শূর বংশ: শেরশাহের রাজ্য বিজয় ও শাসন সংস্কার

মূখ্য শব্দ পরগণা, কবুলিয়ত, পাট্টা, রায়তওয়ারী, তঙ্কা, দাম, গ্রাÐ-ট্রাঙ্ক-রোড, ডাক-চৌকি ও হুলিয়া
শূর বংশ
ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে শূর বংশের রাজত্বকাল (১৫৪০-১৫৫৫ খ্রি.) স্বল্প সময়ের হলেও তা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। মুঘল বংশের দ্বিতীয় সম্রাট নাসির উদ্দিন মুহম্মদ হুমায়ুন ছিলেন অপেক্ষাকৃত দুর্বল চিত্তের শাসক। ১৫৩৯
খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত চৌসার যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর হুমায়ুন ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দের ১৭ মে ৩০,০০০ সৈন্য নিয়ে কনৌজের
সন্নিকটে বিলগ্রাম নামক স্থানে শের শাহের মাত্র ১৫,০০০ সৈন্যের সম্মুখীন হন। কনৌজের যুদ্ধে হুমায়ুন শেরশাহের নিকট
অত্যন্ত শোচনীয় ভাবে পরাজিত হন। ফলে জহিরউদ্দিন মুহম্মদ বাবর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ভারতবর্ষে মুঘল বংশের সাময়িক
পতন ঘটে। শেরশাহ ভারতবর্ষে শূর শাসন প্রবর্তন করে পুনরায় আফগান আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন। উল্লেখ্য ১৫৩৯
খ্রিস্টাব্দের চৌসার যুদ্ধে সম্রাট হুমায়ুনকে পরাজিত করে শেরখান ‘শাহ’ (সম্রাট) উপাধি গ্রহণ করে প্রকাশ্যভাবে সিংহাসনে
আরোহণ করেন। এর পর তিনি নিজ নামে খুৎবা পাঠ ও মুদ্রা অঙ্কনের নির্দেশ জারি করেন। বিজয়-অভিযান সম্পর্কে
সংক্ষেপে আলোচনা প্রয়োজন। কালিঞ্জর দুর্গ অধিকার কালে বারুদ্দের গুদামে আকস্মিক বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১৫৪৫
খ্রিস্টাব্দের ২২মে শেরশাহ মৃত্যুবরণ করেন। শেরশাহের আকস্মিক মৃত্যুর পর ১৫৪৫ খ্রিস্টাব্দে তাঁর দ্বিতীয় পুত্র জালাল
খান ইসলাম শাহ’ উপাধি ধারণ পূর্বক দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি ইতিহাসে সাধারণত ‘সলিম শাহ’ নামে
পরিচিত। ইসলাম শাহ ছিলেন সুশিক্ষিত, সাহসী ও সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী শাসক। পিতা শেরশাহের রাজত্বকালে তিনি বেশ
কয়েকটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন।
ইসলাম শাহের রাজত্বকালের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ঘটনা খাক্কারদের ধ্বংসসাধন। কিন্তু অভিজাতদের বিরুদ্ধে কঠোর
নীতি অবলম্বন করার কারণে তাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। ১৫৪৫-১৫৫৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘ নয় বছর শাসন
ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকে ইসলাম শাহ ১৫৫৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। ইসলাম শাহের মৃত্যুর পর তাঁর
নাবালক পুত্র ফিরোজ শাহ মাত্র বার বছর বয়সে সিংহাসনে আরোহণ করেন। কিন্তু ফিরোজ শাহের মামা মুবারিজ খান
তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। অতঃপর মুবারিজ খান ‘মুহম্মদ আদিল শাহ’ উপাধি ধারণ করে দিল্লির শাসন ক্ষমতায়
অধিষ্ঠিত হন। কিন্তু দুর্বল ও অকর্মণ্য আদিল শাহে স্বৈরশাসনে রাজ্যের সর্বত্র অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। প্রাদেশিক
শাসকগণ নিজ নিজ প্রদেশে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এমনি পরিস্থিতিতে শূর পরিবারের ইব্রাহিম খাঁ শূর আদিল শাহকে
পরাস্ত করে আগ্রা ও দিল্লি দখল করেন। এসময় আদিল শাহ অনন্যোপায় হয়ে চুনারে আশ্রয় গ্রহণ করেন। পাঞ্জাবের শাসক
সিকান্দার শাহ ইব্রাহিম খাঁ শূরকে বিতাড়িত করে দিল্লি ও আগ্রা অধিকার করেন। ভারতীয় উপমহাদেশের এই রাজনৈতিক
বিশৃঙ্খলা ও আফগান নেতৃবৃন্দের পারস্পরিক কলহ বিবাদের সুযোগে হুমায়ুন তাঁর হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করার জন্য মনঃস্থ
করেন। তিনি ১৫৫৪ খ্রিস্টাব্দে কাবুল থেকে ভারত অভিযানে রওয়ানা দেন। ১৫৫৫ খ্রিস্টাব্দে শাসক সিকান্দার শাহকে
পরাজিত করে দিল্লির সিংহাসন পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন। ফলে ভারতে শূর বংশের শাসনের অবসান ঘটে। শেরশাহের শাসন সংস্কার
শেরশাহ মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে নিঃসন্দেহে একজন শ্রেষ্ঠ শাসন সংস্কারক। শেরশাহের চরিত্রে সামরিক নিপুণতার সাথে সুষ্ঠু
শাসন দক্ষতার যে অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছিল তার দৃষ্টান্ত অপ্রতুল। শেরশাহের শাসন ব্যবস্থায় ভারতের প্রাচীন ও মধ্যযুগীয়
হিন্দু ও মুসলিম শাসন পদ্ধতির মৌলিক নীতির এক অভূতপূর্ব সংমিশ্রণ দেখা যায়। শেরশাহ মূলত সাম্রাজ্যে
জনকল্যাণমূলক প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলেন।
শেরশাহ
প্রশাসন ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ
শেরশাহ দক্ষ, প্রগতিশীল ও প্রজাকল্যাণমূলক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। সুষ্ঠুভাবে শাসনকার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে
শেরশাহ সাম্রাজ্যকে কয়েকটি সরকারে বিভক্ত করেন। প্রত্যেক সরকারকে কয়েকটি পরগণায় বিভক্ত করেন শেরশাহ।
ঐতিহাসিকদের মতে, শের শাহের সাম্রাজ্যে মোট ১,১৩,০০০ পরগণা ছিল। সর্বাপেক্ষা ক্ষুদ্রতম শাসন ইউনিট ছিল গ্রাম।
শেরশাহ প্রত্যেক পরগণায় একজন করে শিকদার, আমীন, মুনসিফ, খাজাঞ্চী বা কোষাধ্যক্ষ, দুইজন কারকুন-একজন হিন্দু
ও আর একজন ফারসী হিসাব লেখক নিযুক্ত করেন। প্রত্যেক সরকারে শিকদার-ই-শিকদারান ও মুনসিফ-ই-মুনসিফান
নামক দু’জন সেের্বাচ্চ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা পরগণাগুলোর শাসনকার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতেন।
রাজস্ব সংস্কার
শেরশাহ রাজস্ব সংস্কার সাধন করে মৌলিকত্ব ও উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় প্রদান করেন। ভারতীয় উপমহাদেশে শেরশাহ
