ব্রিটিশ আমলে বাংলার আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা

মুখ্য শব্দ কোম্পানির দেওয়ানী লাভ, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত, সমাজ সংস্কার আন্দোলন ও নীলচাষ
প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত উন্নত। এ অঞ্চলের গ্রামগুলো
ছিল স্বয়ং সম্পূর্ণ অর্থাৎ মানুষের জীবনযাপনের জন্য যা কিছু প্রয়োজন তার সবকিছুই তখন এ সব
গ্রামগুলোতে পাওয়া যেত। মানুষের ছিল গোলা ভরা ধান এবং পুকুর ভরা মাছ। কুটির শিল্পের অবস্থাও ছিল সমৃদ্ধ। বাংলার
তাঁতিদের হাতে বোনা কাপড় ইউরোপের কাপড়ের চেয়েও উন্নত ছিল। বাংলার বস্ত্রশিল্পকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করেছে
এদেশীয় মসলিন। বাংলার কৃষিপণ্য এবং উর্বর জমির আকর্ষণে অনেকেই এদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে এসেছে। ব্রিটিশ
ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি এদের অন্যতম। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এদেশে আগত অন্যান্য ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে
পরাজিত করে এবং স্থানীয় শাসকদের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এদেশে ব্রিটিশ শাসনের সূচনা করে। বাংলায়
ব্রিটিশ শাসনের ফলে এখানে নানাধরণের ইতিবাচক ও নেতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত। তবে ইতিবাচক পরিবর্তনের
চেয়ে নেতিবাচক পরিবর্তন বেশি হওয়ায় কোম্পানি ও ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শুরু হয়।
ব্রিটিশ আমলে বাংলার আর্থ- সামাজিক অবস্থা
প্রাচীন ও মধ্যযুগে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল আর এই সমৃদ্ধির মূলে ছিল বাংলার কৃষি ব্যবস্থা।
নদীমাতৃক বাংলার ভূমি চিরদিনই প্রকৃতির অকৃপণ আশীর্বাদে পরিপুষ্ট। এখানকার কৃষিভূমি অস্বাভাবিক উর্বর। প্রাক-ব্রিটিশ
আমলে বাংলায় উৎপন্ন ফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ধান, গম তুলা ইক্ষু , পাট, আদা, জোয়ার, তেল, শিম সরিষা ও
ডাল। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে পান, সুপারি ও নারকেল উৎপন্ন হত। বাংলার উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিদেশে রপ্তানী করে প্রচুর
অর্থ আয় করা হত। প্রাক-ব্রিটিশ আমলের কৃষি সাফল্যের উপর নির্ভর করে বাংলায় বস্ত্রশিল্প, চিনি শিল্প এবং নৌকা নির্মাণ
শিল্প বিকাশিত হতে থাকে। কিন্তু ব্রিটিশ আমলে কোম্পানির সিদ্ধান্তে বাংলার ঐতিহ্যবাহী কৃষিপণ্য (খাদ্য শস্য) বাদ দিয়ে
শুরু হয় নীলচাষ। ফলে বাংলার কৃষি নির্ভর অর্থনীতি ধ্বংস হতে শুরু করে এবং বাংলায় এক পর্যায়ে চরম খাদ্যাভাব দেখা দেয়।
বাংলাদেশে নীলচাষ শুরু হয় আঠারো শতকের সত্তুরের দশকে। নীলচাষের জন্য নীলকরগণ কৃষকের সর্বোৎকৃষ্ট জমি বেছে
নিত। কৃষকের নীলচাষের জন্য অগ্রিম অর্থ গ্রহণে (দাদন) বাধ্য করত। বাংলাদেশে নীল ব্যবসা ছিল একচেটিয়া ইংরেজ
বণিকদের নিয়ন্ত্রণে। প্রথম দিকে নীলকরেরা চাষিদের বিনামূল্যে বীজ সরবরাহ করলেও পরের দিকে তাও বন্ধ করে দেয়।
ফলে ক্রমাগত নীলচাষ চাষিদের জন্য অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তারা নীলচাষে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। এমতাবস্থায় নীলকর
