নবাব হিসেবে আলিবর্দী খানের বাংলা-বিহার-ঊড়িষ্যার সিংহাসন লাভের বিবরণ দিতে পারবে

মূখ্য শব্দ মারাঠা, গিরিয়ার যুদ্ধ, বর্গী ও ভাস্কর পÐিত
ভ‚মিকা: ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে গিরিয়ার যুদ্ধে বাংলার দুর্বল নবাব সরফরাজকে পরাজিত ও নিহত করে বাংলার
সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন আলীবর্দী খান। আলীবর্দীর রাজত্বকাল ছিল বাংলার ইতিহাসের অন্যতম
সমৃদ্ধ সময়। তাঁর অসাধারণ ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি নানামুখী অর্জন এই সময়কালকে ইতিহাসে স্মরণীয় করে রেখেছে।
সাহসী নেতৃত্ব ও সুযোগ্য শাসনের মাধ্যমে তিনি বাংলাকে মারাঠাদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পেরেছিলেন। যোগ্যতা
ও দক্ষতাগুণে তিনি একেবারে সহায় সম্বলহীন অবস্থা থেকে বাংলা, বিহার ও ঊড়িষ্যার মসনদে আসীন হয়েছিলেন তিনি।
বিদেশী আক্রমণ থেকে শুরু করে স্থানীয় নানা অরাজকতার সঙ্গে নিরন্তর লড়াই করতে হয়েছিল তাঁকে। তার পরেও প্রায়
১৬ বছর নবাবি অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। ১৭৪২ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় প্রথম মারাঠা আক্রমণ শুরু হয়। মারাঠা
নায়ক ও মারাঠাদের অন্যতম সেনাপতি রঘুজী ভোঁশলে তার প্রধান মন্ত্রী ভাস্কর পÐিতকে বাংলা অভিযানে পাঠান। তার
সাথে ৪০০০ অশ্বারোহী সৈন্য ছিল। ঊড়িষ্যার সীমান্তবর্তী ঝাড়খÐের মধ্য দিয়ে ভাস্কর পÐিত তার হিং¯্র বর্গী বাহিনী নিয়ে
বাংলায় প্রবেশ করে। তারা বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের নানা স্থানে লুঠতরাজ শুরু করে। তাদের প্রতিরোধে আলীবর্দী খান
হুগলি থেকে এক বিরাট বাহিনী নিয়ে অগ্রসর হন। আলীবর্দী খানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর উপযুক্ত তৎপরতায় ভাস্কর
পÐিত যুদ্ধে পেরে ওঠেননি। পরাজিত ভাস্কর পÐিত ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে স্বদেশে ফিরে যেতে রাজী হন। তবে এর
পরে বর্গী বাহিনী নবারের কাছে ১ কোটি টাকা দাবী করে। পরিস্থিতি ভয়াবহ দিকে মোড় নেয় দ্বিতীয় মুর্শিদ কুলি খানের
সেনাপতি মীর হাবীব ভাস্কর পÐিতের সাথে যোগদান করলে। এতে তাদের শক্তি বৃদ্ধির পর তারা বেপরোয়াভাবে
মেদিনীপুর, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ সহ নানা স্থানে লুঠতরাজ শুরু করে।
আলীবর্দী খান কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেও তাদের দমনে ব্যর্থ হন। অনন্যোপায় হয়ে নবাব শঠতার আশ্রয় নিয়েছিলেন।
তিনি ভাস্কর পÐিতের ২২ জন বিশ্বস্ত অনুচরসহ তাকে হত্যা করেন। এর পরেও মারাঠা আক্রমণ থেকে বাংলা মুক্তি পায়নি। অবশেষে বাধ্য হয়ে নবাব তাদের সাথে সন্ধি করতে বাধ্য হন। এরপর চুক্তির শর্ত হিসেবে ঠিক করা হয়Ñ
১. মীর হাবীব আলীবর্দী খানের অধীনের ঊড়িষ্যার নায়েব নাযিম থাকবেন।
