রদায়কে দোষী করা চলবে না।
৮. মদিনাকে পবিত্র বলে ঘোষণা করা হলো এবং রক্তপাত, হত্যা, বলাৎকারসহ অপরাপর অপরাধমূলক কার্যকলাপ
চিরতরে নিষিদ্ধ করা হলো।
৯. অপরাধীকে উপযুক্ত শাস্তি ভোগ করতে হবে এবং সর্বপ্রকার পাপী ও অপরাধীকে ঘৃণার চোখে দেখতে হবে।
১০. স্বাক্ষরকারী স¤প্রদায়ের কারো মধ্যে কোনো বিরোধ দেখা দিলে মহানবী (সা.) আল্লাহর বিধানানুযায়ী তার মীমাংসা
করবেন।
১১. দুর্বল ও অসহায়কে সর্বোতভাবে সাহায্য ও রক্ষা করতে হবে।
১২. মহানবী (সা.)-এর পূর্বসম্মতি ব্যতিরেকে মদিনাবাসীগণ কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে না।
১৩. সনদে মক্কার কুরাইশগণকে সাধারণভাবে মদিনা রাষ্ট্রের শত্রæ বলে ঘোষণা করা হয়। তাদেরকে বা তাদের
সাহায্যকারীদেরকে সহায়তা নিষিদ্ধ করা হয়।
১৪. সনদে বলা হয়, প্রত্যেক গোত্র সাধারণভাবে মহানবী (সা.)-এর ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব মেনে চলবে। কিন্তু স্ব স্ব গোত্রীয়
দলপতিদের গোত্রীয় প্রাধান্যও অক্ষুণœ থাকবে। প্রত্যেকটি গোত্র তাদের পূর্ববর্তী চুক্তিসমূহ এবং দেয় মৃত্যুপণ ও
মুক্তিপণসমূহ এককভাবে প্রদান করবে। সেখানে মদিনা রাষ্ট্র কোনো বিঘœ সৃষ্টি করবে না।
১৫. সনদের শর্ত ভঙ্গকারীর ওপর আল্লাহর অভিসম্পাতের কথা বলা হয়।
মদিনা সনদের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
আরবের ইতিহাসে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুমহান উদ্দেশ্য নিয়ে অন্য কোনো ব্যক্তি বা নেতা এমন উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেননি।
শান্তি প্রতিষ্ঠার বাস্তব উদ্যোগের প্রেক্ষিতে মদিনা সনদ বিভিন্ন দিক দিয়ে বহু গুরুত্ব বহন করে। মহানবী (সা.) যে নিছক
একজন ধর্মপ্রচারকই নন; বরং বিশ্ব ইতিহাসে একজন শ্রেষ্ঠ রাজনীতিক বিপ্লবী মহাপুরুষ ছিলেন, তাও এ সনদে প্রমাণিত
হয়। উইলিয়াম মুইর যথার্থই বলেন- রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক, নৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে মদিনা সনদ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে তা
সবিস্তার আলোচনা করা হলোপ্রথম লিখিত সংবিধান
দিনায় শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত মদিনা সনদ পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান। এর পূর্বে
এরূপ কোনো মৈত্রী সংবিধান ছিল না। এটি তৎকালীন যুগেই নয়; বরং সর্বযুগে সর্বকালের মহামানবের জন্য শ্রেষ্ঠত্বের
পরিচায়ক। ঐতিহাসিক মুইর বলে, “এ চুক্তি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অসামান্য মাহাত্ম্য ও অপূর্ব মননশীলতার
পরিচায়ক।” ড. হামিদুল্লাহ বলেন, “মোট ৪৭ টি ধারাবিশিষ্ট এ সনদ ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম লিখিত শাসনতন্ত্র।”
ভ্রাতৃসংঘ ও ঐক্য প্রতিষ্ঠা ঃ ‘মদিনা সনদ’ মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে সব স¤প্রদায়কে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করে
হিংসাদ্বেষ ও কলহের অবসান করে এবং বিপদে সবাই এক- এ নীতিতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ করে। মুসলিম ও অন্যদের সাথে
সকল প্রকার পার্থক্য নিরসনে এর কার্যকারিতা ধারাগুলোর দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে যায়।
রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা ঃ সে সময় আরবের মানুষদের মধ্যে কোনো রাজনৈতিক ঐক্য ছিল না। রাসূলুল্লাহ (সা.)