সর্বপ্রথম সমস্ত আবাদী জমির নির্ভুল জরিপের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। অত:পর জমির উৎপাদন
শক্তির তারতম্য অনুসারে রাজস্ব নির্ধারণ করেন। সাধারণত উৎপন্ন ফসলের এক তৃতীয়াংশ
রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়েছিল। উৎপন্ন শস্যে কিংবা নগদ অর্থে কৃষকরা রাজস্ব প্রদান করতে
পারত। রাজস্ব আদায়ের জন্য শেরশাহ পাটোয়ারী, চৌধুরী, মুকাদ্দাম প্রভৃতি পদস্থ কর্মকর্তা
কর্মচারী নিয়োগ করেন।
শেরশাহ সর্বপ্রথম ‘কবুলিয়ত ও পাট্টা’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। কৃষকরা জমির উপর তাদের
অধিকার, দায়িত্ব ও নির্ধারিত কর প্রদানের প্রতিশ্রæতি প্রদান করে, কবুলিয়ত নামক দলিল
সম্পাদন করে দিত। আর সরকারের পক্ষ থেকে জমির উপর কৃষকের স্বত্ব ও কর স্থির করে
পাট্টা’ প্রদান করা হত। ‘কবুলিয়ত’ ও ‘পাট্টা’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করে শেরশাহ ভারতবর্ষে প্রকৃত
পক্ষে আধুনিক রাজস্ব-ব্যবস্থার গোড়াপত্তন করেন। বলা হয়ে থাকে যে, সম্রাট আকবরের
ভূমি বন্টন ও রাজস্ব নীতি এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলে ‘রায়তওয়ারী’ বন্দোবস্ত’ প্রথা
বহুলাংশে শেরশাহ প্রবর্তিত রাজস্ব ব্যবস্থাকে অনুসরণ করে গড়ে ওঠেছিল।
শুল্ক ও মুদ্রানীতির সংস্কার
শিল্প ও ব্যবসায়-বাণিজ্যের উন্নতি বিধানের জন্য শেরশাহ আন্ত:প্রাদেশিক শুল্ক উঠিয়ে দেন। তিনি অবাঞ্ছিত শুল্ক কর
রহিত করে বিক্রয় কেন্দ্রে অথবা সীমান্তে শুল্ক কর ধার্যের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। শেরশাহের শাসনামলে ভারতে
বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন পরিমাপের মুদ্রা প্রচলিত ছিল। ফলে মুদ্রা ব্যবস্থায় কেন জটিলতা দেখা দেয়। এই সংকট
নিরসনকল্পে শেরশাহ পুরানো এবং মিশ্র ধাতুর প্রচলিত মুদ্রাগুলো বাতিল ঘোষণা করে মুদ্রার আকৃতি, মূল্যমান ও
পরিমাপের বৈষম্য দূরীভূত করে রূপার তৈরি তঙ্কা’ এবং তামার তৈরি ‘দাম’ নামে এক নব মুদ্রার প্রচলন করেন। এছাড়াও
শেরশাহ ব্যবসায়-বাণিজ্যে বিনিময় ব্যবস্থা সহজ করার জন্য আধুলি, সিকি, দু-আনি ও এক-আনি খুচরা মুদ্রার প্রচলন
করেন। শেরশাহ প্রবর্তিত মুদ্রা ধাতুর বিশুদ্ধতায়, সৌন্দর্যে, অক্ষরের স্পষ্টতায় ও মুদ্রামানের উৎকর্ষতায় ভারতীয় মুদ্রার
ইতিহাসে অনন্য স্থান অধিকার করে আছে। ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে শেরশাহ প্রবর্তিত মুদ্রা উপমহাদেশে আদর্শ মুদ্রার স্থান লাভ করেছিল।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন
শেরশাহের শাসনামলে যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছিল। সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে সংযোগ
স্থাপন এবং সর্বত্র যাতায়াতের সুবিধার জন্য শেরশাহ অনেক সুন্দর সুন্দর ও প্রশস্ত সড়ক নির্মাণ করেন। শেরশাহ নির্মিত
সড়কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘গ্রাÐ-ট্রাঙ্ক রোড’। এই সড়কটি বর্তমান বাংলাদেশের সোনারগাঁও থেকে
