মূখ্য শব্দ মা-হুয়ান, কবি হাফিজ ও কোতওয়ালী দরজা
সিকান্দর শাহ (১৩৫৮-১৩৯৩ খ্রি.)
সিংহাসনে আরোহণ
পিতা সুলতান শাসুদ্দিন ইলিয়াস শাহের মৃত্যুর পর তাঁর সুযোগ্য পুত্র সিকান্দর শাহ ১৩৫৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সিংহাসনে
আরোহণ করেন। তিনি পিতার ন্যায় যোগ্য, পরাক্রমশালী, সাহসী ও প্রজাহিতৈষী নরপতি ছিলেন। সিকান্দর শাহ বাংলা
দেশে মুসলিম শাসনের ইতিহাসে সর্বাধিককাল রাজত্ব করেন। সুদীর্ঘ ৩৫ বছরের শাসনকালে তিনি বাংলাদেশে মুসলিম
শাসন সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা সংরক্ষণ করেন।
দিল্লির সুলতান ফিরুজশাহের সাথে সম্পর্ক
সিকান্দর শাহের রাজত্বকালের প্রধান ঘটনা হল দিল্লির সুলতানের হাত থেকে বাংলাকে রক্ষা করা। ইলিয়াস শাহের মৃত্যুর
পর সুলতান ফিরোজ শাহ তুগলক মনে করেছিলেন যে, বাংলায় নতুন সুলতান ক্ষমতায় বসায় তাঁর বাংলা অধিকার সহজ
হবে। এ জন্য সিকান্দর শাহ ক্ষমতাসীন হওয়ার পরই
দিল্লির সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক দ্বিতীয়বারের মত
বাংলায় অভিযান চালনা করেন। তিনি সিকান্দর শাহকে
বশ্যতা স¦ীকারের জন্য চরমপত্র পাঠান। কিন্তু সিকান্দর
শাহ এতে সাড়া না দেওয়ায় ফিরোজ শাহ তুঘলক
১৩৬০ খ্রিস্টাব্দে ৭০ হাজার অশ্বারোহী, ৪৭০টি হাতি,
লক্ষাধিক পদাতিক সৈনিক ও বিশাল এক নৌ-বাহিনী
নিয়ে বাংলা আক্রমণ করেন। সিকান্দর শাহ পিতার ন্যায়
দুঃসাহসী ছিলেন। তিনি ফিরোজ শাহের বশ্যতা অস¦ীকার
করে পিতার ন্যায় একডালা দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করেন।
ফিরোজ শাহ দুর্গটি অবরোধ করেন। উভয়পক্ষের মধ্যে
দীর্ঘদিন খÐ যুদ্ধ হয়। দিল্লির সেনা বাহিনীর অব্যাহত
আক্রমণের মুখেও সিকান্দর শাহের সেনাদলের মনোবল
অটুট ছিল। অবশেষে বর্ষাকাল এসে যাওয়ায় এবং রসদ সংকটে পড়ায় দিল্লি বাহিনী বাংলার বাহিনীর সঙ্গে সন্ধির জন্য
উদগ্রীব হয়ে পড়ে। অবশেষে উভয়পক্ষের মধ্যে সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। ফিরোজশাহ তুঘলক ও সিকান্দর শাহ পরস্পরের
মধ্যে মূল্যবান উপঢৌকনাদি বিনিময় করেন। প্রকৃতপক্ষে ফিরোজ শাহের দ্বিতীয় অভিযান ও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। বাংলা
পূর্বের মত স¦াধীন থেকে যায়। এরপর প্রায় দু’শো বছরের মধ্যে দিল্লির আর কোন সুলতান বাংলা দখলের চেষ্টা করেননি।
শিল্প ও স্থাপত্যের প্রতি অনুরাগ
তিনি একজন শিল্পানুরাগী ও শিল্পস্রষ্টা সুলতান ছিলেন। তাঁর রাজত্বকালে স্থাপত্য শিল্পের যথেষ্ট উন্নতি হয়। সিকান্দর
