হিব্রæ জাতির উৎপত্তি ও পরিচয় হিব্রæ সভ্যতার ইতিহাস হিব্রæ ধর্ম সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন।

মুখ্য শব্দ হিব্রæ জাতি, ইসরাইল, জুদাহ রাজ্য, জেরুজালেম, একেশ্বরবাদ ও ‘অ্যাপক্রিপা’
হিব্রæদের পরিচয়
হিব্রæ জাতি প্রাচীন মিসরীয় এবং মেসোপটেমীয় সভ্যতার পর প্রাচীন মানব সভ্যতায় অবদান রেখেছিল।
হিব্রæরাই ইহুদী ধর্মের অনুসারী এবং ইসরাইলী জাতি হিসেবে সমধিক পরিচিত। ঐতিহাসিকদের মতে প্রাচীন ফোরাত নদীর
(ইউফ্রেটিস নদী) অপর পাড় থেকে যে সব মানবগোষ্ঠী বিতাড়িত হয়ে প্যালেস্টাইনে বসতি স্থাপন করে-তারাই হিব্রæ
জনগোষ্ঠী। হিব্রæ শব্দের অর্থ ‘বিদেশী’ (অষরবহ) থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। তাই নৃতাত্তি¡ক অর্থে হিব্রæরা কোনো নির্দিষ্ট
জাতি নয়। মিসরীয় ও ব্যাবিলনীয় উৎস থেকে আহরিত হয়েছিল হিব্রæ সভ্যতার অনেক উপাদানই । হিব্রæদের রাজনৈতিক ইতিহাস
হিব্রæ জাতি খ্রিস্টপূর্ব ১৮০০ অব্দে তাদের
আদি পুরুষ ইব্রাহিমের (আ:) (আব্রাহাম)
নেতৃত্বে উত্তর-পশ্চিম মেসোপটেমিয়ায় একত্রে
বসবাস শুরু করে। অতঃপর ইব্রাহিমের (আ:)
এর পৌত্র ইয়াকুব (আ:) (জ্যাকব) হিব্রæদের
নিয়ে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে প্যালেস্টাইনে
বসতি স্থাপন করেন। ইয়াকুব এর অপর নাম
‘ইসরায়েল’ থেকেই উক্ত জাতি ইসরাইলী
নামে পরিচিতি। ১৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে
ইসরাইলীরা দুর্ভিক্ষে পতিত হলে প্রতিবেশী
মিসরে গমন করে কিন্তু সেখানে তারা
ফারাওদের অধীনে দাসত্ব বরণ করে।
খ্রিস্টপূর্ব ১৩০০-১২৫০ অব্দে নবী মুসা (আ:)
(মোজেস) মিসরে আবির্ভূত হয়ে হিব্রæদের মুক্ত
করে সিনাই উপদ্বীপে উপস্থিত হন। এখানে এসে হিব্রæরা দেবতা যেহোভা’র উপাসনা শুরু করে। অতঃপর দাউদ (আ:)
(ডেভিড) এর নেতৃত্বে তারা প্যালেস্টাইন (ফিলিস্তিন) দখল করে এবং জেরুজালেম শহরে রাজধানী স্থাপন করেন। দাউদ
(আ:) হিব্রæ জাতিকে সুসংহত করেন। তাঁর এর মৃত্যুর পর সুলায়মান (আ:) (সলোমন) হিব্রæদের রাজা মনোনীত হন।
তিনি ছিলেন মহাজ্ঞানী ও সুপÐিত। খ্রিস্টপূর্ব ৯৩৫ অব্দে সুলায়মান (আ:) মৃত্যুবরণ করলে হিব্রæ জাতির পতন শুরু হয়।
জেরুজালেম রাজ্য দ্বিখন্ডিত হয়ে উত্তরে ইসরাইল এবং দক্ষিণে ‘জুদাহ রাজ্যে’ বিভক্ত হয়। পরে এ্যাসিরীয়গণ হিব্রæরাজ্য
এবং ক্যাল্ডীয় রাজা নেবুচাঁদনেজার ‘জুদাহ’ রাজ্য দখল করেন। প্যালেস্টাইনকে কেন্দ্র করে হিব্রæ জাতির উত্থান সভ্যতার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী ঘটনা।
হিব্রæ ধর্ম
তাওরাত বা ওল্ড টেস্টামেন্ট ) হিব্রæ ধর্মের (ইহুদী জাতির) প্রধান ধর্মগ্রন্থ। মুসা (আ:) এর নেতৃত্বে তারা
একেশ্বরবাদের প্রতীক হিসেবে যেহোভার আরাধনায় আকৃষ্ট হয়। মুসা (আ:) এর মৃত্যুর পর হিব্রæ ধর্ম কুসংস্কারে পতিত
হয়। নিরাকার আল্লাহর স্থলে জেহোভাকে তারা আকার-বিশিষ্ট একেশ্বর বলে মনে করত। খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৬ অব্দে পারস্যের
হাতে জেরুজালেমের পতন ঘটলে হিব্রæরা পারস্যের অধীনস্থ হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন বন্দীদশায় থাকার পর এক পর্যায়ে