২. এ প্রদেশের উদ্বৃত্ত রাজস্ব মারাঠা সৈন্যদের ব্যয়ভার বহন বাবদ রঘুজী ভোঁশলে পাবেন।
৩. চৌথ বাবদ বাংলার রাজস্ব থেকে ১২ লক্ষ টাকা রঘুজীকে দিতে হবে।
৪. মারাঠা সৈন্যরা সুবর্ণরেখা নদী পার হয়ে বাংলায় প্রবেশ করতে পারবে না।
এ-চুক্তির পর মারাঠারা আর বাংলায় হানা দেয় নি। বাংলায় বার বার মারাঠা আক্রমণের ফলে বাংলার রাজনৈতিক,
সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবন বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছিল। এই চুক্তি এক অর্থে বাংলার মানুষকে রক্ষা করে। এরপর ১৭৪৮
সালের দিকে বিদ্রোহী আফগানরা নবাবের বড় ভাই হাজী আহমদ ও তাঁর পুত্র জৈনুদ্দিনকে হত্যা করে। তারা তাঁর স্ত্রী
আমেনা বেগম ও তার সন্তানদের বন্দী করে। এ মর্মান্তিক সংবাদ পেয়ে নবাব বিদ্রোহী আফগান শক্তিকে ধ্বংস করে বিহার
পুনরুদ্ধার করেন। পাশাপাশি আমেনা বেগম ও তাঁর সন্তানদেরও মুক্ত করেন তিনি। এ ঘটনার পর তিনি তার দৌহিত্র সিরাজউদ্দৌলাকে বিহারের নায়েব নাজিম নিযুক্ত করেন।
উড়িষ্যার বিদ্রোহ দমনের পরও রাজ্যজুড়ে শান্তি, নিরাপত্তা ও শৃংখলা প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি আলীবর্দী খান। এর প্রধান
কারণ হিসেবে মনে করা হয় মারাঠা আক্রমণকে। এ সময় শিবাজীর নেতৃত্বে মারাঠা শক্তির উত্থান এই উপমহাদেশের
ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা। জাতীয়তা ও হিন্দুধর্মীয় চেতনায় সংঘবদ্ধ হয় মারাঠারা। জাতি হিসেবে সাহসী, কঠোর
পরিশ্রমী, ধৈর্যশীল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল তারা। মারাঠারা দীর্ঘ ১০ বছর (১৭৪১ খ্রিঃ - ১৭৫১ খ্রিঃ) বারবার
বাংলায় আক্রমণ চালিয়ে আলীবর্দী খানকে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল। মারাঠাদের অত্যাচার, উৎপীড়ন, নারী নির্যাতন, শিশু
অপহরণ ও হিং¯্রতার ফলে গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যায়। বাংলায় দস্যু বৃত্তিতে লিপ্ত এ মারাঠীরা বর্গী নামে পরিচিত
হয়। তাদের আক্রমণে নানা স্থানে শহর-বাজার জনমানবহীন হয়ে পড়ে। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে পড়ে। অনেক এলাকা
থেকে কৃষকরা প্রাণভয়ে পালিয়ে যায়। কৃষি জমি অনাবাদী পড়ে থাকায় বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে কৃষিকাজ। আলীবর্দী
খান দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির প্রয়োজনে আলীবর্দী খান ইউরোপীয় বণিকদেরকে বাংলায় ব্যবসায়-বাণিজ্য করার অনুমতি
প্রদান করেছিলেন। প্রথম দিকে তিনি তাদের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং সতর্ক দৃষ্টি রাখতে সক্ষম হলেও পরে চরমভাবে
ব্যর্থ হন। ফফে এক পর্যায়ে স্থানীয় বণিকদের স্বার্থ রক্ষা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত সচেতন ইংরেজরা নানা স্থানে