আগ্রা হয়ে দিল্লি এবং পাঞ্জাব হয়ে সিন্ধু পর্যন্ত প্রায় ১৫০০ ক্রোশ ব্যাপী বিস্তৃত ছিল। এছাড়াও শেরশাহ পথিকদের সুবিধার
জন্য রাস্তার উভয় পার্শ্বে ছায়াপ্রদ বৃক্ষ রোপন এবং দুই ক্রোশ অন্তর এক একটি সরাইখানা নির্মাণ করেন। এতদ্ব্যতীত
শেরশাহ দ্রæত সংবাদ আদান-প্রদানের জন্য ‘ঘোড়ার ডাক’এর প্রচলন কয়েন। যা সাধারণত ‘ডাক-চৌকি’ নামে সুপরিচিত।
সামরিক সংস্কার
শেরশাহের পূর্ববর্তী শাসকগণ সাধারণত সামন্ততান্ত্রিক পদ্ধতিতে সৈন্য সরবরাহ পেতেন। কিন্তু শেরশাহ এই সামন্ততান্ত্রিক
পদ্ধতির মূলোৎপাটন করে আলাউদ্দিন খলজির অনুকরণে স্থায়ী সেনাবাহিনী গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। শেরশাহ বিভিন্ন
জাতিগোষ্ঠির লোকদের সমন্বয়ে এক বিশাল সেনাবাহিনী গড়ে তুলেন এবং স্বয়ং এর সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত হন। আফগানরাই
ছিল সেনাবাহিনীর মেরুদÐ। শেরশাহের সেনাবাহিনীতে পঁচিশ হাজার পদাতিক, দেড়লক্ষ অশ্বারোহী, তিনশত হস্তী বাহিনী
এবং বিপুল সংখ্যক গোলন্দাজ সৈন্য ছিল। সেনাবাহিনীকে তিনি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করেন। শেরশাহের সামরিক নীতির
অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল কেন্দ্রিয় সরকারের সাথে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ও সম্পর্ক স্থাপন। শেরশাহ জায়গীর প্রথার
বিলুপ্তি সাধন করে সৈন্যদেরকে নিয়মিত বেতন প্রদানের ব্যবস্থা করেন। সেনাবাহিনীর দুর্নীতি ও অবৈধ কার্যকলাপ কঠোর
হস্তে দমনের উদ্দেশ্যে শেরশাহ সুলতান আলাউদ্দিন খলজির অনুকরণে ‘দাগ’ বা চিহ্নিত করণ ও হুলিয়া’ অর্থাৎ সৈন্যদের
বিবরণমূলক তালিকা সংরক্ষণ পদ্ধতি চালু করেন।
বিচার ব্যবস্থার সংস্কার
শেরশাহ বিচার ব্যবস্থায় মানবোচিত সংস্কার সাধন করেন। তিনি সাম্রাজ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা প্রবর্তন
করেন। বিচার ব্যবস্থায় হিন্দু-মুসলিম, ধনী-দরিদ্র পার্থক্য দূরীভূত করে আইনের দৃষ্টিতে সকলে সমান এই নীতিতে বিচার
ব্যবস্থা পরিচালিত হত। শেরশাহের শাসনামলে জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই ন্যায়বিচার পেতেন। শেরশাহ এমনকি
তার অপরাধী নিকট আত্মীয়-স্বজনকেও বিচারের আওতায় আনতে কুণ্ঠিত হতেন না। প্রত্যেক পরগণার দেওয়ানী ও
ফৌজদারী বিচারের ভার কাজী ও মীর আদল উপাধিধারী কর্মচারীদের উপর অর্পণ করা হয়েছিল। হিন্দুদের পৈতৃক বিষয়
বা অধিকার সংক্রান্ত বিবাদ তথা দেওয়ানী মামলা তাদের পঞ্চায়েতেই নিষ্পত্তি করা হত। কিন্তু ফৌজদারী মামলার ক্ষেত্রে
তাদের সাধারণ-বিচারালয়ের শরণাপন্ন হতে হতো। শেরশাহের শাসনামলে দÐবিধি ছিল অত্যন্ত কঠোর ও নির্মম। কয়েকটি
পরগণায় উপর একজন করে মুনসিফ-ই-মুনসিফান দেওয়ানী বিচারের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ফৌজদারী বিচারের ভার