মদিনায় হিজরতের পর জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে রক্তের ভিত্তির স্থলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে মদিনাবাসীর মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্য
স্থাপিত হয়। একমাত্র রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রণীত মদিনা সনদই মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে সবার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ঐক্য
প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখে।
ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও উদারতা ঃ হযরত মুহাম্মদ (সা.) ধর্মীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের উজ্জ্বল
দৃষ্টান্ত। তাঁর প্রণীত মদিনা সনদ মুসলিম অ মুসলিম নির্বিশেষে সকলের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। মদিনার বিভিন্ন
স¤প্রদায়ের লোকেরা পরস্পরের ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।”- এ শর্ত দ্বারা হযরত মুহাম্মদ (সা.) যে মহানুভবতা ও
ধর্মীয় সহিষ্ণুতার পরিচয় দেন তা বিশ্বের ইতিহাসে সত্যিই বিরল।
মসজিদে নববী নির্মাণ ঃ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আগমনের পূর্বে মদিনায় কোনো মসজিদ বা মুসলিমদের সালাত পড়ার
সুনির্দিষ্ট কোনো স্থান ছিল না। তিনি মদিনায় আগমনের পর সে স্থানটিই মসজিদের জন্য ক্রয় করে দেন, যেখানে তাঁর উষ্ট্রী
বসে পড়েছিল। কাঁচা ইটের প্রাচীর, খেজুর গাছের খুঁটি এবং খেজুর শাখার ছাদ দিয়ে মসজিদ নির্মিত হলো। মসজিদ
সংলগ্ন স্থানে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর স্ত্রীদের জন্যও কক্ষ তৈরি করা হয়েছিল। এ মসজিদ নির্মাণে সাহাবীগণ কায়িক শ্রম দান
করেন, যাতে মহানবী (সা.) নিজেও অংশগ্রহণ করেছিলেন।
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা ঃ সে কালের মানুষের মধ্যে গণতন্ত্রের কোনো ধারণাই ছিল না। মদিনা সনদ গোত্রপ্রথার
বিলোপ সাধন করে ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধের ভিত্তিতে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর সমাজ ও ধর্মীয় অনুশীলন পরিচালনার
দায়িত্ব অর্পণ করে। ফলে আদর্শ গণতন্ত্রের ভিত প্রোথিত হয়। ঐতিহাসিক পি.কে.হিট্টি বলেন, “মদিনা প্রজাতন্ত্রই
পরবর্তীকালে বৃহত্তর ইসলামী সাম্রাজ্যে পরিণত হয়।” স্বৈরাচারী শাসন অথবা শেখতন্ত্রের পরিবর্তে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব
নবপ্রতিষ্ঠিত ইসলামী প্রজাতন্ত্রে স্বীকৃতি লাভ করে। ড. মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, “মদিনা সনদের মাধ্যমে সত্যিকার
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত হয়। সমাজের সকল সদস্য একের প্রতি অন্যের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে অবগতি লাভ
করে। ফলে তারা একটি নতুন সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।”
ধর্মীয় উদারতা ঃ মদিনা সনদ মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে সব মানুষকে পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং নির্বিঘেœ যার যার ধর্ম