সাহেবরা বাংলার গ্রামাঞ্চলে শুধু ব্যবসায়ী রূপে নয় দোর্দÐ প্রতাপশালী এক অভিনব অত্যাচারী জমিদার রূপেও আত্মপ্রকাশ
করে। তারা এতটাই নিষ্ঠুর আর বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল যে অবাধ্য নীলচাষিদের হত্যা করতেও দ্বিধা করেনি। এই বিবরণ
থেকে ব্রিটিশ আমলে বাংলার আর্থ-সামাজিক অবস্থার করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে। ব্রিটিশ শাসনের ফলে দেশীয় শিল্প বাণিজ্য,
কৃষি প্রভৃতি চরম বিপর্যয়ের মুখে এসে দাড়ায়। ইংরেজরা ভারতকে শোষণ করত এবং সব কিছু লুন্ঠন করে নিয়ে যেত
নিজ দেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদকে সুদৃঢ় করার জন্যে। বাংলার লুন্ঠিত সম্পদই গ্রেট ব্রিটেনে শিল্প বিপ্লবের পথ সুগম
করেছিল। কিন্তু ইংরেজরা নিজেদের দেশে শিল্পায়নের কাজে বিশেষ মনযোগী হলেও ভারতে বিপরীত নীতি অনুসরণ
করত। ফলে কৃষির উপর চাপ বাড়তে থাকল এবং বেকারত্ব সমাজে নতুন সমস্যা সৃষ্টি করল। দাদাভাই নওরোজী
ভারতীয়দের চরম দারিদ্রের কারণ হিসেবে ইংরেজদের চরম বল্গাহীন অথনৈতিক লুণ্ঠন নীতিকে দায়ী করেন।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বাংলার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। ১৭৯৩ সালে লর্ড কর্ণওয়ালিস কর্তৃক
প্রবর্তিত এই ব্যবস্থায় জমির উপর জমিদারের স্থায়ী মালিকানা স্বীকৃত হওয়ায় তারা উৎসাহিত হয়ে পতিত জমি চাষের
ব্যবস্থা করেন। ফলে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত হয়। একই সাথে তারা নিজনিজ মালিকানাধীন জমিতে শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসালয় ও উপাসনালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজ উন্নয়নে অংশগ্রহণ করেন। ফলে ক্রমান্বয়ে উন্নত হতে থাকে
গ্রামীণ সমাজ। কিন্তু অপরদিকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে জমিতে প্রজাদের পুরানো স্বত্ব সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়। ফলে
জমিদারের দয়ারও পরেই প্রজাদের জীবন নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এবং সৃষ্টি হয় নতুন সামাজিক সংকট। এছাড়া জমিদারের
নায়েব-গোমস্তারা প্রজাদের উপর অমানবিক অত্যাচার করতে থাকে, এতেকরে জমির উৎপাদন কমতে শুরু করে এবং শুরু
হয় অর্থনৈতিক সংকট। উপমহাদেশে জমি ছিল অভিজাত্যের প্রতীক। ফলে অনেক সাধারণ মানুষ তার অর্জিত আয় শিল্প ও
ব্যবসা বাণিজ্যে বিনিয়োগ না করে জমিদারি কেনায় বিনিয়োগ করে। সে কারণে বাংলায় অর্থনৈতিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
ব্রিটিশ আমলে বাংলার সামাজিক অবস্থা
ব্রিটিশ আমলে বাংলার সামাজিক অবস্থা প্রাক- ব্রিটিশ আমলের ন্যয় গতিশীল ছিল না। এ সময় বাংলায় হিন্দু ও মুসলমান
এ দুটো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রভাব বিদ্যমান ছিল। মূলত এই দুটি ধর্মকে কেন্দ্র করেই ব্রিটিশ আমলে বাংলার সামাজিক
রীতিনীতি গড়ে উঠেছিল। এর সাথে যুক্ত হয়েছিল ব্রিটিশ প্রভাব। প্রাক-ব্রিটিশ আমলে অর্থাৎ বাংলায় মুসলমান শাসনকালে
রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তা এবং সমাজ জীবনে সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী ছিলেন সুলতান। এছাড়া সৈয়দ, উলেমা প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ
সমাজে যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিলেন। ব্রিটিশ আমলে বাংলার সমাজ কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। বাংলার নবাব
তৎকালীন সময়ে সমাজের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি হলেও তিনি ছিলেন ক্ষমতাহীন। মূলত ব্রিটিশ প্রতিনিধি এবং কোম্পানির
উর্ধতন কর্মকর্তারা ছিলেন সমাজের উচ্চ স্থানীয়, এছাড়া জমিদার এবং তাদের নায়েব- গোমস্তারা সমাজে বিশেষ মর্যাদা
লাভ করতেন। সমাজের নি¤œ শ্রেণিতে অবস্থান করতেন কৃষক ও প্রজারা। ব্রিটিশ শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলার সমাজ কাঠামোতে
ব্যাপক পরিবর্তন এনেছিল এবং হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করেছিল। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শিক্ষানীতির প্রবর্তক
মেকলে বলেছিলেন, “আমাদের এখন চেষ্টা করতে হবে এমন একটা শ্রেণী সৃষ্টি করতে, যারা হবে আমাদের এবং আমরা
যে লক্ষ লক্ষ লোককে শাসন করছি সেই শাসিতদের ভাবের মধ্যে আদান প্রদানকারী। এই শ্রেণির লোকেরা হবে রক্তে ও
রঙে ভরতীয় এবং রুচিতে, মতে, নীতিতে ও বুদ্ধিতে ইংরেজ।” এই বক্তব্যের মাধ্যমে ব্রিটিশ ভারতের সামাজিক শ্রেণি
বিন্যাস কিছুটা হলেও অনুমান করা যায়।
ব্রিটিশ ভারতে ইংরেজরা নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ জাতি বলে মনে করত। তারা ভারতবাসীর প্রতি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করত। আর
এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের পেছনে ছিল তাদের জাত্যাভিমান। অধিকাংশ সময়ে তারা ঘোষণা দিতে দ্বিধা করত না যে
ভারতীয়রা অনুন্নত ও বর্বব জাতির লোক। বহু ইংরেজ ভারতীয়দের সাথে অপমানজনক ব্যবহার করত। এমনকি দৈহিক
নির্যাতনও করত। ভারতীয়দের প্রতি ইংরেজরা গুরুতর অপরাধ করলেও তাদের শাস্তি দেয়া হত না। রেলওয়ের কোন
কামরায় ইংরেজ থাকলে সেই কামরায় কোন ভারতীয়কে টিকেট দেয়া হত না। বাংলার নবজাগরণ ব্রিটিশ ভারতের সমাজ
পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। নবজাগরণকে বৈদেশিক শাসনের প্রথম পরোক্ষ ফল বলে অভিহিত করা যায়। এই
নবজাগরণের নেপথ্য নায়কদের অন্যতম ছিলেন রামমোহন রায়( ১৭৭৪-১৮৩৩)। রামমোহন ছাড়া ডিরোজিও এবং ‘ইয়ং
বেঙ্গল’ গোষ্ঠী, অক্ষয় কুমার দত্ত, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী, বঙ্কিমচন্দ্র
চট্টোপাধ্যয়, কেশবচন্দ্র সেন, আ্যনি বেসান্ত, স্বামী বিবেকানন্দ প্রমুখও এ ভাবধারার পতাকাবাহী ছিলেন। সতীদাহ,
বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, দাসপ্রথা প্রভৃতি সামন্ততান্ত্রিক প্রথা ও অনুশাসনগুলো স্বাধীন পুঁজিবাদী সমাজ বিকাশের অন্তরায়
ছিল। তাই রাজা রামমোহনসহ অন্যান্য সমাজ সংস্কারকবৃন্দ সেগুলো বিলোপ সাধনের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ব্রিটিশ
আমলে ভারতের মুসলিম সমাজেও নানাবিধ সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। উনিশ শতকে মুসলিম জাগরণে এবং এ সকল সমস্যা
নিরসনে যাঁরা নেতৃত্ব দেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সৈয়দ আহমেদ বেরেলভি, হাজী শরীয়তুল্লাহ, দুদু মিয়া,
তিতুমীর, সৈয়দ আহমেদ খান, নাবাব আব্দুল লতিফ, সৈয়দ আমির আলী প্রমুখ। সৈয়দ আহমেদ বেরেলভি মুসলমানদের
ইসলামী আদর্শ অনুসরণ ও সহজ সরল জীবন যাপনের শিক্ষা দেন। তিনি এদেশকে ‘দারুল হরব’ বলে ঘোষণা দেন।
