হযরত মুয়াবিয়া (রা.) এর চরিত্র ও কৃতিত্ব

মুখ্য শব্দ বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র, সভাকবি ও রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা
উমাইয়া বংশের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মুয়াবিয়া (রা.) ৬৮০ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে প্রায় ৭২ বছর বয়সে ইন্তিকাল
করেন। হযরত আলী (রা.) এর সাথে খিলাফতের দ্ব›দ্ব, রাজতন্ত্রের সূচনা, দামেস্কে রাজধানী স্থাপন ইত্যাদি
সমালোচানা মূলক কর্মকাÐের পরও তিনি সা¤্রাজ্যকে একটি সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করেন যা প্রশংসার দাবিদার।
তিনি সামান্য অবস্থা হতে নিজ যোগ্যতা ও কর্মগুণে একটি খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। তিনি তার খিলাফতকালে
মুসলিম সা¤্রাজ্যকে বর্ধিত করেন এবং বহি:শত্রæর হাত থেকে রক্ষণাবেক্ষণ করেন। তিনিই রাষ্ট্রকে একটি সুষ্ঠু প্রশাসনিক
কাঠামোর উপর দাঁড় করান। তিনি ছিলেন উমাইয়া বংশের প্রতিষ্ঠাতা ও একজন শ্রেষ্ঠ আরব নৃপতি।

মানুষ হিসেবে মুয়াবিয়া (রা.)
মুয়াবিয়া (রা.) গৌরবর্ণ, দীর্ঘাকৃতি ও স্থুলকায় ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতেন। তিনি
জাঁকজমকপূর্ণ জীবন যাপন করতেন। দেহরক্ষী দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকতেন। মজলিস আল শূরার প্রয়োজন অনুভব করতেন
না বরং সকল সমস্যা তিনি ব্যক্তিগত ভাবে সমাধা করতেন। তিনি জুমুআর জামাআতে ইমামতি করতেন। তিনি মার্জিত
রুচি ও সংযত চরিত্রের মানুষ ছিলেন।
আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব
হযরত মুয়াবিয়া (রা.) ছিলেন একজন আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের মানুষ। তিনি জনগণের উপর দ্রæত প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম
হন। এজন্য তিনি ব্যাপক বুদ্ধিমত্তা ও কূটনৈতিক জ্ঞানের পরিচয় দেন।

উচ্চাভিলাষী
মুয়াবিয়া (রা.) ছিলেন উচ্চাভিলাষী একজন ব্যক্তি। খিলাফত লাভ ও ক্ষমতা গ্রহণের প্রতি তাঁর উচ্চাভিলাষ কাজ
করেছিল। এই উচ্চাভিলাষের ফলাফল স্বরুপ খলীফা হযরত আলী (রা.) সাথে তাঁর দ্ব›দ্ব বাধে এবং হযরত আলী (রা.)-এর
শাহাদাতের পর তিনি উমাইয়া খিলাফত প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন।

দক্ষ ও কৌশলী
হযরত মুয়াবিয়া (রা.) ছিলেন একজন দক্ষ ও কৌশলী রাজনীতিবিদ। তিনি শঠতা ও ধূর্ততা এবং ন¤্র ব্যবহারের দ্বারা
শত্রæর সন্দেহ দূর করে স্বপক্ষে আনতে পারতেন। কৌশল ও ধৈর্যের সাহায্যে তিনি পরিস্থিতিকে নিজের আয়ত্বে আনতে
পারতেন। শান্তিপূর্ণ উপায় যদি ব্যর্থ হত তাহলে তিনি উক্ত ক্ষেত্রে বল প্রয়োগ করতেন।

অমুসলিমদের প্রতি মনোভাব
হযরত মুয়াবিয়া (রা.) ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে গুণের কদর করতেন। অমুসলিমদের প্রতি তার মনোভাবে ছিল উদার প্রকৃতির।
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজকার্যে তিনি অমুসলিমদের নিয়োগ করতেন। একজন খ্রিস্টান ছিলেন তার প্রধান উপদেষ্টা। তিনি
ইবনে আসল নামক একজন খ্রিস্টান চিকিৎসককে তার দরবারে আমন্ত্রণ জানান। আল-আখতাল নামে তার একজন খ্রিস্টান
সভাকবি ছিল।