অর্পণ করা হয়েছিল প্রধান কাজী বা কাজী উল কুজ্জাত এর উপর। সর্বোপরি শেরশাহই ছিলেন রাজ্যের সর্বোচ্চ বিচারক।
ধর্মীয় নীতি
শেরশাহ ছিলেন নি:সন্দেহে একজন ধর্মভীরু ও ধর্মপরায়ণ আদর্শ মুসলমান। তিনি অন্য ধর্মের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত উদার।
তার শাসনামলে সাম্রাজ্যে বসবাসকারী সকল ধর্মের লোকজন ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করতেন। হিন্দু স¤প্রদায়ের প্রতি
সহিষ্ণুতার নিদর্শনস্বরূপ শেরশাহ বহু হিন্দুকে রাজকীয় উচ্চপদে নিযুক্ত করেন। তাঁর অন্যতম প্রধান সেনাপতি ছিলেন
ব্রহ্মজিৎ গৌড়।
আফগান জাতির শূর-উপদল ভুক্ত শেরশাহ ভারতীয় উপমহাদেশে শূর বংশ প্রতিষ্ঠা করে স্মরণীয় হয়ে আছেন। ১৫৪৫
খ্রিস্টাব্দে শেরশাহের মৃত্যুর পর এই বংশ ১৫৫৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতবর্ষ শাসন করেছিল। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী
শেরশাহ ছিলেন একজন বিচক্ষণ ও দূরদর্শী শাসক। তিনি শাসন ব্যবস্থায় বিবিধ সংস্কার সাধন করে শাসন ব্যবস্থাকে
যুগোপযোগী এবং প্রগতিশীল করে গড়ে তুলেন। শেরশাহের সর্বাপেক্ষা বড় কৃতিত্ব তিনি ভূমি রাজস্বের ক্ষেত্রে
‘কবুলিয়ত ও পাট্টা’ নামক এক অভিনব ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। এছাড়াও সৈন্যবাহিনীর দুর্নীতি দূর করার মানসে
শেরশাহ সুলতান আলাউদ্দিন খলজির দাগ ও হুলিয়া প্রথা পুন:প্রবর্তন করেন।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৩.৩
১। শূর বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন-
ক. শেরশাহ খ. ইসলাম শাহ গ. ফিরোজ শাহ ঘ. মুহম্মদ আদিল শাহ
ওপেন স্কুল ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ২য় পত্র
ইউনিট ৩ পৃষ্ঠা ৭৮
২। ইসলাম শাহ (জালাল খান) ইতিহাসে সাধারণত পরিচিত-
ক. মুবারক শাহ নামে খ. মহিউদ্দিন শাহ নামে গ. সলিম শাহ নামে ঘ. বুঘরা শাহ নামে
৩। শূর বংশের শাসনের অবসান ঘটে-
ক. ১৫৫৩ খ্রিস্টাব্দে খ. ১৫৫৪ খ্রিস্টাব্দে গ. ১৫৫৫ খ্রিস্টাব্দে ঘ. ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে
৪। শেরশাহের শাসন ব্যবস্থায় ক্ষুদ্রতম শাসন ইউনিট ছিল-
ক. সরকার খ. পরগণা গ. গ্রাম ঘ. তালুক
৫। ‘কবুলিয়ত ও পাট্টা’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন-
ক. বাবর খ. হুমায়ুন গ. শেরশাহ ঘ. আকবর
১. শূর বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন? ১
২. কবুলিয়ত ও পাট্টা পদ্ধতি সম্পর্কে লিখুন। ২
৩. উদ্দীপকে উল্লিখিত শাসকের রাজস্ব ব্যবস্থা আপনার পাঠ্যবইয়ের আলোকে তুলে ধরুন। ৩
৪. উক্ত শাসকের জনহিতকর কার্যাবলিতে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপসমূহ আপনার পাঠ্যবইয়ের আলোকে মূল্যায়ন করুন। ৪
গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড ? কবুলিয়ত ও পাট্টা
শূর বংশ
চৌসার যুদ্ধ

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]