পালনের নিশ্চিয়তা বিধান করে। মদিনার বিভিন্ন স¤প্রদায়ের লোকেরা একে অপরের ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে নামহানবী (সা.) এ শর্ত দ্বারা যে মহানুভবতা ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার পরিচয় দেন, তা বিশ্বের ইতিহাসে সত্যিই বিরল। সর্বগুণে
গুণান্বিত, সর্বশ্রেষ্ঠ যুগান্তকারী এ মহাপুরুষ বিশ্বে ধর্ম ও রাজনীতির সমন্বয়ে যে ইসলামী প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন,
উত্তরকালে তা বিশাল ইসলামী সাম্রাজ্যের রূপ পরিগ্রহ করে।
প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা ঃ মহানবী (সা.) তৎকালীন বিশ্বে ধর্ম ও রাজনীতির সমন্বয়ে যে ইসলামী প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন,
উত্তরকালে তা বিশাল ইসলামী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে। পি.কে.হিট্টি যথার্থই বলেছেন, “মদিনা প্রজাতন্ত্রই
পরবর্তীকালে বিপুল বিস্তৃত ইসলামী সাম্রাজ্যের ভিত্তিমূল স্থাপন করে।”
মদিনায় সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রবর্তন
ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ঃ মদিনায় মহানবী (সা.) ধনী ও গরিবের মধ্যে বৈষম্য সীমারেখা ছিন্ন করে সমতা ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে এক
উন্নত সমাজ ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। রাসূল (সা.) মুসলিমদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো সুদৃঢ় করার চেষ্টা করতে
লাগলেন। তিনি আনসার এবং মুহাজিরদের মধ্যে পারস্পরি বন্ধুত্ব চুক্তি সম্পাদন করলেন। সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, প্রত্যেক
আনসারের একজন করে মুহাজির বন্ধু থাকবে এবং প্রত্যেক মুহাজিরের একজন করে আনসার বন্ধু থাকবে। এরা একে
অন্যের তত্ত¡াবধান করবে এবং পরস্পরের সুখ-দুঃখে অংশ নেবে। এভাবে মুসলিমদের জন্য নিবিড় ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি
হলো।
প্রথম ও দ্বিতীয় হিজরীর উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলি
১. হযরত সালমান ফারেসী ইসলাম গ্রহণ ঃ এ বছর হযরত সালমান ফারেসী এবং ইহুদি ধর্মবিশারদ আবদুল্লাহ ইবনে
সালাম মুসলিম হন। এ বছরই হযরত আবু উমামা ও আসাদ ইবনে যোরারা ইন্তেকাল করেন।
২. সালাতের বিধান পরিবর্তন ঃ সালাত নবুয়তের প্রথম দিকেই ফরয হয়েছিল, যা সকাল সন্ধ্যায় দু’রাকাত করে পড়া
হতো। মেরাজের মাধ্যমে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয হয়। জুমুআ অবশ্য মক্কায় ফরয হয়েছিল, কিন্তু আদায় করার সুযোগ
হয়নি। মদিনায় এসে যথারীতি জুমুআার জামায়াত পড়াও আরম্ভ হয়।
৩. জেহাদের নির্দেশ ঃ পূর্বে জিহাদের নির্দেশ ছিল না। প্রথম হিজরীর রমযান মাসে মুসলিমদের প্রতি জেহাদের নির্দেশ
হয়।
৪. আযান প্রবর্তন ঃ মদিনায় মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হবার পর নির্ধারিত সময়ে প্রকাশ্যে সালাতের আহবানের জন্য হযরত
মুহাম্মদ (সা.) সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করেন। কেউ ঘণ্টাধনি, কেউ শিঙ্গা বাজানো আবার কেউ আগুন জ্বালাবার প্রস্তাব
দিলেন। হযরত মুহাম্মদ (সা.) এগুলো কোনোটিই পছন্দ করলেন না। তিনি হযরত বিলালকে নামাযের জন্য (বর্তমান