হিব্রæদের মধ্যে নব চেতনার উদ্ভব হয়। এ যুগে ইহুদীরা জরথুস্ত্র ধর্মের প্রভাবে আসে এবং আবার একেশ্বরবাদে আকৃষ্ট হয়।
হিব্রæ আইন
হিব্রæদেরও আইন তৈরীতে এ্যামোরাইটদের ন্যায় যথেষ্ট অবদান আছে। তবে তাদের আইন অনেকটা হাম্মুরাবীর আইনের
দ্বারা প্রভাবিত। ব্যাবিলনীয় আইনের অনুকরণে তারা যে আইন তৈরী করে তা ‘ডিউটোরোনোমিক কোড’ নামে পরিচিত
ছিল। এই কোড হাম্মুরাবীর আইনের চেয়ে অনেকটা পরিশুদ্ধ বলে মনে করা হয়। তাদের প্রণীত অনুশাসনে গরীব-
দুঃখীদের স্বার্থরক্ষা, মানবতা, সু² বিচার, সুদ গ্রহণে শাস্তির ব্যবস্থা এবং দাসদের মুক্তির যথাযথ ব্যবস্থার উল্লেখ রয়েছে।
ঐতিহাসিকদের মতে এই আইনের প্রয়োগের ফলে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা মজবুত হয়।
হিব্রæ সাহিত্য
হিব্রæদের সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রে বেশ পারদর্শিতা লক্ষ্য করা যায়। তাদের সাহিত্য কর্ম ‘ওল্ড টেস্টামেন্ট’
এবং ‘অ্যাপক্রিপা’য় () লিপিবদ্ধ রয়েছে। মুসার (আ:) এর অনেক বাণী ওল্ড টেস্টামেন্টে সংগৃহীত করা
হয়েছে। “উইজডম অব সলোমন” একটি শ্রেষ্ঠ ইহুদী সাহিত্য গ্রন্থ। এ ছাড়া “সোলেমানের গীতিকা”
) হিব্রæজাতির জনপ্রিয় গীতিকা। ‘ওল্ড টেস্টামেন্ট’ এর দ্বিতীয় পুস্তক (‘ঞযব ইড়ড়শ ড়ভ
) ছিল মূলত মুসা (আ:) এর জীবনবৃত্তান্ত। ষষ্ট পুস্তকটি মহাকাব্যের মানসম্মত ছিল।
এখানে হিব্রæ বীর ও জনগনের ঘটনাবহুল জীবন কাহিনী বিবৃত হয়েছে। অষ্টম পুস্তকে (’) নারীদের
অবস্থান ও চরিত্র করুণ রসের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। হিব্রæ শিল্পকলা এবং স্থাপত্য অতুলনীয়। দাউদ (আ:)
জেরুজালেমকে ঐশ্বর্যশালী তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত করেন। জেরুজালেমে এখনো অনেক স্থাপত্য তাঁর কীর্তি বহন
করছে যা আজও পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।
হিব্রæ দর্শন
গ্রীকদের পূর্বে হিব্রæরা বিষ্ময়কর দর্শনের জন্ম দিতে পেরেছিল। এই দর্শন মানুষ ও জীবন সম্পর্কে নতুন ধারণা দিয়েছিল।
পুরাতন টেস্টামেন্টে তাদের অনেক দার্শনিক-মতবাদ পাওয়া গিয়েছিল। বিশেষ করে ’- পুরাতন টেস্টামেন্টের এই দুই অংশে হিব্রæদের প্রাথমিক দার্শনিক চিন্তার
প্রতিফলন রয়েছে।
পারস্য প্রভাবের ফল
হিব্রæ ধর্ম উন্নয়নের চূড়ান্ত স্তর ছিল পারস্য প্রভাবের ফল। এই স্তর ছিল ৫৩৯ থেকে ৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত। পারস্য
প্রভাবের এ সময় ইহুদী ধর্মে একটি বড় রকমের অলোড়ন হচ্ছে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসে পরজীবন ও অশুভ শক্তি হিসেবে
শয়তানের অস্তিত্তে¡র বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়। জাগতিক জীবনের ভোগ বিলাশের চেয়ে হিব্রæদের কাছে পরজীবনের শান্তির
প্রশ্নটিই বড় হয়ে পড়ে। যাতে হিব্রæ ধর্মে একেশ্বরবাদী চেতনার কঠোরতার প্রকাশ ঘটে।
শিক্ষার্থীর কাজ হিব্রæ জাতির বিভিন্ন শহর ও নেতাদের তালিকা তৈরী করুন।
হিব্রæ জাতির আদি পুরুষ কে? তাদের শহরের নাম কী? হিব্রæ নেতাদের নাম কী?