শাসক হিসেবে মুয়াবিয়া (রা.):
সুশাসক : মুয়াবিয়া (রা.) দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনীতিবদি, বিচক্ষণ কূটনীতিবদি এবং সুশাসক হিসেবে অনন্য সাধারণ
কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। তিনি তাঁর সা¤্রাজ্যকে একটি সুষ্ঠু প্রশাসনিক কাঠামোর উপর প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর সময়ে
পাঠ-৭.২
ওপেন স্কুল ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ১ম পত্র
ইউনিট সাত পৃষ্ঠা-১৯৭
প্রজারা সুখে শান্তিতে বসবাস করতেন। তিনি অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে কঠোরতা ও দুর্বলের প্রতি সহনীয় আচরণ করতেন।
একজন সুশাসকের প্রয়োজনীয় গুণাবলী তাঁর মধ্যে বিদ্যমান ছিল।
কূটনীতিবিদ
হযরত মুয়াবিয়া (রা.) ছিলেন একজন সফল কূটনীতিবিদ। তিনি ক্ষমতারোহণ, রাষ্ট্র পরিচালনা ও ক্ষমতায় টিকে থাকার
জন্য কূটনীতির আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন।
রাজতন্ত্রের জনক
হযরত মুয়াবিয়া (রা.) ইসলামের মৌলিক আদর্শ হতে বিচ্যুত হয়ে রাজতন্ত্রের সূচনা করেন। তিনি প্রথম বংশানুক্রমিক
রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। আর উমাইয়া খিলাফতের শাসনকাল ছিল ৯০ বছর।
সমরনেতা
ইসলামে সম্প্রসারণে মুয়াবিয়া (রা.) এর ভূমিসা অগ্রগণ্য। তিনি সিরিয়ার শাসনকর্তা থাকা অবস্থায় বিশাল সেনাবাহিনী ও
নৌ-বহর প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি উত্তর আফ্রিকা ও ভূ-মধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপসমূহে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি মজলিস আল শূরার অস্তিত্ব বাতিল করেন এবং মনোনয়নভিত্তিক উত্তরাধিকারী ব্যবস্থার প্রচলন ঘটান। এই কারণে
তাঁকে একটি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা (ঋড়ঁহফবৎ ড়ভ ধ ফুহধংঃু) বলে অভিহিত করা হয়।
সারসংক্ষেপ:
হযরত মুয়াবিয়া (রা.) ছিলেন একজন প্রতিভাবান ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞাসম্পন্ন ব্যক্তি। তিনি ছিলেন একজন শ্রেষ্ঠ নৃপতি
ও সুশাসক। তাঁর রাজত্বকালে একদিকে যেমন অভ্যন্তরীণ শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় থাকে, অন্যদিকে ইসলামী রাষ্ট্র সম্প্রসারিত হয়।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৭.২
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন
১. মুয়াবিয়া (রা.) কত খ্রিস্টাব্দের জন্মগ্রহণ করেন?
ক) ৬৮০ খ্রি: খ) ৫৭০ খ্রি: গ) ৬৬৪ খ্রি: ঘ) ৫৮০ খ্রি:
২. মুয়াবিয়া (রা.) এর ক্ষেত্রে কোনটি সত্য ?
ক) রুঢ় স্বভাবের লোক খ) প্রতিভাবান ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞাসম্পন্ন
গ) সাহসী ও ধার্মিক শাসক ঘ) স্বৈরতান্ত্রিক ছিলেন
৩. মুয়াবিয়া (রা.) ছিলেন একজন -
র) সুশাসক রর) সমরনেতা ররর) সুদক্ষ রাজনীতিবিদ
নিচের কোনটি সঠিক
ক) র, রর খ) র, ররর গ) র, রর, ররর ঘ) ররর
সৃজনশীল প্রশ্ন:
জহির মিয়া বলা চলে জোরপূর্বক ফুলপুর গ্রামে তাঁর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। মানুষকে আকৃষ্ট করার অপূর্ব ক্ষমতা ছিল তার।
তিনি গ্রামের উন্নতি সাধন করেন। তিনি ছিলেন একজন বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর বংশীয় শাসন কায়েম
রাখার জন্য মৃত্যুর পূর্বে তাঁর পুত্র জমিরকে গ্রামের ক্ষমতার ভার দিয়ে যান।
ক) ইসলামে রাজতন্ত্রের সূচনা করেন ? ১
খ) মুয়াবিয়া (রা.) কে রাজতন্ত্রের জনক বলা হয় কেন ? ২
গ) উদ্দীপকে যে খলীফার ঈঙ্গিত রয়েছে তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসমূহ সংক্ষেপে বর্ণনা করুন। ৩
ঘ) মুয়াবিয়া রা. এর কৃতিত্ব মূল্যায়ন করুন। ৪

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]