শাহের উদার নীতির ফলে স্থাপত্য শিল্পে দেশী ও বিদেশী উপাদানের সংমিশ্রণ ঘটে। এ কারণে বাংলাদেশের স্থাপত্য
রীতিতে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হয়। তাঁর রাজত্বকালের স্থাপত্য নিদর্শনের মধ্যে পাÐুয়ার আদিনা মসজিদ দিনাজপুরের
মোল্লা আতার মসজিদ এর নাম উল্লেখযোগ্য। প্রায় দশ বছর (১৩৭৪-৮৪ খ্রি.) ধরে নির্মিত আদিনা মসজিদ দৈর্ঘে ৫০৭.৫
ফুট এবং প্রস্থে ২৮৫.৫ ফুট ছিল। পাথর ও পোড়া মাটির নক্শা এ বৃহৎ মসজিদটির শোভাবৃদ্ধি করে। সর্বোপরি এর
বিশালতা এবং উচ্চমানের কারুকার্যের জন্য এ মসজিদটি মুসলিম স্থাপত্যের ইতিহাসে অতুলনীয়। এছাড়া পীর আঁখি
সিরাজ উদ্দিনের মসজিদ ও সমাধি এবং গৌড়ের কোতোওয়ালী দরওয়াজা তাঁর সময় নির্মিত হয়।
পীর দরবেশদের প্রতি অনুরাগ
পিতার মতই সিকান্দর শাহ একজন নিষ্ঠাবান মুসলিম ছিলেন। তিনি সুফি-দরবেশদেরকে অত্যন্ত ভক্তি ও শ্রদ্ধা করতেন।
তিনি তাদের সম¥ানে মসজিদ ও খানকাহ নির্মাণ করেন। জানা যায় যে, তিনি দিনাজপুর জেলার দেবকোর্টে অবস্থিত মোল্লা
আতার দরগাহে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। শেখ আলাউল হক তাঁর সমসাময়িক ছিলেন এবং পাÐুয়াতে বসবাস
করতেন। তাঁর সমসাময়িক আর একজন বিখ্যাত সুফি শেখ শরফুদ্দিন ইয়াহিয়া মানেরি বিহারের মনের-এ বসবাস
করতেন।
কৃতিত্ব মূল্যায়ন
ইলিয়াস শাহী বংশের দ্বিতীয় শাসক সিকান্দর শাহ একজন সুযোগ্য শাসক ছিলেন। তিনি সুশাসক ও প্রজাবৎসল ছিলেন।
তাঁর শাসনামলে দেশে শান্তি ও সমৃদ্ধি বিরাজমান ছিল। তাঁর রাজত্বকালে কোন রাজ্যবিস্তার না হলেও তিনি তাঁর পিতার
নিকট থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত রাজ্যের সীমানা অক্ষুণœ রাখতে সক্ষম হন। তাঁর সময় শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের
ব্যাপক উৎকর্য সাধিত হয়েছিল। তিনি বিদ্বানুরাগী ছিলেন এবং বিদ্বানের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। ভূমি জরিপ, রাজস¦ নির্ধারণ
এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সুলতান সিকান্দর শাহ বাংলার ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।
করুণ পরিসমাপ্তি
সিকান্দর শাহের শেষ জীবন সুখের হয়নি। গোলাম হোসেন সলিম উল্লেখ করেন যে, সিকান্দর শাহের পুত্র গিয়াসউদ্দিন
আজম বিমাতার চক্রান্তে বিদ্রোহী হন এবং পিতা ও পুত্রের মধ্যে এক যুদ্ধ হয়। ১৩৯৩ খ্রিস্টাব্দে পিতা ও পুত্রের মধ্যকার
সংঘটিত এ যুদ্ধে সিকান্দর শাহ পরাজিত ও নিহত হন। পাÐুয়ার আদিনা মসজিদের সন্নিকটে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
গিয়াস উদ্দিন আজম শাহ (১৩৯৩-১৪১০ খ্রি.)