মধ্য এশিয়া ও নিকট প্রাচ্যের যেসব সভ্যতা আমাদের আধুনিক সভ্যতাকে প্রভাবিত করেছে তাদের মধ্যে হিব্রæ সভ্যতা
অন্যতম। হিব্রæ সভ্যতা পূর্ববর্তী সভ্যতার অনেক কিছু আত্মস্থ করেছিল বটে কিন্তু হিব্রæ সভ্যতার মৌলিক কিছু সৃষ্টিও
আছে। বিশেষ করে একেশ্বরবাদের প্রবক্তা ইহুদীরা ধর্মে নৈতিকতা এবং পবিত্রতা রক্ষায় অধিক ভ‚মিকা পালন করে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-১.৫
বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন।
১. হিব্রæ শব্দের অর্থ-
ক. দেশী খ. যাযাবর
গ. বিদেশী ঘ. স্থানীক
২. হিব্রæ জাতির আদি পুরুষ-
ক. আব্রাহাম খ. সোলেমান
গ. ডুঙি ঘ. ডেভিড
৩. হিব্রæদের প্রধান দেবতা
ক. উরিয়া খ. জেহোভা
গ. ওসিরিয় ঘ. জেকব
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়–ন এবং ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দিন।
আরেফিন সভ্যতা সম্পর্কে জানতে গিয়ে প্রাচীন হিব্রæ জাতি সম্পর্কে জানলেন। হিব্রæ জাতির সাথে তিনি ইহুদী জাতির মিল
লক্ষ্য করলেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করলেন।
৪। ইসলামের মতো একেশ্বরবাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল?
(ক) খ্রিষ্ট ধর্ম (খ) হিন্দু ধর্ম
(গ) বেদ (ঘ) ইহুদী ধর্ম।

কোনটি সঠিক?
(ক) র (খ) রর (গ) ররর (ঘ) র, রর ও ররর
চূড়ান্ত মূল্যায়ন: ১.৫
সৃজনশীল প্রশ্ন:
শিরিন সুলতানা দীর্ঘদিন ধরে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে চলেছেন। সম্প্রতি তিনি আন্তর্জাতিক নারী দিবস
উপলক্ষে আয়োজিত এক অন্ষ্ঠুানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘‘এ সমাজই একটি সময় মনে করত কন্যা সন্তান
জন্মদান অপমানজনক।’’ এ অবস্থার উত্তরণে বেগম রোকেয়ার নারী শিক্ষা অন্দোলন সফল হয়েছে বলে তিনি মনে
করেন।
ক. ইহুদী জাতির ধর্মের নাম কী? ১
খ. হিব্রæদের জাতিগত পরিচয় ব্যাখ্যা দিন। ২
গ. উদ্দীপককে শিরিন সুলতানার বক্তব্যে কোন সভ্যতায় নারীর অবস্থা ফুটে উঠেছে? মূল্যায়ন করুন। ৩
ঘ. উক্ত সভ্যতার সাথে বর্তমান সমাজে নারীর অবস্থার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করুন। ৪

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]