প্রচলিত বাক্যগুলোর দ্বারা) উচ্চঃস্বরে আহবান করতে বলেন। সেই থেকে বর্তমান আযান পদ্ধতি চালু হয়।
৫. কিবলা পবির্তন ও জিহাদের নির্দেশ ঃ হিজরী দ্বিতীয় সালে ইসলামের ইতিহাসে দু’টি বিরাট ঘটনার সূত্রপাত হয়।
তার একটি হচ্ছে মুসলিম জাহানের জন্য নিজস্ব কিবলা নির্ধারণ, যা আজও প্রায় দেড়শ কোটি মানুষের অন্তরের কেন্দ্রস্থল
হিসেবে পরিগণিত। তখন থেকেই ইসলামের শত্রæরা তাঁর বিরোধিতার জন্য তরবারি ধারণ করে এবং মুসলিমগণ তা
প্রতিহত করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। উবাই ইবনে কাব (রা) বলেন, “যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সহচরগণ মদিনায়
আসেন এবং আনসারগণ তাঁদের আশ্রয় দেন তখন সমগ্র আরব একযোগে তাঁদের সাথে যুদ্ধ করতে উদ্যত হয়।” তখন
জিহাদের নির্দেশ সংবলিত আয়াত অবতীর্ণ হয়- “যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে আসবে, আল্লাহর পথে তাদের সাথে
যুদ্ধ কর।” (সূরা বাকার-১৯০)
মদীনা সনদ কী ? মদীনা সনদের ধারা কয়টি? সনদে স্বাক্ষরকারী কয়েকটি
স¤প্রদায়ের নাম লিখ।
মদীনা সনদে স্বক্ষরকারী কয়েকটি
গোত্রের নাম উল্লেখ কর।
সারসংক্ষেপ :
মদীনার সকল স¤প্রদায়ের মধ্যে সাম্য, ঐক্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করে মদীনাতে একটি শান্তিপূর্ণ নগর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
সর্বোপরি আন্ত:ধর্মীয় স¤প্রীতি বজায় রেখে মদীনা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য মহানবী (সা.) যে লিখিত সনদ
প্রদান করেন তাই মদীনা সনদ। এটি পৃথিবীর প্রথম লিখিত সংবিধান।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৪.২
বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন।
১। ঐতিহাসিক মদিনা সনদে মোট কয়টি ধারা ছিল?
(ক) ৫৩টি (খ) ৫৪টি
(গ) ৪৭টি (ঘ) ৫৬টি
২। মদিনা সনদের ফলে সর্বতোভাবে স্বীকৃতি পেল-
র. নাগরিক অধিকার রর. সামাজিক মর্যাদা ররর. ধর্মীয় স্বাধীনতা
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) র ও রর (খ) রর ও ররর (গ) র ও ররর (ঘ) র, রর ও ররর
৩। মদিনায় মহানবী (সা.)-এর আগমনের ফলে মদিনাবাসী-
র. সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয় রর. বিভিন্ন গোত্র পরস্পর কলহে লিপ্ত হয়
ররর. ইহুদিদের সাথে সমঝোতার গড়ে ওঠে
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক) র (খ) রর (গ) ররর (ঘ) র, রর ও ররর
সৃজনশীল প্রশ্ন
১২১৫ সালে যুক্তরাজ্যের “সারির রাজিমিডে” ম্যাগনাকার্টা সনদ রচিত হয়। রাজাজনের আমলে তিনি যেসব রাজনৈতিক
সংকটের সম্মূখীণ হয়েছিলেন তা সমাধান করতেই এ সনদ প্রনয়ণ করেন।এ সময় প্রভাবশালী ব্যরনার জনের বিরুদ্ধে
বিদ্রোহ করে এবং লÐন দখল করে নেয়। তাই তাদের মাঝে সমঝোতা স্মারক হিসেবেই এ দলীল সম্পাদিত হয়। ইহা
‘ম্যাগনাকার্টা’ নামে পরিচিত।
(ক) মদীনা সনদে কতটি ধারা রয়েছে? ১
(খ) মসজিদে নববীর পরিচয় দাও। ২
(গ) উদ্দীপকের আলোকে তোমার পঠিত সনদটি তুলে ধর। ৩
(ঘ) মদীনা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় উক্ত সনদ ছিল মাইলফলক - উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। ৪
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র