শক্তিশালী বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে। সেখানে তারা বাণিজ্যের পাশাপাশি নানামুখী সামরিক স্থাপনা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়।
চরিত্র ও কৃতিত্ব
নবাব সুজাউদ্দিন ১৭৩৩ সালের দিকে আলীবর্দী খানকে বিহারের সহকারী সুবাদার পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তবে এই
পদ প্রাপ্তির পর থেকেই উচ্চাভিলাষী হয়ে উঠেতে দেখা যায় তাকে। সুজাউদ্দিনের মৃত্যুর পর তার অযোগ্য ছেলে সরফরাজ
খান বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। অযোগ্যতা, অক্ষমতার পাশাপাশি নানা কারণে তাঁর সাথে আলীবর্দীর সম্পর্কের
অবনতি ঘটেছিল। বিশেষ করে নবাবের দুর্বল চরিত্র ও তাঁর গৃহীত নানা সিদ্ধান্ত এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। অবশেষে
১৭৪০ সালে গিরিয়ার রণক্ষেত্রে নবাব সরফরাজ খান পরাজিত ও নিহত হন। তার পরাজয়ের পরে বাংলার মসনদে বসেন
আলীবর্দী খান। পাশাপাশি মুঘল সম্রাট মুহাম্মদ শাহের থেকে বাংলা, বিহার ও ঊড়িষ্যার মসনদ লাভ করেছিলেন তিনি।
অনেক অর্থবিত্ত খরচ করে তিনি এই অঞ্চল স্বাধীনভাবে শাসন করতে থাকেন।
আলীবর্দী খান প্রায় ষাট বছর বয়সে ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। কর্মক্ষমতা ও নৈপুণ্য নিয়ে তিনি
শাসনে মনোনিবেশ করেন। তিনি তাঁর ভাতিজা ও জামাতা নওয়াজিশ মুহাম্মদ খানকে বাংলার সুবার দিওয়ান ও
জাহাঙ্গীরনগরের নায়েব নাজিম নিযুক্ত করেছিলেন। হোসেন কুলি খান নওয়াজিসের নায়েব ছিলেন। নবাব তাঁর জামাতা
জৈনুদ্দিন খানকে বিহারের নায়েব নিযুক্ত করেন। জয়েন উদ্দিন খান ছিলেন সিরাজউদ্দৌলার পিতা। তার বৈমাত্রেয় বোন
শাহ খানমের স্বামী মুহাম্মদ জাফর খান পুরাতন সৈন্যদলের বখশী ছিলেন। এর বাইরে নুরুল্লাহ বেগ খানকে নতুন
সৈন্যদলের বখশী পদে নিয়োগ করা হয়। তার প্রশাসনে আলীবর্দী চিনরায়কে খালসা বিভাগের দিওয়ান এবং জানকী
রামকে নিজের পরিবারের দিওয়ান নিযুক্ত করতে দেখা যায়। গোলাম হোসেন খানকে হাজিব পদ দেয়া হয়। নবাব
আলীবর্দী তাঁর জামাতা সৈয়দ আহমদ খানকে রংপুরের ফৌজদার নিযুক্ত করেন। পাশাপাশি আতাউল্লাহ খানকে রাজমহল
ও ভাগলপুরের ফৌজদারের দায়িত্ব দেয়া হয়। অন্যদিকে সৈন্যবাহিনী, নৌবহর, কামান-বারুদ, খাজাঞ্চিখানা থেকে শুরু
করে অস্ত্রাগারের মত গুরুত্বপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব বর্তায় নানা যোগ্য ব্যক্তির উপর। নবাব সুজাউদ্দিনের জামাতা রুস্তম
জঙ্গ ছিলেন ঊড়িষ্যার সহকারী শাসনকর্তা। তিনি আলীবর্দী খানের কর্তৃত্ব অস্বীকার করেন। তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করে
বাংলা আক্রমণ করতে উদ্যত হলে সংবাদ পেয়ে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে অগ্রসর হন। ১৭৪১ খ্রিস্টাব্দে বালেশ্বরের নিকট