ব্রিটিশ আমলে বাংলার সাংস্কৃতিক অবস্থা
ব্রিটিশ আমলে বাংলায় হিন্দু ও মুসলিম সমাজের নিজস্ব সংস্কৃতির পাশাপাশি নানাধরণের পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাব লক্ষ্য
করা যায়। প্রাক-ব্রিটিশ আমলে ভারত তথা বাংলায় মুসলিম শাসকদের প্রাধান্য ছিল। ফলে তাদের সংস্কৃতির মধ্যে ইসলামী
ভাবধারার প্রাধান্য থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। ১৭৫৭ সালের পর থেকে বাংলায় রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাথে সাথে
অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ফলে মানুষের চিন্তা ধারায়ও পরিবর্তন আসতে শুরু করে। ব্রিটিশ
ভারতের সাহিত্য চর্চায় সেটা লক্ষ করা যায়। উনিশ শতকের বহু কবি ও সাহিত্যিক তাদের লেখনির মাধ্যমে ভারতবাসীর
মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনার সঞ্চার করেন। এদের মধ্যে মাইকেল মধুসূদন দত্তের নাম সর্বাগ্রে। তার নাটক ও কাব্য
বাংলার সাহিত্য জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে। গদ্য সাহিত্যে রামমোহন রায়, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, অক্ষয় কুমার দত্ত,
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কেশবচন্দ্র সেন প্রমুখ দেশবাসীর মনে স্বদেশীকতার আদর্শ প্রচার করেন। দীনবন্ধু মিত্র তাঁর সুবিখ্যাত
‘নীলদর্পন’ নাটকে উপনিবেশবাদী ইংরেজদের নির্যাতনের এক নির্মম করুণ চিত্র নিখুত ভাবে তুলে ধরেন। তবে ভারতে
স্বদেশিকতা প্রসাদে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান ছিল অপরিসীম। তাঁর রচনাগুলো বিশেষ করে ‘আনন্দমঠ’ ও ‘বন্দেমাতরম’
জাতীয় আন্দোলনে অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করেছিল। স্বামী বিবেকানন্দের রচনাও নবজাগরণ সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল।
তাঁর রচনাগুলোর মধ্যে পরিব্রাজক, ‘বর্তমান ভারত এবং প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বিশেষভাবে উল্লেখযো। তবে বাংলা সাহিত্যে
চরম উন্নতি লাভ করে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) এর বহুমুখী ও কালজয়ী সাহিত্য সৃষ্টির মাধ্যমে। ব্রিটিশ
শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের ঐক্যবদ্ধ করতে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকর্ম অসামান্য অবদান রাখতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশের
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যকর্ম ভারতীয়দের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
প্রাক-ব্রিটিশ আমলের তুলনায় ব্রিটিশ আমলে বাংলার আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা তুলনামূলকভাবে খারাপ ছিল।
ব্রিটিশ সরকারের নানাবিধ পদক্ষেপের কারণে বাংলার অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়ে। ফলে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে থাকে এদেশের
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা। ব্রিটিশ ভারতে বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য শুরু হয় নবজাগরণ বা রেনেঁসা।
বেঙ্গল রেনেঁসা কী? সতীদাহ প্রথা কী? নীলচাষ কী চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ২টি সুবিধা লিখ?