সিংহাসনোরোহণ
সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ বিমাতার চক্রান্তে একান্ত বাধ্য হয়ে পিতা সিকান্দর শাহের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা
করেন। তিনি রাজধানী পাÐুয়া থেকে পালিয়ে সোনারগাঁও চলে যান এবং একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তোলেন।
এরপর তিনি পিতা সিকান্দর শাহের সুসজ্জিত বাহিনীর মোকাবেলা করার জন্য অগ্রসর হন। সিকান্দর শাহ আজম শাহকে
প্রতিরোধের চেষ্টা করলে গোয়ালপাড়া নামক স্থানে পিতা পুত্রের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘটিত যুদ্ধে সিকান্দর শাহ মৃত্যুবরণ
করেন। পিতা সিকান্দর শাহকে পরাজিত ও নিহত করে গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ ১৩৯৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সিংহাসনে
আরোহণ করেন।
বিদ্রোহ দমন
সিংহাসনে আরোহণ করে আজম শাহ প্রথমেই ষড়যন্ত্রকারী ১৭ জন বৈমাত্রেয় ভাইয়ের চক্ষু উৎপাটন করার নির্দেশ দেন।
ইংরেজ ঐতিহাসিক বুকাননের মতে, আজম শাহ তাঁর ভাইদের হত্যা করেছিলেন। মধ্যযুগীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এমন ঘটনা
মোটেও বিরল ছিল না। এরপর তিনি অত্যন্ত কঠোর হাতে সকল ধরণের প্রাসাদ ষড়যন্ত্র, বিদ্রোহ ও বিরুদ্ধাচরণ দমন করে
তাঁর রাজ্যেকে সকল প্রকারের শত্রæ মুক্ত করেন।
রাজ্য বিস্তার
যুদ্ধ-বিগ্রহ বা রাজ্য বিস্তারে গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের কোন আগ্রহ ছিল না। তিনি রাজ্য বিস্তারের চেয়ে রাজ্যে শান্তি
স্থাপনের পক্ষপাতি ছিলেন। জানা যায় আজম শাহ আসামের কামরূপের কিছু অংশ রাজ্যভুক্ত করেন। কামরূপ ছাড়াও
কামতা ও অহোমরাজ্যে তিনি সমরাভিযান চালনা করেছিলেন বলে জানা যায়, যদিও তিনি সেখানে সফলতা পাননি। তিনি
জৌনপুরের শাসনকর্তা খাজা জাহানের সঙ্গেও বন্ধুত্ব স্থাপন করেছিলেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি সেখানে অনেক উপটোকন
প্রেরণ করেন।
গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের মুদ্রা
চীন সম্রাটের সাথে সম্পর্ক
গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ ক‚টনৈতিক ক্ষেত্রে বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেন এবং তিনি চীনে বিশেষ দূত প্রেরণ করেন। চীন
সম্রাট ইয়াং লু’র সাথে তিনি দূত বিনিময় করেন। বাংলা থেকে ১৪০৫, ১৪০৮ ও ১৪০৯ খ্রিস্টাব্দে চীন সম্রাটের দরবারে
প্রতিনিধি দল প্রেরণ করা হয়, প্রত্যুত্তরে চীন সম্রাটও ১৪১১ খ্রিস্টাব্দে প্রখ্যাত চৈনিক দোভাষী মাহুয়ান-এর নেতৃত্বে একটি
চীনা প্রতিনিধি দল বাংলায় প্রেরণ করেন। মাহুয়ান তাঁর বর্ণনায় বাংলার আর্থ-সামাজিক অবস্থা স¤পর্কে যেসব বর্ণনা
দিয়েছেন তা বাংলার ইতিহাসের এক নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে বিবেচিত।
পারস্যের কবি হাফিজের সাথে সম্পর্ক
সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ জ্ঞান-বিজ্ঞানের একজন উদার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি নিজেও কাব্যচর্চা করতেন এবং
ফারসি কবিতা রচনায় সিদ্ধহস্ত ছিলেন। রিয়াজ-উস-সালাতিনের বর্ণনায় জানা যায় যে,পারস্যের প্রখ্যাত কবি হাফিজের