ফুলয়ারী নামক স্থানে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষে রুস্তম পরাস্ত হয়ে দাক্ষিণাত্যে পালিয়ে যান। আলীবর্দী বিদ্রোহ দমন করে
ঊড়িষ্যায় তার আধিপত্য নিশ্চিত করেন। এদের তৎপরতা তাঁর প্রতিপত্তি বিস্তারের পথে অন্তরায় হয়েছিল।
সারসংক্ষেপ:
আলীবর্দী খান শিক্ষিত ও মার্জিত রুচির নবাব ছিলেন। তিনি জ্ঞানী গুনীদের কদর করতেন। তাঁর সময় বাংলায় ফার্সি
সাহিত্য ও পারসিক রীতিনীতির অনুপ্রবেশ ঘটে। তিনি মারাঠা আক্রমণ প্রতিহত করতে পারলেও শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয়দের বাণিজ্য বিস্তারের অনুমতি দিয়ে সর্বনাশ ডেকে এনেছিলেন বাংলার জন্য। তিনি দেশের কৃষি, শিল্প ও
বাণিজ্যের উন্নয়নেও কার্যকর ভূমিকা রাখেন। ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১০ জুলাই তাঁর ৮০ বছর বিস্তৃত জীবনের অবসান ঘটে।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৭.৪
বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
সঠিক উত্তরের পাশে টিক (√) চিহ্ন দিন।
১. আলীবর্দী খানের অধীনে উড়িষ্যার নায়েবে নাজিম ছিলেন-
ক) মুর্শিদকুলি খান খ) সুজাউদ্দিন খান গ) সরফরাজ খান ঘ) মীর হাবিব
২. আলীবর্দী খান সরফরাজ খানকে পরাজিত করেন-
ক) বকসারের যুদ্ধে খ) মহিশূরের যুদ্ধে গ) গিরিয়ার যুদ্ধে ঘ) পলাশির যুদ্ধে
৩. আলীবর্দী খান সিংহাসনে আরোহণ করেন-
ক) ১৭৩৯ খ্রিস্টাব্দে খ) ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে গ) ১৭৪১ খ্রিস্টাব্দে ঘ) ১৭৪২ খ্রিস্টাব্দে
৪. বাংলায় মারাঠা অভিযানের সেনাপতি ছিলেন-
ক) শিবাজী খ) রঘজী ভোঁসলে গ) ভাস্কর পÐিত ঘ) বালাজী রাও
সৃজনশীল প্রশ্ন:
বিকেলে কলেজ থেকে বাসায় ফিরে টিভি সেটের সামনে বসেছে আলী। উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট জনৈক ব্যক্তিকে চরম
শাস্তি দিয়েছেন। তাকে কামানের মুখে বসিয়ে গুলি করে উড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এই সংবাদে পুরো বিশ্ব হতবাক। পাশাপাশি
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে নানাবিধ হুমকির কথাও শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ মত প্রকাশ করছেন এই সিদ্ধান্তও হঠকারী শাস্তি
বিধান দেশটির জন্য সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। আলী ভাবতে থাকে এভাবেই সরফরাজ খানের কিছু ভুল সিদ্ধান্ত ও
হঠকারিতা শেষ পর্যন্ত আলীবর্দী খানকে বাংলার সিংহাসনে আসীন করেছিল।
উদ্দীপকটি পড়ে নিচের প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিনÑ
১. আলীবর্দী খান কে ছিলেন? ১
২. আলবর্দী খানের প্রাথমিক জীবন কেমন ছিল? ২
৩. পরিচয়সহ তাঁর কর্মময় জীবনের বিবরণ দিন। ৩
৪. আলীবর্দীর রাজত্ব কালে বাংলায় মারাঠা আক্রমণের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিন। ৪

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]