সারসংক্ষেপ :
প্রাচীনকাল থেকে ব্রিটিশ শাসনের পূর্ব পর্যন্ত এদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এসময় বাঙালির
থাকত গোলা ভরা ধান এবং পুকুর ভরা মাছ। কুটির শিল্পের অবস্থাও ছিল সমৃদ্ধ। বাংলার তাঁতিদের হাতে বোনা কাপড়
ইউরোপের কাপড়ের চেয়েও উন্নত ছিল। বাংলার কৃষিপণ্য এবং উর্বর জমির আকর্ষণে অনেকেই এদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য
করতে এসেছে। এরকমই একটি বানিজ্যিক কোম্পানি ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইান্ডয়া কোম্পানি। ১৭৬৫ সালে দেওয়ানী
হস্তান্তরের মাধ্যমে এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক পরাজয় নিশ্চিত হয়। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরাজয়ের করণে এদেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন-৮.১৭
১. চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কত সালে প্রবর্তিত হয়?
ক. ১৮৯৩ খ. ১৭৯৩ গ. ১৭৬৫ ঘ. ১৭৭০
২. ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কত সালে দেওয়ানী লাভ করে?
ক. ১৭৬৫ খ. ১৮৬৫ গ. ১৭৫৮ ঘ.১৭৬৪
৩. ‘নীলদর্পন’? কে রচনা করেন?
ক. দীনবন্ধু মিত্র খ. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী
গ. মাইকেল মধুসুদন দত্ত ঘ. কেশবচন্দ্র সেন
সৃজনশীল প্রশ্ন:
‘ক’ দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ যেটি দীর্ঘদিন ধরে ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে রয়েছে। ব্রিটিশ শাসন ও শোষণের
ফলে দেশটির আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। অপ্রচলিত এবং দেশীয় বাজারে চাহিদাহীন পণ্য
জোরপূর্বক চাষাবাদের ফলে কৃষকরা কৃষি কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং কৃষি জমির মালিকানার ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু
করলে প্রচলিত অর্থনীতি ও সমাজ কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে।
(ক) ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কী? ১
(খ) চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বাংলার সমাজ কাঠামোতে কি ধরণের পরিবর্তন এনেছিল? ২
(গ) উদ্দীপকের আলোকে ব্রিটিশ আমলে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরুন। ৩
(ঘ) ব্রিটিশ আমলে বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার উপর আলোকপাত করুন। ৪
উত্তরমালা:
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.১ : ১. খ ২. ঘ ৩. গ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.২ : ১. গ ২. ক ৩. খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৩ : ১. খ ২. গ ৩. ঘ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৪ : ১. গ ২. ঘ ৩. খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৫ : ১. গ ২. ক ৩. খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৬ : ১. গ ২. ক ৩. খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৭ : ১. গ ২. ক ৩. খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৮ : ১. গ ২. ক ৩. খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.৯ : ১. খ ২. ঘ ৩. গ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.১০ : ১. গ ২. ক ৩. খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.১১ : ১. খ ২. গ ৩. ঘ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.১২ : ১. গ ২. ঘ ৩. খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.১৩ : ১. গ ২. ক ৩. খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.১৪ : ১. গ ২. ক ৩. খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.১৫ : ১. গ ২. ক ৩. খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.১৬ : ১. গ ২. ক ৩. খ
পাঠোত্তর মূল্যায়ন- ৮.১৭ : ১. গ ২. ক ৩. খ

FOR MORE CLICK HERE
এইচএসসি বাংলা নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
ENGLISH 1ST & SECOND PAPER
এইচএসসি আইসিটি নোট
এইচএসসি অর্থনীতি নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি ও সুশাসন ১ম পত্র
এইচএসসি পৌরনীতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ১ম পত্র
এইচএসসি সমাজকর্ম নোট ২য় পত্র
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইতিহাস নোট ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ১ম পত্র
এইচএসসি ইসলামের ইতি. ও সংস্কৃতি নোট ২য় পত্র
এইচএসসি যুক্তিবিদ্যা ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ভূগোল ও পরিবেশ নোট ১ম পত্র ও ২য় পত্র
এইচএসসি ইসলামিক স্টাডিজ ১ম ও ২য় পত্র

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]