সাথে তাঁর পত্রালাপ হত। তিনি তাঁকে বাংলায় আসার আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন। রিয়াজের একটি বর্ণনায় বলা হয়েছে যে,
একদা আজম শাহ এমন গুরুতর অসুস্থ হন যে তাঁর বাঁচার কোন সম্ভাবনা ছিল না। এজন্য তিনি তাঁর হারেমের প্রিয়
তিনজন মহিলা সরবা, গুল ও লালা কে তাঁর মৃত্যুর পর মৃতদেহের গোসলের দায়িত্ব দেন। সৌভাগ্যক্রমে সুলতান সুস্থ হয়ে
উঠলে হারেমের অন্য মহিলারা তাদেরকে ঈর্ষা করে গাস্সালিন বা শবরজকিনী বলে বিদ্রæপ করত। তারা সুলতানের কাছে
অভিযোগ করলে সুলতান তাঁদের প্রশংসা করে কবিতার একটি পংক্তি রচনা করেন। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও দ্বিতীয়
পংক্তিটি রচনা করতে না পেরে তিনি কবি হাফিজকে এটি রচনার জন্য অনুরোধ জানান। কবি হাফিজ দ্বিতীয় পংক্তিটি রচনা
করে পাঠান। এ পত্রে একটি কবিতায় গিয়াসউদ্দিনের প্রশংসা করে কবি সুলতানকে ভারতবর্ষের তোতাপাখি বলে উল্লেখ
করেছেন।
শিক্ষা-সংস্কৃতির বিকাশ
মধ্যযুগীয় বাংলার ইতিহাসে যে সকল শাসক শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে
এবং বাংলা সাহিত্যের উৎকর্ষ সাধনে উদার পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন তাঁদের
মধ্যে সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ অন্যতম। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতা লাভ
করে শাহ মুহাম¥দ সগীর ইউসুফ জুলেখা কাব্য রচনা করেন। অনেক
ঐতিহাসিক বলেন যে, তিনি বাংলা ভাষায় রামায়ণের রচিয়তা কৃত্তিবাসেরও
পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। আজম শাহের শাসনামলে পাÐুয়া ইসলামি শিক্ষা ও
সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল বলে জানা যায়।
পীর দরবেশদের প্রতি অনুরাগ
ধর্মভীরু সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ সুফি-দরবেশ, পীর-আউলিয়াদের
একনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। সমসাময়িক বিখ্যাত সুফিদের মধ্যে ছিলেন শায়খ আলাউল হক এবং তাঁর পুত্র নূর কুতুব-উলআলম। বিহারের সুফি মুজাফ্ফর শামস বলখীকেও তিনি অনেক শ্রদ্ধা করতেন। আজম শাহ বাংলায় অগণিত মসজিদ,
মাদ্রাসা, খানক্াহ, এতিমখানা ইত্যাদি নির্মাণ করেন। তিনি মক্কা ও মদিনায় মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণের জন্য অর্থ ব্যয়
করেন এবং দুই শহরের অধিবাসীদের মধ্যে বিলি করার জন্য বহু অর্থ প্রেরণ করেন। তাঁর রাজ্যে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা
বিরাজমান ছিল। তিনি হিন্দুদেরকে যোগ্যতানুযায়ী রাজকার্যে নিয়োগদান করতেন।
ন্যায় বিচারক
ন্যায়বান সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ তাঁর রাজ্যে প্রজাসাধারণের জন্য সুবিচার নিশ্চিত করেন। তাঁর ন্যায় বিচারের
কাহিনী সর্বজন বিদিত। একবার এক বিধবা নারীর পুত্রকে হত্যার অভিযোগে কাজী সুলতানকে আদালতে তলব
করেছিলেন। সুলতান শুধু আদালতে হাজির-ই হননি, কাজীর দেওয়া রায় মেনে নিয়ে উক্ত নারীকে ক্ষতিপূরণও
দিয়েছিলেন।
আজম শাহের পরবর্তী উত্তরাধিকারী
দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর সগৌরবে রাজত্ব শেষে ১৪০৯ খ্রিস্টাব্দে আজম শাহ রাজা গণেশের চক্রান্তে নিহত হন। আজম শাহের
মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র সাইফউদ্দিন হামযা শাহ সিংহাসনে বসেন। তিনি মাত্র দু’বছর রাজত্ব করেন। রাজা গণেশের চক্রান্তে
সুলতানের ক্রীতদাস শিহাবউদ্দিন তাঁকে হত্যা করে নিজেই সিংহাসনে আরোহণ করেন। বায়েজিদ শাহ উপাধিধারী এই
শাসক সম্ভবত: গণেশের চক্রান্তে নিহত হন। তাঁর মৃত্যুর পর বায়েজিদের পুত্র আলাউদ্দিন ফিরোজশাহ সুলতান হন।
পরবর্তীতে রাজা গণেশ তাকে অপসারণ করে নিজেই সিংহাসনে বসেন।
সারসংক্ষেপ :
ইলিয়াস শাহী শাসকদের মধ্যে সিকন্দার শাহ সুদীর্ঘ সময় ধরে বাংলার সুলতান ছিলেন। তাঁর রাজত্বকালে বাংলায় সুখ-শান্তি ও
সমৃদ্ধি বিরাজমান ছিল। তিনি সুকৌশলে ফিরোজ শাহের আক্রমণ প্রতিহত করেন। তিনি সাহিত্য, শিল্পকলা, স্থাপত্য প্রভৃতি
সুকুমার শিল্পের উদার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ এক সংঘর্ষে পিতা সিকান্দর শাহকে হত্যা করে বাংলার
সিংহাসন দখল করেন। তিনি ভাইদের প্রাথমিক বিদ্রোহ দমন করে রাজ্যের ভিত্তি সুদৃঢ় করেন। রাজ্য বিস্তারের ক্ষেত্রে তিনি কোন
খ্যাতি লাভ করতে না পারলেও দেশে শিক্ষা বিস্তার, শিল্প-সংস্কৃতির উৎকর্ষ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হন। তিনি
পারস্যের বিখ্যাত কবি হাফিজের সাথে পত্রালাপ এবং চীন সম্রাট ইয়াং লুর সাথে দূত বিনিময় করেন। রাজ্যে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায়
তাঁর সুনাম ছিল কিংবদন্তী তুল্য। বলা হয় যে, বাংলার স¦াধীন সুলতানদের মধ্যে তাঁর মত এত আকর্ষণীয় চরিত্রের লোক সম্ভবত
দ্বিতীয় কেউ নেই।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৫.৩
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন।
১। আদিনা মসজিদ অবস্থিত কোথায়?
ক) পাÐুয়ায় খ) গৌড়ে গ) নবাবগঞ্জে ঘ) মুর্শিদাবাদে
২। পিতা সিকান্দর শাহের সাথে পুত্র গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের সংঘর্ষ হয়?
ক) সোনারগাঁও-এ খ) গৌড়ে গ) গোয়ালপাড়ায় ঘ) পাÐুয়ায়
৩। শাহ মুহাম¥দ সগীরের রচনা?
ক) পদ্মবতী খ) ইউসুফ জোলেখা গ) রসুল বিজয় ঘ) লাইলি-মজনু
৪। গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ পারস্যের কোন কবির সাথে পত্রালাপ করেন?
ক) ওমর খৈয়াম খ) হাফিজ গ) রশিদউদ্দিন ঘ) জামি
সৃজনশীল প্রশ্ন:
বাগদাদ কেন্দ্রিক আব্বাসীয় খিলাফতের একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন খলিফা হারুন-অর-রশিদ। ক‚টনৈতিক ক্ষেত্রে
বিশেষ সাফল্যের কারণে বিভিন্ন দেশের শাসকগণের সাথে তার যোগাযোগ হয়েছিল। এমনকি ফ্রান্সের শাসক শার্লিমেনের
সাথেও তার পত্র যোগাযোগ হয়। তাঁর সময় শিক্ষা ও সংস্কৃতির শ্রেষ্ঠ কেন্দ্র হয়েছিল বাগদাদ। বাংলার ইতিহাসেও একজন
প্রথিতযশা বিদ্যানুরাগী শাসক পার্শ্ববর্তী দেশের শাসকের সাথে পত্র যোগাযোগ করে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাঁর সময় ও
পাÐুয়া শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়।
ক. ইলিয়াস শাহী বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে? ১
খ. সিকান্দর শাহের সময় শিক্ষা-সংস্কৃতির রূপ কেমন ছিল? ২
গ. উদ্দীপকের শাসকদের বৈদেশিক সম্পর্কের তুলনামূলক স্বরূপ তুলে ধরুন। ৩
ঘ. ইঙ্গিতকৃত বাংলার শাসকের শাসনামলের শিক্ষা-সংস্কৃতির চিত্র অংকন করুন। ৪
FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র